অভিমান পর্ব ৫

#অভিমান
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
পর্ব-৫
❝ঠোঁটে ঠোঁট রেখে এই হিংসুটে বিদগুটে পৃথিবীকে আমি জানান দেই, ঝুমকো তুমি আমার। জড়িয়ে নিতে চাই তোমার শরীরে প্রতিটি পাতাকে। বলতে চাই তাদের, ঝুমকোর শরীরের প্রতিটি অংশ শুধুই আমার…..❞

চাপা গলায় বেশ জোরেসোরে স্বগতোক্তি ভাবে কথাটা বলে উচ্ছ্বাসে থামলো রাহান। ভালোবাসার উজ্জীবিত সমুদ্রকে আজ উজাড় করে উপাড়ন করে দিতে চায় রাহান। যে সমুদ্র থাকবে লতা পাতায় ঘেরা। নীল জলরাশির বুকে এক টুকরো গহীন সবুজ বনাঞ্চল হয়ে যেনো থাকবে সেই সমুদ্রতল। যে সমুদ্রের নাম হবে ‘ঝুমকোলতা’।

রাহান নিজের কপালে হাত রাখে। আক্ষেপ এবং আপসোসের স্বরে বলে,

‘বিশ্বাস টা কেনো হারালাম আমি? আমি তো কথা দিয়েছিলাম নিঃশ্বাস বন্ধ হলেও বিশ্বাস হারাবো না। তবে কেনো ? ‘

রাহান দু হাত মাথায় দিয়ে রাখে। চোখে মুখে কষ্টের স্ফীত হাসি ফুটিয়ে তুলে বলে উঠে,

‘আমি তোমাকে ফিরিয়ে আনবো। যে করেই হোক। এ জীবন বিনিময়েও যদি তোমায় পাওয়া যায় তবে তাই সই। ‘

__________________________________

রাত দশটার দিকে ঝুমকো বার থেকে বের হয়। বারে এখন আর মন বসছে না। তার উপর তো সারাক্ষন চিপকায় থাকার জন্য তো আছেই সোহেল। ঝুমকোর অসহ্য লাগছে। প্রতিটা মুহুর্ত বিরক্তিকর তিক্ততায় ভরে উঠছে। কিন্তু এই অসহ্য বিরক্তিকতা কেনো? আগে তো এসব খুব মজা নিতো ঝুমকো তবে আজ কেনো এতো তিক্ততা? মন মেজাজ সবসময় এতো উটকো ভাবে খারাপ হয়ে রয়েছে কেনো?

ঝুমকো হেলে দুলে যায়। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের লাল-হলুদ আলোয় তার গাল দুটো আরো চিকচিক করে। দূর্বল পায়ে টলমল করে হেটে গিয়ে যেই ঝুমকো নিজের গাড়িতে উঠবে বলে দরজা খুলেছে ঠিক তখনি কেউ ঘোমট স্বরে বলে উঠলো,

‘দাড়াও।’

ঝুমকো ঠাস করে গাড়ির দরজা লাগিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজে আসন্ন ব্যাক্তিকে। চোখ মুখ কুচকে খুঁজতেই আবিষ্কার করে রাহান আসছে। ঝুমকো ঠিকমতো তাকায়। নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে আবারও গাড়ির দরজায় হাত রাখে। তখনই আরেকটা হাত ছুটে এসে ঝুমকোর হাতের উপর হাত রাখে।

তখনি যেনো বাতাস জোরালো ভাবে বয়। উথাল-পাথাল বাতাসের জোড়ে ঝুমকোর এলোমেলো নিঃশ্বাসে মিশে যায় রাহানের শরীরের স্নিগ্ধ গন্ধ। চোখে চোখে হয়ে যায় ভালোবাসার আকুতিভরা বেকুল দুটো আবেদন। নিজেকে চট করে সামলে ঝুমকো রাগী দৃষ্টি নিয়ে রাহানের দিকে তাকালো। দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলল,

‘আমার হাত ছাড়ো।’

