#নীরবে_তুমি_রবে
লেখনীতেঃ রিধিমা জান্নাত রূপা
পর্বঃ ০৭
.
স্থির হয়ে বসে আছে রূপা। ভেবে চলেছে কিছুক্ষণ আগের ঘটনা। ভাবতেই যেন একরাশ লজ্জা এসে জমা হলো তার কাছে। কাজিন মহলের সবার হাসির কথা মনে পড়তেই লজ্জার মাত্রা দ্বিগুণ হলো। ইস্! সামান্য ‘কবুল’ বলাতেই এত কাহিনি কিভাবে করলো সে? কই, রিমি আপু তো এমনটা করে নি তার বিয়ে তে। ভাইয়ার সাথে তো আপুর প্রেমের বিয়েও নয়, তার মতোই হুট করে বিয়ে। তাহলে? আর ভাবতে চাইলো না রূপা। সবাই কি-না কি ভাবলো, সেটা ভেবেই যেন অস্বস্তি হতে লাগলো।
তখন পানি খাওয়ার কথা বলতেই সবাই অবাক হয়ে তাকায় রূপার দিকে, কাজিন মহলের সবাই হেঁসে উঠে। রূপার বড় বাবা সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়ে পানি নিয়ে আসবার কথা বলে। কেউ একজন গ্লাস ভর্তি পানি এনে রূপার হাতে দিতেই তা ঢকঢক করে পান করে ফেলে। তারপর আবারও সবাই এক জোটে কবুল বলতে বলে উঠে। কিন্তু তবুও নিজেকে শক্ত করে স্থির হয়ে বসে থাকে রূপা, কারোর কথায় কানে তুলে নি। সবাই যখন হাল ছেড়ে দিলো, শুধুমাত্র ‘আলহামদুলিল্লাহ!’ বলতে বললো ঠিক সেই মুহুর্তেই কবুল বলে উঠলো মেয়েটা। সেই কাঙ্ক্ষিত শব্দটা তিনবার বলার পরেই সাইন করলো কাবিননামায়।
সাইন করার কথা ভাবতেই চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো রূপা। এতটাও খারাপ তো তার হাতের লেখা নয়, তাহলে? তাহলে কাবিননামায় সাইন’টা এত জঘন্য হলো কেন? যেটা সে একবার চোখ বুলিয়েই বুঝতে পেরেছে যেন।
“তাড়াতাড়ি চল রূপা, ভাইয়ার তো তোকে দেখার জন্য তর সইছে না।”
ঘোর কাটলো রূপার, তাকালো সামনের দিকে। বোনরা সবাই মিলে দাঁড়িয়ে আছে, তাকিয়ে আছে তার দিকে। কথাটা রিমা’ই বলেছে, সবার মুখেই লেগে আছে হাসি। কিছুটা বিরক্ত হয়েই মাথা ঝাকালো রূপা, বলতে চাইলো কিছু, তার আগেই চট করে রিফা বলে উঠলো,
“যা বলেছিস, দেখলি না কেমন চটপট কবুল বলে দিলো এই গাধীর মতো এত কাহিনি না করে।”
“রিফাপু তুমি কিন্তু….. ”
“উফ্! চল তো।”
রূপাকে থামিয়ে দিলো রিফা, কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে প্রায় টেনেই নিয়ে যেতে লাগলো। বাকিরাও রুম ছেড়ে বেড়িয়ে গেল।
.
