গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ ২২
লেখাঃ Shakil
~
~
~
—একটুপর আপু এসে আমায় ফোনটি দিয়ে গেলো। আপুকে দেখে বুজলাম ও এখন একটু খুশী।
পরেরদিন সকালে অনুর ফোনে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।
—-হ্যালো আবির,,,,?? হুমম বলো অনু
আজকে কী তুমি ফ্রী আছো..??
কেনো….??
ফ্রী থাকলে চলো না আজকে একটু দুজনে একসাথে ঘুরতে যাই কোথাও আবির।
—-অফিস আছে বিকেল টাইমে ফ্রী হবো৷
আচ্ছা তাহলে আমরা আজকে বিকালেই ঘুরতে যাবো,,,??
হুমম ঠীক আছে বলে অনুর সাথে একটু কথা বলে ফোনটি রেখে দিলাম।
—- ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। অফিস যাওয়ার জন্য বের হতে আপু এসে বললো…
ভাই চল আমিও একটু বাইরে যাবো কিছু কিনা কাটা করতে আমায় ড্রপ করে দিস।
—-আচ্ছা আপু।
আপুকে এক শপিংমলের সামনে নামিয়ে দিয়ে আমি অফিস চলে গেলাম। একটু কাজে ব্যাস্ত আছি এমন সময় ফোনটি বেজে উঠলো।
—-ফোন হাতে নিয়ে দেখি রং নম্বর। তাই ফোনটি কেটে দিলাম। পরপর তিনবার ফোন কেটে দিলেও আবার ফোন আসলো। তাই এবার রিসিভ করলাম।
হ্যালো কে বলছেন…??
সালা বাবু আমি তোমার দুলাভাই মাসুদ।
ওহ আচ্ছা। কেমন আছেন দুলাভাই….??
—- নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে ফোনটি কেটে গেলো।
একটা বিষয় বুজছি নাহ আমি,,, মাসুদ ভাইয়া প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নম্বর দিয়ে কেন আমায় ফোন করছেন,,,!! এমন নাতো বিষয়টা যে উনি এক নম্বর থেকে ফোন দিলে বারবার আমি তা রিসিভ করবো নাহ।
—উনি আবার ফোন করলে আমি ফোনটি ধরলাম।
একটু কথা বলতেই উনি বললেন,,,
আবির তোমার আপুকে বলনা আমার সাথে একটু কথা বলতে,,, আমি ওর সাথে শপিংমলেই আছি। তোমার আপু আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে নাহ।
— ভাইয়া আপুকে যদি এখন আমি ফোন করে আপনার সাথে কথা বলতে বলি তাহলে সেদিন আপনাকে যেভাবে চড় দিয়েছিলো আজ বাসায় ফিরলে আমাকেও দিবে। আপু এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমি আপনাদের ভিতরে নাই দুলাভাই। আচ্ছা সালাবাবু ঠীক আছে বলে মাসুদ ভাইয়া ফোন রেখে দিলেন৷
— যাক তাহলে এবার মাসুদ ভাইয়ার
সব ভুল ভালো ভাবেই ভেঙ্গে গিয়েছে। নয়তো এভাবে চড় ও অপমানিত হয়েও কি আবার আপুর পিছনে লাগে নাকি,,!!
—-দেখি আপুকে একটু ফোন দিয়ে আপু কী করছে,,,,??
হ্যালো আপু,,,!!
হুমম ভাই বল।
তুই এখন কোথায় আপু,,,??
এইতো ভাই শপিং করছি। শপিং প্রায় শেষের দিকে। ভাই একটু লাইনে থাক…. কি হয়েছে এখানে,,,??
—-আপু ফোন না কাটাতে আমি সব শুনতে পাচ্ছি।
ম্যাম এই মানুষ টি সেই কখন থেকে আপানাকে ফলো করছে,,, এই মানুষ টা মনে হয় চোর টোর হবে তাই আমরা সিসি টিভিতে দেখে উনাকে আঁটকেয়েছি।
—আসলে আপনারা যা ভাবছেন উনি তা নন। উনি হলেন পুলিশ অফিসার আমার রিলেটিড উনি ।
ওহ,,,সরি স্যার আর সরি ম্যাম।
আচ্ছা ঠীক আছে আপনারা এখন যান।
—-ধন্যবাদ লাবণ্য আমি আসলে,,,
দেখুন দয়া করে আপনি আমার পিছু নিবেন নাহ। যে সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছি আমি আর তা জোরা লাগাতে চাইনা। আপনি আমার সামনে না আসলে আমি খুশী হবো৷
—- হুমমম ভাই বল। আমি আপুকে কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলাম ৷ কেননা আপুকে আমি যা বলতে চেয়েছিলাম তা বলার এখন আর দরকার নেই ।
—অফিসের কাজ শেষ হলে বিকালে বাসায় ফিরলাম । বাসায় ফিরে ফ্রেশ হতে অনু ফোন করে বললো,,, কখন আসবে তুমি??
