#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত
#সাদিয়া_নওরিন
পর্ব—-৮
—– এতো দূরে নিয়ে এলি কেন আমায়! বাসায় জানলে কি হবে!
—– দশটা ছেলে আর একশো টা মেয়ে হবে!
—- কিহ্
চোখ বড় বড় করে প্রিয়ার চেহারার দিকে তাকালো আরশী! চোখে মুখে অবিশ্বাস্যতা ভাসছে তার!তার রিয়েকশন দেখে মনে হচ্ছে, তাকে এখনই বিয়ে দিয়ে এতো সন্তানের জননী হতে বলছে প্রিয়া!
মায়া খুক করে হেঁসে দিল। তারপর আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
—– সানমারের পাস্তাটা অনেক বেশী ইয়ামী। আমার তো দারুন লাগে। তাই তো তোদের নিয়ে এলাম এখানে। চল পাঁচ তলায় যায়।
—– আরো আমি ভাবলাম পিজ্জা খাব। খিপ্টানী। মার্কেটে নিয়ে এলি, কিছু কিনে তো দিচ্ছিস না। আবার বলে শুধু পাস্তা খাওয়াবে!
ভেঙ্চি কেটে বলল প্রিয়া।
অন্যদিকে, অবাক দৃষ্টিতে তাদের পানে তাকিয়ে আছে আরশী। মায়া ব্রু কুঁচকে তার দিকে তাকাতেই মিনমিনিয়ে বলে উঠলো সে
—– আরো আমি ভাবলাম ফুচকা খাব।
—– ফুচকা তো স্কুলের সামনেও পাওয়া যায়। তোকে এখানে আনলাম টা কেন?
ডান ব্রু টি আলতো উঁচিয়ে প্রশ্ন ছুড়লো প্রিয়া। কথাটি শুনতেই আরশী লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলল।
এবার বাকি দুজন খিলখিলিয়ে হেঁসে দিল !তারা জানতো আরশী এখন এইটাই বলবে। কেবল আরশীকে খোঁচানোর জন্যই এমন রসিকতা করলো তারা! খোঁচা খাওয়ার পর আরশীর লাল হয়ে যাওয়া চেহারাটি বড্ড মায়াবী লাগে দুজনের কাছে, যা কখনই বলে নি তারা আরশীকে।
তিন বান্ধবীর খুনসুটি, এ যেন এক অনবদ্য চিত্র। যার মাঝে স্বচ্চতা অতিমাত্রায় দৃশ্যমান ।
আরো কিছু গল্প করতে করতে লিফটের দিকে পা বাড়ালো তারা। ঠিক তখনি, আচমকা মায়ার হাতটি চেপে ধরলো আরশী! মায়া অবাক হয়ে তাকালো তার দিকে!তারপর নরম স্বরে বলল,
—- তোর কি লিফটে ভয় হয়?
—– সিরিয়াসলি, তোর এইটাতেও ভয়!
চোখ বড় বড় করে বলল প্রিয়া। আরশী অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে। মনে মনে ভাবলো সে, ” আগে কারণটাতো শুন মেরি মা!”
মাঝে মাঝে আনমনে ভাবে আরশী,
‘” এই দুই স্বরে-অ ভদ্র তার জিবনে এতো স্হান দখল করে আছে কিভাবে!তাদের খোঁচানো গুলোও যে সে প্রচন্ড ভালোবাসে”
মনে মনে এইসব ভেবে আলতো মুচকি হেসে, কোমল স্বরে চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার আবদারটি জানালো তাদের। মায়া সাথে সাথে মাথা ঝাঁকালো। আর এরপর পরই তারা গল্প করতে করতে উঠে গেল সিঁড়িতে।
চার তলায় সব ফোনের দোকান। আর নিউ ফোন দেখলেই জায়গাতেই ফ্রিজ হয়ে যায় প্রিয়া! এইসমস্যা তার আজকের নয় বরং আজিবনেরই!
