তুমিময় বসন্ত পর্ব -২৫+২৬

#তুমিময়_বসন্ত
২৫.
#writer_Mousumi_Akter

“আরহী আমি ভীষণ দুঃচিন্তায় আছি।আমি সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকি না জানি কবে মুগ্ধতা সত্যটা জেনে যায়।আর মুগ্ধতা এই সত্যটা জেনে গেলে সেদিন ও কিভাবে রিয়্যাক্ট করবে আমি সত্যি জানিনা।আমি কোনো কিছুর বিনিময়ে মুগ্ধতার চোখের পানি দেখতে পারবোনা।মুগ্ধতা এই ভয়ংকর সত্য টা জানলে কষ্ট পাবে ভীষণ কষ্ট পাবে।এখন ও এক জীবনে আছে আর সব সত্য জানলে ওর জীবন টা অন্যদিকে চলে যাবে।ওর চিন্তা ভাবনা সব বদলে যাবে।তাই আমি চাইছি মুগ্ধতা এখন যেমন চিন্তামুক্ত হাসি খুশি জীবনে আছে তেমন ই থাকুক।”

“মুগ্ধতা কিভাবে জানবে সব সত্য।আর কি প্রয়োজন মুগ্ধতাকে এসব বলার।আমরা যদি না বলি কে বলবে? ”

“সেদিন আমাদের এলাকা থেকে একজন মহিলা এসে প্রায় বলেই দিচ্ছিলো।মুগ্ধতার জন্মের ব্যাপারে।সিরিয়াসলি আমার প্রচন্ড রাগ হয়েছিলো।যে সত্য মুগ্ধতা থেকে এতগুলো বছর আমরা লুকিয়ে রেখেছিলাম সেই সত্য ওই মহিলা বলে ফেলছিলো।আমি খুব রেগে গিয়েছিলাম।মুগ্ধতা আমাকে না আটকালে আমি ওই মহিলাকে কি না কি বলতাম নিজেই জানিনা।”

“মুগ্ধতার জীবনের এই অতীত কোন দিন না কোনদিন মুগ্ধতার সামনে আসবে। কি হবে সেদিন, মুগ্ধতা কিভাবে সহ্য করবে সেটা।মুগ্ধতার কাছে দুই দুইটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা লুকিয়ে গিয়েছি।ভীষণ ভয় হয় মাঝে মধ্য।দুইটা বিষয় ই অনেক সিরিয়াস।সব সত্য জানলে যদি মুগ্ধতা আমাদের ভুল বোঝে।বা নিজের কোনো ক্ষতি করে।অল রেডি মুগ্ধতা আমাকে প্রশ্ন করেছে আমার বিএফ কে ছিলো।আমি এড়িয়ে গিয়েছি মুগ্ধতার থেকে। মুগ্ধতার জীবনের সুখ শান্তির জন্য আমি অনেক নাটক করেছি অনেক মিথ্যা বলেছি।”

“আমি সব থেকে বেশী ভয় পায় মুগ্ধতা যেনো কোনভাবে কষ্ট না পায়।আমাকে ভুল বুঝুক, গা*লি দিক সব মেনে নিবো।ও যেনো কষ্ট না পায় এটুকুই চাওয়া আমার।”

“মুগ্ধতা কত ভাগ্যবতী দেখেছেন।ভালবাসায় পরিপূর্ণ ওর জীবন।আজ আমার জীবন টাও এমন হতে পারতো।”

“প্লিজ আরহী মুভ অন করো।অতীত কে ভুলতে হবে তোমাকে।”

“পারবো না আমি।আমি পারছি না সব কিছু মেনে নিতে।নিজেকে শে*ষ করে দিতে ইচ্ছা করছে।”

“তুমি কখনোই এমন কিছু ভাববে না আরহী।বিলিভ মি আমি সব সময় তোমাকে নিয়ে ভাবি।তোমার কষ্ট টা আমি সব সময় ফিল করি।যে কোনো কিছুর বিনিময়ে যদি তোমাকে একটু সুখ কিনে এনে দিতে পারতাম।”

“আমি কষ্ট পেলেও আমার ও একটায় চাওয়া মুগ্ধতা যেনো কষ্ট না পায়।সে উইশ টা পূর্ণ হয়েছে। ”

“তুমি সত্যি খুব ভালো মেয়ে আরহী।”

