#ক্যাসিনো ©লেখিকা_(মায়া)
#পর্ব_৩২
শুভ্র মেঘের খেলায় পুরো আকাশ ছেয়ে আছে। হাস্যউজ্জল সূর্য টাও মাঝে মাঝে মেঘের আড়ালে গিয়ে লুকোচুরি খেলছে। বাইরের পরিবেশ টা আজ বড্ড মনোরম । সব কিছু যেন সরল সাদা রূপ ধারণ করেছে।
।
।
প্রতিদিনের মতই শাহানা ভার্সিটির উদ্দেশ্য বের হচ্ছে। নিশানের সাথে সেই দিন রাতে বাড়ি ফিরেছিল বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতেই,মেহমেতের গাড়িতে তারা চলে যাওয়ার সময় উঠেছিল। এরি মাঝে কেটে গেছে তিন টি দিন। দুই দিন ভার্সিটি ছিল,আর কাল শুক্রবার হওয়ায় ভার্সিটি বন্ধ। এই তিন দিন নিশান আগের মতই স্বাভাবিক আচারন করেছে। নিজের কথা মত সেই আগে ফোন করেছে কারণে অকারণে। পড়া শুনা তেওঁ বেশ মনোযোগী দেখা গেল। শাহানা ঘর থেকে বের হয়েছে। আজ সাদা রঙের একটা থ্রি পিচ পড়েছে। সুন্দর মানিয়েছে,হালকা করে চোখে কাজল দিয়েছে। নিশান কথার ফাঁকে কাল বলেছিল শাহানার চোখ টা নাকি খুব মায়াবী আর ঐ মায়াবী চোখে কাজল দিলে আরো সুন্দর লাগবে। তাই আজ কাজল দিয়েছে, আয়নায় নিজে কে দেখে নিজেই ফিক করে হেসে গর্ব করে বলছিলো। বাহ শানু তোকে তো দারুন লাগছে আজ,,,নিশান নিশ্চয়ই তোকে দেখে টাস্কি খাবে আজ।
গুনগুন করে গান গাইছে আর দুলতে দুলতে শাহানা সদর দরজা অব্দি পৌঁছানোর আগেই শিরীন চাঁপা রাগী গলায় বলে উঠে রান্না ঘর থেকে না খেয়ে এক পা যদি বাইরে দিয়েছো তো কাল থেকে তোমার বের হওয়া বন্ধ। চুপচাপ এসে টেবিলে বসো নাস্তা দিয়েছি খাওয়া শুরু করো। আমি ওমলেট করে নিয়ে আসছি।।
শাহানা তৃপ্তির হাসি দিল। তার জীবন টা যেন এবার সাদা কালো রং থেকে নিজেকে সাত রং দিয়ে রঙিন করছে। শিরীন এর সাথে সম্পর্ক টাও যেন বেশ জুমেছে। মা মেয়ের সব রকম দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছে শিরীন। দেরি করে আগে বাসায় ফিরলে কেউ বলার ছিল না। না খেয়ে দিন পার করলেও কেউ জিজ্ঞেস করতো না যে খেয়েছি কি সারাদিন আর এখন নিশান তো আগেই এসেছে তার খেয়াল রাখতে এখন মা নিজেও তার খেয়াল রাখে। আর একটা জিনিষ পেয়ে গেলে তার জীবন টা পরিপূর্ণ হতো। তা হলো তার মা বাবার সম্পর্ক টা যদি এখন ঠিক ঠাক হয়ে যেতো কতই না ভালো হতো।
শাহানা টেবিলে এসে বসে নাস্তা শুরু করে দিয়েছে। শিরীন ওমলেট টা এনে তার প্লেটে দিল, শাহানা দ্রুত খাওয়ার চেষ্টা করছে। শিরীন ভ্রু উঁচিয়ে বলে আস্তে খাও। এতো দ্রুততার সঙ্গে খাওয়ার দরকার নেই তো। নাহ আম্মু লেইট হয়ে গেছি আমি অলরেডি। ১০টা বাজতে চলেছে। শিরীন মেয়ে কে একটু ভালো করে পরক করে নিয়ে দাঁত বের করে হেসে বলে বাহ আমার মেয়েটা কে তো পরির মত লাগছে আজ। এতো সেজেছো কেন আজ হুমম, আমার মেয়ে কি কারো প্রেমে পড়ছে নাকি?? মায়ের এমন সন্দেহ যুক্ত কথা শুনে শাহানা কাশতে আরম্ভ করে। শিরীন শাহানা কে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়,,এই জন্য বলছিলাম আস্তে খাও,পানি খাও তারাতারি। শাহানা পানি শেষ করে মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে সাজুগুজু কোথায় দেখলে তুমি?? আমি তো এমন হয়েই যায় রোজ। হুমম তা যাও কিন্তু বেশ পরিপাটি লাগছে। দাঁড়াও দাঁড়াও কয়েক মাস আগে শাড়ি পড়ে বের হয়েছিলে তুমি আর আমায় বলে গিয়েছিলে বিয়ে করতে যাচ্ছো!! অনুমতি লাগবে। তা বিয়ে করলে না কেন শুনি??