আরশী মায়ার সাথে গল্পে ব্যাস্ত, কিছু বিষয় নিয়ে হেঁসে কুটিকুটি হচ্ছে তারা।আর প্রিয়া, সে চোখ ঘুরিয়ে কেবল নতুন ফোনের সৌন্দর্য দেখায়ই মগ্ন। সিঁড়ির কাছে পা বাড়িয়ে আনমনে কিছু ভেবে পেছন ফিরে তাকালো আরশী। প্রিয়া একটি দোকানে ফোনের কবার নিয়ে দরকষাকষিতে নেমেছে। আরশী প্রিয়াকে ডাকতে উল্টো পথে পা বাড়াতেই তার হাতটি চেপে ধরলো মায়া। আর তারপরই টানতে টানতে উপরে নিয়ে গেল সে তাকে। তার এক কথা, ” একা আসুক”
নাক ফুলিয়ে হাতে থাকা কবারটি ব্যাগে ডুকিয়ে নিল প্রিয়া।তারপর এঝটকায় পেছনে ঘুরতে গিয়ে কারো সাথে ধাক্কা লাগলো তার৷ যদিও খুব আস্তে লেগেছে তার, তবুও তার মেজাজ সপ্তমে গিয়ে ঠেকলো!রেগে নাক ফুলিয়ে, কঠিন কিছু বলতে মুখ খুলেতেই স্তব্ধ হয়ে গেল প্রিয়া! মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সে সামনে থাকা ব্যাক্তিটির দিকে!
একটি ছেলে, লম্বায় ছয় ফুট ছুঁই ছুঁই।হয়তো পাঁচ ফুট এগারো। লেমন আর হুয়াইটের কম্বিনেশন করা একটি পান্জাবী পরিহিত সে।পাঞ্জাবির হাতা আবার উল্টো ভাঁজ করে কনুই অবধি উঠানো।হাতে ব্লাক কালারের একটি ওয়াচ যা ফর্সা হাতকে আরো বেশী ফর্সা দৃশ্যমান করাচ্ছে! পাঞ্জাবির বুকের কাছের দুটি বোতাম খোলা।আর এতে কাপড়টা ভাঁজ হয়ে ফাঁকে ফর্সা বুকটিও দেখা যাচ্ছে! কানদুটো একদম পার্ফেক্ট! প্রিয়ার বুকের ভেতরটা মুহূর্তেই ধুক করে মোচড় দিয়ে উঠলো! এমন অনুভূতি হয়তো এর আগে কখনোই হয় নি ওর। না চায়তেও বেহায়ার মতো ছেলেটির দিকে চোখ চলে যাচ্ছে তার! সে অপলকভাবে ঘোর লাগানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ছেলেটির দিকে!
ছেলেটি হালকা উবু হয়ে হাত থেকে পড়ে যাওয়া প্যাকেটটি তুলে নিয়ে, হাত উঁচিয়ে প্যাকেটের ভেতরের জিনিসটি দেখতে দেখতে মাফ চেয়ে নিল সে! তারপর আবার লিফটের দিকে হাঁটা ধরলো!
প্রিয়া যেন ঐ জায়গায় জমে গেল! বুকের ভেতরটা কঠিনভাবে মোচড় দিচ্ছে তার হুট করে। আচমকা মায়া টানতে টানতে নিয়ে গেল তাকে আর সে তাকিয়ে রইলো সেই লিফটের দিকে!
আলতো ব্রু কুঁচকে হাতে থাকা প্যাকেট টির দিকে তাকালো ইরশাদ!
” ইশ ফোনটা কি ভাঙ্গলো”! আনমনে ভাবলো সে। মাঝে মাঝে নিজের ওপর পছন্ড বিরক্তি লাগে ইরশাদের। আজকে যেন তেমন বিরক্ত হওয়ার দিন তার। হাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকালো ইরশাদ। কেবল সাড়ে তিনটা বাজে। আনমনে ভাবলো সে,
” ফিরে যাওয়ার আরো অনেক সময় আছে, সাগরের সাথে দেখা করে আসি এখন””
প্যাকেটির হাত দিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে,সানমারের পাশের গলি দিয়ে ডুকে পড়লো সে। সাগরের বাসাটা এখানেই।
মায়া সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রিয়ার দিকে। প্রিয়া আঁড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে, আলতো তোতলে বলল,
—- কি সমস্যা তোর?