এইতো ফ্রেশ হয়েছি এখন একটু খেয়েই বার হবো৷
খেয়ো না আমি তোমার জন্য কিছু রান্না করেছি,,,।।
আচ্ছা অনু আমি আসছি তাহলে।
—- অনুর সাথে এক হোটেলে প্রবেশ করলাম। দুটি কফি অর্ডার করে দুজন খেলাম। অনু এবার ওর রান্না করা খাবার গুলো বার করলো।
ও আমাকে খাইয়ে দিতে চাইলে আমি না বললাম,,,এসব কি বলছো,,, আমি কি বাবু যে অনু তুমি আমাকে খাইয়ে দিবা,,??
— তুমি না কিছু বুঝো নাহ আবির।
মানে আমি আবার কি বুঝি নাহ,, এখানে কত মানুষ তুমি কী দেখছো নাহ অনু,,, তুমি আমাকে খাইয়ে দিলে সবাই কি ভাববে,,,??
—এখন ঝগড়া বাদ দিয়ে খাও তো আবির।
ওহ আমি তোমার সাথে ঝগড়া করছি অনু,,,??
নাহ আমি ঝগড়া করছি বলে অনু খাবারগুলো হাত দিয়ে ফেলে দিয়ে উঠে চলে গেলো৷ আমি ফিরাতে চাইলেও ও থামলো নাহ।
— অনু হঠাৎ এমন রেগে গেলো কেনও বুজলাম নাহ।
আর আমিও একটা হাদারাম ও আমার জন্য কষ্ট করে এত কিছু রান্না করে আনলো আর আমি কিনা….
—ওয়েটার কে ডাক দিয়ে বিল দিলাম। ওয়েটার বিল নিয়ে টেবিলের নিচে তাকালো। বুজলাম এগুলো পরিষ্কারের জন্য ও অতিরিক্ত কিছু টাকা চাইছে তাই ওয়েটার কে কিছু টাকা দিয়ে উঠে আসতে,,, পিছন থেকে আবির বলে কেউ ডাক দিলো।
—পিছনে ফিরে দেখি অপু বসে আছে।
আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম,, হুম বলো অপু,,,??
সবই তো দুর থেকে দেখলাম আবির,,, তা অনুর সাথে কি তোমার চক্কর চলছে নাকি??
হুমম চলছে,,, হঠাৎ এই প্রশ্ন??
নাহ এমনি,, মিতুকে ছেড়ে অনুকে নিয়ে পড়লে তাই আরকি।
—- শুনো অপু,,,
মিতুকে ছেড়ে মানে,, মিতুকে কী আমি ভালোবাসি নাকি যে ওকে ছাড়বো আমি,,,?? আর মু্িতু তোমার বিয়ে করা বউ সো এমন সেকেন্ডহ্যান্ড আমার কেউ হতে পারে না বুজেছো,,, পরবর্তীতে কথাবার্তা একটু সাবধানে বলবা ঠীক আছে।
— আরে আবির তুমি রাগ করছো কেনও,,,??
অপু আমি আর কিছু না বলে বাসায় চলে আসার জন্য বেরিয়ে আসতে দেখি অনু আমার জন্য দাঁড়িয়ে আছে।
—- আমি অনুকে দেখেও না,দেখার ভান করে পাশ দিয়ে যেতে ও আমাকে পিছন থেকে এসে জরিয়ে ধরলো।
সরি সরি সরি আবির প্লিজ আর এমন করবো নাহ আমি।
—- আচ্ছা ঠীক আছে এখন ছাড়ো আমায় মানুষ দেখছে সব।
অনু আমাকে ছেড়ে দিলো। তুমি না পুরাই আনরোমান্টিক আবির।
হুমম আমি আনরোমান্টিকই তোমার সমস্যা কোনো,,,??
—সমস্যা কেন হবে,, আর শুধু শুধু রাগ করছো কেন হুম সরি বলেছি তো।
আচ্ছা,,, চলো এবার বাসার দিকে যাই।
—- একটা রিক্সাতে অনু আমি উঠলাম। গল্প করতে করতে ওর বাসার সামনে আসলে অনুকে নামিয়ে দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম।
—– বাসায় ঢুকতে মিতুকে দেখি আব্বু আম্মুর সাথে ডাইনিং রুমে বসে গল্প করছে। মিতুর কোলে আমার ভাগ্নে।
—- আমাকে দেখে মিতু ওর মুখটি নিচে নামিয়ে নিলো।
আম্মু মাসুদ ভাইয়া এসেছেন নাকি,,,??
হুমম বাবা উনি লাবণ্যের রুমে।
ওহহ তা কখন এসেছেন আম্মু,,,??
উনাদের আসাতো অনেকক্ষণই হলো বাবা । ওহ খাওয়া-দাওয়া হয়েছে আম্মু??
—- নাহ হয়নি। সবাই একসাথে খাবো বলে বসে আছি।
হঠাৎ আপু আর মাসুদ ভাইয়াকে একসাথে রুম থেকে বের হতে দেখে আমার মনে হলো,,,
তারমানে আপু মাসুদ ভাইয়াকে……
..
..
..
চলবে,,,,??
..
(গল্পটি কেমন লাগছে আপনাদের?)