#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৪১
.
.
কথাটুকু বলতে গিয়ে তিহানের বিছানার উপর বসে থাকা মেয়েটির দিকে চোখ পড়ে যায়। চোখ দুটো যেন স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বড় বড় হয়ে গেল। আর হবে নাই বা কেন! বিছানার উপর যে বসে আছে নিদ্রা নামক তাহা। যে কিনা মাঝরাস্তায় তিহানের বাইকের সামনে পড়েছিল।
তিহানের প্রায় মাথায় আকাশ ভাঙার মতো অবস্থা। নিজেকে সামলাতে না পেরে চোখমুখ কুচকে বলেই ফেলল,
” এই মেয়ে তুমি এখানে কেন? নিদ্রা কোথায়? ”
এদিকে তিহানকে দেখে নিদ্রাও বেশ চমকে গেল। যার ফলে এক লাফে বসা থেকে উঠে সোজা বিছানার উপর দাঁড়িয়ে চোখে দুটো দিয়ে ১৪০ পাওয়ারের ব্যাটারীর মতো তাকিয়ে বলল,
” আপনি! আপনি এখানে কী করছেন?”
তিহান বিছানার কাছে যেতে যেতে কড়া গলায় বলল,
” এই মেয়ে তুমি বিছানার উপর দাঁড়িয়েছ কেন? নামো, নামো বলছি। ”
” আগে বলুন আপনি এখানে কেন? ”
” সেই প্রশ্ন তো আমার করা উচিৎ তোমাকে যে, তুমি আমার ঘরে কী করছ?”
” এটা আপনার ঘর! ”
” তা নাহলে কী তোমার বাবার ঘর? ”
” ঠিক করে কথা বলুন। ”
” নিজে আগে ঠিক করে দাঁড়াও পড়ে আমার কথা ঠিক করতে এসো। ”
তিহানের কথা শুনে নিদ্রা দ্রুত বিছানা থেকে নেমে তিহানের সামনে গিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। গলার স্বর ক্ষানিকটা উঁচু করে বলল,
” সোজা হয়ে দাঁড়িয়েছি দেখেছেন? এবার বলুন আপনি এ ঘরে কেন এসেছেন? আর আমার বর-ই বা কোথায়? আপনাকে পাঠালো কেন? ”
” আমার ঘরে আমি আসব না তো কে আসবে? আর তোমার নাম কী? নিদ্রাই বা কোথায়? ”
তিহানের মুখে আমার ঘর শুনে বেশ চমকে যায় নিদ্রা। চোখ দুটো বড় করে এক আঙুল তিহানের চোখ বরাবর তুলে বলল,
” এটা আপনার ঘর! তারমানে আপনি আমার বর? ”
” আমি তোমার বর হতে যাবো কেন? আর তুমি এই ঘরেই বা কী করছ? ”
” এই ঘরে কী করছি মানে? এটা তো আজ থেকে আমার ঘর। ”
” এই মেয়ে কি বলছ তুমি এসব? আর তোমাকে কখন থেকে জিজ্ঞেস করছি নিদ্রা কোথায় উত্তর দিচ্ছ না কেন তুমি? ”
” নিদ্রাতো আপনার সামনেই দাঁড়িয়ে। তাহলে বলব কী করে নিদ্রা অন্য কোথাও। ”
” মানে কী? ”
” মানে হচ্ছে… আমিই নিদ্রা। ”
” তুমি নিদ্রা হও কি করে? তুমি তো… তুমিতো…ধ্যাৎ! সেদিনের বলা নামটাও তো ভুলে গিয়েছি। ”
” আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি ওয়েট। সেদিন আমি আপনাকে আমার নাম বলেছিলাম তাহা। ”
” হুম। তাহা তাহা, এটাই তো সেদিন বলেছিলে। তাহলে এতদিন কেন বলেছ নিদ্রা তোমার নাম? ”
” নিদ্রাতো আমার নামই। ”
” উফফ! কী বলছ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। ”
” শুনুন। আমি বুঝিয়ে বলছি আপনাকে। ”
” দয়া করে বলো। ”
” আমার নামই নিদ্রা আবার আমার নামই তাহা। তবে সবাই আমাকে নিদ্রা বলেই ডাকে। তাই বিয়ের আগে থেকে এই পর্যন্ত আপনারা সবাই আমাকে নিদ্রা নামেই চিনে এসেছেন। ”
