#অনুভূতিটা_তোমায়_ঘিরে🌺🥀
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি🥀💜
#পার্টঃ০৪🥀❤️
ওয়াসরুমে গিয়ে স্থির হয়ে আছে ইয়াসিবা গাল দুটো লাল হয়ে ফুলে উঠেছে লজ্জায়।আফ্রিদ তাকে ধমকে ওয়াসরুমে পাঠিয়েছে বলেছে কামিজ টা চেঞ্জ করে আসতে পিঠে মেডিসিন লাগাবে সে।কিন্তু ওয়াসরুমে এসে সে টাওয়ালটা গায়ে জড়িয়ে এখন লজ্জায় লাল,নীল হয়ে বসে আছে ইয়াসিবা।নিজের কাছেই নিজের লজ্জা লাগছে তার তাহলে আফ্রিদের কাছে যাবে কিভাবে?ভেবে পাচ্ছে না ইয়াসিবা তাই থম মেরে বসে আছে।
অনেক্ষন যাবত অপেক্ষা করেও ইয়াসিবাকে আসতে না দেখে কপালে সূক্ষ্ম ভাজ পড়ে আফ্রিদের।মেয়েটা এতোক্ষন করছেটা কি ভেবে পাচ্ছে না সে।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় আফ্রিদ তারপর ওয়াসরুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করে বললো,,
–” ইয়াসিবা কি হয়েছে তোমার?আর কতোক্ষন লাগবে?অনেক রাত হয়েছে মেডিসিন লাগিয়ে ঘুমোতেও হবে এমনিতেও তোমার শরীর ভালো নেই।ইয়াসিবা!!”
আফ্রিদের ডাকে কেঁপে উঠে ইয়াসিবা।তারপর আস্তে করে জবাব দেয়,
–” আপনি যান আমি আসছি।”
–” হুম!! জলদি এসো।”
আফ্রিদ গিয়ে বিছানায় ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।এদিকে খানিক বাদে বের হয়ে আসে ইয়াসিবা গায়ে টাওয়াল জড়ানো ওইযে লম্বা কোটের মতো একধরনের টাওয়াল থাকে মনে হয় বাথরাব বলে ওটাকে তা পড়েই বের হয়ে আসে।গুটিগুটি পায়ে গিয়ে আফ্রিদের সামনে দাঁড়ায়।আর আফ্রিদ তো হা করে তাকিয়ে আছে।কতোটা স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তার মায়াপরিকে।চোখমুখে মনে হয় পানি দিয়েছে তাই বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।সামনের ছোট ছোট চুলগুলো ভেজা আর মুখে,কপালে ল্যাপ্টে আছে।একধ্যানে তাকিয়ে রইলো আফ্রিদ।আফ্রিদকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইয়াসিবা লজ্জায় যেন পারে না মাটি খুঁরে তার মধ্যে ডুকে যেতে।ইয়াসিবা হালকা একটু কাঁশি দিয়ে উঠে আর কাশির আওয়াজেই আফ্রিদের ধ্যান ভাঙ্গে।তারপর বলে,,
–” এখানে এসে বসো।”
ইয়াসিবা কোন কথা ছাড়াই আফ্রিদের মুখোমুখি বসলো।আফ্রিদ তাকিয়ে আছে ইয়াসিবার দিকে।মেয়েটা লজ্জায় লাল হয়ে আছে।আফ্রিদ শুনেছে মেয়েরা না-কি তাদের ভালোবাসার মানুষের সামনেই সবচেয়ে বেশি লজ্জা পায়।তাহলে ইয়াসিবাও তাকে ভালোবাসে।আফ্রিদ ইয়াসিবার প্রতিটি কাজে নিজের জন্যে অসীম ভালোবাসা খুজে পায়।তবে পুরনো সেসব কি মিথ্যে ছিলো।হ্যা!! মিথ্যেই সব মিথ্যে।আফ্রিদ ইয়াসিবার চোখে নিজের জন্যে ভালোবাসা খুজে পায় অসীম ভালোবাসা।আফ্রিদকে সব সত্যি খুজে বের করতে হবে।অতীতে কি হয়েছিলো সব জানতে হবে।তিন বছর আগে যে ভুলটা করেছে আবারও সেই একই ভুল সে করতে পারবে নাহ।শুধু মানুষের মুখের কথায় আর ভুলবে না আফ্রিদ এইবার নিজেই সন সত্যি বের করবে।