#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_10
.
.
.
.
আবির সাদা শার্ট কালো প্যান্ট হাতে ঘড়ি পড়ে দাড়িয়ে যায় বলতে গেলে ওল পার্রফেক্ট….
তিশা : এসব আপনি কখন পড়লেন??? ( আবাক হয়ে)
আবির : কেন?? কিছু দেখতে পারো নি দেখে তার জন্য খুব আপসোস হচ্ছে তোমার …
তিশা : কি যাথা বলছেন?? আপনাকে দেখতে আমার বয়ে গেছে সরুন আমার সামনে থেকে…
আবির : যা বাবা এত রাগের কি আছে…. তুমি আমাকে দেখতেই পারে তাতে আমি রাগ করবো না বুঝলে…….
তিশা আলমারি থেকে ব্যাগ নিয়ে নেয়….
আবির : কোথায় যাচ্ছো তুমি??
তিশা : কলেজে যাচ্ছি আমি…. অনেক দিন হয়ে গেছে তো কলেজে যাই তার জন্য আজকে কলেজে যেতে হবে আমাকে….
আবির : তাহলে চলো আমি তোমাকে কলেজে দিয়ে আসি
তিশা : না আমি একাই যেতে পারবো…
আবির : জেদ করো না তিশা…. তোমার কিছু হয়ে গেলে
তিশা : আমার কিছু হবে না বুঝতে পেরেছেন আপনি…. আর আপনি চিন্তা করবেন না আমি পালিয়ে যাবো না যেহেতু আপনাকে আমি কথা দিয়েছি তাই আমি এই বাড়ি থেকে যাবো না….
আবির : আরে আমি জানি তুমি যাবে না কিন্তু আমি তোমাকে কলেজে দিয়ে আসি…. আর তুমি ব্রেকফাস্ট করেছো
তিশা : হে করেছি….. আর আমি কলেজে একাই যাবো আজকে …
আবির : ওকে ওকে তুমি কলেজে একাই যেও তবে গাড়ি নিয়ে যেও প্লিজ….
তিশা ঘর থেকে বের হয়ে যায় আবির ড্রাইভারকে ফোন করে….
আবির : তিশা কলেজে যাবে ওকে কলেজে পৌছে দিয়ে আসবে ….
আবির ফোন কেটে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে সাথে নিরবও ব্রেকফাস্ট করছে ….
আবির : নিরব তুই কালকে থেকে অফিসে জয়েন করবি…
নিরব : না ভাইয়া আমি এখন অফিসে জয়েন করতে পারবো না….
আবির : কেন পারবি না???
নিরব : আসলে ভাইয়া সবে মাএ দেশে এলাম……
আবির : তো কি হয়েছে কালকে থেকে তুই অফিসে জয়েন করবি বেশ শেষ কথা….
নিরব : ঠিক আছে ভাইয়া….
আবির : তর নামে যেই কোম্পানিটা আছে ওইটাতে তকে আমি কালকে এমডি হিসেবে জয়েন করাবো তাই কালকে রেডি হয়ে থাকবি….. আমি আর কত দিন দুটা কোম্পানিটা একসাথে সামলাবো বলতো এবার তো তকে সবকিছু বুঝে নিতে হবে নাকি…
নিরব : আচ্ছা ভাইয়া আমি কালকে রেডি হয়ে থাকবো…
আবির : ঠিক আছে আমি এখন আসি…
আবির বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে গিয়ে উঠে….
আবির : সোহেল তিশাকে কলেজে পৌছে দিয়েছো তো…..
সোহেল : না স্যার ম্যাডাম তো একাই চলে গেছে….
আবির : কি?? একা চলে গেছে মানে তুমি বলো নি গাড়িতে উঠার জন্য…
সোহেল : স্যার বলেছি আমি কিন্তু ম্যাডাম বলেছে ওনি নাকি আগে যেভাবে চলাফেরা করতো সেভাবে এখনও চলবে….
আবির : এই মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেলো না আগের ও আর এখনের ওর মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ আছে…. কেন বুঝতে চাইছে ও এখন আবির রহমানের স্ত্রী….
সোহেল : স্যার এখন কি করবো?? কলেজে যাবো নাকি অফিসে যাবে
আবির : কলেজে চলো….
সোহেল : আচ্ছা স্যার….
