প্রেমময় প্রহর পর্ব ১২+১৩

#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :১২

আরসাল এক পা এক পা করে সায়রার দিকে এগোচ্ছে আর সায়রা আরসাল থেকে এক পা এক পা করে পিছাচ্ছে ।এমন করতে করতে এক সময় সায়রা একদম দেয়ালের সাথে থেকে যায় ।বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে সায়রা আরসালের রাগি দৃষ্টি এখনো তার দিকে সায়রা মাথা নত করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ।
আরসাল সায়রার গালে হাত রেখে সেখানে স্লাইড করতে করতে রাগি শান্ত স্বরে বলে
-“না বলে কেন চলে আসছো বাড়ি থেকে ?
আজ সকাল পর্যন্ত তো সব ঠি ক ছিলো হঠাৎ কি এমন হলো যে বাড়ি থেকে চলে আসলে !”
সায়রা বাজা বাজা স্বরে বলে
-“আ…আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি চলে আসছি এতে আপনাকে কেন জবাবদিহিতা করবো !”
আরসাল দাতেঁ দাতঁ চেপে বলে
-“কারন তুমি আমার বিয়ে করা বউ তাই ।
কি হয়েছে আমি জানতে চেয়েছি ভালোয় ভালোয় বলো না হয় আমি অন্যকোথাও থেকে জানতে পারলে এর ফল খুব খারাপ হবে ।”
সায়রা চুপ করে থাকে তার চোখ টলটল করছে ।আরসাল আবার জোরে ধমক দিয়ে বলে
-“সায়রা সত্যি কি তা জানতে চেয়েছি ।”
এবার সায়রা নিজের চোখের জল ছেড়ে দেয় কান্না করতে লাগে ।সায়রা আরসালের বুকে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বলে
-“কেন থাকবো আমি ঐ বাড়িতে ?
সে যোগ্যতা কি আমার আছে আপনারা হাইসোসাইটির লোক আর আমি মিডেলক্লাস ফেমিলির সাধারন মেয়ে আপনাদের বাড়ির তো কাজের লোক হবার মত যোগ্যতা আমার নেই !
প্রত্যেকটা পদে পদে আমাকে অপমানীত হতে হয় আমি মিডল ক্লাস বলে কখনো আপনার মামী আবার কখনো আপনার প্রেমিকা নিহা অপমান করে ।
আচ্ছা আমি মিডেল ক্লাস বলে কি আমার কোন আত্নসম্মানবোধ নেই তাই বলে যা নয় তা আমার সম্পর্কে আমার ফেমিলি সম্পর্কে বলবে তারা ।
আমাকে রাস্তার মেয়ে বলবে ?আমি নাকি ছেলেদের নিজের প্রতি আকর্ষন করি এসব বলবে ?
আমার বাবা মা দেওয়া শিক্ষার প্রতি আঙ্গুল তুলবে তারা ।এ অধিকার আমি কাউকে দেইনি যে তারা এসব বলবে ।
আর আপনি ?
কি দোষ ছিলো আমার কি এমন অপরাদ করেছিলাম আমি যে যার শাস্তিতে আপনি আমার জীবন এভাবে নষ্ট করলেন ।
আপনার যদি ব্যবহারের জন্যই মেয়ে দরকার ছিলো তাহলে অন্য কোন আমাকে বিয়ে করতেন !
এভাবে আমার জীবনটা কেন নষ্ট করলেন ।
হ্যা আমি আপনাকে সেই ছোট থেকে ভালোবাসি অনেক ভালোবাসতাম এতটাই যে নিজেকে উজার করে দিতে ও আমি রাজি ছিলাম ।এতটাই ভালোবাসতাম যে আপনি একবার বললে দুনিয়া ত্যাগ করতাম ।কিন্তু ২ বছর আগে যেদিন নিহা আমার কলেজে এসে আমাকে বলে আপনার আর নিহার মাঝে সম্পর্ক আছে সেদিন আমি নিজের থেকে আপনাদের মাঝ থেকে সরে যাই আপনাকে ইগনোর করা শুরু করি কারন আমি চাইনি আমার জন্য আপনাদের সম্পর্কে কোন সমস্যা হোক ।আপনার থেকে দূরে দূরে থাকতে লাগি ।
নিহা আমাকে পুরো কলেজের সামনে থাপ্পর দিয়েছে যা নয় তা বলেছে সেদিনের মত আমি কোনদিনই অপমানীত হইনি ।লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করেছে !
আর আপনাকেও ঘৃনা করতে শুরু করি ।কিন্তু এত কিছুর পরও আপনি আমার জীবনে সেই ঠি কই আসলেন আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অমতে জোর করে বিয়ে করলেন ।
কেন এমন করলেন কেন এই ভাবে আমার জীবন নষ্ট করলেন ?