রাহান সরায় না। ধরে রাখে ঝুমকোর মোলায়েম হাত। ঝুমকো এবার এক প্রকার ঝটকানা দিয়ে সরিয়ে দেয় রাহানের হাত। নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতে না পেরে নিজেও পরে যেতে নেয়। কিন্তু সামলে নেয় নিজেকে। রাহান ঝুমকোকে ধরতে যায়। ঝুমকো হাত উঁচু করে থামিয়ে দেয় রাহানকে। রাহান থেমে গিয়ে থমথমে গলায় বলে,

‘আই এম স্যরি। ঝুম ক্যান আই এক্সপ্লেইন?’

একটু থেমে রাহান প্রশ্ন করে। এহেন প্রশ্নে ঝুমকো বিকট এক হাসি দেয়। হাটুতে হাত রেখে রাতের নক্ষত্র তারায় জ্বলজ্বল করা খোলা গাঢ় নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে হাসে। মাথা নিচু করতেই আড়ালে পরে যায় চোখ থেকে পানি। ঝুমকো মাথা উঁচু করে রাহানের বুকে তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে ঠেস দেয়। এরপর তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,

‘হেই মিস্টার রাহান…..’

ঝুমকো আবারো তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে রাহানের বুকে ধাক্কা দেয়। রাহান ঝুমকোর হাত সহ তর্জনী আঙ্গুল ধরে ফেলে। ঝুমকোর চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। মাতাল মাতাল লাগছে। তবুও নিজেকে নিজরুপে বহাল রেখেই বলে,

‘আজ তিন বছর পর দি গ্রেট রাহান আদমান শুধুমাত্র এই স্যরি বলার জন্য এই ঝুমকোর কাছে এসেছে?? ভেরি ফানি….’

‘ভেরি ফানি’ কথাটা রাহানের মুখের সামনে গিয়ে ঝুমকো জোরে নিঃশ্বাস ছেড়ে বলল। রাহান মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। ঝুমকো হঠাৎই মুখটাকে কঠিন বানিয়ে বলে উঠলো,

“চলে যাও। তোমার নিঃশ্বাসের শব্দটাও ভারী পরে আমার উপর। আমি শুনতে চাই না তোমার নিঃশ্বাস গুনতে চাই না তোমার প্রতিধ্বনিত প্রশ্বাস। আমার কষ্ট হয়…তুমি বুঝতে পারছো রাহান? আমার খুব কষ্ট হয়। ”

ঝুমকো বাম হাত দিয়ে রাহানের বুকের শার্ট খামচে ধরে। কেঁদে দেয় জোরেসোরে। কান্নারা আজ ঝুমকোর জোরালো ভাবে বেধে রাখা কঠিন খোলস থেকে বেরিয়ে আসে। ঝুমকো আর্তনাদ করে পাগলের মতো।তখন অবধি রাহানের হাতের মাঝে বন্ধি ঝুমকোর তর্জনী আঙ্গুল সহ ডান হাত। ঝুমকো মাথা ঠেকায় রাহানের বুকে। দূর্বল হাতে অজস্র ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মার দেয় রাহানের দুঃখী শক্তপোক্ত বুকে। চাপা কান্নায় আদ্ধেক মরনশীল গলায় আসমুদ্র-দুঃখিনী হয়ে ঝুমকো বলে উঠে,

‘আমি বাঁচতে চাই না রাহান। তুমি শুনতে পারছো? আমি বাঁচতে চাই না। আমাকে ঠকানোর পর ও আমি আজ তোমার সামনে কাদঁছি এর চেয়ে কষ্টের, এর চেয়ে অপমানের আমার জন্য আর কিছু হয় না রাহান। কিন্তু আমি পারছি না। পারছি না নিজের মন কে শান্তনা দিতে। আমার মনটা হতে চায় অর্ঘতুল্য। আর তুমি তাকে অর্ঘ্যদান করা তো দূরে থাক অনর্ঘতুল্য করে দিয়ে চলে গিয়েছো। চলে গিয়েছো….। আমি নিজের জীবনটাকে অনেক বেশি ঘৃণা করি আর তার চেয়েও বেশি ঘৃণা করি তোমাকে। ‘

