#গল্প:#পবিএতার_ছোঁয়া
#পর্ব :#21+22
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]
||
সময় চলমান। সবকিছু থামিয়ে রাখা গেলেও সময়কে থামিয়ে রাখা যায় না। কেটে গেছে তিনটি মাস। সেদিন মিহু চলে যাওয়ার পর তাহসিন অনেক ভেঙে পড়েছে। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না,, নিজের যত্ন করা যেন ভূলেও গিয়েছে। আগের মতো সেই পরিপাটি ছেলেটি এখন অগোছালো হয়ে গিয়েছে। মনে মধ্যে জমেছে হাজার অভিমান। সারা দিন শুধু বৃষ্টি পাখির চিন্তায় মত্ত সে।সে চাইলে তার বৃষ্টিপাখির কাছে যেতে পারবে, ফিরিয়ে আনতে পারবে। কিন্তু সে যাবে না। অভিমান যে পাহাড় সমান,,,
তাহসিন কি কোনদিন ভালোবাসিনি মিহুকে। তাহসিনের ভালবাসা যদি সত্যিই হতো তাহলে কী মিহু পারতো তাকে ভূল বুঝতে। কেন বুঝলো না মিহু তাহসিনকে। একটি বার তো জিজ্ঞেসা করতে পারত। জিজ্ঞেসা না করলেও বলার তো সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল,,,
||
শাদিয়া একটু একটু করে আবিরের অবহেলার সঙ্গে পরিচিত হয়েছে । সে জেনে গেছে আবির তাকে ভালোবাসেনাহ।আবিরের অবহেলা তাকে কাঁদিয়েছে। সে মেনে নিয়েছে এটা তার পাপের
ফল। শাদিয়া আর পাপের বোঝা বইতে পারছে না। পারছে না তার প্রিয় বন্ধুটার কষ্ট দেখতে। তাহসিন যে মিহুর জন্য ধীরে ধীরে নিজেকে হারিয়ে পেলেছে। শাদিয়া তাই আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে তাহসিনকে সত্যটা বলবে। তাহসিনের কাছে ক্ষমা চাইবে। তাহসিন তাকে ক্ষমা না করলে সে যে শুখি হতে পারবে না। তাহসিনকে বলে সে মিহুকেও বলবে। তাই সে তাহসিনের বাড়ির উদ্দেশে বেড়িয়ে পড়ল,,,
||
তিনমাস যে কোথায় দিয়ে পেরিয়ে গিয়েছে তা আমি জানি না। আমার পাসপোর্ট হয়ে গিয়েছে।যাওয়া প্রায় সময় চলে এসেছে। একেকটা দিন যেন তার কথা ভেবেই পার করেছি। তাকে ছাড়া যে থাকতে অনেক কষ্ট হচ্ছে,,
ভাইয়া ভাবি আমার অনেক খেয়াল রাখছে। বিশেষ করে ভাইয়ার ছেলে তন্ময় আমাকে অনেক ভালোবাসে।সারাদিন তন্ময় আমার কাছে থাকে। ওর মুখে ফুপি ডাকটা শুনলে কষ্ট যেন অনেকটা কমে যায়। কিন্তু রাতে আমি অনেক একা হয়ে পড়ি। রাতই বুঝিয়ে দেয় একাকীত্ব কতটা কষ্টের। আধার হলেই যেন তার কথা মনে পড়ে। নিজেকে শক্ত রাখার অনেক চেষ্টা করি। কিন্তু দিনশেষে যে তার মুখটা ভেসে উঠে,,, মাঝে মাঝে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা কথা হয়। কিন্তু তার মুখ থেকে মিহু ডাকটা শুনা হয় না, তার মুখ থেকে যে একবার হলেও মিহু ডাকটা শুনতে ইচ্ছে করে।
||
তাহসিন বাসায়,
তামিম সাহেব : তাহসিন,,
তাহসিন :নিশ্চুপ,,
তামিম সাহেব : ভিতরে আসবো?
তাহসিন : হুম,,
তামিম সাহেব : খাবার খাস নি কেন?
