ছুয়ে দিলে মন পর্ব ১৮+১৯

#ছুঁয়ে দিলে মন ❤️
#লেখিকা:- তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:-১৮(বোনাস পর্ব)

নুপুর চোখের জল ফেলছে। আর পুরনো কথা মনে পড়ছে 3 মাস আগে। হঠাৎ মেঘ স্যার অফিসে এসে আমাকে কেবিনে ডাকে।আমি যেতে তিনি বলেন আজকে নাকি দুপুরে আমাকে নিয়ে কোথাও যাবে আমি ভাবছিলাম হয়তো কোনো মিটিং এটেন্ড করতে। রাজি হয়েছে আমরা ঠিক দুপুরে রেস্টুরেন্টে খেয়ে বেরিয়ে পড়ি।একটা বিষয় বাক্সসহ সরঞ্জাম আইসিটির ব্যবহার করলেও আজকে একটু রুড ব্যবহারও করেনি।

সারাটা সময় একটা অদ্ভুত নজরে আমারে দেখেছে আর মুখে হাসি যেটা আমি খুব কমই দেখেছি স্যারের মুখে।আরোহী আজকে ড্রেসটাও একটু বেশি সুন্দর হবে পড়েছে একটু বড় চুল ঠিক করা। এমনিতেই অনেক সুন্দর দেখতে তার ওপর আবার কাল 60 পয়সায় শরীরে কালো কালো ব্লেজারের আরো বেশি সুন্দর লেগেছে তাকে দেখতে। আমার নজর তার উপর ছিল না তবুও নিজেকে সামলে উনাকে দেখেছি। সনি একটা নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে আসে আমাকে জায়গাটা অনেক সুন্দর। আমি ভেবেছিলাম কোন রেস্টুরেন্টে যাবে।
কারন আমার যতগুলো মিটিং করেছি বিদেশীদের সাথে কারো সাথে ওইটা রেস্টুরেন্টে করা হয়েছে।কিন্তু আজকে এমন নির্বিচারে কেন এল গ্লুকোজ কোনার দিকে তাকিয়ে আছি একটা হাসি দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আমার পাশে এসে দরজা খুলে দিল।

ওনার হাসি দেখে তো আমি হতভম্ব হয়ে বসে আছি। নারা শক্তি পাচ্ছি না। উনি হাসল তাও আবার আমার তাকানো দেখে এটা সম্ভব আর অবাক করে দিয়ে উনি আমার হাত ধরে নামল আমি তো জমে বরফ হয়ে গেছি মনে হয় উনার স্পর্শে।

সামলে নিলাম নিজেকে

—-তারপর ওনাকে দিকে তাকিয়ে বললাম স্যার আমরা এখানে কেন?

—আসো একটু পরে বুঝতে পারবা।

বলে ছাড় আবার হাত ধরে সামনে নিয়ে গেল।

হঠাৎই স্যার আমার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পরলো।আমি অবাক এর চরম সীমায় পৌঁছে গেছি মনে হয় আমি চোখে যদি বড় বড় চোখের দিকে তাকিয়ে আছি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। স্যার আমার দিকে মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে। এবার আর আমার বুঝতে কিছুই বাকি রইল না।

স্যার একটা আন্টি আমার দিকে ধরে বলল,

—আই লাভ ইউ নুপুর উইল ইউ ম্যারি মি।

তারপর সারা গায়ে কি আমাকে কতদিন ধরে ভালোবাসে সবকিছু বোঝালো সবকিছু শুনে তো আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। মুখ দিয়ে আমার কোন কথা বের হচ্ছে না।নিজেকে নিয়ে চিমটি কাটছে এটা স্বপ্নরা তো না ঠিক আছে কিন্তু স্যার আমাকে ভালোবাসে এটা আমি কিছুতেই মানতে পারছি না।

আমি কিছু বলবো তাহলে গেছে আর আমার হাত টেনে নিয়ে আংটি পড়িয়ে দিলো তারপর হাতে ওর পিঠে চুমু খেলো।

