‘নিশীথচিত্র'(১২)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে
_________
বাসায় ফেরার পথে দিহান তার স্টুডেন্টদের জানিয়ে দিলো আজ সে পড়াতে আসছে না।এমনিতেই অনেকটা দেরি হয়ে গেছে ওর বন্ধুদের জন্য।রিনিকে পেয়ে ওরাও বাচ্চা হয়ে গেছিল।আর এখন তো আর রিনিকে একা ছেড়ে দিতে পারে না।একা একা এতোদূর চলা ফেরা করেনি রিনি।
রিনি অনেকক্ষণ ধরে একদিকে তাকিয়ে আছে।দিহান রিনির চোখের চাহনি যে দিকে সে দিকে খেয়াল করে দেখলো ফুসকার দোকান। দিহান বুঝতে পারলো ফুসকার জন্যই নিশপিশ করছিলো রিনি।
— ফুসকা খাবা রিনি?
রিনির চোখ চকচক করে উঠলো।প্রথম বার দিহানের সাথে সে বাইরে এসেছে। ফুসকা খাওয়ার কথা বলতে নিজে থেকে সে বেশ ইতস্তত বোধ করছিলো।এদিকে ফুসকার দিক থেকে চোখ ফেরানোও মুশকিল কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম কাজ। তবুও বললো
— না থাক।
— আরে চলো। মেয়েরা ফুসকা খাবে না তাই হয় নাকি হা?এটা মেয়েদের অধিকার বলা চলে। আর এই দিয়ে আমি তোমাকে বঞ্চিত করতে পারি না তাই না?চলো চলো।ফাস্ট
ফুসকার প্লেট বিশ টাকা।ফুসকার সাইজগুলোও বড়।এক এক প্লেটে ১০ টা করে থাকে।ভার্সিটি দিয়ে যাওয়ার পথে এটাই জনপ্রিয় ফুসকার দোকান।।রিনি অর্ডার দিচ্ছে খাচ্ছে দিচ্ছে খাচ্ছে কয় প্লেট খেয়েছে সে হিসাব সে না রাখতে পারলেও দিহান রেখেছে। এই নিয়ে সাত প্লেট হলো।রিনিকে বলাই হয়েছিলো যতো পারো খাবা।আর দিহান সেই প্রথম থেকে এক প্লেট ফুসকা নিয়ে খাচ্ছে এখনও দুইটা বাকি।রিনির খাওয়া মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে খেয়াল এলো এতো খেলে মেয়েটার পেট খারাপ হবে।তাছাড়াও যাওয়ার পথে রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেতে চেয়ে ছিলো।যে পরিমান খেয়েছে তাতেই আর খেতে পারবে কিনা সন্দেহ। দিহান রিনিকে বললো
— রিনি আর থাক। অনেক খেয়েছো।পেট খারাপ করলে আমি পরিষ্কার করতে পারবো না কিন্তু।
দিহানের কথা রিনির এক কান দিয়ে ঢুকেছে অন্য কান দিয়ে আউট।এবার দিহান রিনির প্লেট টা ধরে টান দিলো।
— রিনি আর থাক পেট খারাপ করবে তো বাবা।কি উম্মাদের মতো খাচ্ছো
— দিহান ভাই আপনি আমার রিযিক কেড়ে নিতে পারেন না।
রিনি প্লেট টা টেনে নিয়ে বাকি ৩ টা সাবার করলো। আর এক প্লেট অর্ডার দিতে যাবে তখনই দিহান রিনি হাত টেনে রিকশায় উঠালো।
— আরে খেতে দিবেন না বুঝলাম বিল তো দিবেন।
— আমি বিল দিয়েছি রিনি।ফুসকা খাওয়ার সময় তো দুনিয়া ভুলে যাও।দেখা গেলো তোমার হাতে কেউ ফুসকার প্লেট ধরিয়ে দিয়ে আমায় কিডন্যাপ করে নিয়ে গেলেও তুমি লোক ডাকবে না ফুসকাই খাবে।তুমি আগে খাওয়া শেষ করবে তারপর বলবে দিহান ভাই আপনি কোথায় বিল দিয়ে দিন!! ততক্ষণে আমার হদিস থাকবে না আর।
রিনি হুড টেনে দিলো।দিহান কিছুই বললো না।বললেও লাভ হতো কি?
