#i_m_mafia_lover
#part_47
#sabiha_kh
গান গাইতে গাইতে ইমার গালে ইশান আলতো ভাবে হাত রাখে ইমা নিজের আবেগ আর আটকাতে পারে না । ইশান কে জাপটে ধরে কান্না করতে লাগে।।।
”
”
”
”
ইশান – I love you ইমা।। I love you so much।।
ইমা – সত্যি তুমি এসেছো ইশান।। (কান্না সুরে)
ইশান – হম আমি এসেছি ইমা।।
ইমা ঈশানের কথায় আরো শক্ত করে ইশান কে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগে।।
ইমা – আমাকে আর ছেড়ে যাবে না তো তুমি?? (কান্না সুরে )
ইশান – কক্ষনো না যাবো না ।।। আমার দিকে তাকাও।।
ইমা ইশান কে ছেড়ে কান্না ভরা চোখে ঈশানের দিকে তাকাই ।
ইশান – কেনো আমাকে ছেড়ে চলে এসেছো বলোতো??
ইমা কান্না সুরে বলে – sorry সব কিছুর জন্য। আমি তোমাকে কখনো বুঝিনি ইশান । আমাকে তুমি প্লিজ ক্ষমা করে দাও ।সব কিছুর জন্য আমাকে ক্ষমা করে দাও।।।
ইশান মুচকি হেসে দুই হাত দিয়ে আলতো করে ইমার গাল ধরে বলে – তুমি হলো এই ইশানের রানী।। তোমার মুখে ক্ষমার কথা মানায় না।। আর এই চোখে জল টাও মানায়না।। (ইমার চোখ মুছে দিয়ে মুচকি হেসে বলে) ভুল আমারও ছিল ইমা।। আর এর জন্য তোমার রাগ টাও জায়েজ ছিল।।
ইমা কাপা হাতে ঈশানের চোখ মুখ স্পর্শ করে আর কাদতে থাকে ।
ইমা – তোমাকে ছাড়া বাঁচব না ইশান।। তোমাকে ছাড়া আর চলতে পারব না।।। আমাকে ছেড়ে আর যেও না প্লিজ।।( কান্না সুরে)
ইশান – তোমাকে ছেড়ে আর কোথাও যাবো না সত্যি বলছি। তুমি আর কেঁদো না তো । ( বলে ইশান ইমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে ।) এখন চলো তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।। (মুচকি হেসে)
ইমা – কি সারপ্রাইজ??? (বিস্মিত সুরে)
ইশান – আগে চলো নিজের চোখেই দেখো ।
(ইশান ইমাকে নিয়ে গাড়িতে উঠে ।।। এবং চলে যায়।। )
কিছুক্ষণ পর,,,,,,
ইশান কিছুদূর এসে গাড়ি থামিয়ে দেই।। এবং গাড়ির হেড লাইট বন্ধ করে দেই ।।
ইমা চারপাশ তাকিয়ে দেখে কেমন ঘুটঘুটে অন্ধকার।।। ইমা বিস্মিত চোখে ঈশানের দিকে তাকিয়ে বললো –
ইমা – কি হলো ??? আমরা কি চলে এসেছি?? কিন্তু চারপাশ এত অন্ধকার কেনো!!!
ইশান ইমার হাতের উপর আলতো করে হাত রাখে ।। এবং মায়া ভরা চোখে ইমার দিকে তাকাই।।।
ইমা নরম সুরে আসতে বলে – কি হয়েছে ?? এভাবে কি দেখছো??
ইশান মুচকি হেসে বলল – জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত তুমি আমার জন্য একটা স্পেশাল মানুষ ছিলে। আর আজো আছো।।। আমার যখন স্মৃতি ছিল না তখনও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম তুমি কি জানো??
ইমা মাথা নিচু করে ধীর সুরে বলল – হম জানি।।।
ইশান অবাক চোখে ইমার দিকে তাকিয়ে বলে – সত্যি জানতে??
ইমা – হম। তুমি তো জানো আমি তোমার চোখ পড়তে পারি।। আমি তোমার চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমাকে ভালোভেসে ফেলেছো।।
ইশান – যখন বুঝেছ আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি তাহলে কেনো দেশে ফিরে এসেছ??
ইমা – কারণ আমি আমার ইশান কে চেয়েছি।। যার আমাদের ফেলে আসা সব সুন্দর স্মৃতি গুলো মনে আছে।। কিন্তু তোমার মনে ছিল না।। তুমি আমার কাছে অপরিচিত এক ইশান ছিলে।।। ইশান আমি সবসময় চেয়েছি আমাদের সব স্মৃতি গুলো গছিয়ে রাখতে।।। যেনো শেষ বয়সে যখন মৃত্যুর দিন গুনবো তখন দুজনে বসে নিজেদের জীবনের কাটানো ভালো সময় গুলো মনে করে হাসবো এই জন্য ।।
ইশান ইমার কোথায় আবেগী হয়ে ইমা কে জড়িয়ে ধরে।।
ইশান – I love you ইমা।
ইমা – I love you too।।।
ইশান ইমাকে ছেড়ে বলে – চলো আমার সাথে।।
বলে ইশান গাড়ি থেকে নেমে ইমার দিকের গাড়ির দরজা খুলে । এবং ইমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।।
ইমা – কোথায় যাবো?? কি অন্ধকার এইজায়গাটা।।
ইশান – আমি আছি তো।। এসো।। (মুচকি হেসে)
ইমা ঈশানের হাত ধরে গাড়ি থেকে নামে।।। ইশান ইমাকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করে এমন সময় ধাপ ধাপ ধাপ করে ডেকোরেশন টুনি বাল্ব গুলো জ্বলে উঠে যা রাস্তার দুই পাশে গাছের উপর সাজানো।।। ইমা অবাক হয়ে যাই । ইমা ঈশানের দিকে অবাক চোখে তাকাই।।। ইশান মুচকি হেসে হাত উচুঁ করে জোরে একটা চুটকি বাজায় সাথে সাথে আরো লাইট জ্বলে উঠে।।।
ইমা সামনে তাকাই দেখে বিশাল বড় ফুলের বাগান। তার মাঝখানে চার সাদা পিলার বিশিষ্ট ছাউনী পুরাটাই সাদা রঙের গ্লাডিওলাস ফুল এবং হালকা গোলাপি রঙের পর্দা দিয়ে ডেকোরেশন করা ।।। ছাউনীর মাঝখানে সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো একটা টেবিল । টেবিলের উপর ফুল দিয়ে সাজানো ।।
ইশান ইমার হাত শক্ত করে ধরে বলে – এসো।। ইমা অবাক হয়ে সব কিছু দেখতে থাকে।। এবং ঈশানের সাথে যায়।। ছাউনীর কাছাকাছি এসে ইশান ইমার হাত ছেরে দিলে ইমা ঈশানের দিকে তাকাই।
ইশান – যাও ইমা।।। (মুচকি হেসে)
ইমা মুচকি হেসে ছাউনির ভিতরে যেতেই সবাই একসাথে বলে উঠে happy birthday to you,,,,,!!! ইমা চমকে উঠে।।। এবং পিছনে তাকাই দেখে – ইসমা, জনি, রোকসানা ,আকাশ, কেক নিয়ে একসাথে আসছে।।। এবং Happy birthday to you বলছে।।।
ইমা এত বেশি সারপ্রাইজ হয় যে খুশিতে কেঁদে ফেলে।।। ইসমা তার মাকে খুশি তে কাদতে দেখে দ্রুত এসে ইমা কে জড়িয়ে ধরে।।
ইসমা – happy birthday আম্মু।।
ইমা ইসমার কপালে চুমু দিয়ে বললো – thank you মামুনি ।।। (কান্না সুরে)
ইসমা – কি ভেবে ছিলে আমি তোমার জন্মদিন ভুলে গিয়েছি???