আয়াস আর আরহীর কথা শুনে আমি থমকে গেলাম।কি বলছে ওরা এসব।কিসের সত্য আমি জানিনা।ওই মহিলা কি বলে ফেলছিলো।আমি সত্যি আমার মা বাবার বিয়ের আগে হয়েছিলাম।মানে কি?এসবের কি মানে।ওদের কথা শুনে তো মনে হচ্ছে ওই মহিলা সত্য বলেছিলো।ওহ নো এটা কিভাবে সম্ভব।এমন টা হতেই পারেনা।ওই মহিলার বিষয় বাদেও আয়াস আর আরহী অন্য কোনো কিছু লুকাচ্ছে।কি লুকাচ্ছে ওরা।কেনো লুকাচ্ছে।ওদের কি কোনো রিলেশন ছিলো।না কি ছিলো।আরহীর তো কারো সাথে রিলেশন ছিলো।যার কথা আমার কাছে কখনোই প্রকাশ করে নি।আমি কি এক্ষুনি গিয়ে ওদের কাছে জিজ্ঞেস করবো।ওরা কি আমাকে সবটা বলবে।এর আগেও আরহীকে জিজ্ঞেস করেছি আমাকে এড়িয়ে গিয়েছে আর যা বলেছে তা পুরা সত্য মনে হয়নি।আমাকে নিজের মতো করে খুজতে হবে এই রহস্য।আমাকেই খুজে বের করতে হবে।সব টা খুজে বের করে তারপর না হয় সবাইকে বলবো।মা -বাবার ব্যাপার টা মোটেও ক্লিয়ার হতে পারলাম না।হতেই পারে মা বাবার বিয়ের আগে কোনভাবে আমার জন্ম হয়েছে মেনে নিলাম কিন্তু সেটা এভাবে লুকানোর কি আছে।মা বাবার তো বিয়ে হয়েছে।পরিবারে তো কখনো এসব নিয়ে কোনো কথা বলতে দেখিনি।আয়াস আর আরহীর কি রিলেশন ছিলো।আয়াস এর কথায় এটুকু ক্লিয়ার হতে পেরেছি সে আমাকে ভালবাসে।তাহলে কি লুকাচ্ছে আরহীর সাথে রিলেশন লুকাচ্ছে।আয়াস ই কি তাহলে আরহীর কষ্টের কারণ।না কিছুই মিলছে না।কোনো সমীকরণ মেলাতে পারছি না।হঠাত শরীরে জেলাসি জুড়ে বসলো।সব চিন্তা বাদ দিয়ে আমার মাথায় একটা চিন্তা ঘুরছে সত্যি আরহী আর আয়াসের মধ্য কিছু ছিলো।রাগ হচ্ছে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আমার আরহীর প্রতি।আরহী কে নিজের প্রতিদ্বন্দী বলে মনে হচ্ছে আমার।আরহী আয়াসের সাথে কথা বলছে ভেতরে জ্বলে যাচ্ছে আমার।আয়াসের লাইফে আমি আসার আগে কারো সাথে রিলেশন ছিলো এটা ভেবেই রাগ হচ্ছে।কেনো থাকবে ওর রিলেশন। আয়াস এর কিসের এত টান আরহীর প্রতি।আয়াস এত মায়া মমতা নিয়ে কেনো কথা বলছে আরহীর সাথে।তারমানে আয়াস এর এখনো আরহীর প্রতি টান রয়েছে।আমি থাকতেও কেনো আয়াসের অন্য মেয়ের প্রতি টান।আমি তো বিয়ের পরে সবটা ভুলে গিয়েছি।তাহলে আয়াস কেনো তার অতীত কে ভুলতে পারেনি।তাছাড়া আমিতো আরহী কে ভীষণ ভালবাসি কিন্তু কেনো এটা বলতে পারছিনা যে আরহী আয়াস যদি তোর ভালবাসার মানুষ হয়ে থাকে আমি আয়াস কে ফিরিয়ে দিবো তোর জীবনে।এমন কিছু আমি ভাবতেও পারছিনা।আমি বড্ড সেল্ফিস হয়ে গিয়েছি।আমি তো এমন ছিলাম না।মা -বাবার চিন্তা আর আরহী-আয়াসের চিন্তা দুটোই ঘিরে ধরেছে আমাকে চিন্তায় অস্হির লাগছে।কেনো আমার সাথেই বারবার এমন হয়।কেনো হয় এমন?আমি কি পাপ করেছিলাম বারবার আমার স্বপ্ন ভেঙে যায়।কেনো বারবার প্রতারিত হয় ভালবাসা থেকে।কত সময় দমবন্ধ করে বসে থেকে ধৈর্যহারা হয়ে গেলাম আমি।ক্রমশ কাঁন্নার মাত্রা বাড়তে শুরু হলো।হাতের চুড়ি গুলো খুলে ফ্লোরে ফেলে দিলাম খুব জোরে।ঝন ঝন শব্দে চুড়ি গুলো এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লো।কানের দুল,গলার চেইন,সব খুলে ফেলে দিলাম।ড্রেসিন টেবিলের উপরে রাখা জিনিস গুলো সব এক ধাক্কায় ফেলে দিলাম।সব ফ্লোরে ঠাস ঠুস শব্দ করে পড়লো।সব ভেঙে ফেলতে মন চাইছে।নিজেকে নিজের সব থেকে বেশী বিরক্তিকর লাগছে।ভীষণ অসহায় লাগছে নিজেকে।আবার ও বেসামাল কাঁন্নায় ভেঙে পড়লাম আমি।সাথে সাথেই আয়াস,অয়ন আর আরহী চলে এলো।আমার কাঁন্নার কোনো কারণ ই কেউ জানেনা।ওরা সবাই ভীষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আমার দিকে।ঘরের এলোমেলো জিনিস দেখে বুঝতে পারলো আমি সব এলোমেলো করেছি।অয়ন চুপ করে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখছে।

