তবুও চাই তোকে পর্ব ১০

#তবু_চাই_তোকে🍂
#আভিরা_রয়🍁
#part_10

🍂🍁
.

করিডোর দিয়ে হাঁটছিলাম। কিন্তু হঠাৎই একটা ফাঁকা ক্লাসের মাঝ থেকে একজোড়া হাত আমার মুখ চেপে ধরে ভেতরে টেনে নিয়ে গেল। আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার চোখ বেধে দিয়ে হাত দুটো পেছনে চেপে ধরলো হাত প্রচন্ড ব্যথা করছে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টায় আমি বিভোর কিন্তু সামনে দাঁড়ানোর ব্যক্তিটি শক্তির সাথে আমি পেরে উঠতে পারছিনা। অজানা ভয় যেন আমায় ঘিরে বসছে। ছোটাছুটি করে চলেছি।কোন কিছুতেই তাকে নড়াতে পারছি না। লোকটির নিঃশ্বাস আমার পেটে এসে লাগছিল, ভয়ে সারা শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছিল আর তার সাথে হিচকি। হঠাৎ করে পেটে একটা কামড় দিয়ে হাতদুটো ছেড়ে দিলো সামনের ব্যক্তিটি। এতক্ষণ ভয় কাঁপলেও এখন রাগে বিরক্তিতে কাঁপছি!! হিচকি টা এখনো থামেনি।

.

চোখের কাপড়টি তাড়াতাড়ি সরিয়ে ক্লাসে এবং দরজার কাছে গিয়ে অনেক উঁকিঝুঁকি দিয়েও কাউকে খুঁজে পেলাম না। মনে তো হচ্ছে মানুষটাকে হাতের সামনে পেলে জ্যান্ত চিবিয়ে খেতাম!!!😠
হাতের কাপড় টার দিকে তাকিয়ে দেখি সাদা কাপড়ের উপর কিছু লেখা। কৌতুহল টাকে দমিয়ে না রাখতে পেরে কাপড়টা মেলে ধরতে বিস্ময়ের শেষ সীমায় পৌঁছে গেলাম!!

.

শাড়ি যখন সামলাতে পারো না তখন পরার কি দরকার!! নাকি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিলে? ছেলেরা কেমন করে দেখছিল সে দিকে খেয়াল আছে তোমার ?? তোমায় দেখার অধিকার একমাত্র আমার। কেন দেখবে অন্য কেউ তোমায় হুহ। আর কখনো যদি এমনটা দেখি তো একবারে খুন করে ফেলবো। রাগ হচ্ছিল আর তোমার ওই তিলটা খুব জ্বালাচ্ছিল আমায় তাই এমনটা করে ফেলেছি ।
সরি ফর দ্যাট, আর শাড়িটা ঠিক করে নিও প্লিজ। এটা আমার অনুরোধ ভাবতে পারো , অর্ডার ও ভাবতে পারো।
আবার দেখা হবে। টেক কেয়ার …

.

লেখাটি পড়ে রাগে বিরক্তিতে সব মিলিয়ে অন্যরকম একটা অনুভুতি হচ্ছিল আমার।😤 ওনার সাহস কি করে হয় আমার টাচ্ করার আমার শরীর স্পর্শ করার। 🤬
আমি দরকার হলে শাড়ি খুলে ব্রেক ডান্স করব তাতে তোর কিরে!! আমি কি তোর নিজের প্রপার্টি নাকি!! আর এত কিছু করে নাকি আমাকে সরি বলা হচ্ছে হুহ!!!
সরি দিয়ে আমি কি করবো গায়ের লাগাবো নাকি মাথায় নেব হ্যাঁ!!!😠😠
পেটে চিনচিনে ব্যথা করছে। শাড়িটা উঁচু করে দেখি তিলের জায়গাটা একদম লাল হয়ে আছে। রাক্ষসের নাতি!!! এই ভুতের মত লুকিয়ে বেড়ানো লোকটিকে পেলে একদম খুন করে ফেলতাম আমি।

.

একরাশ বিরক্তি নিয়ে বেরিয়ে সামনে কিছুদুর হেটে দেখি সবকটা বাঁদর সূর্য ভাইয়ের সাথে কথা বলছে , বুঝতে পারলাম কেয়া ওদের সাথে ওনার পরিচয় করে দিয়েছে। আমিও ওই দিকে চলে গেলাম তারপর কিছুক্ষণ ওদের সাথে কথা বলে সূর্য ভাইয়াকে বললাম,
ভাইয়া আপনি এদের সামলান আমি এখন চলে যাব।
.

