#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৪৭)
অনেক ধুমধামের সহিত সম্পন্ন হলো আঁখি আদৃতের বিয়ে,আদৃত অবশেষে নিল সস্তির নিশ্বাস,হাজারো প্রতিকূলতা পেরিয়ে আঁখিকে নিজের করেই নিল সে আজ,এবার তাকে আর হাতছাড়া করবে না।বিদায়ের ক্ষণ এসে গেলে আঁখির পরিবার বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেন সাথে আদ্রিশের পরিবারও,আঁখি দুই পরিবারের প্রতিই দূর্বল হয়ে পরে তখন,সবাইকে একে একে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।আশরাফ খান মেয়ের হাত আদৃতের হাতে দিয়ে বললেন।
″আমার নয়নের মনি তোমার হাতে তুলে দিলাম আদৃত,আমার মেয়ের জীবনে কিছুই চাই না,সব সক্ষমতা ওর মধ্যে আছে,শুধু ও একটু ভালোবাসার কাঙাল, আমার পাগলি মেয়েটাকে জীবনভরের ভালোবাসাটা দিও শুধু।″
″চিন্তা করবেন না স্যার,আপনার নয়নের মনিকে আমি প্রাণ দিয়ে হলেও আগলে রাখব আজীবন।″
আঁখি আদৃত বাবা মায়েদের সালাম করে নিল। তাদের গাড়িতে তুলে দেওয়া হলো।গাড়িতে উঠার সময় দেখতে পেল আঁখি –আদ্রিশ অদূরে দাঁড়িয়ে আছে, জল এখনও বয়ে পরছে চোখ দিয়ে, আঁখি দ্বিতীয়বার আর না তাকিয়ে উঠে গেল গাড়িতে,আদ্রিশ পুরো বিয়ের সময়টাতে বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল,আঁখির গার্ড আর হলের সিকিউরিটি গার্ড তাকে ভিতরে যেতে দেয় নি আদ্রিশ অনেক চেষ্টা করলেও।অনেক বার আঁখির নাম নিয়ে ডেকেছেও কিন্তু তার বিপরীতে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েশে আদ্রিশকে।বর্তমানে নিজেকে পৃথিবীর বোঝা ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছে না তার,যাকে পাওয়ার জন্য কতো কিছুই না করল আদ্রিশ কখনও তাকে এভাবে হারিয়ে যাবে কল্পনাও করে নি।এই মাত্র আঁখির গাড়ি তার সামনে দিয়ে গেল।
″তোমাকে রিদিকার চেয়েও ভয়ংকর কিছু দিতে চেয়েছিলাম আদ্রিশ কিন্তু পরক্ষণে যখন দেখলাম তুমি অনুতপ্ত, অনুশোচনার আগুনে জ্বলছ তখন নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টালাম,কারণ অনুশোচনার আগুনে পোড়া আর ভালোবাসার মানুষকে অন্যের সাথে মেনে নেওয়ার মতো পীড়াদায়ক কিছু আর হতে পারে না।তুমি সত্যিই আমাকে ভালোবেসেছিলে আদ্রিশ,কিন্তু আফসোস তোমার ভালোবাসায় খুঁত ছিল,আর প্রমত্ত অঙ্গনা তোমার মতদের ছাড় দেয় না,তুমি যতদিন অনুশোচনার আগুনে জ্বলবে ততদিনই স্বাভাবিক থাকবে আদ্রিশ কিন্তু যেদিন জানতে পারব এই অনুশোচনার সমাপ্তি ঘটেছে সেদিন তোমার জীবন আর স্বাভাবিক থাকবে না,অস্বাভাবিক করে দিবে তোমার সবকিছু এই প্রমত্ত অঙ্গনা।″