ইয়াসিবার বাহু ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে আফ্রিদ।ইয়াসিবা চকিত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে।আফ্রিদ মনে মনে হালকা হাসলো।ইয়াসিবার গালে হালকা করে নিজের হাত ছোঁয়ায়।কেঁপে উঠে ইয়াসিবা ওর হাত দুটো আফ্রিদের কাঁধে থাকায় আফ্রিদের কাঁধ খামছে ধরে।আফ্রিদ ইয়াসিবার গালের চুলগুলো কানের পিছে গুজে দেয়।চোখ নামিয়ে নেয় ইয়াসিবা।আফ্রিদের দিকে তাকানোর সাহস নেই তার। আফ্রিদ উঠে দাঁড়ায় তারপর ঘরের লাইট নিভিয়ে দেয়।ইয়াসিবা আফ্রিদকে ঘরের লাইট নিভাতে দেখে জিজ্ঞেস করে,
–” লাইট নিভাচ্ছেন কেন?”ইয়াসিবার কথায় বাঁকা হেসে আফ্রিদ বলে,
–” তো আমার সামনে এতো আলোর মাজে নিজের উন্মুক্ত পিঠে মলম লাগাতে চাও?অবশ্য তাতে আমার কোন সমস্যা নেই।তুমি লজ্জা না পেলে আমি লাইট জ্বালিয়ে দিচ্ছি।”
ইয়াসিবা দ্রুত জবাবা দেয়,
–” নাহ নাহ! ঠিক আছে লাইট জ্বালোনোর দরকার নেই। ”
আফ্রিদ হালকা হেসে ইয়াসিবার পাশে এসে বসলো। ঘর ততোটাও অন্ধকার না।ব্যালকনি দিয়ে বাগানের লাইট জ্বালানো সেই আলো আসছে।প্রাই স্পষ্টই সব দেখা যাচ্ছে। আফ্রিদ ইয়াসিবা ঘুরিয়ে বসিয়ে দেয়।এখন ইয়াসিবার পিঠ আফ্রিদের বুক বরাবর।আফ্রিদ পিছন থেকেই ইয়াসিবার কোমড় পাশ দিয়ে হাত নিয়ে ওর পেটের কাছে ফিতাটা খুলে দেয়।ইয়াসিবা চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে।
ফিতাটা খুলার পর ওর কাঁধ থেকে আস্তে আস্তে বাধরাব টা নামিয়ে দেয় আফ্রিদ।ইয়াসিবা জোড়েজোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে।ইয়াসিবার উন্মুক্ত পিঠ আফ্রিদ পুরো স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছে বাগানের লাইটের আলোতে।ইয়াসিবার চুলগুলো ঘাড় থেকে সরিয়ে দেয়। ইয়াসিবা কেঁপে উঠে বিছানার চাঁদর খামছে ধরে।এক অদ্ভুত ভালোলাগায় ছেয়ে যাচ্ছে ইয়াসিবার হৃদয়।আফ্রিদ ঘোরলাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ইয়াসিবার পিঠে কালো তিলটা আফ্রিদকে প্রচুর টানছে মন চাচ্ছে একটু ছুঁয়ে দিতে।কিন্তু আবারও পিঠে মারের দাগগুলো দেখে বুকটা কষ্টে ছেঁয়ে যাচ্ছে।ইসস!! তার জন্যে এসব হয়েছে।আফ্রিদ নিজের মনকে আর বাধা দিলো নাহ।ভালোবাসে তো সে এই মেয়েটাকে।আর ইয়াসিবাও তাকে ভালোবাসে তা সে খুব ভালোভাবেই জানে এখন।আফ্রিদ ইয়াসিবার পিঠে নিজের ঠোঁটের উষ্ম স্পর্শ দিতে থাকলো ছোটছোট করে।এদিকে ইয়াসিবার জান যায় যায় অবস্থা। আফ্রিদ একি করছে? অসয্য সুখে সেতো মরেই যাবে।আচ্ছা আফ্রিদকি মন থেকে তার কাছে আসছে না-কি ঘোরের মাজে এসে এসব করছে।কথাটা ভাবতেই নিজের বাথরাবটা নিজের শরীরে জড়িয়ে আফ্রিদের দিকে ঘুরে বসে ইয়াসিবা।এদিকে ইয়াসিবাকে এমন করতে দেখে আফ্রিদ নিশ্চুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ইয়াসিবা কাঁপা গলায় বললো,,
–” আ..আপনি আ..আসলে ক..কি?”
