#এক_রাতের_বউ
#___পর্ব___৫___
Written by Avantika Anha
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
reply- “a mask man”
me- ow great so mask poira ghuman. gd night.
reply- haha okay wish ta purno krbo
কে এই মাস্ক ম্যান এ বিষয়ে আমি বেশি মাথা ঘামালাম না। শুধু এটা নয় অন্য কোনো বিষয়েই আজকাল আমি মাথা ঘামাই না। নিজেকে ব্যস্ত রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই। কারণ আমি যখনি একা হয়ে পড়ি আরাভের সেই কুকর্ম আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে।
.
সময় পার হতে লাগলো। শারীরিক ব্যাথা অনুভব করা কমে গিয়েছে আজকাল। কিন্তু মনের ভিতরে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তা যে কোনোভাবেই মিটানো যাবে না তা আমার ভালো করেই জানা আছে।
.
কিছুদিন পর হঠাৎ কথা হলো পিকনিকে যাওয়া হবে কলেজ থেকে। গতবারের পিকনিকেও আমি সবার আগে লাফাচ্ছিলাম। কিন্তু এবার আমার মাঝে ওতো বেশি ভালো লাগা কাজ করছে না। ক্যান্টিনে বসে ছিলাম,
মিমি- শুনেন তো মিস।
আমি- কারে কস?
মিমি- আপনাকে।
আমি- মিস? (ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
মিমি- জ্বী। ম্যাম আপনি কি জানেন আমার বেস্টু আনহা কই?
আমি- না তো জানি না তো। (বিষয়টা বুঝতে পেরে)
মিমি- একটু খুঁজতে সাহায্য করবেন ?
আমি- না বইন আমি এখন ব্যস্ত।
মিমি- কুত্তি কি কইলি?
আমি- হিহি। যা শুনলেন মিস পেঁচার বউ।
মিমি- ওই আমাকে পেঁচার বউ বলবি না।
আমি- ওহো সরি আমি তো ভুলেই গেছিলাম তুই তো পেঁচার বউ না তুই তো পেত্নী।
মিমি- আনহার বাচ্চা ভালো হবে না বলছি।
আমি- কারেকশন আমার বাচ্চা হয় নি।
মিমি- হবে তো একদিন।
আমি- তখন তারে বকিস এখন না বেইপি।
মিমি- যাই হোক। থেংকস।
আমি- কিল্লাইগা?
মিমি- আগের আনহা রূপে আসার জন্য। এভাবেই থাক তোকে ভালো লাগে।
আমি- এমনেই আছি। পিকনিকে কি বাহিরের লোকও যাবে?
মিমি- হুমম চাইলে যে কেউ তাদের সাথে একজনকে নিতে পারবে।
আমি- ওয়াও আমাগো কাপল গুলো তাহলে তাদের উনি গুলোরে নিবে।
মিমি- অবশ্যই।
আমি- হয় কেন এরাম করলো? ওরা প্রেম করবো আর আমরা এদিকে জ্বলবো আর লুচির মতো ফুলবো।
মিমি- হ রে প্রেম করা দরকার।
আমি- তুই ই কর আমি তো বিয়া করে… (এটুকু বলে থেমে গেলাম। কারণ মাথায় আসলো আমি তো আর পবিত্র নই)
মিমি- থামলি কেন? জানি বিয়ের পর বরের সাথে প্রেম করবি।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
.
ঠিক হলো পিকনিকে সবাই যাবো। এতো আড়ালে থাকলে বাকীরা সন্দেহ করবে তাই আমি রেডি হতে লাগলাম। দায়িত্ব পড়লো এক্সট্রা মজার জন্য যা যা লাগবে সব আমি আর মিমি কিনে আনবো। যেই বলা সেই কাজ।
.
