#একজীবনে_শুধু_তুমি
,
৭ম পর্ব
,
লেখনীতেঃ #রাফিজা_আখতার_সাথী
,
,
নেহালের বাড়িতে,
,
কলিংবেল বাজানোর সাথে সাথে একজন মেয়ে দরজা খুলে দিলো। আমার সমবয়সী কিংবা কম বয়সী হবে। কোলে ছোট্ট একটা মেয়ে।
,
কেমন আছেন ভাবি?
,
আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
হ্যা ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
,
আমি ভালো আছি।
আর হ্যা, আমাকে আপনি করে বলবেন না। আমি আপনার থেকে অনেক ছোট হবো। তুমি করে বললেই হবে।
আরে আসুন আসুন। আমিতো কথা বলতে বলতে আপনাদের বাইরেই দাড় করিয়ে রেখেছি।
,
মায়ের সাথেও কুশল বিনিময় করলো। কথার ভাব দেখে মনে হচ্ছে ভালো ঘরের মেয়ে।
,
আমি হলাম সারা। রবির স্ত্রী আর আপনার হাসবেন্ড মানে নেহাল ভাইয়ার বোন। যদিও রক্তের সম্পর্ক নেয় তবুও বোন। আর এই যে আমার কলিজাটা আমার তিতলি মনি।
,
মনে মনেই বললাম, যাকে ভাই বাইয়েছো আর যার সাথে ঘর করছো দুইটাই হলো কাল সাপ। জানিনা তোমার কপালে কি আছে!
,
কি ভাবছেন ভাবি?
,
না, কিছুনা। গতদিন শুনেছিলাম তিতলি অসুস্থ, এখন কেমন আছে?
,
এখন একদম ভালো আছে ভাবি। নেহাল ভাইয়া থাকতে তার ভাগনী অসুস্থ থাকতেই পারে না।
,
হুম।
,
আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে খুব চিন্তিত আছেন ভাবি!
কোনো সমস্যা হলে আমাকে জনাতে পারেন।
,
বা কোনো সমস্যা নেয়।
,
সমস্যায় বা কেন হবে ভালোবেসে বিয়ে যে করেছেন। হাহাহা।
,
নেহাল দেখছি বোনের কাছে খুব ভালো সেজেছে। ঘৃণাকে ভালোবাসা বলেছে। কি করে পারে এসব।
,
সারাদিন এভাবেই পার হয়ে যায়।
,
,
,
রাত ১১ঃ০০ টা। বাসর ঘরে বসে আছি।
,
একটু পর নেহাল আসলো সাথে রবি।
,
নে তোর সোয়ামি কে রেখে যাচ্ছি। দেখে রাখিস।
,
এরা এমন ভাব করছে যেন আমি নিজ ইচ্ছাই বিয়ে করেছি। সবটা যে ওরা জোর করেছে সেটা কি মনে করতে চাচ্ছেনা নাকি বুঝতে পারছেনা?
,
রবি চলে গেল,
,
সামনে বসে আছে নেহাল। মনের ভিতর একটাই ভয় যদি নেহাল আমার উপর স্বামিত্ব ফলায় কি করবো আমি? নিজেকে কি ওর কাছে বিলিয়ে দেব নাকি বাধা দেব।
,
উহহুম।
,
নেহাল নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। কিন্তু আমি কোনো কথা বলছিনা। অনেকক্ষণ পর।
,
রাত্রি জানি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি।
আবার অতিতে তোমাকে নিজের দোষেই দুরে সরিয়ে ছিলাম। আমি ভুল করেছি। আমাকে কি মাফ করা যায় না?
,
আপনি শুধু ভুল করেন নি। আপনি পাপও করেছেন। আর পাপ ক্ষমা করার মালিক আমি না। আল্লাহর কাছে মাফ চাইবেন।
,
তার মানে তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো?
,
আমি কোনোদিন আপনাকে ক্ষমা করলে আমার মৃত বাবার সাথে অন্যায় করা হবে।
যাকে টাকার বিনিময়ে একটা কাপুরুষের কাছথেকে নিজেরই মেয়েকে কিনতে হয়েছিলো।
বলুন তো কিভাবে ক্ষমা করবো আপনাকে?
,
মনকে বলে দেখো, ঠিক পারবা।
,
মনে মনে বললাম, মনকে কি বোঝাবো নেহাল তুমি যা করেছো মাফ করা যায়না। আর কত ভালোবাসার দোহায় দিবে তুমি? নিজেকে ছোট করতে করতে যে তুমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছো আমার মন থেকে সেটা কি ভেবে দেখেছো?
,
আর হ্যা রাত্রি, আমি তোমার কাছে আজকে স্বামীর অধিকার চাচ্ছি, তুমি কি দিবে।
,
,
আজকে বিয়ে করলেন আর আজকেই আমার দেহ চাচ্ছেন? এমন হলে তো পতিতালয়ে যেতে পারতেন। কোথায় আপবার ভালোবাসা? এইটা ভালোবাসা?
,
তুমি আল্লাহর কালাম সাক্ষী করা স্ত্রী।
আমার কি কোনো অধিকার নেই আমার স্বামীর অধিকার চাওয়া?
,
শুধু মাত্র আল্লাহর কালাম সাক্ষী করার জন্য আমি আপনাকে আমার দেহের উপর কর্তৃত্ত্ব ফলানোর অধিকার দিলাম।
,
এটা কেমন কথা। স্বামীর হক আছে স্ত্রীর প্রতি, কিন্তু তার মানে এই না যে তোমার দেহকেই ভালোবাসবো!
,
আমি যেহেতু আপনার স্ত্রী আমার প্রতি আপনার অধিকার আছে।
,
,
নেহাল আমাকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে। আমিও নেহালেফ সাথে নিজেকে জড়ালাম।
,
এ কেমন ভালোবাসা।
,
যাকে ভালোবাসলাম সে ছেড়ে চলে গেলো, আবার যখন ফিরে এলো, তার প্রতি ঘৃণা ভরে উঠলো মনে। কিন্তু সে স্বামী আমার।
,
আমার উপর তার অধিকার আছে।
আমি যদি তাকে বাধা দিই তাহলে আল্লাহকে অমান্য করা হবে।
যদিও সে কোনো কিছুই ঠিক করেনি আমার সাথে। কিন্তু একটা সম্পর্ক সত্য, সে আমার স্বামী আর আমি তার স্ত্রী। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র সম্পর্ক। তবুও তাকে আমি ঘৃণা করি। স্বামী হিসেবে না, মানুষ হিসেবে।
,
,
চলবে
,
,
বিঃদ্রঃ খুলনা ও খুলনার পার্শ্ববর্তী এলাকাতে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে এটা সবাই হয়তো জানেন। এর ফলে গত দুইতিন দিন আমাদের এলাকাতে (গ্রামের বাড়ি) বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন ছিলো। যার ফলে গল্প দিতে দেরি হয়েছে। আজকে পর্ব ছোটো হওয়ার জন্য খুব দুঃখিত। বিষয়টা বুঝতে পারছেন আশা করি।