#তুই_আমার_সুরঞ্জনা
last part (Second)
#Arishan_Nur
নিরব ব্যাগটা হাতে নিয়ে বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিল। বাসায় গিয়ে বেল বাজালো।
পাচ মিনিটের মধ্যে প্রমিতি এসে গেট খুলে দিল। প্রমিতিকে দেখে মুচকি হাসল নিরব।
প্রমিতিও বিনিময়ে একটা হাসি উপহার দিল নিরবকে। নিরব এক পলক প্রমিতির দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে ভেতরে ঢুকল।
নিজের রুমে গিয়ে একটা আলমারি তে রাখল। তারপর ফ্রেস হওয়ায় জন্য বাথরুমে গেল।
এদিকে প্রমিতি গুটিগুটি পায়ে নিরবের রুমে এসে আলমারির সামনে চুপচাপ দাড়িয়ে রইল। নিরব যখন-তখন বের হয়ে যেতে পারে৷
প্রমিতির মনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সে শাড়ির আচল হাত দিয়ে মোচড়াতে লাগে৷
হুট করে পেছন থেকে কারো স্পর্শ পেয়ে কেপে উঠে প্রমিতি।
নিরব প্রমিতির কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, কি ব্যাপার? আলমারির সামনে কি করছো? হুম?
নিরবের মুখের গরম বাতাস কানে লাগতেই প্রমিতি ঘামতে শুরু করল। সে আমতাআমতা করে বলে, আব,,,,আমি তো তো,,,তোমার জ,,জন্য অপেক্ষা ক,,করছিলাম।
নিরব প্রমিতির কোমড়টা আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরে বলে, তাহলে তোতলাচ্ছে কেন? আমার কাছ থেকে কি কিছু লুকাচ্ছো?
প্রমিতি ঘাবড়ে গেল। সে বলল, না তো।
প্রমিতিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিরব তার দুইহাত ধরে এবং চোখে চোখ রেখে বলে, আই লাভ ইউ, প্রমিতি।
প্রমিতি চমকে উঠে। তার বুকের ভেতর অজস্র হাতুড়ি একসাথে পেটাচ্ছে বুঝি কেউ। প্রমিতি একটা ঢোক গিলে। সে কিছু না বলে নিরবের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে চোখের দৃষ্টি নিচু করে ফেলে।
নিরব প্রমিতির মুখটা উচু করে তার চোখে চোখ রেখে বলে, যারা কিছু লুকায় তারা চোখে চোখ রাখতে পারেনা। তুমি তো কিছু লুকাচ্ছো না। তাহলে কেন চোখের দৃষ্টি সরিয়ে নিচ্ছো?
প্রমিতি মৃদ্যু হাসলো। কিন্তু মুখে কিছু বললনা।
নিরব হালকা করে প্রমিতির কপালে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিল এবং আস্তে করে বলে, আমার জন্য এক কাপ চা আনো।
–আচ্ছা বলে প্রমিতি রান্নাঘরে চলে যায়।
প্রমিতি নিরবের রুম থেকে বের হয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাচলো। সে কোন মতো চুলোয় গরম পানি করতে দিল৷ কিন্তু কিছুতেই কোন দিকে তার মন বসছেনা৷ কানে শুধু নিরবের বলা একটা কথাই ভাসছে, আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছো নাতো?
প্রমিতির হাত কাপতে লাগলো। এদিকে পানি গরম হয়ে গেছে।সে দ্রুত হাড়ি থেকে পানি কাপে ছাকতে গিয়ে গরম পানি নিজের হাতে ফেলে দিল এবং ও মাগো বলে চেচিয়ে উঠে।
তার চেচানোর আওয়াজে নিরব বের হয়ে এলো। এবং প্রমিতির হাত দেখে হতভম্ব হয়ে গেল। সে দ্রুত প্রমিতিকে রুমে নিয়ে আসল এবং সোফায় বসিয়ে দিল।
নিরব কিছুটা রাগান্বিত স্বরে বলে, সাবধানে কাজ করবে না? যদি চা বানাতে না পারো তাইলে করতে না। সিম্পেল। দেখি হাত দাও। আমি মলম লাগিয়ে দিচ্ছি।
প্রমিতি হাত বাড়িয়ে দিল।
নিরব কিছুটা হেসে বলে, টিভি-সিনেমার নায়িকার মতো ঢং শুরু করবে না তো আবার?
–না। একদমই না। তুমি লাগিয়ে দাও।
নিরব প্রমিতির হাতে মলম লাগিয়ে তার পাশে বসল।
এবং নরম সুরে বলে, তোমার কি কোন সমস্যা হচ্ছে?