তাহসিন :নিশ্চুপ,,,
তামিম সাহেব : বাবা তুই কেন বুঝিস না। তোর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমার কী হবে? [ভাঙা কন্ঠে]
তাহসিন : নিশ্চুপ,,
তামিম সাহেব :তুই কি ভুলে গেছিস, তুই অসুস্থ,,,
তখনি শাদিয়া তাহসিনের ঘরে প্রবেশ করল,,
শাদিয়া : কি হয়েছে তাহসিনের? [ভাঙা কন্ঠে]
তামিম সাহেব : তূমি এখানে। আজ তোমার বোনের জন্য আমার ছেলের এই অবস্থা। বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে।
শাদিয়া : আঙ্কেল আমাকে একটু তাহসিনের সাথে কথা বলতে দিন। প্লিজ,,
তামিম সাহেব কিছু না বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।
শাদিয়া : তাহসিন,,
তাহসিন একটা ডাইরিতে কি যেন লিখছে। শাদিয়া তাহসিনকে ডেকেই চলছে। কিন্তু তাহসিন শাদিয়ার দিকে তাকায় নি,,
শাদিয়া : তাহসিন আমার দিকে তাকা। প্লিজ,,
তাহসিন তাও শাদিয়ার দিকে তাকাছে না,,
এবার শাদিয়া তাহসিনের কাছে থেকে ডাইরিটা টেনে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল,,
শাদিয়া : আমাকে ক্ষমা করে দে,,
তাহসিন:কেন?
শাদিয়া : আমি যে তোর আর মিহুর বিচ্ছেদের জন্য দায়ী।
তাহসিন : মানে? [অসহায় কন্ঠে]
শাদিয়া তাহসিনকে ছবিগুলোর কথা খুলে বলল। বলল কেন মিহু চলে গিয়েছে। সবকিছু শুনে তাহসিন মলিন হাঁসি দিয়ে বলল,,
তাহসিন : এখন ক্ষমা চাচ্ছিস কেন। যা হবার তাই তো হয়ে গিয়েছে,,
শাদিয়া : প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে,,
তাহসিন : আমার তো সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি যে বাঁচার ইচ্ছা ছেড়ে দিয়েছি,,
শাদিয়া : তুই আমাকে যা বলবি আমি তাই করব। বল না কি করতে হবে?
তাহসিন : যদি পারিস মিহুকে একদিনের জন্যও হলেও আমার কাছে এনে দে। আমি যদি ওকে একবার না দেখতে পারি তাহলে যে মরেও শান্তি পাব না। আনবি তো? [অনুরোধ কন্ঠে]
শাদিয়া : আমি আজকেই মিহুকে আনতে যাব। তুই প্লিজ মারা যাবার কথা বলিস না। মিহু যে তোকে অনেক ভালোবাসে,,
তাহসিন : মিহু যদি আমাকে ভালো বাসতো তাহলে কি আমাকে ভুল বুঝতে পারত?
শাদিয়া আর কোন কথা না বলে বেড়িয়ে পড়ল মামার বাড়ির উদ্দেশ্য। সে কান্না করতে করতে মামার বাড়িতে চলে এলো,,
|
শাদিয়া :মামা। তুমি কোথায়?
মিহুর বাবা : কি হয়েছে?
মিহুর মা: কিরে ডাকছিস কেন? তোকে এত অস্থির লাগছে কেন? আগে রেস্ট না তারপর কথা বলিস?
শাদিয়া : মামি এখন যদি না বলি তাহলে যে দেরি হয়ে যাবে,,
শাদিয়া সব কথা মিহুর মা বাবাকে বলল। সবটা শুনে মিহুর মা তো কেঁদে দিলেন,,
মিহুর বাবা: ঠাসস,, তুই এমনটা কেন করলি। তোর জন্য যে তাহসিন আর মিহু দুজনের ক্ষতি হয়েছে।
শাদিয়া : সরি মামা,,
মিহুর বাবা মা আর দেরি করলেন না। তারা সবাই মিহুকে আনার জন্য বেড়িয়ে পড়লেন।
||
আমি তন্ময়ের সাথে খেলছিলাম। তখন হঠাৎ করে কোথায় থেকে যেন শাদিয়া আপু এসে আমাকে জরিয়ে ধরল। পিছনে দেখলাম মা বাবও আছেন।
শাদিয়া : মিহু আমাকে ক্ষমা করে দে,,,
মিহু : কি হয়েছে আপু?
শাদিয়া আপুর সব কথা শুনে আমি চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম।
আমি : কেন এমন করলে আপু?