‘আয়াস সাথে সাথে বসে পড়ে আমার কাঁধে হাত দিয়ে আমার নাম ধরে ডাকলো মুগ্ধতা।’

আমি আয়াস কে খুব জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে বললাম,

‘ডোন্ট টাচ মি!’

আয়াস এবার একটু বেশী অবাক হলো।আমার এমন ব্যবহার বিয়ের পরে সে দেখে নি।আয়াসের প্রতি তীব্র বিরক্তি,রাগ,ঘৃণা সব এক সাথে আজ ই প্রথম আয়াস দেখলো।আয়াস আমার রাগ দেখে বেশ ভয় পেয়ে গেলো।আবার ও আয়াস আমার কাছে এসে কাঁধে হাত রাখলো।আমি আবার ও ধাক্কা মেরে বললাম,

‘বলেছি না আমাকে স্পর্শ করবেন না।’

‘কিন্তু কেনো মুগ্ধতা।’

এবার আরহী আমাকে বললো,

‘কি হয়েছে মুগ্ধ কাঁদছিস কেনো?’

‘প্লিজ বেরিয়ে যা আরহী আমার রুম থেকে। প্লিজ বেরিয়ে যা।আমার ভালো লাগছেনা কিছুই।’

এতটুকু বলে সবাই কে ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দরজা লাগিয়ে দিলাম।দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে বসে দুই হাঁটুর মাঝে মাথা গুজে বসে শব্দ করে কেঁদেই যাচ্ছি।
আরহী আমার এ রাগের কারণ কিছুই বুঝতে পারলো না।ভীষণ মন খারাপ হলো আরহীর।অয়ন এই প্রথমবার নিজ থেকে আরহীর সাথে কথা বললো।আরহী কে বললো,

‘আরহী আমার সাথে এসো।ভাইয়া ভাবিকে সামলে নিবে।’

এটুকু বলেই অয়ন আরহীর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো।আরহী কোনো কথা বলছে না।অয়ন আরহীর দিকে তাকিয়ে বললো,

‘মন খারাপ তোমার?’

‘মুগ্ধ হঠাত এমন করছে কেনো আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।’

‘ভাবিকে ভাইয়া ম্যানেজ করবে।বাট ভাবির ওভাবে চিল্লাচিল্লিতে তোমার মন খারাপ হয়েছে তাইনা?’

‘না তেমন কিছু নয়।’

‘আমি চোখ দেখলে বুঝতে পারি।’

‘আজ আপনি ভালোই কথা বলছেন কিন্তু।’

‘আজ তোমার মন খারাপ এজন্য।একটা লবন যুক্ত চা খাওয়াবে প্লিজ।’

‘চা খাবেন।’

‘আজ তুমি খাওয়ালে খাবো।
চা খেতে খেতে তোমার একটা ছবি আঁকবো।’

‘রিয়েলি।’

‘হুম। আর এরই মাঝে ভাবির মন ভালো হয়ে যাবে আর ভাবি তোমার কাছে চলে আসবে রাগ করেছো কিনা জিজ্ঞেস করতে।ভাইয়া ভাবির মন ভালো করেই ছাড়বে।’

আয়াস উত্তেজিত হয়ে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে আর আমাকে ডাকছে,

‘মুগ্ধতা প্লিজ ওপেন দ্যা ডোর।প্লিজ মুগ্ধতা।’

আমি নিশ্চুপ আছি।আয়াস আবার বলছে,

‘আমি কি করেছি মুগ্ধতা।প্লিজ আমাকে বলো।’