″এই যে ডা.সাহেবা,কি ভাবা হচ্ছে?এতো কাঁদলে কেন?মাথা ব্যথা করবে না।″
″বাবা-মা ছেড়ে তো আপনি আসেন নি,হুহ।″
আঁখিকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিল আদৃত।
″জানো আঁখি সত্যিই নারীদের কোনো তুলনা হয় না,জন্ম থেকে এক জায়গায় বড় হয়ে একটা সময় তাকে অন্য ঘরে চলে যেতে হয়,পুরাতন টান ভুলে নতুন মানুষ নতুন জায়গাকে আপন করে নিতে হয়,যা তারা অনায়াসে মেনে নেয়,হাসিমুখে সব মানিয়ে যায়।আসলেই নারীরা যা পারে তা কোনো পুরুষ কখনও পেরে উঠতে পারবে না,পিরিয়ড থেকে শুরু করে ডেলিভারি পেইন অব্দি যে যন্ত্রণা নারী সহ্য করে কোনো পুরুষের সে ধৈর্য্য আর মনোভাব থাকতে পারে বলে আমার মনে হয় না।″
″যদি পৃথিবীর সব কয়টা পুরুষ আপনার মতো হতো,তবে পৃথিবীটা সত্যিই আলাদা রূপ নিত।″
″ভালোই হয়েছে সব পুরুষ আমার মতো না।″
″কেন!″
″কারণ তখন তুমি আমার উপরও অনেকটা অপশন পেয়ে যেতে।″
আঁখি আদৃতের বুক থেকে নিজেকে সরিয়ে এবার অনেক ভাব নিয়ে বলল।
″অপশন তো এখনও অনেক আছে,ওই আমি একটু দয়াবান তো তাই আপনাকে বাছাই করা।
আদৃত এক টান দিয়ে আঁখিকে নিজের অনেকটা কাছে নিয়ে এসে বলল।
″অপশন হতে পারে তোমার কাছে হাজারটা কিন্তু সঠিক উত্তর আমি ছিলাম আর আমিই থাকব।″
″গাড়িতে ড্রাইবার আছে ভুলে গেছেন?″
″তুমি চোখের সামনে থাকলে তো আমি পৃথিবী ভুলে যাই সুখ।″
আঁখির মৃদু কন্ঠে বলা কথার উত্তরে আদৃতের মোহনীয় বাণী আঁখিকে আরও লজ্জায় ফেলে দিল,আদৃতকে ছাড়িয়ে গাড়ির জানালার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল।আদৃত আঁখির হাত ধরেই থাকল।
_________
আদ্রিশ আঁখির স্বপ্নের ভুবনে এসেছে নিজের পরিবারের কাছে।এসেই মায়ের পায়ে লেপ্টে পরেছে,কেঁদে কেঁদে বলতে শুরু করেছে।
″মা গো আমায় ক্ষমা করে দাও। আমি জানি তোমরা আমায় ক্ষমা করো নি,তাই সেদিন আমাকে হাসপাতালে দেখতে গেলেও,আমার পাশে থেকে আমার দেখাশোনা করলেও আমার সাথে একটা কথাও বলো নি তোমরা,বরং আমি সুস্থ আছি জেনে চলে এলে,আমি না হয় বাজে,তাই বলে কি এতো পর করে দিবে!দেখো না আজ নিঃস্ব হয়ে গেছি।আমার কেউ রইল না মা,ওই রিদিকা আমার সব কেড়ে নিল,কেড়ে নিল আমার আঁখিকেও।″
মায়ের মন আর শক্ত রাখতে পারলেন না,আদ্রিশকে পা থেকে তুলে চোখের জল মুছে দিয়ে বললেন।
″ভেবেছিলাম তোকে কখনও ক্ষমা করব না,কিন্তু মা হয়ে যে নিরুপায় আমি,নয় মাস গর্ভে ধরেছি তোকে আমি,কী করে পর করে দিব!″
″ভাইয়া, ভাবী ক্ষমা করে দাও আমায়,আমি সত্যিই আজ লজ্জিত। ″
″আমরা তোর উপর আর রেগে নেই আদ্রিশ,তুই তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস এটাই অনেক।″
