#তোর_নামের_বৃষ্টি
#পর্ব:১৮
জাবিন মাছুরা (লেখিকা)
,,
ত্বকি মেঘার থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
-লুক এট মি। (ত্বকি)
ভাইয়ার কথা শুনে আমি নিচের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে অপরাধীর মতোন তার দিকে তাকালাম। সে আমার দিকে শক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে উঠলো,
-নিজের জিনিসের অধিকার নেয় না বলে মনে করিস না, সবকিছু তোর। (ত্বকি)
ভাইয়া কি বলছে সত্যি আমি বুঝতে পারিছি না। সে আবারও বলে উঠলো,
-আশা করি আমার কথা বুঝতে পেরেছিস। আন্ডারস্টান্ড?
কথাগুলো বলেই ভাইয়া রুম থেকে চলে গেলেন। তার কথাগুলো আমাকে ভাবাচ্ছে।
আমি আবার ভাইয়ার কোন জিনিস নিজের কাছে রাখলাম? তার কি এমন জিনিসকে আমি নিজের ভাবলাম? দূর, আমি তো কিছুই বুঝলাম না।
অন্যদিকে,
মাগরিবের আজানের সুমধুর ধ্বনি কানের যেতেই তিথির অসময়ের ঘুম ভেঙে গেল। পিটপিট করে চোখ খুলে চারপাশে পর্যবেক্ষণ করল সে। পাশে তাকাতেই নিজের অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো তার। রুশা তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। কিছুটা সময় রুশার দিকে মমতাময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সে। রুশার কপালে চুমু খেয়ে আস্তে করে বলে উঠলো,
-রুশা মামুনি, উঠে পড়ো।(তিথি)
তিথির ডাকে রুশা কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো।
-সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আর কতো ঘুমোবে? এখন যদি ঘুম থেকে না উঠো তাহলে তো রাতের বেলা ঘুমোতে পারবে না। (তিথি)
তিথির আদর মাখা কন্ঠ পেয়ে ঘুম ভেঙে গেল রুশার। আস্তে করে উঠে তিথির কলে গিয়ে বসল সে। তিথিকে জড়িয়ে ধরে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে উঠলো,
-লাভ ইউ মাম্মা। (রুশা)
রুশার কথা শুনে তিথি হেসে দিয়ে বলে উঠলো,
-লাউ ইউ টু মামুনি। কি খাবে বলো? এখুনি বানিয়ে নিয়ে আসছি।(তিথি)
তিথির কথায় রুশা অভিমান শুরে বলতে লাগল,
-কিছু খাব না। তুমি আর পাপা আমার কোন কথাই শুনো না। (রুশা)
-কেনো মা? তোমার কোন কথা শুননি? বলো তো? (তিথি)
-তোমারা খুব পচা। রাতের বেলা আমার কাছে ঘুমোও না। (রুশা)
রুশার কথা শুনে তিথি বলে উঠলো,
-আমি তো তোমার কাছেই থাকি। তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোয়। তাহলে মন খারাপ করো কেন? (তিথি)
তিথির কথা শুনে রুশা কান্না মাখা কন্ঠে বলে উঠলো,
-তোমরা আমাকে একটু বুঝো না। আমাকে একটু ভালোবাসো না। (রুশা)
রুশা কোন কথাই তিথি বুঝে উঠতো পারলো না। সে বোকার মতো চুপ করে রুশার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে লাগলো।
হঠাৎ রুশা কান্না করে দিয়ে বলল,
-মাম্মা, তুমি কী জান? আমার বন্ধুরা ওদের বাবা মায়ের সাথে এক রুমে থাকে। কিন্তু আমি জীবনে কোনদিনও তোমাদের সাথে ঘুমোতে পারলাম না। তোমার আর বাবার মাঝখানে শুয়ে তোমাদের আদর খেতে পারলাম না। তোমরা না অনেক পচা।(রুশা)
রুশার কথা শুনে তিথির বুকের মাঝে ব্যথা অনুভব হতে লাগল। রুশার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে উঠলো,
-সরি মামুনি। কান্না করে না সোনা। প্লিজ।(তিথি)
-আমি কান্না করব। বেশি বেশি করে কান্না করব। তুমি অনেক বেশি পচা। আমাকে ছেড়ে ছোটবেলায় হারিয়ে গিয়েছিলে কেন? আমার কথা কি তোমার একটুও মনে পরে নি। (রুশা)
রুশার প্রত্যেকটা কথা যেন তিথির মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। শুধু কানে ভেসে উঠছে, রুশার সেই প্রথম দিনের মাম্মা ডাকটা। রুশা কেন তাকে সেদিন মাম্মা ডেকেছিল?
