অন্তরালে ভালবাসা পর্ব ৮

#অন্তরালে_ভালবাসা

#প্রজ্ঞা_জামান_দৃঢ়তা_হঠাৎ_বৃষ্টি

অহিন সবসময় চায় আরিশা যেনো সুখে থাকে। ভালবাসার মানুষের ভালো থাকার নামই ভালবাসা।এখন সে কার সাথে থাকবে সেটা বিষয় না।ভালবাসা যতোই ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করা হোক না কেন, এই জিনিসটি মূলত কারোরই অজানা নয় যে জোর করে কখনো কাউকে ভালোবাসা যায় না। ভালোবাসা পুরোপুরি একজন মানুষের একান্ত ব্যাপার।
সত্যিকারের ভালবাসা হচ্ছে ভালবাসার মানুষটির ভালো থাকা কামনা করা।ভালবাসার মানুষের ভালো আছে এটা শুনতে ফেলে নিজের মনের না পাওয়ার যে কষ্ট আছে তা কিছুটা হলেও লাঘব হয়।

তাই অহিন সেদিন মনে মনে ঠিক করে নেয়।যাই হয়ে যাক রাফিন আর আরিশাকে কখনও বুঝতে দিবে না, অহিন আরিশাকে ভালবাসে।আর অহিন সেটাই করলো। শুধু যখন যখন আরিশা খুব পোড়াতো তখন তখন একটা ডায়েরিকে আরিশা করে নিতো।শুরু হয়ে যায় সে ডায়েরি লেখা।আরিশার সাথে জড়ানো সব স্মৃতি বন্দী করে নেয় ডায়েরির পাতায় পাতায়। প্রতিটি ছোট ঘটনা আরিশাকে নিয়ে সব ভেসে ওঠে ডায়েরির পাতায়।আর সেই ডায়েরি লুকিয়ে রাখে খুব যত্নে। কখনও ধুলো পড়তে দেয় নি সেই ডায়েরিতে।কারণ আরিশার ভালবাসা আছে এই ডায়রিতে।শুরু হয় অহিনের এক নতুন পথ চলা।সবসময় খারাপ থেকে ও ভালো থাকার অভিনয় করে যায়।আরিশা রিফানের ভালবাসা চোখের সামনে দেখে যায় নিরবে নিভৃতে।আরিশা যখন রাফিনের হাত ধরতো।কাধে মাথা রাখতো তখন না চাওয়ার সত্বেও বুকের ভেতরের যন্ত্রনা গুলো তাজা হয়ে উঠতো।
রাফিনের জন্য আরিশার মনে ছিলো ভালবাসা,আর অহিনের জন্য ছিলো তার হাতের মার,কম্পাস,পেন্সিল, কিংবা নখের আঁচড়! আর অহিন এসব নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করে যায়।রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। সঙ্গী করে নিকোটিনের ধোঁয়া আর ডায়েরির পাতাগুলোকে।

আরিশার দেয়া প্রতিটি দাগ সযত্নে বুকের ভেতর আগলে রাখে অহিন।এতোটাই যত্নে রাখে যে কেউ দেখতে পায় না সেই দাগ।যখন আরিশাকে মনে হয় ফোনের স্কিনে থাকা আরিশাকে বুকের সাথে লেপ্টে ধরে অনুভব করে।কখনও বা হাতের দাগে চুমু খায় পরম যত্নে।এভাবেই চলে যায় দিন এক ব্যার্থ প্রেমিকের।কিন্তু প্রানপ্রিয় বন্ধুর কিংবা ভালবাসার মানুষের কারো পথের কাঁটা হয়নি নিজে।সবসময় তাদের পাশে থেকেছে।তাদের দুজনের মাঝে ঝগড়া হলে মিটাতে হতো অহিনকে।

প্রথম যেদিন রাফিন আরিশাকে অহিনের সামনে চুমু খেয়েছিলো।সেদিন অহিনের ইচ্ছে করছিলো এই পৃথিবীর সব কিছু তছনছ করে দিতে।কিন্তু একজন সুখী মানুষের মত করে অহিন নিখুঁত অভিনয় করে সেখান থেকে চলে যায়।
এই কাজটা যে কত কঠিন সেটা শুধু অহিনই জানে।মাঝে মাঝে রাফিনকে হিংসে হতো রাফিনের ভাগ্য খুব ভালো যে এমন ভালবাসা পেয়েছে।অন্যদিকে মনকে শান্ত করতো এই ভেবে যে তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন দুটো মানুষ আজ ভালো আছে। আর এই ভালো থাকাটাই হবে তার জীবনের শান্তির কারণ।

