তোমাতে আমি মুগ্ধ পর্ব -০৮

#তোমাতে_আমি_মুগ্ধ (৮)
#ফারহানা_জান্নাত

“সুখ, সুখ পাখি আজ অন্য কারো জন্য সুখ খোঁজে। এই পিচ্চি মেয়ে’টা ও একদিন অন্য কারো বুকে মুখ লুকিয়ে সুখ খুঁজবে। জেলাস হই কেনো আমি? আমি কি বা”রো ভা”তা”র!”

–আহনাফ নিজের কথায় নিজেই চমকে উঠে। সে এসব কি ভাবছে! আসলে ছেলে মানুষ মানেই যখন যা দেখবে তাই পছন্দ করে। আর তা যদি হয় নারী তাহলে তো কোনো কথায় নাই। বউ থাকতে তারা অন্য মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়। আর বউয়ের প্রতি আকৃষ্ট হলে কি হবে?

“সামনে থেকে সরে দাড়ান, এই রকম একটা হাতির সমান কেউ দরজার দাঁড়িয়ে থাকলে যাবো কিভাবে? আমি যে মাথায় ব্যাথা পেলাম, তো বলতে পারতেন। রুমাইশা দেখি কি হয়ছে, আরে ভাই আপনার বন্ধু’র বোন হই একটু তো সেবা আশা করি।”

“সরি!”

–আহনাফ হাবলার মতো রুমাইশার দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটা কপালে হাত দিয়ে রাগি চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রুমাইশা আবারো একটা ঝাড়ি মেরে বলে,

“আপু তোমার বিএফ’কে ভদ্রতা শিখিয়ে দিয়েন। এই ভাবে একটা নবজাত শিশুকে আঘাত করে। উনাকে ডাক্তার কে বানিয়েছে! উনার তো কসায় হওয়া দরকার।”

“আজব! আমি কি করলাম? তুমি খামবার মতো না দেখে হাঁটো কেনো? আমি কি বলছি উঠের মতো হাঁটতে নাকি। উনি আসছে নবজাত শিশু, কয়দিন পর সন্তানের মা হবে আর।”

“হবো না, আমার তো আর জামাই নাই যে বাচ্চার মা হবো। জামাই ছাড়া মা হওয়া যায় না জানেন না!? নাকি ডাক্তার হয়ছেন ওয়ান পাশ করে। আসলে দেখে তো কসাইয়ের মতোই লাগে। তাহলে ডাক্তার কিভাবে বলি বলেন?”

“চুপ, সিনিয়রদের সাথে ভালো ভাবে কথা বলতে হয়। চুপচাপ নিচে গিয়ে গাড়িতে বসো। তোমার ভাইয়ের বিয়ে না দিয়ে, তোমাকে বিয়ে করানো উচিত।”

“বিবাহিত মেয়েদের আর বিয়ে করতে নেই ডাক্তার সাহেব। প্রথম ভালোবাসা, ভালোলাগা একজন ছিনিয়ে নিছে। এখন নতুন করে কাকে বিয়ে করবো?”

–রুমাইশা কথাটা বলতে গিয়ে ও বলতে পারে না। পাশেই পারভেজ, মুন্নি, আর রাহুল হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায়। একটা তো খাম্বা আর একটা ছাগল, এই দু”টার কি ঝগড়া করা মানায়?

“রাহুল তোর বোনকে বিয়ে দে প্লিজ। দেখবি দিনে ৩ বেলা শাশুড়ির ঔষধ পেয়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। বেশি আদর দিয়ে বাঁদর বানিয়ে দেস না বুঝলি। নয়তো গলায় ঝুলিয়ে থাকবে।”

“আপনার গলায় তো আর ঝুলছি না। আর ঝুলিয়ে থাকলে বা কি! আমি যে চিক্না, আমাকে কোলে নিয়ে আপনার এক্সেসাইজ করা উচিত। ভুঁড়ি টা যদি একটু কমে।”

“ভুঁড়ি! আরে গাঁধি ভুঁড়ি কোন টাকে বলো!? আমার পেট এতো স্লিম। এমন ছেলে দুইটা আছে নাকি।”

“আসলেই দুইটা থাকবে কিভাবে? আপনার মতো ভালো কসাই তো একটাই।”

–প্রথমে আহনাফে’র ভালো লাগলে ও, পড়ের কথাটা শোনার পড় চিল্লিয়ে উঠে। রুমাইশা একটা মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে নিচে যায়।

“এরে কোথায় কুড়িয়ে পাইছিলো তোর বাবাই? রাস্তায় তাই না। তাছাড়া এমন তার ছেঁড়া হতো না।”