শাদিয়া : মাফ করে দে প্লিজ,,,
আপু আমি কেন তাকে ভূল বুঝলাম। আমার তো বোঝা উচিত ছিলো। আমি তাকে কোনদিনও বুঝলাম না। আমার যে তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। মা বাবা আমাকে স্যারের কাছে নিয়ে চলো প্লিজ। আমি আর তাকে ছেড়ে থাকতে পারছি না। সে কি আমাকে ক্ষমা করে দিবে? আমি তো ক্ষমার যোগ্য নই।,, একবার আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ,, দিবেন তো? আমি ভালোবাসা দিয়ে সব ঠিক করে দিব,, [চিৎকার করে]
(#চলবে)
[আম্মু বকার জন্য ভালো করে লিখতেও পারি না😰। ভালো রেসপন্স না পেলে কিন্তু তারাতারি শেষ করে দিব। কেমন হয়েছে জানাবেন]
#গল্প:#পবিএতার_ছোঁয়া
#পর্ব :#22
#লেখিকা :#জাবিন_মাছুর [ছদ্মনাম]
||
কালকে শাদিয়া আপুর কথাগুলো শুনে আমি আর দেরি করি নি। বাসায় চলে এসেছি। আমার মনটা অনেক ভালো।বাবা বলেছে স্যারের বাসা থেকে আজকে সবাই আসবে।আজকে আমাদের আবার বিয়ে হবে। আশ্চর্য বিষয় হলো সবাই এতো সহজে বিয়েটা মেনে নিল। স্যারের মা তো মানার কথাই না। তাহলে কি এমন হলো? মনের মধ্যে অজানা অনেক প্রশ্ন জাগছে। কিন্তু আমি অনেক খুশি। স্যারের বাড়ির সাবাই বলেছে আজকে আমাকে স্যারের বাড়িতে নিয়ে যাবে। ভাবতেই অবাক লাগছে আমি আজ রাত থেকে স্যারের বাড়িতে থাকব। তার ঘরে থাকব,,,
বাবা মা কাজে ব্যাস্ত। আস্তে আস্তে বাড়িতে মেহমান দিয়ে ভরে যাচ্ছে। শাদিয়া আপুর বাসার সবাই এসেছে। আমার নানু, মামা সবাই এসেছে। বাবা যে এতটুকু সময়ের মধ্যে সব কিছু আয়োজন করে ফেলবে তা আমি ভাবতেও পারি নি,,,
ভাবছি স্যার কি আমাকে ক্ষমা করে দিবে। নাকি খমা করবে না। আমি তো তার খমা পাওয়ার যোগ্য নই। মানুষটাকে যে আমি নিজের অজান্তেই অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আমার তো তার সাথে কথা বলা উচিত ছিলো। আমি কেন তাকে কিছু বলার সুযোগ দেইনি। নিশ্চই আমার জন্য কোন শাস্তি অপেক্ষা করছে,, এমন সময় আপু চলে এলো,,
শাদিয়া : প্লিজ মিহু আমাকে খমা করে দে।
আপুর উপরে একটু রাগ থাকলেও কিছু বললাম না। কারন আপু তো আবির ভাইয়াকে অন্ধ ভালোবাসতো। ভালোবাসা ঠিক কিন্তু অন্ধ ভালোবাসা একদম ঠিক নয়। যা মানুষেকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয়,,
শাদিয়া : মিহু খেয়ে নে। একটু পরেই কিন্তু তাহসিনরা চলে আসবে। তোকে তো আবার সাজাতেও হবে,,
আমি খেয়ে নিলাম। পাশের বাসার ঝুমু আপুও এলো আমাকে সাজাতে। তমাও এসেছে ওর বাবা মাকে নিয়ে। সবার মুখে শুধু একটা কথা এত ছোট্ট মেয়ে বিয়ে দিচ্ছেন কেন। বাবা এ প্রশ্নর উওর খুজে পাবে না, তাই বিয়েতে বাইরের কাওকে বলে নি।
শাদিয়া : মিহু যা ফ্রেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে আয়,,
আমি: আপু মুখ না ধুলে হয় না?