” তাহা নামে যদি কেউ নাই ডাকে তাহলে রেখেছে কেন এই নাম? আর সেদিন আমাকেই বা কেন বলেছিলে যে তোমার নাম তাহা? ”
” তাহা আমার ভীষণ প্রিয় নাম কিন্তু কেউ আমাকে সেই নামে ডাকে না। তাই অপরিচিত সবাইকেই আমি তাহা নামটা বলি যেন তারা আমাকে সেই নামে ডাকে। ”
” ভালো। এবার সাইডে গিয়ে দাঁড়াও আমি বিছানায় যাবো। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে আমার। ”
” সাইডে দাঁড়াবো কেন? ”
” তাহলে কোথায় দাঁড়াবে ঘরের মাঝখানে? ”
” আশ্চর্য! আমি দাঁড়াবো কেন? রাত কি কম হয়েছে? আমার ঘুমোতে হবে না? সারাদিন কি কম ধকল গিয়েছে যে, এখন দাঁড়িয়ে থাকবো? ”
” তাহলে কোথায় ঘুমাবে তুমি? ”
” আপনার মাথায় কি সমস্যা আছে? এটা কেমন প্রশ্ন কোথায় ঘুমবো! চোখের সামনে এই বিশাল বিছানাটা যে রাখা আছে চোখে পড়ে না? ”
” এই বিছানায় তুমি ঘুমোবে? ”
” এ ঘরে এ বিছানা ছাড়া কি অন্যকোনো বিছানা আছে? নেই তো। তাহলে অবশ্যই এ বিছানাতেই ঘুমবো। ”
তিহান গলায় বিরক্তির সুর নিয়ে বলল,
” তাহলে আমি কোথায় ঘুমবো? আকাশে? ”
” আকাশে কেন মেঝেতে ঘুমোবেন৷ আর আপনি চাইলে এ বিছানাতেও ঘুমোতে পারেন। আমি আপনার সাথে বেড শেয়ার করতে রাজি আছি। কেননা হাজবেন্ড তো তার ওয়াইফের সাথেই ঘুমোবে তাই না? ”
নিদ্রার মুখে হাজবেন্ড ওয়াইফ নামক শব্দ দুটি শুনে তিহানের মেজাজ চরম বিগড়ে যায়। নিজের রাগ সামলাতে না পেরে নিদ্রাকে এক ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে বিছানায় সটান হয়ে শুয়ে ক্ষীপ্র কন্ঠে বলল,
” আর একটা দিনও যদি তোমার মুখে হাজবেন্ড ওয়াইফ নামক কোনো শব্দ শুনি সেদিন বুঝবে কত ধানে কত চাল। আজ প্রথমদিন বলে ছেড়ে দিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আর ছাড়ব না মনে রেখো কথাটা। আর হ্যাঁ, লাইট টা অফ করে দাও। নাহলে ঘুমোতে আমার অসুবিধে হবে। ”
বলেই তিহান বা’কাত হয়ে চোখ বুজে শুয়ে পড়ল।
এদিকে নিদ্রার যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল তিহানের ব্যবহার দেখে। মুহূর্তের মাঝে চাঞ্চল্যকর নিদ্রা যেন চুপসে গেল। যে নিদ্রা হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হলেও চোখেমুখে হাসির আভার কমতি থাকে না সেই নিদ্রার মুখটা আজ মলিন। চোখেমুখে হাসির আভা তো দূরে থাক ঠোঁটের কোণে কিঞ্চিৎ পরিমাণ হাসির ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। চোখ বেয়ে কেবল নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে মেঝেতে। কেমন যেন বোবা বোবা লাগছে নিজেকে আজ নিদ্রার।
চোখের জল মুছে আস্তে করে একহাত দিয়ে মেঝেতে ভর দিয়ে দাঁড়ালো নিদ্রা। সুইচ বক্সের কাছে গিয়ে ঘরের বাতি নিভিয়ে দিল। অন্ধকারের মাঝেই লাগেজের চেইন খুলে একসেট সেলওয়ার কামিজের সুট নিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমের ভেতর।
.