আমার থেকে এভাবে প্রতিশোধ নিলেন আমার জীবন নষ্ট করে !
হুম আমি জানি আমি আপনাদের বাড়ির বউ হবার যোগ্য না তাহলে কেন বিয়ে করেছেন যদি সবার সামনে বউ পরিচয় দিতে লজ্জা করে তাহলে এই বিয়ের মানে কি ছিলো ?
আমার থেকে নিহার আপনার প্রতি বেশি অধিকার আপনি তাকে বাড়িতে এনে রেখেছেন আমাকে সবসময় অপমান করে আপনার প্রতি আমার কোন অধিকারই নেই সে সব অধিকার ও নিয়ে নিয়েছে তাহলে আমার আপনার জীবনে থাকারই দরকার কি !
কেনই বা আমাকে বিয়ে করেছেন
মজা নিতে বিয়ে করেছেন ?
নেন তাহলে মজা নিয়ে আমাকে ছেড়ে দেন আমার জীবন থেকে চলে যান আমি আমার মত থাকি আপনি আপনার ভালোবাসা আপনার নিহাকে নিয়ে ভালো থাকেন !
আমাকে মুক্তি দেন প্লিজ
আমি পারছিনা আর এই যন্ত্রনা নিতে আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে ।

এসব বলে কান্না করতে করতে একসময় সায়রা নিচে বসে পড়ে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে হাত জোড় করে কান্না করতে করতে বলে
-“কাল রাতে ঐ ঘটনার পর থেকে আমার নিজেকে অপবিত্র মনে হয় ।সবার ঐ চাহনিতে নিজেকে অপরাধী মনে হয় ইচ্ছে করে নিজেকে শেষ করে দেই !
সত্যি আমি আর পারছিনা আমার এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি চাই ।”
আরসাল সায়রা পুরো কথা শুনে তার শরীরের রক্ত জিদ্দে কামড়াচ্ছে ।আরসাল সায়রার সামনে বসে তার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে নিজের কাছে এনে সায়রার চোখে চোখ রেখে রাগি কন্ঠে চিৎকার করে বলে
-“এসব কথা আমাকে আগে বলোনি কেন ?
কেন বলনি !”
বলেই সায়রার পাশে দেয়ালে জোরে ঘুষি মারে সায়রা ভয়ে ঘাবরিয়ে যায় ।তারপর আবার কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে বলে
-“আপনাকে কেন বলবো ?
আপনারা সবাই তো একই হাইসোসাইটির লোক আপনাদের কাছে আমার মত মিডেল ক্লাস মেয়ের কথার কোন দাম আছে ?
আদো কি আমি আপনার কিছু হই তাইতো বিয়ের ২ বছর হতে চলেছে কিন্তু আজ পর্যন্ত নিজের বউয়ের পরিচয় ঘরে তুলেননি ।
আর তুলবেন কেন আপনি তো আমাকে জাস্ট ব্যবহার করার জন্য লোকদেখানো বিয়ে করেছেন নিহাই তো আপনার কাছে সব।
আপ…!
আরসাল আর কিছু বলতে দেয়না সায়রার মুখ আঙ্গুল দিয়ে টিপে ধরে চোখগুলো ভয়ংকর লাল রাগে কাপঁছে ।সায়রা খুব ব্যথা লাগছে সে চোখ বন্ধ করে আছে মুখ লাল হয়ে গেছে ব্যথায় চোখের কোন বেয়ে পানি ঝোড়ছে ।
আরসাল আগের মতই ভয়ংকর রাগি বলতে লাগে
-“চুপ একদম চুপ !
আর একটা কথা বললে আই সোয়ার আমি কি করবো আমি জানিনা !”
কথা শেষ করতেই সায়রার হাত টানতে টানতে টেনে নিয়ে যেতে লাগে সায়রা পিছন থেকে চিৎকার করছে কান্না করছে সেদিকে খেয়াল নেই কোন জবাব না দিয়ে টেনে নিয়ে সামনের দিকে চলে যাচ্ছে ।

সাবিহা বেগম চিন্তায় রুমের মধ্যে এদিক থেকে ওদিক রাউন্ড দিচ্ছে ।তিনি বেশ চিন্তায় রয়েছে সকালে সায়রা বাড়ি এসে কারো সাথে কোন কথা না বলে নিজেকে ঘর বন্ধি করে রেখেছে কারা সাথে কোন কথা বলছেনা ।তার কিছুসময় পর আরসাল এসে রুমে ডুকেছে মনে হচ্ছে বেশ রেগে আছে ।এই দু বছরে আরসাল কোন দিন এভাবে এ বাড়িতে আসেনি আজ আরসালকে এত রেগে আসতে দেখে তিনি বেশ চিন্তায় পড়ে গেছে ।
মাহির আহমেদ বেডে বসে আছে স্ত্রীর এমন চিন্তা দেখে বলতে লাগে
-“আহা !