এদিকে মেয়ের নুপুরের নীরবতা দেখে ভেবেছে ও মনে হয় রাজি কারো নীরবতা সম্মতির লক্ষণ। আর মেয়ের এতদিন নুপুরকে দেখে এটুকু বুঝতে পারে সবার মনে আমার জন্য কিছু একটা ফিলিংস আছে এজন্য ও ওর মুখে বলার আগেই কাজটা সেরে ফেলেন।

আর এদিকে নুপুর মেঘের এই কাজে
প্রচন্ড রকমের রেগে যায়। কেন এত রাগ হল নিজেও জানেনা ও আচমকা মেঘের গালে ঠাস করে চড় মেরে বসে। এই ছোট্ট টা ওর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শেদিন চরটা খেয়ে মেঘ ওর দিকে ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিল। তারপর কিছু না বলেই গাড়িতে বসে। নুপুরকে রেখেই চলে যায়।

তারপর আর আমি ছাড়া আমার সাথে কথা বলেনা। এক সপ্তাহের মত আমি তাকে সরি বলা জানার চেষ্টা করি কিন্তু বলতে পারিনা।

হঠাৎ শুক্রবারে ওকে একজাম থেকে দেখতে আসে একটা মহিলা।শেষে একবারে বিয়ে পাকা করে রেখে যায় আমি বিয়েতে রাজি থাকে না কিন্তু মেয়ে রাজি হই তারপরে ঘরোয়াভাবেই হাল্ক অনুষ্ঠান হয় এক সপ্তাহ পর আমার বিয়ে হয়। এজন্য আমার একটা অনুভূতি হয় ভালবাসে কিনা জানিনা কিন্তু বিয়ের সময় আমি বুঝতে পারি যে সত্যিকারে ভালোবাসি মেঘকে।

কিন্তু তখন আর কিছু করার থাকে না কেন আমার বিয়ে বাসর রাতে আমি চমকে উঠে মেঘকে দেখে সাথে খুশি হই কিন্তু মেঘ একটু খুশি হয় না প্রচন্ড রাগ জেদ নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিজের মত শুয়ে পড়ে। আমি অনেকবার সরি বলে কিন্তু সে আমার সাথে কোন কথা বলে না যখন আমি ওর কাজ করি তখনও আমাকে ধাক্কা দিয়ে খাট থেকে ফেলে দেয়

আর বলে আবি যদি ওকে টাচ করি তাহলে ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করবে আর আমার সাথে যেন কথা না বলি আমি ওর সাথে। এই দুই মাস ধরে আমি মেঘের কাছে অনেক ক্ষমা চাইছি কিন্তু কিছুতেই আমি ক্ষমা করে নাই। একটা সুযোগ দেয় নাই আমরা স্বামী-স্ত্রী কিন্তু এখনো সেই আগের মতই আছে ও আমাকে সহ্যই করতে পারেনা।এক বিছানায় আমরা দুজন দুপাশে মুখ করে বসে থাকি আর কথা তো বলে না সবার সামনে একটা দুইটা বলে ঘরের আড়ালে একটা কথা বলে না।




পরদিন
নুপুর রান্নাঘরে রান্না করছে। এমন সময় শাশুড়ি মা এলো। আর যা বলল তাতে তো আমি আকাশের চাঁদ পেয়ে গেছি।

—কিগো বৌমা আমার কথা শুনতে পাইছো।

—-হ্যাঁ আম্মু। থ্যাংক ইউ কথাটা জানানোর জন্য।

বলে সরাসরি মাকে জড়িয়ে ধরে নুপুর।

–ছাড়ো ছাড়ো ছেলেটা লিগা কেক বানানো লাগবো।

—আপনার বানাইতে হইবো না আম্মু আমি আছি তো আমি বানাইয়া দেয়।

—আচ্ছা বানাও আগেরবার তো মিষ্টি বানাইছিল এবার তোর পরীক্ষা অথবা নিতে পারবোনা কিন্তু বিকেলে এসে বলছে প্ল্যান করব।