ঝুমকোর আর্তচিৎকারে ভেসে যায় বাতাস। প্রতিধ্বনিত হয় প্রতিটি শব্দ। ঝুমকো থামে নিজের হাত রাহানের হাত থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। জোর জবরদস্তি করে। কিন্তু পারে না। হাল ছেড়ে দিয়ে আবারো কান্নায় ভেঙে পরে। রাহানের বুকের শার্ট ভিজিয়ে দেয় ঝুমকোর ঝুমুর কান্নার বর্ষণ। ঝুমকো শ্বাসরুদ্ধ কান্নায় মেতে উঠে বলে,

‘আমাকে প্রগাঢ় ভালোবাসার অভিলাষী সমুদ্রের স্বপ্ন দেখিয়ে কেনো শেষ পর্যন্ত নর্দমাক্ত ডোবায় ফেলে গিয়েছিলে বলতে পারো? তোমার জন্য আমার জীবন এখন আস্তানার কীটের মতো। এইটুকুন থেকে বড় হয়েছি মা ছাড়া। পাঁচ বছর বয়সী সেই ছোট্ট ঝুমকোকেই বুঝে নিতে হয়েছিলো তাকে সারাজীবন বাবা-মার ছায়াতল ছাড়া বড় হতে হবে। অন্য বাচ্চাদের মতো সে আহ্লাদ করতে পারবে না। স্কুল কলেজ থেকে ফিরেই মায়ের গলা জড়িয়ে আদুরে আলাপন করতে পারবে না। বাবার কাছে হাজারটা বায়না ধরতে পারবে না। বাবা-মায়ের মাঝখানে শোয়ার ইচ্ছে কখনো পোষন করতে পারবে না। এসব তো আমি এতোটুকু থাকতেই বুঝে গিয়েছিলাম। তুমি কেনো আবার নতুনকরে আমার জীবনটা নষ্ট করলে বলতে পারবে?’

রাহান কথা বলে না। তার বুকে নিরংশু কষ্টরা দামাল তবলা বাজাচ্ছে। বুকটা সেই তবলার লাঠির আঘাতে রক্তবর্ণ হচ্ছে। ঝুমকো আবার বলল। কন্ঠে তার আবেগ। দীর্ঘ দিনের চাপা ভালবাসা। মন খুলে কথা বলতে না পারার চাপা কষ্ট।

‘জাদুর কাঠি স্পর্শ করেও আমার পৃথিবীটা কণ্টকাকীর্ণ করে দেওয়ার সত্যি কি খুব জরুরি ছিলো? অভূতপূর্ণ অভেষিত রাজ্যে আমাকে রানী হিসেবে ঘুরিয়ে এনে শেষে কেনো কুড়ে ঘরে আমার মনের স্থান হলো? জবাব দেও রাহান…কি দোষ ছিলো আমার? আমি কি দেখতে খারাপ ছিলাম? আমি কি ভালোবাসতে পারি নি তোমাকে?’

রাহান তবুও কথা বলে না। শুধু ঝাপটে ধরে থাকে ঝুমকোর ডান হাত নিজের বুকের সাথে। এভাবে কেটে যায় অনেকগুলো মুহুর্ত। অনেক অকথ্যকথন সুন্দর ভালোবাসার আলাপন। আকাশের তাঁরা গুলো গল্প গুজব করে ওদের বিচ্ছেদের ভালোবাসা নিয়ে। শেষে ঝুমকোকে নিস্তব্ধতায় ঘিরে ধরে। ধীর পায়ে চলে যেতে উদ্যোগ নেয় এই বুক থেকে।
পরিশেষে ঠিক যখনি ঝুমকো নিজের হাত ছাড়াতে যাবে তখন রাহান আরো শক্ত করে ঝুমকোর হাত ধরে রাখে।