রিনি হাত জড়িয়ে ধরে দিহানের কাধে মাথা রেখে ঝালে হিস হিস করতে করতে বললো দিহান ভাই আপনার ধারণা ভুল।বিশ্বাস করেন আপনার কোনো তুলনা নেই আমার কাছে ।আমি প্রেম ভালোবাসার সংজ্ঞা অতোসতো বুঝি না।কিন্তু আমি জানি আমার ভালো থাকা, খারাপ থাকা, আমার হাসি, আমার কান্না, স্বপ্ন দেখা সবই আপনাকে ঘিরে।আপনার আর এক নাম আমার কাছে প্রশান্তি ।আপনার সাথে থাকতে চাই, বাচতে চাই,রান্না করে তিন বেলা খাওয়াতে চাই।রান্না করতে না জানলেও আপনার কথা ভাবলে মনে হয় কি জানেন? আমি সব পারবো।আমি সব পারবো আর আপনি কিনা বললেন আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে আর আমি ফুসকা গিলবো?
দিহানের রিনির কথাগুলো ভালো লাগলেও প্রতিউত্তরে ভালো কিছু বলার নাই।বললে রিনির সপ্ন, আশা, আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যাবে।রিনির প্রতি কথায় বুকে জড়িয়ে নিতে মন চাইলেও সম্ভব না সেটা।দিহানের খেয়াল হলো রিনি সেই থেকে ঝালে হিস হিস করছে। মেয়েটা মুখ টাও মুছতে পারলো না তার জন্য।জানা সত্ত্বেও জিজ্ঞেস করলো হিস হিস করছো কেন?
— তো কি করবো? আপনি না পানি খেতে দিয়েছেন আর না মুখ মুছতে। আমার ঠোঁট টা চারপাশ জ্বলছে খুব খুব জ্বলছে।আমি সহ্য করতে পারছি না।
দিহান রিনির দিকে তাকিয়ে আছে আর রিনি কাধে মাথা রেখে দিহানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ কিছুক্ষণ আগেই কালো হয়ে এসেছিলো এখন বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেছে।ঝালে রিনির চোখ গড়িয়েও পানি পরছে।দিহান আর রিনির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলো না । রিনির নাকমুখ লাল হয়ে গেছে ফরসা মুখ হওয়ার কারনে তা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।অনবরত হিস হিস করছে আর চোখ গড়িয়ে পানি পরছে।দিহান সামনের পলিথিন টেনে দিয়ে ধমকের স্বরে বললো
— পই পই করে বলেছিলাম এতো ঝাল খেয়ো না খেয়ো না।নাহ ঝাল ছাড়া তার চলে না।তাতে নাকি মজা লাগে না।এখন নাও মজা…. মন মতো নাও।
এবার রিনি শব্দ করেই কান্না করে দিলো।
— আমার খুব ঝাল লাগছে দিহান ভাই খুব।
দিহানের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলছে দিহানও রিনির দিকে তাকানো।দিহানের কি হলো নিজেও জানে না।সে রিনির ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।সাথে সাথে রিনির চোখ গোল ডিমের রুপ ধারণ করলো দিহানকে জড়িয়ে ধরা হাতটা আলগা হয়ে গেল।দিহান রিনির পেছন থেকে হাত টা নিয়ে রিনির পেট এ রাখলো।পরক্ষণেই খেয়াল এলো সে কত বড় ভুল করে ফেলেছে।সাথে সাথে ঠোঁট ছেড়ে সামনের দিকে তাকালো।হাত টাও আলগা করে পেট ছেড়ে দিলো আস্তে আস্তে হাত টা সামনে নিয়ে এলো।দুই হাত একসাথে মুঠ করে কপালে ঠেকিয়ে রিনিকে সরি বললো।
রিনির মনে হচ্ছে চারিদিকে পিনপতন নীরবতা বিরাজমান।চারপাশের এতো গাড়ি এতো হর্ন সব থেমে গেছে।।রিনি তখনও হুসে নেই কি হয়েছে সেটা ভাবতেই সে মগ্ন। স্বপ্ন কিনা চেক করতে চিমটি কাটলো।নাহ স্বপ্ন না।তবে যা হচ্ছিলো আচমকা হলেও তার বিন্দু মাত্র খারাপ লাগে নি।শুধু শিরদাঁড়া বেরে এক শিহরণ বয়ে গেছিলো।যতবার ভাবছে ততবারই এমন হচ্ছে।বুকের ভেতর ধক করে উঠেছে।এখনও কমে নি সেটা,, সমানে ধক ধক করেই চলছে।হাত পায়ের পশম দাঁড়িয়ে গেছে।নাহ লজ্জা লাগছে প্রচুর লজ্জা লাগছে।লজ্জায় অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে।তার বর্তমানে আকাশে উড়তে মন চাচ্ছে,আর নয়তো লাফ দিয়ে রিকশা দিয়ে নেমে রাস্তায় রাস্তায় দৌড়াতে ইচ্ছা করছে।কিন্তু কল্পনায় তো সে শতবার তার দিহান ভাই ঠোঁটে চুমু খেয়েছে।দীর্ঘ সময় নিয়েই খেয়েছে।মুভিগুলো তে কিসিং স্কিন দেখার সময় তার অদ্ভুত অদ্ভুত অনুভূতি হতো।তখন বার বার মনে হতো এখনই দিহান ভাইকে বিয়ে করে ফেলি তারপর জবরদস্ত চুমু হবে সারাদিন হবে।এতো দিনের সপ্ন মাত্র কয়েক সেকেন্ডে কেটে যাবে তা মানতে পারছে না রিনি। তবে এটা যে দিহান ভাই দিয়েছে তাই এইটুকুই ঢের তার কাছে।রিনি এতক্ষণে ঝালের কথা ভুলেই গেছিলো।ইনিয়ে বিনিয়ে দিহানের হাতে ধাক্কা মেরে ইননোসেন্ট ফেস করে বললো
— দিহান ভাই আমি কিন্তু কিছু মনে করি নি। আমি জানি আপনি ঝাল কমাতে এমন করেছেন।জনসার্থে এমন সাহায্য করাই যায়।বরং উত্তম কাজ। কিন্তু আমার যে ঝাল কমেনি এখন?