-মাম্মা, আমাকে ছেড়ে আর চলে যেও না। প্লিজ। তুমি তো জান না, প্রতিদিন রাতের বেলা বাবা লুকিয়ে লুকিয়ে তোমার জন্য কান্না করতো। তুমি আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছো। (রুশা)
রুশার কথা শুনে তিথি স্তব্ধ হয়ে গেল। সাদ কি সত্যি তার জন্য কান্না করতো? রুশার কান্না দেখে তিথিও কেঁদে দিয়ে বলে উঠলো,
-সরি মা। আমাকে মাফ করে দেও। আমি আর কোনদিনও তোমাকে কষ্ট দেব না। (তিথি)
-নিশ্চুপ (রুশা)
-কান্না বন্ধ করো সোনা। আজকে থেকে তুমি আমি আর তোমার বাবা একসাথে থাকব। তোমাকে একসাথে আদর করব। এবার তুমি খুশী তো?
তিথির কথা শুনে রুশা অনেক খুশি হয়ে উঠলো। এতোদিন সে বলেছিল, তিথিকে যে তারা তিনজন একসাথে একই বিছানায় ঘুমোবে কিন্তু তিথি রাজি হয় নি। কোন না কোন অযুহাত দিয়ে কথাটা এড়িয়ে গিয়েছে। তাই রুশা আজকে প্ল্যান করে কান্না করেছে। যেন তিথি সাদের সাথে এক বিছানায় ঘুমোতে রাজি হয়ে।
-সত্যি তো? (রুশা)
-হুম। (তিথি)
রুশা কান্না বন্ধ করে দিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠলো। পাগলের মতো তিথির গালে চুমু খেতে লাগল।
,,
রুশাকে সাদের মায়ের রুমে রেখে দিয়ে তিথি হেঁটে চলছে সাদের রুমে যাওয়ার উদ্দেশ্য। তিথির ভিতরে অস্থিরতা কাজ করছে।
অসস্থি নিয়ে সাদের রুমের ভিতরে ঢুকল তিথি। ওড়না ভালো করে ঠিক করে নিলো সে। বড়ো বড়ো চোখ দুটো দিয়ে খুঁজতে লাগল সাদকে। কিন্তু রুমের চারপাশে কোথাও সাদকে দেখতে পেল না। রুমে দেখতে না পেয়ে বেলকনিতে গেল সে। কিন্তু সেখানেও পেল না। বেলকনিতেও দেখতে না পেয়ে সাদের জন্য চিন্তা হতে লাগল তিথির। কিছুক্ষণ চুপ করে রইল সে।
ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতেই বুঝতে পারল বাতরুমে শাওয়ারের শব্দ শোনে যাচ্ছে। তিথির আর বুঝতে বাকি রইল না যে, সাদ বাতরুমে রয়েছে। তাই গুটি গুটি পায়ে বাতরুমের দরজার সামনে দাঁড়াল সে। অস্থির মাখা কন্ঠে বলে উঠলো,
-এই যে শুনছেন? তাড়াতাড়ি বের হন। (তিথি)
-নিশ্চুপ (সাদ)
সাদের কোন আওয়াজ না পেরে তিথির অস্থিরতা দ্বিগুন বেড়ে গেল। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে সে আবারও বলে উঠলো,
