প্রেমময় প্রহর পর্ব ২০+২১

#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :২০

সায়রার কোলে আদিবা ঘুমিয়ে আছে সায়রা অন্যমনষ্ক হয়ে আছে কোন গভীর চিন্তায় সে ডুবে আছে আর তার পাশেই রিদ্ধি বসে আছে খুব গভীর ভাবে সায়রাকে দেখছে আর ভাবছে এতটা ধৈর্য্য নিয়ে তার বোনটা কি করে আছে ? চোখের সামনে নিজের স্বামীর প্রেগনেন্ট এক্সকে কি করে সয্য করছে সে ?
এতটা ধৈর্য্য কোথা থেকে পায় এই মেয়ে এসব ভেবে রিদ্ধির চোখ জোড়া জলে ভরে উঠে ।
হঠাৎ রিদ্ধি সায়রার কাধেঁ হাত রাখতেই সায়রা বেশ চমকিয়ে উঠে রিদ্ধির দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক নিজের ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টেনে বলে
-“কিছু বলবে দি ?”
রিদ্ধি ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে
-“এতটা ধৈর্য্য কোথা থেকে সংযত করিস ?
এতটা কষ্টের মাঝেও কি করে তোর ঠোঁর কোনে এই মলিন হাসির রেখা টানিস ।
কি মাটির তৈরীরে তুই !”
সায়রা আগের মত মলিন হেসে উত্তর দেয়
-“দি জীবনে সমসময় সুখ থাকবেনা দুঃখ জীবনে থাকবেই তা বলে যে আমরা হাসতে ভুলে যাবো তেমনটা কিন্তু নয় ।
দি আমাকে যে ভেঙ্গে পড়লে চলবেনা আমার যে অনেক লোড়তে হবে নিজের পরিবারকে নিজের স্বামীকে বাচাঁতে হবে ঐ নিহার থেকে না হয় ঐ আমাদের পরিবার তছনছ করে দিবে !”
রিদ্ধি শান্ত স্বরে বলে
-“এর মাঝে যদি তোর আর তোর বাচ্চার কোন ক্ষতি হয়ে যায় ?
ঐ মেয়ে যদি তোদের কে কিছু করে !
তোর বেবীর কিছু করে ?”
রিদ্ধি কথা শেষ করার আগেই পিছন থেকে আরসাল জোরে শব্দ করে বলে
-“সায়রার বেবী মানে ?
রিদ্ধি আমাকে ক্লিয়ারলি খুলে বলো ব্যপারটা !”
রিদ্ধি আর সায়রা আরসালের কথা শুনে আতকে গেছে সায়রা চায় না এই ঝামেলার মধ্যে তার প্রেগনেন্সির কথা সবাইকে জানাতে ।
দুজন দুজনের মুখের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে কি বলবে তা বোঝচ্ছেনা ।
রিদ্ধি কিছু বলতে যাবে তার আগে সায়রা তাকে চুপ করিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করে
-“আসলে রিদ্ধিদি আদিবার কথা বলছিলো আদিবাতো আমার সন্তানই তাই না !”
আরসাল সায়রার কথা শুনে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সায়রা কথা এড়ানোর জন্য বলে
-“আপনি এখানে কেন ?
আপনার কোন কাজ আছে ?”
আরসাল আমতা আমতা করে উত্তর দেয়
-“হ্যা ! আমি অফিসে যাবো টাই টা বেধেঁ দেও !”
সায়রা আরসালকে ঠ্যাস মেরে বলে
-“এখন তা করার জন্য তো অন্যজন আছে !”
আরসাল তা শুনে বেশ রেগে যায় সে রাগী গলায় উত্তর দেয়
-“আমার অন্যকেউ কে না তোমাকে প্রয়োজন !