″তোমরা আমার সাথে চলো,আমরা আবার একসাথে থাকব।″
″না,আদ্রিশ এমনটা আর হয় না,আমরা এখানেও বেশিদিন থাকব না,আমি একটা ব্যবসা শুরু করেছি আর কম দিনে অনেক উন্নতিও হয়েছে, কয়েকদিনেই নিজের উদ্যোগে নিজের একটা বাড়ি তৈরি করার কাজ লাগাব।″
″কেন ভাইয়া আমাদের বাড়ি আছে তো।″
″না রে ওই বাড়িটাও বাবা তোর নামে লিখে দিয়েছে,আমি নিজের ক্ষমতায় নিজের সবকিছু গড়তে চাই নতুন করে।″
″ভাইয়া এখন আমার সবকিছুই তো তোমরা,প্লিজ তোমরা আমায় ফিরিয়ে দিও না,আমার সাথে চলো,আমি আমার সবকিছু তোমার নামে লিখে দিব,আমার চাই না আর কিছু শুধু তোমরা সাথে চলো।″
″না রে,তা আর হয় না,তুই বরং নিজের জীবন নতুন করে শুরু কর, আমরা তোর পাশে আছি।″
পর করে দিলে না তোমরাও,ওই আঁখির নামক নির্দয়ের মতো তোমরাও পর করে দিলে,ভালোই করেছ, এটাই আমার প্রাপ্য,আমি কারো আপন না, কারো না।″
″আদ্রিশ শোন আমাদের কথা।″
আদ্রিশ কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে চলে এলে আদিলের ডাকে কান না দিয়ে।
________________
আঁখিকে শায়েলা মা আর ইশিকা মিলে আদৃতের কক্ষে নিয়ে এলেন।
″আঁখি তোর কিছুর প্রয়োজন হলে আমাকে আগে ডাক দিবি কেমন?এতো ভারী সাজে ক্লান্ত লাগছে হয়ত যা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নে।তারপর রেস্ট করবি।
″মামুমি আমি আসলে একটা কথা বলতে চাইছিলাম।″
″হুম,বল?″
″আংকেল যা করেছিলেন তা উনার জায়গা থেকে ঠিকই ছিল।কিন্তু তারপর তো উনি সেটাকে নিজের ভুল হিসেবে ধরে নিয়েছেন,শুধু যে ডা.আদৃতের প্রাণের বদলে উনি বিয়েতে রাজি হয়েছেন তেমনটা নয়,সেদিন আমি উনার চোখে শুধু ডা.আদৃতের জন্য ভালোবাসা নয় অনুশোচনাও দেখতে পেয়েছিলাম,তাই বিয়ের জন্য রাজি হয়েছি,তাছাড়া এনগেজমেন্টের দিন আংকেল নিজের অনেক কাছের আত্নীয়দের তাদের মুখের উপর জবাব দিয়েছিলেন সবার সামনে যখন উনারা আমার আর ডা.আদৃতের বিয়ে নিয়ে আংকেলকে অপদস্ত করতে চাইছিল।আংকেল সত্যিই অনুতপ্ত মামুনি,তোমাকে অনেক ভালোবাসেন,উনাকে আর কষ্ট দিও না।″
″হুম ওকে ভেবে দেখব তোর আংকেল এর কথা,এখন তুই ফ্রেস হো,আদৃত সিয়ামের সাথে কি জানি গল্প করছে একটু সময়ে চলে আসবে।″
শায়েলা মির্জা কথাগুলো বলে চলে গেলে এবার ইশিতা বলল।
″শুন ফ্রেস হয়ে আবার ঘুমিয়ে পরিস না,আজ তো সাধনার রাত।″
″তোকে একটা মে*রে দাঁত সবটা ফেলে দিব,যা বলছি এখান থেকে,দুই সন্তানের মা হয়েছে কিন্তু সুবুদ্ধি উদয় হলো না,বড় ভাবী আমি তোর সম্মান দিবি।″
″বয়েই গেছে আমার,হুহ।″
