#গল্পঃ_চুক্তির_বউ_যখন_প্রেগন্যান্ট_পর্ব_০৫
অজানা ভালোবাসার গল্প।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহ জালাল।
মেঘের শ্বাশুড়ি খুব ভালো মনের একজন মানুষ।। উনি কোনো রকম বাধা দেয়নি। মেঘ মিলিকে মায়ের খেয়াল রাখতে বলে বাসা থেকে বের হয়ে একটা টেক্সি করে রেস্টুরেন্টে চলে গেলো। রেস্টুরেন্টে গিয়ে
দেখে আগে থেকেই তার বান্ধবী অরিন ওর জন্য অপেক্ষা করছে। এরপর মেঘ চেয়ারে বসে আর কফি অর্ডার করে। এরপর মেঘ তানহকে বলে উঠলো……..
মেঘঃ-তানহা বল কেনো ডেকেছিস..??
তানহাঃ-মেঘ তুই কেমন আছিস..??
মেঘঃ-ভালো…..??
তানহাঃ-স্যারের সাথে বিয়ে হওয়ার পর তো তোর
সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। আন্টি মারা গেলেন
তাও গিয়ে দেখতেও পারলাম..না সরি রে…??
মেঘঃ-দূর তুই সরি কেনো বলছিস সব আমার
কপাল রে….??
তানহাঃ-সত্যিই কি তুই ভালো আছিস…??
মেঘঃ-ভালো না থাকার কি আছে। এতো বড়লোক মানুষের সাথে বিয়ে হয়েছে ভালো না থেকে উপায় আছে…??
তানহাঃ-তোর কথা বার্তা এমন লাগছে কেনো মনে
হয় তুই কিছু একটা আড়াল করতেছিস….??
মেঘঃ-ছাড় তো এসব কথা। এখন বল তুই কেনো আমায় ডেকেছিস…??
তানহাঃ-তুই কি কিছুই জানিস না…??
মেঘঃ-কোন ব্যাপারে…..??
তানহাঃ-স্যার মানে তোর স্বামী….??
মেঘঃ-কেনো কি হয়েছে…??
তানহাঃ-অফিসে তোর পদে একজনকে জব দেওয়া হয়েছে…??
মেঘঃ-জানি সে একজন মেয়ে…??
তানহাঃ-জানিস তাহলে চুপ করে আছিস কেনো…??
মেঘঃ-মানে..??
তানহাঃ-স্যার ৩ মাসের জন্য রিধিকে[মেয়েটার নাম] নিয়ে আমেরিকা যাচ্ছে….??
মেঘঃ-তো কি হয়েছে…??
তানহাঃ-মেঘ কি হয়েছে তোর।। আর উনি তোর স্বামী, তুই উনাকে আটকাবি না। কি দরকার এসব ডিল
করার আর ৩ মাসের জন্য অন্য দেশে যাওয়ার।
আর ওই মেয়েটাকেই বা কেনো নিয়ে যাবেন অফিসে অন্য স্টাফরাও তো আছে..??
মেঘঃ-অফিসের কাজে যাবে তুই এত ভাবছিস কেনো?
তানহাঃ-মেঘ তুই তো এত বোকা না। রিধি মেয়েটা সারাক্ষণ স্যারের মাথায় ছড়ে বসে থাকে। স্যার
যেখানে যাবেন ওই রিধি মেয়েটা সেখানে যাবে??
মেঘঃ-তানহা এতে এত ভাবার কি আছে। অফিসের কাজেই তো যাচ্ছে…??
তানহাঃ-মেঘ বাচ্চাদের মত বিহ্যেভ করিস না। কেনো বুঝেও না বুঝার ভান করছিস। তোর স্বামী তোকে না বলে অফিসের অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে আমেরিকা যাবে আর তুই একা একা থাকবি.???
মেঘঃ-তানহা প্লিজ এই সব কথা বাধ দে, আমার এখন ভালো লাগছে না এসব কথা শুনতে। অন্য কিছু বল?
তানহাঃ-ওহহহ সরি। একটা কথা বলবো মেঘ…??
মেঘঃ-কি কথা শুনি…??
তানহাঃ-তুই কি তামিমের কারনে স্যারকে দূরে সরিয়ে রাখছিস…??
