পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ৪

গল্প :#_পবিত্রতার_ ছোঁয়া
পর্ব :#4
লেখিকা :#জাবিন মাছুরা [ছদ্মনাম]

||
ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা বাজে। তারমানে স্যার আসার সময় হয়ে গেছে।

কিছুখন পরই স্যার তার গম্ভীর মুখে চলে এলো। কিন্তু স্যারের মুখটা দেখে আমার অনেক খারাপ লাগছে। কারন মুখ দেখে মনে হচ্ছে যে সে কান্না করে এসেছে।

আমি :স্যার আসসালামুআলাইকুম ।

স্যার :ওয়ালাইকুম আসসালাম।পরীক্ষা কেমন হয়েছে?

আমি :স্যার মোটামুটি ভালো।

স্যার :মোটামুটি কেন?

আমি :নিশ্চুপ,,,

স্যার :যদি খারাপ হয় রে মিহু,,।তোমার খবর আছে। নেও গনিত বই এর 2.1 এর 3 নম্বর অংকটা করে দেও তো।

আমি :হাই হাই,, না দেখে কেমনে বলবো।[মনে মনে]

স্যার :হা করে না থেকে অংক কর।

আমি :বই বের করে অংক করা শুরু করলাম।
||

রিমি:কেমন আছো ফুপি?

রিনা:ভালো। তুই কেমন আছিস?

রিমি :ভালো।

রিনা:তোকে যে কাজ করতে দিয়েছে, করতে পেরেছিস?

রিমি :না ফুপি।

রিনা:জানি তোকে দিয়ে কিছু হবে না। তুই কোনো দিনই তাহসিনকে প্রেমে ফেলাতে পারবি না। তুই একটা আমরা কাঠের ঢেকি। [হাল্কা রেগে]

রিমি:দেখ ফুপি আমাকে কিছু বলবে না। এখন যা করার তুমি করবে। তুমি আঙ্কেল কে বলে আমার আর তাহসিনর বিয়ে দিয়ে দিবে। দেখবে তাহসিন ওর বাবার কথা ফেলতে পারবে না।

রিনা :শুন, আমার কাছে একটা বুদ্ধি আছে।তাহসিন কে ফাঁসানোর। [জরে জরে হেসে]

রিমি : কি প্ল্যান। বলো,,,

রিনা: এতো উত্তেজিত হওয়ার কি আছে। বলছি তো,,,

||||

দূর অংকটা তো আমি পারি।তাহলে এখন হচ্ছে না কেন? অনেক ভয় লাগছে। আমি অংক করার চেষ্টা করছি। আর স্যার ফোন স্ক্রোল করছে।

স্যার :মিহু হয়েছে?তাড়াতাড়ি করো? [ফোনের দিকে তাকিয়ে]

আমি :স্যার,,, ।

স্যার:হুম বলো?

আমি :স্যার আমি,, টইলেটে,,, যাব।

স্যার এবার ফোনের থেকে চোখ সরিয়ে শান্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন।

স্যার :যাও।

আমি আর দেরি না করে ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। অন্য ঘরের টইলেটে গেলাম।

টইলেটে থেকে আসার পর দেখলাম স্যার একা কী যেন বির বির করে বলছে।

স্যার :মিহু,,

আমি:জী,, স্যার ।

স্যার :আমি কী বাঘ না ভাল্লুক?

আমি :নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ করে আছি।

স্যার :আমাকে ভয় পাও?

আমি :না,,, তো।

স্যার : তাহলে কাপছ কেন?

আমি :চুপ,,,

স্যার :আমার দিকে তাকাও।

আমি স্যারের দিকে তাকালাম আর দেখলাম অন্যদিনের মতো স্যারের চোখে কোন রাগ নেই।

স্যার :আমি কি কখনো তোমাকে মেরেছি?

আমি :না।

স্যার :তাহলে ভয় পাও কেন?

আমি :যানিনা তো।

স্যার আমার কথা শুনে হালকা হেসে দিল। এই প্রথম আমি স্যারের মুখে হাসি দেখলাম, তাই আমার ভয় লাগা একটু হলেও কমে গেল।

