#একবার_বলো_ভালবাসি
#Part_10
#Writer: #Tisha_Islam_Nabila
নেহাঃ Well মিস্টার কাব্য আহমেদ রিদ…. শপিং মলে সবাই আসতে পারে….
কাব্যঃআমি বলিনি যে সবাই…. আসতে পারেনা,,,,
নেহাঃ তাহলে এত চমকে যাচ্ছো কেন??
কাব্যঃ অনেকদিন পর দেখলাম তাই….
নেহাঃ না দেখলে খুশি হতে বুঝি??
কাব্যঃ এটা কখন বললাম??
নেহাঃ সব বলতে হয়না….
কাব্যঃ হ্যা সেটাই তুমি তো সবই বোঝো….
নেহাঃ হ্যা বুঝি বলেই না…. তোমার আসল রুপ চিনেছি,,,,
কাব্যঃ দেখো আমি আগেও বলেছি…. আর এখনো বলছি…. তুমি আমাকে ভুল বুঝছো..!!
নেহাঃ থাক আর বলতে হবেনা….
কাব্যঃ তোমাকে বোঝানোই ভুল,,,,
কাব্য ওখান থেকে চলে আসে…. হ্যা কাব্য’ই রিদ…. ওর পুরো নাম কাব্য আহমেদ রিদ….!!
।
।
।
।
নেহা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে…. নেহাও চলে আসে..!!
তিশান তো তিশা’র পেছনে পড়ে আছে…. তিশা যেখানে যাচ্ছে…. তিশানও সেখানে যাচ্ছে….
তিশাঃ কি সমস্যা আপনার??
তিশানঃ কি সমস্যা আবার?? আমার সমস্যা তো তুমি….
তিশাঃ কি আমি সমস্যা?? [রেগে]
তিশানঃ এইরে কি বলে ফেললাম?? [বিরবির করে]
তিশাঃ এই শুনুন একদম দুরে থাকবেন…. আমার থেকে দুরে বুঝেছেন??
তিশানঃ না গো বুঝিনি,,,,
তিশাঃ আপনি কিন্তুু বেশী বাড়াবাড়ি করছেন..!!
তিশানঃ তুমি বেশী করছো আমি না…. তুমি না আমাকে ভালবাসো?? জানোনা ভুল করে কেউ…. নিজের ভুল বুঝলে…. তাকে ক্ষমা করে দিতে হয়…. আমি তো ক্ষমা চেয়েছি তিশা…. তাহলে তুমি কেন ক্ষমা করছো না??
তিশাঃ আমি পারবো না বুঝেছেন?? পারবো না আপনাকে ক্ষমা করতে…. আপনি আসবেন না আমার সামনে….
তিশা ক্লাসে চলে যায়…. তিশান অসহায়ের মতো দাড়িয়ে থাকে..!!
।
।
।
।
কাব্য বাড়িতে এসেই…. অস্থির হয়ে পড়েছে…!!
কাব্যঃ নেহা কোনদিন আমাকে বুঝবে না…. ওর ভুল হয়তো কখনো ভাঙবে না…. যে ভুল আমি করিনি…. তার শাস্তি ও আমাকে দিচ্ছে…. কেন??
নেহা’র একটা ছবি নিয়ে…. এসব বলছিল তখন রিয়াদ এলো…. আর এসে ছবিও দেখলো…. আর কাব্য’র কথাও শুনলো….
রিয়াদঃ রিদ…. [রিয়াদও রিদ বলে]
কাব্যঃ রিয়াদ তুই??
রিয়াদঃ এই মেয়েটা কে??
কাব্যঃ ওই নেহা যাকে আমি ভালবাসি….
রিয়াদঃ What??
কাব্যঃ কি হলো??
রিয়াদঃ এই মেয়েটা কি তোকে ভালবাসে??
কাব্যঃ জানিনা,,,,
রিয়াদঃ ভালবাসে না তোকে….
কাব্যঃ তুই কি করে জানলি??