ইমা ঠোঁট ফুলিয়ে হেসে বললো – হম
ইসমা জোরে হেসে বললো – তোমার জন্মদিন ভুলতে পারি?? বাবা তো আমাকে মানা করেছে তোমাকে বার্থডে উইশ করতে। আসলে আমরা তোমার জন্য প্লান করছিলাম।।
ইমা বিস্মিত হয়ে বললো – তার মানে কি ?? আমি সত্যি কিছু বুঝতে পারছি না ।
আকাশ – আমি বলছি ম্যাডাম।।। আগে আমার পক্ষ থেকে জন্মদিনের গিফট টা রাখুন । (ইমার দিকে ফুল আর ইমার ডাইরি এগিয়ে ধরে বললো )
ইমা তার ডাইরি দেখে অবাক হয়ে গেলো।।
আকাশ – জানি কি ভাবছেন?? জী ম্যাডাম এই ডাইরির কারণে স্যার এবং আমরা সবাই এখানে ।।।
ইমা আকাশের হাত থেকে ডাইরি নিয়ে বিস্মিত সুরে বললো – কিছু বুঝলাম না।।
ইশান – এই ডায়রি টা তুমি পাচ্ছিলে না তাই তো ।
ইমা – হম।
ইশান – এই ডায়রিটা আমি তোমার রুম থেকে নিয়ে এসেছিলাম ।।( ইমা বিস্মিত চোখে ঈশানের দিকে তাকাই) তবে ডায়রিটা পড়িনি ভুলে গিয়েছিলাম ডাইরির কথা। যেদিন তুমি দেশে চলে আসো সেদিন তুমি আকাশ কে এসএমএস করেছিলে এবং ডায়রি টার কথা সেখানে লিখেছিলে।। তারপরই আমার মনে পড়ে ডাইরির কথা। আমি ডাইরি বের করে পড়তে শুরু করি ।। পড়তে পড়তে হঠাৎ মাথা টা চাপ ধরে আসে আর সব কিছু মনে হতে লাগে।।। আমি যে কখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম আমি বলতে পারবো না।।।
আকাশ – স্যার তারপর থেকে আমি বলছি।।।
ইশান – ok বলো।।
আকাশ – এদিকে আমি অফিসে গিয়ে মোবাইল পায়নি তাই ঘুরে এসেছি স্যারের বাসায় । দেখি স্যার মেঝেতে পরে আছে । আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।। আমি হসপিটালে কল করি অ্যাম্বুলেন্স এসে স্যার কে নিয়ে যায়।।।। একদিন পর স্যারের জ্ঞান ফিরে।।। স্যার যখন আমাকে আকাশ বলে ডাকে আমি তখনই বুঝতে পেরেছি স্যারের সব মনে পড়ে গিয়েছে।।। আমি যে কতো খুশি হয়েছিলাম আপনাকে বলে বুঝাতে পারবো না ম্যাডাম।। স্যার আমাকে বলেছিল আপনার সাথে কথা বলবে। । কিন্তু আমি মানা করেছিলাম। আমি চেয়েছি আপনি স্যারকে নিজের চোখের সামনে দেখুন। । ।
– আমি কিছু বলতে চাই।।।
সবাই পিছনে তাকাই দেখে লিলি দাড়িয়ে আছে হাতে ফুল নিয়ে।। ইমা লিলি কে দেখে আরো অবাক হয়ে যাই।।।
ইমা ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে – লিলি এইখানে!!!!