—- ঐখানে কি করছিলি?
—- আরে টুকটাক শপিং। বাদ দে না। আগে খাবার অর্ডার কর।নাকি না খাইয়েই মারবি আজ আমাদের?
মায়া আলতো চোখ টিপ দিয়ে ইশারায় সামনে তাকাতে বলল প্রিয়াকে। যার শুধু এ্কটায় অর্থ খাবার চলে এসেছে। এক প্লেট পাস্তা, এক প্লেট ফুচকা আর একটা মাঝারি সাইজের পিজ্জা।
প্রিয়া আলতোভাবে জড়িয়ে ধরলো মায়াকে। চোখে মুখে খুশির আবেশ এখন তার! আর তাদের দিকে তাকিয়ে আরশী প্রশান্তির হাসি হাসলো। মনটা ভালো লাগছে আজ তার । সবসময় এদের এক হওয়ার দোয়ায় করে সে, তার যেন একটাই চাওয়া,
“তাদের এই বন্ধন সবসময় যেন অটুট থাকে ”
মায়া আলতো মুচকি হেসে সবার দিকে তাকালো। তারপর বলল,
—- ওকে লেটস সেলিব্রেশন। শুরু কর
তারপর সবাই খাওয়াতেই মন দিল।
ইরশাদ সাগরের বাসা থেকে হতাশ হয়ে বেরিয়ে এলো। সাগরটা নেই জানলে হয়তো গাড়িটাকে বিদায় করতো না সে। যেতে দেরি হবে ভেবেই ড্রাইভারটাকে বিদায় দিয়েছিল ইরশাদ। পকেট থেকে মানিব্যাগটি বের করে মাথায় হাত পড়লো ইরশাদের! মাত্র দশটাকা আছে মানিব্যাগে! বাকি সব কার্ড। নাক ফুলিয়ে নিজেকে আরো কয়েকবার গাধা ডাকলো সে। হঠাৎ তার মনে হলো আজ বাসে চড়বে ! অন্যরকম এক্সপেরিমেন্ট করার আসায় সামনে থাকা বাসটাই উঠে বসলো সে!
আরশী অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে। যার চোখ বেয়ে আপাতত আগুনের ফুলকি বেরিয়ে আসছে! দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে আছে সে প্রিয়ার দিকে! আরশী আমতাআমতা করে বলল,
—- আরে প্রিয়া কি জানতো নাকি বাসে জায়গা নেই?
—- তো অন্যবাসে উঠতাম আমরা। এটাই উঠতে হবে এমন হাদিস কি হয়েছে? এই যে ও তুই কখনো বাসে না চড়েও তোর এখন দাঁড়িয়ে যেতে হচ্ছে। এইটা কি খুব ভালো? আমার তো অভ্যাস আছে দাঁড়ানোর কিন্তু তুই!
—- তো কি হয়েছে? আমি কি রাজার মেয়ে নাকি? স্কুল কাছে, তাই বাসে উঠতে হয় না আমার।আর বেড়াতে গেলে সিএনজি তে যায় এইটাই। তবে সবকিছুতে চড়ার অভ্যাসটাও তো থাকা দরকার।তাছাড়া
হাত উচিয়ে তাকে থামিয়ে দিল মায়া! তারপর কঠিন স্বরে বলল,
—- পরানে যা মন চায় তা কর গা৷ আমাকে বলবি না আর এইসব।
আরশী নানা কিছু বলে মায়াকে হাসানোর চেষ্টা করছে।আর প্রিয়া অপরাধী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে ।কিন্তু সে যে নিরুপায়! সে নিজেও একদমই দাড়িয়ে যেতে পারে না।আর সিট তো একটাই ছিল।
কালো রঙ এর বোরকার সাথে হিজাব পড়েছে আরশী। তবে গাড়ির ঝাঁকুনিতে বার বার পা ঢলে উঠছে তার। পড়ে যেতে গিয়ে, পাশের চেয়ারটি শক্ত করে খামচে ধরে রেখেছে সে। হঠাৎ গায়ে কারো স্পর্শে, গা গুলিয়ে উঠলো তার! সে আঁড়চোখে পাশে তাকালো।আর তাকিয়ে যা দেখলো, এতে পছন্ড রকমের অবাক হলো সে! একদম বাবার বয়সী একজন লোক, বার বার ইচ্ছে করে ঢলে পড়ছে তার গায়ের ওপর! মুখে পৈশাচিক হাসি ঝুলছে লোকটির!