কনে বিদায়ের তোড়জোড় নেই, তাই কোন কাজেই যেন তাড়া রইলো না অন্যান্য বিয়ে বাড়ির মতো। রাতের প্রহর পড়ার আগেই দাওয়াতি মেহমান খাওয়া-দাওয়া শেষ করলো, নতুন বর কনে কে একসাথে ভবিষ্যতের জন্য দোয়া করে একে একে চলে যেতে লাগলো সবাই। মেহমান গুলো যেতেই প্রায় ফাঁকা হয়ে গেল পুরো বাসা, রয়ে গেল কিছু কাছের আত্মীয় স্বজনরা। ততক্ষণেও খাওয়া হয়নি তাসফি রূপার। একসাথে খাবে বলে কাজিন মহলের কারোরই খাওয়া হয় নি। খাবার ব্যাবস্থা ছাঁদে করলেও তাদের কেউই এই সময়টাতে ছাঁদে যেতে চাইলো না। যেতে চাইলো’না না, যেতে দিলো তাসফি। এত ভারী শাড়ি পড়ে ছাঁদে উঠতে পারবে না রূপা, এটা বলেই আঁটকে দিলো সবাইকে। তাসফির কথায় সামান্য মজা নিলো সবাই, রাজিও হয়ে গেল তার কথায়। একে একে ডাইনিং রুমের দিকে যেতে লাগলো সবাই।
সোফায় বসে ছিলো তাসফি রূপা। তাসফি উঠে দাঁড়িয়ে রূপাকে সামনে যেতে বললো। রূপাও কোন বাক্য ব্যায় না করে এগোতে লাগলো তাসফির কথায়৷ দুই কদম এগিয়ে যেতেই হঠাৎ মাথায় ঝুলে রাখা ওড়নার কোণা পায়ের নিচে বেঁধে গেল মেয়েটার। মেঝেতে টাইলস ও নতুন জুতা হওয়ায় সহজেই স্লিপ কে’টে গেল রূপার পা। পিছনের দিকে শরীরের পুরো ভার ছেড়ে দিতেই পিছন থেকে তাকে ধরে ফেললো তাসফি, একহাতে কোমর জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিলো রূপাকে। উৎকণ্ঠা স্বরে বলে উঠলো,
“রূপা ঠিক আছো তো? লাগেনি তো পায়ে?”
হঠাৎ ভয়ের তাড়নায় দ্রিমদ্রিম শব্দের সুর তুললো রূপার বুকে, মুখ ফুটে বলতে পারলো না কিছু। নিজেকে গুটিয়ে তাসফির বুকের অতি নিকটে দু’হাতে তাসফির হাত সহ বুকের কাছটায় চেপে ধরলো। এতক্ষণে তাসফির বলা কথায় তাকিয়েছে সবাই তাদের দিকে, বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ তাসফির বলা কথাগুলোর মানে। কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠলো রূপা, তাকে উদ্দেশ্য করে তাসফি আবারও,
“দেখি বসো তো এখানে। পায়ে লাগছে কি-না দেখাও আমাকে।”
বলেই রূপার কোমর ছেড়ে সেন্টার টেবিলেই বসিয়ে দিলো, নিজেও হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়লো তার সামনে। রূপার পায়ে হাত দিতে নিতেই সামান্য চমকে উঠলো মেয়েটা, পায়ে হাত দিতে বাঁধা দিলো তাসফি কে।
বাড়ির বড়রা নিজেদের কাজেই ব্যস্ত ছিলো, এদিকে তাদের নজরই এলো না যেন। তাদের কাছে এগিয়ে এলো রিমি। তাসফি কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
“তাসফি ভাই, কি হলো ওর? হঠাৎ এভাবে পড়ে গেল কেন….. ”
“পড়বে না? এতটুকু মেয়ে এত ভারী শাড়ি গহনা সামলাতে পারবে বলে তোর মনে হয়? এত কিছু কে পড়াতে বলেছে তোদের?”
বেশ জোরেই বলে উঠলো তাসফি। রূপার পা এগিয়ে নিয়ে পায়ের দিকে তাকাতেই যেন অধিক মেজাজ খারাপ হলো তার। রিমি কিছু বলতে নিলেই তাকে থামিয়ে দিলো তাসফি। বললো,
“দেখ, এত উঁচু জুতা পড়িয়ে রেখেছিস আর বলছিস পড়ে গেল কেন? এই পিচ্চি মেয়ে এত উঁচা উঁচা জুতা সামলাতে পারে?”
