প্রেম সায়রের ছন্দপাত পর্ব ২৩

#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত

#সাদিয়া_নওরিন

পর্ব—-২৩

বালিশে মুখ গুঁজে একনাগাড়ে কেঁদেই চলেছে আরশী। বাবার বলা কথাগুলো সুচের মতো বিঁধছে তার শরীরে। গালের দুপাশটাও লাল হয়ে আছে তার! মায়ের চড় আর বাবার বকাগুলো মনে পড়তই শিউরে উঠে সে। তার আজো মনে পড়ে সেদিনের সেই অভিশপ্ত রাতের কথা! যেদিন কোনভাবে বাসায় পৌছাতেই তার বাবার মুখোমুখি হয়েছিল সে!
বিকেল ছয়টায় বাসায় ফিরে এসেছিল সেদিন আরশী।আর বাসায় ডুকতেই গালের কষিয়ে চড় দেয় তার মা! পুরো দিনের এতোসব ধকল আর মায়ের চড় যেন একসাথে সহ্য হলো না আরশী। ছিটকে পড়ে গেল সে ফ্লোরে! আর তারপরই শুরু হয় পিতার গালাগালি। তার মা ও রহায় পায় নি সেদিনের গালিগুলো থেকে! সন্তানের দোষ হলে মাতাদের কিছু কটুক্তি হজম করে নিতে হয়!আর তাই তার মা ও সেদিন সহ্য করে নিয়েছিল স্বামীর দেওয়া প্রতিটি অপবাদ!

আরশী ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে ছিল সেদিন তার পিতার পানে! কারণ ভিডিওতে মোটেও বোঝা যাচ্ছিল না তাকে। আর তাছাড়া এতো দ্রুত পিতার কানে কথা পৌঁছালো কিভাবে এ ও যে অবাক করা বিষয়! কিন্তু একটু পর নিজের চাচাতো ভাইয়ের খোঁচামূলক কথাগুলো শুনেই এই বিষয়টিও পরিষ্কার হয়ে উঠে আরশীর কাছে।
সেদিনের তার বলা ফিসফিসানো স্বরের একটি কথা খুব করে কানে বাজে আরশীর
” বলেছিলাম আমার সাথে প্রেম কর শুনলি না। এবার হজম কর!”

তার ফোনটি ব্যাগ থেকে নিয়ে, ফেইসবুকে ঢোকার অনেক প্রয়াস করেছিল সেদিন তার চাচাতো ভাই পিয়াস। কিন্তু রাস্তাতেই প্রিয়াকে কল করে নিজের পাসওয়ার্ড টি দিয়ে দিয়েছিল আরশী! খুব অনুনয় করেছিল যাতে ডিএক্টিভেইট করে দেয় আইডিটি! মনে মনে সেদিন প্রিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেও আজ বড্ড জানতে ইচ্ছে হয় তার কি বলেছিল সেদিন প্রিয়া ইরশাদকে! আর কেনইবা বলেছিল!

তার পরপরই ঢাকায় ফুফির বাসায় চলে যায় আরশী। আর ওখানেই বাকি সময়টা কাটায় সে। দিন প্রতিদিন কথায় কথায় শুনতে হয় তার পিতার তাচ্ছিল্য ভরা বকাগুলো। সেদিন সবচেয়ে বেশী অভিমান আরশীর কেবল ইরশাদের ওপরই হয়েছিল! মনে মনে এই বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধও হয়েছিল সে,
“নিজে থেকে কখনো যাব না ইরশাদের সাথে কথা বলতে। আর না ইরশাদের সাথে যোগাযোগের কোন চেষ্টা করবো! ”

তার কিশোরী মনে যেন সেইসময় কেবল একটি ধারনায় বদ্ধমূল হয়েছিল,
“ইরশাদ মারামারি না করলে আজ কিছুই হতো না৷ ছেলেটি গুন্ডা। আর কোন গুন্ডার সাথে কোন সম্পর্কে জড়াবোনা আমি!”
আর তার এই ধারণার জন্যই সে সেদিন পরীক্ষার হলের বাইরে ইরশাদকে দেখে একলাফে গাড়িতে চড়ে হাওয়া হয়ে গিয়েছিল! ছেলেটির সামনেও যে আর পড়তে চায়তো না সে!