তপ্ত নিঃশ্বাসে কয়েকটা প্রগাঢ় অভিলাষী চুমু ঝুমকোর হাতের পাতায় দিয়ে আবারো নিজের বুকের মাঝে চেপে ধরে রাহান। চোখে চোখে তাকিয়ে নির্মল গলায় বলে উঠে,

❝শোনো আমার ঝুম, তোমার প্রণয়ী দীপ্তির কাছে হার মেনে যাই আমি। তোমার আরশ কাপাঁনো সৌন্দর্যে বুক কাঁপিয়ে মুগ্ধতার গালিচা বিছিয়ে দেই আমি। তোমার ভাষায় এই কণ্টকময় পৃথিবীতে নেশাগ্রস্ত হয়ে স্বপ্নঘোরে অপরিপক্ক পরিকল্পনায় অযাচিতভাবে ভালোবাসায় রাঙিয়ে দেই আমি।❞

ঝুমকো চোখের পাতা বন্ধ করে রাখে। লাজে রাঙার পরিটির মতো দেখায় তখন তাকে। রাহান দু আঙ্গুল দিয়ে ঝুমকোর থুতনি ধরে মুখ উঁচু করে। নির্মম শরীর কাপানো কন্ঠে বলে,

‘মনে পরে কিছু ঝুম??’

ঝুমকো অস্ফুটস্বরে শুধু বলল,

‘হুম’

রাহান ঝুমকোর লাজে রাঙা মুখটির দিকে তাকিয়েই হারায় অতীতে।

,

রাহান এই ঝুমকোকে ‘ঝুম’ বলে ডাকতো তো আবার ঝুমকোকে ‘ঝুমকোলতা’ বলে ডাকতো। রাহান ঝুমকোর থেকে পাঁচ বছরের বড়। ঝুমকোর ফোন যখন মাঝে মাঝেই ধরতে পারতো না রাহান নানানরকম কাজ, পড়াশোনা বা ঘুমের চাপে। তখন ঝুমকো গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো।

দেখা যেতো, পরে রাহান হাজার বার ফোন করলেও ঝুমকো ধরতো না। একদিন এমতাবস্থায় রাহান ঝুমকোদের বাড়ির পাশে বড় দেয়াল টপকে ঝুমকোর ঘরের বারান্দায় যায়। দেয়ালটা ছিলো ঝুমকোর বারান্দার সাথে একদম ঘেঁষে। ঝুমকো তখন উল্টো হয়ে শুয়ে কাদছিলো। মেয়েটা এমনই নিজেই রাগ করে থাকতো তো আবার নিজেই কেঁদে গা ভাসাতো। রাহান ঝুমকোকে টেনে তুলে বলল,

‘ফ্যাস্ট, রেডি হও।’

ঝুমকো বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে। ঘোরে আছে ভেবে সে আবার উল্টো হয়ে শুয়ে পরে কান্নায় মেতে উঠে। রাহান ভ্যাবাচেকা খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ঝুমকোকে আবার তুলে। ঝুমকো এবার নিজের চোখ কচলে বলে,

‘তুমি??’

রাহান কানে হাত দিয়ে ঢং করে বলল,

‘আস্তে জান। আমার মামা শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি এসে পরবে। মাঝরাতে বউয়ের সাথে রোম্যান্স করতে গিয়ে ধরা খেলে তো বিপাকে পরে যাবো। লজ্জায় মাথা কাটা যাবে। ‘

ঝুমকো থমথমে মুখ করে রাগী স্বরে বলল,

‘চলে যাও। কেনো এসেছো হুম? আমাকে তোমার কি প্রয়োজন? তোমার কাজ নিয়ে থাকো তুমি যাও। একদম আমার সাথে আলগা পিরিতি দেখাবে না। এমন আলগা পিরিতি দেখানোর মানুষ অনেক আছে আমার।’

