ডেভিল লাভার পর্ব ১০

#ডেবিল_লাভার (পর্ব ১০)
#Labiba_Islam_Roja
·
·
·
দেখ নাদিম আমাকে এভাবে থ্রেড দিয়ে আমার মুখ থেকে একটা কথাও বের করতে পারবে না।কারণ আমি যা বলেছি সব সত্যি কোনো মিথ্যা নেই।তাছাড়া শুধু যে আমি বলেছি এমন নয় তোমার ঘরে তো ওই শার্টও পাওয়া গেছে।তাহলে এখানে আমার দোষ কোথায়।আর দোষ যদি কারো থেকে থাকে তাহলে সেটা নাদিয়ার নাদিয়াকে জিজ্ঞেস করো তুমি।
.
শার্ট এমনি এমনি পাওয়া যায় নি।কেউ ইচ্ছে করে আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার রুমে ওটা রেখে দিয়েছিলো।তখন এত মাথা ঘামাইনি কারণ তখন জানতাম সব নাদিয়া বলেছে কিন্তু এখন জানি নাদিয়া নয় সব তোমার চাল।বলো কেন এমন করলে।
.
বললাম তো আমি কিছু করিনি।শুধু শুধু আমার পেছনে না পড়ে আসল লোকটাকে ধরার চেষ্টা করো।
.
আসল লোক মানে…?কে সে লাল শার্ট পড়া ছেলে বলো…?
.
সরি নাদিম আমি কিছু বলতে পারবো না।শুধু এতটুকুই জেনে রাখ যদিও কথাগুলো আমার বানানো তবুও তার পেছনে অনেক বড় কারণ আছে।পারলে সেই কারণগুলো খুঁজে বার করো।
.
তুমি কেন এটা করেছো বলো…?আর সেই কারণ আমি খুঁজতে পারবো না।তুমি বলো আমি শুনি…..
.
বললাম তো দ্বায়ে পড়ে আর কিছু না।
.
এসব রহস্যের বেড়াজালে আটকে থাকা আমার পছদ নয়।সোজাসুজি বলো কি হয়েছিলো সেদিন আর কে ছিলো সে…?যদি না বলো তাহলে কিন্তু আগে যা বলেছি এবার তাই করবো।
.
তুমি কি সত্যি বলছো…!!সত্যি সত্যি এসব করবে নাকি…!!(ভয় পেয়ে)
.
হুম মুখ না খুললে এটাই করবো।তাই আগে বলছি ভালোয় ভালোয় বলে দাও।
.
ঠিক আছে বলছি আমি।
.
এই তো গুড গার্ল নাউ স্টার্ট কে সে…?
.
সে কে আমি নিজেই জানিনা!!আমিও মুখোশের আড়ালে দেখেছি উনাকে।এই কাজটা করার কোনো ইচ্ছা ছিলো না আমার কিন্তু তবুও করতে হয়েছে।ওইদিনই উনাকে দেখেছি আর কখনও দেখিও নি।
.
কেন করতে হয়েছে…?আর একদিনের পরিচয়ে লোকটার কথায় কাজটা করতে রাজি হয়ে গেলে…!!
.
কারণ লোকটা আমাকে ভয় দেখিয়েছিলো…!!আর আমিও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ঘাবড়ে গেছিলাম…!!
.
কিসের ভয়…?কি এমন বলেছিলো যে ঘাবড়ে গেলে..?
.
লোকটা যখন নাদিয়ার রুম থেকে বেড়িয়ে আসে তখনই আমার সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়।তখন উনাকে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আমার গলায় চুরি তাক করে দাড়িয়ে পড়ে।তাই ভয় পেয়ে যাই আমি।তখন আমাকে বলে তোমার ঘরে ওর পরনের শার্ট রেখে দিতে আর যা বলেছি সবটা যেন সবার সামনে বলি।আর যদি না বলি তাহলে তোমাকে আর আমাকে জানে মেরে দেবে আর এটা শুনেই ভয় পেয়ে যাই আমি।
.
লোকটা ভয় দেখালো আর তুমি চেনা নেই জানা নেই অমনি ভয় পেয়ে গেলে আশ্চর্য!!তোমার কথাগুলো কেন জানিনা বিশ্বাস হচ্ছে না আমার।
.
বিশ্বাস করো নাদিম এটাই সত্যি!!আমি যা করেছি নিজেকে বাঁচাতে আর তোমাকে বাঁচাতে গিয়ে এসব করেছি।
.
মাহির চোখ মুখ দেখে বুঝে গেছি আমি সত্যি বলছে ও।কিন্তু সেই লোকটা কে…?কে সে যে নাদিয়ার সাথে এত খারাপ ব্যবহার করলো।কে কে সবটা জানতে হবে আমায়…..
.
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চলে যাও!!এটাই জানার ছিলো আামর।তবে যাই হয়ে যাক না কেন.. নাদিয়ার সাথে কে এমন করার চেষ্টা করেছে তাকে ঠিক খুঁজে বার করবো আমি আর সেদিন সকলের চোখে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে ছাড়বোই ছাড়বো।
.
নাদিম তুমি নাদিয়াকে প্লিজ বলো আমায় যেন ক্ষমা করে দেয়।আমি না এসবের কিছুই চাইনি তবুও মেয়েটাকে কষ্ট দিয়েছি।সেদিনের ঘটনার জন্যই আন্টি আর তিয়া এখনও সহ্য করতে পারেন না ওকে।অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে মেয়েটা।সবটা আমার জন্য।আমি যদি সেদিন মিথ্যা না বলতাম তাহলে আন্টি আগের মতোই নিজের মেয়ের মতো আদর দিতেন।ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতেন।সরি নাদিম আই এম সরি।
.