তমা: যা তো ধুয়ে আয়। নাহলে তো মেকাপ করা যাবে না।
আমি : ঠিক আছে,,
আমি মুখ ধুয়ে আসলাম। আপু সাজানো শুরু করল,,
আমি: ঝুমু আপু আমার কিন্তু আটা ময়দা মাখতে একদম ভালো লাগে না।দিও না,,
ঝুমু :দূর গাধী। তোর তো আজকে বিয়ে। আটা ময়দা তো মাখতে হবে,,
তমা : ওই তুই আটা ময়দা বলিস কেন। সম্মান দিয়ে কথা বল,,
আমি তমার কথায় কোন পাত্তা দিলাম না। আপুদের বললাম ঠিক আছে অল্প দিও,,
ঝুমু : ঠিক আছে,,
আপু আমার মুখটা আগে সাজালো। মুখে হালকা মেকাপ দিল। চোখে আইলেনার, মাসকারা দিল। আর শাড়ির সাথে মেছিন করে মিষ্টি কালারের লিপস্টিক দিল।
শাদিয়া : তোকে না অনেক সুন্দর লাগছে। তাহসিন তো একদম চোখ সরাতে পারবে না।
কথাটা শুনে আমার অনেক লজ্জা লাগছে,,
ঝুমু : মিহু তোর ওপর তো আমি ক্রাস লেখাম।
তমা: জানু আমি তো পুরো শেষ,,
শাদিয়া :ওই তুই ওকে জানু বলছিস কেন? অন্যের আধিকারে হস্তক্ষেপ করলে কিন্তু আল্লাহ পাপ দিবে, ,
আপু হাসতে হাসতে কথাগুলো বলল। সাথে সবাই হেসে দিল। আপুর কথা প্রথমে বুঝতে পারলাম না। কিন্তু যখন বুঝলাম আমার চোখ আপনাআপননি বড়ো হয়ে গেল,,
তমা: লজ্জা পাচ্ছিস কেন। এখন তো জাস্ট শুরু,, [চোখ মেরে]
আমি তমার ওপর কৃতিম রাগ দেখালাম। মুখ সাজানো শেষ তাই আপু শাড়ি বেড় করলেন। আপু যখন শাড়ি পাড়াছিল, তখন বুকের মধ্যে কেমন যেন অস্থির লাগছিল । শাড়ি পড়া শেষে আপু আমাকে নাকফুল পরিয়ে দিল। হাতে অনেক গুলো চুরি পরিয়ে দিল। আমি চিকন তাই আমার হাতে চুরি লাগতো না। আমার হাতের মাপের র কোনো কোন চুরি পাওয়া যেত না। কিন্তু শুনে অবাক হলাম চুরিগুলো স্যার আমার জন্য বানিয়ে রেখেছিলেন,, তখনই মা রুমে এলো,,
মিহুর মা: আমার মেয়েটাকে অনেক সুন্দর লাগছে। একদম পরির মতো।
বলেই মা আমাকে জরিয় ধরলেন।
আমি: আম্মু তোমাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না,,
মিহুর মা: আমারো তোকে যেতে দিতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু তোর বর তো পাগল। সে আজকেই বিয়ে করে তোকে আজকেই নিয়ে যাবে। কি আর করার,,
আম্মুর কথা শুনে মনের মধ্যে ভালোলাগা কাজ করল। আম্মু সাথে আমি কথা বলছিলাম। ঠিক তখনি তমা এসে বলল,,
তমা: আন্টি স্যাররা চলে এসেছে।
আম্মু সাথে সাথেই চলে গেল।
তমা: জানু তুই কি বিয়ের পরে আমাকে ভুলে যাবি?
আমি : নারে জানু,,
তমার চোখে পানি আমার চোখেও পানি চলে এসেছে।
তমা: চোখে পানি কেন? হাঁসিস না কেন?