আর সে অভিনয়ে ফুল মার্কস পেয়ে অহিন পাশ করে যায়।তার নিখুঁত অভিনয় কখনও তার বন্ধুরা বুঝতে পারেনি।কখনও কেউ জানতে পারে নি বন্ধ দরজার ভেতরের অহিনকে।যে সব কষ্টকে রুমে তালাবদ্ধ করে রেখে বের হয় অত্যন্ত হাসিখুশী একজন মানুষ হয়ে।যাকে দেখে কেউ বুঝতে পারবে না।তার মনের ভেতর কতটা ক্ষত রয়েছে।

রাফিন আর আরিশার বিয়ের দিন যখন কাছে আসে অহিনের কষ্টগুলো বেড়ে যায়। ইচ্ছে করে নিজেকে শেষ করে দিতে কিন্তু তা পারে না।আল্লাহর ভয়ে আর আরিশার জন্য।অহিন যদি আরিশার জন্য মারা যায় সমাজ তাকে কি উপাধি দিবে।সমাজের খোটা শুনে বাঁচতে হবে আরিশাকে।ভালবাসার জন্য মানুষ কত কি করে অহিন না হয় নিজেকে দুঃখে নিমজ্জিত করলো। এই ভালবাসার জন্য। বন্ধুত্বের জন্য।
বুকের ভেতর চাপিয়ে রাখা কষ্ট তারপর ও সে তা প্রকাশ করে না।শুধু মাত্র একজন তার যন্ত্রনা বুঝে নেয় আর সে হচ্ছে তার মা।সাজেদা বেগম। ছেলে মেয়ের কষ্ট কখনও মায়ের কাছ থেকে লুকাতে পারে না।অহিনও পারেনি।তাই কষ্ট হলে মায়ের কোলে মাথা রেখে শান্তি অনুভব করতো সে।

সাজেদা বেগম ছেলেকে অনেক বুঝিয়েছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে আরিশাদের বাসায়।তিনি বলেন রাফিনদের চেয়ে তাদের টাকা পয়সা বেশী। অহিন ও দেখতে খুব ভালো। তাই আরিশার বাবা মা ঠিক আরিশাকে রাজি করাবে।কিন্তু অহিনের জন্য তিনি পারেন নি।অহিন বলেছে যদি এমনটা হয় তাহলে সে নিজেকে শেষ করে দিবে।বন্ধুত্বের চেয়ে ভালবাসার মূল্য কখনই তার কাছে বেশী না।
যে বন্ধুকে ছোট বেলা থেকে এতোটা ভালবেসে এসেছে তাকে একটা মেয়ের জন্য হারাবে! এটা সে কখনোই করতে পারবে না।তাছাড়া আরিশাই বা কিভাবে নিবে এসব!ভালবাসার মানুষকে না পেয়ে অহিন নিজে যে কষ্ট পাচ্ছে তা নিশ্চয়ই আরিশাকে পেতে দিবে না।কারণ এই ত্রিভুজ ভালবাসার সম্পর্কে যেই দুটো মানুষ এক হোক না কেনো, অন্য একজনের জন্য কষ্ট অবধারিত!
তাই সেই একজন নিজেকে বানিয়ে দিলো অহিন।
ভালো থাকুক প্রিয় দুটি মানুষ!

অহিনের একটাই কথা ভালবাসা ভালো থাকুক!
অটুট থাকুক বন্ধুত্ব!

/////////////////////////////////////////////////////////////////////

বর্তমান,

অহিন বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসে।আরিশা কয়েকবার কিছু একটা বলতে এসে
ফিরে যায়।অহিনের নজর ল্যাপটপে থাকলেও বুঝতে পারছিলো আরিশার ছটফট করা।কিছু একটা বলতে চেয়ে আরিশা বলতে পারছে না।অহিন বুঝতে পারছে সব, এটা আরিশাকে বুঝতে দেয়নি। সে তার কাজ চুপচাপ করে। আরিশা হালকা করে গলা খাকারি দিয়ে বলে
তুই ফ্রী আছিস অহিন?

বল কি বলার?অহিন ল্যাপটপে চোখ রেখেই জবাব দেয়।
আরিশা অহিনের পাশে বসে এক হাতের সাথে অন্য হাত কছলাতে থাকে।
অহিন ল্যাপটপে তখনও মুখ গুজে আছে।আরিশা বলে তুই কি ভাবছিস আমাদের সম্পর্ক নিয়ে?

অহিন খুব অবাক হয় আরিশার এমন কথায়।ল্যাপটপ বন্ধ করে আরিশার দিকে ঘুরে বসে।আরিশার দৃষ্টি তখন নিচের দিকে।অহিন বলে কি ভাবার আছে আবার?