তুমি বেধেঁ দিলে দেও না হয় আমি এভাবেই চলে যাবো ।”
বলেই আরসাল সেখান থেকে রেগে কটকট করতে করতে চলে যায় ।

সায়রা আরসালের উপর রেগে আছে কিন্তু তাই বলে নিজের দায়িত্বগুলো তো আর ফেলতে পারবেনা ।কিছু কিছু কাজ যে তার অভ্যাস এ পরিনত হয়ে গেছে সে চাইলেও তা অদেখা করতে পারবেনা ।
সায়রা আরসালের পিছন পিছন রুমে চলে যায় রুমে গিয়ে দেখে আরসাল হাত ঘড়ি পড়ছে সায়রা বেশ কিছুসময় আরসাল কে পর্যবেক্ষন করে বড় একটা শ্বাস নিয়ে কাবার্ডের দিকে চলে যায় ।কাবার্ড থেকে আরসালের ব্লেজার আর টাই বের করে তা নিয়ে আরসালের সামনে দাড়ায় ।সায়রার হাতে তার ব্লেজার আর টাই দেখে আরসালের ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা ফুটে উঠে সায়রা কপাল কুচঁকিয়ে আরসালের পিছনে যেয়ে তাকে ব্লেজার পড়িয়ে দেয় ।তারপর তার সামনে দাড়িয়ে পা উচুঁ করে টাই বেধেঁ দিতে লাগে পুরোটা সময় একবারের জন্যেও সে আরসালের দিকে তাকায় না ।সে নিজ ধ্যানে নিজের কাজ করে যায় কিন্তু আরসালের দৃষ্টি পুরোটা সময় তার রূপমোহিনীর দিকে ছিলো একবারের জন্যও তার পলক পড়েনি ।আজ পুরো একটা দিন পর সায়রা নিজ থেকে তার এতটা কাছে ।টাই বাধাঁ শেষে সায়রা চলে যেতে নিলে পিছন থেকে আরসাল তার হাত ধরে তাকে আটকিয়ে নেয় সায়রা বেশ অবাক চোখে আরসালের দিকে তাকায় ।
আরসাল সায়রাকে নিজের কাছে টেনে এনে তার কপালে গভীর করে নিজের ভালোবাসার পরশ একে দেয় !
সায়রা রেগে সরে যেতে নিলে আরসাল তাকে নিজের আরো কাছে এনে তার হাত জোড়া নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে চোখ বন্ধ করে সেখানে বেশ কিছু চুমু দেয় আরসালের হঠাৎ এমন ব্যবহারে সায়রার ভিতর নাড়া দিয়ে উঠে চোখ জোড়া ছলছল করতে লাগে ।এদিকে আরসালের ও একই অবস্থা দুজনের মধ্যে এক অদৃশ্য দেয়াল আরসালের অসহায়ত্ব তাকে দূর্বল করে দিয়েছে সে চাওয়ার পর ও নিজের ভালোবাসাকে কিছু বলতে পারছেনা তাকে নিজের বুকে জরিয়ে নিয়ে সত্যটা বলতে পারছেনা ।
এক সময় সায়রা নিজেকে আরসাল থেকে ছাড়িয়ে দূরে সরে যায় ।আরসাল বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়ে !

সন্ধ্যায় আরসাল স্টাডি রুমে নিজের অফিসিয়াল কাজে ব্যস্থ ল্যাপটপের বোতামগুলোর উপর খুব দ্রুত তার হাত চলছে বোঝাই যাচ্ছে কোন কিছু টাইপ করতে সে ব্যস্থ ঠি ক এমন মুহূর্তেই স্টাডি রুমে প্রবেশ করে ।কেউ রুমে প্রবেশ করেছে তা আচ পেয়েও সেদিকে খুব একটা ধ্যান দেয়না সে আগের মতই নিজের কাজে ব্যস্থ সে !
সায়ন স্টাডি রুমের দরজা বিরিয়ে আরসালের পাশে এসে বসে আরসাল সায়নের দিকে একবার তাকিয়ে আবার নিজের কাজে মন দেয় ।সায়ন স্পষ্ট বুঝতে পারছে তার ভাই তাকে ইগনোর করছে ।
সায়ন আরসালের পা জরিয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলে
-“ভাই আমাকে ক্ষমা করে দে !
আমি নিজের অজান্তেই অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি সেই রাতে নেশার ঘোরে আমি কি করেছি আমার মনে নেই ।
রিদ্ধির সেই কথা গুলো আমাকে খুব আঘাত করেছিলো আর সেই জ্বেদ এ নেশার ঘোরে আমি এসব করি সত্যি ভাই বিশ্বাস কর আমার নিজের উপর কোন ধরনের কন্ট্রোল ছিলো না কি করেছি না করেছি কিছুই মনে নেই যেন কেউ আমাকে কন্ট্রোল করছিলো !
আমার সেই রাতের ভুলের মসুল আমি এখন প্রতিটা মুহূ্র্ত পাচ্ছি ।আমার জন্য তোর আর সায়রার সম্পর্কটা প্রায় ভাঙ্গার পথে আমি চাইনা আর কিছু হোক আমি এখনি রিদ্ধিকে সব সত্যিটা বলে দিবো !”
সায়ন এসব কথা বলেই ফ্লোর থেকে উঠে দরজার দিকে পা বাড়ায় হঠাৎ তার কানে আরসালের গম্ভির আওয়াজ আসে আরসাল গম্ভির কন্ঠে বলে
-“তুই কিছু কাউকে বলবি না !”
আরসালের এমন কথা শুনে সায়ন পিছনে ফিরে বলে
-“তুই কি বলছিস ভাই ?
