#সত্যি_তোকে_অনেক_ভালোবাসি💖💖
#Part : 16
#ইসরাত_জাহান_প্রভা
নিলয়: আচ্ছা ওড়না দিলো কেনো?(মালিহাকে প্রশ্ন করে)
মালিহা: জানো না??
নিলয়: না তো।।
মালিহা আবার রেগে গিয়ে নিলয়ের হাত থেকে ওড়না টা কেড়ে মাথায় উপর দিয়ে নিলয়কে টেনে এনে এক ওড়নার নিচে দুজনে দাঁড়ালো।।
নিলয়: কী করেতেছো??কিছুই তো দেখতে পারছি না??(এদিক সেদিক তাকিয়ে)
মালিহা: চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো।।
নিলয়: কিছুই তো বুঝতেছি না মালিহা।।
মালিহা: এভাবে ওড়নার নিচে দুজন প্রেমিক প্রেমিকা থাকলে কী করে বলোতো??
নিলয়: বুঝেছি।।
মালিহা: কী বুঝেছো?(লজ্জায়)
নিলয় পকেট থেকে তার ফোনটা বের করে ফ্লাশ জ্বালিয়ে মালিহার মুখের দিকে ধরে বললো,অন্ধকারেও তোমাকে অনেক সুন্দর লাগে।।এটাই তো!!আমি জাতনাম।।😁😁😁
মালিহা রাগে ওড়নাটা সরিয়ে ফেলে দিয়ে বললো,তুমি আমার কচু জানো।।👿👿
মালিহা নিলয়ের কাছে এসে নিলয়ের কলার টেনে ঠিক যখনি নিলয়ের ঠোঁটে ঠোঁট মিলাতে যাবে নিলয় মাথা নিচু করে মালিহাকে ছাড়িয়ে দূরে সরে যায়।।
নিলয়: কী করছো এসব??এগুলো কেউ করে??এগুলো পাপ।।(হাঁপাতে হাঁপাতে)
মালিহা: এত সাধু তুমি??(আশ্চায হয়ে)কাছে এসো একটু।(মজা করে নিলয়ের কাছে আসতে আসতে)
নিলয় একদম ঠেকে গেছে দেয়ালে মালিহা চোখ বন্ধ করে পা উঁচু করে ঠোঁট দুটো পাউট করেছে।নিলয় আস্তে করে সরে গিয়ে “ও আপু গো বাঁচাও” আমার বলে এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
মালিহা চোখ খুলে হাসতে লাগলো।
মালিহা: এতটা সরল কেনো তুমি??অনেক ভালোবাসি তোমাকে নিলয়।।অনেক বেশি ভালোবাসি।।
মালিহা বের হয়ে খুশিতে নাচতে নাচতে নিজের রুমের দিকে যেতে লাগলো।।
…..
ঘাপটি মেরে শুয়ে আছে শুভ।।মিরা কাজ শেষ করে ঘরে এসে দরজা লাগাতেই শুভ মিরাকে ধপ করে কোলে তুলে বিছানায় ফেলে দিলো।।
মিরা: আরে কী করছো শুভ?(অবাক হয়ে)
শুভ: আদর!!
মিরা: তর সইছে না বুঝি!!(ভ্রু কুঁচকে)
শুভ: না মিরা।।(মিরার কাছে এসে)
মিরা: আচ্ছা আগে একটা কথা শুনো।।(শুভকে থামিয়ে)
শুভ: কাল বলিও প্লিজ(মিরার গালে চুমু দিতে দিতে)
মিরা শুভকে থামিয়ে বললো,৫ মিনিট পর এসব শুভ।।আগে শুনো প্লিজ।।
শুভ: আচ্ছা বলো।।(কিছুটা বিরক্তি সুরে)
মিরা:নিলয় আর মালিহা একে অপরকে ভালোবাসে।।মা বাবা যাওয়ার আগে ওদের বিয়েটা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দাও প্লিজ।
শুভ:কী বলছো! কবে এসব হলো?😣😣(আশ্চায হয়ে)
মিরা: আজকেই।।(হাসি মুখে)
শুভ: হায়রে আমার মালিহা…😭😭
মিরা: কী বললে?তোমার মালিহা মানে?(প্রচন্ড রাগে)👿👿
শুভ: আরে আমার মালিহা বোনটা এত বড় হয়ে গেলো।।কাল বাদ পরশো ওর বিয়ে হবে।।আনন্দই আনন্দ।।তাই না?(ভয় পেয়ে)
মিরা: হুম তা তো বটেই।।(হাসি নিয়ে)
মিরা: প্লিজ কাল মা বাবার সাথে কথা বলিও।।প্লিজ।।
শুভ: আচ্ছা।।বলবো এখন।।এখন তো কাছে আসবে।।
শুভ মিরাকে কাছে টেনে এনে মিরার গালের চারপাশে হাত দিয়ে বোলাতে লাগলো।।মিরা চোখ বন্ধ করে ফেললো।।শুভ মিরার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো আর হাত দিয়ে মিরার পিঠের ব্লাউজের হুক খুলতে লাগলো।।মিরা শুভকে ছেড়ে শুভর গালে মুখে পাগলের মতো কিস করতে লাগলো।।ধীরে ধীরে প্রবল উত্তেজনায় তার হারিয়ে গেলো ভালোবাসার পবিত্র মিলনে।।
…….