আমি চুপ করে আছি কোনো কথা বলছি না।

‘আমার অপরাধ টা কি বলো।আমি কি অন্যায় করেছি সত্যি বুঝতে পারছিনা।তুমি চাইলে আমি আমি পুরা ক্যান্টনমেন্ট এর মাঝে একশ বার কান ধরে ঘুরবো।তবুও বলো আমি কি করেছি।’

আমি এবার ও কোনো উত্তর দিলাম না।আয়াস আবার ও বললো,

‘তুমি কি দরজা খুলবে না।আমাকে টেনশন দিও না প্লিজ মুগ্ধ।আমার সামনে থেকে যা খুশি বলো।বাট দরজা বন্ধ করে থেকোনা।’

আমি চুপ করে কেঁদেই যাচ্ছি।আয়াস এবার কঠিন সুরে বললো,

‘তুমি খুলবে নাতো।ওকে ফাইন বাইরে এসে আমাকে আর পাবে না।আমার মুখ আর দেখতে হবেনা তোমাকে।’

আয়াসের এই কথাটা শুনে ভয় পেয়ে গেলাম আমি।দ্রুত দরজা খুলে দিলাম।আয়াস অত্যান্ত মন খারাপ করে অসহায় মুখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আয়াসের অসহায় মুখ দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না।আয়াস কে জড়িয়ে ধরে ভীষণ জোরে কেঁদে দিয়ে বললাম,

‘আমার ভাগ্য এত খারাপ কেনো আয়াস।কেনো সত্যিকারের ভালবাসা আমার ভাগ্য নেই।আমার অপরাধ টা কি আয়াস।আমি কি খুব খারাপ যে কেউ ভালবাসে না আমাকে।’

‘মুগ্ধতা, মুগ্ধতা এমন কোনো ব্যাপার নেই।কে বলেছে তুমি খারাপ আর তোমার ভাগ্য খারাপ।আর কে বলেছে তোমাকে কেউ ভালবাসে না।’

‘কেউ ভালবাসে না আমাকে।আপনিও আমাকে ভালবাসেন না।কেনো ভালবাসেন না আয়াস।কেনো কেনো কেনো?আমি এখনো ভালো বউ হতে পারিনি এইজন্য।নাকি আমি আপনার বউ হবার যোগ্য না।আমি মানছি আমার লাইফে কেউ ছিলো আমি আপনাকে অনেক কিছু বলেছিলাম কিন্তু আমি ভালো মন্দ ভেবে বলিনি।ওই একটা ভুল ছাড়া আমি কি ভুল করেছি।বিয়ের পর কি আর আমি অতীত নিয়ে ভেবেছি।আমি তো সব অতীর ভুলে গিয়েছি আপনি কেনো আপনার অতীত কে ভুলতে পারছেন না।’

‘কোন অতীত, কিসের অতীত।আর কি বললে আমি তোমাকে ভালবাসিনা।জানতে চাও তোমাকে ভালবেসে পাবার জন্য কত কি করেছি।’

‘আপনার আর আরহীর অতীত।আমি সব বুঝতে পেরেছি।আপনার আর আরহীর রিলেশন ছিলো।কেনো আরহীকে কষ্ট দিয়ে আমাকে গ্রহন করলেন।কেনো এট নাটক।দুজনের যদি রিলেশন ই ছিলো কেনো দুজনে বিয়েটা করলেন।আপনাদের কোন নাটকে আমাকে জড়ালেন।কি শত্রুতা আমার সাথে।আরহীর কিসের প্রতিশোধ নেওয়ার ছিলো। সব আপনি জানেন।’

‘মুগ্ধতা তোমার সব প্রশ্নের উত্তর এক্ষুনি দিচ্ছি আমি।বাট তার আগে আমি এটা জানতে চাই তোমার চোখে পানি কেনো?কিসের কষ্ট মুগ্ধতা।কেনো কাঁদছো, কেনো কষ্ট পাচ্ছো।আরহী, সারিকা যার সাথেই আমার রিলেশন থাকুক তোমার তো কষ্ট পাবার কথা নয়।তুমি তো ভালবাসো না আমায়।’

কাঁদতে কাঁদতে আয়াসের গেঞ্জি বুকের কাছে খামচে ধরে বললাম,

‘ভালবাসি, ভীষণ ভালবাসি।নিজের থেকেও বেশী ভালবাসি।’

আমার বলা ভালবাসি শব্দ টা আয়াসের কান ভেদ করে মস্তিস্কে প্রবেশ করে নিউরন নিউরণে ছড়িয়ে পড়লো।আয়াস আমাকে এবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে বললো,

‘পৃথিবীর সব থেকে দামি কথাটা শোনার সৌভ্যগ্য আজ হলো।আজ আমি পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষ। আমার এই জীবনে আর কিছু চাওয়ার নেই।’
#তুমিময়_বসন্ত
২৬.
#writer_Mousumi_Akter

‘মুগ্ধতা আমার জীবনের সব থেকে বড় উইকনেস কি জানো?’

