অতল গভীরে পর্ব ৫

#অতল_গভীরে
#পর্ব৫
Eliyana Aara
—–কোন কাটা দাগ নেই মানে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, কিছু দিয়ে আচর টানার দাগ আছে।আমার জানা মতে ছোট থাকতে তো এরকম বেথা পাসনি। কেউতো কখোন বলেনি!
—–না মানে আপনি বাহিরে থাকতে একদিন বাসায় ফেরার সময় ওটো রিকশার সাথে এক্সিডেন করেছিলাম তখোনি কেটে গিয়েছিলো।আর সবাই জানে বাড়িতে।

—-সত্যি।

—–হুম।আর আমার মিথ্যা বলার কোন প্রয়োজন নেই।

—-হুম।

—–মলম লাগানো হয়েছে???

—–হে শেষ লাগানো।

ঠিক আছে তাহলে থাকেন আমি যাই।আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।

—–ঠিক আছে।

এরপর থেকে দুজনেরই আবার আগের মতো হয়ে গেলাম আমি বাসা টু অফিস ও মদের বোতল টু হুইস্কির বোতল🙂।

এক সপ্তাহ পর অফিস থেকে বাসায় আসার সময়, নিচে দুজন মহিলা আমাকে দেখে কেমন ফিস ফিস করে বলতে লাগলাম,

—–ভাবি এই সেই মেয়ের হাসবেন্ড, যার বেগ থেকে মদের বোতল পরে গিয়েছিলো আজকে। কে জানে কে মদ খায়?? চেহারা দেখে তো মনে হচ্ছিল মেয়েটাই খায় চোখের নিচে কেমন কালি পরে গিয়েছিলো হাব ভাব ও কেমন জানি

—–হে ভাবি মনে হয় মেয়েটাই খায়।হাবভাবও ঠিক না সারাদিন ঘরের মধ্যে থাকে বের হয় না। ছেলেটাকেও বের হতে দেখা যায় না সহজে।আর ছেলেটাও কিছু বলেনা মেয়েটাকে?

এতটুকু শুনে ওখানেই আমি দাঁড়িয়ে গেলাম আমাকে দারাতে দেখে ফিস ফিস করা বন্ধ করে দিলো।আর আমিও চুপ চাপ ওখান থেকে চলে এলাম বাসায় এসে কলিংবেল দিতেই অনেক সময় পর ও এসে দরোজা খুলে দিলো আমি রুমে ঢুকে দরোজা লাগিয়ে দিলাম, তানহা চলে যেতে নিয়েছিলো আমি ওর হাতে ধরলাম, আমার হাত ধরা দেখে ও ওখানে দাঁড়িয়ে গেলো,আমাকে বলতে লাগলো,

—–কি হলো হাত ধরে দাড়িয়ে রইলেন কেন?হাত ছারুন।

—-কোথায় গিয়েছিলি আজকে??

—–কোথায় আবার জাবো?

—–সত্যি করে বল কোথায় গিয়েছিলি?

—-কোথায় আবার বিয়ারের বোতল শেষ হয়ে গিয়ে ছিলো কিনতে গিয়েছিলাম কিন্তু বাসায় আসার সময় নিচে……
ওকে থামিয়ে দিয়ে বলতে লাগলাম,

—–বাসায় আসার সময় বাসার নিচে তোর বেগ থেকে বিয়ারের বোতল পরে ভেঙে যায় তাইতো???

—-হুম পুরো একটা বোতল নষ্ট হয়ে গেছে আমার।

—-তুই এখোন বোতলের কথা ভাবছিস তানহা, লোকে তোকে নিয়ে নিচে খারাপ খারাপ কথা বলছে সেটা শুনতে পাচ্ছিস না।

—–লোকের মুখ আছে লোক বলবেই তাদেরকে কি আর আটকাতে পারবো।আমার যা ইচ্ছা আমি তাই করবো।মানুষের কথা আমি কেন শুনবো।

আমি ওর গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বললাম, ও ছিটকে নিচে পরে গেলো, আমার দুই আঙুলের ছাপ বসে গেছে সাথে সাথে ওর গালে।ওর চুলের মুঠি ধরে উঠিয়ে নিলাম ও ব্যথায় কুকরিয়ে উঠলো,দয়া মায়া না দেখিয়ে বলতে লাগলাম

