#দুষ্টু_মিষ্টি_প্রেমকথণ
#পর্বঃ১৩
#লেখিকাঃফারজানা_তাবাসসুম
আজ আমরা সবাই পিকনিক এর উদ্দেশ্যে বের হচ্ছি। একে একে সবাই গাড়িতে উঠে বসলো। নীরাকে কিছুক্ষন ধরে লক্ষ্য করছি কেমন যেনো মুখটা ফেকাসে লাগছে,মনে হচ্ছে কোনো কিছু নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন।
কি!! নীরা গাড়িতে উঠবে না, নাকি?? আমার কথা তার কানে যেতেই বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে একপলক তাকিয়ে হনহন করে চলে গেলো আমার সামনে দিয়ে।গাড়িতে গিয়ে বসলো।কি হলো ওর কে যানে।
″ভাবী,,তারাতারি গাড়িতে আসো″ রিফার কথায় আমার ধ্যান ভাঙলো। গাড়িতে উঠে বসলাম। তিনটে গাড়ি যাচ্ছে। একটাতে আমি, রিফা,আয়রা,নীরা,নেহাল । আরেকটাতে বাড়ির বাকি সদস্য। আরকেটাতে হলো বাড়ির কিছু স্টাফ।
গাড়ি ছুটছে তার দিগন্তে। আমি জানালার পাশে বসে,, আমার পাশে রিফা বসে হেডফোনে গান শুনছে। আয়রা ঘুমিয়ে গেছে। আর নীরা ভাবলেশহীন ভাবে বসে আছে আর কিছুক্ষণ পর পর সামনে ড্রাইভিং সিটে রোদ্দুরের দিকে তাকাচ্ছে। যা দেখে আমার একটুও সহ্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে শাকচুন্নিটাকে ধরে গাড়ির জানালা দিয়ে ছুড়ে বাইরে ফেলে দেই। হুহ্,,,আমার লুকিং গ্লাসের দিকে নজর গেলো। দেখলাম নেহাল আমার দিকে তাকিয়ে। চোখাচোখি হতেই চোখ নামিয়ে নিলাম।
এইদিকে রোদ্দুর বার বার আড়চোখে নেহালকে কায়নাতের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে। রাগে স্বজোড়ে ব্রেক কষলো। ছিটকে গেলো সবাই। আয়রা ঘুম থেকে ধরফরিয়ে উঠে বললো,,,″কি,,কি হয়েছে?″
আমি লুকিং গ্লাসের দিকে তাকালাম,,রোদ্দুরের দৃষ্টি আমার দিকেই। আবার চোখ নামিয়ে নিলাম।
কি হলো ভাই? এইভাবে কেও ব্রেক কষে নাকি??নেহাল রোদ্দুরকে বললো।
সামনে কেউ এসে পড়েছিলো মেবি!!তাই।
কই আমিতো কাউকে দেখছি না।
চুপ কর আর সামনের দিকে নজর দে। পিছনে চোখ থাকলে হোচট খেয়ে পরে যাবি। সামলাতে পারবি না তখন। দাতে দাত চেপে বললো রোদ্দুর।নেহাল রোদ্দুরের কথার জাস্ট মাথা মন্ডু কিছুই বুঝলো না। মাথা চুলকিয়ে শুধু বললো,,
″আচ্ছা চল এইবার″
নীরা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে যে রোদ্দুর কেনো এমন করলো। নীরাও নেহালকে কায়নাতের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছে।নীরার একদম সহ্য হচ্ছে না, রোদ্দুরের কায়নাতকে নিয়ে এমন বাড়াবাড়ি।রাগে দাত কটমট করতে থাকে নীরা হাত শক্ত করে নেয়।মনে মনে ভাবে,,,″এই পিকনিকেই হবে আসল মজা,, কায়নাত। শুধু অপেক্ষা করো″
………