সকালের মিষ্টি আলো ফুটেছে আকাশে। কমলা রঙের রশ্মি ছড়িয়ে পড়েছে ধরনীতে। কাক ডাকা ভোর এখন,কিন্তু সবাই জেগে উঠেছে আজ! তাদের আজ সকাল সকালই আগ্রা যাওয়ার কথা। ওরা আগ্রার তাজমহল, দিল্লীর ফোর্ট এইসব ঘুরে রাত দশটায় জাম্বুর ট্রেন ধরার কথা আজ৷ কিন্তু কারো মাঝেই যেন পিকনিকের উত্তেজনা কাজ করছে না। বন্যার চোখের নিচে অশ্রুর লহর শুঁকিয়ে লম্বা লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। ইরশাদ আর ইরহাম এক বিছানা একজন অন্যজনের গায়ে হেলান দিয়ে মনমরা হয়ে বসে আছে! সাগরের মন ভালো হলে হয়তো সে মজা করেই বলে উঠতো,
” সতিনে সতিনে নাইকো চুলাচুলি,
ডিজিটাল দুনিয়া আছি মোরা
তাই গলায় ধইরা কাঁদি!”
কিন্তু সে এইসবের কিছুই বলল না বরং চুপচাপ একপাশে বসে রইলো।তিশাও তিতাসের বুকে গুটিশুটি মেরে বসে আছে। পিকনিকের আনন্দটা যেন ফিকে লাগছে সবার।
সবাইকে সবকিছু রাতেই জানিয়েছে ইরশাদ। আর তার পর থেকেই যেন কথা হারিয়ে ফেলেছে সবাই!

আচমকা সেখানে প্রবেশ করলো আরশী। কালো রঙের একটি কামিজ পড়েছে সে। সাথে সাদা চুড়িদার।চুলগুলো পানিটেইল করে বেঁধেছে। চোখমুখ কেমন শুঁকিয়ে নিষ্প্রাণ লাগছে তাকে। বন্যা তাকে দেখতেই ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাকে। আরশীও বোনের উষ্ণ স্পর্শে হালকা নাক টেনে নিজেকে স্বাভাবিক করলো। তারপর মুচকি হেঁসে বলে উঠলো,
—- আমি ঠিক আছি।
তারপর মৃদু শ্বাস ফেলে বলল,
” সরি, এতোদিন তোমাকে বলি নি আমি কিছুই। পারলে ক্ষমা করো আমাকে।”

বন্যা অশ্রুসিক্ত নয়নে আরশীকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।তারপর মাথার কাছে আদর দিয়ে বলল,
—- ছোট বোন আমার তুই। তোর জন্য সাত খুনও মাফ।
প্রশান্তি ভরা হাসি মুখে ঝুলিয়ে আরশী বন্যাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। তারপর শব্দবিহীন কাঁদতে লাগলো।আর চারপাশের মানুষ একনজরে তাকিয়ে দেখতে লাগলো দুবোনের এই ভালোবাসাপূর্ণ প্রানবন্ত মুহুর্ত!

একটুপর নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে উঠলো আরশী।
—– তাজমহল দেখতে যাওয়ার কথা ছিল আমাদের আজ। রেডি হও নি কেন কেউ?
সবাই চমকে তাকালো আরশীর দিকে! আর ইরশাদ তাকালো গভীর দৃষ্টিতে! মেয়েটি যেন বরাবরই বিষ্মিত করে তাকে! কিন্তু আরশী একদমই তাকালো না সেদিকে।আর না তাকিয়েই বলল,
—- সমস্যাটা আমাদের তিনজনের। সুতরাং আমি মনে করি তা আমাদের মাঝে থাকা মঙ্গল। আর আমাদের জন্য বাকি চারজনের ট্রিপে সমস্যা হোক আমি চায় না।