দিহান চুপ।
— বলছি কি শুনছেন আমার ঝাল কমেনি তো।
দিহানের রাগ লাগছে। পাজি মেয়েটা তাকে অনবরত উষ্কাচ্ছে।সে পুরুষ মানুষ। নিজেকে কত দমিয়ে রাখা যায়?এই যে রিনি তার পাশে বসলেই তার শরীর শিরশির করে তা রিনি কি বুঝে?শারিরীক চাওয়া পৃথিবীর কেউ অস্বীকার করতে পারে না।দমিয়ে রাখতে পারে শুধু।কিন্তু রিনি কি বুঝবে সে পারে উষ্কিয়ে দিতে।
রিনি অনবরত ঠেলছে।বার বার বলছে দিহান ভাই ঝাল কমেনি আমার। তাও ভাগ্যিস সরাসরি বলছে না যে ঠোঁটে চুমু দিন আমি আরও ঠোঁট চুমু খেতে চাই।অনেক মজা চুমু খেতে , ভ্যানিলা ফ্লেবার টাইপ সাদ আবার দিন আমার ভ্যানিয়া ফ্লেবার ফেভারিট।দিহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো রিনির থামাথামি নেই।এবার জোরে ধমক দেয়ায় রিনি নেতিয়ে গেল দিহানের হাতটাও ছেড়ে দিল।বাংলার পাঁচের মতো মুখ করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো।
____________
দিহান রিকশা রেস্টুরেন্টের সামনে দাড় করালো।সেখানে প্লাটার অর্ডার দিলো দুই প্লেট।রিনি অর্ধেক খেয়ে খাবার টা শুধু নাড়ছে চাড়ছে। দিহান বুঝতে পারে ফুসকার প্রভাব পরেছে।নিজের খাবার শেষ করে রিনির প্লেট হাতে নিলো।রিনি মুখ তুলে দিহানের দিকে তাকায়।
— সকালে বলেছিলাম না বেশি খেতে হবে।স্বাস্থ্য ভালো করতে হবে।নাও হা করো।খাও
রিনি অন্য দিকে মুখ ফেরালো।যার অর্থ তার অনেক অভিমান হিয়েছে,অনেক রাগ হয়েছে তাই সে খাবে না।দিহান চেপে ধরে রিনির মুখে খাবার দিলো।
— আমার সাথে ঘাড়ত্যাড়ামি চলবে না বলেছি না।ঘাড় ভেঙে দেব এক্কেবারে।
কি আর করার রিনির খেতেই হলো। রেস্টুরেন্ট থেকে দাদির জন্য সহ তিন প্যাকেট কাচ্চি বিরিয়ানি কিনলো।এটা রিনির ফ্যাভারিট আর দাদিরও।দিহান আবার বাছাবাছিতে নেই যা পায় তাই ই ভালো।তারপর আবার ফুসকা, ভর্তা,টক সব আলাদা করে কিনলো যাতে রিনি বাসায় গিয়ে বানিয়ে খেতে পারে।দিহানেত মতে রিনির তৃপ্তি মতো খাওয়া হয় নি ।রিনির জন্য রিনি অনুসারেও অল্প কিছু করেও দিহানের বেশ ভালো লাগছে।কিন্তু রিনির মুখ ভোতা দেয়া।মেয়েটা এতো অভিমানী!!! সে বোঝে না যে সব আবদার পূরণ করা যায় না?