আবির তিশাকে ফোন করে….. তিশা একা একা রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে এমন তিশার ফোনটা বেজে ওঠে তিশা ফোনে তাকিয়ে দেখে আউট নাম্বার তিশা ফোনটা রিসিভ করে….
তিশা : হ্যালো কে বলছেন???
আবির : তুমি গাড়ি নিয়ে যাও নি কেন?? আর আমার নাম্বারটা তুমি এখনও সেভ করো নি কেন?? ….
তিশা : আমার ইচ্ছে তাই গাড়ি নিয়ে যাই নি….. আর আপনার নাম্বারও সেভ করে নি কোনো সমস্যা….
আবির : আগে বলো তুমি গাড়ি নিয়ে যাও নি কেন???
তিশা : বললাম তো আমার ইচ্ছে তাই গাড়ি নিয়ে যাই নি….
আবির : তিশা তুমি কেন বুঝতে চাইছো না তোমার যদি কিছু হয়ে যায় তো….
তিশার সামনে হঠাৎ করেই একটা গাড়ি এসে থামে গাড়ি থেকে একজন নেমে এসে তিশার কাছে আসে….
তিশা : আপনি এখানে….
আবির : তিশা কি হলো কে তোমার কাছে এসেছে তিশা হ্যালো তিশা…..
তিশা ফোনটা না কেটেই কান থেকে এনে হাতে রেখে দেয়….
তিশা : কি হলো এভাবে রাস্তার সামনে গাড়ি থামালেন কেন???
__আমার ইচ্ছে হলো তাই…..
তিশা : আপনার ইচ্ছে মানে…..
__তোমার হাজবেন্ড তোমাকে একা ছেড়ে দিলো যে…..
তিশা : তো আপনার সমস্যাটা কি???
এদিকে আবির খুব চিন্তায় পড়ে যায় তিশার সাথে যে লোকটা কথা বলছে তার কন্ঠ শুনে….
আবির : সোহেল তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাও……
সোহেল : ওকে স্যার….
তিশা : আপনার প্রবলেম কি বলুন তো??
__আমার কোনো প্রবলেম নেই তবে একটা আপসোস আছে তোমার মতো একটা সেক্সি মেয়েকে আমি বিয়ে করতে গিয়েও বিয়ে করতে পারি নি তবে নো প্রবলেম আমি জানি তুমি আবির রহমানেকে একদম পছন্দ করো না তাই তুমি চাইলে এই রবিন আহমেদের কাছে চলে আসতে পারো তোমার জন্য আমার বাড়ির দরজা সবসময় খোলো বেবি…..
তিশা : আপনার সাহস কি করে হলো একজন বিবাহিত মেয়েকে এসব কথা বলার….. আর আমি জানতাম যে আপনি একজন বাজে লোক মেয়েদেরকে নিয়ে আপনি ছিঃ বলতেও আমার ঘৃনা হচ্ছে তারপরও আমি আমার বাবার কথা রাখার জন্য আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি বাবা তো আর জানতো না আপনি কেম লোক…. আমি ভেবেছিলাম বিয়ের পর হয়তো আপনি ভালো হয়ে যেতে পারেন কিন্তু মানুষের চরিএ কোনো দিন বদলায় না যে তাই আপনার থেকেও আবির রহমান শতগুনেও ভালো…
আবির ফোনে সব গুলো কথা শুনছে….
রবিন : বাবা দুই দিনেই আবির রহমান এত ভালো হয়ে গেলো…. আমি তো জানতাম তুমি আবির রহমানকে অপছন্দ করো তাহলে দুইদিনে এমন কি করলো আবির রহমান যে একেবারে ভালোবেসে ফেললে তুমি ….
তিশা : আপনার প্রবলেম কি বলুন তো আমাকে রাস্তা দিন… না হলে কিন্তু আমি এখানে সব মানুষ ছড়ো করবো চিৎকার করে….
রবিন : আরে এত হাইপার হয়েও না আমি এখন চলে যাচ্ছি বেবি তবে এটা মনে রাখো যদি আবির রহমান তোমাকে কিছু না করতে পারে তাহলে আমার কাছে চলে আসবে…. কারন আমি সব কিছুই করতে পারি কারন আবির রহমানের মতো না যে অনুমতির জন্য অপেক্ষা কবো…..