সাবিহা তুমি শুধু শুধু এত চিন্তা করে যাচ্ছ ।”
সাবিহা বেগম চিন্তীত হয়ে বলতে লাগে
-“আমার মেয়ের জীবনে কি চলছে তা নিয়ে কি আমি চিন্তা করবো না ?”
-“সবিহা তুমি একটু বেশিই ভাবছো !
আর যদি তাদের জাবনে কিছু হয়েও থাকে তাহলে এটা তাদের দুজনের ব্যক্তিগত বিষয় আমরা তাতে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে গেলে তা কি ভালো দেখাবে ?”
-“আমি যদি নিজের মেয়ের পাশে না থাকি তাহলে কে থাকবে !
আমি আগেই বলেছিলাম এত ‌অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে হবেনা কিন্তু তোমরা কেউ তো আমার কথা শুনলেনা এখন আমার মেয়েকে সয্য করতে হচ্ছে ।
আমি তো মা আমি তো নিজের মেয়েকে দেখলে বুঝি যে সে কেমন আছে তার মনে কি চলছে ।”
এসব বলেই হুহু করে সাবিহা বেগম কান্না করতে লাগে ।মাহির আহমেদ স্ত্রীর পাশে বসে তাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে বোঝানোর চেষ্টা করছে ।
মাহির আহমেদ স্ত্রীর চুলে হাত বুলিয়ে বলতে লাগে
-“সবিহা আমি মানুষ চিন্তে ভুল করিনা
আমি জানি আরসাল আমাদের সায়রাকে বেশ সামলিয়ে রাখবে যত্নে রাখবে ।
আমার মেয়েটাকে আগলিয়ে রাখবে !”
সাবিহা বেগম নাক টানতে টানতে বলে
-“তাই যেন হয় আমি চাই আমার মেয়ে যেন সবসময় ভালো থাকে সুখে থাকে !”
হঠাৎই দরজা নকের শব্দে সাবিহা বেগম স্বামী থেকে দূরে সরে বসে শাড়ির আচঁল দিয়ে চোখ মুখ মুছতে লাগে মাহির আহমেদও গলা ঝেরে বলে বলে
-“ভিতরে আসো !”
আরসাল দরজা ঠেলে ভিতরে চলে যায় ।মাহির আহমেদ আরসালকে দেখে বেশ চমকিয়ে যায় কারন সে বেশ রেগে পিছনেই সায়রা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে চুল দিয়ে তার মুখ ভালো করে দেখা যাচ্ছেনা ।
মাহির আহমেদ বলল
-“বাবা ভিতরে আসো !”
-“না আব্বু এখনই সায়রা কে নিয়ে বাসায় যেতে হবে ।
আব্বু আমার আমানত আমি নিয়ে যাচ্ছি এখন থেকে সায়রা ঐ বাসায়ই থাকবে !”
মাহির আহমেদ আমতা আমতা করে বলে
-“কিছু হয়েছে বাবা হঠাৎ এসবের কারন কি ।”
-“না আব্বু তেমন কিছু হয়নি এই কাজ আমার আরো আগে করার দরকার ছিলো তাহলে আজ এত কিছু হতো না ।
যাই হোক আব্বু আমি এটাই ইনফর্ম করতে আসছি যে আমি সায়রাকে একবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছি এখন থেকে সায়রা আমার কাছেই থাকবে !
আমি এখন আসি ”
কথা শেষ করেই আরসাল সায়রাকে নিয়ে সেখান থেকে প্রস্থান করে ।মাহির আহমেদকে আর কিছু বলার সুযোগ দেয় না ।মাহির আহমেদ আরসালের কথায় কাজে হা হয়ে রইলো ।আরসাল যেতেই সাথে সাথে মাহির আহমেদ আরসালের বাবাকে ফোন করে সবটা জানায় ।

সায়রা গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে সে আরসালের সাথে যাবে না তাই চুপ করে জেদ ধরে দাড়িয়ে আছে ।আরসাল মুখে বিরক্ত ভাব নিয়ে সায়রার দিকে তাকিয়ে বলে
-“সব সময় কি ঘাড় ত্যাড়ামি করতেই হবে ?”
সায়রা জিদ্দি গলায় বলে
-“আমি বলেছি তো আমি যাবো না !”
আরসাল কিছুসময় সায়রার দিকে তাকিয়ে নিজের অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে সায়রাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ির বসিয়ে সিট বেল্ট লাগিয়ে দেয় ।
তারপর দাতঁ চেপে রাগের সাথে বলে
-“তুমি চাওই যাতে আমি তোমার সাথে জবরদস্তি করি ।”
বলেই পাশের সিটে বসে ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালাতে থাকে সায়রার যেন ভয়ে প্রান যায় যায় অবস্থা ।সে বার বার আরসালকে আস্তে চালাতে বলছে কিন্তু আরসাল তার কোন কথাই কানে নিচ্ছেনা !