ইশান – হম আজই এসেছে।। শুনো ও কি বলতে চায়।।।
লিলি ইমার কাছে এসে ইমার দিকে ফুল ধোরে বলে – Happy birthday।। (মুচকি হেসে)
ইমা সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে ফুলটা নিলো।।
ইমা – thank you।।।
লিলি – আমি জানি তুমি আমাকে দেখে খুব অবাক হচ্ছো ।আসলে আমি এসেছি তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে।। ।
ইমা – ক্ষমা কেনো??( বিস্মিত সুরে)
লিলি – আমি তোমাদের মাঝে চলে এসেছিলাম।। বিশ্বাস করো তোমাদের ভিতরের সম্পর্কের কথা যদি জানতাম তাহলে আমি এমন কিছু করতাম না । সেদিন ইশান চলে যাওয়ার পর আমার অনেক রাগ হয়েছিল। আমি পার্টিতে ফিরে না গিয়ে নিজের ঘরে চলে গিয়েছিলাম বাবা সবাইকে বিদায় দিয়ে আমার রুমে আসে আমাকে ডাকে কিন্তু আমি বাবার সাথে কোন কথা বলি না । একদিন পর আমি মনে মনে ভাবি ঈশান এর ব্যাপারে আমার বাবার সাথে কথা বলা উচিত । তাই আমি কথা বলতে বাবার রুমে যাচ্ছিলাম হঠাৎ বাবাকে ফোনে কথা বলতে শুনি ইশানের ব্যাপারে।। ইশান DW কোম্পানির মালিক তাই বাবা আমার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়েছে।।। বাবা অনেক বড় প্ল্যান করছিল।। আমি কথা গুলো শুনে অনেক অবাক হয়।। তাই আমি ঈশানের সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে ওর বাড়িতে যায়। ঈশান কে বাসায় পাইনা।।। তারপর জানতে পাড়ি ঈশান কে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি আর দেরি না করে হসপিটালে যায়। আমি আকাশকে ঈশানের ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে শুনি ডাক্তার বলে ঈশান তার সব স্মৃতি ফিরে পেয়েছে এটাতে আমি বুঝতে পারি বাবা যেই কথাগুলো বলছিল সবই সত্যি তারপর আমি আকাশকে জিজ্ঞেস করি।।। আকাশ আমাকে সব কিছু খুলে বলে ইশান আর তোমার ব্যাপারে।।। সত্যি তখন আমার নিজের কাছে নিজেকে এতো ছোট মনে হচ্ছিল কি বলবো আমি সত্যি দুঃখিত ।
ইমা মুচকি হেসে বলল – it’s ok সব কিছু ভুলে যাও।।। এগুলো হওয়ার ছিল তাই হয়েছে।।। যাইহোক সব তো বুঝালাম কিন্তু তোমরা দেশে এসেছো কবে বলো তো?? (ইশান আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে)
আকাশ – ১৫ দিন হয়েছে।।। আমি বলেছিলাম স্যারকে চলুন আমরা সরাসরি ম্যাডামের বাড়িতে যাই । স্যার আমাকে মানা করে । এবং আপনার জন্মদিনের কথা বলে। সেইদিনই আমাদের রাস্তায় জনির সাথে দেখা হয় । তারপর জনি আমাদের ইসমার সাথে ইসমার স্কুলে নিয়ে গিয়ে দেখা করায়।।
ইমা ইসমার দিকে তাকিয়ে বলে – তুমি আমাকে এই কথা বলনি কেন ইসমা??
ইশান – আমি মানা করেছিলাম।।। যেনো তোমাকে কিছু না বলে ।।।
জনি – তারপর তো আমরা সবাই মিলে আপনার জন্মদিনের প্ল্যান বানায়।।।
ইমা – তোমরা সবাই সত্যি আমাকে অবাক করলে। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছি ইসমার জন্য ।। আমার মেয়ের ভাব দেখে আমি ধরতেও পারলাম না ও তার বাবার সাথে দেখা করেছে। । (হেসে বললো )
ইসমা লজ্জা পেয়ে দৌড়ে ঈশান কে গিয়ে জড়িয়ে ধরে ।।
ইশান – আমার মেয়ে টা লজ্জা পেয়েছে।। (ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বললো )
রোকসানা ইমার কাছে গিয়ে ইমার হাত ধরে আনন্দিত সুরে বলে – ম্যাডাম আজ থেকে সব কষ্টের দিন শেষ এখন শুধু হাসি খুশির দিন।। এখন চলুন কেক কাটবেন।।
ইমা – ok সবাই এসো । (হেসে)
ইমা টেবিলের উপর রাখা কেক এর সামনে এসে দাড়াই। লিলি গিয়ে ঈশানের হাত ধরে ইমার পাশে দ্বারা করাই। আকাশ ইসমাকে ইশান ইমার মাঝে নিয়ে এসে দারকরাই। ইমা ঈশানের দিকে তাকাই ইশান ইমার দিকে তাকাই।।
এমন সময় আকাশ তাদের ছবি তুলে এবং বলে – কমপ্লিট ফ্যামিলি।।।
ইসমা ইশান ইমার হাত ধরে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হেসে মনে মনে বলে – আমার আজ বাবা মা দুজনাই আছে।। আজ আমি সব থেকে বেশি খুশি।
তারপর ইমা কেক কেটে ইসমা কে ইশান কে আর সবাইকে কেক খাইয়ে দিলো। সবাই অনেক মজা করে।। আনন্দ করে। ইশান ইমা একসাথে দাড়িয়ে সবার মজা করা দেখে।। ইশান ইমার কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে কিছু বলে ।। ইমা মুচকি হেসে ঈশানের হাত ধরে সেখান থেকে বের হয়ে অন্যদিকে যায়।।।
ইমা ইশান হাঁটতে হাঁটতে থাকে ইমা ঈশানের হাতের বাযুর সাথে মাথা ঠেকিয়ে বলে – thank you so much।। এতো সুন্দর সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।।
ইশান মুচকি হেসে ইমার হাত ঠোঁটের কাছে নিয়ে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে।।
ইশান – তুমি কি জানো তুমি আমার জন্য সারপ্রাইজ!! আমি তোমার জন্য যায় করি তাই আমার কাছে কম ইমা।।। তোমার হাসি টা আমার কাছে ভীষণ দামী।।।
ইমা ঈশানের হাতের বাজু থেকে মাথা সরিয়ে
একটু জোরে বললো – তোমার তো তাই । সব সময় একই কথা বলো ।।
বলে ঈশানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে আগে আগে চলে যেতে লাগে। ইশান হেসে দ্রুত গিয়ে ইমার হাত ধরে নিজের দিকে টান দেয়।। ইমার ঈশানের শরীরের সাথে ধাক্কা লাগে।।। ইশান ইমার চোখের দিকে মায়াবী চোখে তাকাই। ইমা ও ঈশানের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।।
ইশান আসতে আসতে ইমার কানের কাছে এগিয়ে এসে ঘন শ্বাস ছাড়ে ।। সাথে সাথে ইমার শরীরের ভিতর কেমন একটা অদ্ভুত ফিলিংস কাজ করে।
ইশান ফিস ফিস করে বলে – তুমি জানো আমার বুকের ভিতর এখন কি হচ্ছে??? তোমার হাত টা দাও।।
ইশান ইমার হাত নিয়ে তার বুকের বাম পাশে রাখে।।। ইমা চোখ বন্ধ করে ঈশানের হার্ডবিট অনুভব করে।।
ইশান দেখে ইমা চোখ বন্ধ করে আছে।।। ইশান মুচকি হেসে ইমার ঠোঁটের দিকে তাকাই এবং ধীরে ইমার দিকে এগিয়ে যায়।।। যখন ঈশানের গরম নিশ্বাস ইমার ঠোঁটে পড়ে ইমা চোখ খুলে ঈশানের দিকে তাকাই।।।
ইশান আলতো করে ইমার কানের পিছনে দুই হাত রেখে ধীর সুরে বলে – তোমার ঠোঁট স্পর্শ করতে চাই ইমা।।।
এই কথা শুনা মাত্রই ইমার শরীরের ভিতর কেপে উঠে ।। ইমা কোনো কথা বলে না ধীরে চোখ বন্ধ করে।। ইশান মুচকি হেসে ইমার ঠোঁটে চুমু দেয়। ইশান নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না ইমার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে কিস করতে লাগে।।।
হঠাৎ ইমার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে আসে। ইমার চোখের পানি ঈশানের ঠোঁটে লাগতেই ইশান ইমার দিকে তাকাই।।
ইশান – কি হয়েছে ইমা তুমি কাদঁছো কেনো ?? তোমার ভালো লাগেনি??