তিশা খুব রাগ উঠছে রবিনের এমন কু কথা শুনে তিশা না পারছে সইতে না পারছে কিছু বলতে…
রবিন : আজকে আসি তাহলে ডার্নিং…. ( চোখ টিপ দিয়ে)
রবিন চলে যায়…. তিশা রবিনের এসব কথা শুনে কান্না শুরু করে রাস্তার মাঝে বসেই তিশা কান্না শুরু করে দেয় তিশার কান্না করা দেখে অনেক মানুষ ছড়ো হয়ে যায়……আবির তিশার কান্না শুনতে পায়…… সোহেল গাড়ি মানুষের ভিড় দেখে গাড়ি থামায়….
সোহেল : স্যার এখানে এত মানুষ কেন??? হয়তো ম্যাডাম ওই খানেই আছেন…….
আবির গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে ভিড়ের ভেতর ডুকে দেখে তিশা রাস্তায় বসে কান্না করছে আবির তাড়াতাড়ি করে তিশার কাছে যায়…. সোহেলও আবিরের পিছন পিছন যায়…..
আবির : তিশা কি হলো এভাবে কান্না করছো কেন???
তিশা : ওও আমাকে…..
তিশা কান্না করার জন্য কথা বলতে পারছে না…. আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরে আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে তিশাও আবিরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ….
আবির : তিশা প্লিজ শান্ত হও… কিছু হয় নি চলো আমার সাথে….
আবির তিশাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসায়…..
আবির : সোহেল বাড়িতে চলো…..
সোহেল : জি স্যার….
এমন সময় আবিরের ফোনে কল আসে আবির ফোনটা রিসিভ করে…
আবির : মিটিং কেন্সেল করে দাও….. আজকে কোনো মিটিং হবে না…..
( অনেক জোরে)
আবির তিশাকে গাড়ি থেকে বের করে কোলে তুলে ঘরে নিয়ে খাটে বসিয়ে দেয়….
আবির : প্লিজ জান এবার তো কান্নাটা থামাও….
আবির তিশার চোখের পানি মুজিয়ে দেয়….
আবির : তোমাকে যে কাদিয়েছে তাকে আমি শেষ করে দিবো….
তিশা আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে রাগে চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে কপালের রগটা রাগে ফুলে ওঠেছে…
আবির : তুমি বসো আমি আসছি…
তিশা : কোথায় যাচ্ছেন আপনি??
আবির : বললাম তো আমি আসছি….
আবির ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়…
তিশা চিন্তায় পড়ে যায় আবিরের হঠাৎ করে এমন রাগ দেখে….
তিশা : ওনি হঠাৎ এতটা রেগে গেলেন কেন?? তাহলে কি ওনি রবিনের সব কথা শুনেছে আমি তো তখন ফোনটা কাটতে ভুলে গেছিলাম তাহলে কি ওনি রবিনের কাছে গেছে…. কি হবে এখন ওনি যে খুব রেগে গেছেন….
আবির অনেক জোরে গাড়ি ড্রাইভ করছে রাগে আবিরের শরীর যেন ফেটে যাচ্ছে…. আবির রবিনের অফিসে ডুকে সোজা রবিনের কাছে গিয়ে রবিনের বুকে একটা লাথি মারে…..
আবির রবিনের কলার ধরে বলে….
আবির : তর সাহস কি করে হলো আমার স্ত্রীকে এসব বাজে কথা বলার??
রবিন আবিরের মুখে একটা ঘুসি মারে তাতে আবিরের ঠোটটা কেটে যায়…. আর আবির দুরে চিটকে পড়ে
রবিন : তর স্ত্রী ও আমার স্ত্রী হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু তুই ওকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিস বুঝলি…. আর আমি একশো বার এসব কথা বলবো যখনেই ওকে আমি রাস্তায় পাবো বুঝলি…
আবির : শু*রের বাচ্চা তকে আজকে আমি মাটিতে পুতেই ফেলবো যাতে তর ওই মুখ দিয়ে কিছু না বলতে পারিস….
আবির রবিনকে ধরতে যাবে সাথে সাথে কিছু লোক আবিরকে ধরে ফেলে….
রবিন : কি রে?? তুই আমাকে মারতে এসেছিস তাই না এবার তকে মেরে দেই আমি….
আবির : আমাকে ছেড়ে তো দেখ তর কি অবস্থা করি….
রবিন : আরে আমি জানি তুই কি করতে পারিস তাই তো তকে ছাড়বো না বুঝলি…. আর রইল তর বউয়ের কথা ওকে তো আমি আমার কাছে আনবোই…. আর তুই ওকে যে সুখটা দিতে পারিস ওইটা আমি ওকে দিবো….