সাগর আর তামিম আপত্তিসূচক ভাবে বলল,
—- আমরা সবাই বন্ধু।আর বন্ধুদের জন্য একটা ট্রিপ বাতিল হলেও সমস্যা না।
—- ঠিক তেমনি বন্ধুদের জন্য নিজের প্রবলেম থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সময় দেওয়াটাও কিন্তু প্রকৃত বন্ধুর দ্বায়িত্ব।
মুচকি হেঁসে তার কথা সম্মতি জানালো বাকি দুজন। আর তারপর নিজেদের মতো রেডি হয়ে নিল সবাই।

একটু পরই হোটেলের নিচে নেমে এলো সবাই। গেইটে একটা মাইক্রোবাস অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।আজ পুরোদিনের জন্য ভাড়া করেছে এটি তারা। বারোশো রুপি ভাড়া পুরো দিনের। পুরো দিন ঘুরবে এটি তাদের নিয়ে। যমুনা এক্সপ্রেস হাইওয়ে বেয়ে চলছে তাদের মাইক্রোটি। ২২০কিঃমি পথ শেষ করে আগ্রা পৌছে যাবে তারা। চার লেনের হাইওয়েটি খুবই সুন্দর আর স্মুথ। আর তাদের আগ্রা পৌঁছাতে কেবল আড়াই ঘন্টা লাগবে।
তিশা তামিম একসাথে বসেছে।তাদের পেছনের সিটে বসেছে বন্যা আর আরশী।আর একদম পেছনের সিটে ইরশাদ মাঝখানে আর দুপাশে সাগর আর ইরহাম।

গোমট ধরে থাকা পরিবেশটা বড্ড অসহ্য লাগছে বন্যার কাছে। এইভাবে ট্রিপ এনজয় করতে মোটেও চায় না সে। কিছু বিষয় ভালোভাবে ক্লিন হয়ে যাওয়াটাও যুক্তিযোগ্য মনে করলো সে। আর তাই বাইরের দিকে তাকিয়েই বলে উঠলো বন্যা,
—- তো এখন তোদের মতামত কি? আই মিন ফিউচার। কি করতে চাস?
চুপ করে মাথা নুইয়ে রইলো আরশী৷ তার মনের জমে থাকা কথাগুলো যে দলা পাকিয়ে আছে তার কন্ঠনালীতে।আর তাছাড়া কিছু বিষয়ে মারাত্মক দ্বন্দ্বে আছে সে! আর তাছাড়া ইরশাদের প্রতি বন্যার ভালোবাসাটাও অনুভব করে সে।আর নিজের বোনের সাথে অন্যায় ভাবতেও যেন আড়ষ্ট হয়ে যায় তার মন!

হঠাৎ নিরবতা ভেঙে “খ্যাক” শব্দে কন্ঠস্বর ঝেড়ে বলে উঠে ইরহাম,
—- অবশ্যই ইরশাদের সাথে বিয়ে হবে আরশীর। তাছাড়া ওদের আগেও তো বিয়ে হয়েছে।
অনেকে সায় দিল এই বিষয়ে কিন্তু তাদের মাঝখান থেকে আপত্তিসূচক ভাবেই বলে উঠলো ইরশাদ,
—- আমাদের বিয়েটা নরমাল বিয়ে ছিল না। না এটিকে সহি বিয়ে হিসেবে মানা যায় ধর্ম বা আইনের চোখে। যদিও আমরা কবুল বলেছি, স্বাক্ষর করেছি আর সাক্ষী ও ছিল। কিন্তু সাক্ষীর মতে আর কানুন মতেও আমার বিয়েটা হয়েছিল ছন্দ রহমান নামের একটি মেয়ের সাথে যার বাবা ছিল মোহাম্মদ রহমান। এখন যেখানে নামের একটি অক্ষর চেঞ্জ হলে সেইটা নিয়ে সমস্যা হয় সেখানে পুরো নাম চেঞ্জ। ভাবতে পারো?