আমার জন্য তোর আর সায়রার সম্পর্ক ভাঙ্গার পথে আর কেউ না জানলেও আমি জানি তুই কতটা ভালোবাসিস সায়রাকে কতটা পাগল তুই ওর জন্য ।
সায়রা কে ছাড়া তুই কখনো থাকতে পারবিনা প্রত্যেকটা সেকেন্ড তুই ধুকে ধুকে মরবি !
আমি তোকে কখনো ঐ ভাবে দেখতে পারবোনা আমি সব সত্যি সবাইকে বলবো আমার জন্য তোর জীবন নষ্ট হতে দিবোনা ।”
আরসাল সোফা থেকে উঠে সায়নের কাছে এগিয়ে যায় বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করে
-“কে বলেছে আমি এসব তোর জন্য করছি ?
আমার তো তোর চেহারা দেখতেও এখন ঘৃনা হয় তুই কি করে পারলি রিদ্ধি কে এত বড় ধোকা দিতে !
আমার নিজের প্রতি ঘৃনা হয় এই ভেবে যে তুই আমার ভাই ।একটা মেয়ে যে নিজের বাবা মা সবকিছু ছেড়ে তোর কাছে এসেছে তোর অতীত জেনেও তোকে আপন করে নিয়েছে তুই তাকেই ধোকা দিলি ?
সে না হয় রেগে দুটো কথা বলে দিয়েছে সে ও তো কম সয্য করেনি তাই বলে কি তোর অন্য কারো কাছে যেতে হবে ?”
সায়ন কান্না করতে করতে বলে
-“সত্যি ভাই আমি জানিনা কি হয়েছিলো সে রাতে বারে ড্রিংক্সটা খাওয়ার পর আমি নিজের মধ্যে ছিলাম না ।
হ্যা এটা সত্যি আমি সে রাতে রিদ্ধিকে বলেছিলাম যে আমি তাকে রেখে আমার অতীতে ফিরে যাবো কিন্তু আমার এমন কিছু করার কোন উদ্দেশ্য ছিলোনা !
সত্যি আমি রিদ্ধিকে ধোকা দিতে চাইনি !”
আরসাল রেগে গর্জন করে বলে
-“যা হয়েছে তা হয়েছে যা হচ্ছে তা সেই ভাবে চলতে দে !
আর তুই এই ভুল ধারনা নিয়ে থাকবি না যে এসব আমি তোর জন্য করছি এইসব আমি ঐ নিস্পাপ দুইটা শিশু আর রিদ্ধির জন্য করছি ।
ডক্টোর বলেছে রিদ্ধি এখনো পুরোপুরি বিপদ মুক্ত নয় যে কোন মেন্টালি আঘাত পেলে বা মাথায় কোন প্রেসার পড়লে যে কোন সময় যে কোন কিছু হতে পারে মৃত্যুও !
আর আমি চাইনা এসব শুনে রিদ্ধির কিছু হোক আর ছোট বাচ্চা দুটো মা হারা হোক !
তোর কুকর্মের ফল ওরা তিনজন পাক ।
তাই সে ভাবে চলছে চলতে দে !
আর রইলো সায়রার কথা ?
আমি চাইলেও তাকে কিছু বলতে পারবোনা কারন সে খুবই প্রতিবাদী বোনের সাথে এই অন্যায় মেনে নিবেনা ব্যপারটার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করবে যা আরো বাজে পরিস্থীতির সৃষ্টি হবে রিদ্ধির কান অবদি পৌছিয়ে যাবে সব । এখন সায়রা আমি ধোকা দিয়েছি ভেবে আমাকে ঘৃনা করে সরে যাবে দূরে চলে যাবে আস্তে আস্তে ঠি ক হয়ে যাবে সময়ের সাথে কিন্তু সায়রা সত্যিটা জানলে তখন অনেক বড় অঘটন ঘটবে !
তাই সব এভাবে চলতে দেওয়াটাই ভালো ।”
আরসাল নিজের কথা শেষ করে রেগে স্টাডি রুম থেকে চলে যায় ।

রাত প্রায় ১১:৩০ টা বাজতে চলছে সায়রা রুমে বিছানা ঠি ক করছে ঘোমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আর আরসাল মুখের সামনে বই ধরে বইয়ের পিছন থেকে চুপিচুপি নিজের বউ কে দেখে যাচ্ছে ।আজ কাল সায়রার রাগ একদম নাকে ডগায় উঠে থাকে আর উঠারই কথা এমন পরিস্থীতিতে কোন মেয়েই স্বাভাবীক থাকতে পারেনা ।
সায়রা বিছানা গা হেলিয়ে দিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে আরসালকে উদ্দেশ্য করে বলে
-“অনেক রাত হয়েছে আমার দিকে এভাবে না তাকিয়ে ঘুমিয়ে যান ।”
সায়রার কথায় যেন আরসাল ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় নিজের গলা ঝেড়ে লাইট অফ করে সায়রার দিকে ফিরে শুয়ে পড়ে ।সায়রা বেশ দূরত্ব বজায় রেখে পিছন ফিরে শুয়ে আছে আরসাল পিছন থেকে সায়রার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে হাজার কথা ভাবছে হাজারো কথা নিজের মনের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখছে !
চাইলেই সব অনুভূতি প্রকাশ করা যায় না ,চাইলেই সব পরিনতিও নিজের মনের মত হয় না ।
তাদের সুন্দর গোছালো জীবনটা ‌চোখের সামনে অগোছালো হয়ে গেছে আর সে চাওয়ার পরও কিছু করতে পারছেনা সে আজ পরিস্থিতীর কাছে সত্যি সে খুব বেশি অসহায় !
হঠাৎই রাত দুইটার দিকে তাদের রুমের দরজায় নক পড়ে দুজনের ঘুম ভেঙ্গে যায় ।সায়রা আড়মোড়া ভেঙ্গে দরজার দিকে পা বাড়ায় আরসালের মুখেও বেশ বিরক্তের ছাপ কিছুক্ষন আগেই তার চোখ লেগেছে আর এমন সময় দরজায় কেউ নক দিয়েছে ।
সায়রা দরজা খুলে সামনে তাকাতেই তার চোখ মুখে বিরক্ত ফুটে উঠে তার প্রচন্ড পরিমানে রাগ হচ্ছে কারন তার সামনে নিহা দাড়িয়ে আছে ছোট একটা নাইটি পড়ে ।পিছন থেকে এমন সময় আরসাল দরজার কাছে আসে কে এসেছে তা দেখার জন্য নিহাকে এই অবস্থায় দেখে আরসাল লজ্জায় নিজের চোখ দুটো নিচে নামিয়ে ফেলে ।সায়রার নিহার এই অবস্থা দেখে শরীর ঘৃনঘৃন করছে ।
সায়রা বেশ চওড়া গলায় বলে
-“এত রাতে তুমি এখানে ?
কি চাই তোমার !”
নিহা অসহায় মুখ করে বলে
-“আসলে আমার ঐ রুমে একা ঘুমাতে ভয় করছে !”
সায়রা বিরক্ত নিয়ে বলে
-“তো এখন কি আমার আর আরসালের মাঝে ঘুমাতে এসেছো ?”
নিহা বেচারী সেজে বলতে শুরু করে
-“আমি তা বলেছি ?”
সায়রা রেগে উত্তর দেয়
-“তুমি কি ছোট্ট খুকি একা ঘুমাতে পারোনা !
এখন কি তোমাকে একা ড্রাইপার এনে দিবো আবার যদি বেডে ইয়ে করে দেও ।”
নিহা সায়রার কথা শুনে তেড়ে উঠে সে কড়া আওয়াজে বলে
-“সায়রা তুমি কেন এভাবে অপমান করছো ?
ভুলে যেওনা না আরসালের উপর আমারও অধিকার আছে সে আমার বাচ্চার বাবা !”
সায়রা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে
-“কোন ‌অধিকারের কথা বলছো তুমি ?
আমি আরসালের বিয়ে করা বৈধ স্ত্রী তোমার মত গলায় ঝুলে পরিনি ।
আর রইলো বাচ্চার কথা কি প্রমান আছে এটা আরসালের বাচ্চা ?
নিহা তুমি আমার সাথে লাগতে এসো না ফল সত্যি ভয়ংকর হবে !
আমি কোন অসহায় অবলা মেয়ে না যে দমিয়ে যাবো ।”
নিহা সিমপ্যাথি পাওয়ার জন্য অসহায় ভাব নিয়ে আরসালের দিকে তাকিয়ে বলে
-“দেখছো আরসাল তোমার বউ আমাকে কি বলছে ?
আমাকে কি করে ‌অপমান করছে ।”
আরসাল ব্যপারটা থামানোর জন্য সায়রাকে উদ্দেশ্য করে বলে
-“সায়রা চুপ কর ।
এতো রাতে ঝামেলা ভালো লাগছেনা !”
সায়রা আরসালের কথায় বেশ কষ্ট পায় সাথে তার আরসালের প্রতি অনেকটা অভিমান জমে ।
সে আরসালের দিকে তাকিয়ে ছলছল চোখে বলে
-“দোষ কি আমার একার ?
এত রাতে কারো রুমে এভাবে এসে এসব করার মানে কি ?”