আবির : কু*র বাচ্চা তকে আমি আজকে….
আবির রাগে সবাইকে ছুড়ে ফেলে দেয়… আবির রবিনকে গিয়ে মারতে শুরু করে রবিনও আবিরকে মারে….. আবিরকে কেউ কিছুতেই ধামাতে পারছে না….. এমন সময় নিরব আর তিশা আসে….
তিশা : আবির আপনি এসব কি করছেন?? প্লিজ থামুন…. ( চিৎকার করে)
আবির তিশার কোনো কথাই কানে নিছে না ও তো রবিনকে মারতে ব্যস্ত… তাই তিশা আবিরকে গিয়ে থামাতে চেষ্টা করে আবির তিশাকে রাগে ধাক্কা মারাতে আবির বুঝতে পারে ও তিশাকে ধাক্কা মেরেছে তাই আবির তাড়াতাড়ি করে তিশার হাত ধরে নিজের বুকে এনে ফেলে…. তিশা ভয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে….. আর তিশা খুব আবাক হয় আবির ওকে এভাবে বাচানোর জন্য…
তিশা : প্লিজ আবির এবার থামুন প্লিজ না হলে ও আজকে মারা যাবে….
আবির : আজকে তুই আমার হাত থেকে বেচে গেলি শুধু মাএ তিশার জন্য কিন্তু পরের বার তুই আর বাচবি না…. এখন আধমরা করেছি পরের বার একেবারে শেষ করে দিবো…….
আবির তিশার হাত ধরে রবিনের অফিস থেকে বের হয়ে যায় আবির গাড়িতে উঠে গাড়ি ড্রাইভ করছে আর তিশা আবিরের পাশেই বসে আছে আবিরের কপাল আর ঠোট থেকে রক্ত ছড়ছে…. আবিরের পিছনের গাড়িতে নিরব আর গার্ডরা আছে….. তিশা ভয়ে ভয়ে বলে
তিশা : আবির প্লিজ আপনি শান্ত হোন আমি জানি আজকে যদি আমি গাড়ি নিয়ে যেতাম তাহলে হয়তো এমন হতো না আইএম সরি আর এমন ভুল কখন হবে না….
আবির কোনো কথা বলছে না শুধু গাড়ি ড্রাইভ করেই যাচ্ছে আবির গাড়ি পার্ক করে তিশার সাথে কোনো কথা না বলে ঘরে চলে যায়….
নিরব : ভাবি তুমি প্লিজ ভাইয়াকে গিয়ে সামলাও আজকে ভাইয়া ভীষন রেগে আছে….
তিশা : হুম….
তিশা তাড়াতাড়ি করে ঘরে যায় তিশা ঘরে গিয়ে থেকে আবির সোফাতে বসে মাথা নিচু করে…… তিশা ফাস্ট এড বক্স এনে আবিরের কাছে এসে বসে তুলাতে সেবলন লাগিয়ে আবিরের ক্ষত স্থানে লাগতে যাবে সাথে সাথে আবির তিশার হাত ধরে ফেলে….
আবির : দরকার নেই এসব আমার….
তিশা : কি বলছেন আপনি এসব?? না হলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না….
আবির : আমার রক্ত পড়লে তাতে তোমার কি??
তিশা : আমারেই সব বুঝতে পেরেছেন আপনি বেশি জেদ করবেন না আমাকে সেবলন লাগতে দেন………
তিশা ধমক দিয়ে কথাটা বলে আবিরকে…. আবির তো তিশার এমন রুপ থেকে আবাক….. তিশা আবিরের ক্ষত সাথে সেবলন লাগতে আবির ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে….
তিশা : সরি সরি…. খুব জ্বালা করছে তাই না ঠিক আছে আমি ফু দিছি….
তিশা আবিরের কপালের ক্ষত স্থানে সেবলন লাগাছে আর ফু দিছে….. আবির তিশার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে আবিরের প্রতি ওর এমন কেয়ার করার জন্য…. তিশা আবিরের মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেয়….. তিশা আবিরের ঠোটের কোনাতে ঔষধ লাগাছে আর ফু দিছে তিশা আবিরের এত কাছে চলে এসেছে যে বুঝতেই পারি না…. আবিরের চাওনি দেখে তিশা বুঝতে পারে ও আবিরের অনেক কাছে চলে এসেছে…. তিশা চলে যাবে এমন সময় আবির তিশার হাত ধরে নিজের কোলে এনে বাসায়….