আফ্রিদ বুজতে পারছে ইয়াসিবা কি বলতে চাইছে।ইয়াসিবা তার এহেম বিহেবে একটু শক খেয়েছে।আফ্রিদ নেশাধরা গলায় বললো,,
–” আমি জানি তুমি কি ভাবছো?আমি কোন ফর্মালিটিস পছন্দ করি নাহ।আমি তোমার স্বামি আমি।আর তোমাকে নিজের মতো করে ভালোবাসার অধিকার ও আমার আছে।তুমি কি আমায় সেই অধিকার দিবে নাহ?”
আফ্রিদের কথায় ইয়াসিবার চোখে পানি চলে আসলো।তবে কি আফ্রিদ তাকে ক্ষমা করে দিয়েছে তাকে বিশ্বাস করেছে যে আগের কোন কিছুই ইয়াসিবা ইচ্ছে করে করেনি।ইয়াসিবা ধরাগলায় বললো,
–” আপনি আমার স্বামি! আমাকে ভালোবাসা,শাষন করার সব কিছুর অধিকারই আপনার আছে।”,
তারপর আবার আফ্রিদের হাত দুটো ধরে বলে,,
–“আপনি শুধু আমাকে ভালোবাসুন আর বিশ্বাস করুন।আমি সত্যি বলছি ওইসব আমি ইচ্ছে করে কিছুই করিনি।আপনাকে আমি অনেক ভালোবাসি আপনি ছেড়ে অন্য কারো কাছে যাওয়া কল্পনাও করতে পারিনাহ।” ইয়াসিবা হুঁহুঁ করে কেঁদে দিলো।আফ্রিদ ইয়াসিবার চোখে পানি দেখে আফ্রিদ নিজেরও চোখে পানি চলে এসেছে।নাহ! এই মেয়েটা কখনোই তাকে তাকে ঠকাতে পারে নাহ।আফ্রিদ ইয়াসিবাকে হেচঁকা টানে নিজের বুকে নিয়ে আসে।তারপর ইয়াসিবার মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরে বলে,
–” হুসস! আর কেঁদো নাহ।আমি আর তোমাকে কষ্ট দিবো নাহ।আমি তোমাকে বিশ্বাস করি ইয়াসিবা।আর অনেক ভালোবাসি।কিন্তু কি কারনে তুমি তিন বছর আগে সেসব করেছিলে বলো আমাকে ইয়াসিবা।”
ইয়াসিবা কাঁদতে কাঁদতেই বলে,
–” আমি বলতে পারবো নাহ আপনাকে।আমাকে মাফ করুন।এই কথাটা না-হয় অজানাই থাক।এটা আমাকে বলতে বলবেন নাহ প্লিজ।”
আফ্রিদ বুজতে পারলো এর পিছনে অনেক বড় একটা কারন আছে যেটা ইয়াসিবা বলতে চাইছে নাহ।আফ্রিদ আর জোড় করলো নাহ ইয়াসিবাকে। মেয়েটা এমনিতেও অসুস্থ।আফ্রিদ ইয়াসিবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
বললো,,
–” হুস! আর কাঁদবে নাহ।আজ থেকে তোমার চোখে আমি আর পানি আসতে দিবো নাহ।তোমাকে এতোটা ভালোবাসা দিবো যে তুমি আগের সব বিষাক্ত স্মৃতি ভুলে যাবে।”