প্রথম প্রথম একটু মজা পেলেও শেষের কথা শুনে রাহানের চোখ কেনো জেনো রাগে লাল হয়ে যায়। তখন ওদের সম্পর্কের মাত্র এক বছর তিন মাস । ঝুমকো সবে মাত্র তখন ভারসিটি ভর্তি হয়েছে। আর রাহান ভারসিটির গন্ডি পার করেছে। ঝুমকো যখন এইচএসসি পরীক্ষা দেয় তখন থেকেই মূলত ওদের সম্পর্ক টা শুরু। ঝুমকো ভারসিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য একবছর ড্রপ দেয়।

যাক গে, সেই মুহুর্তে ঝুমকোর দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে রাহান বলে উঠে,

‘সেই আলগা পিরিতি ওয়ালা মানুষ টা কে? নিয়ন?’

ঝুমকো অবাক হয়ে যায়। বিস্মিত হয়ে বলে,

‘নিয়নের কথা তুমি কি করে জানলে?’

রাহান তখন আরো রেগে যায়। হালকা জোরেসোরেই বলে,

‘কেনো? জেনে গিয়েছি বলে খুব অন্যায় হয়ে গিয়েছে তাই না? গোপন কেনো রেখেছিলে আমার কাছ থেকে?’

ঝুমকো একটু ভয় পায়। কিন্তু এখানে ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই। ও নির্দ্বিধায় বলে,

‘পরিচয় হয়েছে মাত্র দুদিন। আর দুদিন থেকে তো তোমার সাথে আমার ঝামেলাই চলছে। আর ছেলেটা খুব ভালো। আমার অনেক ভালো বন্ধুও হয়ে গেছে।’

রাহানের কেনো জেনো রাগে শরীর জ্বলে উঠে। ও দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলে,

‘দুদিন আমার সাথে তোর কথা হয় না। আমি এদিকে মরে যাচ্ছিলাম। আর ওদিকে তুই বন্ধু বানিয়ে ফেলেছিস।’

ঝুমকোর এবার কান্না পায়। রাহানকে কি বুঝাচ্ছে আর রাহান কি বুঝছে? ঝুমকো কাদো কাদো স্বরে বলে,

‘ও আমার সাথে কথা বলতে এসেছিলো। আমি অনেকবার ইগনোর করেছি। তোমার কথাও বলেছি। কিন্তু ও আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ ব্যতীত আর কিছু করতে চায় না। তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে।’

রাহানের রাগ কমে আসে একটু। ঝুমকো শেষমেষ কেঁদেই দেয়। রাহান জড়িয়ে ধরে ঝুমকোকে। ঝুমকো রাহানের বাহুডোর থেকে সরে আসতে চায়। কিল থাপ্পড় দেয় রাহানের বুকে। কান্নার শব্দ বাড়িয়ে দেয়।

ঝুমকো অভিমান করে কেদে আদুরেবিলাশী হয়ে বলে,

‘তুমি সবসময় না জেনে বুঝে কেনো এমন করো? কেনো ভুল বুঝো? আমাকে একটুও ভালোবাসো না আর। ও বুঝেছি… পুরাতন হয়ে গেছি তাই না। এখন আর আমাকে সুন্দর লাগে না। ভালো লাগে না আর তাই না?’

রাহান ঝুমকোকে গভীর ভাবে মিশিয়ে নেয় নিজের বুকের সাথে। প্রেয়সীর ছেলেমানুষী আদুরে অভিমান ভাঙানোর জন্য রাহান তখন বলে,

❝শোনো আমার ঝুম, তোমার প্রণয়ী দীপ্তির কাছে হার মেনে যাই আমি। তোমার আরশ কাপাঁনো সৌন্দর্যে বুক কাঁপিয়ে মুগ্ধতার গালিচা বিছিয়ে দেই আমি। তোমার ভাষায় এই কণ্টকময় পৃথিবীতে নেশাগ্রস্ত স্বপ্নঘোরে অপরিপক্ক পরিকল্পনায় অযাচিতভাবে ভালোবাসায় রাঙিয়ে দেই আমি।❞

চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here