“আহনাফ তুই কি দিন দিন বাচ্চা হয়ে যাচ্ছিস! রুমাইশা না-হয় ছোট, তুই ও ওর মতো ঝগড়া করছিস কা? তুই তো কম না। ওর কথার পিঠে কথা মিলিয়ে ঝগড়া করছিস।”

“তোর বোন আমাকে কথা শুনাবে আমি চুপ থাকবো নাকি? এবার লাগতে আসুক। গালে ঠাটিয়ে দিবো দুইটা।”

“ও কিন্তু কম না, দেখিস বাঁদরের মতো গলায় ঝুলিয়ে না পড়ে। একবার ঝুলিয়ে পড়লে আর কিন্তু টেনে নামাতে পারবি না।”

“ঝুলিয়ে থাকুক না, কে বারন করছে? কিন্তু তোর বোন তো আমাকে পাত্তা দেয় না।”

“কি বললি বুঝি নাই, জোরে বল’রে ভাই একটু।”

“বললাম, আজ’কে তো রিতুর বাসায় যাচ্ছিস। বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চার বাবা হয়ে যাবি। অথচ আমি একটা কচি খোঁকা হয়ে থাকলাম। কবে যে বিয়ে করবো।”

“চাইলে আমার আগেই বাবা হতে পারতি। কিন্তু দোষ তোর ও আছে। বউ থাকতে পরকীয়া।”

–রাহুল তাড়াতাড়ি গাড়িতে গিয়ে বসে। একটা গাড়ি ভাড়া নিয়েছে তারা ৩ ঘন্টার জন্য। যেতে আসতে সময় লাগবে ২ ঘন্টা। আর কথা বলার জন্য ১ ঘন্টা যথেষ্ট। আহনাফ হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে।

“রাহুল কি বলে গেলো! আমি কি পরকীয়া করছি? কিন্তু বউ নিজেই পাত্তা দেয় না আমি কি করবো। শা’লা বাবু শা’লা ডেকে গেলাম আজীবন। কিন্তু আমার তো শা’লা হবে মুন্নির ভাই।”

–মুন্নি আহনাফ কে ধাক্কা দেয়। আহনাফ কি কি বলতে বলতে লাফিয়ে উঠে। হুট হাট এতো ভাবনায় ডুবে যায় কেনো সে? সেটা যেনো নিজেই বুঝতে পারছে না।

“ভাইয়া তোর কি মনে হয়? রিতু আপুর বাবা তোকে মেনে নিবে! আজ কিন্তু রিতু আপুর ভালোবাসার পরিক্ষা হবে। বেকার অবস্থায় যদি তোর হাত ধরে থাকতে পারে। তাহলেই বোঝবো আপু তোকে ভালোবাসে।”

“এসব বলিস না, ভয় লাগছে আমার। জানি না আমার শশুর রাগি না ভেজা বেড়াল। তোদের জেদ, আরে আমি আগে কিছু করি! তারপর বিয়ে করবো। তা না করে এখনি বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগছিস।”

“কেন রে ভাই! বিয়ে করা তো ভালো। কতো বছর আর একা একা থাকবি? মুন্নি তো চাইলে আমি এখনি বিয়ে করবো। কিন্তু না মেডাম এখনো ছোট বাচ্চা নাকি।”

–মুন্নি হালকা হাসে, ৩টা বছরের রিলেশন কখনো ঝগড়া হয়নি তাদের মধ্যে। বন্ধু বন্ডিং অনেকটা সুন্দর তাদের। মুন্নির হাসি দেখে রুমাইশা দাঁতে দাঁত চিবিয়ে ধিরে বলে,

“হ্যা তো বিয়ে করেন কে মানা করছে? বিয়াত্তা বেডা পাবে। বিয়াত্তা পোলা গো বিয়ে করার কি মজা সে বুঝবে। এ্যা আইছে বিয়ে করবি করনা এখানে কে বলতে বলছে?”

“চুপ কি বলো এসব! মুন্নি জানে না আমি বিয়ে করছিলাম। আসতে কথা বলো, ওয়েট ওয়েট তুমি কি কোনো ভাবে জেলাস?”

