#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত
#সাদিয়া_নওরিন
পর্ব—- ২১
কক্ষ অন্ধকার করে, গুটিশুটি মেরে বিছানার একপাশে বসে আছে আরশী। আলতো মাথা নুইয়ে আলুথালোভাবে গভীর চিন্তায় মগ্ন সে। জিবনের ইউটার্নে নিজের সত্তার খেই হারিয়ে ফেলছে যেন সে আজ। চোখ বুঝে সাত বছর আগের সেই ঘটনাটি অনুভব করতে লাগলো আরশী। আর সাথে অনুভব করতে লাগলো ইরশাদের বলা শেষ কথাগুলোও!
আঁখিদ্বয় বারবার অশ্রুসিক্ত হচ্ছে আরশীর। বুক চিঁড়ে কেবল চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে আজ তার,
“কেন প্রিয়া, কেন এমনটা করলি তুই! ”
আজ আরশীর সামনে পুরো সত্যটা পানির মতো পরিষ্কার হয়ে আসছে। সাথে দৃশ্যমান হচ্ছে তার বোকামীগুলোও!
বিশ্বাস আর অন্ধবিশ্বাসের মধ্যে কেবল একচুল পরিমানের পার্থক্য থাকে।বেশীরভাগ ক্ষেত্রে যারা আমাদের সাথে বেশী মিশতে পারে না, বা যাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক ততটা ভালো না তারা আমাদের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারে না। আমাদের ক্ষতি করতে পারে কেবল আমাদের আপনরা! কলিজার খুব কাছে অবস্থানরত মানুষটিই সর্বপ্রথম কলিজায় ছুরিটা মারে! হৃদয়ের বান্ধবীগুলোই হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত সবার আগে করে।আর তাদের থেকে প্রাপ্ত এই কষ্টটুকু অসহ্যনীয় হয় এতটা, যা ব্যাক্তিকে ভেতর থেকে নিঃশ্বেষিত করে তুলে। কথায় আছে, বান্ধবীর স্বামী বা বয়ফেন্ডের ওপর সবচেয়ে বেশী নজর তার কাছের বান্ধবীটারই থাকে। আর সেই ছেলে যদি হয় ভালো আর সুন্দর তাহলে তো আর কথায় নেই!
আরশী সাত বছর আগের সেই দিনটির স্মৃতিগহ্বরে ডুব দেয়। যার পর থেকে তার জিবনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল।
_______ অতিতে,_____
আজ দশ দিন, ইরশাদের সাথে কথা বলছে না আরশী! সেদিন দেখা করবে বলে আর করে নি সে।আর তারপর থেকেই সে ফেইসবুকে ডোকাও ছেড়ে দিয়েছে । ইচ্ছে সে ভূলে যাবে ইরশাদকে! অচেনা কারো প্রতি এতোটা টান ও যে বড্ড ক্ষতিকর তার জন্য। কিন্তু তার এতোসব চিন্তাধারাই বাগড়া দেয়, তারই কিশোরী মন! মন দিয়ে পড়তে বসলেও হুটহাট ভাবেই যেন ইরশাদই ঘুরপাক খায় তার মস্তিষ্ক জুড়ে! সিরিয়াল দেখতে বসে, একবার নিজেকে আর ইরশাদকে কল্পনা করে ডুকরে কেঁদে উঠে তো আবার ইরশাদের দুষ্টুমি মনে করে খিলখিলিয়ে হাসে সে! কিশোরীর গভীর আবেগী সেই প্রেম যেন দিন দিন মুষড়ে দেয় তার কোমল মনকে! তারও বড্ড ইচ্ছে হয় আবার আগের মতো কথা বলে সে ইরশাদের সাথে!