“ওর তো অভ্যাস আছে ভাইয়া। তাছাড়া বিয়ের দিনেই তো একটু সাজবে, তাই না? এইদিন কি আর পাবে, বলো?”
এগিয়ে এসে বলে উঠলো রিফা। এদিকে কপালে ভাঁজ ফেলে সবটা দেখে চলেছে রূপা। হুট করে বিষয়টা ঘটে যাওয়ায় সে নিজেও যেন কিছু বুঝতে পারে নি। অনেকেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলো। যতক্ষণে সবটা তার আয়ত্তে এলো ততক্ষণে বোনদের হয়ে কিছু বলতে চাইলো রূপা। কিন্তু সুযোগ দিলো না তাসফি। বলে উঠলো,
“এ্যাই মেয়ে! দেখি জুতা খুলো। বাসার মধ্যে এমন উঁচু জুতা পড়ে ঘুরতে হবে কেন?”
আশ্চর্য! হঠাৎ কি হলো ওনার? সামান্য এই কারণে জুতা খুলতে হবে কেন? নতুন বউ খালি পায়ে ঘুরবে, এটা কি ভালো দেখায়? তাছাড়াও এখন যদি জুতা খুলে তাহলে তাসফির বুকের কাছটায় এসে ঠেকবে সে, একদম তাসফির পাশে দাঁড়াতে পারবে না। এই মানুষ’টাকে এতটা লম্বা না হলেও হতো। না না, হাইটে একদম পারফেক্ট আছে মানুষটা, হয়তো সে নিজেই অত্যাধিক খাটো। নিজ ভাবনায় মসগুল হলো রূপা। রূপা কে চুপ থাকতে দেখে তাসফি আবারও,
“কি হলে? আমার কথাটা কানে যাচ্ছে না? বেয়াদব মেয়ে।”
বলেই নিজ হাতেই জুতা খুলতে লাগলো রূপার পা থেকে। মেয়েটা বাঁধা দিলেও পরবর্তীতে আর শুনলো না তাসফি। কাজিনদের দিকে তাকালো রূপা। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখে টিপে হেঁসে চলেছে, রূপাকে তাকাতে দেখে সেই হাসির মাত্রা বৃদ্ধিও পেয়েছে। তাসফি নিজের কাজ শেষ করে উঠে দাঁড়াতেই সবাই হৈ হৈ করে উঠলো, একসাথে খোঁচাতে লাগলো তাসফি কে। তাসফি কথাগুলো গায়ে না মাখলে কথাগুলো ঘুরিয়ে রূপার দিকে ছুড়ে মা’রলো। সবার লজ্জা জনক কথাবার্তায় মাথা নিচু করে ফেললো মেয়েটা। বাকিটা সময় খালি পায়েই কাটাতে হলো রূপাকে।
.
তাসফি কে নিজের রুমে ঢুকতে দেখেই অস্বস্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেল রূপার, সৃষ্টি হলো শরীরের মৃদু কম্পন। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে পারলো না। সে কি ভয় পাচ্ছে তাসফি কে? না… ভয় পাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না, তবুও এমন কেন হচ্ছে। নিজের কাছেই প্রশ্ন করলো রূপা, কিন্তু উত্তর মিললো না। আবারও নিজেকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস চালিয়ে গেল।
তাসফিকে কি বলবে বা কি করবে সবটাই যেন গুলিয়ে ফেললো রূপা, ভুলে গেল রিমির বলা কথাগুলোও। শুধু মনে রইলো সালাম করতে হবে তাসফি কে। আর সময় ব্যায় করলো না, এগিয়ে এসে দাঁড়ালো তাসফির সামনে। মুখে ‘আসসালামু আলাইকুম!’ বলে নিচু হয়ে পায়ে হাত দিতে গেল। ধরে ফেললো তাসফি। বলে উঠলো,
“আরে, আরে কি করছো?”