মেঘঃ-তানহা তামিমকে এর মাঝে টেনে আনছিস কেনো…??
তানহাঃ-মেঘ তুই যদি মনে করিস তামিমের জন্য স্যার কে অবহেলা করবি তাহলে যেনে রাখ তুই কিন্তু তোর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা করতে যাচ্ছিস..??
এই কথাটা শুনে মেঘ একটা দীর্ঘ শ্বাস নেয়। তারপর বলতে থাকে……
মেঘঃ-ভুল তো সেদিন করেছি যে দিন আকাশ আহমেদ এর বউ হয়ে ওই বাড়িতে পা রেখেছি….??
তানহাঃ-মেঘ😠😠
মেঘঃ-তুই স্যারের জন্য আমাকে ধমক দিলি…??
তানহাঃ-সরি রে মেঘ। শোন একটা কথা বলি.. তুই কিন্তু ভালো করেই জানিস তামিম একটা প্রতারক। আর তুই তামিমের জন্য কেনো স্যারকে দূরে সরিয়ে রাখবি বল?
মেঘঃ-তামিম প্রতারক না তানহা…??
তানহাঃ-ভালোবাসার মায়া জালে আটকা পড়েছিস তুই তাই বুঝতে পারছিস না কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক। তবে হ্যা যখন বুঝতে পারবি তখন যেনো খুব বেশি দেরি না হয় মেঘ…??
মেঘঃ-তামিম কে নিয়ে তোর মুখ থেকে আর একটা
কথাও শুনতে চাই না। আর হ্যা উনি আমার স্বামী উনাকে নিয়ে আমি কি ভাববো না ভাববো সেটা
আমি জানি। আর আমি এটাও জানি আমাকে কি করতে হবে।আর তো মাত্র ৩ মাস তারপর সবকিছু
শেষ হয়ে যাবে….???
তানহাঃ-মানে। কি সব উল্টা পাল্টা বলছিস…??
মেঘঃ-জাস্ট ওয়েট এন্ড সি..??
এই বলে মেঘ উঠে দাঁড়ালো। পা বাড়ালো চলে যাওয়ার জন্য। পিছন থেকে তানহা শুধু একটা কথাই বললো….
তানহাঃ-অতীতে যেই ভুলটা করেছিলি সেই ভুলটা
আর করিস না মেঘ। সব হারাবি তুই…??
তানহার কথা শুনে অবাক হয়ে পিছনে তাকায় মেঘ। তারপর বলতে থাকে……..
মেঘঃ-হারানোর মতো নেই কিছুই। যা ছিলো অনেক আগেই হারিয়েছি। নতুন করে কিছু হারাবে না
আমার। আর হ্যা অতীতে আমি কোনো ভুল করিনি?
এই কথা বলে মেঘ সামনের দিকে হাটতে শুরু করে। তারপর বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে বারবার তানহার কথা গুলো মনে পড়তে থাকে। ভুলে যেতে চাইলেও কানে বাজে একটা কথা..অতীতের ভুলটা করিস না মেঘ। মেঘ রুমে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
আর নিজে নিজে বলতে থাকে……
মেঘঃ-আমি তো কোনো ভুল করিনি..তাহলে কেনো আমাকে এত কষ্ট পেতে হচ্ছে। কেনো আমার সাথে এমনটা হচ্ছে…কেনো কেনো কেনো।
|||
সব কিছু ভুলে গিয়ে তো ভালোই ছিলাম আমি। তাহলে কেনো স্যার চুক্তিটা মাঝখানে নিয়ে এলো। কেনো এই চুক্তি দিয়ে আমার মনে তামিমের দেওয়া আঘাত গুলো ফিরিয়ে দিলো কেনো কেনো কেনো??
মেঘের কান্না যেনো থামছেই না।। রাতে আকাশ বাসায়
এসে ব্যাগ গুছিয়ে নিতে শুরু করলো।মেঘ খাবার
খেতে ডাকতে এসে দেখে আকাশ ব্যাগ গুছাচ্ছে।ব্যাগ গুছাতে দেখে মেঘ বলে উঠলো…….