দেখতে দেখতে চলে আসলাম আমরা আমাদের গন্তব্যে। সন্ধ্যা নেমেছে মাত্র তখন,,মস্ত বড় একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামলো। বাইরে থেকে দেখতেই অনেক সুন্দর লাগছে বাড়িটা। বাড়িটার দুই পাশে নানান রকমের ফুলের গাছ। বাড়ির পেছন দিক থেকে কৃষ্ণচূড়া গাছের দুটো ডাল উকি দিচ্ছে। আমরা সবাই বাড়ির ভেতরে চলে গেলাম। বাড়ির কিছু স্টাফ আমাদের যার যার রুম দেখিয়ে দিলেন। আমিও আমার আর রোদ্দুরের দেখানো রুমটায় চলে গেলাম। তিন ঘন্টার পথ অতিক্রম করে এসেছি, কম কথা না।তাই শরীরটা খুব টায়ার্ড। রুমে ঢুকেই বিছানায় শুয়ে পরলাম। কিছুক্ষন পর একজন মহিলা এসে আমাদের লাগেজটা দিয়ে গেলেন।আমি ঐভাবেই শুয়ে রইলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম আমার জানা নেই।
……
আমার মুখে কারো গরম নিশ্বাস অনুভব করতে পারছি। চোখ এখনো বন্ধই করে রেখেছি।এই মুহুর্তে খুলতে ইচ্ছা করছে না। গরম নিশ্বাসটা ধীরে ধীরে আরো বেশী ভার মনে হচ্ছে আমার। কোনো অবয়বের অস্তিত্ব টের পাচ্ছি । অবয়বটা ধীরে ধীরে আরো কাছে চলে আসছে তা ভালোই বুঝতে পারছি। আচমকা গলায় মৃদু কামড় অনুভব করে ছিটকে উঠে গেলাম আমি।
……
বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। বাম দিকে নজর গেলো, আমার। মুহুর্তেই চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। রাগও লাগলো প্রচুর।
তার মানে এই কাজটা আপনার!!! ভয়ে আতঙ্কে- রাগে কিছুটা চেচিয়ে বললাম।
রোদ্দুর ঠোঁট কামড়ে হাসছে।
ভারি বেহায়া মানুষতো আপনি।আমাকে এইভাবে ভয় দেখিয়ে এখন হাসা হচ্ছে। রাগে ছুড়ে দিলাম তার দিকে হাতের কাছে থাকা বালিশটা।
আরে আরে। কি করছো কি বউ তুমি। এতো ভয় পাওয়ার কি আছে হ্যা? আমি আছি না??
কিছু বললাম না আমি, মুখ ফুলিয়ে বসে আছি।
যাও ফ্রেশ হয়ে কাপড় পালটে নাও।তারপর টেবিলে রাখা খাবারটা খেয়ে নিও। এর জন্যই ডাকতে এসেছিলাম। এইবার রগী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালাম। মনে মনে বললাম,,,″এহ্ আমাকে ডাকতে এসেছেন নাকি ভয় দেখাতে আর কামড়াতে এসেছেন তা ভালো করেই জানি।″
বসে না থেকে যা বললাম তারাতাড়ি করো। আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। ঘুম পেলে পড়ে খেয়ে দেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ো,, বলেই রোদ্দুর চলে গেলেন। লাগেজ থেকে কাপড় নিয়ে আমিও চলে গেলাম ওয়াশরুমে।
…
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছি। নজর গেলো আমার গলার দিকে। ইশ্ কেমন দাগ হয়ে গেছে। মনে মনে বির বির করে বললাম,,″পাজি লোক একটা,,″
……
পরেরদিন সকালে,,,
আমরা সবাই আজ বাইরে যাবো ঘুরতে। এখান থেকে কিছুটা দূরে নাকি একটা ছোট্ট পাহাড়ি এলাকা আছে। সেখানে আমরা যাচ্ছি।কিছুক্ষনের মাঝেই আমরা পৌছে গেলাম সেখানে। আমরা ছোটরাই শুধু এসেছি।দিদুন,মা,মিসেস:শাহরিয়ার তারা বাসাতেই আছেন।
…