আয়াসের এমন প্রশ্নে আমার মাঝে কোনো হেলদোল প্রকাশ পেলোনা।আমি কেঁদেই যাচ্ছি।আমার দিক থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে আয়াস বললো,

‘তোমার চোখের পানি।পৃথিবীর এমন কোনো কারণ নেই যেটা আমাকে কষ্ট দিতে পারে।বাট তুমি কাঁদলে তোমাকে কষ্ট পেতে দেখলে আমার ভেতরে তীব্র যন্ত্রণা হয়। পৃথিবীর সব প্রেমিকের ই বোধহয় এমন হয়।যাকে ভালোবাসে তার চোখের পানি সহ্য করতে পারে না।তার কষ্ট দেখতে পারে না।একজন প্রেমিক তার প্রিয়তমার মুখের হাসির জন্য অনেক অসম্ভব কেও সম্ভব করতে পারে।অনেক ভয়ংকর কাজ ও নিমিষেই করতেই পারে।প্রেমিকার মুখের হাসি প্রেমিক হৃদয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ প্রশান্তি এনে দিতে পারে।তুমি কাঁদছিলে,তোমার চোখ দিয়ে পানি বেরোচ্ছিলো,তুমি ছটফট করছিলে যন্ত্রণায় তোমার চোখের পানিতে লেপ্টে যাওয়া কাজল দেখে আমার বুকের এই খান টায় তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছিলো।সেই যন্ত্রণা বোধহয় কয়েক যুগেও কমবে না মুগ্ধতা।তোমার প্রতি আমার ভালবাসা এতটায় তীব্র আর গভীর।টেনশন এ আমি প্রায় পা* গ * ল হয়ে যাচ্ছিলাম।তোমাকে কষ্ট পেতে দেখে বুঝতে পারছিলাম না কিভাবে তোমার কষ্ট টা কমাবো।পৃথিবীতে যদি এমন কোনো ম্যাজিক থাকতো সে ম্যাজিকের বিনিময়ে তোমার ভেতরের সব কষ্ট নিংড়ে আমার ভেতরে নিয়ে নিতাম।পৃথিবীর সব সুখ তোমার মাঝে এনে দিতাম।’

আয়াসের দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখ অশ্রুসিক্ত।ওর ও কি আমার মতোই কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু ওর কেনো কষ্ট হবে।কাঁদতে কাঁদতে হেচকি তুলে বললাম,

‘আপনি আমাকে ভালবাসেন?’

আয়াসের চোখজোড়া গভীর চাহনিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।সে চোখে ভীষণ যন্ত্রণা, ভীষণ কষ্ট ক্লিয়ার বোঝা যাচ্ছে।পুরুষ মানুষ তাই হয়তো আমার মতো ভ্যা ভ্যা করে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারছে না।

আয়াস একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললো,

‘আচ্ছা আমার চোখের দিকে তাকাও মুগ্ধ।’

এই প্রথমবার আয়াস আমাকে মুগ্ধ বলে ডাকলো।আমার কাছের মানুষ গুলো এতদিন যেভাবে ডেকেছে।আজ আয়াস ও আমাকে তাদের মতোই মুগ্ধ বলে ডাকলো।আয়াসের মুখের মুগ্ধ ডাকটা যেনো আরো বেশী মধুর লাগছে।অন্য সবার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা লাগছে শুনতে।ভাললাগার আরেকদফা বেড়ে গেলো আমার।আয়াসের চোখের দিকে তাকালাম আমি।

আয়াস আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো,

‘বহুকাল ধরে শুনে আসছি চোখ নাকি মনের কথা বলে।আমার চোখ কি কিছুই বলে না মুগ্ধ।আমার চোখ দেখে কি আজ ও সন্দেহ হয় তোমার।’

নিজেকে সামলে নিয়ে এবার বললাম,

‘তাহলে আরহীর সাথে কি আপনার।কি ছিলো আপনাদের।কেনো দুজনের রিলেশন থাকার পরেও আমাকে বিয়ে করলেন।আমি দুই হাত চুলের মধ্য দিয়ে শক্ত ভাবে চুল টেনে মাথা নিচু করে বললাম,আমি জাস্ট পা* গ * ল হয়ে যাবো এসব ভাবতে ভাবতে।প্লিজ আমায় বলুন।আপনারা দুজন কি লুকাচ্ছেন।’