_______
চুপিচুপি গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট না করে কেটে পড়বেন না।কষ্ট করে গল্প লিখি আপনাদের জন্য আর আপনারা
সামান্য একটা লাইক কমেন্ট করতে পারবেন না আমার জন্য। আপনাদের লাইক কমেন্ট দেখলে গল্প প্রতিদিন পোস্ট করবো। আপনাদের লাইক কমেন্ট কিংবা আগ্রহ পাই না যার জন্য ইচ্ছে থাকলেও গল্প পোস্ট করি না।
এই পর্বে লাইক কমেন্ট রিসপেন্স ভালো ফেলে আগামী কালকে নেক্সট পর্ব পাবেন।
গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত🙏🙏_____ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। ধন্যবাদ সবাইকে………
মেঘঃ-আমি হেল্প করবো..??
আকাশঃ-না আমি নিজেই করে নিবো..??
মেঘঃ-আচ্ছা ঠিক আছে। মা অপেক্ষা করছে খাবার টেবিলে…??
আকাশঃ-তুমি যাও আমি আসছি..??
মেঘ চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো ঠিক তখনই আকাশ ডাকলো….
আকাশঃ-মেঘ শোনো..
মেঘঃ-জ্বি বলেন..??
আকাশঃ-কোথায় যাচ্ছি ব্যাগ কেনো গুছাচ্ছি
জিজ্ঞেস করবে না…??
মেঘঃ-কারো পার্সোনাল ব্যাপারে কোনো কিছু জানার তেমন ইচ্ছে বা আগ্রহ আমার নেই…??
আকাশঃ-কিন্তু তুমি তো আমার…??
মেঘঃ-হুমম আমি তো আপনার চুক্তির বউ। তাই আমার মনে হয় না কোনো কিছু জানার অধিকার আমি রাখি। ১ বছর তো চলেই যাচ্ছে হাতে গনা আর মাত্র ৩ মাস ১৫ দিন। তারপর আপনার এই এগ্রিমেন্ট থেকে আমি মুক্ত…???
মেঘ কথাটা বলে চলে গেলো..? আকাশের মনেই ছিলো না আর মাত্র ৩ মাস ১৫ দিন তার হাতে। তার মাঝে ৩ মাস আকাশ আমেরিকাতে থাকবে। ইচ্ছে করছে ডিল টা কেন্সল করে দিতে। কিন্তু সেই চান্স এখন আর নেই।
আগেই সবকিছু ফাইনাল হয়ে গেছে। আকাশ বসে বসে এসব ভাবছে। হটাৎ করে রিধির কল আসলো। আকাশ কলটা রিসিভ করে বললো…….
আকাশঃ-হ্যা রিধি বলো…??
রিধিঃ-স্যার আপনি ঠিক আছেন তো..??
আকাশঃ-হ্যা আমি ঠিক আছি। কি জন্য কল
দিছো সেটা বলো…??
রিধিঃ-স্যার আমরা কালকে সকালেই এয়ারপোর্ট যাচ্ছি আপনি আমাকে কষ্ট করে পিক করতে পারবেন..??
আকাশঃ-তুমি নিজে এয়ারপোর্ট চলে এসো। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো..??
রিধিঃ-একই জায়গায় যখন যাচ্ছি তখন এক সাথে গেলেই বা কি দোষ…???
আকাশঃ-ওকে ফাইনাল এক সাথে যাবো…??
এই কথা বলে কলটা কেটে দিলো। আর আকাশ রাগে
গজ গজ করতে লাগলো। কি জন্য যে ওকে জব দিতে
গেলো এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
এই মেয়ে সারাক্ষণ মাথার কাছে ছাড়পোকার মত ঘুড়ে বেড়ায়। খেয়ে দেয়ে আর কোনো কাজ নেই নাকি।
হাত থেকে মোবাইল বিছানায় ছুড়ে মেরে নিচে চলে যায় খাবার খেতে। খাবার টেবিলে বসেই তার মামনিকে বললো………
আকাশঃ-মামনি কালকে সকালের ফ্লাইটে আমেরিকা যেতে হচ্ছে ৩ মাসের জন্য।। একটা ডিল ফাইনাল করতে যাচ্ছি তুমি একটু সাবধানে থেকো…??