রিয়াদঃ কারন এই মেয়েটা…. আমার Birthday তে আমার…. Best friend তিশান কে…. নিজে Propose করেছে..!!
কাব্য’র মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো…. চোখগুলো পানিতে জমে গিয়েছে….
কাব্যঃ তুই ঠিক বলছিস??
রিয়াদঃ তোর কি মনে হয়?? আমি ভুল বলবো তোকে??
কাব্যঃ ও আমাকে ভুলে গিয়েছে??
রিয়াদঃ তবুও আমার মনে হয়…. তোর ওর সাথে কথা বলা উচিত….
কাব্যঃ হুুম,,,,
।
।
।
।
রিয়াদ কাব্য কে শান্ত করলো…. কাব্যও ভেবে নিয়েছে…. শেষবারের মতো নেহা কে বোঝাবে…. তারপর না বুঝলে নেই…. জোড় করে তো কিছু হয়না…. কাউকে বোঝানোও যায়না…. রাতে নেহা’র ভাল লাগছে না…. বারবার মনে হচ্ছে ভুল করছে…!!
নেহাঃ সত্যিই কি ভুল দেখেছিলাম?? উফ পাগল হয়ে যাবো মনে হচ্ছে…. কি করবো এখন?? এটাও ঠিক আমি এখনো…. শুধু রিদ কে ভালবাসি….
এরমাঝে কাব্য ফোন দিলো…. অনেকদিন পর ফোন দিলো কাব্য…. নেহা প্রথমে ফোন ধরলো না…. কাব্য ফোন দিয়েই যাচ্ছে…. অনেকবার ফোন দেয়ার পর…. নেহা ফোন ধরলো..!!
নেহাঃ কেন ফোন দিচ্ছো??
কাব্যঃ তোমার সাথে শেষবারের মতো…. কথা বলতে চাই নেহা,,,,
শেষবার শুনে নেহা’র বুক ধক করে উঠলো….
নেহাঃ শেষবার মানে??
কাব্যঃ কালকে আমার সাথে দেখা করো…. আর কখনো বলবো না…. কিছু বোঝাতেও চাইবো না…. শুধু কালকে দেখা করো Please…..
নেহা না করতে পারলো না…. তাই রাজী হয়ে গেলো..!!
নেহাঃ Ok দেখা করবো,,,,
কাব্যঃ Thank you….
কাব্য ফোন রেখে দিলো…. নেহা সাতপাঁচ ভাবছে….
নেহাঃ শেষবার কেন বললো কাব্য??
।
।
।
।
তিশা তিশান কে নিয়ে ভাবছে…..
তিশাঃ ক্ষমা করবো তিশান কে?? তিশান ও তো আমাকে ভালবাসে…. এটাই তো চেয়েছিলাম আমি…. তিশান ও আমাকে ভালবাসবে…. আজ যখন ও আমাকে ভালবাসে…. তাহলে কেন মেনে নিতে পারছি না?? কিসের বাধা আমার?? ওইদিন তো তিশান…. ভুল বুঝে আমাকে অপমান করেছে…. ও তো জানতো না ওটা অভি ভাইয়া…. তাহলে কেন পারছি না??
তিশা গিয়ে ব্যালকনিতে দাড়ালো…. এই মুহূর্তে কবিতা মনে পড়ছে তিশা’র…!!