লাবিবের চা নিয়ে এলো পায়েল।।লাবিব মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।।
পায়েল: এই যে কী দেখছেন?মেয়েদের দেখা আপনার স্বভাব নাকি?(রাগে)
লাবিব লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করলো।।
লাবিব: আসলে আমি প্রচুর ঢপ মারি মানুষ কে।।কারন মানুষের প্রশংসা করলে দাম পাওয়া যায়।।কিন্তু আজ প্রথম বার আপনাকে দেখলাম যাকে দেখে আমার প্রশংসা করার ভাষা হারিয়ে গেছে।।যে কথা গুলো বলতে বলতে আমি অভ্যস্ত সেই কথা গুলো হারিয়ে গেছে।।আপনি সত্যি অনেক সুন্দর।।(মাথা নিচু করে লজ্জায় কথা গুলো বলে)
পায়েলের খুব খারাপ লাগলো ছেলেটাকে না জেনে এতগুলা কথা শুনায় দিছে বলে।।
পায়েল: সরি।।আসলে ওভাবে তাকিয়ে ছিলেন তো তাই বলেছি।মন খারাপ করিয়েন না।
লাবিব:না না।আপনি একদম ঠিক আছেন।।আপনি আমার ভুল ধরায় দিয়েছেন।।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ☺☺
লাবিব হাসি মুখে চা খেয়ে চলে গেলো পায়েল মন খারাপ করে নিজের রুমে বসে আছে।।
মালিহা: কী হয়েছে রে মুড অফ??(পায়েলের পাশে এসে)
পায়েল: কিছু না আপু।।
মালিহা: আমাকে বল।।পারলে সমাধান দিতে পারি।।😊😊
পায়েল মালিহাকে সব খুলে বললো।।
মালিহা: তুই কী লাবিবকে ভালোবাসিস??
পায়েল: জানি না।।ওর জন্য মন খারাপ লাগছে।।
মালিহা: ওয়েট।।
পায়েল: কোথায় যাচ্ছিস??(অবাক হয়ে)
মালিহা: তুই বস।।আমি আসতেছি।।(যেতে যেতে)
……
ছাদে দাঁড়িয়ে চুপচাপ করে দাঁড়িয়ে আছে লাবিব।।
মালিহা: এই যে ভাই?(পেছন থেকে ডেকে)
লাবিব পেছনে ঘুরে মাথা নিচু করে বললো,জ্বী বলেন।।
মালিহা: মাথা নিচু কেনো?ওপরে তুলুন।।
লাবিব: সরি আপু আমি একজনকে দেখেছি।।আমি আর চাই না অন্যকাউকে দেখতে।।
মালিহা: কাকে দেখেছেন?পায়েল কে?
লাবিব: জ্বী।।
মালিহা: ভালোবাসেন তাকে?
লাবিব: জানি না।।
মালিহা: যদি ভালোবেসে থাকেন তাহলে দেরী না করে ওকে বলে ফেলেন।।লেট করলে কিন্তু না ও পাইতে পারেন।।
বলেই যেতে লাগলো মালিহা।।লাবিব চুপ করে আশেপাশে তাকিয়ে অনেক কিছু ভাবছে আনমনে।।
…..
শুভর মা,বাবার রুমে,,
শুভ: মা আসবো?
মা: আরে আয় বাবা।।
শুভ: একটা কথা ছিলো মা।।(সোফায় বসে)
মা: বল।।
শুভ: বাবা কোথায়?
বাবা: এইতো আমি শুভ।।(ওয়াশরুম থেকে বের হতে হতে)
মা: বলে ফেল তো।।কী বলবি?