___________
রিকশা ঝাকাচ্ছে।দিহান রিনিকে অনবরত বলছে “পরে যাবা রিনি প্লিজ আমার হাত ধরো নয়তো রিকশা ধরো”।সে কিছুই করছে না আবার দিহানকেও হাত ধরতে দিচ্ছে না।এত্তো রাগ মেয়েটার।দিহান জানে এর প্রভাব লেখাপড়ার উপরও ফেলবে রিনি দুইদিন পরে এক্সাম। তখন কেমনে যে বলদের মতো কাজ টা করে রিনিকে উষ্কে দিলো। ও তো জানতোই মেয়েটা পাগলাটে। ওর দোষ দেয়া বোকামি।নিজেকে থাপড়াতে মনে চাচ্ছে আর রিনিকেও। রিকশায় জোরে ঝাকি লাগায় রিনি পরে যেতে নেয় সে তৎক্ষনাৎ রিনির হাত টেনে ধরে।তারপর ঘাড় ধরে নিজের দিকে মুখ করে দাঁত রাগে খিটখিট করতে করতে বলে “এইটুক মেয়ে এতো ক্যান ঘাড়ত্যাড়া তুই হ্যা? যদি পরে যেতি?
রিনির ঘাড়ত্যাড়া জবাব
— গেলে যেতাম।
দিহান আবার ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বললো এর জন্য এত কিছু না? তারপর রীতিমতো কামড়।রিনি সহ্য করতে পারলো না।ভালো লাগলেও দিহান রীতিমতো দাঁত বসিয়ে দিচ্ছে বলে সহ্য করা কষ্টকর হয়ে উঠছে।পেট খামচে কিছু রাখছে না।কতোক্ষণ পেরিয়ে গেল কে জানে।রিনি বুঝলো ঠোঁটের দফারফা শেষ।এ দিয়ে আর কাজ হবে না। চুমু খাওয়ার শখ ঘুচে গেছে তার।দিহান যে ইচ্ছা করেই এমন করছে তাও বুঝতে পেরেছে।এবার নিজেও দাঁত বসিয়ে দিলো। দিহান আউচ বলে ছেড়ে দিয়েও আবার ধরলো।রিনি দিহানের পেট এ সাংঘাতিক চিমটি কাটলো।তারপর ছেড়ে দিতেই বললো
— আরে বাল আমি কি গাজর যে চাবানোর কম্পিটিশনে নেমেছেন?
এবার দিহান বুঝলো বেশি হয়ে যাচ্ছে।রিনির চোখ দিয়ে পানিও পরছে।সরি বলে অন্যদিকে ফিরলো।পেট থেকে থেকে হাত আগলা করে ছেড়ে দিতেই রিনির জন্য পারলো না রিনি যথাস্থানে হাত টা রাখলো।রিনি দিহানের বুকে মাথা ঠেকিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।মুখে বললো
— আমার ভালো লেগেছে।একদমই ব্যাথা লাগে নি।
দিহান অন্যদিকে ফিরেই মুচকি হাসলো।বুকে মাথা রেখে রিনিও মুচকি হাসছে।
বৃষ্টি অনবরত পরছে।এই বৃষ্টির ধরনই এমন। বেগ বাড়বে কমবে কিন্তু পুরোপুরি থামবে না।আর সাথে হালকা বয়ে যাওয়া বাতাসের মতো দুটি হৃদয়েও প্রেমের বাতাস বইছে।দুজনেই ভালোবার অনুভূতি দুইভাবে নিচ্ছে।
____________
স্বন্ধ্যা নাহাদ দিহান রিনিকে ইম্পর্ট্যান্ট টপিকগুলো দাগিয়ে দিলো।রিনি আর দিহানের রুমে গিয়ে হামলা করে নি।এমনিই অনেক জ্বালাইছে তাই একটু রেস্ট দিছে দিহানকে।সে তার পড়া আজ এক বুক আনন্দ আর ঠোঁটে ব্যাথা নিয়েই মন লাগিয়ে পড়ছে।আবার কিছুক্ষণ পর পর আয়নার সামনে জামা জাগিয়ে লাল হয়ে যাওয়া পেট টা পর্যবেক্ষণ করে আসছে।লজ্জায় বার বার রক্তিম রুপ ধারণ করছে।লজ্জায় দুই হাতে মুখ ঢেকে ফেলছে।সে এক আলাদা পাগলামি।
দিহানের কথা অনুযায়ী ফুসকা গুলো সে কাল খেতে পারবে।ঘরে উঠেই প্রথম এই কথা বলে নিজের রুমে চলে গেছিলো দিহান।তাই খাবার প্যাকেট সহ সব কিছুই রিনি রেখে দিয়েছিলো।
নয়টা বাজতেই দিহান রিনিকে খাবারের জন্য নিচে নামতে বললো।দুজন মিলে খাবার সার্ভ করে দাদির খাবার তার রুমে দুজনই দিতে গেল।
বিরিয়ানি দেখে দাদি বললো
— এগুলো কখন আনলি রিনি দাদু ভাই
— আমি আনি নি দাদি।তোমার পছন্দ তাই দিহান ভাই এনেছে তোমার জন্য।
দাদি দিহানকে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।বুড়ো মানুষ অল্প ভালোবাসায়ই অনেক খুশি হয়।কারণ বুড় বয়সে তাদের সাথে মানুষের সমাগম একেবারেই কমে যায় খুব একা হয়ে পরে তারা।দিহানের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো
— তোর মতো নাতি গুলা আমারে একবার দ্যাখতেও আয় না।বেড়াইতে আইলে ভালো আছি জিজ্ঞেস করে আর ওগোর কোনো খবর থাহে না।আবার যাবার বেলায় কইয়া যাইবো ভালো থাইকেন দাদি।
দিহান দাদিকে জড়িয়ে ধরলো।
— তাতে কি হইছে? তোমার এই নাতি তোমার সাথে প্রতি দিন গল্প বলবে কেমন?