—আচ্ছা মা আমি দুপুরে বানানো শুরু করে দেব।

মিষ্টির আম্মু চলে গেল আর নুপুর বল আজকে তোমার রাগ আমি ভাঙ্গি ছাড়বো আজকে তুমি নুপুর কে কিছুতেই নিজে থেকে সরাতে পারবেনা।

মিষ্টি বিকেলে এসেই রান্না করে ছুটি ও কেক বানাবে। কালকে এক্সাম নাই পড়াশোনায় দুই অফ। দুইদিন পর গণিত পরীক্ষা আজকে একটু না পড়লেও হবে। রান্নাঘরে এসে জানতে পারে ভাবি বানাবে জন্য ভাবিকে সাহায্য করে।তারপর প্ল্যানমাফিক বাড়ি সাজাতে লাগে এইসব অবশ্য মেয়ে পছন্দ করে না জন্মদিনের পার্টি পার্টি পার্টি করা হয় না কিন্তু মিষ্টি জন্মদিন পার্টি করা হয় কারণ ও খুব পছন্দ করে।কিন্তু ওরা নিজেরাই নিজের ভাইকে সারপ্রাইজ দেয় প্রতিবার এবারও দেবে।

আজকে মেঘ মিষ্টিকে পরীক্ষা দিতে রেখেসে আর আনতে যাই আনতে গিয়েছিলো আব্বু।

রাত দশটায় মে বাসায়া সে এসেই নিজের মেয়েকে দেখে নুপুর রুমে না এত রাত তবু মেয়েটা কোথায় গেল হয়ত মিষ্টির কাছে উপর সে হয়তো বসে আছে এজন্য আর নুপুরে খোঁজ না নিয়ে নিজের ফ্রেশ হয়ে নেয়।বাইরে থেকে ভালো খাবার খেয়ে এসেছে এখন আর খাবে না এজন্য বারান্দায় গিয়ে বসে পড়ে। প্রায় আধা ঘন্টার উপরে বসে থেকে রুমে রেখে আসে নাই।

ব্যাপার কি এতো রাত পর্যন্ত রুমের বাইরে দেখে না কিন্তু ও নিজে থেকে ডাকতে যাবেনা তাহলে ভাববে আমাকে নিয়ে ভাবছে এটাও দেখাতে যায় না এর জন্য নিজে খাটে শুয়ে পড়ে আসলে ঘুম আসবে না জেগে শুয়ে থাকবে দেহে কখন আসে।

এগারোটা সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে এখনো আসছে না কেন এবার মেঘ উঠে বসে থেকে বের হতে যাবে রাখতে হঠাৎ মিষ্টির চিৎকার কানে ভাসে।

হ্যাঁ মিষ্টি চিৎকার করে ভাইয়া বলে ডাকছে। মেঘ তো ভয় পেয়ে যায়।মিষ্টি ছলনা তো নুপুর আসছে না অসুস্থ দৌড়ে মিষ্টির আমি যায় কিন্তু রুমে কেউ নাই।
ড্রয়িং রুম এত অন্ধকার কেন ও তো তারাতারি ড্রইং রুমে হাত দিয়ে আবার ডাক্তার সে বুঝতে পারে এটা ড্রইং রুম থেকে আসতেছে। নিচে এসে মিষ্টি নুপুর সভবার নাম ধর ডাকতে থাকে।
হঠাৎ আলো জ্বলে ওঠে আরও সামনে তাকিয়ে দেখে ওর সামনে একটা কেক আর তার চারপাশে দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টি এক পাশের উপর বাবা-মা সবাই। সবাই চিৎকার করে হ্যাপি বার্থডে টু ইউ বলে যাচ্ছে। সামনে ওর পছন্দের চকলেট কেক।

