#অব্যক্ত_প্রিয়তমা
#ফাতেমা_তুজ
#part_7
পরীক্ষা দিয়ে নিজের জন্য যত টা না টেনশন হয়েছে তাঁর থেকে হাজার গুন টেনশন হচ্ছে অনিন্দিতার রেজাল্ট নিয়ে। যদি ও নির্ভীক নিজে দুটো এক্সাম পেপার দেখেছে। তবু ও নির্ভীক এর টেনশন হচ্ছে। অনিন্দিতার পাগলামি তে বিরক্ত সে। আর কতো সহ্য করবে ?
এমন পাগলামি কারো ই কাম্য নয়। একটাই ভয় শেষ মেশ ভয়ঙ্কর কিছু না হয়ে যায়। অন্য দিকে চার হাত পা তুলে দিয়ে আরাম করছে অনিন্দিতা। কোথায় মুখে টেনশনের কালো রেখা পরবে তা না হয়ে সুশ্রী মুখ টা আরো বেশি চকচকে হয়েছে।
শাহানা বেগম সকাল সকাল তুমুল চটেছেন। বছর খানেক হয়ে গেছে বাপের বাড়ি যান না ওনি। সবাই রাজি থাকলে ও অনিন্দিতা রাজি হয় না। দাঁত কামড়ে এই বাসাতেই পরে থাকে। হীরের ভীষন মন খারাপ। কারন মামাতো ভাই পৃথিবীর উপর বেশ বড় সড় ক্রাশ খেয়ে আছে। যদি ও বয়সের ফারাক বছর ছয়েক তবু ও পৃথিবীর সাথে মারা মারি করে। হীরের সন্দেহ আছে পৃথিবী ও তাকে পছন্দ করে। এই তো তিন মাসে আগে মামার বাড়ি থেকে ঘুরে এসেছে। তিন মাস যেতে না যেতেই গত সপ্তাহে পৃথিবী তাঁদের বাসায় চলে এসেছে। তবে একদিন থেকে চলে গেছে। যাহ বড্ড পীড়া দায়ক। অনিন্দিতার বাহু ঝাঁকিয়ে বলল
_ প্লিজ আপু চলো প্লিজ। তুমি না গেলে আম্মু যাবে না। আর আমার ও যাওয়া হবে না।
_ আমি যাবো না বলেছিই তো।
_ আপু !
_ যদি সকাল দশটার পর গিয়ে বিকেল চারটের আগে ফিরে আসে তাহলেই যেতে পারি।
_ আপু এটা কি করে সম্ভব ?
_ কেন সম্ভব নয় ?
_ দশটার পর বের হলে দুটো বেজে যাবে পৌছাতে। চারটের আগে ফিরবো কি করে ? এটা অসম্ভব !
_ তাহলে আমার যাওয়া টা ও অসম্ভব।
হীর রেগে গেল। কোল বালিশ টা ছিটকে ফেলে দিলো। অনিন্দিতা কিছু বললো না। ডায়েরী হাতে লেখা লেখি করতে লাগলো। হীরের রাগ আকাশের চূড়ায়। ডায়েরী টা ছিঁড়ে ফেলতে পারলে শান্তি হতো। গট গট শব্দ তুলে চলে গেল।
অনিন্দিতা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মনে মনে সকলের কাছে ক্ষমা চাইলো। বাসায় না থাকলে নির্ভীক কে দেখবে কি করে ? সপ্তাহে একবার ও তো দেখা মিলে না। একটু দেখার জন্য কতো ছল ছাতুরি করে ওদের বাসায় যায়।
প্রতি বার ই আশাহত হয়। কারন নির্ভীক তাঁর রুম থেকে বের ই হয় না। চারুলতার থেকে জানতে পেরেছে নির্ভীক নিজেকে আড়াল করতেই পছন্দ করে। তাই অতো টা মন খারাপ হয় নি। এটা হয়তো নির্ভীকের সহজাত অভ্যাস।
অনিন্দিতার ভাবনার মাঝে ঝাঁঝালো কন্ঠে শাহানার ডাক। ডায়েরী টা খুলে নিয়ে নাক ডুবায় মেয়েটা। নির্ভীকের রক্তের ঘ্রান যেন প্রান কে সতেজ করে দিলো। বিচিত্র অনুভূতি হয়। এই রক্ত ই তো তাঁর প্রান। নির্ভীকের অংশ , যেখানে নির্ভীকের পায়ের ধূলোকনা ঠোঁটে শুষে নেয় সেখানে রক্ত তো হৃদয়ে চেপে নিবে।
দরজায় বারি পরতেই হতচকিয়ে উঠে অনিন্দিতা। দ্রুত কাবাডে ডায়েরী টা রেখে দেয়। শাহানা প্রচন্ড ঝাঁঝে বললেন
_ তুই কি চাস আমি আমার বাপের বাড়ি না যাই ?