সবাই ঘোর বিপত্তি জানালো এই বিষয়ের। শেষে সবার মাঝখান থেকে মুচকি হেঁসে বলে উঠলো তিশা ,
—- তাহলে তো তোমাদের দুজনের চান্সই ফিফটি ফিফটি। এখন সব আরশীরানীর ইচ্ছে। কি বলো আরশী?
ইরশাদ আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে কিছু বলার আগেই ঝাঁঝালো স্বরে বলে উঠলো আরশী,
——- ওদের কে কেন করবো? করলে তৃতীয় কাউকেই করবো। সো আমার বিয়ের টপিকটা এখন বাদ দাও।

সবাই বিস্ফোরিত চোখে তাকালো আরশীর দিকে।আর ইরশাদ তাকালো রেগে! রাগে হাত মুঠো হয়ে এলো তার। কিন্তু আরশী ডোন্টকেয়ার ভাব নিয়ে জানালার বাইরের প্রকৃতি দেখায় মন দিল। আপাতত সবকিছু অসহ্য ঠেকছে তার।আর ইরশাদের বলা কথাটি যেন তার মনখারাপের প্রধান কারণ।

রাস্তার দুপাশটা মরুভূমির মতো। বিল্ডিং এর সংখ্যা এদিকে নিতান্তই কম। মাঝে মাঝে কয়েকটি একতলা ভবন চোখে পড়ে, তা ও বহুদূরে। ঘড়িতে সময় নয়টা। খিদেতে পেট চু চু করছে সবার। আর তাই ড্রাইভারকে বলে একটি জায়গায় গাড়ি দাড় করালো তারা। এখানে কয়েকটি ধাবা রয়েছে। খুব বেশী জমকালো না হলেও উদরপূর্তির জন্য জায়গাগুলো নেহাত মন্দ নয়। এখানেই ডালপুরি আর চা খেল তারা। মিষ্টি খাবার হিসেবে চিকন মুচমুচে জিলাপিই নিয়ে নিলো কয়েকপ্লেট।গরম গরম হলদে রঙের জিলাপির স্বাদ অতুলনীয় যেন দেখার সাথে সাথেই জিভে জল এনে দেয়।

ইরশাদের রাগটা এখনো কমেনি, সে আরশীকে একা পাওয়ার আশায় তার আশেপাশে চরকির মতো পাক দিতে লাগলো। আর আরশী, সে নির্বিঘ্নেই নিজের খাবারে মনোনিবেশ করলো। খাওয়া শেষ করে আবার গাড়িতে চেপে বসলো তারা। আর তারপরই রওনা দিল গাড়ি আগ্রার উদ্দেশ্যে।

তাজমহলের কিছুটা দূরে একটি নির্দিষ্ট স্হানে গাড়ি পার্ক করলো ড্রাইভার। তিনি তাদের বলে দিল তিনি এখানেই থাকবেন আর সাথে কারনটাও উল্লেখ করে দিল। এই জায়গার পর অটো নিয়েই তাজমহল যেতে হবে তাদের। বড় গাড়ি প্রবেশের কোন নিয়ম নেই এখানে। তারা কাছে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা অটোতে উঠে পড়লো।দুইটি অটোর দরকার হলো তাদের। অটোতে একজনের ভাড়া দশ রুপি।

তাজমহলের কাছে অটো থেকে নেমে টিকিট কাউন্টারের দিকে হাটা দিল সবাই। যেহেতু অনেক বেশী ভিড় তাই ইরশাদ আর ইরহাম গেল টিকেট কাটতে।আর মেয়েদেরকে মাঝখানে নিয়ে সাগর আর তামিম দাঁড়িয়ে রইল একটি মুটোমুটি খালি জায়গায়।
টিকেট কাটতে এসে কিছু নিয়ম খুব অবাক করলো তাদের। এখানে টিকেট কাটার কিছু নিয়ম আছে। যারা ইন্ডিয়ান তারা রেশন কার্ড দেখিয়ে টিকেট কাটছে আর তাদের টিকেটের মূল্য কেবল পঞ্চাশ রুপি। আর বাকিদের নিজেদের পাসপোর্ট দেখাতে হচ্ছে। সার্কভূক্ত দেশ গুলোর জন্য টিকেট মূল্য ৫৪০ রুপি। আর অন্যন্য দের জন্য এগারোশো রুপি। ভিড় ঠেলে সাতটি টিকেট কেটে আবার বন্ধুদের কাছে ফিরে এলো ইরশাদ আর ইরহাম ।

তাজমহলে ঢোকার আগেই টিকেট চেক করতে দেখা গেল একটি লোককে।তিনি টিকেট চেক করে একটি পানির বোতল আর সাদা একটি প্যাকেট দিচ্ছেন সবাইকে । প্যাকেট টির ব্যবহার জিঙ্গেস করতেই তিনি জানালেন, তাজমহলে জুতা নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। আর তাই বাধ্যতামূলক জুতা খুলতে হবে অন্যথায় জুতার বাইরে এইটা পরিধান করতে হবে!