—–আমি তোকে এখানে নিয়ে আসার আগে কি বলেছিলাম,
যে এখানে থাকতে হলে ভদ্র হয়ে থাকবি, মানুষে যাতে আমাকে খারাপ কথা শুনাতে না পারে।তুই আমার কথা শুনিস নি মানুষ নিচে তোকে আমাকে নিয়ে ফিস ফিস করছে এটা খুব ভালো লাগছে তোর তাই না।আমার এখানে থাকতে হলে এগুলা চলবে না।চলে জেতে পারিস আমার বাসা থেকে এখুনি।

—-এখানে আমিও থাকতে চাই না।ডিভোর্স দিন আমাকে আমিও চলে জাবো।

—-তুই এখোন যেতে পারিস,ডিভোর্স পেপার আমি পরে পাঠিয়ে দিবো।

—–আমারো কোন ইচ্ছে নেই আপনার সাথে এক বাসায় থাকার বলেই, ওও চলে গেলো বেগ গুছাতে।
আমিও বসে রইলাম সোফায় মাথা ঠান্ডা করতে লাগলাম,নিজেকে শান্ত করে বসে রইলাম,কিছুসময় পর ও একটা বেগ নিয়ে দরোজার কাছে যেতে নিলে ওকে বলতে লাগলাম,

—–দাঁড়া!

ও দাঁড়িয়ে পিছোন গুরে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো,আমি বলতে লাগলাম,

—–এখোন যাওয়া লাগবে না, কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে সবাই তোকে খুব ভালো দেখে গেছে এখোন ওখানে গিয়ে তুই আবার আগের মতো হয়ে গেলে সবাই কষ্ট পাবে।তুই বরং এখানেই থাক।

—–থাকবোনা আমি আপনার সাথে। এখানে থেকে কথা শুনা আর মার খাওয়ার আমার কোন শখ নেই।এই নিয়ে আপনি আমার গায়ে দুই দুই বার হাত উঠিয়েছেন কিছু বলিনি।আমি পারবো না আপনার সাথে থাকতে।আমি ডিভোর্স চাই।

—–আচ্ছা সরি আর মারবো না কখোন।তাও তুই যাস না আজকে ।তোকে এইভাবে দেখলে সবাই আবার অনেক কষ্ট পাবে। আর ডিভোর্স ছয় মাসের আগে দেওয়া জাবে না।বিয়ের ছয় মাস পর ডিভোর্স এর জন্য এপ্লাই করতে হয়।

—–না থাকবো না আমি এখানে।

আমার মাথা আবার গরম হয়ে গেলো তাই ওর হাত থেকে বেগটা নিয়ে ওকে পাজাকোলে উঠিয়ে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে ঠাস করে বিছানায় ফেলে দিলাম। আর বললাম,

—–থাক তুই এখানে পরে।আর যদি একবারো বলেছিস চলে জাবি তাহলে ঠেং ভেঙে রেখে দিবো।

—–আহ কুতুব মিনার আপনি একটা।আমার মাঝাটা ভেঙেই ফেললেন।সয়তান।

—-তুই সয়তান আমি না।

—-হুহ।

আমি ওখানে থেকে এসে পরার জন্য যেই না পিছোন ঘুরবো ওমনি ও পা দিয়ে লেং দিয়েছে ধাপ করে ওর পাশে পরে গিয়েছি,
আমার হাত উফ ব্যাথা পেয়েছি অনেক।তাই ও উঠার আগেই আমি ওর উপরে উঠে আধশোয়া অবস্থায় ওর হাত চেপে ধরে বলতে লাগলাম,

—–কিরে ফাজিল এভাবে ফেলে দিলি কেন?