নিহা আর নিলুফা বেগম দাড়িয়ে কথা বলছে নিহার চেহারায় বেশ খুশির আমেজ দেখা যাচ্ছে কারন অবশেষে তার প্লান সফল হয়েছে সায়রা এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে তার জন্য বার বার নিলুফা বেগমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে ।
নিলুফা বেগমও নিহার সামনে সায়রাকে গালাগালি করে নিজের মনের বিষ মেটাচ্ছে ।
নিহা নিলুফা বেগমের হাত ধরে বলতে লাগে
-“ও মামী আমি আপনি যা করেছেন না সত্যি আপনি গ্রেড ।ঐ মিডেল ক্লাস মেয়েকে এই বাড়ি থেকে বের করেছেন আমার যা আনন্দ লাগছেনা !
আ…”
আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই থাপ্পারের শব্দে সব স্থব্দ হয়ে যায় নিহা টি -টেবিলের উপরে পড়ে ।থাপ্পরের শব্দ সবাই এদিকে তাকায় এত সময় সবাই যার যার কাজে ব্যস্থ ছিলো হঠাৎ এতো জোরে থাপ্পারের শব্দ আর নিহার টেবিলের উপর পরে যাওয়া সবাই এদিকে আসে ।
মুনতাহা বেগম এসে দেখে আরসাল ভয়ংকর রেগে আছে নিহা নিচে পড়া আর সায়রা আরসালের পিছনে দাড়ানো চোখ জোড়া ভিজা ।আরসাল কাজের লোকের দিকে তাকিয়ে সবাইকে ড্রইংরুমে নিয়ে আসতে বলে ২ মিনিটের মধ্যে ।কাজের লোকও তারাতারি করে সবাইকে নিয়ে আসে ।
মুনতাহা বেগম ছেলের কাছে এসে বলে
-“এসব কি হচ্ছে আরসাল তুমি এসব করছো কেন ?”
আরসাল নিহার কাছে যেয়ে টেনে তুলে আবার তার গালে আরেকটা থাপ্পার মারে তার পর রেগে বলতে লাগে
-“আমি তোকে নিজের বেস্টফ্রেন্ড মনে করেছি কিন্তু তুই তো কাল সাপ বের হয়েছিস !
তুই আগের থেকেই জানতিস আমি সায়রাকে ঠি র কতটা ভালোবাসি ওর জন্য আমি ঠি ক কতটা পাগল ।তুই সবটা জেনে কি করে আমার আর সায়রার মাঝে এসেছিস?
আমার সায়রার গায়েঁ হাত তোলার সাহস তোকে কে দিয়েছে !
তোর জন্য সায়রা আমার থেকে দূরে দূরে থাকে
তুই কেন সায়রাকে ভুল বুঝিয়েছিস ?
বল কেন ?”
নিহা আরসালের ধমকে কেপেঁ উঠে ভয়ে ভয়ে বলতে লাগে
-“আ…আমি তোকে ভালোবাসি !”
আরসাল রেগে দাতেঁ দাতঁ চেপে বলে
-“তুই ভালোবাসিস ?
তোর কখনো একজনের ভালোবাসায় হয় !
তোর মত নোংরা মেয়েকে ভালোবাসা তো দূর তাকাতেও ঘৃনা লাগে আমার শুধু দায়ে পরে বন্ধুত্ব রেখেছি ।
তোর সাহস হয় কি করে আমার বাড়িতে এসে আমার বউ কে কথা শুনানোর !”
নিহা হাত জোর করে বলতে লাগে
-“আরসাল আ’ম সরি আমাকে ক্ষমা করে দে !”
আরসাল সাযরার সামনে এনে বলে
-“ক্ষমা সায়রার কাছে চা !”
নিহা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বলতে লাগে
-“এই মিডেল ক্লাস মেয়ের কাছ থেকে আমি কোনদিন‌ই ক্ষমা চাইবোনা !”
আরসাল বলল
-“তাহলে এখন আমি যা করবো তার ফল তোর জন্য ভালো হবেনা ।
তা অবশ্যই বুঝছিস ।”
নিহা ভয়ে ডোক গিলে তারপর সায়রার কাছে যেয়ে রেগে বলতে লাগে
-“আ’ম সরি !”
আরসাল ধমকের স্বরে বলে
-“হাত জোর করে সুন্দর করে বল !”
নিহা হাত জোর করে সায়রার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে কারাতারি করে লজ্জায় বের হয়ে যায় ।
এদিকে নিলুফা বেগম বেশ ঘাবড়াচ্ছে সে আরসালের দিকে চুরির নজরে তাকাচ্ছে ।আরসাল নিলুফা বেগমের সামনে যেয়ে বলে
-“কি ভেবেছেন আমি কিছু জানবোনা ?