ইয়াসিবাকে অনেক বুজিয়ে শুনিয়ে স্থির করে ওর পিঠে মেডিসিন লাগিয়ে দিলো।তারপর নিজে শুয়ে তারপর ইয়াসিবাকে বুকে টেনে নিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।ইয়াসিবা আজ খুশিতে আত্নহারা। ওর কতোদিনের মনের আশা পূরণ হলো নিজের ভালোবাসা মানুষটি তার স্বামি হবে।আর তার বুকে মাথা দিয়ে সে নিশ্চিন্তে ঘুমাবে।আজ সে শান্তিতে ঘুমোবে।এই বুকটাই যে তার চিরশান্তির স্থান।ইয়াসিবা চোখ বুজে আফ্রিদকে আরো জোড়ে আকড়ে ধরলো।আফ্রিদ ও ইয়াসিবার কপালে চুমু খেয়ে চোখ বুজে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগলো।সেও ঘুমাবে।অনেক দিন পর আজ মনটা অনেক হালকা লাগছে তার।আজ সে সুখী পৃথিবীর বুকে চিরসুখী।
#চলবে_______
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।#অনুভূতিটা_তোমায়_ঘিরে🥀🌺
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি🥀❤️
#পার্টঃ০৫🥀💜
সকালের কারো মিষ্ট ডাকে ঘুমু ঘুমু চোখ দুটো মেলে তায়ায় ইয়াসিবা।পরক্ষনেই সামনের মানুষটিকে দেখেই তার চেহারায় যেন একটা প্রাপ্তির হাসি ফুটে উঠলো।আজ কতোটা দিন পর সে আগের আফ্রিদকে দেখতে পারছে।ইয়াসিবাকে নিজের দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আফ্রিদ কিঞ্চিত হাসলো।তারপর আলতো হাতে ইয়াসিবা’র গাল স্পর্শ করলো।ইয়াসিবা আবেশে চোখ বুজে নিলো।এই মানুষটার এই আলতো হাতের স্পর্শটাও যে ইয়াসিবাকে স্বর্গীয় সুখ প্রদান করে তা কি সে জানে?
–” আমার ঘুমকুমারী উঠবেন না?আজকের সকালটা আল্লাহ্ তায়ালার নাম নিয়ে শুরু করা যাক।”
আফ্রিদের কথায় ইয়াসিবা চোখখুলে প্রাপ্তির হাসি দিলো।এইতো…এইটাই তো সে চেয়েছিলো খোদার দরবারে এতোদিন।অবশেষে তার রব তার দিকে মুখ তুলে তাকিয়েছে।ইয়াসিবা ছোট বাচ্চাদের মতো আদুরে আদুরে মুখ বানিয়ে দু-হাত উপরে তুলে বাচ্চাদের মতো ভঙ্গি করে আফ্রিদকে বুজালো যে তাকে কোলে নিয়ে ফ্রেস করিয়ে আনতে।আফ্রিদ ইয়াসিবার কান্ড দেখে হেসে দিলো। তারপর ইয়াসিবাকে কোলে তুলে নিয়ে ওর নাকেনাক ঘসে দিয়ে বললো,
–” এতো বড় হয়ে গেলে এখনো সেই আগের বাচ্চা ইয়াসিবাই আছো।”
–” আমি আজীবন আপনার কাছে আগের ইয়াসিবা হয়েই থাকতে চাই।যেই ইয়াসিবাকে আফ্রিদ ভালোবেসেছিলো।!”