আরশী ভয়ে কুঁকড়ে মায়ার গায়ে সাথে মিশিয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু লোকটি তাও যেন তার পিছু ছাড়লো না, বরং আরো গা ঘেঁসে এলো তার কাছে! আরশী ভয়ে যেন একদম জমে যাচ্ছে! কন্ঠনালীও আঁটকে আসছে তার বারবার।
কিছুসময় পর, ফিসফিসিয়ে মায়ার কানে কানে কথাটি বলল সে। মায়া আড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে, ব্যাগ থেকে কয়েকটা কলম বের করে ঢাকনাগুলো খুলে নিল। তারপর তা আরশীর পেছনে হাত দিয়ে কলমটি খাড়া করে রাখলো! লোকটি মুখে হাসি ঝুলিয়ে, আবার ঢলে আরশীর ওপর পড়তে গিয়ে শিউরে উঠলো! একদম মেইন পয়েন্টে কলমের নিবটি এঁটে গিয়েছে তার! ব্যাথায় কোঁৎ করে উঠলো লোকটি, কিন্তু নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রেখে সরে এলো সে জায়গাটি ছেড়ে!
ইরশাদ ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে বিষয়টি দেখলো। আনমনে হাসি পেল তার! আনমনে ভাবলো,
“মেয়েটি চালাক!” অতঃপর একটু জোরে ডাক দিল সে ” এই যে আপু” !
আরশী কেঁপে উঠলো সেই স্বরে! তার মনে হলো এই স্বরটি খুব চেনা তার! আসলেই কি সেই স্বর! মনে মনে ভাবলো সে!তারপর চমকে পেছনে তাকালো সে।ভালোভাবে চেহারা দেখা যাচ্ছে না ছেলেটির। তবে ছেলেটির ফর্সা লোমশ হাতটির দেখা মিলল তার। ছেলেটি তার সিটে বসতে বলল তাকে! আরশী যেন কোন ঘোরে আছে এমনভাবে বসে পড়লো সিটটিতে!
বসা শেষে ছেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে, ধন্যবাদ দেওয়ার আগেই ছেলেটা হেঁটে সামনে চলে গেল! আরশী উঁকিঝুকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো ছেলেটিকে। কিন্তু ছেলেটার গালের খোঁচা দাড়ি আর সাদার ওপর ব্রাউন কালারের লোমশ হাত ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না সে!
মায়া কৃতজ্ঞতায় আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
—– ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার বান্ধবীকে সাহায্য করার জন্য
—- ইটস অলরাইট। আপনিও অনেক চালাক
মুচকি হাসলো মায়া। তারপর সাবলীল ভাবে বলল,
—- আমি মায়া, ক্লাস নাইনে পড়ছি
—- ইরশ, অনার্সে পরছি।
কিছুসময় চুপ থেকে, আলতো ব্রু কুঁচকে ইরশাদের দিকে তাকালো মায়া।তারপর জিজ্ঞেস করলো,
—- আপনি আজ প্রথম বাসে চড়ছেন?
মুখে লাজুক হাসি ফুটে উঠলো ইরশাদ। মুচকি হাসি টেনে এক ঠোঁটে অন্য ঠোঁট চেপে বলল সে,
—- কিভাবে বুঝলেন?