______________
দিহান রিনি দুজনেই খাচ্ছে আর হিস করছে।রিনি একটু বেশিই।রিনি বিরবির করে বলতে শুরু করলো
— মনে হয় জীবনে কিছু খায় নাই।পাইছে আর কি জীবনে পাবে তাই মন মতো কামড়াইয়া রাখছে।এত পছন্দের খাবার খাইতেও পারতেছি না।
দিহান কান খাড়া করে রিনির কথা শুনলো
— পাগল হইছিলা ক্যান তাইলে হুম? তখন খেয়াল থাকে না?
— না থাকে না।তাই বলে কামড়াবেন আপনি?
— হ কামড়াবো।আবার পাগলামি করলে ঠোঁট টাই ছিড়ে ফেলবো।
— এই সত্যি করে বলেন তো আপনি কয়জনের ঠোঁট চুমু খেয়েছেন?কেমন এক্সপার্ট মনে হলো আপনাকে।
দিহান কপাল চাপড়াতে নিয়েও চাপড়ালো না।সে উত্তরে বললো
— তুমি কয়জনে চুমু খেয়েছো যে বুঝেছো আমি এক্সপার্ট?
রিনি দমে গেল।তারপর আবার বললো
— ফোনে দেখেছি।
— বাহ উন্নতি হইছে তোমার। এইসবও দ্যাখো?
— ধুর কি বুঝাতে চাচ্ছেন হুম?মুভি তেই তো এসব থাকে,,,,,
— তো আমি কখন বললাম তুমি গভীর কিছু দ্যাখো? বাই দা ওয়ে তুমি এই এইসব বলতেই নেগেটিভে ক্যানো নিছো তার মানে তুমি দ্যাখছো?( ভ্রু কুচকে তাকিয়ে)
— ছিহ বলেও রিনি দমে গেলো।
— খেতে না পারলে নষ্ট করো না।ফ্রিজে রেখে দাও।
— আপনি পারবেন?
— দ্যাখছো না ফ্রিজে রাখার তৈয়ারি করতেছি।
— আমার টাও রেখে দিন বলে রিনি দৌড়ে চলে গেল
— দিহান বার বার বললো আর কয়টা খাও কাজ হলো না।শেষ বার বললো আমি খাওয়াই দি আসো।
রিনি দৌড়ে এসে দিহানের পাশে বসলো দিহান হেসে বললো
— খুব না?
রিনিও মিষ্টি হেসে জবাব দিলো
–হুম খুব খুব খুব।
রিনি দুই লোকমা খেয়েই চোখে জল।তাই দিহান নিজেই বললো” আর থাক খেতে হবে না ।হুহ। আম সরি রিনি বেশি লেগেছে?