ইমা ঈশানের গালে হাত রেখে কান্না সুরে বললো – বিশ্বাস করো ভাবিনি এই দিন টা আমার জীবনে আসবে।। আমি হার মেনে নিয়েছিলাম ।। এখনো পর্যন্ত আমার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নে আছি।।
ইশান ইমাকে বুকের সাথে জাপটে ধরে বললো – এটা স্বপ্ন না যান এটা সত্যি।। তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি অনেক বেশি।।
ইমা ঈশানের শরীরের ঘ্রানে ইশান কে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো – আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি।।
দুজন দুজনাকে কিছু ক্ষন জড়িয়ে ধরে থাকে।।। ইশান ইমাকে ছেড়ে বলে – আমার আর একটা কথা বলার আছে।।
ইমা – কি বলো!!!
ইশান – এসো আমার সাথে।। (হেসে)
বলে ইমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।।।
ইমা – আরে ইশান আসতে পড়ে যাবো তো।।
ইশান হেসে বলে – পড়বে না ।।
ইশান ইমাকে একটা দিঘির পারে নিয়ে আসে । ইমা দেখে দীঘিতে সাদা পদ্ম ফুলে ভরা তার উপর চাঁদের আলো পড়েছে এত সুন্দর দেখাচ্ছিল যে ইমা অবাক হয়ে দেখতে থাকে ।
ইশান – will you marry me??
বলতেই ইমা ঈশানের দিকে তাকাই।। দেখে ইশান হাঁটু ভেঙে বসে তার দিকে আংটি ধরে আছে।।
ইশান – ইমা বলো তো কিছু।।
ইমা – বলতেই হবে!!!
ইশান – আরে হাঁটুতে ব্যাথা লাগছে তারাতারি বলো।।
ইমা হেসে বললো – সত্যি বলবো!!
ইশান – হম সত্যি বল।।
ইমা হেসে ঈশানের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো – yes।।।
ইশান আনন্দিত হয়ে তারাতারি ইমার হাতে আংটি পরিয়ে দেয়।।। ইমা ঈশানের সামনে বসে ইশান কে জড়িয়ে ধরে বললো –
ইমা – এখন থেকে সব ঠিক হবে ইশান দেখো ।।
ইশান ইমার কপালে চুমু দিয়ে বললো – হম সব ঠিক হবে। এখন চলো সবাইকে জানাতে হবে ।।
ইমা – কি জানাবে??( অবাক সুরে)
ইশান – কি আবার আমাদের বিয়ের কথা!!!
ইমা – তুমি সব তারিখ ঠিক করে ফেলেছ??
ইশান – হম করেছি তো।। চলো সবার সামনে গিয়ে বলি ।। উঠো ।
ইশান ইমা উঠে চলে গেলো ।।। ইশান ইমা এসে দেখে সবাই বসে গল্প করছে।।।
ইশান ইমার হাত ধরে ছাউনির নিচে গিয়ে গলা খাস দিতেই সবাই ইমা ঈশানের দিকে তাকাই।।।
ইশান – সবাই কে কিছু বলার আছে।। আমি ইমা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সামনের ৩০ তারিখ আমরা বিয়ে করবো।।
সবাই আনন্দে হাত তালি দিতে লাগে।।। ইসমা দৌড়ে এসে ইশান ইমাকে চেপে ধরে আনন্দিত সুরে বলে –
ইসমা – কি মজা আমি আব্বু আম্মুর বিয়ে দেখবো।।।( ইশান ইমা ইসমার কোথায় লজ্জা পায় আবার খুশি হয় )
লিলি উঠে এসে ইশান ইমার সাথে হাত মিলিয়ে বলে –
লিলি – দুজনকেই congratulations..
ইমা ইশান – thank you so much লিলি।।
লিলি – এবার আমার যাওয়ার পালা।। আ,,, ১০ তার দিকে আমার ফ্লাইট আছে। আমার যেতে হবে ।
ইশান – একদম না।। তুমি থাকবে আমাদের বিয়ে এটেন্ড করে তারপর যাবে।
লিলি – না না এত দিন থাকতে পারবো না ।।
ইশান – সেটা বললে হবে। মনে নেই হসপিটালে কি বলেছ?? তুমি বলেছ তুমি সবসময় আমার বন্ধু হয়ে পাশে থাকতে চাও।।
লিলি হেসে বললো- থাকবোই তো । কিন্তু এখন আমাকে আমেরিকা ফিরতে হবে।। কথা দিচ্ছি আসবো। তোমাদের বিয়ের তিনদিন আগেই চলে আসবো।।
ইমা – সত্যি আসবে তো।।
লিলি – হম আসবো।। এখন যেতে হবে।।
ইশান – ঠিকাছে ।। আকাশ তোমাকে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিয়ে আসবে।। আকাশ ,,,
আকাশ – জি স্যার আমি যাচ্ছি ।।। চলুন লিলি ম্যাডাম।।।
লিলি আকাশের সাথে চলে গেলো।।।
#i_m_mafia_lover
#part_48
#sabiha_kh
২৬ তারিখ,,,,
ইশান লাল রঙের স্যুট প্যান্ট পরে ওয়েডিং এর জন্য তৈরি হচ্ছে।।
ইশান – আমি ইশান চৌধুরী।। আমার জীবনে অনেক বড় একটা দিন আজ।।। ৮/৯ বছর আগে যেই মেয়ে টাকে মনের অজান্তে ভালোবেসে ফেলেছিলাম।। আজ তাকে পুরোপুরি নিজের করে পেতে চলেছি।। মাঝখানে অনেকটা বছর কেটে গিয়েছে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে ।। কিন্তু তবুও তার প্রতি আমার এতটুকু ভালোবাসা কমেনি।। তাকে আমি সব সময় চেয়ে এসেছি।। ৮/৯ বছরে যা হয়েছে তা হয়তো কখনো আমার কাম্য ছিল না।।। তবুও আজ সব বাধা পার হয়ে তাকে আপন করে পেতে চলেছি।। তাই বাজে অতীতগুলো একটা বাজে স্বপ্ন মনে করে ভুলে যেতে চাই।।
”
”
”
ইমা ঈশানের জীবনে অনেক বড় একটা দিন আজ।। ইমা না যত টা এক্সাইটেড তার থেকে বেশি এক্সাইটেড ঈশান। কারণ ঈশানের কাছে এটা শুধু বিয়ে না! একটা নতুন জীবন পাওয়া।। যাকে ৮/৯ বছর হাজারো বিপত্তির মাঝেও ভালোবেসে গেছে । তাকে সে তার জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পাচ্ছে।। এটা তার কাছে স্বপ্নের থেকেও কম কিছু না।।
চলুন এবার গল্পে ফিরা যাক😊
”
”
”
আকাশ ঈশানের রুমের দরজায় টোকা দিয়ে বলে – আসবো স্যার??