মামনিঃ-তিন মাস অনেকটা লম্বা সময় হয়ে গেলো না??
আকাশঃ-কিছু করার নেই মামনি সাইন করে ফেলেছি যেতেই হবে..??
মামনিঃ-এক কাজ কর বউ মাকে নিয়ে সাথে যা, বিয়ের পর তো ওকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয় নি। সারাদিন বাসায় একা একা থাকে.???
মেঘঃ-না মা আমি এখানেই ভালো আছি। আমার জন্য কারো কোনো ক্ষতি হোক এটা আমি চাই না।
আর আমি চলে গেলে আপনার দেখা শোনা করবে
কে শুনি…???
মামনিঃ-সে কি রে মা তাই বলে তুই যাবি না..???
মেঘঃ-না মা আমি যাবো না..??
আকাশঃ-কারো যাওয়া লাগবে না রিধি আছে আমার সাথে,, আমি সব সামলে নিবো…??
খুব জোরে কথাটা বলে আকাশ খাবার না খেয়ে টেবিল থেকে উঠে চলে গেলো। আকাশের মা পিছন থেকে ডাকলেও তার ডাকে কোনো সাড়া দিলো না। মেঘ খুব
সকালে ঘুম থেকে উঠলো। তারপর নাস্তা বানাতে চলে গেলো কারন আজ আকাশ চলে যাবে তাই।
সকাল ৮ টার দিকে আকাশ তার মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হবে তখনই পিছনে পিরে একবার তাকায়। মেঘ বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে।
আকাশ মেঘ কে ডাক দিবে ভেবে থেমে যায়। তারপর কিছু না বলেই বের হয়ে যায়।
আকাশ ভাবছে….হয়তো মেঘের মনে আমার জন্য বিন্দু মাত্র অনুভুতির জন্ম হয়নি। তাই মেঘ দূরে দূরে থাকছে।
অন্যদিকে মেঘ ওখানেই দাঁড়িয়ে আছে। আকাশ যখন গাড়িতে উঠেছিলো তখন আবার উপরে তাকায়।
আকাশ কে নিচে দেখে ঘোর কাটে আর বলতে থাকে।।
একি উনি তো চলে যাচ্ছেন আমাকে একবারের জন্যও ডাকলেন না কেনো।
এরপর আকাশ গাড়িতে উঠে পড়লো। আর গাড়িটা আপন মনে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে চলতে থাকে।
এদিকে মেঘের মন ঘরে ঠেকছে না।। বারবার মাথায় তানহার কথা গুলো বাজছে। তানহার কথার মাঝে কেমন যেনো রহস্যের ছাপ ছিলো। মেঘ সেটা বুঝতে পারছে ঠিকই কিন্তু কি লুকাচ্ছে তানহা সেটাই বুঝতে পারছে না মেঘ।
আকাশ আমেরিকা পৌঁছে তার মাকে জানিয়ে দিলো।। মেঘ আকাশের এমন আচরণে একটু কষ্ট পেলেও পরক্ষনেই মনে পরে মেঘ তো আকাশের #চুক্তির_বউ
তাহলে কেনোই বা আমার কাছে কল করবে আমি তো উনার কিছুই না।
এসব ভাবতে ভাবতে মেঘের মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
মেঘ আকাশকে নিয়ে ভাবতে গেলেই মনে পড়ে আর তো মাত্র কয়েক মাস তারপরই তো সব শেষ। কি দরকার এসব। কেনোই বা মায়ার বাধনে জড়াবে। কিছুদিন পর তো আলাদা হয়ে যাবে তাহলে আর এত ভাববে কেনো।
এইদিকে আকাশ চলে যাওয়ার সপ্তাহ খানেক পর মেঘ আর ওর শ্বাশুড়ি বসে বেশ ভালোই আড্ডা দিচ্ছেন।
হটাৎ করে কলিং বেলের আওয়াজ পেলো। আওয়াজ পেয়ে মেঘ দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। আর ভাবতে
থাকে..এই সময়ে কে আসতে পারে কারো তো আসার কথা না তাহলে কে এলো এই সন্ধা বেলায়।
মেঘ দরজাটা খুলে সামনের দিকে তাকিয়ে তানহা কে দেখে একটা মুচকি হাসি দিলো তারপর ওকে ভিতরে নিয়ে বসালো। আর বলতে লাগলো……
মেঘঃ-আজ হটাৎ কি মনে করে..??