— আবার জিগায়
দিহান হাসলো সাথে রিনিও
দিহান একটা কামড় খেয়েছে তাই রিনির মতো অতো ঝাল তার লাগছে না।আর কি রিনির মতো চোখে পানি আসার মতো অবস্থা তার না।তবে নিজের কাজে সে অবাক।নিজের মনেই প্রশ্ন জাগে,সে দিন দিন নিজের কন্ট্রোল হাড়াচ্ছে না তো?যদি হাড়ায়ও তাহলে নিজেকে সুধরাতে হবে।
চলবে,
‘নিশীথচিত্র’ (১৩)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে
___________
রাত এগারোটা।শুনশান নীরব রাত।বাইরে থেকে ঝিঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে।রিনির পড়ার টেবিল তার বিছানার পাশেই।চেয়ারে বসে আরাম করে বিছানায় পা রেখে কোলে বই নিয়ে পড়ছে সে।তবে আজ কিছুটা ভয় ভয় লাগছে তার।উপর তলার অপর প্রান্তে তার বাবা মা ঘুমাতো।আজ উপর তলা পুরোই ফাঁকা।মনে হালকা ভয়ের উদ্ভব হওয়া টা সাভাবিক।এরকম ভয় নিয়ে পড়াও হচ্ছে না রিনির।দিহানের রুমে যাওয়ার সাহস টুকুও হচ্ছে না।যতই হোক দিহান শুধু রাতের বেলায়ই মন লাগিয়ে পড়ার সু্যোগ পায়। তার এই সময়টা রিনি তাকে একদমই যন্ত্রণা দিতে চায় না।
কেটে গেলো বেশ কিছুক্ষণ নাহ থাকা যাচ্ছে না।সে ধীর পায়ে নিচে নেমে দিহানের রুমে ধাক্কা দেয়। ভেবেছিলো দরজা টা ভিতর থেকে বন্ধ হবে। কিন্তু না দরজার কপাট গুলো চাপানো ছিলো মাত্র।রিনি উঁকি দিয়ে দেখে দিহান বিছানায় শুয়ে আছে।এক হাত বুকের উপর আর এক হাত বিছানায় পরে আছে।পা টান টান সোজা করা।নিশব্দ পায়ে কাছে যেতেই কানে এলো দিহানের শ্বাস করার শব্দ।ঠিক ঘুমালে যেমন শব্দ হয়।এতক্ষণে বুঝতে পারলো দিহান ঘুমিয়ে আছে।কিন্তু রিনি ভাবছে” দিহান ভাই তো এতো তাড়াতাড়ি ঘুমায় না হঠাৎ হলো কি?”
ডাকতে নিয়েও থেমে গেলো। হয়তো খারাপ লাগছে বলেই ঘুমিয়েছে।রিনি ডেকে আর খারাপ লাগা বাড়াতে চাইছে না।সমস্যা না থাকলে অসময়ে দিহান ঘুমাতো না এটাই রিনির ধারণা। কিন্তু কথা হচ্ছে রিনির একদমই ঘুম পায় নি।আসার সময় সাথে করে বই টাও আনে নি।এখন আবার একা একা উপরে যেতেও ভয় হচ্ছে। তার মনে হচ্ছে উপরে উঠলেই বড়সড় একটা ভূতের সাথে দেখা হয়ে যাবে।ঠিক তখনই মনে পড়লো দিহান তার কাছ দিয়ে বাংলা বই টা নিয়ে এসেছিলো দাগিয়ে দেবে বলে।বাংলা পরীক্ষাটাই প্রথমে, কথা ছিলো কাল থেকে বাংলা পড়া শুরু করবে দুইদিনে শেষ করবে।কারণ কাল পরশু বাদে তরশু এক্সাম।
টেবিল বইটা নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখলো পাঁচটা অধ্যায় দাগিয়ে দিয়েছে দিহান।বাকি টা হয়তো পরে দেবে দিহানকে ফটোকপির মতো অনুসরণ করতে করতে রাত জাগার অভ্যাস টাও শক্তপোক্ত হয়েছে রিনির।
__________
ঘড়িতে রাত একটা ত্রিশ। পড়ায় একঘেয়েমি লাগছে।চেয়ারে উল্টো হয়ে বসে দিহানের দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো রিনি।কতো সাধারণ একটা ছেলে তার ভালোবাসার মানুষ। আর দেখা গেছে রিনি ছোট বেলা থেকে বলতো আমার জামাই নায়ক হবে,নাচবে গাইবে।কিন্তু এসব গুণ দিহানের একদমই নেই।তবুও রিনি তাকে ভালোবেসে ফেলেছে,খুব ভালোবেসে ফেলেছে।ভালোবাসা আসলে এমনই হয়।ভালোবাসলে কখনই ব্যাখ্যা দিয়ে বলা যায় না ঠিক কি কারণে ভালোবাসি মানুষটাকে।রিনি হাসলো।দিহানের হাতের কাছে পরে থাকা ফোনটার দিকে নজর গেলো।সে চোরের পায়ে গিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে আবার ফিরে এলো চেয়ারে।ফোনে লক নেই কোনো। ওয়ালপেপারে দেখা গেলো জন্মদিনে রিনির সাথে তোলা ছবি টা।রিনির ফোন ধরার উদ্দেশ্য এটা না।সে জানতে চায় দিহানের আর কোনো ফেসবুক আইডি আছে কিনা।সে যে আইডি তে মেসেজ দেয় সেই আইডিতে দিহানকে কখনোই সক্রিয় হতে দেখা যায় না।
ঘেটে দেখা গেল তার ধারণাই ঠিক। অন্য আইডি আছে।আর কিছুক্ষণ ফোন ঘাটাঘাটি করার পরে দিহানের ফোন যথাস্থানে রেখে আসে।তারপর চেয়ারে বসে আর কিছুক্ষণ পড়ার চেষ্টা করে।
_____________
সকাল ৬ঃ২৪। রিনি আড়মোড়া ভেঙে দেখে দিহান টেবিলে বসে গুনগুনিয়ে পড়ছে। দিহান এমন গুনগুনিয়েই পড়ে রিনিকে পড়ানোর সময়ে শুধু নিশব্দে পড়ে। এটা রিনির জানা।কিন্তু কথা হচ্ছে তার স্পষ্ট মনে আছে সে রাতে টেবিলেই ছিলো বিছানায় এসে শুয়েছে বলে তার মনে পরে না।তাহলে কি দিহান ভাই?
