পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ১২

#গল্প :#পবিএতার_ছোঁয়া
#পর্ব :#12
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]

||

তাহসিন মিহুকে টানতে টানতে গাড়ির ভেতরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল,,,

আমি:আহহ,,,

স্যার আমার এক হাত শক্ত করে ধরে অন্য হাত দিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলেন । সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে সে। এদিকে আমি যে হাতে ব্যাথা পাচ্ছি,
সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই। আমার তো তার কাজ মাথায় উপর দিয়ে যাচ্ছে। আমার চোখ দিয়ে অঝরে পানি পরতে লাগল। সে কেন এমন করলো। আমি কি কোন দোষ করেছি,,

||

রাফির সবকিছু কেমন যেন অদ্ভুত মনে হচ্ছে।

রাফি : আমি বুঝতে পারছি না, তাহসিনের এত সাহস কোথায় থেকে পায়। তাহসিন তুই বেশি করে ফেলেছিস। তুই রাফিকে চিনস না,,, [চিৎকার করে]

রাফি বেশিখন না দাড়িয়ে থেকে গাড়িতে ওঠে পড়ে। তমারও সব অস্বাভাবিক লাগছে। তমাও রাফির সাথে গাড়িতে ওঠে পড়ে।

||

স্যার আমাদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামান।গাড়ি থেকে নেমে আমাকে টানতে টানতে বের করেন। সারা পথ তিনি আমার হাত ধরে ছিলেন।
বাসার ভিতরে ঢুকর পর আম্মুকে দেখতে পেলাম না। স্যার আমকে ঘরে এনে জোরে শব্দ করে দরজা আটকে দেন।

আমার তো এখন অনেক ভয় লাগছে। সে কি করবেন আমার সাথে। মারবে? আমার ভয়ে হাত পা কাঁপছে,,,

স্যার দরজা বন্ধ করেই আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরেন। এক হাত দিয়ে আমার চুরির পরা হাত শক্ত করে চেপে ধরে আছেন। অন্য হাত দিয়ে আমার স্কার্ফ খুলে ফেলে বিছানায় ছুড়ে মারলেন,,,

আমি: স্, আ, র ব্যথা পা,, ছি,,, [কান্না করে]

তাহসিন : চুপ। একদম কথা বলবি না,,, [দাঁতে দাঁত চেপে]

আমি চুপ করে রইলাম। আমার যে খুব ব্যাথা লাগছে,,,

তাহসিন : এই মেয়ে তোর এত সাহস কোথায় থেকে আসে,,,,

আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কান্না করেই যাচ্ছি।

তাহসিন : রাফি তোকে টাচ করলে ভালোলাগে তাই না,,,

আমি নিরবে চোখের পানি ফেলছি। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে,,,,

তাহসিন : রাফি তোকে চুরি পরিয়ে দিল খুবই ভালো লেগেছে তাই না,,,

আমি: নিশ্চুপ,,,,

তাহসিন : রাফির সাথে তো হেসে হেসে কথা বলছিলি। আর আমাকে দেখলে তোর ভয় লাগে,,,, [রেগে]

স্যার বেশি শক্ত করে ধরার জন্যে, তার হাতে চুরি বেঁধে গিয়েছে। তার হাত থেকে টপটপ করে রক্ত ঝরছে। কিন্তু সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই।

তাহসিন : তোকে যদি আমি আর রাফির সাথে হেসে হেসে কথা বলে দেখি রে মিহু,,, তোর কপালে কষ্টের শেষ হবে না। মনে রাখিস তুই শুধু আমার। আমি আমার জিনিসে অন্যের হাত দেওয়া পছন্দ করি না,,,,

কথাগুলো বলেই তিনি আমাকে খাটের ওপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন। নিজের চুল টানতে টানতে আমার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।

আমি তার ব্যাবহারের অবাক। সে যাওয়া পর আমি দরজা আটকে ফ্লোরে বসে কেঁদে দিলাম। কেন সে আমার সাথে এমন করেন। আমাকে কেন ভাইয়ার সাথে সহ্য করতে পারেন না। কেন কেন?

||

রাফি ঘরে এসে মিহুর মাকে ডাকছে,,,,

রাফি : ফুপি,, কোথায় তুমি।

মিহুর মা রাফির ডাক শুনে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন।

মিহুর মা : কি হয়েছে?

