#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:1
#Suraiya
হাত ধরে টানতে টানতে আরিস নিয়ে আসলো আরুশিকে , এনে বিছানার ওপর ফেলে দিল৷
আরূশী কাঁদতে কাঁদতে: আপনি আমাকে এখানে এনেছেন কেন? প্লিজ আমাকে যেতে দিন , আমি বাড়ি যাব বলে খাট থেকে নেমে দরজার দিকে যেতেই তখনই আরিস হাত ধরে আবারো খাটের উপর ফেলে দিয়ে আরশের উপরে উঠে বসে ওর ঠোঁট জোড়া দখল করে নিল, আর দুটো হাত শক্ত করে মুঠি বধ্য করে রেখেছে যে কারনে নড়াচড়ার ক্ষমতাটুকু পাচ্ছে না ৷
আরিশ আরুশিকে ছেড়ে : খুব শখ না তোমার আমার সাথে বিয়ে করার তাহলে এখন পালাচ্ছো কেন?
আমাদের তো বিয়ে হয়ে গেছে, আমরা তো স্বামী স্ত্রীর সো লেটস ইঞ্জয় বেবি ৷
আরু হাতজোড় করে কাকুতি-মিনতি করছে আরিসের সামনে ৷
অল্প দিনের পরিচয় আরিশের সাথে ওর , আর তিন দিন পর ওর অভ্রের সঙ্গে বিয়ে ,সেখানে আরিশকে বিয়ের কথা কখনোই ভাবেনি আরূ ৷
হঠাৎ আরূ হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো যখন দেখল আরিশ নিজের শার্টের বোতাম টা খুলেছে ৷ কিছুই বুঝতে পারছি না ও যে নিজেকে কিভাবে আরিশের হাত থেকে রক্ষা করবে ৷
তবে শেষ রক্ষা করতে পারল না তার আগেই আরূ জ্ঞান হারালো…
আরূ অজ্ঞান হতে আরিস একটা শয়তানী হাসি দিল দিয়ে আরুশিকে গভীরভাবে কিস করল….
চারিদিকে সকলের চেঁচামেচিতে আরূশী চোখ মেলে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল কারণ ও ওর নিজের বাড়িতে রয়েছে , চারিপাশে ওর বাড়ির সবাই ওকে ঘিরে রেখেছে ৷ হঠাৎ নিজের পোশাকের দিকে তাকিয়েই অবাক হয়ে গেল তার কারণ ও এই পোষাকে ছিল না ৷
আরুর জ্ঞান ফিরতেই ওর বাবা এসে ওকে ঠাস করে চড় মারল ৷
রায়হান আহমেদ: এই দিন দেখার জন্য তোকে আমি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ৷ এখন আমি কি জানাবো অভ্রর বাড়ির লোককে এই যে আমার মেয়ে একটা দুশ্চরিত্রা!
আরূ এবার কেঁদে ফেলল কারণ ওর বলার মত কোন মুখ নেই, নিজেই নিজের পক্ষে যে কোন কথা বলবে সে সুযোগও পাচ্ছে না ,, কেউ ওকে কোনো কথাই বলতে দিচ্ছে না….
আরুর মা: তোকে যে আমি কেন জন্ম দিয়েছিলাম? তার জন্য আমার এখন আফসোস হচ্ছে, জন্মের সময় কেন আমি তোকে মেরে ফেলে নি ৷
সকলের প্রত্যেকটা কথা আরুর বুকে গিয়ে তীরের মত বিধছে কারন আসল সত্যটা ওই জানে ৷
হঠাৎ এত কিছুর মাঝখানে আহান বলতে শুরু করল: ছেলেটাকে যখন এতই ভালবাসিস তাহলে চলে যেতিস ওর হাত ধরে, কেন ফিরে এলি তাও আবার দুশ্চরিত্রা হয়ে…..
কাঁদতে কাঁদতে আরুশী চোখ তুলে তাকাল কারণ কি হয়েছ ও কিছুই বুঝতে পারছে না, ও যা ভাবছে আহান সম্পূর্ণ বিপরীত কথা শোনাচ্ছে ওকে৷
আরুশি : আমি ওনাকে কখনোই ভালোবাসিনি , আর আমি উনাকে কেন ভালোবাসতে যাব যেখানে আমি জানি অভ্র সঙ্গে আমার বিয়ে ৷
আরুর মা: হ্যাঁ তার জন্যই তো শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্যই ওর কাছে তুই গেছিলি৷ পাড়া-প্রতিবেশীরা অনেক কানাঘুষাও করছেন, আমরা এবার সমাজে চলবো কি করে সেটা একবার ভেবে দেখেছিস? ওই ছেলে বাড়ি এসে বলে গেল তুই নাকি বিগত তিনমাস ধরে পড়ে আছিস , ওকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়েছিস ৷তুই ওকে বিয়ে করতে চাযস তাই সমস্ত কিছু করতে বলেছিলি ওকে ৷
আরুশি :মা বিশ্বাস করো আমি তেমন কিছুই করিনি বলে উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগলো ৷
কিন্তু আজ ওর চোখের জলও সকলের কাছে অভিনয়ের সমান , কেউ ওর কথা বিশ্বাস করছে না৷
হঠাৎ ওর মাথায় এলো অভ্রের কথা ,ওর অর অভ্রের 3 দিন পর বিয়ে হবে ৷ বিয়েটা পারিবারিকভাবে হলেও আরু বেশ ভালই পছন্দ করে অভ্রকে ,আর আরিশের সঙ্গে তার গত চার মাস ধরে পরিচয় ৷ আরু আরিশকে কখনো পাত্তা দেয়নি, আরুশি একটা ভাইয়ার চোখেই দেখেছে আরিশকে ৷
আরু উচ্চ স্বরে বলে উঠলো : মা অভ্র!