রিনির ভাবনার মধ্যেই দিহান বলে,
–রিনি ফ্রেস হয়ে চা নিয়ে এসো তো।রাতে মাথা ব্যাথা করছিলো অনেক।এখনও ঝিম মেরে আছে মাথা।চা খেলে ভালো লাগবে হয়তো। দিহান একটু থেমে আবার বললো এই রিনি তুমি চা করতে পারো তো?নাকি পারো না?
রিনি ঘুম ঘুম গলায় বিছানা ছাড়তে ছাড়তে জবাব দিলো
— করি নি কখনও তবে জানি পানির মধ্যে চা আর চিনি দিলেই কাজ শেষ।
— এইতো গুড।করে আনো তো ঝটপট । আর হ্যা আদা দিও তো অল্প।এসাইনমেন্ট জমা দেয়ার লাস্ট ডেট আজ। অনেকটাই বাকি আর এর মধ্যে মধ্যে মাথা ব্যাথা সহ্য হচ্ছে না আমার একদম।
রিনি তাড়াতাড়ি করে দিহানের মাথায় হাত ঠেকালো।মুখ ফ্যাকাশে করে বললো
— দিহান ভাই আপনার গায়ে তো জ্বর।
রিনির মুখ টা চুপসে গেলো। মুখ ভোতা করে বললো
— এই জন্যই আপনার মাথা ব্যাথা ছাড়ছে না।ঔষধ খাবেন? চা করে আনি বিরিয়ানিও গরম করি তারপর ঔষধ টা খেয়ে নিবেন।আর তারপর আমায় দেখিয়ে দিবেন আমি আপনার এসাইনমেন্ট গুলো লিখে দেবো।
— খুব বড় হয়ে গেছো না? তোমার পরীক্ষা আর আমার সামান্য এসাইনমেন্ট।
— দিহান ভাই আমি নাটকে দেখেছি এসাইনমেন্ট খুব ই গুরুত্বপূর্ণ ভার্সিটি লেভেলে।সামান্যই যদি হতো নিজের শরীরে জ্বর তাও লিখতে বসতেন না।আর এইটা আমার ফাইনাল পরীক্ষাও না।আর আজ সকাল থেকে আমার বাংলা পড়ার কথা ছিলো।কিন্তু কাল এই রুমে এসে আমি চারটা অধ্যায় কমপ্লিট করে রেখেছি রাতেই।তো সময় বেঁচে গেলো না? সকালে পরলে তো সেই সময় টুকু লাগতো তাই যেটুক সময় বাচলো সেটুক আমি আপনাকে দিতে চাই।
দিহান গম্ভীর চোখে রিনির দিকে তাকালো।জ্বরের কারনে নাকি সত্যিই গম্ভীর বোঝা যাচ্ছে না।
— বড় হয়ে যাচ্ছ রিনি।তোমাকে বাচ্চাদের মতো ব্যবহারেই ভালো লাগে আমার। আমার কাছে বাচ্চাই থাকো দায়িত্বশীল হতে এসো না।
— হতে তো হবেই।প্রেমে পড়লে বড় তো হতেই হবে।কয়দিন পর যে আমার বিয়ে হবে।তাই এখন থেকেই দায়িত্বশীল আচারণ করা উচিত।
রিনির লজ্জা মিশ্রিত একরাশ খুশি নিয়ে বলা কথা টা দিহানকে উদ্দেশ্য করেই বলা কিন্তু দিহানের মন বিষাদে ছেয়ে গেলো।সত্যিই যদি কয়দিন পরে রিনির বিয়ে হয়ে যায় কি করবে সে? রিনি কয়দিনের কথা বললো।মিনিমাম পাঁচটা বছর মা অন্তত চারটা বছর যদি রিনি অপেক্ষা না করতে পারে?কিছুই কি করতে পারবে নাকি শুধু নিরুপায় হয়ে হাত গুটিয়ে থাকতে হবে কৃতজ্ঞতার ভারে?