আয়াস আমার চুল থেকে হাত দুটো সরিয়ে নিয়ে বললো,

‘আরহীর সাথে আমার কোনো রিলেশন ছিলো না মুগ্ধ।আরহী আমার চোখে শুধুই তোমার বোন আর কিছুই না।তোমাকে পেতে আমাকে সাহায্য করেছে এটুকুই।আচ্ছা আমাকে কি এতটা খারাপ পুরুষ মনে হয় তোমার।যে একটা মেয়ের সাথে রিলেশন করে তাকে কষ্ট দিয়ে তার ই বোন কে জোর জবরদস্হি বিয়ে করবো।আচ্ছা আমার সাথে এতদিন থেকে কি তোমার তাই মনে হয়।আমি কি এতটায় ব্যাক্তিত্বহীন জঘন্য পুরুষ যে কোনো নারীর মন ভাঙবো।নারীর মন কে আমি সব থেকে বেশী রেস্পেক্ট করি।নারীর মনের সাথে পৃথিবীর কোনো কিছুর ই তুলনা হয়না। সৃষ্টিকর্তা কত যত্ন নিয়ে নারীর মন সৃষ্টি করেছেন।এত মায়া,এত মমতা,এত ভালবাসা নারীর মনে থাকে যার হাজার ভাগের এক ভাগ ও পৃথিবীতে নেই।নারীর মন এ যে পুরুষ আঘাত করে সে পুরুষের মৃ*ত্যু*দন্ড হওয়া উচিত।নারী আছে বলেই পুরুষ মানুষ পরিপূর্ণ । নারী আছেই বলেই পুরুষের অস্তিত্ব আছে পৃথিবীতে।নারীর ভালোবাসায় একটা পুরুষ পৃথিবীর সর্বোচ্চ সুখ অনুভব করতে পারে।একজন মা, একজন স্ত্রী,একজন বোন,সবার নিঁখুত ভালবাসা পেয়ে একটা অগোছালো পুরুষ নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারে।নারী মানেই ভালোবাসা।যে পুরুষ একজন নারীর প্রকৃত ভালবাসা পেয়েছে সে পুরুষ কে সুখের জন্য আর সামনে পেছনে তাকাতে হয় নি।ভালবাসাময় ওই নারীটা সাথে থাকলেই সারাক্ষণ ভালবাসা অনুভব হয়।নারী পুরুষ মিলেই সুন্দর পৃথিবী। ‘

‘দেখুন আমি এত কিছু শুনতে চাইনা।আমাকে শুধু এটুকু বলেন আরহীর সাথে কি আপনার?আরহী কার সাথে রিলেশন করতো।ব্যাস এটুকু জানতে চাই।’