তিশা : কি করছেন ছাড়ুন আমাকে???
আবির : একটু আগে তুমি কি বলেছিলি??
তিশা : কি বলেছি???
আবির : এটাই যে আমার শরীরের থেকে রক্ত ছড়লে তোমার যায় আসে….. কেন তোমার যায় আসে আমার শরীর থেকে রক্ত পড়লে?? তুমি তো আমাকেই পছন্দই করো না তাহলে আমার শরীর থেকে রক্ত পড়লে বা আমি মরলে…..
আবিরের মুখে মরার কথা শুনে তিশা আবিরের মুখ চেপে ধরে…
তিশা : প্লিজ এমন কথা বলবেন না…..
আবির তিশার হাতটা মুখ থেকে সরিয়ে বলে….
আবির : কেন বলবো না?? আমি মরলে তুমি তো খুশিই হবে তাই না কারন আমি মরলে তো তুমি আমার কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে…..
তিশা : প্লিজ আমাকে ছাড়ুন…..
আবির : না আগে বলো আমার কিছু হলে তোমার কি যায় আসে….
তিশা আবিরের কোল থেকে জোর করে ওঠে বলে….
তিশা : তবে শুনুন আমার কি যায় আসে……( চিৎকার করে)
#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Writer_Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_11
.
.
.
.
তিশা : আমি একজন মানুষ তো তাই আমার চোখের সামনে একজন মানুষ যদি রক্তাক্ত হয়ে বসে থাকে তাহলে আমার উচিত তাকে সাহায্য করা তাই না…. তাই আপনি এটা ভাববেন আপনাকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি বলে আপনাকে আমি কেয়ার করছি….. যে কেউ হলেও আমি এটাই করতাম এটা যদি কোনো রাস্তার মানুষ হতো তাও করতাম…..
আবির : আমি তো একবারও বলে নি তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো….. আর আমি জানি তুমি আমাকে ঘৃনা করো কোনো দিন হয়তো আমাকে ভালোবাসবেই না….. তাই আমাকে নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না তুমি বরং এটা চিন্তা যারা রাস্তার মাঝে যারা রক্তাক্ত হয়ে বসে আছে তাদের কাছে গিয়ে ওদেরকে সাহায্য করো আমার তোমার সাহায্যের কোনো দরকার নেই…..
আবির ওয়াসরুমে চলে যায় ফ্রেস হওয়ার জন্য…. আবিরের কথাগুলো সব তিশার মাথার উপর দিয়ে গেলো….
তিশা : একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দিলো না…. কি আজব লোক….
সারাদিন আবির বাড়িতে থাকে অফিসের সকল কাজ করে….. আর অন্য দিকে রবিন রাগে ফুসছে আর এটা ভাবছে কি করলে ওর শরীরের রক্ত ঠান্ডা হবে….
রবিন : তকে আমি ছাড়বো না আবির কিছুতেই না খুব শখ না তিশার ভালোবাসা পাওয়ার তর শখ আমি মিটাছি এমন কাজ করবো যে যাতে করে তিশা তকে আরও বেশি ঘৃনা……
রাতে……
তিশা ওয়াশরুম থেকে এসে দেখে আবির বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে আর হাসছে…….
তিশা : ( কি এমন ফোনে দেখছে রে বাবা যে ৩২ ফাটি দাত ভাসিয়ে হাসছে)
আবির তিশার দিকে তাকাতেই তিশা মুখ ভেংচি কেটে চলে যায় ড্রেসিং টেবিলের কাছে….. তিশা চুল আছড়াছে আর আয়নার ভিতরে আবিরের দিকে তাকাচ্ছে….
তিশা : ( ব্যাপার কি সকালের ওই ঘটনার পর থেকে তো বজ্জাতটা আমাকে আর জ্বালচ্ছে না)
তিশা আবিরের কাছে যায়….
তিশা : উঠুন….আমি ঘুমাবো
আবির : ঘুমাও… না করছে কে তোমাকে??
তিশা : মানে আপনি না উঠলে আমি ঘুমাবো কি করে??
আবির : আমি আজ থেকে আমার খাঠে ঘুমাবো….
তিশা : তাহলে আমি কোথায় শুবো??