তানহাঃ-কেনো আমি কি আসতে পারিনা..??
মেঘঃ-এই কথা এত পেছাচ্ছিস কেনো..??
তানহাঃ-দেখেন না আন্টি আপনার বউমা কত শয়তান
বিয়ের পর তো নিজের বেস্টফ্রেন্ডকে ভুলেই গেছে একবার খোঁজ খবর নিয়েও দেখেনি বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি। আর এখন আমি দেখতে আসছি তাও বললো আজ হটাৎ কি মনে করে.??
মামনিঃ-হ্যা তাইতো। বউমা তুমি ওর খোঁজ খবর নাওনি এটা কি সত্যি…??
মেঘঃ-ওর কথা বিশ্বাস করবেন না তো মা। গত সপ্তাহে আমরা দেখা করলাম আর শাঁকচুন্নি টা সেটা চেপে যাচ্ছে??
তানহাঃ-বেশি বকবক করিস না আমার জন্য চা নিয়ে আয়। চা খেতে খেতে এই সন্ধা বেলায় একটা আড্ডা হয়ে যাবে…???
মামনিঃ-হ্যা বউমা তুমি গিয়ে চা নিয়ে আসো। আমি ওর সাথে বসে গল্প করি..??
মেঘ চলে যাওয়ার পর মেঘের শ্বাশুড়ি আর তানহা বসে বসে গল্প করতে লাগলো…….
তানহাঃ-আপনার শরীর এখন কেমন আছে আন্টি..??
মামনিঃ-এই তো আছিরে মা তোর কি খবর…??
তানহাঃ-ভালো আছি আন্টি। স্যার কেমন আছে..??
মামনিঃ-কাজ নিয়ে অনেক ব্যাস্ত কল করার সময় পায় না মাঝে মাঝে কল করে খবর নেয়…??
তানহাঃ-আন্টি মেঘ কি এখনো কিছু জানতে পারেনি..??
মামনিঃ-মেঘ এখনো ওর সাথে স্বাভাবিক হতে পারেনি।
তানহা ওরা দুজন যে আলাদা থাকে সেটা আমি জানি।
আমি মেঘকে বলেছি আকাশের কাছ থেকে সব জেনে নিতে। কিন্তু মেয়েটা কেনো জানি এক পা সামনে গিয়ে
দুই পা পিছিয়ে পড়ে..??
তানহাঃ-আপনি নিজেই তো বলে দিতে পারতেন…??
মামনিঃ-আমি চাই মেঘ নিজে থেকে বুঝে নিক। আকাশ ওর স্বামী, আকাশের ব্যাপারে কথা বলার অধিকার
ওর আছে। কিন্তু কেনো জানি মেয়েটা স্বাভাবিক হতে পারছে না। সেটাই মাথায় ঢুকছে না.??
তানহাঃ-সেদিন আমি ওকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ইচ্ছে করলে মেঘ স্যারকে
আমেরিকা যাওয়া থেকে আটকাতে পারতো..??
মেঘঃ-আমাকে রেখে কি কথা হচ্ছে শুনি…??
তানহাঃ-আর কথা হলো কই। চাইলাম একটু আন্টির সাথে সুখ দুঃখের কথা ভাগাভাগি করতাম তার
মাঝে তুই এসেই জল ঢেলে দিলি..??
মেঘঃ-গরম চা ঢেলে দিবো বলে দিলাম কিন্তু..? তুই মায়ের সাথে কথা বলবি আমি জল ঢালবো কেনো।
আমি তোকে মানা করছি তুই মায়ের সাথে আড্ডা
দিস না। এক নাম্বার শয়তান মেয়ে…??
মামনিঃ-থামবি তোরা কোথায় বান্ধবীকে নিয়ে গল্প করবি তা নয় ঝগড়া করে যাচ্ছিস…???