“সালাম! সালাম করছি।”
“সেটা তো শুনতেই পেলাম, কিন্তু পায়ে হাত দিচ্ছো কেন?”
“পায়েই তো সালাম করতে হবে।”
“উফ্! এসব তোমায় কে বলেছে? মুখে বলেছো সেটাই ঠিক আছে, একদম পায়ে হাত দিয়ে সালাম দিবে না।”
“কিন্তু……”
“বললাম না, না। বুঝতে পারছো?”
মাথা ঝাকালো রূপা, বললো হ্যাঁ! বুঝতে পেরেছে। হাসলো তাসফি, মেয়েটার কাছে এগিয়ে এলো সামান্য। বলে উঠলো,
“আমাকে ভয় পাচ্ছো রূপা?”
“হু!”
বলেই আহাম্মক বনে গেল রূপা। সাথে সাথে মাথা দু’দিকে নাড়িয়ে ‘উঁহু!’ বলে উঠলো। রূপার কান্ডে হেঁসে উঠলো তাসফি। বললো,
“পাবেও না কখনো। আমাকে ভয় পাবার কিছু নেই। যেই ভয়টা আমাকে নিয়ে তোমার মনে চলছে সেটাও পাবার প্রয়োজন নেই। যতটা সময় প্রয়োজন ততটাই নাও, নিজেকে স্বাভাবিক করো, মানিয়ে নাও নতুন জীবনের সাথে। আমার থেকে কোন বাঁধা নেই, তোমার কোন দায়বদ্ধতাও নেই।”
বলেই একটু থামলো তাসফি। সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও,
“এই বিয়েতে আমাদের পুরোপুরি মত না থাকলেও সামান্যতম হলেও আছে। হোক সেটা পরিবারের খুশিতে, ছোট মামা মামীর ইচ্ছে তে। যেভাবেই হোক আমরা এক হয়েছি, জুড়ে গিয়েছি একে অপরের সাথে। চাইলেও এর থেকে পিছু হাঁটতে পারবো না। পারবো?”
“উহুঁ!”
“হু! আমাদের আর সেই আগের সম্পর্ক নেই রূপা, নতুন পরিচয়ে নতুন একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। পরিবারের সবাই আমাদের এক করলেও আমাদের এই সম্পর্কটা টিকে রাখতে হবে আমাদেরই। হয়তো তারা বোঝাবে, সম্পর্ক’টা টিকে রাখতে বলবে কিন্তু দৃঢ় রাখতে হবে আমাদের। আমাদের এই নতুন সম্পর্কের মজবুত একটা ভিত তৈরি করতে হবে, হেলাফেলায় পিছু না হেঁটে এগিয়ে যেতে হবে।”
বেশ মনোযোগ দিয়ে তাসফির কথাগুলো শুনলো রূপা, তার বলা কথাগুলোও বুঝতে পারলো। সত্যিই তো, তাদের সম্পর্ক তো সেই আগের মতো আর নেই। জুড়ে গিয়েছে নতুন এক সম্পর্কে, নতুন বন্ধনে। চাইলেও পিছু হাঁটতে পারবে না, দৃঢ় করতে হবে। সামান্য চুপ থেকে তাসফি বলে উঠলো,
“হুট করেই একটা সম্পর্কের স্থিতি হবে না রূপা, পর্যাপ্ত সময় লাগবে। আর সেটা আমাদের দুজনের ক্ষেত্রেই। ততদিনে না হয় একে অপরের প্রতি দ্বায়িত্বগুলো দিয়েই আমাদের সম্পর্ক’টা এগিয়ে নিয়ে যাই। বুঝতে পারছো কি বললাম?”
‘হু!’ বলে মাথা নাড়ালো রূপা। সে তাসফির কথাগুলো বুঝতে পারছে বোঝালো। তাসফি বললো,
“আমাকে অবান্তর ভয় পাবে না তো?”
“হু! উহুঁ!”