‘আরহীর সাথে আমার অত্যান্ত ভালো রিলেশন সেটাও তোমার জন্য।শোনো আমি একটু বুঝতে শেখার পর থেকেই মা বলতো কোথাও প্রেম করার প্রয়োজন নেই।তোমার জন্য মেয়ে দেখে রেখেছি।মায়ের কথায় অনেক আপত্তি জানিয়েছিলাম আমি।চিনিনা জানিনা এমন একটা মেয়েকে কেনো বিয়ে করবো।একদিন দেখলাম আরহী আমাদের বাড়িতে।মা পরিচয় করালো এটা আরহী মেয়ের কাজিন।সেখান থেকে আমাদের টুকটাক কথা হতো।বসন্ত উৎসবের দিন মা বললো যাও মেয়ে দেখে আসো। দেখে পছন্দ না হলে আমি আর জোর করবোনা।বসন্ত উৎসবে অনেক মানুষের ভীড়ে আরহী আমাকে ইশারায় দেখালো তোমাকে।তোমার হলুদ শাড়ি, লাল লিপিস্টিক, মাথায় ফুলের ব্যাড়।আমার ব্যাস একবার দেখেই কাজ হয়ে গিয়েছিলো।আমার বসন্ত টা তুমিময় বসন্ত হয়ে গেলো।দূর থেকে কতগুলো ছবি তুলেছিলাম।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখেছিলাম।নারী এতটাও মায়াবতী,সুন্দরী হতে পারে।নামের সাথে চেহারার দারুণ মিল পেলাম।আসলেই তুমি মুগ্ধতায় ভরপুর ছিলে।প্রথম দেখাতে ভীষণ ভালো লেগে যায়।এদিকে মায়ের ও দীর্ঘদিনের পছন্দ। তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক তরফা ভীষণ ভালবেসে ফেললাম।তবে তোমার তখন অভির সাথে রিলেশন। অভিতে মগ্ন তুমি আমার মতো হ্যান্ডসাম ছেলে তো তোমার চোখেই বাঁধলো না।আমি যখন জানলাম তোমার অন্য জায়গা রিলেশন আছে আমি বাদ দিয়ে দিলাম তোমাকে নিয়ে ভাবনা।ভেবেছিলাম কারো ভালবাসা কেড়ে নেওয়া উচিত নয়।তোমার অধিকার আছে যাকে ভালোবাসো তার সাথে জীবন কাটানোর।কিন্তু তোমার মা বাবা,খালা খালু সবাই আমাকে বললো,মুগ্ধতা ছোট মানুষ ঠিক আর ভুল বোঝার বয়স ওর হয় নি।নিজের জীবনে সঠিক মানুষ চয়েজ করার ক্ষমতা মুগ্ধতার হয়নি।মুগ্ধতা যে ছেলের সাথে রিলেশন এ আছে ছেলেটা ভালো নয়।ছেলেটার চরিত্রে সমস্যা আছে।মুগ্ধতার ওই ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে গেলে মুগ্ধতার জীবন টা নষ্ট হয়ে যাবে।খোজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম ছেলেটা সত্যি খারাপ।কিন্তু কে তোমাকে বোঝাবে তখন।তুমি কি বুঝতে চাইতে।তোমাকে ভালবাসি আর তোমার জীবন টা যাতে নষ্ট না হয় তাই আরহী তোমার ফ্যামিলির বাকি সবাই মিলে বিয়ের প্ল্যান করে তোমাকে বিয়ে করেছি।আচ্ছা আমি কি ভুল করেছিলাম মুগ্ধতা।সেদিন যেটা করেছিলাম অন্যায় করেছিলাম।কিন্তু আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে কি সেদিন ওই ভুল টা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো।সেদিন ওই ভুল টা না করলে কি একজন প্রেমিক হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারতাম।মুগ্ধতা আরহীসহ বাকি সবাই যা করেছে তোমার ভালোর জন্য বিলিভ মি।শুধু তোমার জন্য।সেদিনের করা অন্যায়ের শাস্তি তুমি চাইলে আজ আমায় দিতে পারো।বলো কি শাস্তি আমাকে দিতে চাও মুগ্ধতা আমি মাথা পেতে নিবো।’

আজ নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।পরিবারের মানুষ গুলোকে চিনতে ভুল করেছি আমি।আজ বুঝতে পারছি মা -বাবার থেকে বেশী সন্তানের ভালো আত কেউ চাইতে পারেনা।আয়াস এর দিকে তাকিয়ে ভাবছি এক জীবনে কতটা পূর্ণ করলে আয়াসের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়া যায়।আমি কি কোনদিক থেকে আয়াসের যোগ্য।সেদিন যার প্রতি ভীষণ রাগ আর ঘৃণা হয়েছিলো আজ তার প্রতি সীমাহীন রেস্পেক্ট আমার।আয়াস এর তুলনা সত্যি কারো সাথে করা সম্ভব নয়।আমার জীবন টা ছন্নছাড়া হয়ে যেতো আয়াস আমার সব অবহেলা মেনে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো আমার ভালবাসার।মাঝে মাঝে ভীষন আনন্দে ও কাঁন্না আসে।আমার এবার তাই হলো।আয়াসের ভালোবাসার গভীরতার কথা ভেবে ভীষন কাঁন্না পাচ্ছে।নারীকে এতটা সম্মান করে যে পুরুষ সে পুরুষ সত্যি মহান।আবার ও কেঁদে দিলাম আমি।

আয়াস আবার আমার মাথাটা ওর বুকের সাথে নিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,

‘ হৃদয়ের স্পন্দন শোনো তুমি মুগ্ধতা।প্রতিটা স্পন্দনে তোমার জন্য ভালবাসার কথা বলছে।ঠিক এভাবেই আমার বুকের বা পাশে তুমি থাকবে। ‘

আমার আবেগপ্রবন কাঁন্না যেনো থামছেই না।

আয়াস এবার দুষ্টুমি করে বললো,

‘আমি কি আদর করছি না কাঁন্না থামাচ্ছো না।আরে বাবা করবো তো আদর।তোমার হাজবেন্ড অনেক রোমান্টিক একটা ছেলে একদম কেঁদো না।’

এবার আমি কাঁন্নার মাঝে হেসে দিয়ে বললাম,

‘এত ফাজিল কেনো আপনি?’