সবাই চিৎকার করে হ্যাপি বার্থডে বলে যাচ্ছে এর মাঝে মিষ্টি চাকু নিয়ে মেঘের হাতে দেয় কেক কাটার জন্য।

রাগ হলেও সবাই এত কষ্ট করে এত কিছু করেছে জন্য কেক কাটে তারপর কেককেটে মিষ্টি মেয়ের আব্বু সবাই কে কে খাইয়ে দেয় মিষ্টি মেয়েকে কেক খাওয়াতে গেলে মেঘরা খায় না।

—এটা কি হলো ভাইয়া তুই সবাইকে কি খাওয়ালে আর ভাবি কি খাওয়ালি না।

মেঘ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। নুপুর মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।

—কিরে এমন হ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছিস কেন ভাইকে খাওয়াতে জানিয়েছে কেকটা কিন্তু ভাবি তোর জন্য বানিয়েছে কত কষ্ট করে।

মিষ্টির জড়াজড়ি সাথে পেরে না ওঠা নুপুর কেউ একটা কেক খাইয়ে দেয় সে খুশি। যেভাবেই হোক মেঘের হাত থেকে কেকে তো পেয়েছে।

মিষ্টি তারপর মেঘকেএকটু কেক খাইয়ে দেয় খেতে চানাচুর ঘরে নুপুরের খাওয়ানোর সাহস করে না কিন্তু এক টুকরা কেক। একটা পিরিজে করে রেখে দেয়।

বারোটায় রুমে আসে মেঘ।
ফ্রেশ হয়ে এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খেতে যাবে আমার সময় নুপুর এসে পাশে দাঁড়ায়।

ও না তাকে বলে এখানে কি?

কেকের বাটিটা মেঘের ধরে বলে।

আমার কাছে থেকে তো খাননি আপনি তো আমাকে খাইয়ে দিয়েছেন এবার আমি আপনাকে খাইয়ে দেব বলেই মেঘের মুখে ঢুকিয়ে দেয়। মেঘ অবাক হয়ে নুপুরের দিকে তাকায় ও ভাবি নি এইটা নুপুর করবে।

—কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন চিবান।

ভর্তিকে কেক না খেলে কথা বলতে পারবে না এজন্য খেয়ে নিল কিছু বলতে যাবে।

—দেখুন আমি আপনার স্ত্রী আগে কি হয়েছে না হয়েছে সেটা নিয়ে আপনি আমার সাথে এরকম ব্যবহার করতে পারেন না আমি আমার অধিকার চায় এটাই আমার শেষ কথা আর যদি আপনি এরকম করেন তাহলে আমি এ বাসা থেকে চলে যাব।

মেঘ চলে যাবো কথাটা শুনতে ওর বুকে ধক করে ওঠে সত্যি কিন্তু আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ও কি বেশি খারাপ ব্যবহার করে ফেলেছে সাথে। আর কেমন যেন একটা ভয় হতে লাগে যত কষ্ট ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারবে না।

আচমকা মেঘনা অপরকে জড়িয়ে ধরে বলে প্লিজ ছেড়ে যেও না তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না তোমাকে অনেক ভালোবাসি খুব ভালোবাসি তোমায় এই জন্যই তো তোমাকে এইভাবে লুকিয়ে জোর করে বিয়ে করেছি।

নুপুর হাওয়ায় ভাসছে মনে হয় এই কথাগুলো তো শুনতে চেয়েছিল এই জন্যেই কথাটা বলেছে।

—আমি আপনাকে ভালোবাসি কিন্তু ঐদিন আমার কি হয়েছিল জানিনা কেন এরকম ব্যবহার করেছিলাম।আমাকে ক্ষমা করে দেন প্লিজ আমার খুব কষ্ট হয় আপনাকে কাছে না পাওয়ার কষ্টে আমাকে ভেতরে ভেতরে কুরে কুরে খায়
নুপুর আর মেঘ রাগ অভিমান ভেঙে দুজনে দুজনের ভালোবাসা বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
#ছুঁয়ে দিলে মন ❤️
#লেখিকা:- তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤️
#পর্ব:-১৯

গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মিষ্টি।তখন আমি একজন ঢুকে ওর কানের কাছে গিয়ে একটা চিৎকার দেয় আর সাথে সাথে মিষ্টির ঘুম ছুটে যায় ঐ চোখ মেলে সামনের দিকে তাকিয়ে চিতকার দিয়ে উঠে বসে।

তুই,,
অবাক হয়ে কথাটা বলল মিষ্টি আসলে ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিতলি।

তিতলি একটা হাসি দিয়ে বলে
—- সারপ্রাইজ…!!

—সত্যি আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুই কিন্তু এই সময় কিভাবে আসলি। মামা আসছে কি
—হ্যা আব্বু আসছে! একটু পরেই চলে যাবে।

—কেন চলে যাবে কেন?
তুই ও কি চলে যাবি?

—না আমি এবার অনেক দিনের জন্য এসেছি।

—-সত্যি মামা তাকে রেখে যাবে।

—ইয়েস পরীক্ষা শেষ হতে সবাইকে কান্নাকাটি করে রাজি করিয়েছি।

মিষ্টি তিতলি কে জরিয়ে ধরে বলে ওঠে ভেরি গুড।

তিতলিকে রেখে ফ্রেশ হতে যায়। তারপর নিচে মামার সাথে দেখা করে। মামা সোফায় বসে আম্মুর সাথে আব্বুর সাথে কথা বলছে।

আজকে শুক্রবার জানাবো বাসায়। আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছে আজকে 1 সপ্তাহ।এক সপ্তাহ আমি কোথাও বের হইনি শুধু রেস্ট পড়েছি বাসার ফ্রেন্ডের সাথে ফোনে কথা হয়েছে তিতলির সাথে ও হয়েছে কিন্তু আমাকে বলেনি আসবে। সারপ্রাইজ দেবে বলে নাকি মনে নাই। মামাকে গিয়ে সালাম করে একটু কথা বললাম তারপর মামার থেকে জানতে পারলাম তিতলি 15 দিন থাকবে আমাদের এখানে আমি তো সেই খুশি লাফাতে লাফাতে তিতলিকে নিয়ে উপরে চলে এলাম।

রুমে এসে আমাদের গল্পের ঝুড়ি শুরু হয়ে গেল। পরীক্ষা নিয়ে প্রথম কথা হল কার পরীক্ষা কেমন হয়েছে কিভাবে পরীক্ষা দিছি। যত চিন্তা টেনশন রেজাল্ট নিয়ে সবকিছু বলতে বলতেই আজান দিয়ে দিল। মামা নিশ্চয় এতক্ষণে চলে গিয়েছে। তখন কথা বলার সময় শুনেছি এখন বের হয়ে যাবে।

সন্ধ্যার পরে ভাব এসে যোগ দিল আমাদের সাথে।

কিছুক্ষণ গল্প পড়ার পর ভাবী চলে গেল তার কিছুক্ষণ পরে ডিনার খেতে নিচে নামলাম। ডিনার করে তিতলি হঠাৎ আগেই চলে এলো। কিন্তু আমার চোখেতে সময় লাগে যেন আমি অনেকক্ষণ পর আসলাম। রুমে এসে দেখি ও ফোন নিয়ে কি যেন করছে?

ও আরেকটা কথা তিতলি নাকি কান্নাকাটি করে পরীক্ষার পর একটা ফোন কিনেছে অ্যান্ড্রয়েডফোনটা সুন্দর ফোন।
কাকে যেন ফোন দিচ্ছে বোঝা যাচ্ছে একটু পরে বারান্দায় চলে গেল আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কার্যকলাপ দেখছি। কে আবার কার সাথে কথা বলে ও কি প্রেম করে নাকি হ্যাঁ আমার মনে সন্দেহের একটু পরে কথা বলে রুমে এলো মুখে হাসি।

—-কিরে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন আমার দিকে?