প্রমিতি কাপা কন্ঠে বলে, না, তো। আমার কেন কোন সমস্যা হবে৷
–তাহলে কাপছো কেন?
প্রমিতি এবার নিরবের দিকে তাকালো। নিরবের চোখে সন্দেহ। সেই সাথে প্রশ্ন ও রয়েছে।
প্রমিতি কিছু বলতে পারল না। তাই চুপ রইল।
নিরব কিছুটা প্রমিতির দিকে ঝুকে বলে, তুমি কিন্তু এখনো একবারো বলনি যে আমাকে ভালোবাসো। তাহলে কি আমি মেনে নিব দ্যাট ইউ ডোন্ট লাভ মি?
প্রমিতি আরেকদফা কেপে উঠল।
নিরব প্রমিতির দুই কাধ শক্ত করে চেপে ধরে বলে, কি হলো উত্তর দাও না!
প্রমিতির ঠোঁট কাপতে লাগল। বিরবির করে কিছু বলছে যা মোটেও ধ্বনি হিসেবে বাইরে বেরুচ্ছে না তাই নিরব ও শুনতে পেল না।
সে প্রমিতির আরেকটু নিবিড়ে গিয়ে শক্ত করে প্রমিতিকে জড়িয়ে ধরে। আর এদিকে প্রমিতির বুকে জলোচ্ছ্বাস বয়ে যাচ্ছে৷
নিরব প্রমিতির দিকে ঝুকে আসতেই প্রমিতি বিছানায় ঠপ করে পড়ে গেল। এতে প্রমিতির চুল কাধ থেকে সরে গেল।
নিরবের দৃষ্টি সেদিকে। নিরব প্রমিতির কাধে হাত দিতেই প্রমিতি একটু কোকিয়ে উঠে।
নিরব কঠিন গলায় বলে, এই মার্ক টা কিসের?
প্রমিতি চমকে গিয়ে উঠে বসল৷
নিরব আবারো প্রশ্ন করে, এটা কিভাবে হয়েছে? মনে হচ্ছে ছ্যাকা লাগছে৷ কিন্তু কিভাবে?
প্রমিতি আস্তে করে বলে, জানি না তো!
নিরব ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন প্রমিতির দিকে তাকিয়ে রইল। এরপর প্রমিতির হাত ধরে দিল এক টান। যার ফলে প্রমিতি সোজা নিরবের বুকে আছড়ে পড়ল।
প্রমিতি নিরবকে জড়িয়ে ধরে বলে,
আমার মনের ঘরটা বড্ড অন্ধকার ছিল!
আমার মনের সেই কুঠুরিটা তুমি আলোকিত করে দিয়েছো৷
আজ আমি কেবল তোমার জন্য মনের ঘরটায় মরিচবাতির আলোয় লাল-সবুজের স্বপ্ন বুনছি!
আমাকে কখনো একা ছেড়ে যেও না নিরব!
তুমি ছেড়ে চলে গেলে আমার মনের ঘরটার সব আলো নিভে যাবে আবারো৷
নিরব প্রমিতিকে শক্ত করে ধরে দুষ্টোমি করে বলে, কেন? আমি কি কারেন্ট নাকি?
একথা শুনে প্রমিতি হেসে দিল।
★★★
লিনা বরকত কে স্যুপ খাওয়ালো। বরকত বেশ মজা করে স্যুপ খাচ্ছে আর বলছে, খুব মজা হয়েছে খেতে।
লিনা হালকা হেসে বলে, থ্যাংকস। আরেকটু দিব?
–আছে আরো?
–হ্যা। হ্যা। অনেক গুলো আছে।
বরকত স্যুপের বাটি এগিয়ে দিয়ে বলে, তাহলে আরেকটু দাও।
লিনা বাটি নিয়ে গেল৷ কিছুক্ষন পর গরম গরম স্যুপ আর অন্থন আনলো।
বরকত অন্থন হাতে নিয়ে বলে, তুমি অন্থনো বানাতে পারো?
লিনা এক গাল হেসে বলে, চাইনিজ সব আইটেম বানাতে পারি আমি৷
বরকত অন্থনে কামড় বসিয়ে দিল এবং বলল, ফাস্ট ক্লাস হয়েছে৷
তারপর খেতে খেতে বলে, আর কি কি বানাতে পারে আমার বউ শুনি একটু?
লিনা বলল, শুধু চাইনিজ আইটেম ই পারি।
–বিফ সিজলিং বানাতে পারো?
লিনা বলে, হ্যা পারি।
–আমাকে বানায় খাওয়াতে পারবে?