আবির : এটা আমি কি জানি?? আমি তো আমার এত সুন্দর নরম তুলতুল বিছানা ছেড়ে সোফাতে শুতে পারবো না তাই তুমি বরং একটা কাজ করো সোফাতে গিয়ে ঘুমাও…..
তিশা : হ্যা….
আবির : হ্যা না হুম… যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পড় আমিও ঘুমিয়ে পড়ি…
তিশা : কিন্তু আমি সোফাতে ঘুমাতে পারি না….
আবির : এটা তোমার প্রবলেম আমার না…. আর সোফাতে ঘুমাতে যদি এতই প্রবলেম হয় তাহলে আমার পাশে এসে শুয়ে পড়ো…. আমি তো এতটাও মোটা না যে সারা বিছানা দখল করে আছি….
তিশা : আপনার পাশে আমি শুবো ইমপসিবল…..
আবির : ঠিক আছে শুতে হবে না তোমাকে আমার পাশে….. এখন তুমি যাও তো এখান থেকে আমার কানের কাছে এসো এত কথা বলো না আমাকে একটু ঘুমাতে দাও এমনি আমি অসুস্থ তাই আমাকে টাইম মতো ঘুমাতে হবে………
তিশা আর কিছু না বলে চুপচাপ গিয়ে সোফাতে শুয়ে পড়ে…. আবির উকি দিয়ে দেখে তিশা সোফাতে ভালো করে শুয়ে ঘুমাতে পড়ছে না শুধু এপাশ ওপাশ করছে…..
আবির : ( জানি তুমি সোফাতে ঘুমাতে পড়বে না আমি যদি ভুল ভেবে না থাকি তাহলে তুমি আজকে আমার পাশেই ঘুমাবে জান এখন শুধু অপেক্ষার পালা)
তিশা শুয়া উঠে বসে দেখে আবির শান্তিতে ঘুমাচ্ছে…
তিশা : ( শালা বজ্জাতের বাচ্চা আজকে তর জন্য শান্তিতে একটু ঘুমাতেও পারছি না আমি জানি তো এটা তুই ইচ্ছে করে করেছিস যাতে আমি শান্তিতে ঘুমাতে না পারি নিজে তো খুব আরাম করে ঘুমাচ্ছে ইচ্ছে তো করছে তর উপর পানি টেলে দেই যাতে ঘুমাতে না পারিস……. আচ্ছা একটা কাজ করলে কেমন হয় এখন গিয়ে বিছানাতে শুয়ে পড়ি পরে সকাল হওয়ার আগেই সোফাতে এসে শুয়ে পড়বো তাহলে তো বজ্জাতটা বুঝতেই পারবে না আমি সোফাতে ঘুমিয়েছি নাকি খাঠে তিশা তর বুদ্ধির তুলনা হয় না )
তিশা সোফা থেকে আস্তে আস্তে করে উঠে পা টিপে টিপে আবিরের কাছে গিয়ে আবিরের মুখের উপরে হাত নাড়িয়ে দেখে আবির জেগে আছে কি না….
তিশা : ( পুরা গভীর ঘুমে আছে ঘুমা ঘুমা ভালো করে ঘুমা)
তিশা আস্তে আস্তে বিছানাতে শুয়ে পড়ে…… অন্য দিকে আবির বুঝতে পারে যে তিশা ওর পাশে এসে শুয়েছে….. আবির এতক্ষন ঘুমের ভান ধরে শুয়ে ছিল….. তিশা শুতে না শুতেই ঘুম আবির তাকিয়ে দেখে তিশা ঘুমে কাতর হয়ে গেছে…..তিশার মুখে উপর পড়ে থাকা ছোট চুল গুলো আস্তে আস্তে করে সরিয়ে দেয়….
আবির : ( একদিন না একদিন তুমি আমাকে ঠিক ভালোবাসবেই সুইটর্হাট সেই দিনটা বেশি দুরে নেই আজকে সকালে আমাকে ওই অবস্থায় দেখে তোমার চোখ মুখ দেখে বুঝতে পেরেছি তোমার মনে আমার জন্য কিছুটা হলেওফিলিংস তো অব্যশই আছে কিন্তু সেটা হয়তো তুমি বুঝতে পারছো না…..একদিন তুমি ঠিকেই বুঝতে পারবে তখন তি তুমি আমার কাছে আসবেই)
আবির তিশার কপালে একটা কিস করে তিশার ডান হাতটা জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে……
সকালে তিশা বুঝতে পারে ওকে কেউ জড়িয়ে ধরে আছে তিশা আস্তে আস্তে করে চোখ খুলে তাকিয়ে যা দেখে তাতে তিশার চোখ কপালে….. আবির তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে তিশা আবিরের কাছ থেকে ছুটার অনেক চেষ্টা করছে যত তিশা ছুটার চেষ্টা করছে তত আবির তিশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরছে….