মেঘ একটু হেসে তানহার পাশে বসে ৩জন মিলে আড্ডা
দিয়ে অনেকটা সময় কাটায়। তারপর রাতের খাবার খেয়ে তানহা চলে যায়। মেঘ অনেক জোর করলো তানহাকে রাখার জন্য কিন্তু তানহা কাজের অজুহাত দেখিয়ে চলে গেলো।
দেখতে দেখতে দীর্ঘ ২ মাস কেটে গেছে। ২ মাস পর…..
আজ আকাশ দেশে ফিরছে.। মনের ভিতর অজানা প্রশ্ন মেঘ আকাশ কে দেখে কি ভাবে রিয়েক্ট করবে।
আকাশ আমেরিকা ৩ মাসের জন্য গেলেও মেঘকে এতটা মিচ করেছিলো যে ৩ মাসের কাজ ১৫ দিন আগে কমপ্লিট করে দেশে ফিরছে। মেঘকে চমকে দিবে বলে বাসায় কাউকে জানায়নি।
এদিকে আকাশ ভাবতেছে মেঘকে সারপ্রাইজ দিবে।। অন্যদিকে আকাশ নিজেও জানেনা তার জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
আকাশ বাসায় আসার জন্য এয়ারপোর্ট থেকে সোজা বাসায় আসার জন্য গাড়ি রিজার্ভ করে। আকাশ
ইচ্ছে করলেই বাসা থেকে ড্রাইবারকে দিয়ে গাড়িটা আনিয়ে নিতে পারতো। কিন্তু এতে সারপ্রাইজ দেওয়া হবে না।।
আকাশ বাসায় এসে কলিং বেল চাপ দেয়। মেঘ তখন রান্না ঘরে রান্না করছিলো।
মেঘ বিড়বিড় করে দরজাটা খুলেই অবাক হয়ে গেলো।
আকাশ আসবে তাও এইভাবে ভাবনার বাহিরে ছিলো।
অনেকক্ষণ ধরে মেঘ আকাশের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আকাশের ডাকে ঘোর কাটে মেঘের।
আকাশঃ কি ব্যাপার ভিতরে যেতে দিবে নাকি এখানে দাঁড় করিয়ে রাখবে। এমনিতেই জার্নি করে ক্লান্ত হয়ে গেছি..??
মেঘের চোখের সামনে আঙুল দিয়ে তুরি বাজায় আকাশ। এরপর মেঘ বলে……
মেঘঃ-আপনি আজ…??
আকাশঃ-কেনো খুশি হওনি। তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করেছিলো তাই চলে এলাম..??
মেঘঃ-কি বললেন..??
আকাশঃ-বললাম যে কাল রাতেই ডিলটা ফাইনাল হয়ে গেছে তাই চলে আসালাম। ওখানে যেই কাজের জন্য যাওয়া সেটা শেষ করে বসে থেকে কি করবো বলো??
পর্ব০৬ এর লিংক 👇👇
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=135896481623399&id=111134014099646
মেঘ অবাক হয়ে আকাশের ব্যাবহার দেখছে। এর আগে
আকাশ মেঘের সাথে যত বার কথা বলেছে সব সময় রাগী রাগী ভাব থাকতো।। আজ কি এমন হলো যে এত ভালো বিহ্যেভ করছে। মেঘ এসব ভাবতেছে আকাশ বলে উঠলো……..
আকাশঃ-কি হলো ভাবনাতে থাকবে নাকি দরজা
থেকে সড়ে দাঁড়াবে..?
মেঘঃ-ওহহ হ্যা আসুন…??
এরপর আকাশ ঘরের ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো…..
আকাশঃ মামনি কোথায়…??
মেঘঃ-উনার রুমে..??
আকাশঃ-আচ্ছা…??
আকাশ তার মায়ের রুমের সামনে গিয়ে দরজায় ঠোকা দেয় আর বলতে থাকে…….
আকাশঃ-মামনি দরজা খুলো আমি আকাশ…??
একটু পর দরজা খোলার আওয়াজ। আকাশ ভিতরে যাবে তখনই চোখ যায় তার মায়ের দিকে। তারপর চোখ থেকে অবিরাম জল গড়িয়ে পড়ছে আকাশের।
নিজের চোখে বিশ্বাস করতেই পারছে না যে এটা তার মা। এক ছুটে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আকাশের এমন কান্না দেখে তার মা বলে উঠলো……
চলবে কি….??