_ তা কেন হবে ?
_ তাহলে যেতে চাচ্ছিস না কেন ?
_ আমার এই বাসা ছাড়া কোথাও থাকতে ইচ্ছে করে না। তোমরা যাও না বাঁধা দিয়েছে কে ?
তিক্ত হয়ে উঠেন শাহানা। হাতের কাছে থাকা ঘড়ি টা ছুঁড়ে ফেলে দেন। অনিন্দিতা অবাক চোখে তাকিয়ে বলল
_ এটা আমার প্রিয় ঘড়ি ছিলো আম্মু।
_ চুপ। একটা কথা বলবি না। আমার ইচ্ছের কোনো মূল্য আছে তোর কাছে ?
_ আম্মু তুমি এমন কেন ভাবছো। আমি বাসায় থাকি তোমরা যাও না।
শাহানার কানে সে কথা গেল না। ঝমঝমিয়ে কাঁদলেন ওনি। হীর ছুটে আসলো। মা কে জড়িয়ে ধরে অনিন্দিতার দিকে লাল চোখে তাকালো। মেয়েটা কি কেঁদেছে ?
অনিন্দিতা ফোঁস করে দম ফেললো। একটা মানুষের জন্য স্বার্থপর হয়েছে আজ। একটু দেখার জন্য প্রান টা যে মরিয়া হয়ে উঠে।
আরশাদ ওহ কয়েক বার ফোন করে বলেছে। কিন্তু অনিন্দিতা সে কথা শুনে নি।
বিকেলের দিকে চারুলতা আসেন। বাসায় ছিলেন না ওনি। কাজের মেয়েটা জানালো অনিন্দিতার জন্য শাহানা কেঁদে ভাসিয়েছেন।
এক প্রকার ভয় পেয়েই গিয়েছিলেন। অনিন্দিতার কোনো ক্ষতি হলো নাকি সেই আশঙ্কায় ছুটে এসেছেন।
_ শাহানা কি হয়েছে বলো তো ? কেঁদে নাকি চোখ লাল করে ফেলেছো ?
_ আপা কি বলবো বলো তো ? মেয়েটা হয়েছে এক পাষান।
_ কি সব বলছো এসব ? অনি কি করেছে এমন ?
_ জানো ই তো এক বছরের বেশি সময় বাপের বাড়ি যাই না। মা অসুস্থ, বলা যায় না কিই হয়। অথচ মেয়েটা যাবে না বলে দিয়েছে।
চারুলতা একটু ভাবলেন। তারপর চকচকে চোখে বললেন
_ থাক না মেয়েটা যখন যেতে চাচ্ছে না। জোর করে না যাওয়াই ভালো। ওহ কদিন না হয় আমার কাছেই থাকবে।
_ কিন্তু আপা
_ কোনো কিন্তু নয় । অনি কি আমার মেয়ে নয় ? তোমার মতো যত্নে না রাখতে পারলে ও যত্ন ঠিক ই করতে পারবো। বিশ্বাস রাখো তো ?
শাহানা বিগলিত হাসলেন। তারপর পর ই চারুলতার সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠলেন।
*
নির্ভীকদের বাসায় থাকা যেন চন্দ্র মামা কে হাতে তুলে দেওয়া। অনিন্দিতার খুশি যেন আর সয় না। এতো হাসি খুশি দেখে শাহানা ও স্বস্তি পেলেন। আরশাদ নানান উপদেশ দিলেন। যেহেতু দুদিন বাদেই রেজাল্ট দিবে তাই যেন মন খারাপ না করে। হাসি মুখে সম্মতি জানালো অনিন্দিতা । শাহানা মেয়ের মাথায় চুমু খেয়ে নিলেন । বাহু তে হাত রেখে বললেন
_ একদম মন খারাপ করবি না। তুই তো চেষ্টা করেছিস ই। আল্লাহ চাইলে নিশ্চয়ই চান্স হবে।
_ হুমম দোয়া করো আম্মু। আর আমি খুব স্যরি।
শাহানা সহ সবাই হেসে ফেললো। অনিন্দিতার চোখ ভরে উঠেছে । কেন যেন খুব কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎ করেই শাহানা কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে। হীর ফিচেল হাসি তে মাতে। অনিন্দিতার দিকে টিসু এগিয়ে দেয়। তাঁতে নাক ফুলিয়ে নেয় মেয়েটা।
নিহাল ভারী অদ্ভুত ভাবে সব দেখছে। এখানে শোক পালন হচ্ছে নাকি আনন্দ যাপন বুঝতে পারলো না। পরিশেষে বলেই ফেললো
_ এভাবে অর্ধেক হাসি অর্ধেক কান্নার কোনো স্পেশাল মিনিং আছে কি ?