শাহানা হচকচিয়ে যায় এই কথায়। দেশে ফিরে আফজাল শরীফের কাছেও এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে। তখন ও বেশ ঘাবড়ে যায় সে। তার পর ও নিজের কনফিডেন্স ঠিক মতো বজায় রেখে বলেছিল। যে সে বিয়ে করেছেই তো। আফজাল শরীফ হেসে কথা উরিয়ে দিয়েছিল। শাহানা যে মজা করেছিল তা সিউর হয়েছিল সেদিন।
কিন্তু এখন মায়ের কাছে কি জবাব দিবে?? সন্তান নাকি মায়ের কাছে সত্য মিথ্যা যেটাই বলুক সব নাকি ধরতে পারে এক জন মা। কিন্তু শাহানার এমন পরিস্থিতি তে কখনো পড়তে হয়নি এর আগে যার কারণে বেশ কিছু ক্ষন ভাবলো সে, চোখ দুটো খাবারের প্লেটে নিবদ্ধ করে বলে। কে বলেছে বিয়ে করিনি ? করেছি তো বিয়ে। শিরীন হেসে বলে তাই!! তাহলে জামাই বাবাজী কে দেখাবে কোন দিন। শাহানা ওমলেট টা মুখে দিয়ে পানি খেল এক গ্লাস তার পর হাত মুছতে মুছতে বলল, চিন্তা করো না আগে সে প্রতিষ্ঠিত হোক তার পর পুরো দুনিয়া কে দেখাবো। শিরীন হো হো করে হেসে বলে ভালোই মজা করতে পারো। সবই ঠিক আছে যাও এখন দেরি হচ্ছে। হুমম যাচ্ছি তুমি খেয়ে নিও। তারাতারি ফিরবে কিন্তু। হ্যাঁ ফিরবো। শাহানা দু কদম পা ফেলে আবার ও ফিরে এসে মাকে জরিয়ে ধরলো। ইশ্ এই মায়ের উম ,এই তো মা মা গন্ধ। যে উম আর গন্ধে সন্তান সকল দুঃখ কষ্ট ভুলতে পারে। শিরীন মেয়ে কে জরিয়ে ধরে নিজেও তার পর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো।
শাহানা হেসে চলে যায় ,তার চোখের কোণে পানি,শাহানা তো নিজেও বুঝতে পারলো না শিরীনের চোখেও পানি চলে এসেছে। শিরীন শাহানা চলে যাওয়ার পর থেকেই কেমন ছটফট করতে লাগলো। বড্ড অস্থির লাগছে আজ। কেন এমন হচ্ছে তার???