মশকরাসুচক ভঙ্গিতে চলে গেল ইশিকা।আঁখি হেসে কক্ষে চলে গেল,পুরো কক্ষ যেন নতুন রূপ ধারণ করে আছে,চারিদিকেই ফুল,ডেকোরেশন পুরো আঁখির পছন্দ অনুযায়ী করা হয়েছে,গোলাপের পাঁপড়িতে ছড়ানো বিছানার একপাশে একটা বেগুনী রঙের শাড়ি রাখা পেল আঁখি,সাথে একটা চিরকুট।
″এই যে আমার মিসেস,ভারী সাজটা খুলে শাড়িটা পরে নিও,চুলগুলো ছেড়ে চোখে হালকা কাজল দিও,আমার সুখকে যে আমার ওভাবেই পছন্দ।″
″আঁখি হেসে শাড়িটা নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেল।শাওয়ার নিয়ে শাড়িটা পরে চুল মুছতে মুছতে বেড়িয়ে এলো এবার।″
আঁখিকে হঠাৎ এমনরূপে বেরুতে দেখে ওখানেই আটকা পরল আদৃতের চোখ,যতবারই এই রমণীকে দেখে ততবারই যেন তার প্রেমে নতুন করে পরে।আদৃতের ধ্যান ভঙ্গ করল আঁখি।
″এই যে ডা.সাহেব,ফ্রেস হলেন কখন?আর কোথায়?শেরওয়ানি খুলে দেখি শার্ট পরে নিয়েছেন,আর এভাবে জায়নামাজে বসে কি করছেন?″
″ফ্রেস আমি অন্য ওয়াসরুমে হয়েছি যাতে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায়ে দেরি না হয়। ওযু করে আসুন ডা.সাহেবা।শুকরিয়া আমরা একসাথেই আদায় করব আল্লাহ তায়ালার কাছে।″
″আমি এখুনই আসছি।″
আঁখি ওযু করতে চলে গেল,অতঃপর দু’জন একসাথে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে দু’রাকাত নামায জামায়াতের সহিত আদায় করে নিল।
নামায শেষে আঁখির চোখে আদৃত নিজে কাজল দেওয়ার জেদ করল,কথা অনুযায়ী তাই করল সে।আঁখিও মানা করল না।
″চলো।″
″কোথায়?″
″গেলেই বুঝতে পারবে।″
আঁখির হাত ধরে তাকে ছাঁদের দিকে নিয়ে আসল আদৃত,ছাঁদে প্রবেশ করতেই আরেকদফা চমকে গেল আঁখি।সারাটা ছাঁদ সাজানো,চারিদিকেই ফুল ও বেলুন,তাছাড়া অজস্র মোমবাতি, ছাঁদের এক প্রান্তে একটা বিছানা পাতানো,তার চারিদিক সাদা পর্দায় আবৃত,উপরের দিকটা খোলা,সবকিছুই আঁখির সুন্দর এক কল্পনার মতো মনে হচ্ছে। আদৃত আঁখিকে নিয় বিছানাটাতে বসাল। তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরল চট করে।
″অনেক দিনের সপ্ন ছিল আঁখি তোমার কোলে শুয়ে জোৎস্না বিলাস করব,আজ পূরণ হলো অবশেষে।তুমি হয়ত ভাবছিলে আঁখি, এতো পাগল হয়ে বিয়ে করেছি হয়ত প্রথম রাতেই তোমায় কাছে পেতে চাইব,কিন্তু আমি এমন কিছুটা ভাবি নি,শারিরীক সম্পর্কের জন্য তো পুরো জীবন পরে রয়েছে, বাসর রাতে প্রিয়তমার কোলে জোৎস্না বিলাস করার ক্ষণ আর কতসময় থাকবে,শারিরীক সম্পর্ক ভালোবাসার একটা অংশ মাত্র,পুরো ভালোবাসা জুরে তার রাজ চলতে পারে না,আমার ক্ষেত্রে তো তা একদমই না।তোমার কি খুব খারাপ লাগবে যদি আজকের রাতের কিছুটা ক্ষণ তোমার কেলে শুয়ে কাটাই।″