ঘড়ির কাটায় রাত ৩ টা ২৩ মিনিট। পুরো জগতবাসী নিস্তব্ধ হয়ে আছে। নিস্তব্ধ হয়ে আছে আকাশের উড়ন্ত পাখিরা, জ্যামে পূর্ণ রাস্তার কোলাহলেরা। তবে তাদের সাথে তাল মিলিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে আছে একটি চাঞ্চল্যকর প্রাণ। হ্যাঁ, নিদ্রার মতো চঞ্চলতায় পূর্ণ মেয়েটিও আজ নিস্তব্ধ হয়ে আছে।
বেলকনির মেঝেতে দু’হাঁটু এক কুচ করে দু’হাত দিয়ে ঝাপটে ধরে তার উপর মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে নিদ্রা। লম্বা, ঘন, সিল্কি চুলগুলো খোলা অবস্থায় পড়ে আছে পিঠময় জুড়ে। বাতাসের বেগে মাঝে মধ্যে কিছু চুলের গোছা চোখেমুখে এসে পড়ছে তো অন্যবার পেছনে উড়ে নিজেদের স্বাধীন বলে আক্ষায়িত করছে। জায়গা জায়গা দিয়ে বেশ জটলাও বেঁধে আছে। আর জটলা বাঁধবে নাই বা কেন! বিয়ের সাজ ফুটানোর জন্য কনের চুল যেভাবে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে বাঁধা হয়, সেই চুল ভালোভাবে না আঁচরিয়ে খুললে যে জটলা বাঁধবেই। সেই জায়গায় নিদ্রা ভালোভাবে চুল আঁচড়ানো তো দূরের কথা চুলে চিড়নিই লাগায়নি। কেবল হাত দিয়ে টেনে টেনে চুলের বাঁধন খুলে নিজেকে মুক্ত করেছে।
বেলকনিতে বসে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখতেই নিদ্রার চোখ দিয়ে টুপ করে জল বেরিয়ে গেল। আর মনে মনে বলল,
” এই মেঘাচ্ছন্ন আকাশটাই কি আমার ভুবন! জীবনটা একনিমিষে এক দমকা হাওয়ার মত পালটে না গেলেই কি হতো না! যে আমি আজ অবধি কারো কাছে মাথা নিচু করিনি, সেই আমি আজ সামান্য কথায় এভাবে চুপসে গেলাম! অবশ্য কথাটি কি আদৌ সামান্য কথার পর্যায়ে পড়ে কি-না ভাবতে হবে। আচ্ছা, আমার চাওয়া-পাওয়া গুলো কি খুব বেশি হয়ে গিয়েছিল যে, বাবা-মা এভাবে আমাকে আঁধারের মাঝে ছুঁড়ে ফেলল। ”
চোখ দিয়ে অনবরত নোনা জল পড়লেও এর শেষ নিদ্রা খুঁজে পাচ্ছে না। যতই ভাবে কাঁদবে না, কান্না যেন আরও বেশি করে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে।
.
তিহানের বেশ অস্বস্তি অনুভব হচ্ছে। চোখে ঘুম থাকলেও ঘুমাতে পারছে না সে। তারপরও ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করতে গিয়ে একবার ডান কাত হচ্ছে তো একবার বাম কাত। কিন্তু কোনোমতেই যখন ঘুম আসছিল না বরং অস্বস্তির মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল তিহান শোয়া থেকে উঠে বসে পড়ল। পাশ ফিরে তাকাতে দেখে বিছানা খালি। কেউ নেই তার পাশে। পুরো ঘর জুড়ে চোখ বুলালেও কাউকে দেখতে পেল না সে। হঠাৎ আবছা আলোয় বেলকনিতে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে বিছানা থেকে নামল তিহান। ধীর পায়ে এগুলো সেই উপস্থিতির সন্ধানে।
ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে বেলকনিতে পা রাখতেই তিহান থমকে গেল। নিদ্রার মত এরকম চঞ্চল মেয়ে এভাবে দুমড়ে মুচড়ে যাবে তিহান ভাবতে পারেনি। ভীষণ রাগ হচ্ছে নিজের উপর। তার ভাগ্যের পেছনে যে মেয়েটির কোনো হাত নেই, তাহলে কী করে সে এরকম একটি জঘন্য কাজ করতে পারল? ভেবেই বিরক্ত লাগছে নিজেকে নিজের।
বেলকনির মেঝেতে নিদ্রার ঠিক ডান পাশে একপা টান টান সোজা রেখে অন্য পা ভাজ করে সেই হাঁটুর উপর একহাত সোজা করে রেখে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে তিহান শান্ত গলায় বলল,
” সীমাবদ্ধতা আর সমস্যা আছে বলেই মানুষের জীবন এত রোমাঞ্চকর। যে মানুষের জীবনে সমস্যা আর সীমাবদ্ধতা থাকে না সে জীবন হয় রসকষহীন। ”
হঠাৎ কারো কথা শুনতে পেয়ে নিদ্রা ভয় পেয়ে গেল। এমনিতেই রাতে একা কোথাও থাকতে ভয় পায়। তারপর আবার মাঝরাতে একা বেলকনিতে বসে। তাই যেন তার ভয়ের মাত্রাটা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুন বেড়ে যায়। চোখ দুটোর মাঝে আতংকের ছাপ ফুটিয়ে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে তিহান বসে। বুকে মোচড় দেয়ার পরিমাণটি আয়ত্তে এনে আমতা আমতা করে বলল,
” আপনি না ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন? ”
” শুয়ে পড়লেই কি ঘুমিয়ে পড়া যায়? ”
নিদ্রা চুপ করে রইলো। মিনিট দুইয়েক যেতেই আবার বলল,
” কিছুক্ষণ আগে ওসব কী বলেছিলেন?”