শেষে আঠারো দিনের মাথায় আবার ফেইসবুকে ডুকে আরশী। আর সাথে সাথেই মেসেজের তোড়ে বারবার কেপে উঠে ফোনটি! কাঁপা কাঁপা হাতে সি ওল্ডার অপশনে ক্লিক করে একটার পর একটা এসএমএস পড়তে থাকে সে। ইরশাদের ব্যাকুলতা, তার সেই হৃদয়বিদারক কন্ঠস্বর যেন ঝড় তুলে আরশীর কোমল হৃদয়ে! সে কানে হেডফোন গুঁজে শুনতে থাকে একেকটি কথা।
” সত্যিই কি ভালোবাসা এসেছিল আমার এই জিবনে?
নাকি মরিচিকাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার প্রয়াস করে চলেছি আমি!”
” তোমাকে হারিয়ে, তোমারই নিমিত্তে আজো বেঁচে আছি আমি। এই বেঁচে থাকা যেন তোমারই প্রতিক্ষা।”
” স্বপ্নরা ডানা মেলেছে নীল আকাশে,
আমি তাকিয়ে আছি তার পানে।
ভালোবাসি বলে কাছে এসে,
হুট করে কেনই বা হারিয়ে গেলে?”
“হৃদয় বিধায়ক চিৎকার ছেড়ে কেবল খুঁজি তোমায়,
গভীর ঘুম ছেড়ে, একলাফে উঠে বসে অনুভব করি তোমায়।
যদি হারিয়ে যাবে জানতেই তুমি,
যদিই হারিয়ে যাবে জানতে..ই তুমি,কেন তবে এসেছিলে এতো কাছে আমার?”
“সময়ের এই প্রবাহ কমাতে পারেনি হৃদয়ের দহন,
তুমি চলে গেলেই ভূলে যাব তোমায় এমনটা মানে না আমার এই মন।
ভালোবাসি তোমায় আমি,
ভা-লো-বা-সি তোমায় আমি, ভূলবো না তোমায় কখনো এইটা ই আমার পণ!”
” প্রেম করে দেখলাম, বাঁচাটাই কষ্টদায়ক হয়ে গেল।চলাচল করা আর শ্বাস ফেলার পরও,
লাশ আমি আজকাল, এমনটাই মনে হলো!”
“অস্তিত্ব ভালোবাসা স্বগীয় অনুভূতি,
হয় সে কখনো কারো দেওয়া প্রতিশ্রুতি।
অপেক্ষার দুর্নিবান, অন্তরের সেই রাগিনী।
কে তুমি প্রিয়তমা?
তুমিই কি আমার প্রেমানুরাগিনী! ”
ফুফিয়ে কেঁদে চলেছে আরশী! ইরশাদের সেই গভীর কান্নামিশ্রিত কন্ঠস্বর আর আবেগ মেশানো সেই কথাগুলো! এ যেন উথাল-পাতাল করে তুলছে তাকে।
অতীতের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে আসলো আরশী! অশ্রুতে ভিজে গিয়েছে তার কামিজের একাংশ।সে চোখ বুঝে অনুভব করলো সেই সময়। তারপর ফোন হাতড়ে গেলারিতে ডুকে সিক্রেট এপসের ভয়েস রেকর্ডগুলো আবার শুনলো!
আরশীর কাছে আজো আছে সেই ভয়েস রেকর্ডগুলো যা ইরশাদ তাকে পাঠিয়েছিল! কয়েকটি ফোন পাল্টালেও সেই সময়ে মেমোরি কার্ডে সেইভ করে রাখা ইরশাদের ভয়েসগুলো হারাতে দেয় নি সে! এ যে তার মন ভালো করার অসুধ, যা তার এই সাত বছরের সাথী হয়ে ছিল! সে ভয়েসগুলো শুনতে শুনতে আনমনে ভাবে,
” তুমি কি আজো আগের মতো আবেগী আছো?আছো কি সেই কোমল মনের অধিকারী? নাকি বদলে গিয়েছো? বদলে গিয়েছো কি সময়ের পরিবর্তনে?”