শাহানার দেরি হয়ে যাওয়ায় আজ গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে, নিজেই ড্রাইভ করছে । ৫মিনিট পথ অতিক্রম করলেই ভার্সিটি তার আগেই শাহানার ফোনে একটা মেসেজ আসে। শাহানা গাড়ি থামিয়ে মেসেজ টা অপেন করে দেখে মেহমেত মেসেজ করেছে। কয়েক লাইনের লেখা!! ভার্সিটি তে আসতে হবে না. নিশান আজ ভার্সিটিতে যাচ্ছে না। ঐ তোর আমাদের পুরনো বাড়ি অপেক্ষা করছে , সারপ্রাইজ আছে তোর জন্য!! শাহানা মেসেজ টা পেয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। এটা আবার কেমন কথা মেহমেত দের পুরোনো বাড়ি
ভার্সিটি থেকে এক ঘন্টার রাস্তা। এতো দূরে নিশান আমার জন্য অপেক্ষা করছে??? শাহানা ততক্ষনাত মেহমেতের নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু ফোন ব্যস্ত দেখাচ্ছে. তার পর আবার নিশান কে কল দেয় কিন্তু তার ফোন ও ব্যস্ত দেখাচ্ছে। বিরক্তিকর একটা পরিস্থিতিতে পড়ে যায় সে। কি করবে ভেবে পায় না। পরবর্তী তে ভাবে মেহমেতের ফোন থেকে মেসেজ এসেছে তাহলে এতো ভাবা ভাবির কি আছে যাওয়া যাক দেখি। শাহানা গাড়ি ঘুরিয়ে মেহমেতের দেওয়া ঠিকানায় রওনা হয়।
এই দিকের নিশানের ফোনে সেম মেসেজ আসে শাহানার মেসেজ দেওয়ার এক ঘন্টা আগে মেহমেতের নাম্বার থেকে যে শাহানা আজ ভার্সিটিতে আসবে না। সে অপেক্ষা করছে মেহমেত দের পুরোনো বাড়ি তে এবং তার জন্য সারপ্রাইজ আছে। শাহানা আর মেহমেত মিলে হয়তো কোন কান্ড কারখানা শুরু করেছে,তাই সকাল সকাল বের হয়ে গেছে। আর দেখা নেই তার।
মেহমেত দের পুরোনো বাড়ি তে এর আগে সে গেছে বেশ কয়েক বার। মাঝে মাঝে বন্ধ মহল নিয়ে hangout করতে। খুব একটা পরিত্যক্ত বাড়ি নয় এটা। মেহমেত দের নতুন বাড়ি শহরের ভিতরে নিয়ে গেছে। আর এই বাড়ি ঐ বাড়ির তুলনায় খুব একটা বড় নয়। ।।
কিন্তু নিশান মুসকিলে পড়ে গেল যাবে কি করে সে?? তার মধ্যে আবার টুং একটা মেসেজ আসে,, বাইরে গাড়ি অপেক্ষা করছে তারাতারি নিচে নামতে । নিশান মুচকি হাসে।
তারা দুজনেই আমাদের পুরনো বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যায়। নিশান আগেই পৌঁছে যায়। এবং গিয়ে তো অবাক এর আগেও তারা এসেছিল এই বাড়িতে,এতো পরিপাটি করে সাজানো ছিল না। অল্প কিছু আসবাবপত্র ছিল কিন্তু এখন যেন বাড়ির চেহারায় পাল্টে দিয়েছে। মনে হচ্ছে এখানে মানুষের বসবাস রয়েছে। নতুন আসবাবপত্র নিয়ে আসা হয়েছে, রান্না ঘরে হাড়ি পাতিল, তরিতরকারি সব রাখা। নিশান সারা ঘর শাহানা কে খুঁজছে! কোথাও খবর নেই। উপর তলায় গিয়ে দেখে তিন টা রুম রয়েছে বাকি দুই টাই তালা দেওয়া। আর একটা খোলা দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে দেখে ঘর টাও সুন্দর করে গুছানো।
নিশান ঘুরে ঘুরে বাড়িতে খুঁজছে শাহানা কে কিন্তু নেই সে। তার পর নিচে আসতেই দেখে একটা গাড়ি এসেছে,আর শাহানা বের হয়ে আসে। শাহানা কে দেখে স্বস্তি পায় নিশান।
সাদা রঙের জামা তে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে আজ শাহানাকে, ভালোবাসার মানুষ সব সময় সুন্দর সাজলেও সুন্দর না সাজলেও যে অসুন্দর তা নয়। সাজলে তার তার প্রতি আকর্ষণ আর মুগ্ধতা দুটোই দু গুন হয়ে যায় যেমন এখন নিশানের হচ্ছে।
কিন্তু নিশান বুঝে উঠতে পারে না এখনো সারপ্রাইজ টা কি???