আরিশা বলে আমাদের কি সম্পর্ক? আর ভবিষ্যতেই বা কি সম্পর্ক হবে?

অহিন আবার অবাক হয়!বলে,কি আবার হবে!আমরা বন্ধু ছিলাম,আছি আর সবসময় থাকবো।

আরিশা বলে আমাদের পরিবার চায় আমরা এক হই।সংসার করি।এখন তুই কি চাস?

অহিন এমন কিছু আরিশা থেকে আশা করেনি।কারণ আরিশা শুধু রাফিনকেই ভালবাসে আর কাউকে নয়।

অহিন বলে কে কি ভাবলো তা ভেবে কাজ নেই।রাফিন আসলে আমি তোকে তার হাতে দিয়ে মুক্ত হবো।তুই তোর ভালবাসা পাবি।

আরিশা বলে, আর তুই?
আরিশার এমন প্রশ্নে অহিনের বুকের ভেতর চিনচিন ব্যাথা করে।অহিন প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলে তুই কি করবি রাফিন এলে আরু?

আরিশা বলে,রাফিন আসবে নারে অহিন।যে নিজের ইচ্ছায় চলে যায় সে কি ফিরে আসার জন্য চলে যায় অহিন?

অহিন বুঝতে পারে আরিশার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।তাই বলে আরু একটা গল্প শুনবি?

আরিশা বলে আমি বড় হয়ে গেছি অহিন।এখন আর তুই আমাকে এটা সেটা বলে বুঝ দিতে পারবি না।
অহিন আমাকে এখান থেকে দূরে কোথাও নিয়ে যাবি?
এসব থেকে অনেক দূরে আমি কিছুদিন রাফিনের স্মৃতি থেকে অনেক দূরে? যেখানে আমি প্রানভরে নিঃশ্বাস নিতে পারি।নিয়ে যাবি আমায়?
এখানে যে রাফিনের স্মৃতি আমাকে তাড়া করে বেড়ায়! যন্ত্রনা দেয়রে অহিন, খুব যন্ত্রনা দেয়!
আমার আর সহ্য হচ্ছে না অহিন।প্লিজ তুই আমাকে কিছু দিনের জন্য কোথাও নিয়ে চল।
আরিশা কাঁদছে খুব কাঁদছে।আরিশাকে কেমন দিশাহারা মনে হচ্ছে!বিদধস্ত লাগছে!

আর আরিশার এমন অবস্থা অহিনের মনে তোলপাড় শুরু হয়।তার আরুর কষ্ট যে সে কখনও সহ্য করতে পারে না।তার আরুকে ভালো রাখতে এতো কষ্ট সে করেছে কিন্তু ভালো রাখতে পারলো কই!

অহিন দুহাতে আরিশার দুগালে ধরে বলে,আরু তুই চিন্তা করিস না আমি রাফিনকে খুজে নিয়ে আসবো।যেখান থেকে হোক!কিন্তু আমি তোর চোখের জল পড়তে দেবো না কখনও। তুই সবসময় ভালো থাকবি।
আরিশা আকুতি সুরে বলে আমাকে কিছুদিনের জন্য কোথাও নিয়ে চল অহিন প্লিজ অহিন।আরিশা অহিনের বুকে জাপটে পড়ে মুখ লুকিয়ে কান্না করে খুব কষ্ট হচ্ছে এদের দুজনের।

জীবন কি অদ্ভুত! চলে গেলো একটা মানুষ আর রেখে গেলো কতগুলো মানুষকে।সাথে নিয়ে গেলো এই মানুষগুলোর হাসি, সুখ!
এতো অদ্ভুত কেনো জীবন?

অহিন আরিশাকে দুহাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলে আমরা কালই বাইরে কোথাও যাবো।তুই কাঁদিস নারে আরু তুই কাঁদলে আমার খুব কষ্ট হয়।তোকে ভালো রাখার জন্য কত চেষ্টা করলাম কিন্তু তোকে ভালো রাখতে পারলাম কই?

আরিশা আরও শক্ত করে অহিনের পিঠে খামছে ধরে। কি এক অসহ্য যন্ত্রনায় দুটি হৃদয় চূর্ন বিচুর্ন হয়ে যাচ্ছে।তা হয়তো দুজনের মনই বুঝতেছে।নয়তো না!

আরিশাকে ছেড়ে দিয়ে অহিন বলে তুই শুয়ে পড় আরু আমি তোর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
কিন্তু অহিনকে অবাক করে দিয়ে আরিশা বলে,আমাকে আর একটু জড়িয়ে ধরবি প্লিজ?প্লিজ অহিন আমার ঘুম এলে তোর ইচ্ছে হলে চলে যাস।একটু সময়ের জন্য শুধু অহিন প্লিজ?