-আপনি তো ভারর্সিটি থেকে ফেরার সময় বৃষ্টিতে ভিজে ছিলেন। এখন বের হন প্লিজ। বেশিক্ষণ গোসল করলে আপনার জ্বর চলে আসবে কিন্তু । (তিথি)
তিথির অস্থিরতা বুঝতে পেরে সাদ আর বাতরুমের রইল না। ভেজা কাপড় নিয়েই দরজা খুলে তিথির সামনে এসে দাঁড়াল সে।
সাদকে বেরিয়ে আসতে দেখে তিথি সস্তির নিশ্বাস ফেলল তিথি। মাথা তুলে সাদের দিকে তাকাতেই তিথির খারাপ লাগতে শুরু করল। সাদের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। সাদ থরথর করে কাঁপছে। সারা শরীর ঠান্ডায় নীল বর্ন ধারন করে আছে। চোখ দুটো অতিরিক্ত লাল হয়ে রয়েছে। সাদর দিকে তাকিয়ে তিথি কান্না মাখা কন্ঠে বলে উঠলো,
-আপনি কী বাচ্চা? নিজকে কি ছোট্ট বাচ্চা ভাবেন যে ইচ্ছেমতো ঘন্টার পর ঘন্টা গোসল করেছেন? (তিথি)
তিথির কষ্ট হচ্ছে দেখে, সাদের মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। আজ সে তিথির চোখে নিজের জন্য ভালোবাসা দেখতে পারছে। তিথি যে আজও তাকে ভালোবাসে সাদের আর বুঝতে বাকি রইল না। সাদ তিথিকে আড়চোখে দেখতে লাগল আর মনে মনে বলতে উঠলো,
-আমি জানতাম, তুমি আমার কষ্ট দেখে দূরে থাকতে পারবে না। আমার সাথে ঠিকি কথা বলবে। তাই তো আজকে ইচ্ছে মতো বৃষ্টিতে ভিজেছি যেন আমার জ্বর চলে আসে। আমি ভালো করেই জানি, আমার জ্বর আসলে তুমি আমার থেকে দূরে থাকতে পারবে না। ব্যাধ্য হয়ে হলেও তুমি আমার কাছে আসবে। আমার সেবা করবে। একটু হলেও তো তোমার হাতের ছোঁয়া পাবো।
এদিকে,
আম্মুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছি। আম্মুর আমার মাথায় যত্ন সহকারে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আর আমি চিন্তা করে যাচ্ছি ত্বকি ভাইয়ার কথা। একটু আগেই আমার বড়ো চাচা ফোন করেছিলেন। বলেছেন, তিনদিন পরে আমার চাচাতো বোন মিমমা আপুর বিয়ে। তাই চাচা আমাদের ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন যাতে আমারা বিয়েতে এ্যটেন্ড করি। কিন্তু ভাইয়া জাওয়ার জন্য রাজি হয় নি। তাই আমার মনটা ভালো নেই। ছোট বেলা ইচ্ছে ছিল মিমমা আপুর বিয়েতে খুব মজা করব। ইচ্ছে মতো আনন্দ করব। হঠাৎ আম্মু বলে উঠলো,
-মেঘা, কি এত চিন্তা করছিস?