কাল শুধু আপনার জন্য আপনার ছেলে আমার থেকে খুন হওয়া থেকে বেচেঁ গেছে আমার সেই রাগ এখনো মজে নি আমি আপনার ছেলেকে হাতের কাছে পেলে খুন করবো ।আর আপনাকে বলছি যদি বিন্দু পরিমান লজ্জা বোধ থাকে তাহলে এবাড়ি তে আর আসবেন না ।না হয় আমি দাড়োয়ান দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করতে বাদ্ধ হবো !
আপনি বয়স্ক মানুষ সে দিকে খেয়াল করে আপনারে ছেড়ে দিলাম ।
সায়রা কে মিডেল ক্লাস বলার আর অপমান করার আগে নিজের দিকে একবার তাকাবেন আজ আপনি যা আছেন সব এই বাড়ির টাকা চুরি করেই হয়েছেন নেক্সট টাইম আপনাকে এই বাড়ির আসে পাশে দেখলে জেলখানায় ডুকাবো চুরি অভিযোগে !
এখন কি আপনি যাবেন নাকি দাড়োয়ান দিয়ে বের করবো ?”
নিলুফা বেগম এসব কথা শুনে মুনতাহা বেগমের দিকে তাকাতেই মুনতাহা বেগম বলে
-“তোমাকে আপন ভেবেছিলাম কিন্তু তুমি যা করেছো তোমার চেহারা ও দেখতে ইচ্ছে করছেনা বের হও আমার বাড়ি থেকে সাহস কি করে হলো আমার ছেলের বউ কে এসব বলার !”
মুনতাহা বেগমের কথা শুনে নিলুফা বেগম চলে যায়।
আরসাল সেখানে দাড়িয়ে সবাই কে উদ্দেশ্য করে বলে
-“সায়রা আমার স্ত্রী সায়রার দিকে যে আঙ্গুল তুলবে তার ফল ভালো হবেনা !
ও আগে যতটা পবিত্র ছিলো এখনো ততটা আছে ।
এ নিয়ে আমি আর কোন আনাগোনা শুনতে চাইনা !”
বলেই সায়রার হাত টান দিয়ে ধরে উপরে নিজের রুমে দিয়ে যেতে লাগে ।সায়রা শুধু মুগ্ধ হয়ে আরসালকে দেখছে ।নিজের প্রতি আজ তার রাগ হচ্ছে ঘৃনা হচ্ছে সে কি করে আরসালকে ভুল বুঝলো !

চলবে……❤️
#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :১৩

সায়রা একদম আরসালের সোজাসোজি মাথা নিচু করে বসে আছে আরসালের তীক্ষ্ন রাগী দৃষ্টি তার দিকে এভাবে প্রায় দু ঘন্টা ধরে বসে আছে ।সায়রা ছোট ছোট চোখ উচুঁ করে আরসালের দিকে তাকায় এখনো আগের মতই তার দৃষ্টি সায়রার দিকে ।
সায়রার আজ নিজের প্রতি খুব রাগ হচ্ছে নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছা করছে তার সে কি করে কোন কিছু যাচাই বাছাই না করে নিহার কথায় চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে নিলো ?
আরসালকে কত কথাই না সে শুনিয়েছে কত কিছু বলে গেছে ।সবসময় ঘৃনা করে গেছে নিজেদের সম্পর্কটাকে অবহেলা করে গেছে ।প্রত্যেক বার আরসালকে অপমান করে গেছে ।
আজ নিজের ভালবাসাকে তার কাছে ঠুনকো মনে হচ্ছে ।
জানে যা করেছে তা ক্ষমার যোগ্য না কিন্তু সে যে আরসালের এই নিরবতাটাও মেনে নিতে পারবেনা ।
সায়রা উড়নার কোনা হাতের আঙ্গুলে পেচাঁতে পেচাঁতে ভয়ে বলল
-“আ…আ…আসলে আ’ম সরি !
আ..মি সত্যিটা জ..জানতাম না ।এসব যে নিহার প্লান আমি তা সত্যিই জানতাম না ।
আমাকে ক্ষমা করে দিবেন প্লিজ !”
আরসালের চোখ লাল বর্ন ধরন করেছে চোখ গুলো জলে টলটল করছে মনে হচ্ছে তার মনে অনেক কষ্ট অভিমান জমে আছে ।এসব কিছুর মাঝেও তার ঠোঁটের কোনে রাগ জেদ মেশানো তাচ্ছিল্যের হাসি ।
আরসাল শীতল কন্ঠে বলে
-“সরি ? লাইক সিরিয়াসলি ?
এই সরিটাই কি সব কিছুর সমাধান !
