#প্রতারক
#লেখিকাঃফারহানা_ইসলাম
#পর্বঃ০৯_এবং_শেষ
হঠাৎ খেয়াল করলাম খুব জোরে জোরে কারা যেনো হাত তালি দিচ্ছে।পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম তিথি,রিয়া,রাজু আর মামুন স্যার।
ওদের দেখে আমি বেশ অবাক ই হলাম।আবার খুব ভয় ও পেয়ে গেলাম।
মামুন স্যারঃ অভিনন্দন!!
নীলঃধন্যবাদ মামুন।তুই না থাকলে সবকিছু সম্ভব ই হতে পারতো না।
মামুন স্যারঃধুর!!পাগল।।তুই আমার বন্ধু।আর তোর জন্যে আমার এতটুকু করা কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।।
নীলঃধন্যবাদ মামুন।।
,
,
আমার আর নীলের সম্পর্ক খুব ভালোভাবে চলতে লাগলো।এর মধ্যে একদিন নীলের বাবা-মা ও এসে আমাকে দেখে গেলো।কী আর বলবো নীলের বাবা-মা খুব ভালো মনের মানুষ।তারা আমাকে দেখে খুব খুশি হলো।আর তাছাড়া নীল তাদের একমাত্র সন্তান।তাই সন্তানের পছন্দ ই তাদের কাছে সব।
হঠাৎ একদিন আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।কিন্তু খুব নরমাল ভাবে।কারন আমি চাই যে আমাদের বিয়েটা যেনো ইসলামিক নিয়ম মেনে হয়।ঠিক তাই হয়েছে।
,
,
বিয়ের পর আমার আর নীলের সংসারটা খুব সুন্দরভাবে চলতে লাগলো।আমার ভাইয়ের ও বিয়ে হয়ে গেলো।আমার ভাই তিথিকে বিয়ে করেছে।আসলে ওরা দুজন-দুজনকে আগে থেকে ভালোবাসতো।
,
,
হঠাৎ একদিন রিয়া কল দিয়ে বললো,,,,,,,,,,,,
রিয়াঃকেমন আছিস আর্নিয়া??
আমিঃভালো।তুই কেমন আছিস??
রিয়াঃভালো।।আচ্ছা আর্নিয়া একটা কথা শুনেছিস!!
আমিঃকী??
রিয়াঃআহির আর মিমির একটা ছেলে হয়েছে!!কিন্তু!!
আমিঃকিন্তু কী রিয়া??
রিয়াঃছেলেটা না প্রতিবন্ধী টাইপের।মানে ওর একটা হাত আর একটা পা অচল।ডাক্তার বলেছে ছেলেটা ঠিক হবে না।।
রিয়ার কথা শোনে আমি বেশ অবাক হলাম।কারন কথায় আছে না পাপ বাপকে ও ছাড়ে না।ঠিক সেটাই হলো।ওরা দুজন দুজনের করা পাপের শাস্তি পেয়েছে।কিন্তু খুব খারাপ লাগলো বাচ্চাটার জন্যে বাচ্চাটা তো কোনো দোষ করে নি।তাহলে কেনো বাচ্চাটা ওদের করা পাপের শাস্তি পাবে!!সব ই বিধাতার লীলা খেলা!!
,
,
এর মধ্যে আমি কনসিভ করলাম।নীলের বাবা-মা কী যে খুশি বলে বুঝানোর মতো নয়।আমাকে একেবারে মাথায় করে রেখেছে।আর নীল তো আছে ই।নীল আর ওর পরিবারের মতো মানুষ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য ই করে।।
দিন যায়।মাস যায়।অবশেষে নয়মাস পূর্ন হলো।আর আমার প্র্যাগন্যান্সির তারিখটা ও চলে এলো।আমাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো।নরমাল ডেলিভারী করা হলো।আলহামদুলিল্লাহ প্রথমবারের মতো রাজকন্যার মা হলাম।মেয়ের মুখ দেখার পর অতীতের সব কথা ভুলে গেলাম।মেয়েকে নিয়ে আর ফ্যামিলিকে নিয়ে খুব হ্যাপি আছি।মেয়ের নাম রাখলাম আরশি।
,
,
দুই বছর পর,,,,,,,,,,,,,
একদিন আমি,,নীল আর আরশিকে নিয়ে একটু বাহিরে ঘুরতে গিয়েছিলাম।হঠাৎ রাস্তায় আহিরকে দেখলাম।আগের মতো আর সেই মায়া ভরা চেহারা নেই।চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে।চেহারা অনেক ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।আহির আগ বাড়িয়ে আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলো।কিন্তু আমি আরশিকে নিয়ে চলে আসলাম।পরে নীল আহিরের সাথে কথা বললো।
পরে নীলের মুখে শুনলাম আহিরকে নাকি ওর মা-বাবা বাড়ি থেকে বের করে দিছে।কারন মিমি আহিরের মা-বাবাকে সহ্য করতে পারতো না।বাড়ির কোনো কাজে হাত লাগাতো না।সারাদিন শুধু ছেলেকে নিয়ে ই ব্যস্ত থাকতো।ওরা নাকি এখন মিমিদের বাসায় থাকে।
আবার এটাও শুনছি মিমি আর আহিরের সম্পর্কটা আর ভালো নেই।আহির নাকি অনেকবার মিমির গায়ে হাত পর্যন্ত তুলছে।কিন্তু মিমি ও সহ্য করে আছে।কারন আহির যদি ওকে ছেড়ে চলে যায় তাহলে মিমির বাবা-মা মিমিকে মেরে ফেলবে।
ওদের এইসব কাহিনী শোনে আমার মনে হলো আমি অনেক শান্তিতে আছি।আর এখন শুধু নিজের স্বামী আর মেয়েকে নিয়ে ভাবি।আপনারা সবাই ও আমার জন্যে দোয়া করবেন।আমি যেনো সারাজীবন সুখে থাকতে পারি।
সমাপ্ত
আমি ভাবছিলাম গল্পটা দিবো ই না।কিন্তু অনেকে আমাকে অনুরোধ করেছিলো তাই দিয়েছি।বিশ্বাস করেন খুব কষ্টে লিখেছি।কেনো জানি না লেখার আগ্রহটা হারিয়ে ফেলেছি।।