“জেলাস মাই ফুট, আপনার মতো হাতি’র জন্য জেলাস আর আমি? হাহা পাগলা কুত্তা কামড় দিলো নাকি আপনাকে? শোনেন ভাই।”

“ভাই না বলে ডাক্তার বলো, সেটাই তোমার মুখ থেকে বের হলে সুন্দর লাগে। যানো যখন ডাক্তার বলো তখন তোমার চেহারা গ্লো করে। ভাইয়া যখন বলো তখন ইঁদুরের মতো দাঁত বের হয়।”

“কিহ! এই আমি ইঁদুর তাই না? অনন্ত আমি আপনার বউয়ের থেকে ১০০ গুন সুন্দর ওকে। হুহ্ ডাক্তারের সাথে প্রেম করে ভাব নেয়। দেখে নিয়েন, আপনার থেকে বড় ডাক্তার আমার জামাই হবে। যে মেডিকেল স্টুডেন্ট দের ক্লাস ও পাবে।”

“এতো সস্তা না ওকে! দক্ষতা না থাকলে ক্লাস নেওয়া এতো সহজ না। তোমার মতো গাঁধি তার ছেড়া মেয়ে’কে কোনো ডাক্তার বিয়ে করবে না। হাবা গোবা কেউ বিয়ে করবে।”

“তাহলে আপনি ডাক্তার না? ওহ আচ্ছা আপনি যে হাবা গোবা সেটা জানতাম না। আচ্ছা আজ থেকে তাহলে হাবা ভাই বলবো? না না গোবা ভাই বলি। কোনটা ভালো লাগবে বলেন?”

“চুপ, বেয়াদব হাবা গোবা কি হ্যা? লজ্জা করে না এসব বলতে? চড় দিবো কিন্তু দুইটা।”

“তোরা দুজন থামবি? আমি টেনশনে মরি আর তোরা? আরে ভাই বেশি কথা বললে একদম পঁচা পানিতে চুবিয়ে মারবো।”

“আমরা ধিরে কথা বলছি, তোর কানে কথা কিভাবে যাবে? তার মানে আমাদের কথার দিকেই তুই কান পাতে আছিস তাই না! নির্লজ্জ, অন্যের কথা লুকিয়ে শোনা হয়’না জানিস না?”

“ওরে সাধু বাবা, আমরা পাশে বসে কথা বলছো আর আমি শুনলেই দোষ। দেখিস আমার বোন’কে তোর থেকে ভালো কারো সাথে বিয়ে দিবো। তোর মতো হাবলার সাথে বিয়ে দিবো না।”

“আমি কি হাবলা?”

–আহনাফ চোখ ছোট ছোট করে বলে, রাহুল মাথা নাড়িয়ে বুঝায় হ্যা, তুই হাবলা। তুই হাবলার বস, আহনাফ চোখ মুখ শক্ত করে ছিটে হেলান দেয়। রুমাইশা রাহুলের কাঁধে মাথা রেখে কল্পনার ডুব দেয়।

“আমি তোমার কাছে রাখবো,
আর মনের কথা হাজার।
দিয়ে তোমার কাজল রাখবো,
আর সারা দিনটা আমার।
তুমি বৃষ্টি হয়ে নামলে,
তুমি বৃষ্টি হয়ে নামলে,
আর অন্য চিন্তা আমার।”

“আমি তোমার কাছে রাখবো,
আর মনের কথা হাজার।
দিয়ে তোমার কাজল মাখবো,
আর সারা দিনটা আমার।”

হালকা হাওয়ার মতো,
চাইছি এসো এখন।
করছে তোমায় দেখে,
অল্প বেইমানি মন।
বাধবো তোমার সাথে,
আমি আমার জিবীন।”

“আমি তোমার কাছে রাখবো,
আর মনের কথা হাজার।
দিয়ে তোমার কাজল মাখবো,
আর সারা দিনটা আমার।”

–গাড়ি থামার শব্দে রুমাইশা গান বলা বন্ধ করে দেয়। সবাই চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলো। আহনাফ অবশ্য রুমাইশার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো বেশ কিছুক্ষণ। কিন্তু সেটা কারো চোখে ধরা পড়ে নাই। সবাই তো চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলো। আকস্মিক যখন রুমাইশা গান ধরছিলো তখন সবাই অবাক হয়ে যায়। কিন্তু আসতে আসতে গান শুনতে শুনতে চোখ বন্ধ করে নেয়।

“ভিতরে আসো”

–রিতুর বাবার গলা পেয়ে রাহুল সালাম দেয়। মাথা তুলে তাকিয়ে চমকে উঠে। এই লোক কখনো তাকে জামাই হিসাবে মানবে না, সেটা এখনি বোঝা হয়ে গেছে। তাদের অফিসেই মেনেজার পদে জব করে। কিন্তু অহংকার অনেক, যখন জানছে রাহুল’কে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়ছে। সে দিন উনি কতো অপমান করছে ওকে। করিম মিয়া ও কিছুটা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে।