—তুই কার সাথে কথা বললি?

—আছে একজন

বলে লাজুক হাসি দিল।

—তুই প্রেম করছিস।

একেবারে সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম সাথে সাথেই ও মাথা নেড়ে স্বীকার করল আমাকে আর পায় কে লাফিয়ে ওর হাত ধরে খাটে বসিয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম ছেলেটাকে দেখতে কেমন? নাম কি?

তারপরও যা বললাম যে স্তব্ধ হয়ে গেলাম। কারণ ছেলেটা আর কেউ না নেহা আপুর ফ্রেন্ড তন্ময়।
আমি তো বড় বড় চোখ কার দিকে তাকিয়ে আছি।

—-কিরে আমার স্তব্ধ হয়ে গেলি কেন?

—দোস্ত সত্যি তুই ওই ছেলেটার সাথে প্রেম করছিস।তুই তো বিয়ে বাড়িতে ওইটার উপর ক্রাশ খেয়েছিলে আমাকে বলছিলি।

—হ্যাঁরে ক্রাশ খেয়েছি তারপর ভালোবাসছি এখন অনেক ভালোবাসি।

—কিভাবে কি হল?

প্রথম থেকে সবকিছু খুলে বল নাম্বার চাওয়া নাম্বার দেয়নি কিভাবে নাম্বার জোগাড় করেছে তার পরে ফোন দেওয়ার পরে প্রথমের দিকে তন্ময় আমার সাথে রুড ব্যবহার করত আস্তে আস্তে সেই খারাপ ব্যবহারটা ভালো হয়ে যায়। তারপর ফ্রেন্ডশিপ করে। ফোনে কথা হত এতোদিন দেখা হয়নি সেই যে বিয়েতে দেখা হয়েছে।ও বিদেশ চলে গিয়েছিল তারপর আবার এখন দেশেই সেটেল হয়ে গেছে বাংলাদেশি থাকবে এখন থেকে। এখনো ওইই আমাকে ভালবাসি কথা বলে নাই কিন্তু আমি বলেছি আগে। তাদের এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য সাথে দেখা করা কাল ওর সাথে আমি মিট করব তাকে নিয়ে যাব। আমার বিশ্বাস ও আমাকে কাল প্রপোজ করবে।

মিষ্টি তো ওর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে কি প্রেম রে ভাই এতো কিছু হয়ে গেছে আরও কিছু জানতেই পারলো না।

—-আমাকে যে নিয়ে যাবি আর তুই যে যাবি কিন্তু কিভাবে?

—সেসব নিয়ে তোর ভাবতে হবে না সবাইকে আমি ম্যানেজ করব।

——-আচ্ছা তুমি ম্যানেজ করতে পারলে আমার যেতে সমস্যা নাই।

পরদিন বিকেলে দেখা করার কথা। তিতলি সেই তখন থেকে মানে সকাল থেকে সবার পিছনে ঘুরছে ও মিষ্টি কে নিয়ে একা হবেড়াতে চাই কিন্তু কেউ রাজি হচ্ছে না। আমি জানতাম কেউ রাজী হবে না কারন ভাইয়া আমাকে কোথাও একা যেতে দেয় না।

কিন্তু আমার কথা মিথ্যা প্রমাণ হলো আর সবাই তিতলি-এর কথা মেনে নিল আসলে ও দুপুরের দিকে এ সে কি কান্না চিৎকার করে কেঁদেছে তিতলি। ওর কান্না দেখে সবার মনটা নরম হয়ে গেল আর রাজী হয়ে গেল।

1 ঘন্টা ভরে তিতলি সাজলো। তিতলি এমনিতেই সুন্দর তারপর খইরি কালার ড্রেস পড়েছে হয় রিলিস্টিক চোখের মোটা কাজল , চুলগুলো মাথার উপরে ফুলিয়ে পেছনের গুলো খোলা রেখেছে হাতের চুড়ি একদম পার্ফেক্ট লাগছে।