আরশী আবার ডুব দেয় তার অতিতে।
______ অতিত____
সেদিন অনেক বেশী আবেগী হয়ে উঠেছিল আরশী। কন্ঠনালী রুদ্ধ হয়ে আসছিল তার মনে জমে থাকা কষ্টের তিব্রতায়! সে কাঁদতে কাঁদতে ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়েছিল ইরশাদের কাছে,
“কারো প্রতি এতোটাও দূর্বল হওয়া ঠিক না, যতোটা সে তোমাকে সহজে ভেঙ্গে দেখতে পারবে। কারণ যদি সে তোমার হাতটি ছেড়ে দেয়, তাহলে তোমার উঠে দাড়াতে অন্যকারো ভালোবাসার সাহায্য লাগবে!”
আলতোভাবে চোখ বুঝে আরশীর কথায় মনে করছিল ইরশাদ! আরশীর হুট করে হারিয়ে যাওয়া যেন চুর্ণ করে দিয়েছে তাকে! চেহারায় তার ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট।আর চোখদুটো কোটরাগত!
আচমকা মেসেজের টুন শব্দে ঘোর কাটে ইরশাদের। কিঞ্চিৎ ভাবে ব্রু কুঁচকে ফোনের দিকে তাকায় সে! মুহূর্তেই যেন মন ভালো হয়ে যার তার। সাথে অভিমান ও হয় প্রচন্ড। মুখ গোমড়া করে ফোনটি একপাশে ছুঁড়ে মারে সে।তারপর হন্তদন্ত হয়ে আবার খুঁজে নেয় ফোনটি। বারবার শুনে ভয়েসটি। এ যেন তৃষ্ণা না মেটা অনুভূতি! তারপর আবার ভয়েস পাঠায় সে। গলাটা ধরে আসছে ইরশাদের। কিন্তু কয়েকবার গলা ঝেড়ে পরিষ্কার করে আবার অভিমানভরা কন্ঠে মেসেজপাঠায়,
“তোমার কি মনে হয় এখনো ভালোবাসার ওপর বিশ্বাস আছে আমার? মোটেও না। নেড়া বারবার বেলতলা যায় না।আর আমি তো আমৃত্যু ভালোবাসা শব্দকে ঘৃনা করবো।”
এবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠলো আরশী৷ নিজেকে কয়েকবার বকলো সে। তারপর আবার রেকর্ড করলো ভয়েস,
” আমার আকুলতা কতোটুকু তার উপলব্ধি হয়তো নেয় তোমার মাঝে।
প্রতিদিন কতো ছুরির করাঘাত হয় আমারই এই বুকে তা না বলাটায় হয়তো সাজে।
দুনিয়ার সামনে হয়তো সবচেয়ে হাসিখুশি মানুষ আমি,
কিন্তু বন্ধ কক্ষে অশ্রুসিক্ত এই আমি!”
এবার সরাসরি কল দেয় ইরশাদ। হৃদয়টা প্রচন্ডভাবে জ্বলছে তার। আরশীর বলা কথাগুলো প্রতিধ্বনিত হচ্ছে তার কানে। মেয়েটিকে বুকের সাথে শক্তভাবে মিশিয়ে নিতে ইচ্ছে হচ্ছে এখন তার। খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে একদম বুকের পাজরের সাথে বেঁধে রাখে সে তাকে!
ইরশাদের ফোন পেতেই পা টিপে টিপে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে ছাঁদের উদ্দ্যেশে হাঁটা দেয় আরশী৷ খুব আস্তে দরজা চাপিয়ে নিঃশব্দে ছাদে চলে আসে সে। কল পড়তে পড়তে কেটে যায় কয়েকবার এই সময়ে মধ্যে। অপরপ্রান্তে অস্হির হয়ে উঠেছে ইরশাদ! আরশীর এই দেরী যেন সহ্য হচ্ছে না তার।
ছাদের পানির ট্যাংকের পেছনে হাঁটু গুঁজে বস, ইরশাদের তৃতীয়বার করা কলটি রিসিভ করে আরশী৷ আর সাথে সাথে ইরশাদের “ছন্দ!” বলা শব্দটি কম্পন তুলে তার হৃদয়ে। স্তব্ধ ছাঁদের বহমান বাতাসের সাথে মিশে অদ্ভুত এক মাতালকরা অনুভূতি ছোঁয়ে দিয়ে যায় আরশীকে। আবেশিত হয়ে চোখ বুঝে আরশী! ইরশাদ আবার ডাকে। সে এক মাদকতা মিশ্রিত কোমল শিহরণ মাখানো কন্ঠে,
—– ছন্দ! আছো?
