তোমার মাঝে আমি পর্ব ৫

#তোমার_মাঝে_আমি
#পর্ব:৫
#নিহীন_রুবাইয়াত

–দুলাভাই ২০,০০০ টাকা দেন তা না হলে ভিতরে ঢুকতেতে দেবো না।(নিহীনের কাজিন রা বলে উঠলো

আবির–মানে কি এতো টাকা কেন?আপনারা তো দেখছি রাক্ষস সবগুলো।
–আবির ভুল বল্লি রাক্ষসী হবে(সৌরভের এক বন্ধু কথাটা বলে বাকিরা হেসে দেই)
–রাক্ষসী বলেন আর যায় বলেন টাকা না দিলে যেতে দেবো না।
–আচ্ছা আমরা ভিতরেরে যাবো না।আমাদের ভাবিকে দিয়ে দেন আমরা চলে যাচ্ছি।
–না না তো হবে না।

গেটে দুই পরিবারে ছোটরা টাকা নিয়ে তর্ক করছিল কিন্তু সৌভিকের এসবে কোন মনই নেই।তার চোখ তো অন্যকিছু খুজছে,কান তো অন্য কিছু শুনতে চাচ্ছে।

–এই সৌভিক দেখ না ওরা কি বলছে টাকা ছাড়া নাকি ঢুকতে দেবে না।৫০০০ দিতে চাইছি তা হবে না।

সৌভিক যেন কথাটাটা কানেই নিলো না।আবির এবার ওর গা ঝাকিয়ে বলে
–এই তোর কি হয়েছে?আমার কথা কানে যাচ্ছে না?কি খুজেছিস তুই?

সৌভিক কোন উত্তর দিলো না।কন্যাপক্ষের সামনে গিয়ে বলল
–কতো টাকা লাগবে আপনাদের?
–২০,০০০ হাজার
–ভাইয়া দিয়ে দে(সৌরভের দিকে তাকিয়া।সৌভিকের কথাই তো আবির,সৌরভের বন্ধুরা অনেক ক্ষেপে গেলো তারা না না করতে লাগলো কিন্তু সৌরভ আবিরকে ইশারা করলো দিয়ে দিতে।আবির মুখ গোমড়া করে দিয়ে দিলো।টাকা হাতে নিয়ে সবাই যেন বিজয়ের হাসি দিলো।এবার বাড়ির বড়রা এসে সৌরভকে মিষ্টি খাওয়ালো,নিলুফার দাদি নাতিজামাইর গলাই সোনার চেইন পরিয়ে দিলো।

একে একে সবাই ভিতরে ঢুকছে।আবির আর সৌভিক ঢুকলো সবার শেষে।

–হাই বেয়াই সাহেব..
হটাত করে নিহীনকে দেখে সৌভিক অপ্রস্তুত হয়ে যাই।আবির হাসিমুখে হ্যালো বললেও সৌভিক চুপ করেই থাকে।লাল,গোল্ডেন শাড়িতে,খোপা চুল তাতে আবার ফুলের গাজরা,কানে সোনার ঝুমকো,চোখে গাড় কাজল,ঠোটে লাল লিপস্টিক(বলা যায় হালকা মেকাপ)কপালে ছোট্ট একটা লাল টিপ এক কথাই অসাধারণ সাজ।যে কেউই এই রূপের প্রেমে পড়তে বাধ্য।নিহীন শ্যামলা হলে কি হবে সুন্দরি তো।সৌভিক বিভোর হয়ে নিহীনকে দেখায় ব্যাস্ত ঠিক সেই সময়ই নিহীন তার চোখে গোলাপজল ছিটিয়ে দেই।

–আহ!
–কি হলো?
(চোখে গোলাপজল পড়াই সৌভিকের চোখ জলছে তাও সে বলল না।নিহীন তো মুখ টিপে হাসছে)
আবির বলে উঠল
–ভাই কি হলো তোর??অনেক জলছে কি চোখ?

সৌভিককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিহীন বলে,
–বেয়াই সাহেব আপনার ভাইর চোখ তো আরো পরিষ্কার হয়ে গেলো।জানেন না গোলাপজল চোখ পপরিষ্কার করে।

কথাটা শেষ করে নিহীন আর তার সহযোগীরা হাসতে হাসতে চলে যাই।সৌভিক চোখ মুছে ডেভিল হাসি দেই একটা।

–সৌভিক মেয়েটা পাকা আছে খুব

আবিরের কথাই কোন উত্তর দেয় না।আবারো একটা ডেভিল হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারে।আবির ও এবার হাসে।