রিনি মাথায় আবার হাত রাখলো।দিহানকে অন্যমনস্ক দেখে কপালে কপাল ঘষে নিলো।দিহান চমকে রিনির দিকে তাকালো।রিনি বললো
— ভাগ করে নিলাম দিহান ভাই।আপনার জ্বর ভাগ করে নিলাম। কিন্তু অসস্তিকর অনুভুতি, মাথার যন্ত্রনা গুলো ভাগ করতে পারলাম না।নেয়া গেলে নিতাম।( মন খারাপ করে)
দিহান অপলকে তাকিয়ে রইলো।প্রেমে পরে কি মেয়েটা দিন দিন বড়ই হয়ে যাচ্ছে?
রিনি আবার বললো
— আপনাকে আমার ফার্মের মুরগী নাম দিতে ইচ্ছা করছে দিহান ভাই।মাথায় বৃষ্টির ফোটা লাগতেই জ্বর বাধিয়ে বসলেন?কেমন কথা? আমারও তো লাগলো।এমনকি সারাদিন ভিজলেও জ্বর হবে না আমার।হুহ।আচ্ছা যাই চা করে আনি
রিনি ঢুলতে ঢুলতে বের হয়ে গেলো।খুব সম্ভব ঘুম কাটে নি মেয়েটার ।ঘুম কাটলেও ভাব টা যায় নি শরীর থেকে, তাই ই ঢুলছে।দিহানের আবার মনে হলো না রিনি বড় হয় নি, দায়িত্বশীলও হয় নি আর রিনির কয়দিন পর বিয়েও হবে না।দিহান আবার তার এসাইনমেন্টে মুখ গুজলো।মাথা ব্যাথায় বারবার চোখ মুখ কুচকে ফেলছে।
রিনি চা নিয়ে এলো ত্রিশ মিনিট পরে।পরনে হলুদ গোল জামা গলার সাথে ওড়না ঝুলানো।মেয়েটাকে শত ধমকেও পাগলামি গুলো ছাড়াতে পারলো না দিহান।তার অগাধ বিশ্বাস এতেই দিহান পটে যাবে।
চা মুখে দিয়েই দিহানের টানাটানা কপালের চামড়া কুচকে গেলো।রিনি তাকিয়েই ছিলো দিহানের মুখের দিকে। দিহানেত চোখ কুচকানো দেখে নিজের মুখ বিকৃত হয়ে গেল।চা টা কি তাহলে ভালো হয় নি?
দিহান বললো
— চা করে চেখে দেখো নি তাই না?
রিনি মুখ ভার করে দুপাশে মাথা নাড়ালো। তার অর্থ সে দেখে নি।
–ভাগ্যিস দেখো নি নয়তো এত সুন্দর চা কিভাবে পেতাম?
রিনি খুশি হয়ে গেলো খুশিতে সে তার কাপ থেকে মুখে নিয়েই মুখ থেকে ফেলে দিলো।মুখ ছোট করে বললো
— যত খানি পানি দিয়েছি তার অর্ধেক পরিমান তো চা পাতি দেয়া উচিত। তাই ই দিলাম কিন্তু তিতা হয়ে কেন গেল?
— ভাগ্যিস হয়েছিলো,,, এই যে আমি চায়ে আদা দিতে বলেছিলাম দাও নি।হয়তো ভুলে গেছো।তাই এই কড়া চা তার কাজ সেরে দিচ্ছে।
— এটাকে কড়া চা বলে না। তিতা চা বলে দিহান ভাই।আপনি আমাকে পরিমাণ বলে দিলে আমি আবার চা করে আনতাম।
মাথা নিচু করে।
দিহান নিষেধ করলো।তার নাকি এই চা ই ভালো লাগছে। রিনি দৌড়ে চলে গেলো কি কারণে গেল বোঝা যাচ্ছে না।আবার পাঁচ মিনিট পরে ফিরে এলো । হাতে খাবার থালা
— উহ রিনি খাবো না আমি।
চলবে,
খুব ঘুম পেয়েছে।একবার ঘুমাইয়াও পড়ছি।আরও বড় করে দিতে চাইছিলাম কিন্তু ঘুমের জন্য যেটুক লিখছ সংশোধনও করতে পারলাম না সরি।আমি সত্যিই ঘুমে চোখ খুলতে পারছি না।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আমি কাল সকালে ভুলগুলো সংশোধন করে দিব.