কি সুন্দর লাগছে দেখতে পাহাড়ি এলাকাটা। মাঝে মাঝে এই উচুনিচু রাস্তার মাঝে দু-একজন ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীর মানুষদের দেখতে পারছি। সম্ভবত এনারা চাকমা নৃগোষ্ঠির মানুষ। উচু নিচু রাস্তা দিয়ে খুব সাবধানে হেটে চলছি আমরা। বৃষ্টির কারনে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে গেছে।অনেক্ষন হাটার পর রোদ্দুর বললেন,,, একটা ছাউনী টাইপ জায়গায় বসতে নেহাল আর রোদ্দুর কিছু খাবার নিয়ে আসবে। খেয়ে আমরা এই এলাকার ভেতরে ঢুকবো।
বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না। ভাবলাম রোদ্দুর আসার আগে একটু পাহাড়টা ঘুরে দেখি। তাই রিফাকে বললামঃ
″রিফা চলো একটু এইদিক দিয়ে হেটে আসি″
না ভাবী। আমি খুব ক্লান্ত হয়ে গেছি এখন আর হাটতে পারবো না। তুমি নীরা আর আয়রাকে নিয়ে যাও।
নীরা আর আয়রাও না করে দিলো ওরাও যাবে না।
″তোমার ভালো না লাগলে।তুমি একাই একটু হেটে আসো কায়নাত ″ শান্তভাবে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো নীরা। নীরার কথা আমার কেমনি যেনো লাগলো। যাই হোক এর কথা এতো ভেবে লাভ নেই আমার। আমি ওদেরকে বলে একটু সামনের দিকে হাটতে গেলাম।
″যাও কায়নাত যাও গেলে বিপদ আর ফিরলে মহা বিপদ। সামনের দিকে পা বাড়িয়েই ভুলটা করে ফেললে″ মনে মনে বলে হাল্কা হাসলো নীরা।
……
তারাতাড়ি চল নেহাল,, আকাশের অবস্থাওতো বেশী ভালো না। ওদের কাছে জলদি ফিরতে হবে।
হুম,,, আয়।
আরে সাহেব আপনারা ঐদিকে কই যাইতাছেন।দেখেন না আকাশের অবস্থা বেশী ভালা না। আর ঐদিকে এইসময় বিপদ আছে। যাইয়েন না।
মানে কি? কিসের বিপদ?(রোদ্দুর)
এই এলাকায় মাঝে মাঝে ডাকাতের দল আসে। আর শুনছি আজকেও আইছে। সন্ধ্যার দিকে ঐদিকে যাওয়া মানেই বিপদ। তার মধ্যে আবার আইজকা বৃষ্টিও নামবো মনেহয় অনেক।
কিরে রোদ্দুর? এখন কি করবো। কায়নাতরা ত ওখানে এখনো বসে আছে। আর আকাশের যা অবস্থা যেকোনো মুহুর্তেই বৃষ্টি নামতে পারে।
রোদ্দুর নেহালের কথার জবাব না দিয়েই দ্রুত সামনের দিকে হাটতে লাগলো। নেহালও কথা না বাড়িয়ে রোদ্দুরের পেছনে গেলো।
″পাগল নাকি এরা? কইলাম ঐদিকে যাইতে না এরা তো দেহি আরো বেশী কইরা যাইতেছে। যেনে ইচ্ছা যাক। এই,,,যা বৃষ্টি নেমে গেলো রে। ″
লোকটাও দৌড়ে চলে গেলো উলটো দিকে।
……
রোদ্দুর আর নেহাল পৌঁছে গেলো সেখানে। এইদিকে বৃষ্টিও নেমে গেছে।আধভেজা হয়ে গেছে রোদ্দুর আর নেহাল দু’জনেই। রোদ্দুর সেখানে যেতেই রিফা চিন্তিতো শুরে বললোঃ
ভাইয়া,,,,ভাবীতো ঐ সামনের দিকে একটু দেখতে গেছিলো। আর এখনো ফিরে আসেনি।
কথাটা শুনেই রোদ্দুরের রাগে হাত শক্ত করে ফেললো। দাতে দাত চাপ বললোঃ ″ওকে যেতে কেনো দিলি??″
″কায়নাত শোনে কার কথা। আর″……নীরাকে থামিয়ে রোদ্দুর নেহালকে উদ্দেশ্য করে বললোঃ