—-বেশ করেছি, আপনি আমাকে ফেলে দিসেন আমিও আপনাকে ফেলে দিসি মিট মাট, কিন্তু এখোন আপনি আমার উপর উঠে আছেন কেন নামুন এখান থেকে।

—- পারবো সরিয়ে যেতে পারলে যা।

—–এরকম ৬ফুটের জলহস্তীকে সরাতে পারলেতো আমাকে মেডেল দেওয়ার উচিত।সরুন উপর থেকে।

বলেই আমাকে ধাক্কা দিতে লাগলো।
তাই আমিও উঠতে নিলাম, আধশোয় হয়ে উঠতেই ও হাত পা নরাতে গিয়ে আমার হাতে বারি দিলো আমিও টাল সামলাতে না পেরে ডাইরেক্ট ওর উপর ভর ছেরে দিয়েছি, পরেই ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোট মিশে গেছে।দুজনের মাঝে এখোন এক ইঞ্চি ও জায়গা নেই।দুজনেই থতমত খেয়ে গেছি কি হলো। যখোন বুঝতে পারলাম কি পর্যায়ে আছি হন্তদন্ত হয়ে উঠে গেলাম , উঠে ঠোঁটে হাত দিয়ে বসে আছি।ও বসে পরেছে ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে এখনি আমাকে লবন মরিচ ছারা গিলে খেয়ে নিবে।তাই ওকে আর কিছু বলতে না দিয়েই তারাতাড়ি নিজের রুমে গিয়ে দরোজা লাগিয়ে বসে রইলাম,

আর তখোনকার মুহুর্তটা মনে করতা লাগলাম,আপনা আপনি আমার হাত ঠোঁটে চলে গেলো।লাইফের ফার্স্ট কিস।এভাবে হবে জানতাম না।আহ তানহা তুই আমার মাথাটাই নষ্ট করে দিচ্ছিস দিন দিন।এখোন না তোর উপর না আর রাগ হয় না ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।তোর সেই মাতাল চোখে তাকালে যেন আমারি নেশা হয়ে যায়।বিয়ার খেয়ে যখোন টলমল করে হাটিশ বড্ড হাসি পায়।তুই আসলেই একটা পাগোল।তোকে এখন আর নিজের থেকে দুরে রাখতে ইচ্ছা হয় না। এই কয়েকটা মাসে আসলেই ভালোবেসে ফেলেছি তোকে। কোথাও যেতে দিবোনা তোকে আমার তানু বেবি।

রাতের বেলা বারান্দায় বসে বসে গান শুনছি আর আপন মনে গাইছি,

ঘুম চলে যায়
তোমার চোখে বেড়াতে
পারি না তাকে কোন ভাবে ফেরাতে
আমার মন তোমার
মনের পাড়ায়
বোকাসোকা হয়ে আড়ালে আবডালে দাড়ায়
তোমাকে ছোয়াড় নেইতো
আমার সাধ্য
দেখতে পাওয়া সেইতো
বড় ভাগ্য।
মনটা অবাধ্য, হচ্ছে প্রায়শঃ
কষ্টের বোঝা বেড়ে
যাচ্ছে ক্রমশঃ
তোমাকে ছোয়ার নেইতো
আমার সাধ্য
দেখতে পাওয়া সেইতো
বড় ভাগ্য।

আনমে গানটা গাইছিলাম হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো বিছানা থেকে নিয়ে রিসিভ করলাম,কথা বলার পর উনার থেকে যানতে পারলাম কালকে অফিসে কাজ আছে মানে মিটিং আছে তাই তারাতাড়ি যেতে হবে।

সকাল সকাল চলেও গেলাম অফিসে।অফিস শেষে বসের থেকে জানতে পারলাম উনার ছেলে কয়েকদিন পর অফিসে জয়েন করবে আর উনি এখোন রেস্ট নিবেন।যাক ভালো।আর শেই তরফ থেকে পরশু আমাদের অফিসে একটা পার্টি রেখেছেন ক্লাবে সেখানে সবাই তার ফেমেলি মেম্বারদের নিতে পারবে।সবাইকেই ইনভাইট করা হয়েছে।করা নির্দেশ যার বউ বাচ্চা আছে তাদেরকে নিয়ে জেতে হবে।

আমারতো বউ আছে ঠিকি কিন্তু না থাকার মতো।এখোন ওকে না নিয়ে গেলে বসও আমাকে ঝারবে আগে ওরে বলে দেখি জাবে কি না??? গেলে ভালো,আমাকে আর জোর করতে হবে না।

চলবে…..

বিঃদ্রঃ আজকে পার্ট অনেক ছোট হয়ে গেছে তাই না।আসলে স্কুল থেকে এসে আজকে আর লেখতে ইচ্ছে করছে না।তাই ছোটই রাখলাম।পারলে কালকের পর্বটা বড় করে দিবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here