বোনের রোমান্টিক সাইকো দেবর পর্ব -০২

#বোনের_রোমান্টিক_সাইকো_দেবর (পর্ব ২)
#লেখক_স্বপ্নীল_আজিম

“এখানে কি হচ্ছে এসব?
সায়ান রাগী সুরে বলে। জিসান তুলির পেছনে লুকায়।
” ও মাই গড আপনাকে রাগলে কতো কিউট লাগে। মনডায় চায় টুক কইরা একটা কিছ করে দেই😘

সায়ান এবার হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। জিসান আর নিশি সায়ানের মুখ দেখে লুকিয়ে হাসছে।

“তোমার কি বাড়ি ঘর নেই। রোজ এখানে কি করতে আসো?

” জিসান নিশিপু যাও তো

জিসান বলে
“কোথায় যাবো

” বুদ্ধু বাইরে যা

“কেনো?

” আমি এখানে কেনো এসেছি এটা তোর ভাইকে বুঝাবো।

“ওরা,কোথাও যাবে না

” যাও তারাতাড়ি

“যাবি না তোরা

জিসান নিশি দৌড় দেয়। তুলি এবার মুরা টেনে সায়ানের সমান হয়ে দাঁড়ায়। কি যেনো বলছিলেন

” এখানে কেনো এসেছো?

“রোমাঞ্চ করতে

সায়ানের গালে হাত দিয়ে বলে তুলি।

” রররোমমম

“তোতলানোর মতো কিছু করি নি। আর আমি এতোটাও খারাপ না যে বিয়ের আগেই এসব করবো। তবে কিছ টা করাই যায় কিন্তু লিপস্টিক নষ্ট হয়ে যাবে বলে কিছও করতে পারবো না

” বোইন মাপ কর আমায়
সায়ান হাত জোর করে বলে। তুলি সায়ানের কলার ধরে কাছে টেনে আনে
“কি বললি তুই আবার বল তো

” ববো
সায়ানের কথা শেষ করার আগেই তুলি টুক করে সায়ানের গালে পাপ্পি দেয়।

“এখন বল
” তুলি

তুলি সায়ানকে ছেড়ে দেয়। সায়ান হাপ ছেড়ে বাঁচে।
“নেক্সট টাইম বোন বললে কি যে করবো

” তুলি আমার গার্লফ্রেন্ড আছে

“সেই জন্যই তো আপনাকে আরও বেশি ভালো লাগে।

” তুমি বোকামি করছো

“আই নো

” ডিজগাস্টিং

“শুনুন না একটা কথা বলার ছিলো

সায়ান বিরক্ত হয়ে অন্য দিকে তাকায়। তুলি সায়ানের মুখটা নিজের দিকে ঘুরায়

” কাল আমরা বিয়ে করবো

“হোয়াট

সায়ান চিৎকার করে বলে। তুলি কানে হাত দেয়।

” চিল্লান কেন?

“আমি মনাকে ভালোবাসি। বিয়ে যদি করি তো মনাকেই করবো।

তুলি দাঁত কেলিয়ে সায়ানের দিকে তাকায়।
সায়ান বেলকনিতে চলে যায়।
” এই মেয়েটা এমন কেনো? পুরো পাগল করে দেবে। ভাল্লাগে না
সায়ান বিরবির করে বলে।

“কি করে ওনার মনে জায়গা করে নেবো? মন ভর্তি তো শুধু ওই খালাম্মা৷ আল্লাহ হেলেপ করো। খালি মিঠাইরে হেলেপ কইরো না। একটা এক্সকিডেন্ট থুক্কু এক্সিডেন্ট করাই দেও প্লিজ। বিয়ে তো কাল আমি সায়ানকে করবোই কিন্তু কি করে করবো। ভাববার বিষয়

তুলি এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরে সায়ানের রুমেই। অনেক রাত পর্যন্ত সায়ান মনার সাথে ফোনে কথা বলে রুমে এসে দেখে তুলি চার হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।

“এখন করবো কি এই আপদ বিদায় করবো কি করে। একে নিশির রুমে দিয়ে আসি।

সায়ান তুলিকে কোলে করে নিশির রুমে দিতে যায়। সায়ানের বাবা দেখে ফেলে আর কিছু পিক তুলে নেয়। তুলিকে নিশির রুমে দিয়ে এসে সায়ান অফিসের কাজ করতে বসে।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে তুলি সায়ানদের বাড়ির ছাঁদে যায়। গিয়ে দেখে জিসান দৌড়াদৌড়ি করছে।
” কি রে গরুর মতো দৌড়াচ্ছিস কেনো?