আমি ভীষন একলা থাকা মানুষ,
আমি ভীষন আমার ভেতর থাকি।
যত্ন করে খুব খেয়ালে রোজ,
‘আমি’টাকে’ আমার ভেতর রাখি।
আমি ভীষন অভিমানের মেঘ,
আমি ভীষন ক্লান্ত একা ভোর।
কষ্টগুলো রোজ জমিয়ে ভাবি,
সুখগুলো সব থাকুক না হয় তোর।
আমি ভীষন মন খারাপের দিন,
আমি ভীষন কান্না মাখা রোদ।
অশ্রুগুলো বর্ষা জলে ভাসাই,
ঋনগুলো সব না হয় হলো শোধ।
আমি ভীষন স্মৃতির খেরোখাতা,
মলাট জুরে হাজার আকিবুকি।
আমি ভীষন একলা থাকা মানুষ,
‘আমি’টাকে আমার ভেতর রুখি।
_____সাদাত হোসাইন…!!
।
।
।
।
হ্যা সত্যিই তিশা এখন একা…. যাকে ভালবাসে সেও ওকে ভালবাসে…. কিন্তুু আজ চেয়েও তাকে মানতে পারছে না…. হ্যা তিশা চায় তিশান সুখি হোক…. আগে তিশা যে পাগলামি করতো…. সেগুলো আজ স্মৃতি হয়ে ধরা দেয়….!!
পরেরদিন কাব্য আর নেহা বসে আছে….
নেহাঃ কি বলবে??
কাব্যঃ নেহা তুমি কি চাও??
নেহা কিছুটা ভরকে গেলো এই প্রশ্নে…..
নেহাঃ মানে কি?? কি চাইবো আমি??
কাব্যঃ তুমি সত্যি আমাকে আর ভালবাসো না?? সত্যিই আমাকে আর চাওনা?? ভুলে গিয়েছো আমাকে??
নেহা চমকে উঠলো,,,,
নেহাঃ আজ হঠাৎ এসব বলছো কেন??
কাব্যঃ কারন আমি আজ ক্লান্ত…. তোমাকে বোঝাতে গিয়ে ক্লান্ত…. আমি অনেকবার বলেছি তোমাকে…. তুমি যেটা দেখেছো…. সেটা ঠিক না ভুল…. সেদিন অফিসে রিশা আমাকে..!!
নেহাঃ আমি জানতে চাইনা….
কাব্যঃ চাইবে কেন?? এখন তো তিশান আছে,,,,
নেহা অবাক চোখে তাকালো..!!
নেহাঃ তুমি কি করে জানো??
কাব্যঃ জানি তবে শুনে রাখো…. তুমি যদি আমাকে ভুলতে পারো…. আমিও পারবো আমি তিশা কে বিয়ে করবো….
নেহাঃ What?? কোন তিশা??
কাব্যঃ তিশানে’র বোন তিশা আসছি….
।
।
।
।
কাব্য রেগে বেরিয়ে যায়…. এদিকে নেহা তিশান কে ফোন দেয়…. কারন তিশান কে জানানো উচিত…. নেহা’র ফোন পেয়ে তিশান চলে আসে…. College এ ছিলো তাই Late হয়নি..!!
তিশানঃ বলো নেহা কি বলবে??
নেহা তিশান কে সব বলে….
তিশানঃ What??
নেহাঃ হ্যা এখন কি হবে??
তিশানঃ আচ্ছা আমাকে বলো তো…. তুমি সেদিন কি দেখেছিলে?? মানে বুঝিয়ে বলো…..
নেহাঃ সেদিন আমি অফিসে গিয়েছিলাম…. রিদে’র Birthday ছিলো….
#Past …..
নেহা খুশিমনে অফিসে আসে…..
ম্যানেজারঃ ম্যাম আপনি যেতে পারবেন না,,,,
নেহাঃ কেন??
ম্যানেজারঃ স্যার এখন Busy আছে..!!
নেহাঃ আপনি জানেন আমি কে?? আমি রিদে’র Girlfriend আমি যাবো…..
বলেই নেহা চলে আসে…. কেবিনে ঢুকে নেহা যা দেখে…. নেহা’র হাত থেকে ফুলের বুকি নিচে পড়ে যায়…. নেহা’র চোখদুটো ভিজে আসছে…. কাব্য দাড়িয়ে আছে…. আর ওর সামনে একটা মেয়ে…. এমন ভাবে দাড়ানো…. দেখে মনে হচ্ছে লিপ কিস করছে…. আওয়াজ পেয়ে কাব্য আর রিশা তাকায়…!!
কাব্যঃ নেহা তুমি??
নেহাঃ কেন?? এসে বিরক্ত করলাম??