সাগর বিষ্মিত হয়ে প্যাকেটটি জুতোয় পড়তে পড়তে বলে উঠলো ,
—- আমাদের দেশের প্রাচীন নিদর্শনগুলো দর্শনের ক্ষেত্রে এমন নিয়ম থাকলে কতো ভালো হতো তাই না?
—– হু। কিছুই হতো না মানুষ দেখতি এগুলো ব্যাগে ভরে নিয়ে আসতো বাসায় জিনিস রাখার জন্য।
মুখ বাঁকিয়ে বলল তামিম। ইরহাম ব্রু কুঁচকে তাকালো তার দিকে।তারপর পকেটে হাত পুরে প্রশ্ন ছুড়লো,
—- কেন? এখানে সবাই মানছে তো আমাদের ওখানে মানবে না কেন?
—- কেন তা জানি না। কিন্তু দেখিস না যেখানে প্রস্রাব করতে মানা করে সেখানেই করে আসে মানুষ। আসলে মানুষকে যা মানা করা হয় তা করার প্রবণতাটা যেন খুব বেশী আমাদের দেশে।

তামিমের কথায় সবাই সম্মতিসূচক মাথা ঝাকালো তারপর পা বাড়ালো সামনে। চ্যাকিং স্কেনিং এর গেইট থেকে তাজমহলের মেইন গেইট পর্যন্ত রাস্তাটা খানিকটা দীর্ঘ। তবে গল্প করতে করতে সবাই পৌঁছে গেল তাজমহলের সামনে।

বিষ্মিত পুলকিত দৃষ্টিতে সবাই তাকিয়ে আছে তাজমহলের পানে। এ যেন সৌন্দর্যের এক অনাবিল দৃষ্টান্ত!আর আঁখি যেন আজ সেই সুধা পানে মত্ত! আরশী চোখে মুগ্ধতা ঢেলে তাকিয়ে আছে সেদিকে।আর সেদিকে তাকিয়েই বিরবিরিয়ে বলে উঠলো সে কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের তাজমহল নিয়ে লিখা সেই লাইনগুলো,
“এক বিন্দু নয়নের জল, কালের কপোল তলে শুভ্র সমুজ্জ্বল, এ তাজমহল।”

ইরশাদ মুচকি হেঁসে আরশীর দিকে তাকালো। আরশীর চোখের এই মুগ্ধতা যেন আবেশিত করে তুলল তাকে।সে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তার পানে!আর আরশীর মুখপানে তাকিয়ে কন্ঠে আবেগ ঢেলে বলে চলল ইরশাদ,
তাজমহলের পাথর দেখেছ,
দেখেছ কী তার প্রাণ?
অন্তরে তার মমতাজ নারী, বাহিরেতে শাজাহান।”

আরশী চট করে ইরশাদের দিকে তাকিয়ে বিস্ময় কন্ঠে বলল,
—- তুমি বানালে এখন!
—- আরে নাহ। এটা জাতীয় কবির লিখা।
আরশী আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে মুচকি হাঁসলো।তারপর আবার দৃষ্টি রাখলো তাজমহলের দিকে! প্রেমের এই সমাধির দিকে তাকিয়ে যেন শ্বাসরুদ্ধের আভাস হয় ব্যাক্তি মনের। এই সৌন্দর্য বর্ননাতীত। এ যে হাজার ছবির চেয়েও বেশী সুন্দর। এর আছে বৈচিত্রময় এক তাজ! এই তাজের শ্বেত মর্মর পাথরে চাঁদের স্নিগ্ধ আলো ও সূর্যের কিরণ খেলা করে। তাই এর রূপ একেক সময় একেক রকম মনে হয়।

চলবে

( গল্পটা কি বোরিং লাগছে। প্লিজ আপনাদের মতামত জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here