—- আপনি আমার বান্ধবীর চেয়ে বেশী কাপঁছেন তাই বললাম।
এবার দাতঁ বের করেই হেঁসে দিল ইরশাদ! তার চিকন চিকন দাঁতগুলোর দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকালো মায়া! আজ কেন যেন নিজের আঁকাবাঁকা দাঁতের জন্য বড্ড মন খারাপ হলো তার! আচমকা পরের স্টপে বাস থামতেই মুচকি হেঁসে নেমে গেল ইরশাদ! আর মায়া সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে ভাবলো,
—- দুনিয়ায় ভালো মানুষও আছে। আর পরোপকারী ও।
_________
বিকেলে নাস্তা খেতে বসে ভয়ংকর বিভ্রতকর অবস্থায় পড়লো আরশী। ফোনের ভাইব্রেশনে বারবার জানান দিয়ে যাচ্ছে তাকে কারো অস্হিরতার খবর। নিজের দুগালে কষিয়ে দুটো চড় দিতে মন চায়ছে এখন আরশীর। ফোনের ওপর এই অত্যাচার মূখ্য দোষী কেবল সে এই বিষয়টি খুব করে বুঝছে সে এখন!
সকালেই ইরশাদের মেসেজগুলো দেখেছিল সে।কিন্তু কোন রকমের রিপ্লাই দেয় নি মেসেজগুলোর, আরশী। সেইসময় কিছু কাজ ছিল তার। আর এরপরই কেটে যায় পুরোটা দিন। নিজের মতো ব্যাস্ত থেকে, এই পুরো দিনে একবারও ইরশাদকে রিপ্লাই দেওয়ার কথা মাথায় আসে নি তার! আর এখন মনে পড়তেই, ফেইসবুকে ডুকলো সে আর তখনই মা ডাক দিল তাকে।আর তাই টেবিলে এসেছে এখন আরশী।
পুরো রুম জুড়ে পাইচারী করছে ইরশাদ! এতোটা অস্হিতা হয়তো কখনোই অনুভব হয় নি তার। অদ্ভুতভাবে নিজেকে বকলো সে! নিজের এই অস্হিরতার জন্য নিজেকেই ছেছড়া বললো ইরশাদ! তারপর ফোনটি হাতে নিয়ে ভয়েস রেকর্ড পাঠালো,
” এই যে নাম না জানা আপু, আমার কি এমন দোষ হলো যে আপনি এইভাবে ইগনোর করছেন আমায়? আমার ফোন সত্যি ঝামেলা করছিল তাই নতুন ফোনও কিনে আনলাম আজ। কেবল কালকের টেনশনে।
আমি ইরশাদ মেহতাব, আপনাকে ওয়াদা করছি, আমার পক্ষ থেকে এমন ভূল একদমই হবে না আর। ভবিষ্যতে আমি সবসময় একশ পার্সেন্ট চার্জ করে রাখবো।আর চার্জ শেষ হওয়ার আগেই আপনাকে বলে দিব। আশা করি আপনি রাগ ভেঙ্গে আমার সাথে কথা বলবেন”!
মেসেজটি সেন্ড করতেই টনক নড়লো ইরশাদের। তাড়াতাড়ি ডিলেট করতে গিয়ে দেখলো মেসেজটি সিন হয়েছে! মুহুর্তেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো ইরশাদ। একহাতে নিজের চুল টেনে ধরে বিরবিরালো সে,
—- ইরশাদ্দা, আহাম্মক, বেকুবের সর্দার। মেয়ে এইটা তোরে রাস্তার বখাটে পোলা ভাববে দেখিস। ইতর।
অতিউত্তেজনায় হুট করে, হাতে থাকা ফোনটি জোরে আছাড় দিয়ে বসলো ইরশাদ! এবার মাথায় হাত দিয়ে ফ্লোরেই বসে পড়লো সে! কি হচ্ছে তার সাথে এইসব!
সে তাড়াতাড়ি ফোনটি বুকের সাথে মিশিয়েবলল,
” আমার নতুন আইফোনটা!
চলবে?
( গল্পটি সম্পর্কে আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য জানাবেন। এতে বুঝতে পারবো গল্পটি কতোটুকু মন ছুঁয়েছে আপনাদের)