রাফি : ফুপি ওই বাইরের ছেলে মিহুকে ধরার সাহস পাই কোথায় থেকে?

মিহুর মা:চুপ,,,

রাফি: ফুপি বলো না। তুমি কি জানো না আমি মিহুকে ভালোবাসি?

মিহুর মা যে ভয় পেয়েছিলেন তাই সত্য হলো। রাফিকে যে বলতেই হবে,,,

মিহুর মা: সরি রাফি। এখন যে মিহুর উপর একমাত্র তাহসিনের অধিকার,,,

রাফি : মানে? [উত্তেজিত হয়ে]

মিহুর মা: তাহসিন আর মিহুর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ওরা এখন স্বামী – স্ত্রী।

রাফি : তুমি মিথ্যে বলছো ঠিক না ফুপি,,,,

মিহুর মা: না,, সত্যি।

রাফি : না এটা কিছুতেই হতে পারে না। মিহু শুধু আমার,,,

রাফি হাতের কাছে থাকা ফুলদানি ভেঙে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।

মিহুর মা : রাফি,,,

||

তাহসিন নিজের ঘরে এসেই ওয়াসরুমে চলে গেল।
ঝরনার নিচে বসে বলতে লাগল,,,, আমি কি বেশিই করে ফেলেছি আমার বৃষ্টি পাখির সাথে। আমি কি তাকে ব্যাথা দিয়েছি। আমি কেন রাগ কন্ট্রোল করতে পারলাম না। আমার তো বুঝা উচিত ছিল, বৃষ্টি পাখি তো অনেক ছোট। আমার তো ওর কাছে খমা চাইতে হবে। আমার অনেক বড়ো ভুল হয়ে গিয়েছে।
তাহসিন প্রায় তিন ঘণ্টার মতো শাওয়ার নিল। এখন ওর কাছে কেমন যেন লাগছে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে।
||

আমি রাতের খাবার খেয়ে ঘরে এলাম। মনটা অনেক খারাপ লাগছে। স্যার কি হাতে অনেক ব্যাথা পেয়েছে। সে কি ঔষধ লাগিয়েছে। আজকে আর পড়তে বসলাম না। মাকেও বলিনি বিকেলের কথা। আমার হাত অনেকটা ফুলে গেছে। ব্যাথা ও করছে। আমি বেশি কিছু না ভেবে শুয়ে পড়লাম। আমার আর ঘুম আসছে না। তমার সাথে আর কথাও হয় নি। মা কেমন যেন চুপ করে ছিল। ভাইয়াও চলে গিয়েছে। বাবা যে কবে অফিসের কাজ শেষ করে আসবে। বাবার কথা অনেক বেশিই মনে পড়ছে।

হঠাৎ করে মনে হলো কেউ মিহু বলে ডাক দিল। আমি ওঠে ঘরের লাইট ওন করলাম। দেখলাম স্যার,,,

তাহসিন : মিহু,,, সরি,,, ব্যাথা পেয়েছো,,,

আমি স্যারকে দেখে অবাক হলাম।সে কিভাবে রুমে এলো,,, তাকে কেমন যেন দেখাচ্ছে। চোখ মুখ শুকিয়ে গিয়েছে।

স্যার : দেখিতো কোথায় ব্যাথা পেয়েছো?

বলেই আমার হাত ধরে দেখতে লাগলেন। তার ছোঁয়াই আমার সারা শরীর শিউরে উঠল। তার যে সারা শরীর গরম। নিশ্চই জ্বর এসেছে। স্যার কথা বলতে বলতে আমার দিকে ঝুঁকে পড়ল,,,,
(#চলবে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here