অনিন্দিতা নাক টেনে তাকায়। নির্ভীক একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। সবার দিকে তাকালে ও অনিন্দিতার দিকে তাকায় নি। অভিমানে বুক ফাঁটে। কান্না ভেজা গলায় তাকায়। এক পশলা অভিমানের ঝরা নামিয়ে বলে
_ আবেগ !
নির্ভীকের কানে যেন কেউ বাজনা বাজিয়ে দেয়। খলবিলিয়ে তাকায়। চোখাচোখি হলে ও চোখ সরায় না। প্রচন্ড আবেগ ঝরানো কন্ঠে অনিন্দিতা উচ্চারন করে
_ ছ্যছরামি।
সবাই প্রচন্ড অবাক হয়। হীরের ধাক্কা খেয়ে হুস ফেরে। নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসে। আরশাদ তাঁর স্নেহের হাতে অনিন্দিতার মুখে স্পর্শ করে। মেয়েটা একদম তাঁর মায়ের মতো হয়েছে। প্রচন্ড আবেগী আর ঝরঝরে চাহনি। সাথে অটল থাকে নিজের কর্মে।
*
নির্ভীকের রুমের অপজিটেই অনিন্দিতার ঘর। দুদিন পেরিয়ে গেছে। চারুলতা কোনো কিছুর অভাব রাখে নি। ক্ষনে ক্ষনে প্রশ্ন ছুঁড়ে কিছু লাগবে কি না। আজমাল সকাল বিকাল এসে দেখে যায়। নিহাল তো প্রচন্ড রসিকতায় রাখে। শুধু নির্ভীক ই তাঁর সাথে কথা বলে না। লাঞ্চ বাইরে থেকেই করে আসে। সকালে ব্যস্ততা দেখিয়ে নাস্তা না খেয়েই চলে যায়। শুধু ডিনার টাই একসাথে করে। তবে অল্প একটু খেয়েই উঠে যায়। যার ফলে ব্যথিত হয় অনিন্দিতার মন।
আজ সকাল সকাল উঠেছে নির্ভীক। উদ্দেশ্যে ভারসিটি যাওয়া। রেজাল্ট নিয়ে প্রচন্ড টেনশনে রয়েছে। না জানি কোন আনল হতে চলেছে। চূড়ান্ত ফলাফল দেখার সুযোগ হয় নি এখনো । ভারসিটি গেলেই জানা যাবে। তবে সমস্যা হচ্ছে আজমাল কে নিয়ে। কিছু তেই বের হতে দিচ্ছেন না ওনি।
ওনার মতে অনিন্দিতার সাহস প্রয়োজন। সেখানে ভারসিটির লেকচারার ই যদি সাহস দেয় তাহলে রেশ পরবে কয়েক দিন। ভিন্ন ধাঁচের যুক্তি তে ফেসে গেছে। নিহাল কপট রাগ নিয়ে বলল
_ সমস্যা কি তোর ? ভারসিটি যাবার জন্য এমন উতলা হওয়ার কোনো বিশেষ কারন রয়েছে ?
_ ভাইয়া দেখ আমাকে যেতে হবে। এই ভাবে বাসায় বসে থাকা উচিত কার্য নয়।
_ উচিত বুঝিয়ে লাভ নেই। অনির অবস্থা দেখেছিস ? কাল থেকে চোখ মুখ কেমন শুকিয়ে গেছে। আমরা তো সাহস দিয়েছিস। তবে তুই হলি টিচার। তোর সাহস টা বেশি প্রয়োজন।
_ আজব। আমি এমন অযুক্তিক যুক্তি কখনো শুনি নি।
আমি বললেই তো রেজাল্ট ভালো হবে না!
চারুলতা চটে গেলেন। ছেলেটা প্রচন্ড রকমের বেয়াদব। দেশে থাকতে চায় না। বাসাতে মন টিকে না। সন্দেহর গন্ধ খুঁজে পেলেন ওনি।
নির্ভীকের মুখ দেখে নিভে গেলেন। নিহাল কপট রাগ দেখিয়ে বলল
_ কয়টায় রেজাল্ট দেওয়ার কথা ?