কেন!! তুমি কেন যাবে???অনুষ্ঠান তো এখনো বাকি আর তোমাদের সাথে তো আমার ফ্রেন্ড দের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো না। ওই তো দেখো ওইখানে ওরা দাঁড়িয়ে আছে।

.

উনার হাতের দিকে তাকিয়ে লক্ষ করার চেষ্টা করছি.. উনি ঠিক কোনদিকে দেখানোর চেষ্টা করছে!! এন্ডি বলে উঠল ভাইয়া আপনি কাদের মিন করছেন ওইদিকে তো কুহু আপুদের দেখা যাচ্ছে আপনি কি ওনাদের মিন করছেন?

.

ওর কথা শুনে ওই দিকে তাকাতেই রুদ্র ভাইকে দেখতে পেলাম। একেতো মন মেজাজ ভালো নেই তার ওপর ওনাকে দেখে আবারও সেই দিনের ঘটনা মনে পড়ে গেল।

.

এই দিকে সূর্য ভাইয়া অনেক জোর করছেন। মুখে মেকি হাসি ফুটিয়ে বললাম আমাদের সাথে, নাকি কেয়ার সাথে পরিচয় করাতে চান । আপনি বরং ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। আমি যাই মন আর শরীর কোনটাই ভালো লাগছে না। অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে কষ্ট করে সূর্য ভাইয়া আর অন্যদের বুঝিয়ে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে হাঁটতে শুরু করে দিলাম। আজকে রিকশায় করে ফেরার কোনো ইচ্ছে হচ্ছিল না তাই আর রিক্সা নিলাম না।

.

হোস্টেলে ফিরে দেখি দিদু আমার রুমে সবকিছু পরিষ্কার করছে। সকালে বেরোনোর আগে কিছুই পরিষ্কার করা হয়নি। প্রতিদিন অবশ্য রোজ বা হৃদি এসব করে দেয়।
আমাকে দেখার সাথে সাথে দিতে বলে উঠলো….

.

কি হয়েছে রে বুনুন তোর নাকি শরীর ভালো নেই আশু আমাকে কল করে বলল তাইতো আমি চলে এলাম। তোর ভাইদাকে বলাতে সেও অনেক টেনশন করছিল। তোর আজ আর টিউশনি গুলো করাতে যেতে হবে না, আমি কল করে বলে দিয়েছি।

.

এখন দিদু কে শান্ত করাতে হবে না হলে আমার অবস্থা খারাপ। তাই অনেক কথা খরচ করে দিদু কে বুঝলাম আমার তেমন কিছু হয়নি। বিশ্রাম নিলে আমি ঠিক হয়ে যাবো আর ভাইদা কে কল করে বলে দিলাম যে আমি ঠিক আছি।

.

ভাইদা হলো দিদুর হাসবেন্ড আর্নিল চৌধুরী। চাকরির জন্য এখানে থাকে না। তাই দিদু বাবা-মার কাছেই থাকে। এতে দিদুর শাশুড়ি মা ও কিছু বলে না দিদুর একটা ডান্স একাডেমি আছে আমিও মাঝে মাঝে সেখানে যাই।

.

ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে দিদুর সাথে ঘুরতে বেরোলাম যেহেতু আজ আর টিউশনি গুলো নেই তাই এডওয়ার্ড কেউ নিলাম সাথে। বেচারা সারাদিন ঘরে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যায়। এডওয়ার্ডকে দিদির বাড়ি পাঠিয়ে দিব আজ। দিদু বিড়াল অনেক পছন্দ করে আর ওখানে গেলে আমার এডওয়ার্ডো অনেক ভালো থাকবে
.

বেচারা তো আমার কাছেই পায় না! বাড়িতে গেলে মামনি আর দিদু মিলে ওর খুব যত্ন নেবে। ঘুরেফিরে এডওয়ার্ডকে দিদির কাছে দিয়ে আমি হোস্টেলে ফিরে এলাম। দিদু অবশ্য বাড়িতে যেতে বলেছিল কিন্তু আজ আর যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না তাই অন্য একদিন যাব বলে সেখান থেকে চলে এলাম হোস্টেলে……

#চলবে🍁(গল্প শেষ হয়নি পুরোটুকু পড়তে অপেক্ষা করুন)

5 COMMENTS

  1. এই গল্পের পরবর্তী পর্ব গুলো কি আর দেওয়া হবে না???🙄

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here