—– ওম.. হুম
চোখ বুঝে উত্তর দেয় আরশী। কন্ঠে জড়তা আর দেহে তার কম্পন। ইরশাদ আবার বলে উঠে,
—- এতোদিন কোথায় ছিলে? আমাকে বুঝি মনে পড়ে নি তোমার? ঐদিন আসো নি কেন?
—– সমস্যা ছিল। আর এই কদিনও সেই সমস্যায় ছিলাম আমি
—- মিথ্যা। তুমি ইচ্ছে করে এভয়েড করেছো আমাকে।
একদম বাচ্চাদের অনুযোগের মতো করে বলল ইরশাদ। যা একদম আরশীর বুকে খামছি দিয়ে বসলো। সে পরপর ঢোক গিলে বলল,
—- নাহ, মিথ্যে না। আসলেই..
—- তুমি আমাকে ভালোবাস না তাই না ছন্দ। হয়তো তোমার মনে হয়েছে তুমি আমার সাথে দেখা করতে আসলে তোমার ক্ষতি করবো আমি। তাই আসতে চাওনি বুঝি? তাই না?
আরশী কি বলবে একদমই বুঝতে পারলো না। সে বারবার আমতাআমতা করতে গিয়ে আটকে যাচ্ছে তার কন্ঠস্বর। হঠাৎ ফোনটি কেটে দিল ইরশাদ।তারপর নিজের কলেজের আইডি কার্ডের ছবি পাঠালো সে আরশীর কাছে।সাথে পাঠালো তার নরমাল ছবি। আরশী অবাক দৃষ্টিতে মুগ্ধতা ঢেলে কিছুসময় তাকিয়ে রইলো ইরশাদের চেহারার পানে! মুখে চিকন দাঁতের হাসি ঝুলিয়ে বাইকের ওপর বসে আছে ইরশাদ। হয়তো এইটাই কয়েকদিন আগের রাঙ্গামাটিতে তোলা ছবি। নীল আকাশের নিলিমার মাঝে উড়ে যাওয়া সাদা গাংচিলটির চেয়েও অত্যাধিক সুন্দর লাগছে ইরশাদকে! মনোমুগ্ধকর ইরশাদের হাসিটিতে যেন চোখ আঁটকে আসে!
ফোনের টোনরিং এ তাড়াতাড়ি কল রিসিভ করে আরশী। এবার ইরশাদ আবার বলে,
—– আমার কলেজের আইডি কার্ডের ছবি দিলাম। এবারতো বুঝলে সত্যি স্টুডেন্ট আমি।নাকি ভোটার আইডিকার্ডের ও ছবি দিব?
লজ্জায় মাথা নুইয়ে আসে আরশীর। সে আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে মিনমিনিয়ে বলে,
—- না না। আসলেই আমি একটু সমস্যায় ছিলাম।
—– ওহ।
তারপর কিছুসময় নিরবতায় কাটে চতুর্দিকে।এ যেন একে অপরের শ্বাসপ্রশ্বাস গোনার কারসাজি। ঠিক কিছুসময় পর ফিসফিসিয়ে বলে উঠে ইরশাদ,
—– আমার সায়রে ভিজতে এসো কন্যে, কথা দিচ্ছি মনের সায়রে ছন্দপাত হবে তোমার প্রতিটি পদচিহ্ন। প্রেমের এই সায়র আকুল হয়ে অপেক্ষায় আছে কেবল তোমার আগমনের অপেক্ষায়!