_ 11 টায়।
_ আচ্ছা। আমি অনি কে ডেকে নিয়ে আসছি। আম্মু সবার জন্য নাস্তা রেডি করো। কি জানি লাঞ্চ টা গলা দিয়ে নামবে নাকি।
আজমাল পূর্ন সমর্থন করলেন। চারুলতা চিন্তায় মন মরা করে রেখেছে। সকলের মাঝ থেকে নির্ভীক তাঁর বুক ভাঙা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। ভালো লাগছে না আর। অনিন্দিতার পাগলামি সত্যি ই আর নেওয়া যাচ্ছে না। এখন তো পরিবার ও যোগ দান করেছে।
কাঁধের ব্যাগ টা ডিবাইনে ধপ করে রেখে দিলো। করিডোর দিয়ে ব্যলকনিতে চলে আসলো। রোজের নাম্বার টা ও পাচ্ছে না। মেয়েটা কানাডায় গিয়েছে না জানি কেমন আছে। এতো ক্ষনে তো পৌছে যাওয়ার কথা।
ভাবনার মাঝেই হোয়াটস অ্যাপে টেক্সট এলো। এক গাল হেসে রোজ কে কল লাগালো।
_ পুরো আঠারো ঘন্টা কথা হয় না তাই না ?
_ এতো হিসেবে রেখেছিস তুই !
_ তো কি করি বল তো। তোর মতো পাগল কে সামলাতে গিয়ে আমার নাজেহাল অবস্থা।
_ পাগলামির কথা ছাড়। ফিরছিস কবে ?
_ রিলাক্স নির্ভীক। মাত্র তো এলাম , মাস খানেক যাক তারপর না হয় আসার চিন্তা করবো।
বিষাক্ত মন নিয়ে ফোনের স্ক্রিনে তাকালো নির্ভীক । ভারসিটি থেকে মেল এসেছে । রোজের সাথে দ্রুত কথা শেষ করলো। আর বিডি তে দ্রুত ফিরে আসার কথা বলে নিলো। লম্বা নিশ্বাস নিয়ে মেল টা ওপেন করলো।
বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল। অনিন্দিতা সিলেক্ট হয়ে গেছে। যাক এই বার আর গ্যাপ যাবে না। আর না নিজেকে দোষী মনে হবে।
প্রান ভরে শ্বাস নিলো। সাথে ভেবে ও নিলো ভারসিটির ফার্স্ট ক্লাস টা বদলে নিবে। অনিন্দিতার মুখোমুখি হতে চায় না। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলে চরম বিরক্তি আসে।
এক জনের জন্য এতো গুলো স্টুডেন্টস কে আলগা করে দেখা টা অন্যায়। তাঁর থেকে ভালো ক্লাস চেঞ্জ করে নেওয়া।
” বিষ দাঁত থাকার থেকে উপরে ফেলাই মঙ্গল ”
#অব্যক্ত_প্রিয়তমা
#ফাতেমা_তুজ
#part_8
” অবহেলায় মানুষ ভাসে তবু ও কেন যায় তাঁর ই খোঁজে ?
আপন হয়ে ও হয় না আপন। দূরে ঠেলে দিতে পারলেই মঙ্গল । ”
লাইন দুটো লিখে উঠে দাঁড়ালো অনিন্দিতা । দুদিন বাদেই নবীনবরন। নির্ভীকের সাথে যেতে চাইলে ও যাওয়া হবে না। চারুলতা কে পরিষ্কার বারন করে দিয়েছে। তাঁর নাকি কি কাজ আছে তাই আগে যেতে হবে। চোখের জলে ডায়েরীর পাতা ভিজে। চারুলতার ডাক কানে আসতেই চোখ মুছে নেয় ।
কাঁপা স্বর কে যথাসম্ভব পরিবর্তন করে হাক ছেড়ে বলল
_ আসছি আন্টি।
চারুলতা টেবিল সাজাচ্ছেন। অনিন্দিতা ডাইনিং এ এসে বলল
_ হ্যাঁ আন্টি বলো।
_ তোর ফোন অফ কেন ?
_ ফোন অফ ?
_ ওমা তোর ফোন আর তুই জানিস না। আরশাদ ভাই কয়েক বার ফোন করেছেন সুইচ অফ পেয়েছেন। তাই তো আমাকে ফোন করলেন। নে ধর কথা বল।
ফোন টা নিয়ে একটু দূরে আসলো। ওর ফোন সুইচ অফ হয়ে গেছে খেয়াল ই নেই। থাকবে কি করে সারা দিন নির্ভীকের ঘরে উঁকি ঝুঁকি দিতে দিতেই তো সময় পেরিয়ে যায়।
_ এই অনি ।
_ হ্যাঁ আন্টি বলো।
_ দাঁড়িয়ে আছিস কেন ? ফোন টা কর।
_ হুমমম
ফোনে নাম্বার ডায়াল করে কল লাগালো। দু বার রিং হতেই রিসিভ হলো।
_ কেমন আছো আব্বু ?
_ ভালো রে মা। তুই কেমন আছিস ?
_ ভালো। ভারসিটি তে চান্স পেয়ে গেছি।
_ শুনেছি। যাক কষ্টের ফল তো পেলি।
অনিন্দিতা একটু হাসলো। ফল কি আদৌ সে পেয়েছে ?