স্যার আমাকে সুন্দর করে অংক বুঝিয়ে দিলেন।

স্যার :কালকে কোচিং বিকেলে। যাবে কিন্তু।

আমি :হুম।

স্যার :তাহলে আমি আসি।

স্যার চলে যাবে এমন সময় আম্মু আমার ঘরে চলে এলো। আর বলল।

আম্মু :তাহসিন চলে যাচ্ছ কেন। খেয়ে যাবে।

স্যার :না আন্টি। আমি আজ খাব না। অন্য একদিন খাব।

আম্মু :না কোন কথা না। খেবে চলো। না খেয়ে গেলে কিন্তু কষ্ট পাব।

স্যার :ঠিক আছে।

আম্মু :মিহু চল ।তুই ও খাবি।

আমি :না আম্মু আমি খাব না।

স্যার কে নিয়ে আই। আমি গেলাম।

স্যার :চলো খাবে।

আমি :না স্যার আমি খাব না।

স্যার :তুমি না খেলে কিন্তু আমিও খাব না।

আমার স্যারের কথাটা বুকে যেয়ে বাঁধল। তাই আমি আর না করলাম না।

আমি :আমি খাব তো।

স্যার :চলো।

||

খাবার টেবিলে স্যার বসে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে। আর আমি একপাশে দাড়িয়ে আছি। স্যারের সামনে কিভাবে খাব।কিছু না বলে, চেয়ার টেনে একপাশে বসে পড়লাম।

স্যার :আন্টি আর দিয়েন না। খেতে পারব না।

আম্মু স্যারকে খাবার বেরে দিতছে। আর আমি দেখছি।

স্যারকে খাবার দেওয়ার পর আম্মু আমাকে খেতে দিল।আমি খাবার না খেয়ে শুধু নাড়ছি।
স্যার অতি সুন্দর করে নিচের দিকে তাকিয়ে খাচ্ছে। আর আমি আর চোখে বার বার তাকে দেখছি।

আম্মু :জান তাহসিন মিহু ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না। তুমি কিছু বলো তো ওকে।

স্যার :চিন্তা করবেন না। এখন থেকে ঠিকি খাবে।

আমি স্যার আর আম্মু কথা শুনছি। কিন্তু কিছু বলছি না। হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। তাই আমি জানালা আটকানোর জন্য ওঠে পড়লাম।

স্যার :আন্টি আমি আসি।

আম্মু :না বাবা বৃষ্টির মধ্যে যাওয়ার দরকার নেই।

স্যার :না আন্টি আমি গেলাম।

আম্মু :কোন কথা না। আজকে থেকে যাবে।

স্যার :কিন্তু। ঠিক আছে।

আমি :এটা হতে পারে না। স্যার কেন থাকবে। না থেকে যাক। বৃষ্টির মধ্যে যদি কোন সমস্যা হয়। দূর, থাকবে কি থাকবে না। আমার তাতে কি? [মনে মনে]
||

কিছুখন পর আম্মু স্যারকে নিয়ে আমার রূমে চলে এলো। আর যা বলল তা শুনে আমি অবাক।

আম্মু :মিহু ।তাহসিন আজ তোর ঘরে থাকবে। দেখ কোন কথা না।অন্য রূমের চেয়ে এ ঘরটা সুন্দর। তাই তাহসিন এই ঘরেই থাববে।

আমি :তাহলে আমি কোথায় থাকবো?

আম্মু :তুই আমার সাথে থাকবি। কোন কথা না চল। তাহসিন তোমার যদি কোন কিছু দরকার হয় মিহুকে ডেকো।

তাহসিন :হ্যাঁ আন্টি ।

এমন সময় স্যারের ফোন চলে এলো।

আম্মু :কে ফোন করেছে?

স্যার :বাবা,,

স্যার কথা বলার পর কি যে হলো । আসি আন্টি বলেই পাগলের মতো চলে গেলো।

আম্মু :কি যে হলো ছেলেটির। হয়তো দরকার হবে তাই চলে গেল। বৃষ্টি মনে হয় একটু কমেছে। মিহু চিন্তা করিস না। ঘুমিয়ে পড়। আমি গেলাম।

আমি :হ্যাঁ ।
|
আমি ঘরে এসে আজকে স্যারের ব্যবহারের কথা ভাবতে লাগলাম। কিন্তু আমার টেনশন হতে লাগলো। তার কোনো সমস্যা হবে না তো।

||

তাহসিন বৃষ্টির মধ্যে হাঁটছে। সারা শরীর ভিজে একাকার হয়ে গেছে ।কিন্তু তারপর ও তাহসিন পাগলের মতো হেঁটেই চলছে। ছেলেদের যে কাঁদতে হয় না,,,,,,,

চলবে?

[আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত, এই পর্বটা আমি ভুলে ডিলিট করে ফেলেছিলাম। আমাকে আবার একই রকম করে লিখতে হয়েছে, তাই আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছে। আশা করি আপনাদেরকে পাশে পাবো।পরবর্তী পর্ব ইনশাল্লাহ সকালে পোস্ট করবো।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here