নিহা কাদোঁ কাদোঁ গলায় অভিনয় করে বলে
-“আমি সত্যি ভয় পাই একা থাকতে ।”
সায়রা বলল
-“আমি যতটুকু জানি তুমি তোমার পুরো বাড়িতে একা থাকো তখন ভয় পেতে না ?”
-“এখনতো আমি প্রেগনেন্ট সায়রা !”
সায়রা বাকাঁ হেসে বলে
-“ও আসলেই তো আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম তুমি প্রেগনেন্ট !
একা ঘুমাতে ভয় হয় তাইনা ?
এক মিনিট অপেক্ষা কর আমি এখনি ব্যবস্থা করছি ।”
বলেই কাউকে ফোন দিয়ে উপরে আসতে বলে কিছুসময়ের মধ্যেই বাড়ির কাজের লোক রহিমা খালা উপরে আসে ।
সায়রা রহিমা খালাকে উদ্দেশ্য করে বলে
-“খালা নিহা আপু একা ঘুমাতে পারে না এখন থেকে আপনি প্রতিদিন তার সাথে ঘুমাবেন !”
নিহা নাক ছিটকিয়ে বলে
-“ছিঃ আমি কাজের লোকের সাথে থাকবো ?
এমন চিন্তা ভাবনা তুমি করলে কি করে ?”
সায়রা নিজের হাসি ঠোঁট দ্বারা চেপে রাখার চেষ্টা করে বলতে শুরু করে
-“তুমি কি আমার বা আরসালের মাঝেই থাকতে চাইছো?তুমি তো প্রেগনেন্ট তাইনা ?
তোমাকে একা কি করে থাকতে দেই তাই খালাই তোমার সাথে থাকবে !”
নিহা রেগে বলে
-“লাগবে না আমার কাউকে আমি একাই থাকতে পারবো !”
এসব বলে সায়রাকে মনে মনে বকতে বকতে চলে যায় আর অন্যদিকে সায়রা নিহাকে জব্দ করতে পেরে বেশ আনন্দ পাচ্ছে যা তার চোহারায় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে সায়রা শব্দ করে হাসছে আরসাল তার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে ।

সারারাত জেগে মুন পরিক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে ভোর রাতের দিকে ঘুমিয়েছে কিন্তু সকাল সকাল মুনের মা তাকে ঘুম থেকে এক প্রকার চেনে উঠিয়েছে কারনটা হলো আজ মুনকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে ।কিন্তু মুনের এই নিয়ে কোন অনুভূতি নেই যার মন প্রান জুড়ে অন্যকেউ রয়েছে তার কি এই সবে মন টানবে ?
কিন্তু সে তার বাবা মা কে কথা দিয়েছিলো যে তাদের কথা মত তাদের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করবে তাই সে মুখ বুঝে বাদ্ধ হয় সবটা মেনে নিচ্ছে !
বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে সায়রা বসে আছে ।
মুনের চেহারায় হাসি ফুটে উঠে সে সায়রাকে দেখে মুচকি হেসে জিগাসা করে
-“কেমন আছিস ?
আর কখন আসলি ?”
-“এই তো ভালো
কিছসময় আগেই এসেছি !
তুই কেমন আছিস ?”
মুন মলিন হেসে বলে
-“এই তো ভালো ।”
সায়রা মুনকে উদ্দেশ্য করে বলে
-“তারাতারি রেডি হয়ে নে এখনি পাত্রপক্ষ চলে আসবে ।”
মুন নিচু স্বরে বলে
-“হুম হচ্ছি !”
মনে মনে বার বার ভেবে যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত তার বোনটা ও তার মন বুঝলোনা ।তারপর রেডি হয়ে নেয় ।পাত্র পক্ষ আসতেই সায়রা মুনকে নিয়ে একদম পাত্রের পাশে বসায় মুন মাথা নিচু করে আছে তার চোখ জোড়া জলে ভরে আসছে বার বার অনেক কষ্টে নিজের চোখের জল আটকাচ্ছে ।হঠাৎ পাশে বসা লোকটার হালকা আওয়াজে মুনের ধ্যান ভাঙ্গে সেই চিরচেনা কন্ঠ ।মাথা উচুঁ করে পাশে তাকাতেই বড়সড় একটা শক খায় ।
এই সে কি দেখছে সত্যি নাকি স্বপ্ন ?
তার জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা !
#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :২১

মুন মাথা উচুঁ করে পাশ ফিরে তাকাতেই তার চোখ বেশ বড় বড় হয়ে যায় ।নিজের চোখকে সে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে ।সে কি আদো সত্যি দেখছে নাকি এটা কোন স্বপ্ন !