আমি- তাড়াতাড়ি কর,,,তোর জন্য আবার আমাগো বাস মিস হয়ে যাবে।
মিমি- আরে থাম এতো তাড়া দিস না। পরে সব উল্টা পাল্টা হয়ে যাবে।
আমি- তোর তো ওই একটাই কাজ সব কিছুই উল্টা পাল্ট করা।
মিমি- ওই হারামী চুপ কর।
আমি- আচ্ছা,চুপ করছি তুই কর তারাতাড়ি
মিমি- এইতো একদম ভালো মাইয়া।
আমি আর মিমি জিনিষ কিনতে ব্যাস্ত। হঠাৎ একটা কৃষ্ণন কালো পাথরের মূরতি দেখে চোখ টা আটকে গেলো, ওটাই হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখছিলাম।
মূরতি থেকে নিজের চোখ সরাতেই দেখি,
আরাভ আমি ঠাস করে নিজের চোখ টা নামিয়ে নিলাম,
আরাভকে দেখা মাত্র আমার হার্টবিড দ্বিগুণ স্পীডে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগলো।
ওর মুখো আমি দেখতে চাই না। বার বার কেনো আমার অতীতের কথা গুলা মনে পড়ে যায়। আরাভের,,, না না আমি আর আরাভকে নিয়ে ভাববো না। আমি যত ওকে নিয়ে ভাববো ও তত নিজেই কষ্ট পাবো। আমি তো আরাভকে নিজের মন থেকে বের করে দিয়েছি এখন আর কি।
নিজেকে আমি স্বাভাবিক করে নিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
আমি বেশ টের পাচ্ছি আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি কোনো পাতাই দিচ্ছি না এবং ওর দিকে তাকিয়েও দেখছি না।
হঠাৎ দেখলাম আরাভ যেখানে দারিয়ে ছিলো সেখানে নেই। আশেপাশে খুঁজে দেখলাম নেই। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম যাক বাবা চলে গেছে।
বলেই সামনে থাকতেই থমকে গেলাম।
আরাভ আমার সামনে দারিয়ে আছে।
আমার মুখ দিয়ে কেনো কথা বের হচ্ছে না।
মিমি- কিরে এভাবে ভূত দেখার মতো ভয় পায়ছিস কেন?. আরে আরাভ আপনি??.
আরাভ- আপনারা এখানে কি করছেন??..
মিমি- আরে শপিং করছি।
আরাভ- ওহ বুঝলাম এখানে কি শপিং করছেন??..
মিমি- আর বলবেন না এতো পিকনিকের জন্য শপিং করছিলাম।
আরাভ- পিকনিক??.
মিমি- আরে হ্যা,,কলেজ থেকে তো সবাই পিকনিকে যাচ্ছি।
আরাভ- ওহ,,আচ্ছা শুধু আপনারাই নাকি?.
মিমি- বাহিরের লোক ও যেতে পারে। যে কেউও তার সাথে একজন কে নিতে পারে।
.
আমি কোনো কথা না বলে মিমি কে ফিসফিস করে কানে কানে বললাম, ওই কুত্তি সব বলা শেষ এখন চল যাই।
মিমি- আচ্ছা আমরা এখন আসি।
বলেই ওখান থেকে আমরা চলে আসলাম।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
.
আমি আর মিমি পিছন দিকে হাটছি। আমি যতোদূর আরাভকে চিনি, আমি ভালো করেই জানি সে এখনো আমার দিকে তাকিয়ে। কিন্তু আমি পিছন ফিরলাম না। আমার মাথায় এটা আসছে না তার এতো আমার আশেপাশে আসার কারণ কি? আমি তো দূরেই থাকতে চাচ্ছি কেনো সে এভাবে কাছে আসছে। আমি এসব ভাবছিলাম। আমাকে চুপচাপ থাকতে দেখে,
মিমি- কি রে চুপ কেন?
আমি- কথা বলবি না একদম।
মিমি- আরে শুন না।
আমি- চুপ।
মিমি- আমি ভাবলাম সে তোকে পছন্দ করে তাই আরকি।
আমি- মাথা করে। এতো মাথা খাটাইতে বলছে কে তোকে?
মিমি- না মানে খাটাই আরকি।
আমি- বাবু আমার কাছে একটা গিফ্ট আছে তোমার জন্য।
মিমি- কি?
আমি- কুত্তি তোরে আমি খাইছি।
.