পারবে চলে যাওয়া ২ টা বছর ফিরিয়ে আনতে এই সরি দিয়ে ।
একবার তুমি আমার কাছে অধিকার নিয়ে জিগাসা করতে কি সত্যি কি মিথ্যা তা জানতে চাইতে ।
আমাকে সবটা জানাতে পারতে কিন্তু তুমি তা কিছু করনি এটা তোমার কেমন ভালোবাসা ।
একবার তোমার ঘৃনার সাথেই আমাকে জিগাসা করতে !
আমার ভালোবাসা তোমার প্রতি সর্বদা একই রকম ছিলো আছে একই রকম থাকবে ।
কিন্তু এই ২ টা বছর তুমি আমাকে খুব হার্ড করেছো ।
দু টা বছর পাগল পাগল হয়ে শুধু তোমার ঘৃনার কারন খুজেঁ গেছি ।তোমার কাছে হাজার বার জানতে চেয়েছি হাজার উপায়ে কিন্তু তুমি সব সময় ইগনোর করে গেছ সব সময় উত্তরে অপমান করে গেছ !”
সায়রার চোখ গুলো টলটল করছে তার হালকা আওয়াজ
-“আমি সত্যি এসব অনুমান করতে পারিনি তার মধ্যে সবসময় সবার থেকে শুনে এসেছি আপনারা দুজন অনেক ক্লোজ ।”
সায়রা আমতা আমতা স্বরে বলল
-“তাই আমি ভেবেছি যে হলেও এমন কিছু হতে পারে ।”
আরসাল সায়রাকে কাছে টেনে এনে রেগে বলল
-“আমার ভালোবাসাটা কি কখনো তোমার চোখে পড়েনি ?
আমার এই চোখে কি তুমি তোমার জন্য নেশা দেখনি !”
সায়রা চোখ নিচু করে ধীর গলায় বলে
-“দেখেছি কিন্তু তা মৌহ ভেবে দূরে ঠেলে দিয়েছি ।”
আরসাল আর কথা বাড়ালো না রাগে কটকট করতে করে সেখান থেকে উঠে পড়ে ।
সায়রা আরসালের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে তার চোখ গুলো এত সময় টলটল করছিলো আরসাল যেতেই আর নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনা ছেড়ে দেয় টপটপ করে নোনা জলগুলো ঝোড়ছে ।
বার বার তার মনে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি আরসাল তার থেকে সত্যি অভিমান করে দূরে চলে গেল আর কি আসবেনা না তার কাছে ?
কিন্তু কিছু সময় পরই আরসাল সায়রার এই ধারনা পাল্টিয়ে দেয় ।হাতে খাবার প্লেট নিয়ে রুমে প্রবেশ করে সায়রা আরসালকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে তারাতারি করে নিজের চোখের মুছে ফেলে ।আরসাল সামনে বসে সায়রার সামনে খাবার ধরতেই সায়রা ঝটপট খেতে লাগে আজ কোন বিরোধিতা করে না ।আজ আরসালের হাতের খাবারটা যেন তার কাছে অমৃত মনে হচ্ছে ।আরসাল সায়রাকে খাওয়াচ্ছে আর সায়রা তার পুতুল চোখ দ্বারা তাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে ।আজ তার কাছে এই ভয়ংকর লোকটাকেই আবার ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে ।এই লোকটার প্রেমে বার বার পড়তে চায় !
আরসাল সায়রাকে খায়িয়ে রুমের চলে বাহিরে চলে যায় ।

সন্ধ্যার আগে বাহিরে মেঘলা আকাশ রিদ্ধি বারান্ধায় দাড়িয়ে আছে চুল গুলো বাতাসে উড়ছে চোখ গুলো দূর অজানায় তাকিয়ে চোখে হাজার প্রশ্ন হাজার কৌতহল কিন্তু মুখে কোন শব্দ নেই ।বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে সায়ন পাশে এসে অনেকক্ষন জাবত দাড়িয়ে আছে সেদিকে তার কোন খেয়ালই নেই !
সায়ন রিদ্ধির কাধে হাত রাখতেই রিদ্ধি ছিটে উঠে সায়ন হালকা আওয়াজে বলে
-“রিলেক্স রিদ্ধি আমি !”
রিদ্ধি নিচু গলায় বলে
-“ও আপনি ,হঠাৎ !
কোন কাজ ছিলো ।”
-“আমার কি তোমার কাছে আসতে কোন কাজের বাহানায় আসতে হবে ।”
-“আমি তা বলিনি !
কিন্তু আমাদের সম্পর্ক এতটাও ভালো নেই যে এক সাথে সময় কাটাবো ।”
-“তুমি আমার স্ত্রী রিদ্ধি ।”
রিদ্ধি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে
-“স্ত্রী ?
সত্যি কি তাই আদো কি ঐ অধিকার আপনি আমাকে দিয়েছিলেন !”