″নেহাল বৃষ্টি কমে গেলে তুই ওদের নিয়ে বাসায় চলে যাস। আমি কায়নাতকে নিয়ে আসছি।″
″আমিও যাই″ নেহালের দিকে রোদ্দুর একপলক তাকালো যার মানে ওর যাওয়ার দরকার নেই। রোদ্দুর এই বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সামনে দিকে পা বাড়ালো।
″আজকে তো তুমি গেছো কায়নাত। ডাকাতের হাত থেকে বাঁচতে পারলেও রোদ্দুরের রাগ থেকে কে বাঁচাবে তোমায়!!!″ বাকা হাসলো নীরা। (নীরা এখানে আসার সময়ই লোকমুখে শুনতে পায় যে এখানে নাকি ডাকাতের উপদ্রব আছে।তাই সে তখন ইচ্ছে করেই কায়নাতকে আরো সামনের দিকে যেতে বলেছিলো)
……
ভয়ে আমার হাত পায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেছে।একটা গাছের নিচে ভেজা অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি। হাটার সময় দেখতে দেখতে যে এতোটা ভেতরের দিকে চলে আসবো ভাবতে পারিনি।তার মাঝে আবার এইরকম মুষুলধারে বৃষ্টি নেমে গেলো।এখন মনে হচ্ছে সন্ধ্যাও নেমে গেছে। এইরকম জায়গায় সাপ আর বিষাক্ত পোকাও আছে শুনেছি। যদি এখন কোনো সাপ -টাপ আমার সামনে এসে৷ তারউপর আবার অন্ধকার ছেয়ে আসছে। আমারতো আবার ভুতের ভয়ও আছে। আবার আমাকে রোদ্দুর খুজে পেলে তার ভয়ও আছে। উফফ্ একসাথে এতো ভয় আজকে আমাকে মেরেই ফেলবে দেখতেছি। এইসব ভাবতে ভাবতে বার বার ভয়ে বুক ধক করে উঠছে। হঠাৎ কিছুর আওয়াজে,,,ভয়ে চমকে উঠলাম আমি।কারো পায়ের আওয়াজ।নাহ্ শুধু একজনের না অনেকজনের ই পায়ের আওয়াজ কানে আসছে। আমার ভয় আরো তীব্র বেগ ধারন করলো। গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়লাম। ওদের কিছু কথা আমার কানে আসলো,,,,৷
গুরু,, আজকেতো কিছুই পেলাম না। আবার আরেকটা অন্যকন্ঠ কানে বাজলো,,, ″হ্ ঠিক কইছোছ এই এলাকার মানুষগুলা এহন চালাক হইয়া গেছে। আর আজকে এই বৃষ্টি আইসাতো আমাদের আরো লোকসান কইরা ফেললো।
আরেকজন গর্জে বলে উঠলোঃ ″এই তোরা চুপ কর৷এমনেতেই মেজাজটা গরম। বেশী বইকা আমার মাথা নষ্ট করিস না।
এদের কথা শুনে স্পষ্ট বুঝতে পারলাম হয়তো এরা চোর কিংবা ডাকাত। হঠাৎ পায়ে কিছু বেধার ফলে ব্যাথায় মৃদু চিৎকার দিয়ে উঠলাম। সাথে সাথেই নিজের মুখ চেপে ধরলাম। পায়ে প্রচন্ড রকমের ব্যাথা হচ্ছে কোনো কাটা বিধেছে মনেহয়। কাদতে ইচ্ছা করছে কিন্তু এখন শব্দ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। কিন্তু আমার ঐ চিৎকার মনেহয় তাদের মাঝে কেও শুনতে পেয়েছে। সে তাদের সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছে,,,
,″এই ঐ গাছটার দিক থেইকা একটা আওয়াজ আসলো না?? তোরা শুনছোস??″ আরেকজন বললো,,,″হ্ শুনলামতো মনে হয়,,,আয়তো দেখি কিসের আওয়াজ″ লোকগুলো আমার এইদিকেই আসছে ভালো বুঝতে পারছি আমি। দেখলাম বৃষ্টিটা একটু কমেছে। ডানে – বামে কোনোদিকে না তাকিয়ে দিলাম উল্টো দিকে দৌড়।