” কোন সব? ”
” ওই যে, সমস্যা, সমাধান আর… আর কী যেন! ও হ্যাঁ, রোমাঞ্চকর। এই কথাগুলোর মানে কী? ”
তিহান কিছুটা মুচকি হেসে বলল,
” কিসে পড়ো তুমি? ”
” আমি আপনাকে কি জিজ্ঞেস করলাম আর আপনি কি বলছেন! ”
” তোমার প্রশ্নের উত্তর দিব। তবে আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। ”
” এইচএসসি ফাইনাল দিয়েছি।। ”
” বয়স আনুমানিক ১৮ কি ১৯ হবে। তাই না? ”
এই মুহূর্তে নিদ্রাকে দেখলে কেউ বলবে না কিছুক্ষণ আগে এই মেয়েটিই বুক ফেঁটে কাঁদছিল। কেননা তিহানের মুখে নিজের বয়স শুনেই চোখেমুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠল। আর বলল,
” আপনি কী করে জানলেন?”
” এটা না জানার কিছু নেই। ক্লাস হিসেব করলে এমনিতেই বয়স বেরিয়ে আসে। ”
” ওহ্ ,আচ্ছা! ”
” হুম। ”
” এবার কি সেই প্রশ্নের উত্তর দিবেন? ”
কিছুটা থেমে তিহান বলল,
” উত্তর দেয়ার ইচ্ছে ছিল বলেই বয়স জিজ্ঞেস করেছিলাম। তবে এ প্রশ্নের উত্তর বুঝার বয়স এখনো তোমার হয়নি। যেদিন বয়স হবে সেদিন আমার কাছ থেকে উত্তর শোনার অপেক্ষায় থাকতে হবে না। আপনা আপনি সেই পেঁচানো প্রশ্ন থেকে উত্তর বের করে নিয়ে আসতে পারবে। ”
তিহানের কথাটি নিদ্রার মোটেও পছন্দ হয়নি। তাই ভ্রু কুচকে চুপটি করে বসে রইলো। এভাবেই কিছুটা সময় দুজনেই নীরব রইল। তবে দৃষ্টি ছিল এক পথে। দূর আকাশে। তিহান বলল,
” আমাদের জীবনে না চাইতেও অনেক কিছু ঘটে থাকে। অনেকের জন্য সুখময় আর অনেকের জন্য দুর্বিষহ। ঠিক তেমনি আমার জীবনেও কিছু অতীত রয়েছে যার জন্য আজ আমি জীবিত থেকেও মৃত। তারপরও বেঁচে আছি, কিন্তু মনের জন্য নয়। বাঁচতে হবে তাই বেঁচে আছি। সেজন্যই বোধহয় এতটা অমানবিক হয়ে গিয়েছে। হয়তো তুমি এটা বুঝতেও পেরেছ কিছুক্ষণ আগে। কী করব বলো, এই দুই চোখে যে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু সয়েছি। চাঁদের গায়ে চিরকালের জন্য যেমন একটি কালো দাগ লেগে গিয়েছে, তেমনি আমার জীবনেও একটি অতীতের অধ্যায় চিরকালের জন্য দাগ লাগিয়ে দিয়েছে। অতীতের থেকে কিছুটা দূরত্ব থাকলে হয়তো আজ আমি এরকম হতাম না। কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতাম। কিন্তু ওই যে ভাগ্য, সেই বারবার আমাকে পিষে তলায় নিয়ে যাচ্ছে। ”
তিহানের প্রতিটি কথার মাঝে কেমন যেন দীর্ঘশ্বাস খুঁজে পেল নিদ্রা। তিহানের দিকে ফিরে বলল,
” কি হয়েছিল আপনার জীবনে? ”
” সব কথা কি সবাইকে বলা যায় নিদ্রা?”
” বললেই বলা যায়। ”
” তোমার কোনো দোষ নেই। তুমিতো ছোট্ট একটি বাচ্চার ন্যায়। আমার জীবনের জটিলতার সাথে তোমাকে জড়িয়ে এরকম বাজে বিহেভ করা আমার মোটেও ঠিক হয়নি। আমি মন থেকে ক্ষমা চাইছি তোমার কাছে। কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া সবকিছু ভুলে যাও প্লিজ। তবে আরেকটি কথাও মনে রেখো, আজ আমি ক্ষমা চাইলেও কাল যে এরকম কিছু হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই আমার থেকে যতটুকু পারো দূরত্ব বজায় রেখো। নিজের জন্যই ভালো হবে। ”
” আমি না আপনাকে মোটেও বুঝতে পারছি না। কিছুক্ষণ আগে আপনি অযথাই খারাপ বিহেভ করলেন। এখন এসে আবার ক্ষমা চাইছেন। আবার এখনই বলছেন এরকম বাজে ব্যবহার আপনি আবার করতে পারেন। এর মানে কী? ”
” এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর একটু আগেই তোমায় দিয়েছি। ”
” মানে! ”
” জীবিত থেকেও মৃত এর মানে বুঝো? ”
.
.
চলবে…