–অবশ্যই।
বরকত স্যুপের মধ্যে অন্থন ডুবিয়ে নিয়ে অন্থনটা ভিজিয়ে নিয়ে খেতে লাগলো।
লিনা কিছুটা সময় বরকতের দিকে চেয়ে থেকে বলে, তোমার সাথে অনেক মিসবিহেইভ করেছি তাইনা?
বরকত খাওয়া থামিয়ে দিয়ে বলে, নাহ, মোটেও না৷
–বরকত! আমি তো জানি কেমন বিহেইভ করতাম তোমার সাথে৷ আমাকে ক্ষমা করা তোমার ঠিক হয় নি৷
বরকত খাওয়া প্লেট সরিয়ে রেখে লিনার কাছ্ব গিয়ে লিনাকে শক্ত করে চেপে ধরে বলে, পাগল নাকি তুমি? আর আমার সাথে রাগ করবা না তো কার সাথে করবা? শুনি?
লিনা কেদে দিল। তাকে কাদতে দেখে বরকত বিচকিত হয়ে বলে, প্লিজ লিনা কেদো না৷
লিনা কাদতে কাদতে বলে, আমি ক্ষমার অযোগ্য বরকত!
–আচ্ছা৷ একটা কাজ করলে আমি তোমাকে মাফ করে দিব৷ করবে কি সেই কাজটা?
লিনা কান্না থামিয়ে বলে,কোন কাজ?
–বাবাকে এখুনি ফোন করে তার কাছে ক্ষমা চাও৷
লিনা নিষ্পলক ভাবে বরকতের দিকে তাকালো।
বরকত হালকা হেসে দিল এবং বলল, আমি জানি বিয়ের পর তুমি বাবার সাথে ঠিক মতো কথা বলনা৷ ওনার উপর রেগে আছো। কল হিম।
লিনা দ্রুত তার বাবাকে কল লাগালো এবং ক্ষমা চাইল। তার বাবা তো অবাক। লিনার বাবা জানেই না লিনার সাথে কতো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে চলেছিল৷
উনি নির্দ্বিধায় মেয়েকে ক্ষমা করে দেয়।
এবার বরকত বলল, যেহুতু বাবা ক্ষমা করেছে তাই আমার ক্ষমা না করার কোন কারন নেই৷
একথা শুনে লিনা বরকতের বুকে মাথা রেখে বলে, আমি সত্যি কোন পুন্য কাজ করেছিলাম তাই তো তোমাকে লাইফ পাটনার হিসেবে পেয়েছি৷ থ্যাংকস টু ওলমাইটি আল্লাহ
বরকত এবার বলে উঠে, তোমাকে আমি নিজের স্ত্রী হিসেবে পেয়েছে অজীবন আলাহর উপর কৃতজ্ঞ!
★★★
রোহান আর আরিফ পপুলারে এডমিট হয়েছিল কালকে রাতে। আজকে সকালে রিলিস পেয়েছে।
রোহান ক্যাশ কাউন্টারে টাকা দিচ্ছে৷ এদিকে আরিফ বলেই যাচ্ছে, এরা মানুষ নাকি ডাকাত! এতো টাকা বিল নেয়!
রোহান বিল মিটালো৷ এমন সময় পাশ থেকে এক নারী কন্ঠে শুনতে পেল, কেউ নিরব চৌধুরির নাম নিচ্ছে৷
এই নাম আগেও শুনেছে সে। তাই পেছন ঘুরলো। এক লেডি ডাক্তার একজন ওয়াড বয়ের সাথে কথা বলছে।
উনি বলছে, নিরব চৌধুরির ওয়াইফ প্রমিতি কিছু দিন আগে এখানে এডমিট হয়েছিল।এক্সিডেন্ট কেস৷
প্রমিতি নাম শুনে রোহান আর এক দন্ড না থেমে ডাক্তার টার কাছে গেল৷ এবং বলল, ম্যাডাম একটু শুনবেন?
লেডি ডাক্তার টা বলল, জি বলেন।
–আপনি মাত্র প্রমিতির নাম নিয়েছেন?
–হু৷ কেন?
রোহান ফোন থেকে প্রমিতির ছবি বের করে দিয়ে বলে, ওই কথা বলছিলেন৷
লেডি ডাক্তার টা বলল, হ্যা। ওনার ই তো প্রমিতি৷
রোহান যেন চাঁদ হাতে পেল। সে দ্রুত ডাক্তারের কাছ থেকে নিরবের বাসার এড্রেস নিল। তারপর ছুট লাগালো নিরবের বাসার দিকে।
★★★
রাফসার মহাখালি ফ্রাইওভারের সামনে দাড়িয়ে আছে। রাস্তা ক্রস করে দশ মিনিট হাটলেই তার বাসা। সে দাঁড়িয়ে সিগারেট টা শেষ করে নিল। তারপর পাশের দোকানে গিয়ে বলে, এক হালি ডিম দেন তো। আর কতো করে?