“জীম করছি

” আগে কবি তো। দেখ জিসান কি সুন্দর ফুল।

“ফুলের দিকে নজর দিস না। তুই বাড়ি যাবি না

“ইনডিরেকলি অপমান করলি তবুও আমি তোদের বাড়িতেই থাকবো। তোর ভাই একটা হেব্বি মাল। ওরে আমার চায়

” ব্রোর গার্লফ্রেন্ড আছে

“সো হোয়াট আমার ও বয় ফ্রেন্ড আছে।
আর শোন তোর ভাইয়ের গার্লফ্রেন্ড থাকুক আর যাই থাকুক আজ তোর ভাইরে আমি বিয়ে করেই ছাড়বো

” জাস্ট সি

“এখন চল আমার সাথে

” কোথায়

“ফুল চুরি করবো

” কিহহহহ

তুলি জিসানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। বাগানের বাইরে জিসানরে দাঁড় করিয়ে ভেতরে ঢুকে পরে। ফুল ছিঁড়তে ছিঁড়তে কারো সাথে ধাক্কা খায়।

“ইউ

” বেবি তুমি

“তুমি আমার গাছের ফুল ছিঁড়ছো😡

” আমি তো ভেবেছিলাম এটা ফুল গাছ। কিন্তু এটা যে আপনার গাছ বুঝতে পারি নি। কিন্তু এখন তো বুঝে গেছি

“তো

” এখন তো সব আমি একাই ছিড়ে নিয়ে যাবো

“একদম গাছে হাত দিবা না

” দিবোই দেখি আপনি কি করেন। ইহহহহ একটু পরে আমাদের বিয়ে হবে আর এখন ঢং দেখাচ্ছে। এতো সুন্দর একটা পরিবেশ কোথায় একটু রোমান্টিক কথা বলবে জড়িয়ে ধরবে তা না ইংরেজদের মতো ভাষণ শুরু করে দিছে।

“ডিজগাস্টিং। তুমি কি বকবক ছাড়া কিছু পারো না

তুলি একটু ভেবে বলে
” আমি রান্না করতে পারি খাবেন আপনি? ঠিক আছে আমি তাহলে আপনার জন্য মাংস রান্না করি। গরুর মাংস। এই আইটেম টা বেশ ভালো রান্না করি আমি। যদিও কেউ খেতে চায় না তবুও আমি জোর করে খাইয়ে দেই। আসছি

“শুনো
কে শোনে কার কথা তুলি দৌড়ে চলে যায় আবার ঝড়ের বেগে ছুটে এসে সায়ানকে হালকা জড়িয়ে ধরে
” লাভ ইউ
বলে আবার ঝড়ের বেগে চলে যায়।

“না জানি কপালে কি আছে

🌺🌺

কিচেনে তুলি গরুর মাংস রান্না করছে। সায়ানের মা আর নিশি হা করে তাকিয়ে আছে। কি যে রান্না করছে ওরা বুঝতে পারছে। রান্না প্রায় শেষের দিকে হলুদ দেয়।
আদর আর তুহিন (তুলির বাবা) তুলিকে নিতে আসে। এসেই তুলি রান্না করছে শুনে এক দৌড়ে চলে যায়। জিসান বেপারটা জানে না।

অবশেষে তুলির রান্না শেষ হয়৷ গরুর মাংস আর পোলাও। টেবিলে খাবার সার্ভ করে সায়ানের বাবা জিসান আর সায়ানকে ডেকে আনে। খাবারের চেহারা দেখেই সবার পেট ভরে গেছে।

মামমি তোমায় রান্না করতে কে বলেছে? সায়ানের বাবা বলে

” আপনার ছেলে। ও বললো হবু বউয়ের হাতে রান্না খেতে চায়। তাই তো রান্না করলাম।
তুলি হাসি মুখে উওর দেয়।