সায়ন রিদ্ধির বাহু ধরে হালকা ঝাকিঁয়ে বলে
-“রিদ্ধি তুমি আমাদের মাঝে কেন এত দূরত্ব সৃষ্টি করছো !”
রিদ্ধি নিজেকে সায়নের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে
-“দূরত্ব কি কখনো মিটেছিলো যে নতুন করে বাড়বে !
আমাদের মাঝে তো তৃতীয় ব্যক্তি আগের থেকেই ছিলো নতুন করে আর কি হবে ।
কাল রাতেও আপনি তার কাছে গিয়েছিলেন
তাই না ?”
সায়ন বেশ ঘাবড়িয়ে যায় রিদ্ধির চোখ টলটল করছে ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের বাকাঁ হাসি ।
সায়ন রিদ্ধির গালে হাত রেখে বলে
-“আমি শুধু তোমাকে ভালোবা….
আর বলতে পাড়েনা তার আগেই ফোন বাজতে লাগে সায়ন ফোনের দিকে তাকিয়ে নাম্বার দেখে কেটে দেয় ।
ফোন আবার বাজতে শুরু করে ।
রিদ্ধি মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আবার সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে
-“ফোন রিসিভ করেন হয়তো ইম্পর্টেন্ট কেউ হবে !”
সায়ন ফোন আছাড় মেরে ছুড়ে ফেলে দেয় ফোন টুকরো টুকরো হয়ে যায় ।তারপর রিদ্ধিকে নিজের কাছে এনে চিৎকার করে বলে
-“আমার কাছে সবচেয়ে ইম্পর্টেন্ট তুমি !
তুমি আমার সব অন্যকেউ কিছুনা বুঝেছো ।”
রিদ্ধি নিজেকে সায়ন থেকে ছাড়িয়ে সেখান থেকে চলে যায় ।

কাল বিয়ে কিছু কেনাকাটা এখনো বাকি রয়ে গেছে সায়রির ।সে ঘরে ঠোটঁ উল্টিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে
পাশেই মুন বসে আছে বড় বড় চোখ করে সায়রিকে দেখছে ।সায়রি রুমের রাউন্ড কাটতে কাটতে বলছে
-“মানে সিরিয়াসলি বাড়ি থেকে আমার কালিরা আসমানে উড়ে গেছে ?
কাল কালিরা না পড়লে আমার পুরো ব্রাইডাল লুকই ইনকমপ্লিট রয়ে যাবে কত ইচ্ছে ছিলো পুরো ট্রেডিশনাল ব্রাইড সাজবো কালায়রা ছাড়া তো পুরো লুক ই অপূর্ন !
রিদ্ধি ভাবী প্রেগনেন্ট আর সায়রা ভাবীপু অসুস্থ কে এনে দিবে !”
বলেই গালে হাত দিয়ে বেডে বসে পড়ে মুন পাশ থেকে সায়রীর দিকে ঘুরে বলতে লাগে
-“কালিরা মানে তো ঐটা যে চুড়ির সাথে হাতে লম্বা ঝুলানো থাকে তাই না ?
আচ্ছা তোমার কেমন কালিরা পছন্দ আমাকে বলো আমি যেয়ে নিয়ে আসছি !”
মুহূর্তেই সায়রীর মুখে মুখে হাসি ফুটে উঠে সে মুনকে ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে খুশিতে বলে
-“সত্যি তুমি যাবে আপু !
থ্রেংকিউ থ্রেংকিউ থ্রেংকিউ ।”
মুন সায়রীর এমন পাগলামো দেখে বলে
-“এত থ্রেংকিউ বলার কি আছে !
তুমি আমাকে ডিজাইন আর কালার দেখাও আমি এখনি যেয়ে নিয়ে আসছি !”
-“তুমি একা যাবে !”
-“তাতে কি হয়েছে ।
আমি যেতে পারবো !”
-“নো নো আপু আমি মটেও তোমাকে একা যেতে দিবোনা আমার একটা দায়িত্ব আছেনা ।
যদি বড় আম্মু আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেদ না করতো তাহলে দুজন একসাথে যেতাম কিন্তু এখন যখন তুমি যাচ্ছ তাহলে আমি তোমাকে তোমাকে মটেও একা যেতে দেবনা !”
সায়রী কথা শেষ করেই ফোন হাতে নিয়ে কাউকে ফোন করে ।অপরপাশ থেকে হ্যালো বলার আগেই সায়রী বলতে লাগে
-“দা ভাই পাচঁ মিনিটে আমার রুমে আসো “
বলেই ফোন কেটে দেয় ।মুন জিগাসা দৃষ্টিতে সায়রীর দিকে তাকিয়ে আছে তা বুঝতে পেরে সায়রী বলে
-“অপেক্ষা কর এখনই দেখবে !”