তা ভেবে বেশ কয়েকবার চোখ বন্ধ করে আর চোখ খুলে কিন্তু না এটা স্বপ্ন না সত্যিই নিহাল তার সামনে বসে আছে মুন চোখ ঘুরিয়ে অবাক চোখে সায়রার দিকে তাকাতেই সায়রা নিজের চোখের পলক জাপটিয়ে ইশারায় বুঝিয়ে দেয় যে সব ঠি ক আছে !
সায়রার ইশারায় মুনের চোখে খুশি জল আর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে ।
নিহালের মা মুচকি হেসে নিহালেক হাতে রিং দিয়ে বলে মুনকে পরিয়ে দিতে ।নিহাল আর এক সেকেন্ডও দেরী করে না তারাতারি করে পরিয়ে দেয় ।অপর পাশ থেকে সায়রা মুনের হাতে রিং দিয়ে ইশারা করে নিহার কে পড়িয়ে দিতে মুন কাপাঁ হাতে নিহালের আঙ্গুলে পড়িয়ে দেয় ।মুন পড়িয়ে দিতেই নিহাল প্রশান্তির একটা বড় নিশ্বাস ছাড়ে ।তার মনে ভরে উঠে আনন্দে ।
সারাদিন সবাই এক সাথে কাটায় মুন লজ্জায় নিহালের দিকে তাকাতে পারছেনা আজ তার লজ্জাটা যেন শত গুন বেড়ে গেছে নিহালের চোখে চোখ রাখাটা তার জন্য বড্ড কঠিন হয়ে গেছে ।
দুপুরে সবাই একসাথে লান্চ করে নিহালের পরিবার বিকালের দিকে রওনা দেয় ।
নিহাল যাওয়ার আগে ফিসফিস করে মুনের কানের কাছে বলে যায়
-“এখনতো তুমি আমার হবু বউ এখন তো আর কোন বাধাঁ নেই তোমাকে ভালোবাসতে !
রাতে কল করবো মনে থাকে যেন সব সুদে আসলে আজ পূরন করবো ।”
মুনের শরীরে যেন তখন ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেছে শরীর বরাবরেরই মত কাপঁছিলো উত্তরে মুন শুধু মাথা নাড়ায় ।
নিহালের পরিবার যেতেই মুন সায়রা কে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসে মুনের চোখে মুখে আনন্দের উল্লাস চোখে খুশির জল টলটল করছে ।মুন কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে বলে
-“সায়রু আমার এখনো এসব বিশ্বাস হচ্ছেনা যা হচ্ছে আদো কি তা সত্যি না স্বপ্ন ?
এসব কি করে সম্ভব হলো সায়রু !”
সায়রা মুনের থুতনীতে হাত রেখে মুচকি হেসে বলে
-“কেন সম্ভব না ? তোদের ভালোবাসাটা যে পবিত্র আর পবিত্র ভালোবাসাগুলো তার পরিনতী অবশ্যই পাবে !
তুই কি ভেবেছিস তুই তোর মনের কথা আমার কাছে না বললে আমি তা বুঝবোনা জানবোনা ?
শায়রীর বিয়েতেই আমি আন্দাজ করতে পেরেছিলাম যে তোর আর নিহাল ভাইয়ার মধ্যে কোন কিছু চলছে তোকে জিগাস করবো করবো বলে আর করা হয়নি পরিস্থীতির জন্য তারপর বিভিন্ন ঝামেলায় বিষয়টা মাথা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো ।সেদিন হঠাৎ আন্টি (নিহালের মা) আমাকে ফোন দিয়ে জানায় নিহাল ভাইয়ার পাগলামোর কথা তুই এই সম্পর্কে না করেছিলি বলে উনি বেশ ভেঙ্গে পড়েছে নিজেকে ঘর বন্ধি করে রাখছে ।আন্টি ফোনে বেশ কান্নাকাটি করে পরে আন্টিকে কোন মত শান্তনা দিয়ে শান্ত করি আর বলি আমি দেখছি ব্যপারটা কাল ফোনে চাচ্চু আর চাচীমা কে সবটা খুলে বলি প্রথমে তারা না করে এক কথায় জানিয়ে দেয় তারা এই সম্পর্ক কোন দিন মেনে নিবেনা পরে তাদের অনেকক্ষন বোঝানোর পর তারা রাজি হয় তোর সুখের কথা চিন্তা করে ।”

মুন ছলছল চেখে সায়রার দিকে তাকিয়ে আছে ।সায়রা মুচকি হেসে বলে
-“সত্যিকারে ভালোবাসা দেখতে যতটাই কঠিন হোক না কেন একদিন ঠি কই নিজের পূর্নতা খুঁজে নেয়।
অনেক কান্নাকাটি হয়েছে এবার শুধু আনন্দ উল্লাসের পালা ”
মুন সায়রাকে জরিয়ে ধরে আবেগ প্রবল হয়ে পড়ে কান্না করতে করতে বলে
-“থ্রেংকিউ সায়রু !