আরিশার মুখে এমন কথা শুনে অহিনের বুকের ভেতর ঝড় বয়ে গেলো। এমন এক ঝড় যা হয়তো পৃথিবীর বড় সব ঝড়কে হার মানাবে।অহিন সবসময় আরিশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে কারণ অহিন জানে অহিন আরিশাকে কতটা ভালবাসে।আর যত কাছে থাকবে আরিশা তত অহিন আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।এতে অশান্তি বাড়বে।যা অহিন একেবারেই চায় না।
কিন্তু এখন আরিশার মুখে এমন কথা শুনে অহিনের মনের ভেতর কষ্ট হচ্ছে খুব।আবার কোথাও একটা সুখ অনুভব করছে।কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো এই সুখের কোন মানে হয় না।আরিশার সব কিছুতেই অধিকার শুধু একজনের আর সে হচ্ছে রাফিন!

অহিন চুপচাপ গিয়ে আরিশাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।আরিশা পোষা বিড়ালের মত গুটিশুটি হয়ে অহিনের বুকের মাঝে লেপ্টে থাকে।

আরিশার বুকের প্রতিটি হৃদস্পন্দন অহিনের ভেতর তোলপাড় শুরু করে দেয়।আরিশা ঘুমিয়ে পড়ে কিছুক্ষণ পর।অহিন উঠে যেতে লাগলে বুঝতে পারে অহিন, আরিশার মাথা তার হাতের উপর আরিশা আষ্টেপৃষ্ঠে অহিনকে জড়িয়ে রেখেছে।অহিন যেতে চেয়েও পারে না যেতে।

সেই রাতটি অহিনের কাটে আরিশাকে দেখে।

সে রাতটি অহিনের কত যন্ত্রনায় কাটে তা শুধু সেই জানে!ভালবাসার মানুষ কাছে আছে,পাশে আছে কিন্তু তার উপর কোন অধিকার নেই।এই এক অদ্ভুত জীবন অহিনের।

নির্ঘুম নিরালা রাতটি অহিনের কত কি যে ভেবে কেটে যায় তার ঠিক নেই। সেদিন সে বুঝতে পারে জীবনের যন্ত্রনার আরেক নাম আরিশা!!

সকালবেলা আরিশা ঘুম থেকে উঠে দেখে অহিন ব্যাগ গোছাচ্ছে। আরিশা ঘুমে ঢুলুঢুলু হয়ে বলে,কিরে কোথায় যাচ্ছিস?

আমি একা যাচ্ছি না তুইও যাচ্ছিস।আমরা কুয়াকাটা যাবো। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেয়।কুইকলি!

অহিন আরিশাকে রেডি হতে বলে নিচে মায়ের রুমে ঢুকবে এমন সময় সাজেদা বেগমের গলার আওয়াজ পায় অহিন,তিনি কাউকে ফোনে বলছেন,তুই ঠিক আছিস তো বাবু?

অহিন না চাইতে ও কথাটা শুনে ফেলে। অবাক হয় তার মা শুধু রাফিনকেই তো বাবু বলে ডাকে।কার সাথে কথা বলছে সাজেদা বেগম?

অহিন মায়ের রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে,আসবো মা?

সাজেদা বেগম কোন এক কারনে বিষন ঘাবড়ে যান।তিনি বলেন আয় আয়?
অহিন বলে তুমি কথা শেষ করো। আমি বসছি।

সাজেদা বেগম কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলেন।না ঠিক আছে।ততটা গুরুত্বপুর্ন কল না, আমি রেখে দিচ্ছি তুই বল?

অহিন সাজেদা বেগমকে ফোনের কথা কিছুই জিজ্ঞেস করে না।কারো প্রাইভেসিতে হস্তক্ষেপ করা কোনকালেই অহিনের পছন্দ নয়।তাই অহিন কুয়াকাটা যাবার কথা মাকে জানায়।
সাজেদা বেগম খুব খুশী হন।দূরে গিয়ে হয়তো দুজন একে অপরের কাছাকাছি আসবে
ভালবাসবে দুজন দুজনকে।আস্তে আস্তে আরিশা অহিনকে হয়তো মেনে নিবে।এসব ভেবে মনে মনে শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে সাজেদা বেগম।

সত্যি কি অহিন আরিশার মাঝে সব ঠিক হয়ে যাবে।নাকি আরও বড় কোন ঝড় উঠতে চলেছে এই ত্রিকোন প্রেমের সম্পর্কে?

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here