–“আচ্ছা।”
–” হ্যা!”
আফ্রিদ ইয়াসিবাকে নিয়ে ওয়াশরুমে নামালো ওকে সুন্দর ভাবে ফ্রেস করিয়ে দিয়ে দুজনে একসাথে ওজু করে এসে নামাজ আদায় করে নিলো।মসজিদ দূরে হওয়ায় আফ্রিদ ঘরেই নামাজ পড়লো।নামাজ আদায় শেষে আফ্রিদ বললো,
–” তুমি বারান্দায় যাও আমি আসছি।”
–” কোথায় যাবেন?”
–” বললাম না আসছি।”
–” আচ্ছা!”
ইয়াসিবা বারান্দায় চলে গেলো।শীতের ভোর হওয়াতে এখনো কুয়াশা কাটেনি।তবে ইয়াসিবার মনের কুয়াশা কেটে গেছে।মৃদ্যু মন্দ বাতাস এসে ইয়াসিবার গা ছুঁয়ে যাচ্ছে।নামাজ পড়ায় আজ কতোটা সতেজ লাগছে,দেখেই বুজা যাচ্ছে কতোটা খুশি আজ মেয়েটা,ইয়াসিবার চুলগুলো ছাড়া বিধায় কিছুক্ষন পর পর হালকা করে দুলে উঠছে,আর উড়ছে ইয়াসিবার শাড়ির আচঁল।এই হৃদয় কাঁপানো দৃশ্য কেইবা না চায় দেখতে।কফি হাতে বারান্দায় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রিয়তমার এই এই অপরূপ রূপ দেখতে ব্যস্ত আফ্রিদ।
কামের পিঠে চুল গুজে দিয়ে পাশ ফিরে তাকাতেই আফ্রিদকে কফি গাতে বারান্দার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো ইয়াসিবা।ইয়াসিবা আফ্রিদের কাছে গিয়ে আস্তে করে বললো,
–” এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?”
–” নিজের প্রিয়তমাকে প্রেমের সিক্ততায় আড়ষ্টতা নিয়ে দেখছিলাম।”
ঘোরমাখা কন্ঠ আফ্রিদের।আর আফ্রিদের এই কথায় যেন এক ভয়ংকার মাদকতা উপলব্ধি করতে পারলো ইয়াসিবা।সারা শরীর জুড়ে যেন তার ভালোবাসার এক অজানা বাতাস বয়ে গেলো।চোখ বুজে ফেললো সে।কিন্তু খানিক বাদে আচমকা তাকে আফ্রিদ পাজাঁকোলে তুলে নেওয়াতে ঘাবড়ে গিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরলো।আচমকা আফ্রিদ এমন করবে ভাবতে পারেনি সে।
আসলে আফ্রিদ ইয়াসিবাকে চোখ বুজে থাকতে দেখে পাশের টেবিলে কফি মগ দুটো রেখে ওকে কোলে তুলে নেয়।
..
ইয়াসিবাকে নিয়ে আফ্রিদ ডিভানে বসলো।ইয়াসিবাকে কোলে নিয়েই সে কফি মগদুটো নিলো।তারপর দুজনে কফি পান করে সকালের ভোরের আবহাওয়া উপভোগ করতে লাগলো।ইয়াসিবা কফি শেষ করে বসে আছে।আফ্রিদ ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে।সে ভেবে পায়না একটা মেয়ে এতোটা গরম কফি কিভাবে খেতে পারে।যেখানে আফ্রিদ ছেলে হয়েও পারে নাহ। আফ্রিদকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইয়াসিবা বলে,
–” কি হয়েছে এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?”,
–” দেখছি তোমায়।”
–” আমি কি করলাম?”
–” কিছুই করোনি।”
–” তাহলে?”