ইরশাদের ফিসফিসানো স্বর অদ্ভুত ঝড় তুলল আরশীর হৃদয়ে। শিহরিত দেহে যেন বিদ্যুতের আভাস হলো তার। কিশোরীর ছোট্ট হৃদয়ে এ সব গভীর অর্থপূর্ণ সংলাপ যেন মাদকতার আলপনা আঁকে! তারা নিমজ্জিত হয় সেই নিষিক্ত অনুভূতিতে যা তাদের কন্ঠনালীকে রুদ্ধ করে দেয়! কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে ফিসফিসানো স্বর তোলে চোখ বুঝে রয় আরশী। ইরশাদের মিষ্টি হাসি, তার স্বরের সেই আকুলতা, তার গভীর নিশ্বাস আরশীর হৃদয়কে উতলা করে সে, বিরবিরিয়ে ক্ষ্মিণ স্বরে বলে উঠে সে,
” তোমারি উষ্ঠের মাদকতায় ডুবতে দিবে কি আমায়?
আমি যে তোমার প্রেম সায়রের ছন্দপাত হতে চাই!
তোমারই নেশায় সিক্ত হবো এমন এক তুমি চায়!”
তাড়াতাড়ি ফোনটি কেটে দেয় আরশী! শ্বাসের ঘনত্ব বারবার বেড়ে যাচ্ছে যেন তার! আটকে আসা নিশ্বাসগুলো বুকের ওপর হাত চেপে জোরে জোরে ফেলে সে। অন্যদিকে ইরশাদ যেন স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে ফোনের স্কিনের দিকে! আরশীর বলা কথাগুলো এখনো প্রতিধ্বনি হচ্ছে তার কর্ণে! সে শ্বাস আঁটকে বিষ্মিত ভাবে তাকিয়ে রইলো ফ্লোরের দিকে কিছুসময়! কর্ণদ্বয় যে ঝা ঝা করছে তার। আরশী আকুল ভরা কথাগুলো শিরা-উপশিরায় শিহরিত করছে যেন তাকে!
খুশিতে ঠোঁটের দু’পাশে আবার দৃশ্যমান হচ্ছে ইরশাদের সেই প্রাণবন্ত হাসি! সে ঐভাবেই লিখলো,
—- দেখা করবে কি আমার সাথে?
আরশী মাথা নুইয়ে আছে লজ্জায়। গাল দুটি যেন লাল হয়ে আছে তার। সে লাজুকভাবেই লিখলো, “হুম”
কারণ সে ও যে চায় দেখা করতে।
—— ডিসি হিলে দেখা করবে?চিনো?
আরশী আনমনে ভাবলো, ঐদিকে তেমন কোন রিলেটিভ যায় না তার। আর তাছাড়া আপাতত তার বাবাও বাসায় নেই, পরশু আসবেন তিনি। হুট করেই রাজি হয়ে গেল আরশী! সে তাড়াতাড়ি জবাব লিখলো
—- আসবো
—- কয়টাই?
—- তিনটা?
—- সত্যি আসবে তো?এবার না আসলে মরেই যাব আমি!
আরশীর মন খারাপ হতে লাগলো এবার।বুকের ভেতরটাও যেন জ্বলছে তার। সে জোরে নিশ্বাস ফেলে এক নিশ্বাসে রেকর্ড করে পাঠালো,
—- অবশ্যই আসবো। আসবোই আসবো। তোমার জন্য আসবো।
ইরশাদ চোখ বুঝে বারবার শুনতে থাকে লাইনটি। বড় সাউন্ড বক্স ব্লুটুথ কানেক্ট করে বারবার বাজায় সে কথাটি। পুরো রুমে ঝংকার তুলে যেন কন্ঠস্বরটি। আর ইরশাদের কানে শোনায় তা মধুর ধ্বনিরুপে!
ভূলের বয়স বলা হয় কিশোর বয়সকে। এই বয়সে আমরা ভূল করি, কারনে অকারণে ভূল করি৷ তবে অবাক করা বিষয়, খুব ভালোরা সবচেয়ে জঘন্য রকমের ভূল করে বসে। এখন কথা হলো এই ভূল কি তারা “ভূল” তা না বুঝে করে, নাকি কেউ তাদেরকে নিয়ে এমন কল্পনা করবে বলে করে। এই বিষয়টি ভাববার বিষয়!
চলবে