-আম্মু গো।(মেঘা)
-হুম বল।(ত্বকির মা)
-আম্মু তোমার ছেলেকে কিভাবে রাজি করাব? সে তো রাজি হচ্ছেন না। (মেঘা)
আমার কথা শুনের আম্মু মিটমিট করে হেসে দিয়ে বলে উঠলো,
– আমার ছেলেটা তোর কাছে যা চাইবে তাই দিবি। দেখবি তোর কথা শুনতে বাধ্য হবে। (ত্বকির মা)
#তোর_নামের_বৃষ্টি
#পর্ব:১৯
জাবিন মাছুরা (লেখিকা)
,,
-আম্মু তোমার ছেলেকে কিভাবে রাজি করাব? সে তো রাজি হচ্ছে না। (মেঘা)
আমার কথা শুনের আম্মু মিটমিট করে হেসে দিয়ে বলে উঠলো,
– আমার ছেলেটা তোর কাছে যা চাইবে তাই দিবি। দেখবি তোর কথা শুনতে বাধ্য হবে। (ত্বকির মা)
আম্মুর কথা শুনে খুব হাসি পেল। জোরে জোরে হাসতে হাসতে বললাম,
-উহু, তোমার ছেলে তো আমার কাছে পড়া ছাড়া আর কিছুই চায় না। একটু তো বলতে পারে, মেঘা আমার জন্য রান্না কর। (মেঘা)
-পাগলী মেয়ে, তোকে কি রান্না করার কথা কিছু বলেছি?(ত্বকির মা)
-তাহলে? (মেঘা)
আম্মু কিছু বলার আগেই ত্বকি ভাইয়া রুমে চলে এলেন। তাকে দেখে আমি উঠে বসলাম। ওড়নাটা ঠিক মতো করে গায়ে জড়িয়ে নিলাম।
-ত্বকি তোর কি কিছু লাগবে? (ত্বকির মা)
ত্বকি ভাইয়া আমার দিকে গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলেন,
-না, আমার কিছু লাগবে না। মেঘা রুমে আমার আয় একটু। (ত্বকি)
বলেই ভাইয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি আম্মুর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,
-আম্মু, আমি যাব না। ভয় লাগছে। (মেঘা)
-ভয় পাচ্ছিস কেন? (ত্বকির মা)
-যানিনা। (মেঘা)
-গিয়ে দেখ তোকে কি বলে। নিশ্চই ত্বকি কোন না কোন প্রয়োজনে তোকে ডেকেছে। (ত্বকির মা)
-না, যাব না। (মেঘা)
আম্মু হঠাৎ ধমক দিয়ে বলে উঠলো,
-এখুনি যাবি। ঠিক আছে। (ত্বকির মা)
আমি আর দেরি করলাম না। আম্মুর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম। ভাইয়া দরজার সামনে এসে রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম।
ত্বকি মেঘাকে রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিরক্ত মাখা কন্ঠে বলে উঠলো,
-বাইরে দাড়িয়ে না থেকে, ভিতরে আয়। (ত্বকি)
আমি ভয় নিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। মাটিতে দৃষ্টি রেখে চেয়ার ধরে দাড়িয়ে রইলাম।
-হুম, কি যেন বলেছিলি তখন। কোথায় যেতে চাস? (ত্বকি)
ত্বকি ভাইয়ার কথা শুনে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলাম,
-মিমমা আপুর বিয়েতে। (মেঘা)
আমার কথার কোন মূল্য না দিয়ে সে শক্ত গলায় বলল,
-না। কোথাও যাওয়া হবে না। আমি তোকে একলা কোথাও ছাড়ব না। (ত্বকি)
-আমি একা না। আপনি গেলেই তো হবে। (মেঘা)
ভাইয়া ধমক দিয়ে বলে উঠলো,
-আমি কোথাও যেতে পারব না। আন্ডারস্টান্ড? (ত্বকি)
ভাইয়ার এমন কথাই মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। চুপ করে ঠাই দাড়িয়ে রইলাম।
-অনেক রাত হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়। সকালে দেখা যাবে। (ত্বকি)