ইশান – এসো।।
আকাশ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই ইশান কে দেখে অবাক হয়ে যাই। ওয়েডিং পোশাকে ইশান কে একটা রাজকুমারের থেকে কোনো অংশে কম দেখাচ্ছে না।।
ইশান আকাশের এমন ফেল ফেল করে তাকানো দেখে লাজুক হাসি দিয়ে বললো – কেমন লাগছে আমাকে বলো??
আকাশ – স্যার আজ ম্যাডাম আপনাকে দেখে আবার নতুন করে আপনার প্রেমে পড়বে ।
ইশান – সত্যি বলছো!!
আকাশ – জী স্যার ।। স্যার আপনার সাথে একটা সেলফি তুলতে পারি??
ইশান – আরে এটাতে বলার কি আছে । কাছে আসো।। (হেসে)
আকাশ পকেট থেকে ফোন বের করে সেলফি তুলতে ফোন উচু করে এমন সময় লিলি কল করে । ইশান একটু বাঁকা চোখে আকাশের দিকে তাকাই ।
আকাশ ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে – sorry স্যার । আমি এখুনি আসছি । বলে আকাশ ফোন রিসিভ করে বাইরে যাই ।।
আকাশ – জী মিস লিলি বলুন!!
লিলি – আকাশ ইশান রেডি হয়েছে??
আকাশ – জী।।
লিলি – হম ইমা ও রেডি।। জনি কোথায় আছে ওকে কি পাঠাবে আমাদের নিয়ে যেতে??
আকাশ – হম পাঠাবো তো । কিন্তু জনি যে কোথায় আছে দেখতে হবে ।
লিলি – ওকে তাহলে জনি কে পাঠিয়ে দাও ।। (বলে ফোন কেটে দিলো)
আকাশ ঈশানের রুমে ঢুকে বললো – স্যার ম্যাডাম ও ওদিকে রেডি হয়ে গিয়েছে।। তো জনি কে পাঠাবো??
ইশান – হম পাঠাও। আর আমার জন্য গাড়ি বের করতে বলো । আমি আগে যাবো (,,,,,,,,,,,,) কমিউনিটি সেন্টারে।।। আচ্ছা মানুষ জন কি সবাই চলে এসেছে??
আকাশ – জী স্যার আসছে সবাই । ও নিয়ে আপনি ভাববেন না। সবার দিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে ।
ইশান – ok এখন তুমি যাও ।।।
আকাশ – ok স্যার।।। (আকাশ চলে গেলো)
ইশান আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে মুচকি হেসে বলে – ইমা কে নিশ্চয় অনেক সুন্দর লাগছে। আচ্ছা ইমাকে ভিডিও কল করে একটু দেখে নিব!! আরে এত ভাবার কি আছে!! বলে তারাতারি ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে ফোন নিয়ে ইমা কে ভিডিও কল করে।।।
এদিকে লিলি ,রোকসানা, ইমা, ইসমা সবাই মিলে সেলফি তুলছে। এমন সময় ঈশানের ভিডিও কল আসলে ইমা সবার দিকে তাকিয়ে বলে সবাই চুপ করো ইশান ভিডিও কল করেছে ।
লিলি শুনেই ইমার হাত থেকে ফোন নিয়ে বললো – না না কল ধরা যাবে না । ইশান এখন তোমাকে দেখার জন্য ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে।। ওকে একটু কষ্ট পেতে দাও।।
বলে লিলি ঈশানের কল কেটে দিলো । এদিকে ইশান কল কেটে দেওয়া দেখে একটু অবাক হলো ।
ইশান – ব্যাপার টা কি হলো??
বলতেই আকাশ এসে বললো – স্যার গাড়ি রেডি চলুন।।
ইশান – হম চলো।। ইশান এক ঝলক নিজেকে আয়নায় দেখে চলে গেলো।।।।
ইশান গাড়িতে উঠে আবার ইমাকে কল করে। এইবারও ফোন কেটে দেই। এবার ইশান অডিও কল করে।
এদিকে লিলি হাসতে হাসতে বলে – এইবার অডিও কল করেছে বেচারা ইশান।।
ইমা লিলির হাত ফোন নিয়ে হেসে বললো – তোমরা আমার হবু বর টাকে এত জ্বালিয়ো না তো।।।
বলে ফোন রিসিভ করে কানে ধরে ।
ইমা – hello
ইশান – কল কেটে দিচ্ছিলে কেনো??
ইমা – আমি,,, বলতেই লিলি ইমার হাত থেকে ফোন নিয়ে কানে ধরে বললো –
লিলি – কি হয়েছে ইশান??
ইশান লিলি কন্ঠে একটু থতমত খেয়ে গেলো।।
ইশান – না মানে!!
লিলি – শুনো ইশান এত উতলা হয়ো না। আর তো কিছুক্ষন তারপর বউ কে সামনে সামনি দেখো। বুঝেছ।।
ইশান – ok ok,,, তাই হবে ।। এবার কি ইমা কে ফোন টা দেওয়া যাবে??
লিলি – একদম না । বাই।।। (বলে ফোন কেটে দিলো)
লিলি ইমার হতে ফোন দিয়ে বললো – তোমার হবু বর সত্যি ।।। (হেসে)
ইমা লাজুক হাসি দিল ।।
এদিকে ইশান আকাশ কে বলে – আকাশ জনি ওদের নিতে গিয়েছে??