আমি মোটেও এসব বলি নি😡
সায়ান রেগে বলে

কি মিথ্যে বাদী রে বাবা

তোমাকে

সায়ান চুপচাপ খাও।
সায়ানের বাবা বলে

এসব খাওয়া যাবে?( সায়ান)

কেনো খাওয়া যাবে না (তুলি)

“ঠিক আছে তুমি খাও

আগে আপনারা খাবেন দেন আমি খাবো

আমি এমন অখাদ্য খাবো না
সায়ান চেয়ার থেকে উঠে যায়।

ঠিক আছে আপনার খেতে হবে না। আমার বেষ্টু খাবে

জিসান ঢোক গিলে

মাপ কইরা দে বোইন

জিসান এক দৌড়ে চলে যায়।

এসব করে নিজেকে বাঁদর প্রমাণ করছো। আমার মন তুমি পাবে না। কজ আমি মনাকে ভালোবাসি। বোঝো ভালোবাসার মানে?

সায়ান চলে যায়। তুলিও রাগ করে বাড়ি চলে যায়

বিকেল বেলা তুলি গভীর ভাবনায় ব্যস্ত। কি করে সায়ানকে বিয়ে করবে। বিয়ে তো সায়ানকেই করনে।
এমন সময় তুলির বাবা রুমে আসে।

” তুলি

“হুম বাবা

” কাল রাতে তুমি কোথায় ঘুমিয়েছিলে।
“সায়ানের রুমে

” লজ্জা করছে না নিরদিধায় বলতে।

“না তো

” কাল তুমি একদম কাজটা ঠিক করো নি

তুলি বাবার হাত ধরে বলে

“সরি বাবা আর এমন করবো না

” সায়ানকে ভালোবাসো

তুলি বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে

“আমি ওকে বিয়ে করতে চায় বাবা।

” কিন্তু

“তুমি তো আমার সব আবদার পূরণ করো প্লিজ লাস্ট একটা আবদার তোমার কাছে। প্লিজ বাবা

” সায়ান অন্য কাউকে ভালোবাসে

“তুমি পারবে কি না বলো। কোনো এক্সকিউজ না

” দেখছি

“কাল রাতে সায়ানের রুমে ছিলাম এটাকেই ইসু করো

” দেখছি

তুলির বাবা চলে যায়। তুলিও হাঁটতে বের হয় বাড়ির কাছেই নদীর পারে। নদী পারে বসে সায়ানের কথা ভাবছে তখন

এতো রোদ্দুর তুই এনে দিলি তাই
তোর বৃষ্টি আমি একটু পেতে চায়
মেঘলা হয়ে যাক আরও পাঁচটা বারো মাস
কোনো বিকেল বেলাতে তুই আমার হয়ে যাস

গানের সুরটা ভেসে এসে আবছা হয়ে যায়। তুলি উঠে দাঁড়ায়। তাকিয়ে দেখে সায়ান গিটার বাজাচ্ছে আর গান গাইছে আর মনা সায়ানের হাত ধরে হাঁটছে

“এই যে ক্রাশ দাঁড়ান। আমি আপনার পেছনে দৌড়াচ্ছি। ও ক্রাশ দাঁড়ান না। পা ব্যাথা হয়ে গেলো। ক্রাশের পায়ে জোর কতো রে

তুলি দৌড়ে সায়ানের সামনে যায়। সায়ান গান বন্ধ করে। তুলি হাঁপাচ্ছে

” কি চায় (মনা)

“আরে রাখেন আপনার কি চায় কখন থেকে দৌড়াচ্ছি। পা ভেঙে হেছে। ফোসকা পরে গেছে। এতো জোরে কেউ হাঁটে। আর আপনি কি কানা?

মনা রেগে বলে

” হোয়াট

“কানা না কি আপনি আমার ক্রাশের হাত ধরে হাঁটছেন৷ চোখে কম দেখেন? আমার ক্রাশ আমি হাত ধরে হাঁটবো তা না উনি হাত ধরে হাঁটছে। আর কখনো যেনো হাত ধরে হাঁটতে না দেখি

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here