এই বলে জুতা হাতে মিমির পিছনে দৌড় দিলাম। মিমি সামনে আমি পিছনে। মিমি এদিক আমি ওদিক। এদিকে মাঠ ছিলো। কখনো মাঠের মাঝে। কখনো বাইরে। আশেপাশের কিছু মানুষ তাকিয়ে আছে। কিন্তু কে মানে কার কথা। হঠাৎ একটা গাড়ি আসতে লাগলো। আমি যদিও প্রথমে লক্ষ্য করি নি। গাড়িটা আমার দিকে এগোতে লাগলো। পা জমতে লাগলো। মিমি এদিকে ডাক দিচ্ছে। কিন্তু আমার শক্তি কএে যাচ্ছে। কেন যেন আমি নিজেও চাই নিজেকে শেষ করতে। হঠাৎ কে যেন হাত ধরে টান দিলো।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
.
আমি ছিটকে গেলাম। রোমান্টিকতা নেই তবুও টান দেওয়ায় আমার মচুলগুলো তার মুখে থেকলো। এক হাত তার হাতে আরেক হাত তার কাধে। কিছু লোক ছবি তুলছে। কিছু লোক তাকিয়ে হাসছে। স্পর্শে বুঝে গেলাম এটা কে? কারণ এক রাতেই তার স্পর্শ চেনা হয়ে গেছে। সে চুল গুলো মুখ থেকে সরিয়ে আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে চড় দিলো।
.
আমার এক হাত আমার গালে। কিছু সময় আগেও যারা মজা নিচ্ছিলো, তারাও স্তম্ভিত।
আরাভ- চোখ কি নাই? রাস্তায় কে এভাবে দৌড়ায়? বাচ্চা তুমি? জ্ঞান নাই? কি করো হা? কে তোমাকে বের হতে দেয়? তোমাকে তো বেঁধে রাখা উচিত।
.
আরাভ বকা দিয়ে যেতে লাগলো। বাকী লোকগুলো কেটে পড়তে লাগলো। কেউ কেউ আবার দেখতে লাগলো। আমাকে এভাবে বকা খেতে দেখে মিমিও আর কিছু বলার সাহস পাচ্ছিলো না।
আরাভ- কিছু বলছো না কেন?
আমি- বকা হইলো?
আরাভ- মানে?
আমি- ইন্তা সালসুল মুখমাফি। (অন্য ভাষায় গালি দিলাম)
আরাভ- মানে?
আমি- কিছু না থেংকু গরু। টাটা। ভাগ আনহা ভাগ মিমি ভাগ।
.
এই বলে এক দৌড় দিলাম। কেউ আশা করে নি মেয়েটা এভাবে দৌড় দিবে। আরাভ বুঝেও নি আমি ওরে গালি দিছি। নিজেকে জয়ী মনে হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ কানে আসলো পাশে পাড়ায় এক মেয়ে নাকি আত্মহত্যা করছে কারণ সে ধর্ষিতা। একটু আগেও ভুলে গেছিলাম। কিন্তু কথাটা কানে আসতেই আমার মন খারাপ হয়ে গেলো। ঘরে ঢুকে দতজা লাগিয়ে অনেক সময় কাঁদলাম। কারণ যতোই যাই হোক আমিও হয়তো ধর্ষিতাই। “তবুও আমাকে বাঁচতে হবে সবার জন্য” এটা মাথায় কাজ করলো। নিজেকে সামলে নিলাম।
.
সময় যেতে লাগলো, আমি একটু একটু করে চুপচাপ হতে লাগলাম।
.
তবুও চারপাশের সবার জন্য একটু একটু চঞ্চলতা রাখলাম। কারণ আমি হাজার চেষ্টায়ও এটা ছাড়তে পারবো না আমি জানি।
.
পিকনিকের দিন চলে এলো। জানতে পারলাম মিমি ফক্স হইছে। ও চাইলেও আসতে পারবে না। মনটা খারাপ হলো। কিন্তু সবচেয়ে আজব হলাম কারণ আরাভও আমাদের বাসে। অনেক মেয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। আমি ভাবছি, “তার মানে কি সেও আমাদের সাথে যাবে?” আমি আরাভকে দেখে থ। ও কিভাবে মাথায় ঢুকছে না।
.
#________________চলবে_______________