ইউ আর বেস্ট সিস্টার
লাভ ইউ সায়রু !”
সায়রা মুনের চোখের জল নিজের হাতে মুছে দিয়ে বলে
-“লাভ ইউ টু !”
দুবোন বেশ কিছু সময় আড্ডা দেয় ।সন্ধ্যায় আরসাল এসে সায়রাকে নিয়ে যায় ।
সন্ধ্যা হয়ে আছে চারপাশে ‌অন্ধকার ছেয়ে আসছে ।রাস্তায় চারদিক অন্ধকার আচ্ছন্ন আরসাল গাড়ি চালাচ্ছে আর সায়রা জানালার দিকে মাথা ঠেকিয়ে গাড়ির ভিতর থেকে বাহিরের দৃশ্য দেখছে রাস্তার হাজার রকমের লাইট জ্বলছে তা দেখছে আর নিজের চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে আজ‌ তার মন বেশ হালকা আজ সে নিজের বোনকে তার ভালোবাসার হাতে তুলে দিয়েছে মুন নিজের ভালোবাসা পেয়েছে পূর্নতা পাক সকল পবিত্র ভালোবাসাগুলো ।
আরসাল ড্রাইভিং এর ফাকেঁ ফাকেঁ সায়রা কে আড়চোখে দেখে যাচ্ছে আজ তার পুরোনো দিনের কিছু স্মৃতির কথা বেশ মনে পড়ছে এমনই এক রাতে বাড়ি পৌছিয়ে দেওয়ার নাম করে সে সায়রাকে নিয়ে লং ড্রাইভে বের হয়েছিলো ।তখন সায়রা মাত্র নিউ টেনে আরসালের জন্য তার মনে ভালোবাসা অনুভূতি থাকলেও সে তা প্রকাশ করতোনা কারন সে সময় আরসালকে সে জমের মত ভয় পেত অনেক ভয়ে ভয়ে সেদিন আরসালের সাথে সে বের হয়েছিলো নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য !
আরসাল তাকে ভয় পেতে দেখে মজা করে আরো ভয় দেখানোর জন্য সায়রাকে অন্যরাস্তায় নিয়ে যায় আর সায়রাকে বলে যে “তাকে ব্রিজ থেকে ফেলে দিতে নিয়ে যাচ্ছে “তা শুনে সায়রা যা কান্নাটাই না করেছিলো পরে সেই কান্না থামাতে আরসালের প্রায় ২ ঘন্টা সময় লেগেছিলো পুরো ১ বক্স কেডবেরী আর আইসক্রিম গিফ্ট দেওয়ার পর কিছুটা কমেছিলো কিন্তু অভিমান ভাঙ্গাতে অনেক সময় লেগেছিলো ।সেদিন বুজে গিয়েছিলো তার রূপমোহিনী বড্ড বেশী অভিমানীও !
হঠাৎ এসব মনে করে আরসালের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠে সায়রাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগে
-“তোমার মনে আছে সায়ন আর রিদ্ধির বিয়ের পর পর তোমাকে লং ড্রাইভে নিয়ে গিয়েছিলাম আর তুমি চিৎকার করে কান্না করছিলে ?”
সায়রা আরসালের দিকে ফিরে চোখ ছোট ছোট করে ভ্রু কুচকিঁয়ে বলে
-“ঐ টা লং ড্রাইভ ছিলো বুঝি ?
নাকি আমাকে ব্রিজ থেকে ফেলার ধান্ধা !”
আরসাল ফিক করে হেসে বলে
-“তুমি যা কান্নাটাই না করে ছিলে পুরো ২ ঘন্টা লেগেছিলো তা থামাতে !”
-“তো কি করবো আমি তখন বাচ্চা ছিলাম আর আপনি একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে এতটা ‌অত্যাচার করছিলেন আমার ছোট হৃদপিন্ড টা যে ভয়ে বুক থেকে বের হয়ে আসেনি ভাগ্য ভালো !”
-“কাম‌অন সায়রা তুমি মটেও বাচ্চা ছিলেনা অকে !
দেখতে বাচ্চা হলেও পুরো শয়তানের নানী ছিলে তুমি ।
আর তুমি ভাবলে কি করে আমি আমার ভালোবাসাকে এতটা আঘাত করবো ?
তখন আমার অস্তিত্ব যে তোমার অস্তিত্বে জুড়ে গিয়েছিলো আমি শুধু তোমার সাথে একটু টাইম স্পেন্ড করতে চেয়েছিলাম আর কিছুনা !”