কাব্যঃ আরে বিরক্ত করবে কেন?? পরিচয় করিয়ে দেই ও রিশা আমার,,,,
নেহাঃ 2nd girlfriend….
কাব্যঃ নেহা কি বলছো তুমি??
নেহাঃ আমি ভাবতে পারছি না…. তুমি এভাবে আমাকে ঠকালে….
।
।
।
।
নেহা কাব্য কে কিছু বলতে না দিয়ে চলে আসে…..
#Present…..
নেহাঃ এখন বলো আমি কি করবো?? [কেঁদে]
তিশানঃ তুমি তো শুধু দাড়ানো দেখেছিলে…. তুমি নিজের চোখে কি দেখেছিলে?? যে কাব্য মেয়েটা কে কিস করছে??
নেহাঃ না দেখিনি,,,,
তিশানঃ তাহলে আমিও বলবো…. তুমি ভুল করছো নেহা….
তিশান অনেক বোঝায় নেহা কে…. এখন নেহা’র ও মনে হচ্ছে…. ওর কাব্য’র থেকে সব শোনা উচিত..!!
তিশান তিশা কে বুঝিয়ে যাচ্ছে…. তিশা কিছুতেই বুঝতে চায়না…. এভাবে প্রায় ১মাস চলে যায়…. আজ রুপে’র জন্মদিন…. তিশা’দের বাড়ির সবাই এসেছে…. আবির আসতে চায়নি…. তিশা জোর করে পাঠিয়েছে…. কিন্তুু তিশা আজও আসেনি…. তিশানে’র মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো…. তিশান কাউকে না বলে…. তিশা’র বাড়ি চলে এলো…. আজ তিশা’ই দরজা খুললো।।
তিশাঃ আপনি কেন এসেছেন??
তিশান দরজা বন্ধ করে…. তিশা কে নিয়ে রুমে গেলো…. রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো..!!
তিশাঃ আরে কি হয়েছে??
তিশানঃ আর কতবার ক্ষমা চাইতে হবে?? এবার কি পা ধরবো?? যদি পা ধরতে হয় তাহলে বলো…. বিশ্বাস করো আমি সেটাও করবো…. কিন্তুু আর আমি এভাবে থাকতে পারবো না…. আমার মনে তোমার প্রতি…. ভালবাসা জাগিয়ে এখন…. তুমি কেন দুরে আছো?? হয় তুমি আজ আমাকে মেনে নেবে…. নয়তো আমি নিজেকে শেষ করে দেবো…..
তিশাঃ পাগল নাকি??
তিশানঃ I am serious তিশা….
তিশাঃ এই আপনি যান তো..!!
।
।
।
।
তিশান দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো…. তিশা বিছানায় বসে পড়লো…. একটু পর তিশান একটা ছুড়ি নিয়ে…. আবার তিশা’র রুমে এলো…. তিশান নিচে গিয়ে ফল কাটার ছুড়ি এনেছে…. তিশা ভয় পেয়ে গেলো….
তিশাঃ এটা দিয়ে কি করবেন??
তিশানঃ হাত কাটবো,,,,
তিশাঃ দেখুন এসব নাটক বন্ধ করুন….
তিশান সত্যি সত্যি হাতে টান দিলো…. সাথে সাথে হাত কেটে…. ঝরঝর করে রক্ত পড়তে লাগলো..!!
তিশাঃ আরে কি করছেন??
তিশান আবারও টান দিলো….
তিশানঃ বলো তুমি আমাকে ভালবাসো…. নাহলে আমি সত্যি নিজেকে এখানেই…. তোমার সামনে শেষ করে ফেলবো..!!
তিশা তিশানে’র কাছে গিয়ে…. ঠাস করে এক থাপ্পর মারলো,,,,
তিশাঃ তোমার কি আমাকে মানুষ মনে হয়না?? কেন বোঝোনা?? ভালবাসি আমি তোমাকে….
তিশান একটান দিয়ে…. তিশা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো…. যেন ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবে…!!
#চলবে ..