হুম!!আচ্ছা তুমি যে তোমার করা কাজের জন্য অনুতপ্ত এটাই অনেক যাইহোক ভালো থেকো আসছি….!!
.
.
ছাদে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আমি।আজ হাজারো প্রশ্ন মনে বাসা বেঁধেছে আমার।নাহিম ভাইয়া নাকি নাহিদ ভাইয়া কে হবে আমার জীবন সঙ্গী।নাহিদ ভাইয়া যাকে বড় ভাই ছাড়া কিছু ভাবিনি আমি সেই কিনা হতে যাচ্ছে আমার স্বামী।আর বাকী রইলো নাদিম ভাইয়া উনাকে আগে যতটা ভালো লাগতো এখন কেন জানিনা আরও বেশি ভালো লাগছে আমার।কেমন আকৃষ্ট হয়ে পরছি উনার উপর।পেছনের সব কিছু কেন জানিনা ভুলে যাচ্ছি আমি।উনার রুড ব্যবহার অত্যাচার অবহেলা অপমান সব ভুলে যেতে চাই।কিন্তু কেন…?কেন কেন কেন…?এসব তো ভুলার নয়।পার্টিতে এতবড় অপমান।সেদিন বাসায় মামুর সামনে আমায় ক্যারেক্টারলেস প্রমাণ সবকিছু কি করে ভুলে যাচ্ছি আমি।কেন উনাকে দেখলে বুক ধুকপুক করে আমার।কেন নিজের অজান্তেই হেসে উঠি আমি।উনার বলা কথাগুলো কেন ফেলতে পারি না। আজকে উনার পছন্দের বিরিয়ানি রান্না করতে মন চাইছে কেন…?কি হয়েছে আমার।আমার ভাবনাগুলোকে আকাশে ভাসিয়ে দিয়েছি আমি।তখন পাশে কারোর উপস্থিতি টের পেলাম আমি।হুম নাহিদ ভাইয়া….
.
তুই এখানে আর আমি তোকে সারাবাড়ী খুঁজে মরছি।আচ্ছা শোন পরশু বিয়ে তাই কালকেই কেনাকাটা করতে বের হবো।তুই সকাল সকাল রেডি হয়ে নিস।
.
কেনাকাটা কিসের কেনাকাটা….?আর সেখানে আমি গিয়ে কি করবো তিতলি আর তিয়া আপুকে নিয়া যান।
.
আরে বাবা তোর বিয়ে আর কেনাকাটা করতে তুই যাবে না।
.
ওহহ!!না ভাইয়া আপনারা যান আমি যাবো না।আমার এসব ভালো লাগে না।
.
সত্যি যাবি না…?
.
নাহ..!!
.
ওকে তাহলে তোকে জোর করবো না।আমার অনেক কাজ আছে তুই থাক আমি আসছি।
.
মানুষটাকে যত দেখি ততই অবাক হই আমি সবসময় আমার ভালো মন্দের খোঁজ নেয় কখনও মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করতে বলে না।সবসময় অন্যের ইচ্ছা অনিচ্ছার দাম দেয়।নিজের কথা ভাবে না।নাহ ওই ডেবিলের জন্য বিরিয়ানি রান্না করবো না আমি।এবার থেকে নাহিদ ভাইয়ার চাওয়া পাওয়াগুলোকে দাম দিবো হুম।
.
.
রাত প্রায় দুইটা সমস্ত শরীরে কেমন ব্যাথা পাচ্ছি আমি।নড়তেও পারছি না যেন চেইন দিয়ে কেউ বেঁধে রাখেছে আমায়।দুচোখের প্রখর ঘুম তবুও চোখ মেলে তাকালাম আমি।ভালোমতো নিজেকে দেখে অবাক আমি।এ কি এসব কি….?হুম নাদিম ভাইয়া আমাকে জরিয়ে সটান হয়ে শুয়ে আছেন উনি।তবে উনি জেগে নেই ঘুমিয়ে পরেছেন।উনাকে দেখেই মাথায় আগুন জ্বলে উঠলো আমার।ইচ্ছা করছে একটা লাথি দিয়ে বিছানা থেকে উনাকে ফেলে দিই আমি।অসভ্য ইতর প্রাণী এখানে এসেছিস কেন…?তোর মরার আর জায়গা ছিলো না এখানেই এসে মরতে হলো…হায় হায়!! এখন এই ভারী শয়তানটাকে এখান থেকে বিদায় করবো কি করে আমি।
.
ওই ঘুমিয়ে পড় এত ভাবিস না।দেখ বেশি রাত জাগলে শরীর খারাপ করবে তাই চুপ করে শুয়ে পড়।
.
উনার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালাম আমি।আরে এ তো মরে নি এখনও বেঁচে আছে ধুর জেগে আছে।আপনি আপনি এখানে কেন…?যান নিজের রুমে যান।
.
চোখ বুজেই বলে উঠলেন উনি না যাবো না!!
.
এই ডেবিল কি বলে এসব!!যাবি না মানে মামার বাড়ির আবদার!! তুই যাবি তোর বাপ দাদা চৌদ্দ গোষ্ঠী যাবে।কিন্তু সমস্যা একটাই একা দানবকে থুক্কু ডেবিলকে বিদায় করতে পারছি না চৌদ্দ গোষ্ঠী বিদায় করবো কি করে।এটা তো ভারী চিন্তার বিষয়।থাক এখন তো সবাই আসেনি তাই এত ভেবেও লাভ নাই। ডেবিল একা এসেছে আপাদত তাকেই বিদায় করি।
·
·
·
চলবে…………………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here