আমি তেমন সাজলামনা ও তার প্রেমিকের সাথে দেখা করতে যাবে আমি এত সেজে কি হবে।আমার একটাই দুঃখ তিতলিও প্রেম করছে আর আমি করতে পারলাম না একটা বড় দুঃখ নিয়ে রেডি হতে লাগলাম।
কালো কালার প্যান্ট তার উপর একটা কাল টপ গলায় সাদা ওড়না পেঁচিয়ে চুলগুলো ছুটি করলাম হালকা পাউডার দিলাম।
তিতলি জোর করে ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক দিয়েছো আমি সেটা মুখে হালকা করে নিলাম।




রেস্টুরেন্টে বসে আছি আমি আর তিতলি। কিছুক্ষণ আগে এখানে এসে পৌঁছেছি এসে আমি আইসক্রিম অর্ডার দিয়েছি তারপর আইসক্রিম খাচ্ছি দুজনে। আধা ঘন্টা হয়ে গেছে তাদের আসার নাম নেই।

—-এই তোর প্রেমিক রে ফোন দে তো কই এখন। আধা ঘন্টা ধরে বইসা আছি এখনো আসার নাম গন্ধ নাই। 5 মিনিটের মধ্যে যদি না আসে আমি কিন্তু চলে যাব।

রেগে কথাটা বললাম,,

—-প্লিজ বোন কইছি আজকে কি স্পেশাল দিন তুই এরকম করলে আমার কি ভালো লাগে।
আর তুইতো আইসক্রিম খাচ্ছিস তাছাড়া যার মন চাইতেছে খাঁ না।

—-টাকা কে দিবে?

—-যেই দিক তোকের দিতে হবে না।

কথার মাঝে কেউ সালাম দিয়ে উঠলো। সামনে তাকিয়ে দেখি তনময় ভাইয়া। সাথে আরেকজন সে আর কেউ না জয় ভাইয়া।

এদিকে জয় আর তন্ময় রেস্টুরেন্টে ঢুকেই মিষ্টি দেখে। জমির দিকে দেখিয়ে থমকে যায় প্রায় তিন মাস পর মিষ্টিকে দেখছে। রাগী রাগী ভাব নিচ্ছে আইসক্রিম খেচ্ছে আর পাশে বসা তিতলির দিকে তাকিয়ে কি যেন বলছে?

আমরা যেতে আমাদেরই দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিলো যে হাসি দেখে আমার বুকে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। হাসিটা আমাকে পাগল করার জন্য যথেষ্ট। আমি সাথে সাথে বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে চেপে ধরি।

—-এই যে ভাইয়ারা আপনারা এতো লেট করে আছেন কেন জানেন আমরা কতো আগে আসছি।

—তাই নাকি আমরা তো জানি না আপনারা আগে এসে পড়েছেন। আমিতো তিনটায় আসতে বলেছিলাম এইতো এখানে ঘড়ির কাঁটা তিনটা বাজে।

আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই তিনটা বাজে এবার আমি রাগী দৃষ্টিতে তিতলির দিকে তাকালাম ও তো ভয়ে ভয়ে আমার দিকে তাকিয়ে এক কানে হাত দিয়ে সরি বলে চলছে।

আসলে তিতরি আমাকে বলেছিল ওরা নাকি আড়াইটায় আসবে। বড়োসড়ো মিথ্যা বলেছে আমাকে। ওদের মাঝে কিছু বললাম না বাড়িতে গিয়ে তাকে বোঝাবো।

—তা তোমরা তো দেখি আগে খাবার খাওয়া শুরু করে দিয়েছো।

—হ্যাঁ ভাই আসলে আমরা তাকে আসছি তাই আরকি। আপনারা কেমন আছেন?