বরযাত্রীরা সবাই বসে নাস্তা করছে এমন সময় নিহীন আর তা বান্ধবিরা হাতে মিষ্টির প্লেট নিয়ে আবির আর সৌভিকের কাছে আসে।
–নেন মিষ্টি খান বেয়াই সাহেব রাআআআআআআআআ..
–না না আমরা খেয়েছি আর খাবো না।তাই তো সৌভিক।
–হ্যা।আমাদের আর ক্ষুধা নাই বেয়ান
–তা বললে কি হয় অল্প একটু খান..প্লিজ।
–আচ্ছা সৌভিক এতো করে যখন বলছে নিই এক প্লেট।
–এক প্লেট কেন?দুই প্লেট নেন
–না না আমাদের এক প্লেটেই হবে।

আবির হাত বাড়িয়ে এক প্লেট নিতে যাই,তখনই সৌভিক আবিরের হাত ধরে ফেলে,,

–আরে ভাই দাড়া,দাড়া।বলা যাই না মিষ্টির নাম করে আবার বিষ খাইয়ে দিতে পারে।

আবির ভ্যাবাচেকা খেয়ে যাই।আর নিহীন তো রেগে যাই।কোনমতে রাগ কন্ট্রোল করে হাসার চেষ্টা করে বলে

–কি যে বলেন..আমি চুমু চেয়েছিলাম তা দেননি বলে আমি কি রাগ করে আপনাকে মেরে ফেলতে পারি?আমি ওতোটাও খারাপ না।

নিহীনের কথা শুনে সৌভিক বিষম খাই।আর আবির মুচকি মুচকি হাসে।নিহীন আর দাড়াই না।চলে যায়।সৌভিক এখনো ভাবছে মেয়েটা এতো পাকা কেন?

বিয়ে পড়ানোর পর নতুন বর বউকে পাশাপাশি স্টেজে বসানো হয়েছে।সবাই এখন দোয়া করবে নতুন দম্পতীকে।স্টেজের সামনে চেয়ার রাখা হয়েছে।সৌভিক একটা চেয়ারে বসতে যায় নিহীন ছুটে আসে।

–এই চেয়ারটা ভাঙা আপনি ওইটাই বসেন।

সৌভিক নিহীনের দেখানো চেয়ারটাই বসতে যাবে ওই মুহুর্তেই নিহীন চেয়ারটা টান দেয় আর সৌভিক দড়াম করে নিচে পড়ে যাই।শব্দ শুনে সবাই সৌভিকের দিকে তাকাই।আবির তাড়াতাড়ি উঠাই তাকে।নিহীনের বড় ভাই নিশান নিহীনকে বকা দিতে গেলে সৌভিক বলে তার ভুলের কারনেই পড়ে গেছে।নিহীন তো অবাক।সৌভিক চাইলেই নিহীনকে বকা খাওয়াতে পারতো কিন্তু সেটা করলো না।

সবাই আবার যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে যায়,,নিহীনের কাছে আসে সৌভিক

–এই যে মিস পেত্নি একটা থ্যাংকস ও তো দিলেন না।
–থ্যাংকস!!কেন?(ভ্রু কুচকাই নিহীন)
–মানে?আপনাকে বকা খাওয়ানো থেকে বাঁচালাম তো
–আমি কি বলেছি বাঁচাতে?
–মানে?
–মানে আপনার মাথা।বলদ….

নিহীন চলে যাই আর সৌভিক বোকার মতো তাকিয়ে থাকে।কিন্তু বেশিক্ষন সে এভাবে থাকলো না।আবির এসে যা বললো তাতে সৌভিক মাথায় হাত দিলো।সৌরভের বিয়ের জুতা চুরি হয়ছে।সৌভিক ভালো মতোই বুঝেছে এটা কার কাজ।

আবির আর সৌভিক এখন জুতা খুজাই ব্যস্ত।

অনামিকা এসে সৌভিককে বললো

–কিছু খুজছেন নাকি বেয়ান??
–না মানে….ভাবি আসলে…
–কি হয়েছে কোন সমস্যা নাকি?(অনামিকা মুখ টিপে হাসছে।সৌভিকের বুঝতে অসুবিধা হলো না যে অনামিকা ও এর সাথে জড়িতো)

–যা খুজছি তা তো পাবোই ইনশাল্লাহ… (৩২ টা দাত বের করে সৌভিক হেসে দিলো।আবির আর সৌভিক চলেই যাচ্ছিলো,কিন্তু অনামিকা ডাক দেই)

–আপনার জিনিস দোতলায়য় আছে।

সৌভিক আর আবির দোতলাই উঠছে উদ্দেশ্য নিহীনকে খুজে জুতো নেয়া।

–কাউকে খুজছেন বেয়াই?

নিহীনের কথাই সৌভিক আর আবির ফিরে তাকাই…

চলবে

(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।আর নেক্সট নেক্সট না করে গল্পটা কেমন লাগছে সেটা জানালে বেশি খুশি হবো।ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here