–” তুমি সব কিছু এতো গরম খাও কিভাবে? আমি পুরুষ মানুষ হয়েও পারিনা গরম কিছু খেতে।”
আফ্রিদের কথায় ইয়াসিবা খিলখিল করে হাসলো।আর তার হাসিতে মাতাল আফ্রিদ।বললো,
–” এভাবে হেসো না সুন্দরী।”
–“কেন?”
–” এইযে বুকে বড্ড লাগে।” বুকের বা-পাশ দেখিয়ে আফ্রিদ বলে।ইয়াসিবা আবারো হেসে দিলো।
আফ্রিদ বুকের বা-পাশে চেপে ধরে বললো,
–” শেষ আমি। ওগো মোর মায়াবী কন্যা এইবার তো হৃদয়টা বুজি আপনার এই হাসির ঝংকারের এই তীরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলো।”
ইয়াসিবা হেসেই বললো,
–” কি হয়েছে আপনার?”
–” ভয়ানক এক অসুখ।”
–” কিসের অসুখ?”
–” ভালোবাসাময় অসুখ।”
–” এখন আমি কি করতে পারি আপনার জন্যে?”
–” কিছু না মায়াবতী শুধু একটু অমৃত পান করিয়ে স্বর্গীয় সুখের রাজ্যের আংশিক দেখা দিন আমায়।” নেশাজড়ানো কন্ঠ আফ্রিদের।আফ্রিদের এই নেশাজড়ানো কন্ঠের আবদারটা কিসের তা ইয়াসিবা ভালোই বুজতে পারলো।মুহূর্তেই লজ্জায় ইয়াসিবার গাল দুটো ফুলে উঠলো।ইয়াসিবা আফ্রিদের কোল ছেড়ে উঠে দাড়াতে নিলেই আফ্রিদ তার হাত চেপে ধরে করুন গলায় বললো,
–” রূপবতী চলে গেলে যে ব্যাথাটা আরো বেড়ে যাবে।তোমার ওই ওষ্ঠদ্বয়ের আলতো ছোঁয়ায় আমার এই ব্যাথিত হৃদয়টা ভালো করে দেও।”
ইয়াসিবা লজ্জায় যুবুথুবু হয়ে বসে রইলো।লোকটা কি জানে না? যে তার রূপবতীর যে অনেক লজ্জা, এতো লজ্জা পেরিয়ে সে কিভাবে? ইসস! আর ভাবতে পারছে না ইয়াসিবা।তবুও কাঁপা গলায় বললো,
–” আপনার রূপবতীর ওষ্ঠদ্বয়ের ছোঁয়া আপনি নিজেই নিয়ে নিনি না।আপনার প্রিয়তমার যে বড্ড লজ্জা।”
–” এভাবে বললে যে আরো কিছু পাবার তৃষ্ণা বেড়ে যায়।” ইয়াসিবা আফ্রিদের ঠোঁট চেপে ধরলো ওর কথায়।আফ্রিদ ইয়াসিবার হাতের তালুতে চুমু খেলো।কেঁপে উঠলো ইয়াসিবা।আফ্রিদ ইয়াসিবার কোমড় জড়িয়ে ধরে টেনে নিজের বুকের মধ্যিখানটায় নিয়ে আসলো।ইয়াসিবা নিজের দৃষ্টি এখনো নিচের দিকে আবদ্ধ করে রেখেছে।
–” লাজুকলতা তাকাবে নাহ।”,
–” উহুঁ!”