আকাশ – জী স্যার।।।
Time Skip
ইশান সবার সাথে সাক্ষাৎ করছে কথা বলছে।। সবাই ইশান কে অভিনন্দন জানাচ্ছে।। এমন সময় আকাশ এসে ঈশানের কানে বলে –
আকাশ – স্যার ম্যাডাম চলে এসেছে।।
ইশান দরজার দিকে তাকাই দেখে দুজন গার্ড দরজা খুলে দিলে ইমা লাল গ্রাউন পড়ে ইসমার হাত ধরে হেঁটে আসছে ।।।। পিছনে লিলি রোকসানা জনি।। সবাই অবাক হয়ে ইমার দিকে তাকিয়ে থাকে। ইশান নিজেও অবাক হয়ে যাই কারণ ঈশানের কল্পনার বাইরে ছিল ইমার সুন্দর্য টা।। যেনো সবার মধ্যে এক পরি হেঁটে আসছে।। ইশান অবাক হয়ে তাকিয়ে ইমার দিকে এবং একপা দুপা করে এগিয়ে যায়।। ইমা ঈশানের দিকে তাকাই দেখে লাল রঙের স্যুট প্যান্ট কালো জুতা ভিতরে সাদা শার্ট চুল গুলো জেল দিয়ে উচু করা ।। ইমা অবাক হয়ে ঈশানের দিকে তাকিয়ে রইল।। দুজন দুজন কে এমন ভাবে দেখছে না জানি দুজন দুজনকে কতো দিন দেখেনি।।। রোকসানা লিলি আকাশ সবাই সবার দিকে তাকা তাকি করতে লাগে।। ইজমা তার বাবা মাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো –
ইসমা – বাবা , আম্মু ।। (ইশান ইমা চমকে ইসমার দিকে তাকাই) কি করছো।। আমাকে ভুলে গেলে নাকি। তোমরা এভাবে দুজন কে কি দেখছো?? তোমাদের দুজন কেই সুন্দর লাগছে।। আমাকে কেমন লাগছে কেও বললো না।। (মুখ ভার করে)
ইশান ইমা ইসমার কোথায় হেসে উঠে।। ইশান ইসমার দুই গালে দুজন হাত দিয়ে বলে – তোমাকে পরির মত লাগছে মামুনি।।
ইসমা শুনে খুব খুশি হলো।।।
আকাশ – স্যার চলুন বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য লোক এসেছে এবং মাওলানা ও এসেছে।।
ইশান ইমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল – চলো ইমা।।
ইমা – হম চলো।। (হেসে)
সব সাংবাদিক রা ছবি তুলতে লাগে ঈশান ইমার বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়।। মাওলানা ঈশান ইমাকে কলমা পরিয়ে দেয়।। তারপর সবাই মিলে কিছু ছবি তুলে।। ঈশান পার্সোনাল ভাবে ইমার সাথে কিছু ছবি তুলে।। ইশান সবার সাথে ইমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগে। এদিকে জনি আকাশ দাড়িয়ে গল্প করেছে।।
জনি ইশান ইমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল – স্যার কে এত খুশি দেখে আমার যে কি ভালো লাগছে আকাশ কি বলবো তোকে।
আকাশ – আমারও। যায় হোক এত কিছু হওয়ার পর স্যার তার ভালোবাসার মানুষকে তার জীবনে পেয়েছে।এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে বল।।।
জনি – সেটাই। কম ভালোবাসে স্যার ইমা ম্যাডাম কে!! সত্যি এমন ভালোবাসা আজ কাল খুব কম দেখা যায়।। আচ্ছা আকাশ স্যারের তো সব মনে পড়েছে তো স্যার আর ওই দিকে,,,,,
বলতেই আকাশ জনির মুখের সামনে হাত দেখিয়ে বললো – এই বিষয়ে কিছু বলিস না।। আমি পার্সোনালি ভাবে চাই না স্যার অন্ধকার পথে আর যাক।।
জনি – বাদ দে স্যার যাবে না। এখন তো স্যারের জীবনে ম্যাডাম চলে এসেছে ম্যাডাম স্যার কে সামলে রাখবে।। (হেসে ) কিন্তু তোর কি??
আকাশ – আমার কি মানে??
জনি – মিস লিলির সাথে তোর কিছু চলছে নাকি??
আকাশ – তুই পাগল নাকি।।
জনি – দেখ না কি সুন্দর দেখাচ্ছে ওনাকে।।
আকাশ – বলে দিবো নাকি রোকসানাকে অন্য মেয়ের দিকে নজর দিচ্ছিস ।
জনি – আরে ভাই আমি তো তোর জন্য কথা বলছিলাম।। মিস লিলির সাথে তোর বিয়ে দিয়ে দিই কি বলিস ভালোই মানাবে কিন্তু তোদের কে।।
আকাশ – তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।। ও কথাই আর আমি কোথায়। ওর বাবা বড় বিজনেসম্যান। আর আমি কি?? আর সেটা বড় কথা না আমি আমেরিকান মেয়েকে বিয়ে করব না কখনো ।
জনি – কেনো??
বলতেই ইশান এসে জনি আকাশের কাঁধে হাত রেখে বলে –
ইশান – আমি জানি কেন??
জনি – স্যার আপনি?? (একটু অবাক হয়ে)
ইশান – কি হয়েছে? তোমরা এমন অবাক হচ্ছো কেনো??
আকাশ – না মানে??
ইশান – মানে কি।। জানো জনি আমার যখন স্মৃতি ছিল না আকাশ আমাকে ভাইয়া বলে ডাকত এবং আকাশ আমার বিছানায় আমার পাশে ঘুমিয়েছে ।
আকাশ মাথা নিচু করে বললো – sorry স্যার।।
ইশান আকাশ কে জড়িয়ে ধরে বললো – তুমি আমাকে কখনো sorry বলবে না আকাশ ।। তুমি শুধু আমার জীবন ফিরিয়ে দাওনি আমাকে সব কিছু ফিরিয়ে দিয়েছো।।। আজ তোমার জন্য আমি সব খুশি খুঁজে পেয়েছি।।তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দিব সত্যি আমার কাছে ভাষা নেই।।
আকাশ ইশান কে ছেড়ে দিয়ে বললো – স্যার আমাকে thank you বলতে হবে না । আমি সারা জীবন আপনার পাশে থাকতে চাই ।এটুকুই আমার চাওয়া ।
ইশান – তা বললে কি হবে।। আমার পাশে থাকবে থাকো।। কিন্তু তোমাকে বিয়ে দিতে হবে দেখো সবার বিয়ে হয়ে গেল আমারও হয়ে গেল জনি তো আগেই করে ফেলেছে এবার তোমার পালা।। (আকাশ একটু লজ্জা পেল ঈশানের কোথায়।। ) জনি আকাশ কেন আমেরিকার মেয়েকে বিয়ে করবে না জানো??