আরশাদের সাথে গসিপ ভাঙে নির্ভীকের আগমনে । ফুল হাতা টি শার্ট পরে এদিকেই আসছে। বোধহয় ডিনার করবে।
অনিন্দিতা দ্রুত কথা শেষ করলো । এক প্রকার জোর করেই কল কাটলো।
_ আম্মু ফাস্ট খাবার দাও তো।
_ অনি এই অনি একটু এদিকে আয় তো মা।
চারুলতার ডাকে ছুটে যায় অনিন্দিতা। এক বোল তরকারি হাতে দিয়ে চুলায় মনোযোগ দেন চারুলতা। অনিন্দিতা শুধায়
_ এগুলো কি করবো আন্টি ?
_ একটু কষ্ট করে সবাই কে সার্ভ করে দে না মা। চুলায় ক্ষীর বসিয়েছি ।
অনিন্দিতা মাথা কাত করে সম্মতি জানায়। আড়চোখে নির্ভীক তা দেখছিলো। কেউ না থাকলে অবশ্যই উঠে যেত। এখন উঠা সম্ভব নয়। তাই দাঁতে দাঁত চেপে বসে রইলো।
নির্ভীক স্থির হয়ে বসে থাকায় চকচক করে উঠলো চোখ। আনন্দে চোখ দুটো ছলছল করছে।
একটা ছোট বাটিতে তরকারি বেড়ে নিয়ে নির্ভীকের প্লেটের কাছে রাখে।
কিছু না বলেই খাওয়ায় মনোযোগ হয় নির্ভীক। আর প্রান ভরে দেখে মেয়েটা। এটা যে তাঁর স্বপ্ন। নির্ভীক কে নিজ হাতে পরিবেশন করে খাওয়াবে।
এই যে ছোট ছোট ভালোবাসা সব তো নির্ভীকের জন্য জমিয়ে রাখা। নির্ভীক কি কখনো বুঝবে না এই ভালোবাসা ? নাকি কালের আবর্তনে হারিয়ে যাবে , বহু থেকে বহু দূরে।
_ অনি তুমি ও বসে পরো।
_ আন্টি আসলে না হয়
_ কোন কথা নয় এখনি বসো।
নিহালের কথা তে অস্বস্তি নিয়েই বসে পরে। পাশের চেয়ারে বসাতে যেন নির্ভীকের আত্মা কেঁপে উঠলো। দ্রুত গিলতে লাগলো ।
বিষয় টা খেয়াল করলো অনিন্দিতা। এক বুক কষ্ট নিয়ে বলল
_ আমি একটু রুম থেকে আসছি।
*
ভ্যাপসা গরমে ফ্যান অফ করে রেখেছে অনিন্দিতা। রুমে টেম্পারেচার কন্ট্রোলের ব্যবস্থা থাকলে ও তা গ্রহন করছে না সে। কারন তাঁর প্রিয় মানুষ টি বাসার সামনের ছোট্ট বাগানের রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে আছে। কারন হিসেবে নিজেকেই দায়ী মনে হচ্ছে। হয়তো ভেবেছে ডয়িং রুমেই বসে আছে অনিন্দিতা। আর অনিন্দিতার মুখোমুখি হতে চায় না নির্ভীক। সাধারন মানুষ বলে ও কি গন্য করে না তাঁকে ?
যন্ত্রনায় বুক ফাঁটা আর্তনাদ আসতে চায়। লুটিয়ে পরে মেঝে তে। সাপের মতো পাক খেতে থাকে। কোথাও যাওয়া প্রয়োজন। যেখানে চিৎকার করে বলা যাবে
” আমি আপনাকে ভালোবাসি নির্ভীক ” যেখানে হৃদয় ছিন্নভিন্ন হওয়া হা হা কার নিবারন করা যাবে। মনের শান্তি মিলবে। ঘড়ির কাঁটা ঢং ঢং করে বেজে উঠলো। কাছের মসজিদ থেকে সুমধুর আজান ভেসে আসছে। নিজেকে ঠিক ঠাক করে মাথায় ঘোমটা টেনে উরু হয়ে বসে সে। ততক্ষণে চারুলতার ডাক পরে গেছে। অন্যমনস্ক হওয়ায় সে ডাক তাঁর কর্নপাত হয় নি। চারুলতা জবাব না পেয়ে ছুটে এসেছেন অনিন্দিতার ঘরে। পিঠে হাত বুলিয়ে পাশে বসলেন । অনিন্দিতা পেছন ঘুরে তাকাতেই বললেন
_ কি রে মা কি এতো ভাবছিস? চান্স তো পেয়েই গেছিস তাহলে কিসের চিন্তা।
_ আমার কিছু ভালো লাগে না আন্টি। দূরে কোথাও চলে যেতে ইচ্ছে করে। সব কেমন ধোঁয়াশা। রুদ্ধদ্বার খুলে কোথায় যাওয়া যায় বলো তো ?