হেঁসে উঠলো তাসফি। নিজের কান্ডে লজ্জা পেল রূপা। ধীর কণ্ঠে বললো,
“পাবো না ভয়।”
“আচ্ছা! এবার যাও, অজু করে এসো।”
“কেন?”
কোন জবাব না পাওয়ায় তাসফির দিকে তাকালো রূপা। বললো,
“না মানে, এখন তো নামাজের সময় শেষ। তাই…..”
“নফল আদায় করবো একসাথে। প্রথম রাতে নাকি স্বামী স্ত্রীর একসাথে নফল আদায় করে দোয়া চাইতে হয়। যাও অজু করে আসো।”
বলেই নিজের প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকালো তাসফি। এদিকে বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইলো রূপা, দেখতে থাকলো তাসফি কে। মুহুর্তেই উপলব্ধি করলো, এই মানুষটা চমৎকার! চমৎকার তার বোঝানোর ক্ষমতা। শিক্ষকতার পেশা অর্জন করার পরেই কি ওনার এই গুণগুলো বিকশিত হয়েছে, না-কি এই মানুষ’টাকে সে কখনো লক্ষই করে নি। হ্যাঁ! হবে হয়তো। স্বামী রুপে এই মানুষটাকে সামনে পেয়েই হয়তো নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারছে তাসফি নামক এই মানব’টিকে।
“কি হলো? দাঁড়িয়ে আছো কেন? যাও।”
“কিছু খুঁজছেন?”
“হু!”
তাসফির পকেট হাতড়ানো দেখে জিজ্ঞেস করলো রূপা। অনেকটা আন্দাজেই জিজ্ঞেস করেছিলো সে। এবার বলে উঠলো,
“আমাকে বলেন, আমি দেখছি না হয়।”
“হু! না, ওটা মনে হয় আমার রুমেই আছে, আমি আনছি। তুমি যাও, অজু করে আসো।”
বলেই দরজা খুলে বেড়িয়ে গেল তাসফি। এদিকে বোকার মতো রইলো রূপা। কি এমন জরুরি জিনিস যে এক্ষুনি বেরিয়ে গেল সেটা আনতে?
সেদিকে আর মাথা ঘামালো না রূপা। সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। বোনরা মিলে তাকে আগেই বিয়ের শাড়ি পাল্টে হালকা শাড়ি পড়িয়েছিলো। তাই আর ফ্রেশ হওয়ার ঝামেলাও করতে হলো না।
.
“আজকে এত সকালে রেডি হয়েছিস কেন তাসফি? কোথাও যাবি?”
ডাইনিং টেবিলে সকলের খাবার মাঝেই ছেলেকে জিজ্ঞেস করে রেহেনা। সকাল সকাল ফর্মাল ড্রেসআপে ডাইনিং টেবিলে বসেছে বলেই কেন জানি কৌতুহল হলো তার মনে। যতই হোক মায়ের মন তো।
খাবার মাঝেই মায়ের দিকে তাকালো তাসফি। মায়ের সাথে আরও কয়েক জোড়া চোখ যে তার দিকেই নিবদ্ধ সেটাও খেয়াল করলো। পাশে থাকা রূপার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে আবারও ময়ের দিকে তাকিয়ে,
“ঢাকা যাচ্ছি আম্মু, ভার্সিটিতে যেতে হবে একবার।”
সহসায় কেউ কিছু বললো না। তাসফির কথায় সবাই রূপার দিকে নজর ফেললো। সবার নজরবন্দী হওয়ায় যে কেউ ভাববে তাদের চোখে রূপায় হয়তো অপরাধী। কেউ কিছু না বললেও চুপ থাকতে পারলেন না তাসফির বাবা তওহিদ সাহেব। বেশ জোরেই বলে উঠলেন,
“আশ্চর্য! তাসফি। গতকাল বিয়ে করেছো, আর আজ নতুন বউ রেখে চলে যেতে চাইছো। এটা কেমন কথা?”
.
.
চলবে……