এই,,, দেখ একটা মাইয়া ছিলো ঐখানে। মাইয়াটারে ধর। দৌড়ে গেলোতো। ধর ধর মাইয়াটারে ধর। এরে পাইলে আজকে আমাদের লাভই লাভ।
ডাকাতগুলোও আমার পিছনে দৌড়ে আসছে। পায়ে ব্যাথা নিয়েই যতটা সম্ভব দৌড়ে যাচ্ছি আমি।
……
″এই মেয়েটাকে আজ একবার পাই আমি। এর ঘুরা একদম জন্মের মতো ঘুচিয়ে দেবো।″
রোদ্দুর দ্রুতো হেটছে এই ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝে আর কায়নায়কে ডেকে ডেকে খুজছে। এখনো পেলো না। রোদ্দুরের রাগ হলেও তার থেকে বেশী ভয় হচ্ছে। ভয়ে তার কলিজার পানি শুকিয়ে আসছে। রাতও হয়ে গেলো এখনো কায়নাতকে খুজে পাচ্ছে না। হাটতে হাটতে আরো সামনের দিকে চলে গেলো রোদ্দুর।
.
………
হঠাৎ একটা গাছে নিচে কারো অস্পষ্ট অবয়ব দেখতে পেলো সে। মনের এককোনে কোথাও যেনো একটা প্রশান্তির শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। একটু স্বস্তির শ্বাস ছাড়লো রোদ্দুরে। তার ধরে যেনো প্রান ফিরে এলো। দুইহাত দিয়ে মুখ চেপে কেদে দিলো রোদ্দুর। হারানোর ভয়টা যে কতো তীব্র আজতা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সে। নিজেকে সামলে নিলো রোদ্দুর। হাতের উলটো পিঠ দিয়ে নিজের চোখের পানি মুছে নিলো সে। হাত-মুখ শক্ত করে পা বাড়ালো সামনের দিকে।
……
এইখানে এসে বাচলাম। ডাকাতগুলো আমাকে ধরতে পারেনি। আমাকে অতিক্রম করে আরো সামনে চলে গেছে। পায়ের ব্যাথার কারনে হাটতে পারছি না তাই এখানে বসে আছি। হঠাৎ মাটিতে কারো পা দেখতে পেলাম। কালো জুতো জোড়ায় কাদা মেখে অবস্থা খারাপ,, কালো জিন্সের মাঝেও কিছুটা কাদা লেগে আছে। ধীরে ধীরে মাথা নিচ থেকে উপরে উঠালাম। আমার চোখে বাজলো রোদ্দুরের শান্ত মুখখানা৷ রোদ্দুর এসে গেছে। খুশিতে আমি কেদেই দিলাম। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। তার ঐ শান্ত চাহুনি আমার দিকেই। হঠাৎ রোদ্দুর একটা ছোট গাছে স্বজোড়ে লাথি মারলো। ভয়ে কেপে উঠলাম। রোদ্দুর নিশ্চই এখন আমাকে অনেক বকবে,,ধমকাবে,আবার মারতেও পারেন। ভয়ে ভয়ে আবার তার দিকে তাকালাম। রোদ্দুর ধপ করে আমার সামনে বসে পড়লো। আমায় অবাক করে দিয়ে,,, না জড়িয়ে ধরলো। আমি আর নিতে নিজেকে সামলাতে না পেরে হু হু করে কেদে দিলাম রোদ্দুরের বুকে।
!!
#চলবে
(আমাকে মাফ করবেন। এতো দেড়িতে গল্প দেওয়ার জন্য। আমি আগে একবার বলেছিলাম আমি অসুস্থ। তো সেই অসুস্থ + আমার একটু ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে গল্প লিখতে পারিনি😑😑। কিন্তু ইনশাআল্লাহ,,, ছোটো করে হলেও এখন থেকে প্রতিদিন গল্প দিবো,,,আবারও বলছি ক্ষমা করবেন আমায়🙏)
_রিচেক করিনি। ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে_
#_Farju_💜