শুভ: আসলে মা নিলয় আর মালিহা একে অপরকে ভালোবাসে।।আমি আর মিরা চাচ্ছি যে তোমরা যাওয়ার আগে ওদের ও বিয়েটা দিয়ে দিতে।।
বাবা: হুম।।ওকে তাহলে তো মালিহার মা,বাবাকে ডাকতে হয়।।
মা: আমি ফোন করে বলবো এখন।।
শুভ: Thanks মা,বাবা।।
বাবা: তোমার বোনটারও একটা ব্যবস্থা করো তাহলে।।
শুভ: হোক ওরটাও হয়ে যাবে এখন।।
সকলে একসাথে হাসতে লাগলো।।
…….
নিলয়ের রুমে,,,
নিলয় পড়া পড়ছে আরে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে।।
নিলয়: এ জাতীয় নিউক্লিওফিলিক প্রতিস্থাপন দুই ধাপে ঘটে।।বিক্রিয়াটি প্রথম ক্রম বিক্রিয়।।(ও মালিহা ও মালিহা আই লাবু,আই লাবু)
মালিহা নিলয়ের রুমে ঢুকে নিলয়ের কথা শুনে নিলয়কে জড়িয়ে ধরতেই নিলয় “ও মাগো,ও আপু গো ভূত আমারে জড়ায় ধরছে গো।।ও মালিহা বাঁচাও আমারে” বলে চোখ বন্ধ করে দৌড় দিয়ে রুমের দরজার সামনে থেকে ঘুরে আবার ভেতরে আসতে থাকে।।মালিহা হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়লো প্রায়।।নিলয় দৌড়ে মালিহাকে না দেখে মালিহাকে নিয়ে ধাক্কায় বিছানার ওপর পরে যায়।।মালিহা তো ভয়ে নিলয়ের বুকে মাথা গুজে দিয়েছে।।নিলয় ভয়ে চোখ বন্ধ করে মালিহাকে জড়িয়ে ধরেছে নিজের অজান্তেই।
পায়েল নিলয়ের চিৎকার শুনে রুমে এসে নিলয় আর মালিহার কান্ড দেখে হাত তালি দিতে থাকে।চমকে উঠে নিলয় চোখ খুলে মালিহাকে কাছে দেখে আ আ আ করে চিৎকার দিয়ে দূরে সরে যায়।।মালিহা নিলয়ের চিৎকার শুনে হাত দিয়ে কান চেপে ধরে।।
মালিহা: নিলয়ের বাচ্চা কানের পোকা সব বের করে ফেললি।।থাম একটু থাম।।
নিলয়: এই তুমি কখন এলে??জানো আমাকে না ভূত জড়িয়ে ধরেছে মালিহা।।আমিও ধীরে ধীরে বোধ হয় ভূত হয়ে যাবো মালিহা।।আমাকে বাঁচাও।।(মালিহাকে ধরে মায়াকান্নায়)
পায়েল: কী রে আপু!!ভাইয়া এসব কী বলে?
মালিহা: আরে বাবু কাঁদছো কেনো??আমি আছি তো।।আমি থাকতে আবার ভূত লাগে?আমি তোকে মেরে ভূত বানায় দিবো।।বেয়াদপ।।তোরে জড়ায় ধরছি আমি।।কোনো ভূত না।।(নিলয়ের কলার টেনে নিলয়কে ঝাঁকি দিতে দিতে)
নিলয়: সরি মালিহা।।ভুল হয়ে গেছে।।ছেড়ে দাও একটু।।আর হবে না।।(ঝাঁকি খেতে খেতে)
মালিহা নিলয়কে ছেড়ে দিয়ে বললো,এই তোমার সমস্যা কী?এত ভয় পাও কেনো?(রাগে বিরক্ত নিয়ে)
নিলয়: ওভাবে পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরলে ভয় তো পাবোই।।
মালিহ: তাহলে কাছে আয়।।তোকে সামনে থেকে জড়িয়ে ধরি।।আয়।।(হাসি নিয়ে)
নিলয়: নাহ।।আ..আজ না।।আরে..আ..আরেক দিন।।(তোতলিয়ে)
মালিহা: তাহলে বাবু কাছে এসো একটা কিসি দেই।।
মালিহা নিলয়ের কাছে এসে ঠোঁটে ঠোঁট বসানোর আগেই নিলয় এক দৌড়ে পালিয়ে চলে গেলো।
মালিহা:যাহ!আজকেও পালালো?(হতাশায়)
পায়েল:আপুরে ভাগ্য করে একটা জামাই পেতে চলেছিস।।(হাসতে হাসতে)
মালিহা: হুম।।আমার জামাই বেষ্ট।।(কিউটি হাসি দিয়ে)
চলবে,,,,সত্যি