জনি – ও হ্যাঁ স্যার কেন বলেন তো??
ইশান – কারণ আকাশ শালীনতা পছন্দ করে।। সব দিকে।।
জনি – ও আচ্ছা বুঝলাম।। (হেসে)
আকাশ লাজুক হাসি দিল।।।
Time Skip
রাত ৮:৩০,,,,,
ইশান ইমা সব গেস্টদের বিদায় দেই।।
ইশান – ইমা চলো এবার বাসায় যায়।। ইসমা কথাই ওকে দেখছি না!!
বলতেই পিছন থেকে ইসমা বলে – এই তো বাবা এইতো আমি । আজ অনেক মজা করেছি এখন ঘুম পাচ্ছে।। (চোখ ডলতে ডলতে বললো )
ইশান – ঘুম পাচ্ছে আমার মা টার।। আসো আমার কাছে আসো মা।।( বলে ইশান ইমাকে কোলে তুলে নিলো।। ) এবার ঘুমাও মা।।।
এমন সময় আকাশ এসে বললো – স্যার গাড়ি রেডি ম্যাডাম কে নিয়ে চলুন ।
ইশান – হম চলো কিন্তু আর সবাই কোথায়??
আকাশ – ওরা আছে । আপনি চলুন স্যার।।
ইশান – হম চলো।। ইমা চলো এবার বাসায় ফিরা যাক।। (ইমার দিকে হাত বাড়িয়ে মুচকি হেসে বললো। )
ইমা হেসে ঈশানের হাত ধরে চলে গেলো ।।
ইশান ইসমা কে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে ইমা ও বসে।।। গাড়ি চলতে শুরু করে । ইশান ইসমা কে ভালো করে কোলের উপর শুইয়ে নিতেই দেখে ইমা তার দিকে তাকিয়ে আছে।।
ঈশান – কি হয়েছে?
ইমা মুচকি হেসে বলল – কিছু না।।
ইশান হেসে ইমার হাতের উপর আলতো করে হাত রাখে। ইমা ও আরেক হাত দিয়ে ঈশানের হাত চেপে ধরে থাকে।।
১৫ মিনিট পর,,,,,
ঈশানের গাড়ি ঢুকলো তার বিশাল বড় বাংলো বাড়িতে।। । ইমা অবাক চোখে দেখতে থাকে।। ইমা এর আগে ও এই বাড়িতে আসলেও আজ তার কাছে বাড়িটা একদম অন্যরকম লাগছে।। পুরা বাড়ি অসম্ভব সুন্দর লাইটিং করে সাজানো।। ইশান ইমাকে এমন অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখতে দেখে মনে মনে খুব খুশি হয় ।
গাড়ি থামলো বাড়ির মেইন দরজার সামনে।। ইমা দেখে লাইন ধরে সব বডিগার্ডরা দাঁড়িয়ে আছে।।।
আকাশ গাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির খুলে বলে –
আকাশ – স্যার ইসমা কে আমার কাছে দিন।
ইশান ইসমা কে আকাশের কোলে তুলে দিলো।।
আকাশ – আমি ইসমা কে তার রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিয়ে আসি ।। আপনারা আসুন।।
ইশান – ঠিকাছে। (আকাশ ইসমা কে নিয়ে চলে গেলো।।)
ইশান ইমা গাড়ি থেকে বের হয় । ইশান ইমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে ইমা ঈশানের হাত ধরে বাড়ির ভিতরে ধুকে।। এমন সময় রোকসানা , জনি, লিলি ফুলের পাঁপড়ি ছিটিয়ে বলে – স্বাগতম ।।
ইমা , ইশান অবাক হয়ে যাই ।
ইশান – তোমরা কখন বাসায় আসলে??
জনি – অনেক ক্ষন হয়েছে।। আপনাদের স্বাগতম জানাবো না।।
লিলি – তোমাদের দুইজন কে আজ সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে।
ইশান, ইমা – thank you।।
এমন সময় আকাশ আসে।
আকাশ – তোমরা এইখানে স্যার, ম্যাডাম কে আটকে রেখেছো কেনো?? চলো সবাই ।
ইশান – সমস্যা নেই। আমার তো কেও নেই তোমরা ছাড়া।। আজ যদি আমার আত্মীয়-স্বজন থাকতো তারা তো এমনি করতো।।
ইমা – হম ঠিকই তো আমাদের পরিবার হয়ে গেছ তোমরা।।
রোকসানা – সত্যি আমরা এমন হয়ে এত সন্মান পাবো সত্যি কখনো ভাবিনি।।
লিলি – তোমরা কি বলো রে আমি বুঝি না।।
সবাই হেসে উঠলো লিলির কথায়।।
আকাশ – কিছু বলে না।। সবাই এখন বাসায় যাবে । আপনি ও চলুন।।
লিলি – হম অবশ্যয়।। আর সময় নষ্ট করতে চাই না । ইশান ইমা কাল সকালে দেখা হবে।। আজ আসি।।
ইশান , ইমা – ok।।
আকাশ – স্যার আমি মিস লিলি কে গেস্টদের বাড়িতে রেখে আসি।।
ইশান – আচ্ছা।। যাও।।
জনি – স্যার আবার আমরাও যায়। অনেক রাত হয়ে গেছে।।
ইশান – যাও তবে আমার কিছু বলার আছে তোমাদের কাল সকালে বলবো। চলে এসো দুজনাই।।
জনি – ওকে স্যার।।।
রোকসানা জনি ও বিদায় নিয়ে চলে গেলো।।। ইশান ইমার দিকে তাকাই দেখে ইমা বাড়ির এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে।।
ইশান – তোমার বাড়ি সাজানো পছন্দ হয়েছে??