–” কেন তাকাও নাহ।”
–” আমি যে তাকাতে পারবো নাহ।আপনার এই মাতাল করা চাহনী যে আমার ভীতরটা বড্ড এলোমেলো করে দেয়।” প্রচন্ড মিইয়ে যাওয়া গলাহ আস্তে করে বললো ইয়াসিবা।
–” ভালোবাসি ইয়াসিবা!” আফ্রিদের মুখে যতোবার এই ‘ভালোবাসি’ কথাটা শুনে ততবার ইয়াসিবা তার হৃদয়টায় একটা সুখের রাজ্যের দেখা পায়।ইয়াসিবা চোখ তুলে তাকাতেই আফ্রিদের তপ্ত ওষ্ঠদ্বয়ের তীব্র ছোঁয়া নিজের ওষ্ঠ জোড়ায় পেলো।মুহূর্তেই আফ্রিদের আরো কাছে এসে একহাতে ওর পিছনের চুলগুলো অন্যহাতে ওর বুকের কাছের শার্ট খামছে ধরলো। দীর্ঘ তিন বছর, সাত মাস পর এই ভালোবাসাময় আবেগে মাখামাখি দুজন।গভীর একটা প্রেমাসিক্ত চুম্বন শেষ করে আফ্রিদ ইয়াসিবাকে ছেড়ে দেয়।ইয়াসিবা দ্রুত নিজের লজ্জারাঙ্গা মুখটা লুকোতে আশ্রয় নিলো তার স্বামির বুকের মাঝখানটায়।
আফ্রিদ ইয়াসিবার চুলগুলো একপাশে সরিয়ে দিলো।আফ্রিদের ঠান্ডা হাতের ছোঁয়ায় আরো মিইয়ে গিয়ে মিশে গেলো আফ্রিদের বুকে সে।আফ্রিদ ইয়াসিবার ঘাড়ে গাঢ়ো এক চুমু খেলো।ইয়াসিবা আলতো করে ‘ উফফফ!’ করে শব্ধ করে তুললো। জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে নিতে ইয়াসিবা বললো,,
–” এভাবে ছুঁবেন না-গো আমার যে মরণ হবে।”
–” ভালোবাসা উষ্ম স্পর্শে যদি মরণ হয় তবে আমিও মরতে চাই।”
ইয়াসিবা তাকালো আফ্রিদের দিকে আফ্রিদের চোখ দুটো যেন তাকে বলছে, ‘ একটু তোর অধরজোড়ার ছোঁয়া দে- না আমায় আমি যে বড্ড কাঙ্গাল তোর ভালোবাসার কাঙ্গাল।’ ইয়াসিবা ঝুকে এলো আফ্রিদের মুখের সামনে।মৃদ্যু হেসে আফ্রিদ নিজের চোখ বুজে নিলো।ইয়াসিবা ভালোবাসা দিয়ে তপ্ত এক চুমু খেলো আফ্রিদের কপালে তারপর দু- চোখে তারপর দু-গালে ঠোঁটের দিক তাকিয়ে থেমে গেলো সে।ওকে থামতে দেখে আফ্রিদ চোখ বন্ধ অবস্থায়ই বলে উঠে,
–” এই ঠোঁটজোড়া কি কোন ঘোর অন্যায় করেছে যে তারা এই সুন্দরীর অধরের একটুখানি ছোঁয়া পাচ্ছে নাহ।”
ইয়াসিবা হাত দিয়ে আলতো স্পর্শ করলো আফ্রিদের ঠোঁটে। আফ্রিদের ঠোঁট ইয়াসিবার আঙুলে চুমু খেলো প্রতিবার যতোবার ইয়াসিবা হাত ছুঁইয়েছে।
অবশেষ..অবশেষে ইয়াসিবা সময় নিয়ে গভীর এক চুমু খেলো আফ্রিদের ঠোঁটে।তারপর ঝাপটে ধরলো আফ্রিদকে।
আফ্রিদও তাকে জড়িয়ে ধরলো। দুজন ভালোবাসার মানুষের জন্যে এর চেয়ে আর সুখের সময় কিইবা হতে পারে? আজ আফ্রিদ পরিপূর্ণ। হ্যা সে তার প্রিয়সীর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ।
#চলবে,,,,,,,,,
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।কোন জায়গায় কোনধরনের ভুল দেখতে পেলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন।আর আপনারা কি একটা সুন্দর মন্তব্য করতে পারেন না?আমি কি এর প্রাপ্য না? মানে এতোটাই বাজে লিখি আমি যে আপনাদের মন্তব্য করতেও মন চায় নাহ🙂