″খারাপ কেন লাগবে!বরং অনেকগুণ বেশি ভালো লাগবে।″
আঁখির কথার বিপরীতে আদৃত মিষ্টি হাসি উপহারে দিলো।বেশ কিছুক্ষণ আদৃত আঁখির সাথে গল্প করল,নিজের মনে জমে থাকা আঁখির জন্য সেই লুকন্ত অনুভুতিগুলো আজ সব জানানোর প্রচেষ্ঠা করে গেল তাকে।আঁখি তার মধ্য দিয়ে আদৃতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকলে এক পর্যায়ে আদৃত ঘুমিয়ে গেল।জোৎস্নার আলোতে আদৃতের সুদর্শন চেহারা আরও সুদর্শন লাগছে আঁখির কাছে,আজ এই গম্ভীর পুরুষের জন্য তার মনের ভালোবাসা ও সম্মান আরও হাজার গুণ বেড়ে গেল।
″আমি সত্যিই ভাগ্যবতী ডা.আদৃত, শুভ্রতা আপু ঠিকই বলেছিলেন আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন,আমার কপালে নিশ্চিত ভালো কিছু আল্লাহ তায়ালা রেখেছেন।আমার ভাগ্যে আপনার মতো কেউ লিখা ছিল তাই আল্লাহ ওই বিশ্বাসঘাতককে সরিয়ে দিলেন আজ আমি তা বুঝতে পারলাম।আজকে আপনি আরেকদফা প্রমাণ করে দিলেন আপনাকে ভালোবেসে আমি ভুল করি নি,আদ্রিশ তো প্রথম দিনই আমায় কাছে টেনেছিল,সে জায়গায় জীবনের এতটা বছর একা পার করেও আজ ভালোবাসার মানুষকে এতো কাছে পেয়েও নিজেকে সামলে রাখলেন,বরং রাতটাকে আরও রঙিন করলেন নিজের বুকের অফুরন্ত ভালাবাসার অনুভুতি প্রকাশের মাধ্যমে। আজ আমার চোখে আপনার সম্মানটা আরও বেড়ে গেল।″
কথাগুলো বলে আঁখি বেশ কিছু সময় আদৃতের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল,অপলকে দেখে গেল তাকে বেশ কিছুক্ষণ, এবার পাশের একটা বালিশ নিয়ে তাতে শুইয়ে দিল আঁখি আদৃতকে খুব যত্নসহকারে,তার কপালে আলতো করে চুমু কাটল,অতঃপর নিজে আদৃতের বুকে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে ধরল।
মির্জা হাউজের বাইরের রাস্তায় বসে আছে আদ্রিশ,বার বার তাকাচ্ছে বাড়িটার দিকে,বুকের ভিতর চলছে তোলপাড়।
″তুমি ঠিকই বলেছিলে আঁখি যে যা করবে তাই পাবে।নিয়তি দেখো না আমার টা কিভাবে আমাকেই ফিরিয়ে দিল,সেদিন তোমাকে বাইরে রেখে আমিও অন্যের সাথে রঙিন রাতে মগ্ন ছিলাম,হয়ত সেদিন তুমিও এমনভাবে কেঁদেছ,এমন যন্ত্রণায় পোড়েছো।সেদিন বুঝতে পারি নি তোমার কষ্টটা, এমনটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল আমার কাছে,মোহের পর্দা পরে গিয়েছিল আমার চোখে।কিন্তু আজ যখন চোখের সামনে তুমি অন্যের হয়ে গেলে তখন বুঝতে পারলাম সেদিন তোমার কতটা কষ্ট হয়েছিল।দেখো না আজ তুমি অন্যের বাহুতে আর রাস্তায় বসে তোমার ভালোবাসার হাহাকারে পোড়ে ম*র*ছি আমি।সেদিন যদি নিজেকে সামলে নিতাম তবে আজ এই পরিণীতি হতো না।″
চলবে…