ইমা ঈশানের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল – হম অনেক সুন্দর।। এর আগে যখন এসেছিলাম তখন একরকম লেগেছে আজ আরেক রকম লাগছে।। সত্যি খুব সুন্দর লাগছে।।।
ইশান ইমার হাত ধরে বললো – এসো আমার সাথে ।।
ইশান ইমাকে নিয়ে বাইরে গার্ডেনে গেলো।
ইমা গার্ডেনে এসে চারিদিক দেখে আনন্দিত সুরে বলল – তোমার বাসায় বাগান আসছে এটা তো জানতাম না।।
ইশান হেসে বললো – এই বাগানটা আমার সব থেকে পছন্দের জায়গা।। আমি বাসায় থাকলে এই বাগানেই বেশি সময় কাটায়।
ইমা – সত্যি বাগান টা অনেক সুন্দর।।
ইশান – এসো বসো এখানে।।
ইশান ইমাকে নিয়ে বসলো বাগানে।।
ঈশান – তুমি দেখেছো আজকের চাঁদ টা।।
ইমা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো –
ইমা – এত সুন্দর চাঁদ তবে লাইটের আলোতে চাঁদের আলো টা বুঝায় যাচ্ছে না।।
ইশান – ওকে একটু দাড়াও । (বলে ইশান উঠে যায়। এমন সময় সব লাইট বন্ধ হয়ে যায়।। চাঁদের আলোয় সব দিক কেমন আলোকিত হয়েযায় সাথে সাথে।।)
ইশান এসে ইমার পাশে বসে বলে ।।
ইশান – এবার ভালো লাগছে??
ইমা হেসে বললো – হুঁ ভালো লাগছে ।।
ইমা ঈশানের দিকে এগিয়ে গিয়ে ঈশানের কাধে আলতো করে মাথা রাখে।। ইশান ইমার হাত ধরে হাতে চুমু দিয়ে বলে।।
ইশান – তোমার থেকে যখন ৫ বছর আলাদা ছিলাম এই বাড়ি টা আমি তখন বানিয়েছিলাম খুব শখ করে।।এই ভেবে একদিন এই বাড়িতে আমি আমার ইমা কে নিয়ে থাকবো।। তাই আমি কখনো কোনো মেয়ে কে এই বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। আমি চাইতাম এই বাড়িতে শুধু আমার ইমার পা পড়বে আর কারো না। এমনি একটা বিশ্বাস ছিল ।। আজ আমার বিশ্বাস টা সত্যি তে পরিণত হয়েছে।। তুমি জানো না আজ আমি কতো টা খুশি।
বলতেই ঈশানের হতে টপ করে কিছু একটা এক ফোঁটা পানি পড়লো। ইশান ইমার দিকে তাকাই দেখে ইমা কাদঁছে।।
ইশান দুই হাত দিয়ে ইমার গাল ধরে বললো –
ইশান – কি হয়েছে ইমা তুমি কাদঁছো কেনো??
ইমা – আমি তোমার ভালোবাসার যোগ্য না ইশান।। আমি তোমাকে কতো কষ্ট দিয়েছি ভাবতে গেলে নিজেকে ঘৃণা করতে ইচ্ছা করে।।
ইশান ইমার চোখ মুছে দিয়ে মুচকি হেসে বললো – পাগলি আমার। তুমি আমাকে কষ্ট দিলেও তুমি কি ভালো ছিলে বলতো!! তুমি নিজেও কষ্ট পেয়েছো। আমাকে ঘৃণা করেছ কিন্তূ তোমার মনে আমি ছিলাম।। আমি তোমাকে যত টা ভালোবাসি তুমিও আমাকে ততো টাই ভালোবাসো। মাঝখানে যা কিছু হয়েছে সবকিছু হওয়ার ছিল। তকদীর বলে একটা কথা আছে না!! কিন্তু দেখো আমরা আলাদা হয়নি।। সব কিছু পার করে আমরা এক হয়েছি।।।
ইমা ইশান কে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে বলে – তোমাকে অনেক ভালোবাসি।। অনেক বেশি ।।
ইশান – আমিও। (ঘন শ্বাস ছেড়ে)
ইমা – আমাকে নিজের করে নাও ইশান।। আজ আমাকে অনেক ভালোবাসো প্লিজ।। তোমার আদরে আজ নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাই।। (ঘন শ্বাস ছেড়ে উত্তেজিত সুরে বলল)
ইশান – আমিও আজ তোমার মাঝে হারাতে চাই ইমা।। তোমাকে অনেক ভালোবাসতে চাই।।
ইশান ইমা দুজন দুজনাকে পাগলে মত কিস করতে শুরু করে।।
ইমা ইশান কে থামিয়ে দিতে গেলে ইশান উত্তেজিত সুরে বলে বলে – আর থামিও ইমা।। আজ আর আমাকে আটকিও না।। (বলে পাগলের মত চুমু দিত লাগে )
ইমা – ইশান এটা গার্ডেন।।
ইশান হেসে দিল ইমার কোথায়।। ইমা হেসে দিল।
ইশান – চলো রুমে চলো ।
ইমা উঠে দাড়ালে ইশান ইমাকে পাতাল করে কোলে তুলে নেয় ।।
ইশান – এবার চলো আমার জান।। ( মুচকি হেসে)
ইশান ইমাকে নিয়ে গার্ডেন থেকে বাড়ির ভিতরে গেলো এবং সিড়ি বেয়ে তাদের রুমে গিয়ে ইমাকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। দুজন দুজনার দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে।। কিছুক্ষণ।
ইমা উঠে বসে এবং ঈশানের হাত ধরে নিজের পাশে বসাই।।
ইমা – এভাবে নেসা ভরা চোখে কেনো তাকিয়ে আছো!!
ইশান – তোমাকে শুধু দেখতে ইচ্ছা করছে।। (ইমার মুখে হাত বুলিয়ে)
ইমা – শুধু দেখতে ইচ্ছা করছে আর কিছু না।।
ইশান নিজের ঠোঁট কামড়িয়ে ধরে হেসে বললো –
ইশান – হম আদর ও করতে ইচ্ছা করছে ।
ইমা মুচকি হেসে বলে – দুষ্টু ছেলে ।। অপেক্ষা করছ কেন ?? আদর করো আমাকে।
ইশান – হম অনেক আদর করবো অনেক।। (দুহাত হাত দিয়ে ইমার কানের পিছনে ধরে নেসালো কন্ঠে বলল)
ইশান ইমার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায় এবং ঠোঁটের ভিতর ঠোঁট ডুবিয়ে কিস করতে লাগে।।
এভাবে দুজন দুজনাকে ভালোবাসার আদরে জড়িয়ে নেই।।।
,,,,,,,,,, Continue,,,,,,,,,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।।
,,,,,,,,, Continue,,,,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।