তিশা : এই যে শুনছেন ছাডুন আমাকে….. উফফ এতো দেখা যায় কুম্ভকর্নের মতো করে ঘুমাচ্ছে….. কোনো কথাই কানে যাচ্ছে না যত ডাকছি তত ঘুমাচ্ছে….. আরে ভাই ছাড় আমাকে একটু ধ্যাত অসহ্য
তিশার চোখ যায় আবিরের মুখের দিকে বাতাসের কারনে আবিরের ছোট ছোট চুল গুলো কপালে এসে পড়ছে…… আবির ছোট বাচ্চাদের মতো করে তিশাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে….,.. আবিরের দিকে তাকিয়ে তিশা অজান্তেই ঠোটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে তিশা আস্তে আস্তে করে আবিরের কপালে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দেয় তিশা চুল সরিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে আবির চোখ মেলে তাকায়…… তিশা সাথে সাথে নিজের হাতটা নিয়ে আসে….
আবির : কি করছিলে??
তিশা : কই কিছু করছি না তো ছাড়ুন আমাকে….
আবির : তুমি তো সোফাতে শুয়ে ছিলে রাতে তাহলে এখানে আসলে কি করে??? ( দু ভ্রু নাচিয়ে)
তিশা : ( এই রে এখন কি বলি ধ্যাত)
আবির : কি হলো বলো???
তিশা : আগে ছাড়ুন আমাকে তারপর বলছি….
আবির : না আগে বলল তুমি এখানে কখন এসেছো??? আচ্ছা তুমি কি আমার সাথে একসাথে থাকার জন্য এখান এসে শুয়েছো…..
তিশা : কি??? আপনার সাথে আমি শুয়ার জন্য এসেছি বয়ে গেছে আমার বুঝলেন…..
আবির : তা তো দেখতেই পাচ্ছি….. কে এখানে এসে শুয়েছি????
তিশা : এই ছাড়ুন তো আমাকে…..
আবির : ছাড়বো না কি করবে তুমি???
তিশা : কি করবো তাই না?? ঠিক আছে কি করছি দেখাচ্ছি…..
তিশা আবিরের হাতে কামড় বসিয়ে দেয় আবির তিশাকে ছেড়ে দিতেই তিশা উঠে পড়ে…..
আবির : আরে এটা তুমি কি করলে????
তিশা : ভালো করে বলেছিলাম ছেড়ে দেওয়ার জন্য তখন তো ছাড়লেন না…… তাই কামড় দিলাম…
আবির : উফফ আজকে সকালে এমন একটা গিফট পাবো ভাবতেই পারি নি….
তিশা : গিফট কিসের গিফট??
আবির : এই তো এই মাএ তো গিফটা তুমি আমাকে দিলে আমাকে ….. তোমার দেওয়া লাভ বাইট
তিশা : হোয়াট?? আমি কখন লাভ বাইট দিলাম আপনাকে??? আমি তো আপনাকে কামড়….. ( কামড় কথাটা বলে থেমে যায়)
আবির : হে কামড় এটাই হলো লাভ বাইট আমার বউয়ের দেওয়া প্রথম ভালোবাসার চিহ্ন…..
আবির তিশার কামড় দেওয়ার জায়গাতে একটা কিস করে…..
তিশা : আপনি সত্যিই একটা পাগল……
তিশা আর কিছু না বলে ওয়াসরুমে চলে যায়…..
আবির : হে আমি পাগল শুধু তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য পাগল ….. ( জোরে)
তিশা ওয়াসরুমে ডুকে আবিরের এসব কান্ড মনে করছে আর হাসছে….
তিশা : সত্যিই একটা পাগল লোক……
#চলবে
#চলবে
গল্পের কোনো কথায় যদি আপনাদের খারাপ লেগে থাকে তাহলে আমাকে ক্ষমা করবেন প্লিজ….. আর গল্প কেমন হচ্ছে প্লিজ বলবেন…….