শাহানা দূর থেকে দেখতে পায় নিশান দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দেখেই ভবন ভুলানো হাসি দিয়ে এগিয়ে আসে তার কাছে। তার পর কাছে জরিয়ে ধরে বলে!! কি জনাব কি সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এখানে আগমন ঘটালেন??
নিশান নিজে অবাক হয়ে বলে, সারপ্রাইজ নাকি তুমি দিতে চেয়েছো!! কিহ আমি কেন?? মেহমেত তো মেসেজ দিলো আর বললো…শাহানার কথা শেষ করতে না দিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়ে বলে মেহমেত তোমাকেও মেসেজ দিয়েছে?? কিন্তু ও আমাকে মেসেজ করছে!!….।।
ওদের দুজনের কথার মাঝে মেহমেত হাসতে হাসতে ঘর থেকে তাদের সামনে আসে। দুজনেই অবাক হয়ে চেয়ে আছে তার দিকে। মেহমেত তখন চিল্লিয়ে বলে সারপ্রাইজ!!! দুজনেই পানশে আর চোখ ছোট ছোট করে বলে কোথায় সারপ্রাইজ?? কেন আমিই তোদের সারপ্রাইজ!! ভালো লাগছে না আমাকে?? নিশান আর শাহানা চুপ করে আছে। মেহমেত তখন গলা খাকারি দিয়ে কোন প্রকার ভূমিকা ছাড়ায় বলে,,,
আসলে আমার পক্ষ থেকে তোদের দুজনর সারপ্রাইজ এটা !! যে আজ সারাদিনের জন্য এই বাড়ি টা তোদের। এখানে তোরা এক দিনের জন্য সংসার করতে পারবি। সব রকম ব্যাবস্থা আমি করে দিয়েছি। নিশান কে রান্না করে খাওয়াবি,টিভি দেখতে পারবি, আর সব থেকে বড় রোমান্স করতে পারবি।
শাহানা দাঁত বের করে হেসে দেয়। নিশান থাপ্পর মারে মেহমেতের পিঠে। ব্যাটা খাচ্চর অতিরিক্ত বলে ফেলছিস কেন?? অতিরিক্ত কোথায় বললাম নিশান। ভুল তো কিছু বলিনি না??শাহানা তখন বরে হুমম তার বুঝলাম কিন্তু এসব হঠাৎ কি মনে করে শুনি???
আসলে ভাবলাম দিন দিন তোদের সম্পর্কের অবনতি শুরু হচ্ছে। তাই যদি তোরা একটু বেশি নিজেদের সাথে টাইম স্পেন্ড করিস তো তোদের মধ্যে একটা ভালো এবং আরো শক্ত understanding তৈরি হবে। আর কথা হচ্ছে কি,এখনো তোদের বিয়ের রোস্ট খাওয়া হয়নি তো তার আগেই যদি তোদের সম্পর্কের অবনতি হয় তো আমার রোস্টের পিস মিস হয়ে যাবে। তা আমি কখনোই করতে পারবো না। সুতরাং আজ কের দিন টা তোরা এক সাথে উপভোগ কর। আমি এখন বাসায় যাবো। এবং রাত নয়টার তোদের নিতে আসবো আমি। তার পর এক সাথে বাসায় যাবো। রাতের খাবার টা কিন্তু আমি খাবো তাই ভালো করে রান্না করবি । আর শুন শাহানার গাড়ি বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবো কিন্তু। তিন জন এক গাড়িতে ফিরবো পরে আবার অসুবিধা হবে আলাদা ড্রাইভ করতে গেলে।।।।
তার পর আমি শাহানার গাড়ি নিয়ে তাদের বাসায় যায়। আন্টির সাথে দেখা করে বলি শাহানা আমাদের বাসায় আছে। আজ সব বন্ধুদের দাওয়াত করেছি । রাতে বাসায় ফিরবে এবং একটু পর শাহানার সাথে শিরীন কথা বলে আর সেও একই কথা বলে যে মেহমেত দের বাসায় আছে। নিশানের গাড়ি টাও ড্রাইভার বাসায় নিয়ে আসে।
আমি জানতাম না ঐ দেখায় শেষ দেখা হবে তাদের সাথে। আমার সব থেকে বড় করা ভুল, ওদের আমি এই সারপ্রাইজ টা দিয়েছিলাম।