‘তোমার মুখে এই কথাটা শুনতেই আমার সব ফাইজলামি।অনেক কিউট লাগে তুমি যখন লজ্জা পেয়ে এভাবে কথা বলো।’

‘দেখছেন আমি কাঁদছি অন্য কারনে আর আপনি উল্টা পাল্টা বলছেন।’

আয়াস আমার কপালে চুমু দিয়ে বললো,

‘আর কেঁদো না কখনো।ভুলেও কেঁদোনা। আমি আছি তো।’

আয়াসের দিকে এবার স্নিগ্ধ নয়নে তাকালাম।আমার ভেতরে আর কোনো চিন্তা নেই,দুঃখ নেই,কষ্ট নেই।রিলাক্সড ভাবে তাকিয়ে রইলাম।

আয়াস আমার চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বললো,

‘যাও আরহীর কাছে যাও।কথা বলো গিয়ে।’

‘আরহীকে প্লিজ কখনো বলবেন না যে আমি মাইন্ড করেছিলাম আপনি আর আরহীকে নিয়ে।’

আয়াস মিষ্টি হাসলো।সে হাসির দিকে তাকিয়ে ভীষণ রকমের ক্রাশ খেলাম আমি।তার মুখের হাসি যেনো সর্বশ্রেষ্ট হাসি।

এদিক ওদিক তাকিয়ে আরহীকে কোথাও দেখলাম না।অয়নের রুমের দিকে গিয়ে দেখি দুজনে চা খাচ্ছে আর হাসছে।আমি একটু শব্দ করে গলা ঝেড়ে নিয়ে বললাম,আমি কি চায়ের পার্টনার হতে পারি।অয়ন আর আরহী দুজনেই হাসি মুখে তাকালো।আমাকে দেখেই বোধহয় দুজন একটু বেশী খুশি হলো।

‘অয়ন খুব এক্সসাইটেড হয়ে বললো,আরে ভাবি এসো এসো। চা খাবে তুমি?তুমি খেলে আমি এখনি বানিয়ে এনে দিবো।’

‘আরহী বললো,নিরীহ দুলাভাই টাকে এইভাবে অত্যাচার করে আসলি তাইতো।’

আরহীর দিকে তাকিয়ে ভীষণ অনুশোচনা হচ্ছে।কিছুক্ষণ আগেই মিস বিহেভ করে ফেলেছি।

‘মন খারাপ করে আরহীকে বললাম,রাগ করেছিস আরহী।কান ধরে বললাম আসলে।’

‘আরহী আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললো,কোনো কিছুর জন্য তোকে কইফত দিতে হবেনা।আমরা তোর আপণজন। রাগ হলে আমাদের সাথেই চিল্লাবি এটাই রুলস।’

‘সত্যি রাগ করিস নি।’

‘অয়ন বললো,না ভাবি তোমার বোন এমনিতে ধুরন্ধর আছে।তবে মেয়ে ভালো কিন্তু।’

অয়ন আর আরহীর মাঝে দেখছি বেশ মিল হয়েছে।অয়ন আজ আরহীর প্রশংসা করছে ব্যাপার টা বেশ ভালোই লাগলো।

দশ দিন পর আয়াস ছুটি নিলো।আয়াসের একমাত্র মামার মৃত্যুবার্ষিকী।আয়াসের মামা আর মামির নাকি একই সাথে মৃত্যু হয়েছিলো।তবে সেটা সাধারণ মৃত্যু নয়।তাদের খু* ন করা হয়েছিলো।মানুষ এত নিষ্টুর হতে পারে কিভাবে।সামান্য একটু ঝামেলায় মানুষ মানুষের প্রা* ণ কেড়ে নিতে পারে কিভাবে।আমি নতুন বউ অনেক কিছুই জানিনা।তবে শুনেছি অনেক ঘটনা আছে আয়াসের মামা -মামিকে নিয়ে।

আমরা গাজিপুরের উদ্দেশ্য রওনা হলাম সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে।এইদিকে এডমিশন ও শুরু হয়ে গিয়েছে।প্রিপারেশন ভালো নেই।তবুও আয়াসের ইচ্ছা আমি যেনো সব জায়গা পরীক্ষা দেই।আমরা একটা প্রাইভেট কার ভাড়া করে গাজিপুর পৌছালাম।গাড়ি এসে সোজা আয়াসের বাড়ির গেটে থামলো।আয়াসের মা বাবা আমাদের জন্য গেটে অপেক্ষা করছিলেন।গাড়ি থেকে নামতেই আয়াসের আম্মা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।শ্বাশুড়ি ও এত ভালো হয় আগে জানতাম না।নিজের মায়ের কাছে আছি নাকি শ্বাশুড়ির কাছে আছি বুঝতেই পারিনা।বাড়িতে প্রবেশ করে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে শ্বাশুড়ির সাথে গল্প জুড়ে দিলাম।এতদিন যশোর কি কি করেছি সব গল্প করলাম।

চলবে,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here