ঠি ক পাচঁ মিনিটের মাথায়ই নিহাল রুমে আসে ।সয়রীর মাথা বারি মেরে বলে
-“কি রে পাগলি এত ইমার্জেন্সি ডাকার কারন কি ?”
সায়রী দাতঁ বের করে হাসি দিয়ে বলল
-“দা ভাই আই নিড ইউর হেল্প !
তোমাকে একটু মুন আপুর সাথে মার্কেটে যেতে হবে ।
যাবে তো ?”
নিহাল মুখে হাসির রেখা টেনে ফিসফিস আওয়াজে বলে
-“উনার সাথে চোখ বন্ধ করে যে কোন জায়গায় চলে যেতে রাজী !”
কথাটা মুনের কানে ঠি কই পৌছায় মুন ভয়ে ডোক গিলে ।
তারপর তারাতারি করে শপিং এ বেরিয়ে পড়ে দুজন ।

শপিং শেষে মুন পাশে বসে আছে বাহিরে অন্ধকার হয়ে এসেছে সে ভয় পাচ্ছে এই অন্ধকারে নিহালের সাথে বলে হাজার হোক মুনের জন্য তো অচেনা ব্যক্তিই সে তার উপর একটু গম্ভির টাইপ লোক !
নিহাল তা লক্ষ করে বলল
-“তোমার সাথে আমি আছি বলে কি তুমি ভয় পাচ্ছ ?”
মুন কথা ভালোবাবে না বুঝিয়েই মাথা হ্যা বোধক নাড়ায় পরক্ষনে বুঝে উঠতেই আবার সাথে সাথে না বোধক মাথা নাড়ায় ।নিহাল তা দেখে কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ।
মুন তা দেখে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায় ।
তাই মুনকে রিলেক্স করতে নিহাল তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে যায় তার সাথে আলাপ করতে লাগে ।
আলাপ করতে করতেই বাড়ি চলে আসে তারা !
বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই তারাতারি করে নেমে পড়ে মুন কিছুদূর যেতেই কিছু একটা ভেবে আবার গাড়ির কাছে এসে নিচু গলায় বলে
-“থ্রেংকিউ এন্ড সরি !
থ্রেংকস এটার জন্য যে আপনি এত সেফলি আমাকে বাড়িতে পৌছিয়েছেন ।
আর সরি এর জন্য আমি আপনাকে ভুল ভেবেছি “
বলেই সোজা বাড়ির দিকে দৌড় মারে নিহাল তার যাওয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকি কি হলো তা না বোঝা সে !
পরক্ষনেই আবার তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল
-“পুরো পাগলি !
আর আমার এই পাগলিটাকেই চাই।”

সায়রা আয়নার সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে পড়নে লং ওয়েস্টান কালো স্কার্ট আর লাল টপস ।এসব ড্রেস সে কখনোই পড়েনি কিন্তু আজ পড়তে হয়েছে কারন কাল ঐ বাড়ি থেকে কিছু আনা হয়নি ।কাবার্ড ভরা বিভিন্ন ধরনের ড্রেস রয়েছে যার সবগুলো আরসালের নিজের পছন্দের ড্রেস ।
সে নিজে এসব এনে রেখেছে সায়রার জন্য অনেক আগেই বিভিন্ন উৎসব এসব আনা হয়েছিলো সায়রাকে গিফ্ট করেছিলো কিন্তু তা সায়রা ফিরিয়ে দিয়েছে তাই আরসাল সেগুলো সায়রার জন্য প্যাক করা অবস্থাই রেখে দিয়েছে ।
সায়রা চুল ব্রাশ করছে হঠাৎ এক জোড়া হাত তার কোমড় চেপে ধরে আছে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে আরসাল চোখ বন্ধ করে তার চুলে মুখ ডুবিয়ে রয়েছে ।
সায়রা তা দেখে বেশ কেপেঁ উঠে তার শ্বাস প্রশ্বাস অতি দ্রুত উঠা নামা করছে ।আরসালের গরম নিশ্বাস গুলো তার চুল বেধ করে পিঠ ছুয়েঁ দিচ্ছে ।
আস্তে আস্তে এই গরম নিশ্বাস কৌমশয়ই বাড়ছে সায়রার মনে অসয্য যন্ত্রনা কাজ করছে এক অসয্য অনুভূতি ।
আরসাল কাপাঁ কাপাঁ গলায় বলে
-“কি আছে তোমার মাঝে যে আমাকে এতটা আকর্ষন করে কি এমন মাদকতা কি এমন নেশা রয়েছে যা আমাকে এতটা পাগল করে দেয় ।
আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি সায়রা !
সত্যি আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি আর এরজন্য শুধু তুমি দায় তোমার এই চোখের নেশায় আর তোমার মায়ায় আমি ডুবছি আরো হাজার বার ডুবতে চাই ।”

চলবে….❤️

Plz সবাই সবার মতামত জানাবেন ❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here