বিক্রেতা বললো, চল্লিশ টাকা৷
রাফসার বলে, সব খানে তো ত্রিশ করে। তোমার এইখানে দাম বেশি ক্যান?
এইটুকু বলেই থেমে গেল সে৷ সে কি ভুল দেখছে? অতসী এখানে কেন? আর এটা কি অতসীই নাকি তার ভ্রম?
সে হ্যাবলার মতো চেয়ে রইল। তার মনে হচ্ছে সে ভুল দেখছে।
বিক্রেতা বললো, স্যার পয়ত্রিশ করে দেন।
রাফসারের ঘোর কাটলো। সে মৃদ্যু সুরে বলে, দাও৷
ডিম হাতে নিয়ে রাফসার হাটা ধরল। ইদানীং তার কি যেন একটা সমস্যা হয়েছে৷ যেখানে-সেখানে অতসীকে কল্পনা করে৷ ভয়ে সাইক্রিয়েটিস্টের কাছে যাচ্ছে না। তার সমস্যা শুনলে ডিরেক পাগল ভাববে৷
রাফসার তার বাসার সামনে আসল। হুট করে কেউ তার ডিম গুলোর ব্যাগ ধরে দিল টান। যার ফলে ডিম চারটে ভেঙে গেল৷
রাফসার হতভম্ব হয়ে পেছনে তাকিয়ে বিষম গেল।
বিরবির করে বলে, অতসী!
অতসী বলে উঠে, কেমন আছো?
রাফসারের পিপাসা পেয়ে গেল। সে মনে মনে বলে, আজকেই ডাক্তার দেখাতে হবে৷
–এই বিরবির করে কি বলছো?
রাফসার অতসীর দিকে তাকিয়ে বলে, তুমি বাস্তবে আছো নাকি আমার কল্পনা?
–কল্পনা কেন হতে যাব? বলে রাফসারের হাতে অনেক জোড়ে চিমটি বসিয়ে দিল৷
রাফসার আহ করে উঠে৷
অতসী হিহি করে হেসে বলে, তুমি নাকি অনেক ব্রেভ? এই তার নমুনা?
রাফসার কিছু বললনা।
অতসী বলল, আমাকে দেখে পিলারের পেছনে লুকালে কেন? ভয় পাও আমাকে?
–বড্ড!
–এই ভয়ের সাথেই বাকিটা জীবন থাকতে হবে৷ রাজী?
–এক হাজার বার!
–একবার হলেই হবে।
★★★
বেল বাজার শব্দে প্রমিতি উঠে গিয়ে গেট খুলতেই থমকে গেল। তার হাত-পা জমে বরফ হতে লাগল। প্রমিতি থ মেরে দাড়িয়ে রইল। কোন কথা বলতে পারছেনা৷
বাসায় সবাই আছে। বরকত রাও ঘুরতে এসেছে কিছুক্ষন আগে।
প্রমিতিকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিরব তার কাছে যায়।
সে শুনতে পায়, প্রমিতি আস্তে করে বলছে, রোহান! এখানে কি করছে?
নিরব ভ্রু কুচকে প্রমিতির দিকে তাকালো তারপর গেটের দিকে তাকাতেই তার মাথা গরম হয়ে গেল।
সে ধমক দিয়ে বলে,এই ছেলে তুই এখানে কেন?
রোহান জোর গলায় বলে, আমি রোহান। প্রমিতির হবু বর৷
একথা শুনেই প্রমিতি ভয়ে পেছাতে লাগে৷ রোহানের নিরবের বাসায় ঢুকবে তার আগেই নিরব রোহানের কলার ধরে ফেলে আর বলে,ও আমার বউ। ওকে? জাস্ট গেট আউট।
রোহান বলে, না, প্রমিতির সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা। ওকে আমার হাতে তুলে দেন৷
একথা শুনে নিরব অনেক রেগে যায় এবং কড়া চোখে প্রমিতির দিকে তাকালো।
প্রমিতি ভয়ে গড়গড় করে বলে, আমি রোহানকে বিয়ে করতে চাইনি৷ ও জোড় করে বিয়ে করত্ব চায় আমাকে।
নিরব আর কিছু না শুনে রোহানকে বাসা থেকে বের করে দেয়। এবং ফিরে এসেই প্রমিতির গালে অনেক জোড়ে একটা থাপ্পড় বসায়৷
এবং চিৎকার-চেচামেচি শুরু করে প্রমিতির সাথে।
নিরবের কন্ঠ শুনে সবাই বেরিয়ে আসে।
বরকত ও আসে সবার সাথে।
নিরব ভীষণ রেগে গিয়ে বলে, হাউ ডেয়ার ইউ? ইউ চিট অন মি৷ আমাকে মিথ্যা বলেছে তুমি? এতো সাহস তোমার?