আরুশির মা: ওরা কেউ জানেনা তোর এই কীর্তির কথা , কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না ৷ সব জেনেও যদি অভ্র তাকে মেনে নেয় তাহলে ভাববি তোর কপাল ভালো ৷ বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন…..
আরু হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো তার কারণ ও এতটাও মনের দিক থেকে শক্তিশালী নয় যে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে…..
কিছুক্ষণ আগের কথা,,,,,
রাস্তায়,,,,,,
আরিশ গম্ভীর কণ্ঠে আরুশিকে বলল :গাড়িতে উঠ৷
আরোশী অবাক হযয়ে: কেন ভাইয়া, আপনার গাড়িতে উঠতে যাবে ? আর আমি হেটেই ঠিক আছি৷
আরিশ: যা বলছি তাই করো না হলে রাস্তার লোকের সামনে যা করব সেটা ভালো হবেনা , এবার তোমার ব্যাপার তুমি কি করবে না করবে ৷
বাধ্য হয়ে আরু আরিশের গাড়িতে উঠলো , কিন্তু কী কারণে আরিশ তাকে গাড়িতে উঠতে বললো,আর আরিশ ই বা তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সে সমস্ত কিছু জিজ্ঞাসা করলে আরিশ চুপচাপ ছিল৷ তার পরিবর্তে একটা উত্তর ও দেয়নি ৷
তারপর সেখান থেকে গেল কাজী অফিসের সামনে ৷ তা দেখে আরুশি আরো অবাক হল , সেখান থেকে গাড়ি থেকে নামতেই আরুশিকে টেনে টেনে নিয়ে গেল কাজী অফিসে ৷ ওর বাবকে ওকে খুন করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পেপারে সই করিয়ে নেয় আর কবুল বলিয়ে নেয়….
তারপরে এতসব ঘটনা হল ৷ কিন্তু আরিশ এর এই সমস্ত কাজ কর্মের কোন কারন আরু জানে না৷
সন্ধ্যেবেলা চুপচাপ ছাদের এক কোনে আরুশি বসে আছে আর বসে বসে অভ্রের সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা ভাবছে, হঠাৎ ওর ফোনে ফোন আসতেই চমকে উঠলো ও ৷
ফোনটা ধরতেই একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসল , কলটা ধরার ইচ্ছা না থাকলেও ধরতে হলো৷
আরিশ : হ্যালো আরুপাখি , কি করছো জান?
আরুশি : কে আপনি আর আপনি আমাকে এই সমস্ত নামে ডাকছেন কেন?
আরিশ : আমাকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে? সকালে না তোমাকে আমি বিয়ে করলাম৷ এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে হয় আরুপাখি?
আরুশির যেন বুকের ভিতর ধক করে উঠল , বুঝতে পারল যে আরিস, নতুন আর কি ঘটানোর জন্য আরিশ ওকে ফোন করেছে সেটা ও বুঝতে পারছে না৷
আরুশি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে : কি চাই আপনার? আপনি এসমস্ত কেন করেছেন ? আপনার সাথে তো আমার শত্রুতা নেই ৷
আরিশ খুবই শান্ত কন্ঠে বলল: তোমার সাথে আমার কি শত্রুতামি থাকতে পারে বলতো? তুমি আমার বউ আর বউয়ের সঙ্গে কখনও কারও শত্রুতা থাকে? সে যাই হোক তোমার না দুদিন পর বিয়ে, আমাকে ইনভাইট করলে নাতো?
আরোশী : আমার বিয়ে আপনি কি করে জানলেন?
আরিশ: সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো তুমি আমাকে ইনভাইট করো নি আমি কিন্তু খুব রেগে আছি!
অপরদিকে আরূশির মুখে কোন কথা নেই ৷আরিশের এর কথার পরিবর্তে কি উত্তর দেওয়া যায় সেটা ও জানে না….
আরিশ : সে বাদ দাও , তোমার কিছু জরুরী ভিডিও আমার কাছে রয়েছে সেগুলো পারলে নিয়ে যেও৷
আরুশি কিন্তু কিন্তু করে বলল: কিসের ভিডিও? আর আমার সাথে আপনার কোন ভিডিও?
আরিশ উচ্চস্বরে হেসে বলল : এ বাবা সকালবেলা আমি আর তুমি মিলে যে এত রোমেন্স করলাম, সেগুলো ক্যামেরাবন্দি করতে হবে না ? সব ভুলে গেলে নাকি? ওগুলোই আছে ৷ বিয়ের আগে তোমার নতুন বরকে যদি দেখাতে চাও তো নিয়ে যেতে পারো৷
না হলে আমার কিন্তু আবার স্বভাব ভালো নয় সকলকে দেখাবো ৷
আরুশির গলা শুকিয়ে কাঠ কারণ যা হয়েছে আরিশ এর সবকিছুই ভিডিও করেছে, আর তা যদি অন্য কেউ দেখে ফেলে অভ্র কোনদিনই আরূকে বিয়ে করবে না ৷
আরুশি : আমি তাহলে এখন কি করব?
আরিশ: কাল সকাল দশটায়, ভার্সিটিতে নয় সোজা আমার বাড়িতে আসবে ৷ যদি না এসেছে তো জানতেই পারবে আমি তোমার সাথে কি কি করব৷ আশা করি তুমি আমাকে খুব ভালো করেই চেনো৷
আরিশ : বাই আরুপাখি ৷
আরুশি আর পারছেনা এতো কিছু সহ্য করতে, হাউমাউ করে কাঁদছে ও ৷ কি থেকে কি হয়ে গেল সব৷
চলবে,,,,,