“বসো তোমরা, রিতু’র মা রিতু’কে নিয়ে আসো। তো আসল কথায় আসি।”

“জ্বি, আপনি তো আমার সম্পর্কে সব জানেন, তাহলে নতুন করে আর কি বলবো? এখন আপনি বাকিটা বলেন।”

“তুমি বাড়ি ছাড়ছো, অফিস সব থেকে বিতাড়িত। তা তোমার কি দেখে আমার মেয়ের সাথে তোমার বিয়ে দিবো! আমার মেয়ে একজন প্রাইমারি শিক্ষক”

“আমরা একে অপরকে ভালোবাসি, আর টাকা এখন নাই কিন্তু একদিন সব ফিরে পাবো।”

“তোমার কি মনে হয়! তোমার মতো বেকার একটা ছেলের সাথে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিবো? এটা কখনো সম্ভব না।”

“বেকার বলবেন না আঙ্কেল, ভাইয়া অসুস্থ ছিলো সে জন্য কোনো কাজ খুঁজতে পারে নাই। আমাদের এই ভাবে থাকা খাওয়া অসুবিধা হচ্ছে। সেই কারণে আমরা ভাইয়ার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

“তো আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে কাজ করাতে চাও তাই তো? আমি তোমার ভাইয়ের সাথে রিতুর বিয়ে দিতে পারবো না। আসছো কথা হলো এখন যেতে পারো।”

“আপনি ভুল ভাবছেন, আর আমাদের এমন কি কাজ আছে যে আপনার মেয়ে করতে পারবে না? আর কাজ করার জন্য নিয়ে যাচ্ছি না। আমাদের সমাজ খুব খারাপ। দুইটা ছেলের সাথে একটা মেয়েকে থাকতে দেখলে নানান কথা বলে তারা। একবার বুঝার চেষ্টা করে না, ভাই হয় নাকি কে হয়। তাই আমি চাচ্ছি আরো একটা মেয়ে থাকুক বাসায়।”

–সবাই অবাক হয়ে রুমাইশার দিকে তাকিয়ে থাকে। এতো কিছু হয়ে গেছে! রুমাইশা তো কিছু বলে নাই কাউকে। রাহুল রাগি চোখে তাকিয়ে থাকে, রুমাইশা সেটা পাত্তা না দিয়ে আবারো বলে,

“আপনার মেয়ে কোনো কষ্ট পাবে না আমাদের কাছে থাকলে। সুখেই থাকবে, সেটা নিয়ে আপনার চিন্তা না করলে ও চলবে।”

“আমার মেয়ে আমার চিন্তা থাকবে এটা তো স্বাভাবিক তাই না? দেখো মেয়ে বেশি কথা বলতে চাই না আমি। তোমরা আসতে পারো, যদি আগে জানতাম রাহুল সেই ছেলে তাহলে বাসায় আসতে বলতাম না।”

–সবাই অবাক হয়ে যায়, করিম মিয়া আসতে আসতে খারাপ কথা বলতে থাকে। অপমান শুরু করে, রুমাইশা সবাই’কে আসতে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। একবার রিতুর দিকে তাকিয়ে দেখে। মাথা নিচু করে আছে, মুখে তার কোনো কথা নাই।

“এটা ঠিক না, এই মিয়া এমন ব্যাবহার করতে পারলো? মন চাচ্ছে লাথি মেরে ফেলে দেই। শা’লা মেয়ে প্রাইমারি শিক্ষক তোর মেয়ের টাকা খাওয়ার জন্য আমরা বসে আছি নাকি?”

“বাদ দেন, এসব নিয়ে ভাবছি না আমি। এখানে দাড়িয়ে না থেকে গাড়িতে উঠেন। আর কাকে ভালো বাসিস রে ভাই! যার মুখ থেকে একটা কথা বের হলো না। অপমান হচ্ছি আমরা তাও চুপচাপ শুনছে।”

“চুপ থাক তো তোরা, বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগছিস দে এখন বিয়ে দে। যা কাকে ধরে আনবি আন, আজকে আমি বিয়ে না করে বাসায় যাচ্ছি না।”

“কি বস বিয়ের প্যারা উঠছে নাকি!”

–এই সময় আহনাফের এমন কথায় রাহুল রেগে যায়। এই ছেলেটা সব জায়গায় খোটা দিবেই। গেটের বাহিরে প্রায় ১৫ মিনিট তারা দাঁড়িয়ে ভিতরের কাহিনি গুলো কল্পনা করে। সবাই গাড়িতে গিয়ে বসে। তখন পিছন থেকে রিতু ডাক দিয়ে বলে,

চলবে?……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here