আমি: নিশ্চুপ,,
তমা: জানিস জানু তোকে না হাসলে অনেক সুন্দর লাগে,,
আমি: সত্যি,
তমা: হ্যাঁ।আমি ভবছি স্যারের দুলা ভাই বলল নাকি তোকে আন্টি বলল।
আমি তমার কথা শুনে হেঁসে ফেললাম।
তমা: হাই মে মার জা বা,,
আমি: ডাইলোক বাদ দে,,
তমা: তুই এতো সুন্দর কেন? আমি যদি ছেলে হতাম কোনদিনও তোকে অন্য কারো হতে দিতাম না। আমিই তোকে বিয়ে করতাম,,
শাদিয়া : হ।আমি দিতাম না,,
ঝুমু : আমি মাএ তাহসিনকে দেখলাম। জানিস মিহু তাহসিনকে অনেক সুন্দর লাগছে। তোদের দুজনকে অনেক মানিয়েছে। কিন্তু তাহসিন তোর থেকে অনেক বড়ো,,
আমি: আপু তার বয়স যতোই হোক না কেন, তাকে আমি সারা জীবন ভালোবাসবো,,
শাদিয়া : মিহু তো দেখি অনেক বড়ো হয়ে গেছিস।
তমা:হ্যাঁ আপু।একদম বড়ো মানুষের মতো কথা বলে,,
শাদিয়া :হুমম। আমি তো সিউর আজকে তাহসিন মিহুকে দেখে পাগল হয়ে যাবে,,
ঝুমু :হ্যাঁ ।কিন্তু আমার আফসোস হচ্ছে আমি মা হওয়ার আগে খালা হয়ে যাব।
শাদিয়া : হ্যাঁ রে। আমিও,,
আমার আবার আপুদের কথা গুলো বুঝতে অনেকটা সময় লাগল। কিন্তু বোঝার পর লজ্জায় আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।
শাদিয়া : ওলে বাবা লজ্জা পাচ্ছে,,
তমা: জানু তোর গাল তো লাল হয়ে যাচ্ছে,,
আমি সাবার কথায় কি বলব বুঝতে পারছি না। মুখ দিয়ে তো কথাই বের হচ্ছে না। দূর সবাই আমাকে লজ্জা দেয় কেন,,,
কিছুখন পর বাবা এলেন আমাকে নিতে। আমাদের আবার বিয়ে হলো। এখন আইন অনুযায়ী আমি তার স্ত্রী।
||
একটু আগে আমরা স্যারের বাড়িতে চলে এসেছি। শাদিয়া আপু আসেনি আমার সাথে। তমা অসাতে চেয়েছিল কিন্তু আসেনি। আশ্চর্যের বিষয় হলো স্যারের মা আমাকে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ওনার মুখটা কেমন যেন দেখাচ্ছিল। আমার মনটা কেমন যেন কু ডাকছে,,
||
স্যারের বোনরা আমাকে তার রুমে নিয়ে এলেন। রুমটা অনেক গোছানো। এদমন তার মতো। মনের মধ্যে এক ভিন্ন ধরনের উতেজনা কাজ করছে। আমি তো শুধু ছটপট করছি কখন তাকে দেখব। এখনো তাকে ভালো করে দেখতে পারিনি। তিনটা মাস পরে সে আমার সাথে কথা বলবে। তার কন্ঠে মিহু ডাকটা শুনার জন্য আমি অস্থির হয়ে আছি। সে কি আমাকে খমা করবেন। নাকি অভিমান করে থাকবে,,
আমি বিছানায় চুপ করে বসে ভাবছি সে কখন আসবে। আমার অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। দরজার খুলার শব্দে আমি সিউর হয়ে গেলাম সে এসেছে। আমার চোখেদুটো তাকে দেখার জন্য ছটফট করছে। আমি সাথে সাথে তার দিকে তাকালাম। এক পলক তাকে দেখার পর আমার ভিতরটা দুমরে মুচরে গেল। তার চোখের নিচে কালি পরে গেছে। আগের চেয়ে অনেক চিকন হয়ে গিয়েছে। তার এই অবস্থার জন্যে কি আমি দায়ী?
আমি তাকে সালাম দিলাম। স্যার উওর নিলেন। আমি দেরি না করে বললাম,
আমি: স্যার আমাকে খমা করে দিন,,
তাহসিন : তুমি খমা পাবে না। তুমি আমাকে যে কষ্ট দিয়েছ, তার শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে বৃষ্টি পাখি,,[ভাঙা গলায়]
আমি: শাস্তি,,, [ভয় পেয়ে]
তাহসিন : আজকেই তোমাকে শাস্তি পেতে হবে,,
তার কথা শুনে আমার কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে। কথাগুলো বলেই তিনি আমার দিকে এগোতে লাগলেন,,,,
(#চলবে)
[কেমন হয়েছে জানাবেন।]