_ দূর বোকা,কি সব বলে যাচ্ছিস ? আমি তো জানতাম আমাদের অনি খুব স্ট্রং, বুদ্ধিমতী, অধিক এটিটিউট সম্পূর্ন।
অনিন্দিতা উত্তর দেয় না। সন্তপর্নে চারুলতার বুকে মাথা রাখে। কষ্ট হচ্ছে খুব। নির্ভীকের দেওয়া দূরত্ব ভেতর টাকে ধুমরে মুচরে দিচ্ছে।
নির্ভীকের ডাক ভেসে আসে। চারুলতা উঠে দাঁড়ান । যাওয়ার আগে বললেন
_ অনি গোসল করে নে। এক সাথে লাঞ্চ করবো ।
_ কিন্তু
_ ওমা এখানে কিন্তু কিসের ? নির্ভীক টা বিকেলে বের হবে যেন কোথাও। ওর সাথে ঘুরে আসবি। নিহাল তো সকাল থেকেই লাপাত্তা।
অনিন্দিতার চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায়। ভেতরের ভালোলাগা টা প্রকাশ করতে পারছে না। হঠাৎ ই মনে হয় নির্ভীক তাকে নিবে না।
নির্ভীকের প্লেটে খাবার বেরে দিচ্ছে চারুলতা। তখনি উপস্থিত হয় অনিন্দিতা। ভেজা চুল পিঠময় ছড়িয়ে আছে মুখে নেই কোনো প্রসাধনী। যে কারো নজর কাড়তে সক্ষম। চারুলতা তো বলে ই ফেললেন ” সুন্দরী কন্যা।”
নির্ভীক কথার পৃষ্ঠে এক বার তাকিয়ে ছিলো। পরিশেষে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। একটুর জন্য হলে ও স্বস্তি পেল মেয়েটা। কারন নির্ভীক আজ উঠে চলে যায় নি। বরং সাধারন ভাবেই খাচ্ছে শুধু ওর দিকে তাকাচ্ছে না।
আজমাল অফিসে আছেন। লাঞ্চ টাইমে ফোন দেন রোজ , এখনো ফোন দিয়েছেন তাই দূরে সরে গেলেন চারুলতা। নির্ভীকের দিকে বার বার তাকাচ্ছে। অথচ নির্ভীকের হের ফের নেই। তাই খাওয়ার দিকে দৃষ্টি পাত করলো সে। হঠাৎ ভেসে আসলো চিরচেনা শীতল কন্ঠস্বর
_ অনিন্দিতা।
এই একটি কন্ঠ যে কারো মনে বসন্ত জাগিয়ে দিতে পারে তা বোধ হয় ভাবে নি ছেলেটা। মুখে খাবার থাকায় তালু তে উঠে যায়। দ্রুত পানি এগিয়ে দেয় নির্ভীক। একটু গাঢ় কন্ঠে বলে
_ এতো অমনোযোগী কেন। বড় সড় দুর্ঘটনা ঘটাবেন নিশ্চিত।
মাথা নিচু করে নেয় অনিন্দিতা। কান দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে। হঠাৎ কেন লজ্জা লাগছে ?
_ অনিন্দিতা শুনুন।
প্রচন্ড অবাক হয়ে তুতলে যায় অনিন্দিতা। চোখ দুটো গোল আকার ধারন করেছে। নির্ভীক একটু হাসে। এই প্রথম অনিন্দিতার মুখোমুখি হাসলো নির্ভীক। হঠাৎ এমন পরিবর্তন অনিন্দিতার অন্তকর্নে ব্যথা অনুভব করায়। কাঁপা ঠোঁটে বলে
_ জিই
_ একটা কথা বলি রাখবেন ?
_ হুমম বলুন।
সর্তক হয় নির্ভীক। একটু ঝুঁকে ফিসফিস করে বলল
_ আম্মু আপনাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে বলেছে। আমি বারন করি নি। কারন এর ফলে আম্মু সন্দেহ করতে পারে। আপনি প্লিজ এক টা অজুহাত দেখিয়ে বলবেন যাবেন না।
_ আচ্ছা।
অনিন্দিতা খুশি মনেই উত্তর টা দেয়। কারন নির্ভীক এই প্রথম তাঁকে এভাবে ডেকেছে। হন্তদন্ত হয়ে আসেন চারুলতা। চোখে মুখে চিন্তার ছাঁপ ব্যগ্র হয়ে নির্ভীক বলে
_ কি হয়েছে আম্মু ?