প্রমিতি কিছু ই বলছে না জাস্ট কেদেই চলেছে৷
বরকত প্রমিতির কাছে গিয়ে বলে, ওকে এসব আমিই করতে বলেছি৷ স্মৃতি শক্তি হারানোর নাটক করতে আমি বলেছি ওকে।
নিরবঃ হুয়াট?
–হুম।
নিরব আরো রেগে গিয়ে বলে, তোরা দুইজন ই আমার চোখের সামন থেকে দূর হ।
কান্নারত অবস্থায় ই প্রমিতিকে নিয়ে বের হলো বরকত ।
বাসার কেউ ই কিছু বুঝতে পারছেনা৷
নিরব তার রুমে গিয়ে গেট লাগিয়ে দিল এবং আশেপাশে যা পাচ্ছে তাই ভাংচুর করছে৷
এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে। প্রমিতি আর বরকত নিরবের বাসার সামনের ব্রেঞ্চে বসে আছে৷
প্রমিতি কান্না করতে লাগলো এবং বলল, আমি আগেই বলেছিলাম মিথ্যা অভিনয় না করি৷ এখন দেখলেন ও আমাকে ভুল বুঝলো। আই লস্ট হিম ফর ফরইভার!
–আরে রিল্যাক্স। আর দশ মিনিট ওয়েট করো৷ও নিজে তোমার কাছে আসবে৷
প্রমিতি কান্না করেই যাচ্ছে। হুট করে দেখতে পেল রাস্তার শেষ মোড়ে নিরব দাড়িয়ে আছে। প্রমিতি চোখের পানি মুছে ঠিক ভাবে তাকালো। সত্যি এটা নিরব।
সে দেখতে পেল। নিরব এক প্রকার দৌড়ে তার কাছে আসছে৷
নিরবক্ব আসতে দেখে বরকত অন্য দিকে সরে গেল৷
নিরব হাপাতে হাপাতে প্রমিতির কাছে এসে কোন রকম বলে, তুমি আকবর করিমের মেয়ে?
প্রমিতি কান্না করতে করতে বলে, হু৷ কিন্তু কি হয়েছে?
নিরব বিজয়ের হাসি হেসে বলে, তোমার বাবা আর আমার বাবা বন্ধু ছিল। আকবর আংকেল আমাদের অনেক বড় একটা উপকার করেছিল।তোমার সৎ মা কি খুব অত্যাচার করত তোমাকে?
–হু। এসব কে বলল আপনাকে?
–বরকত। ম্যাসেজ দিয়েছে আমাকে একটু আগে। আই এম সর্যি প্রমিতি।
প্রমিতি বলল, সর্যি তো আমার বলা উচিত! আপনাকে মিথ্যা বলে বিয়ে করেছি৷
নিরব প্রমিতির মুখে আঙুল দিয়ে বলে উঠে,
যে হৃদয়ে তুমি নেই, ভেবে নিও সে হৃদয় আমার না!
যে চোখে তোমার প্রতিচ্ছবি নেই, ভেবে নিও সেই চোখজোড়া আমার না!
যে নিশ্বাসে তুমি নেই, ভেবে নিও সেই প্রশ্বাস আমার না!
তুমিহীনা এই আমি! কল্পনাতীত!
যে আষাঢ়ে তুমি নেই, সে আষাঢ়ের বৃষ্টির ফোটা যেন আমার গা না ভেজায়!
যে বসন্তে তুমি নেই, সে বসন্তের ফুলের সুভাস
যেন আমার গায়ে না মাখে!
যে শহরে তুমি নেই, সে শহরের সড়কবাতির হলদে আলো যেন আমায় না ছোয়!
যে হৃদয়ে তুমি নেই, সে হৃদয় যেন আমার না হয়!
কারন? কারনটা অতি তুচ্ছ এবং নূন্যতম।
তাও জানিয়ে রাখি, কারনটা হলো,
তুই আমর সুরঞ্জনা!!!!
–নূর।
[সমাপ্ত]