নেশা ২ পর্ব ১

#নেশা
সিজন 2
Ayusha Akter Usha
Part 01

কুয়াশা বাসর ঘরে পায়চারী করছে।পুরো দুনিয়ার চিন্তা ভাবনা আজ তার মাথায় এসে ঘর বেঁধেছে।কুয়াশা এতিম।আপন বলতে কেউ নেই।ছোট থেকেই এতিমখানায় বড় হয়েছে।আজ হ্যাপি নিউ ইয়ার।রাত বারোটায় এতিমখানার সবাই একসাথে মিলে হ্যাপি নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করেছে তারা কিন্তু তখনো কুয়াশা জানতো না তার নতুন বছরের শুরুটা আসলে এইভাবে হবে।একমাস আগে একজন ভদ্রলোক এসেছিল নিজের ছেলের জন্য কুয়াশার বিয়ের কথা বলতে।কুয়াশা না বলে দিয়েছিল।এরপর থেকে এই নিয়ে আর কোনো কথা হয়নি।কিন্তু আজ হঠাৎ করেই ওই ভদ্রলোক রায়হান খান নিজের ছেলে আর কাজী নিয়ে এসে orphanage এ হাজির হয়।তার এক কথা ছেলের বউ আজ সাথে নিয়েই বাড়ি ফিরবে।ছেলে হাই সোসাইটি থেকে বিলং করে তাই orphanage এর এমডি রুখসানা বেগম অমত করেননি।কুয়াশা যদিও এই ঘটনার জন্য রেডী ছিল না বিয়ের জন্য না বলে দিয়েছিল কিন্তু রুখসানার যুক্তির কাছে হার মেনে তাঁকে বিয়েটা করতে হয়।এখন তার মাথায় হাজারো চিন্তা এসে ভর করেছে।পায়চারী করছে আর নিজে নিজেই বকবক করছে।এটা কি হলো।নতুন বছরের শুরুটা শেষে এইভাবে হলো।একটা অচেনা অজানা মানুষের সাথে কি করে ও সারাজীবন কাটাবে।তার নাম টা পর্যন্ত সে জানেনা।আরে না না নাম জানে তো রেজিস্ট্রার পেপারে দেখেছে ছেলের নাম সম্রাট খান।এই নাম ছাড়া কুয়াশা আর কিছু জানে না সম্রাটের বিষয়ে।কুয়াশার তো মনে হচ্ছে সম্রাট ও এই বিয়েতে রাজী।নিশ্চয়ই তার বাবার ছোড়াছুড়িতে এই বিয়েতে তাকে রাজী হতে হয়েছে।যেভাবে রায়হান বিয়ের জন্য তোড়জোড় করছিল তাতে তো মনে হচ্ছিল যেন নিজের ছেলেকে ধরে বেঁধে এনে বিয়ের জন্য বসিয়েছে।এখন যদি সম্রাট রুমে ঢুকে সোজা বলে য “আমি এই বিয়েতে রাজী নই।তোমার মতো এতিম মেয়েকে আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই।নেহাতই বাবার জোড়াজুড়ি তে এই বিয়েতে আমি বাধ্য হয়েছি”(ভেংচি কেটে ভারী গলায়)তখন কুয়াশা কি করবে।যদি তাঁকে বলে তোমার সাথে এক বিছানায় আমি ঘুমোতে পারবো না তুমি সোফায় ঘুমোও তখন।না না মোটেও না।কুয়াশা সোফায় ঘুমাবে না।সোজা সুজি দেবে যার ইচ্ছে সে সোফায় ঘুমাক তার কোনো ইচ্ছে নেই সোফায় ঘুমানোর।কুয়াশা বরং এখুনি বিছানা দখল করে নিক।নইলে আবার পরে তাকেই সোফায় ঘুমোতে হবে।এরকম কেস সে অনেক দেখেছে।দেখেনি তবে পরেছে ফেসবুকের গল্পে।কিন্তু কুয়াশা কোনো গল্পের হিরোইন নয় যে হিরো যা বলবে তাই তাকে শুনতে হবে।হুহ সম্রাট যদি তাঁকে কিছু বলতে আসে না তবে সেও দেবে মুখে ঝা ঘুষে হুম।
কুয়াশা বকবক করতে করতেই বেডের দিকে এগিয়ে গেল শোয়ার জন্য।তখনি পেছন থেকে কেউ একজন বলে উঠল
-বাহ আমার সম্পর্কে তো দেখছি অনেক কিছুই ভেবে বসে আছো।
কথাটা শুনেই কুয়াশা চোখ বড় বড় করে পেছনে তাকালো।সম্রাট পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কুয়াশা সম্রাট কে দেখেই ক্রাশড।এ তো পুরাই ক্রাশের ড্রাম।বিয়ের সময় কুয়াশা সম্রাটের চেহারা দেখেনি শুধু তার দানবের মতো বডিটা ছাড়া কিন্তু এখন দেখছে টকটকে ফর্সা মুখে গাল ভর্তি দাড়ি ঘন কালো চুল গুলো কপালের উপর পরে আছে ছোট ছোট ওই বাদামি চোখ গুলো নেশায় ভরপুর।ঠোঁটে এক রহস্যময়ি হাসি ঝুলিয়ে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে আছে।এই মুখে যদিও এই রহস্যময়ী হাসিটা বেশ মানিয়েছে তবুও কুয়াশা এখন তাঁর ওপর ক্রাশ খাওয়া বাদ দিয়ে ওই রহস্যময় হাসির রহস্য উদ্ঘাটনে লেগে পরেছে।সম্রাট ধীরে ধীরে হেঁটে কুয়াশার কাছে এসে দাঁড়ায়।কুয়াশা সম্রাট এর প্রায় অর্ধেক।সম্রাট কুয়াশার দিকে একটু ঝুঁকে বলে
-তাহলে তো এখন আমার উচিৎ তোমার ভাবনা গুলোকে আমার মিথ্যে প্রমান করা।
বলেই কুয়াশার কোমর জড়িয়ে ধরে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।কুয়াশা কে পে ওঠে।তার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।কি হচ্ছে এসব।সে কি ভেবেছিল আর কি হচ্ছে।সম্রাট কুয়াশার মুখ দেখে বাঁকা হেসে তার কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলল
-তুমি রেডী তো আমাদের ফার্স্ট নাইটের জন্য।
সম্রাটের কথা শুনে কুয়াশার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।চারিদিক ঘুরছে চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এলো কুয়াশার।হাত পা অবশ হয়ে গেল।
-কুয়াশা কুয়াশা।।।
কুয়াশা কোমর জড়িয়ে রেখে গালে হাত দিয়ে কুয়াশাকে ডাকছে সম্রাট।কুয়াশা জ্ঞান হারিয়েছে।যাক বাবা এখনো তো সম্রাট কিছু করলই না শুধু বলাতেই বেহুঁশ কিছু করলে না জানি কি হতো।সম্রাট বাঁকা হেসে কুয়াশা কে কোলে তুলে বেডে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিল।তার পাশে সম্রাট ও শুলো।হাতের উপর মাথা রেখে কুয়াশাকে দেখতে লাগল।কি আছে এই মেয়ের মধ্যে যা তাঁকে মূহুর্তেই বসীভুত করেছে।মূহুর্তেই এক নেশায় ফেলে দিয়েছে।সম্রাট কুয়াশা কে দেখতে দেখতেই ঘুমিয়ে পরল।।।
to be continue…..
আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে আবার এসেছি সম্রাট কুয়াশার সাথে নতুন এক গল্প নিয়ে।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here