ভাইয়া কথা মতো ঘুমানোর জন্য বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হাটতে শুরু করলাম। ঠিক তখনি ভাইয়া বলে উঠলো,
-কোথায় যাচ্ছিস? (ত্বকি)
-আম্মুর রুমে।(মেঘা)
-কেন? (ত্বকি)
আমি স্বাভাবিক ভাবে উওর দিলাম,
-ঘুমোনর জন্য। (মেঘা)
ত্বকি ভাইয়া নরম কন্ঠে বলে উঠলেন,
-এ ঘরে ঘুমোবি না। (ত্বকি)
ভাইয়া এমন কথা শুনে আমি অবাক না হয়ে পাড়লাম না।
-আপনি তো প্রতিদিন অন্য রুমে গিয়ে ঘুমোন। এখন তো আর পড়া নেই। তাই আমি বরং আম্মুর রুমে গিয়ে ঘুমোয়। আপনি এ ঘরে থাকুন। (মেঘা)
মেঘার কথা শুনে ত্বকি অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মেঘার দিকে। কিন্তু মেঘা ত্বকির দিকে না তাকিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
,,
ভাইয়ার মুখের উপর কথা বলে আম্মুর রুমে চলে এলাম। দরজা আটকে জরে জরে নিশ্বাস নিতে লাগলাম।
মেঘাকে অস্থির হতে ত্বকির মা বলে উঠলো,
-কিরে মেঘা কি হয়েছে তোর? চলে এলি কেন? (ত্বকি মা)
-আম্মু আমি আজকে তোমার কাছে থাকব। (মেঘা)
বলেই বিছানার এক পাশে বালিশটা রাখলাম। অনুমতি না নিয়েই আম্মুর কোলে শুয়ে পড়লাম। চোখ বন্ধ করে চুপ করে রইলাম।
ত্বকির মা মেঘার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। আর বলতে লাগলেন,
-ত্বকি রাজি হয় নি? (ত্বকির মা)
-উহু।(মেঘা)
ত্বকির মা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে উঠলেন,
-মন খারাপ? (ত্বকি মা)
-উহু (মেঘা)
-তাহলে চলে এলি কেন? (ত্বকির মা)
ত্বকির মায়ের কথার উওরে মেঘা অভিমান শুরে বলে উঠলো,
-তোমার ছেলে অনেক পচা। (মেঘা)
-কেন? আমার ছেলে কি করেছে? (ত্বকির মা)
-তোমার ছেলে আমাকে একটুও ভালোবাসে না। (মেঘা)
-তাই? (ত্বকির মা)
-হুম। (মেঘা)
-তুই চলে না এসে ওকে বুঝাতি। দেখতি ঠিকি রাজি হয়ে যেত। (ত্বকির মা)
আম্মুর কথা শুনে আমি ঠোঁট-ওল্টে বলতে লাগলাম,
-তোমার ছেলে আমাকে তো তার ধারের চাপতে দেয় না। তাহলে বুঝাবো কীভাবে? (মেঘা)
মেঘার কথা শুনে ত্বকির মা বিষ্মিত গলায় বলে উঠলো,
-তোরা এখনো স্বভাবিক হস নি। (ত্বকির মা)
-মানে? (মেঘা)
আম্মুর কথা আমি বুঝতে পারলাম না। সে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
-কিছু না। চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়।
অন্যদিকে,
ভিজা শরীর নিয়ে তিথির দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে সাদ। ঠান্ডায় থরথর করে কাঁপছে সে ।
সাদের অবস্থা দেখে তিথির প্রচুর কান্না পাচ্ছে। তাও সে নিজকে শক্ত রাখায় ব্যাস্ত। সাদের দিকে একপল তাকিয়ে কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো,
-শার্টটা চেন্জ করুন। এভাবে থাকলে তো ঠান্ডা লেগে যাবে। (তিথি)
তিথির কথাই সাদ ঠোঁট-ওল্টে বাচ্চাদের মতো বলে উঠলো,
-করব না। (সাদ)
-কেন করবেন না। (তিথি)
-আমি পারব না। তুমি করে দেও। (সাদ)
সাদের কথা শুনে তিথি স্তব্ধ হয়ে রইল।
-প্লিজ, চেন্জ করে দেও। (সাদ)