_ তোর আন্টির শাশুড়ি অসুস্থ। হসপিটালে এডমিট আছেন। আমাকে এখনি যেতে হবে। ফিরতে রাত হবে। অনি কে ফেলে কোথাও যাস না।
_ আম্মু তুমি অনিন্দিতা কে সাথে নিয়ে যাও।
_ ওর শরীর টা ভালো নেই।
নির্ভীকের বিরক্তি দেখে অনিন্দিতা মুখ খুলে। আশ্বস্ত করে বলে
_ আন্টি আমি যেতে পারবো।
_ প্রয়োজন নেই। হসপিটালের ফিনাইলের গন্ধ তোর সহ্য হয় না। অসুস্থ হয়ে আরেক কান্ড রটে যাবে।
কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চারুলতা বেরিয়ে যায়। পিলারে ঘুসি মারে নির্ভীক। কেঁপে উঠে অনিন্দিতা, অস্ফুটন স্বরে বলে
_ নির্ভীক ভাইয়া
_ আপনার সাহায্যের প্রয়োজন নেই আমার। পাগল হয়ে যাবো আমি। কেন আপনি হীর দের সাথে গেলেন না ? এই দিকে আমার আম্মু এক আকাশ সমান বিশ্বাস নিয়ে আপনাকে রেখেই চলে গেলেন।
ড্যাম ইট ,
মাথা নিচু করে নেয় অনিন্দিতা। প্রচন্ড ভয়ঙ্কর লাগছে নির্ভীককে। এতো টা চেঁচায় না নির্ভীক। আজ তাঁর বেশ পরিবর্তন ঘটেছে। তাই কিছু বলতে পারছে না মেয়েটা।
চেয়ারে বসে টেবিলে দু হাত রেখে মাথা ঠেকায় নির্ভীক। তপ্ত শ্বাস ফেলে অনিন্দিতা বলে
_ আমি আপনাকে বিশ্বাস করি নির্ভীক মাহতাব। আপনি আমাকে পছন্দ করেন না ঘৃনা করেন এটা ও মানি আর আমার সুযোগ নিবেন না এটা ও জানি।
_ বিশ্বাস রাখা ভালো না। আপনি ঘরে যান। আম্মু না আসা অব্দি বের হবেন না।
অনিন্দিতা ঘরে যায় না। ডয়িং রুমের সর্বশেষ ডিবাইনে বসে থাকে। হাতে তাঁর প্রিয় ডায়েরী টা। নির্ভীকের দিকে তাকিয়ে কতো গুলো প্রেমময় সংজ্ঞা লিখে।
.
” কি জ্ঞানে চলে গেলে আম্মু ? আমার কি কোনো বোন আছে বাসায়। অনিন্দিতা আর আমি পুরো ফ্ল্যাটে একা। যদি বাজে কোনো বিষয় হয়ে যায় ? ”
_ তুই আমার ছেলে নির্ভীক। ভরসা আছে তাই রেখে এসেছি।
_ ভরসা আছে , আমি সেটা পালন ওহ করবো। কিন্তু লোক জন কি ভাবতে পারে বলো তো ? অবিবাহিত ছেলে মেয়ে একি ফ্ল্যাটে তার উপর যুবক যুবতী। ভাবতে পারছো আম্মু, যে কোনো কেচ্ছা রটে যেতে পারে।
আমার কথা বাদ দাও অনিন্দিতার পরিস্থিতি তখন কি হবে বলে তো ?
চারুলতা একটু চিন্তিত হলেন। এ দিকে বৃষ্টির কারনে আসতে ও পারছেন না। মেঘের গর্জন চলছে , তবু ও বললেন
_ আমি এখনি আসছি, তুই অনিন্দিতার খেয়াল রাখিস।
ফোন রেখে মাথার চুল খামচে ধরে। রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে।ডোরের কাছে ছায়া দেখতে পায়।নির্ভীকের ঘূর্ণন বুঝে লুকিয়ে পরে। তবু ও বলে
_ রুমে প্রবেশ করবেন না অনিন্দিতা। নিজের রুমে থাকতে বলেছিলাম এখানে কেন এসেছেন ?
_ আমি আসলে
_ আমাকে দেখতে এসেছেন দেখা হয়ে গেছে, এবার চলে যান।
ভঙ্গুর হৃদয় নিয়ে চলে যায় অনিন্দিতা। মন কষ্ট যেন মাথায় এসে চেপেছে। ব্যথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে প্রতি টা শিরা। এলোমেলো পায়ে কিচেনের দিকে পথ আগায়।
মাত্র ই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো নির্ভীক। তখনি ভেসে আসে অনিন্দিতার চিৎকার। এক সেকেন্ড দেরি করে না দৌড়ে যায় কিচেনের দিকে। হাত চেপে ধরে নিজেকে দমানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে মেয়েটা। তবে ফোসকা পরে যাওয়া হাত টা জ্বালা দিচ্ছে খুব। চোখ থেকে না চাইতে জল গড়াচ্ছে।
_ অনিন্দিতা, কিচেনে কেন এসেছেন। দেখি কতো টা পুরে গেছে।
কি একটা অবস্থা করেছেন বলুন তো। পাগলামি করতে খুব ভালো পারেন। ইসস অনেক টা ফোসকা পরে গেছে।
অবাক চোখে তাকিয়ে আছে অনিন্দিতা। নির্ভীক তাঁর কষ্টে আফসোস করছে? এটা কি সত্যি?