—-আলহামদুলিল্লাহ ভালো তোমরা কেমন আছো? তনময় বললো কথাটা

আমি এবার জয় ভাইয়া দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম সে কেমন আছে? সে বলে নাই।

কিন্তু সে কথা বলছে না আমি তার সামনে তরি বাজিয়ে জিজ্ঞেস করতেই সে ধড়ফড়িয়ে নড়েচড়ে বসল।

—হেহে কী বলছিলেন যেন?

—আপনি শুনতে পান নাই।

মাথা নেড়ে না জানালো আমরা সবাই হেসে উঠলাম তখন তনময় বলল তারপরে সবাই মাঝে কিছুটা কথা হল।

সবাই সবার সাথে কথা বলা হচ্ছে। তিতলি তেমন একটা কথা বলছে না কেমন যেন লজ্জা পাচ্ছে।

আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে ফিসফিসিয়ে ওর কানে বললাম কিরে লজ্জা পাচ্ছিস কেন এত?

ও কিছু বললো না উল্টা মনে হয় আরো লজ্জা পেল।

হঠাৎ জয় ভাই আমাকে বলল আমার সাথে নাকি তার কথা আছে।

আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে সে আবার আমার সাথে কি কথা বলবে।

বারবার করে বলার জন্য রাজি হয়ে গেলাম এবং তার সাথে একটু বাইরে এলাম আসলে আমি আসতে চাইনি কিন্তু উনি আমাকে জোর করে হাত ধরে এক প্রকার টেনে নিয়েছে।

—-কি ব্যাপার আমাকে এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেন ?কি এমন কথা বলবেন আর হাত ধরে আছেন কেন এখনো ছাড়ুন হাত
বলি হাত ছাড়িয়ে নিলাম।

—সরি এইভাবে টেনে নিয়ে আসার জন্য কিন্তু আপনি তো এক কথায় আসেন নাই তাই এভাবে নিয়ে আসলাম।

— কি কথা বলবেন বলেন?

—-তেমন কিছুই না!

—তেমন কিছু না তাহলে বললেন কেন কী যেন বলবেন। আপনি আমাকে মিথ্যা বলেছেন।

—-হ্যাঁ।

—আসলে একটা ধুর আপনার সাথে কথাই বলব না।

বলেই মিষ্টি ভেতরে চলে যেতে নেই। জয় আবার ওর হাত ধরে ফেলে।

—আপনি আবার আমার হাত ধরছিলান?

—-এখন যাবেন না প্লিজ একটু পরে যান।

—হোয়াট কেন?

—ওদের একটু প্রাইভেসি দেন। আমরা থাকলে ওরা কথা বলতে আনইজি ফিল করবে।

মিষ্টি বড় বড় চোখ করে যে দিকে তাকিয়ে আছে।

—-প্রাইভেসি দেবো কিন্তু কেন ওরা কি উল্টাপাল্টা কিছু করবে নাকি।

জয় কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।

—এটা উল্টাপাল্টা মানে তুমি কি বুঝাতে চাইছো?

—ওই যে চুমু খাওয়া?ওইসব কিছু করবো নাকি ওরা। সিসিসি তিতলি ওইসব করাও শুরু করে দিয়েছে।

বলেই নাক সিটকালো মিষ্টি।

এদিকে জয় তো মিষ্টি কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছে। কি মেয়েরে বাবা লাজ লজ্জা বলতে কিছু নেই কিভাবে কথাটা বলে দিলো?

—তুমি এসব কীভাবে জানলা তোমার বয়ফ্রেন্ড কি তোমাকে চুমু দিয়েছে নাকি।

—কি বলেন আপনি আমার বয়ফ্রেন্ড থাকলে তো । আর থাকলেও জীবনে দিতে দিতাম না। এইসব এর জন্যই তো আমি প্রেম করি না।

জয় সামনে দিকে হাঁটা দেয়। এই মেয়ের লাজ লজ্জা নাই।
চলবে❤️
চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here