মরিয়ম উতলা হয়ে জিজ্ঞেস করে কেন তার পর কি হয়েছিল???মেহমেত এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার পর আবার বলে
সারা দিন টা আমি বাসায় কাটাই। কথা ছিল রাত নয়টার তাদের নিতে যাবো। আর আমি ঠিক সারে নয়টার ঐ বাড়িতে যায়। কিন্তু বাড়ির ভিতরে আমি তাদের দুইজনকেই খুঁজে পায় না। এরি মাঝে ঘটে গেছে আর এক ঘটনা, আমি ভাবলাম যতই হোক বন্ধুর এক দিনের সংসারে তাদের বাসায় যাচ্ছি। তাই মিষ্টি নিয়ে যাওয়া তো আবশ্যক। মিষ্টি নিয়ে গাড়ি তে প্রবেশ করার আগেই আমার ফোন আর মানিব্যাগ ছিনতাই হয়ে যায়। মন মেজাজ পুরো বিগড়ে গেলো। সে সব রাগ বাগ সরিয়ে হাত ঘড়িতে দেখি সময় পার হয়ে যাচ্ছে । তাই তারাতারি গাড়িতে উঠি। আর চলে যায়। সারা বাড়ি তাদের তন্নতন্ন খোঁজার পর ও কারো নাগাল না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায়। ফোন ও যে নেই এখন ওদের ফোন দিবো। পরে ভাবলাম ওরা কি চলে গেছে। কি করবো কি করবো ভাবতে থাকি। তার পর মেসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মেসে যেতে যেতে বেশ রাত হয়ে যায়। দাড়োয়ান কেন জানি আজ কোন প্রকার ক্ষোভ ছাড়ায় ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়। তার পর রুমে গিয়ে দেখি নিশান নেই। মাথার ভিতরে ভয়ে সব এলোমেলো করে দিচ্ছে তাহলে কোথায় গেল তারা। তার পর ভাবলাম শাহানা কে আগে ওর বাড়িতে রাখতে যায়নি তো আগে?? হতেও পারে ভেবে যেই বের হবো। তখনি আজম দপ্তরি এসে উপস্থিত হয় আমার সামনে আর এক বড় বক্স দিয়ে বলে নিশানের জন্য পার্সেল এসেছে।
নিশানের জন্য কিসের পার্সেল এটা ?? আর কে দিয়েছে জিজ্ঞেস করাই বলল। বাইরের এক জন লোক এসেছিল সন্ধ্যাই দিতে বলেছিল। পরে এসে দেখি তোমরা নেই তাই,আর দেওয়া হয়নি। তোমাকে আসতে দেখলাম তাই নিয়ে আসলাম। নিশান কে দিয়ে দিও বলে যায়। আমি পার্সেল নিয়ে খুব একটা কিছু ভাবলাম না। বক্স টা টেবিলের উপর রেখে শাহানার বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরি।
আমি খুব চিন্তিত ছিলাম। গাড়ি ড্রাইভ করতে করতেই পিছন থেকে একটা ট্রাক এসে লেগে দেয়। লুকিং গ্লাসে বেশ কিছু ক্ষন ধরে দেখছিলাম ট্রাক টা আমার গাড়ির পিছনে পিছনে আসছে। হুট করে লেগে দিবে বুঝতে পারিনি। তার পর আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরে ততক্ষনে সব শেষ হয়ে গেছিল।
মেহমেতের চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। মেহমেত কাঁদছে। মরিয়মের ভিতর টা কেমন মোচড় দিয়ে ওঠে। মেহমেত কাঁপা গলায় বলে, আমার সব থেকে ভালো বন্ধু ছিল ওরা , তাদের আমি হারিয়ে ফেললাম….
চলবে_______?????
কেমন হয়েছে জানাবেন।
আর মাত্র কয়েক পর্বে সব উন্মোচন হয়ে যাবে। ধৈর্য ধরে আমার পাশে থেকে গল্প টা পড়ে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ 🥰😘