_ আসুন তো।
অনিন্দিতার হাত ধরেই নিয়ে যায় নির্ভীক। ফার্স্ট এইড বক্স থেকে মলম নিয়ে নিজ হাতে লাগিয়ে দেয়। চোখে মুখে একটু চিন্তার রেখা। নিজের উদ্দীপনা দমাতে ব্যর্থ হয়ে অনিন্দিতা বলে
_ এই প্রথম আমার প্রতি ভালোবাসা দেখতে পেলাম।
_ এটা ভালোবাসা নয়। দায়িত্ব, আম্মু আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনার উটকো চিন্তা শক্তি বদলান।
_ সে যাই হোক আমার হাতে স্পর্শ লেগেছে আপনার। আমি তো হাজার বার হাতে ফোসকা ফেলতে রাজি।
_ পাগলামি কখনো কি যাবে না ? আমার আপনার দুজনের ই একটা ভবিষ্যত আছে। আপনি কি বিয়ের পর ও শশুর বাড়ি থেকে এসে এমন পাগলামি করবেন।
নির্ভীকের কথাতে চোখে পানি চিক চিক করছে । বুক ধুক করে উঠেছে। নয়নাভিরাম চোখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায় মেয়েটা। কাঠ হয়ে যাওয়া ঠোঁট দুটো জ্বিভ দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে বলে
_ আমি আপনাকে বিয়ে করবো, তখন আপনি আমার নিজস্ব হয়ে যাবেন। প্রতি টা শিরা উপশিরায় থাকবে আপনার স্পর্শ। পুরো অঙ্গ জুড়ে থাকবে আপনার ভালোবাসা। একটু খানি স্পর্শ পাওয়ার জন্য পাগলামির প্রয়োজন হবে না।
অনিন্দিতার কথায় গা গুলিয়ে আসে নির্ভীকের। অনিন্দিতা নিজের মধ্য নেই। না হলে এই কথা গুলো নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারতো না। রাগ হলে ও রাগ করে না ছেলেটা। যদি অনিন্দিতা বেঁকে বসে। উল্টো পাল্টো হয়ে জড়িয়ে ধরে। একটু ও বিশ্বাস নেই মেয়েটাকে। তাই শীতল কন্ঠেই বলে
_ আপনি ঠিক কোন পর্যায়ে চলে গেছেন অনিন্দিতা। সংযত হোন , যেখানে আপনার সাধারন স্পর্শ ও ইনফেক্ট দৃষ্টি ওহ আমি মেনে নিতে পারি না। সেখানে ফিজিক্যাল ইনভলভ ছিইইই , এ কি বাজে ইনটেনশন আপনার।
_ স্যরি। আমি সে সব মিন করতে চাই নি। শুধু বোঝাতে চেয়েছি আপনি আমার কতো টা আপন।আমি আপনাকে ঠিক কতোটা
অনিন্দিতা কথা শেষ করতে পারে না। হাত উঁচিয়ে বাঁধা দেয় নির্ভীক , তারপর বলে
_ আমি রাগ দেখাচ্ছি না বলে ভাববেন না আপনার প্রতি মায়া হয়েছে আমার। নেহাত ই বাসায় কেউ নেই। দয়া করে বাজে ইনটেনশন গুলো বন্ধ করুন। আমার ঘৃনা হচ্ছে।
অনিন্দিতা কিছু বলে না। নির্ভীক তাকে অবজ্ঞাই করে যাবে। তাঁর চাঁদ কখনোই তাঁর হবে না। হঠাৎ আকাশে মেঘের গর্জন শোনা যায়। অনিন্দিতা জানে নির্ভীক নাকোচ করে দিবে তবু ওহ বলে
_ আমার ইচ্ছে ছিলো আপনার কাঁধে মাথা রেখে বৃষ্টির খেলা দেখবো। আর সাথে থাকবে ধোঁয়া উঠা কফি। আমার ইচ্ছে টার ছিটে ফোঁটা কি পূরন করবেন ?
[ ফেসবুকের সমস্যার কারনে গল্প পোস্ট হচ্ছে না। ]
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।
চলবে……..