এবার যেন তিথির বিরক্ত হয়ে উঠলো। কান্না মাখা কন্ঠে বলল,
-আমি পারব না। যদি দরকার হয় মাকে ডেকে দিচ্ছি। (তিথি)
তিথির কথা বোধহয় সাদের বুকে গিয়ে বিঁধল। মন খারাপ করে বলে উঠলো ,
-না থাক। আমি নিজেই করে নিচ্ছি। (সাদ)
বলেই সাদ শার্ট নিয়ে বাতরুমে ঢুকে পড়ল।
সাদকে বাতরুমে যেতে দেখে তিথি রান্নাঘর থেকে খাবার নিয়ে এলো।
কিছুক্ষণ পর সাদ চেন্জ করে বের হলো। তিথিকে খাবার নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলে উঠলো,
-আমি খাব না। খাইয়,, (সাদ)
সাদের কথা শেষ করার আগে তিথি রাগী কন্ঠে আস্তে করে বলল,
-এখন বলবেন না যে, আপনাকে খাইয়ে দিতে হবে। প্লিজ আমাকে দিয়ে এমনটা আশা করবেন না। আপনাকে বিয়ের আগেই বলেছিলাম আমার উপর অধিকার দেখাতে আসবেন না। (তিথি)
তিথির কথাগুলো সাদ মেনে নিতে পারল না। চোখ বন্ধ করে চুপ করে রইল সে।
,,
সাদকে খাবার খাইয়ে তিথি সাদের মায়ের রুমে এসেছে। রুশাকে সাদের রুমে নেওয়া জন্য। কিন্তু রুশা দাদির কোলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাই তিথি রুশাকে নিল না। কোন কথা না বলে সাদের মায়ের পাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে পড়ল।
এদিকে,
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আম্মুর সাথে রান্না করেছি। নিজের হাতে সার্ভ করে ভাইয়াক খাবার বেড়ে দিয়েছি।
তার মুখটা কেমন যেন শুকনো শুকনো লাগছিল। খাওয়ার সময় আমার দিকে অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু আমি ইচ্ছে মুখ ভার করে রেখেছিলাম।
ভাইয়ার সাথে সকলে কোন কথা হয় নি। সে তো সবসময় ভাব স্কয়ার নিয়ে চলাফেরা করে। তাই হয়তো আমার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলেনি। পরীক্ষা শেষ তাই ভেবছি, আম্মুর কাছে থেকে কাজ শিখব। মনটাও ভালো নেই। অনেক খারপ লাগছে, মিমমা আপুর বিয়েতে আর যাওয়া হবে না।
,,
ভাইয়ার রুমে যাচ্ছি ফোন আনতে। আম্মুকে একটা কল করব। ভালো লাগছে না। আম্মুর সাথে কথা বললে অনেকটা ভালো লাগবে। ভয় করছে। মনের ভেতরে সাহস যুটিয়ে ঢুকে পড়েলাম ভাইয়ার রুমে। চোখ বন্ধ করে এক দমে বলে উঠলাম,
-ভাইয়া, আপনার ফোনটা একটু দিবেন? (মেঘা)
-নিশ্চুপ (ত্বকি)
ভাইয়া কোন উওর না পেয়ে চোখ খুলে তাকালাম। সাথে সাথে বুকের ভেতরে ধক করে উঠলো। ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন। আর গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,
-কে তোর ভাইয়া? স্টুপিড।(ত্বকি)
(চলবে)
[নিজের ভুলে জন্য নিজেই ডিপরেশনে পড়ে গিয়েছি। এখন কিছুই ভালো লাগছে না। তাই গল্পও লিখতে পারছি না। দয়া করে, আপনারা নিজের ফোন কখনো অন্য কারো কাছে দিবেন না। প্লিজ,আর আমার জন্য দোয়া করবেন। ভুল ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ]
(চলবে)
[মাথা ব্যাথা নিয়ে আজকে পর্বটা লিখেছি। রিচেক দেয় নি। তাই ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]