হঠাৎই আরসালের শেষ কথায় সায়রার মন খারাপ হয়ে যায় চোখ গুলো ছলছল করছে আরসাল হঠাৎ সায়রা চুপ হয়ে যেতে আরসাল ঘাড়ঁ ঘুরিয়ে পাশ ফিরে তাকায় দেখে সায়রার চোখ ছলছল করছে ।আরসালের বুঝতে বাকি রইলোনা কেন হঠাৎ সায়রার মুখে মেঘের ছায়া কেন ।আরসাল বেশ শব্দ করে দির্ঘ্যশ্বাস নিয়ে সায়রার উদ্দেশ্য বলে
-“সরি “
সায়রা ছলছল চোখে আরসালের দিকে তাকিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে উত্তরে বলে
-“আদোও কি সরি বললে সব সমাধান হবে ?
কিসের কিসের জন্য সরি বলবেন আমাকে ভালোবালার জন্য নাকি ধোকা দেওয়ার জন্য !
নিহাকে বাড়িতে আনার জন্য নাকি আমার জায়গা তাকে দেওয়ার চেষ্টার জন্য?”
সায়রা নিজের কথা শেষ করে জানালার বাহিরে তাকিয়ে নিজের চোখের জল ফেলছে ।চোখের জলগুলো টপটপ করে নিচে পড়ছে ।
অন্যদিকে আরসাল সায়রার দিকে এক পলক তাকিয়ে মনে মনে বলে
-“তুমি তুমিই আর তোমার জায়গা তোমার ছিলো আছে আর সবসময় থাকবে আমার প্রতিটা নিশ্বাসের সাথে তুমি জরিয়ে আছো ।
আমার শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত তোমাকেই চাইবো ।
আমার ভালোবাসা তুমি ছিলে তুমি আছো সারাজীবন তুমিই থাকবে !”

আজকাল আরসালের সায়রার কে দেখে বেশ সন্দেহ হয় যেন তার থেকে কিছু লোকাচ্ছে সে ।কেমন যেন ক্লান্ত থাকে কোন মাছের গন্ধ সয্য করতে পারেনা কেমন যেন খিটখিটে হয়ে গেছে ।কয়েক বার বুমি করতে দেখেছে সে যদি তাকে কিছু জিগাসা করে প্রত্যেকবারই উত্তরে বলে লো প্রেসারের জন্য এমনটা হচ্ছে ।যদি তাই হয় তাহলে এত টক খাওয়ার কারন কি এতে তো প্রেসার আরো লো হয় ।সায়রাকে বেশ কয়েকবার জিগাসা করলে সে তার কথার প্যাচে আরসালকে ফেলে বেচেঁ যায় ।সেদিন তো আরসাল তাকে ডাক্টারের কাছে নিয়ে যেতে চাইছিলো গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত সায়রা বলে “আমার উপর কোন অধিকার দেখাবেন না আমার উপর আপনার কোন অধিকার নেই ।খুব তারাতারি আপনার থেকে মুক্ত হয়ে যাবো !”
এই কথা গুলো খুব সামান্য মনে হলেও আরসাল বেশ হার্ড হয়েছিলো তার সাথে বেশ রেগেও গিয়েছিলো আরসালের রাগী কন্ঠে কঠোর উত্তর ছিল
“-আমার জান থাকতে আমার থেকে তুমি মুক্তি পাবেনা ।তোমার ইচ্ছে থাক আর না থাক তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে !
দরকার পড়লে পায়ে শিকল বেধেঁ রাখবো । ”
বলেই সেখান থেকে চলে যায় ।সেদিন সায়রা শুধু আরসালের যাওয়ার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলো !

কিছুদিন যাবত সায়রা সকালে বের হয় সন্ধ্যায় পর বাড়িতে ফিরে এই ব্যপারটা প্রায় বাড়িতে সবার চোখেই পড়ছে ।এদিকে নিহা ও বাড়ির সবার মনে জায়গা করতে চেষ্টা করছে আর সায়রাকে সবার চোখে কাটা বানানোর চেষ্টা করছে কিন্তু বার বারই ব্যর্থ হচ্ছে সে । কারন সায়রার সাথে মুনতাহা বেগম সহ পুরো পরিবার আছে যারা সায়রাকে বেশ সাপোর্ট করেছে ।
কিন্তু সায়রার এমন ব্যবহার আরসালের কাছেও বেশ অবাক লাগছে ।সায়রা বরাবরের মতই আরসালকে খুব এভোয়েট করছে আজ কাল গভীর রাতে হুটহাট সায়রার ফোন আসে আরসালের পাশ থেকে সায়রা উঠে বারান্ধায় ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে আরসাল সবটাই আচঁ পায় কিন্তু কোন রিয়েক্ট করেনা কারন তার নিজের ভালোবাসার উপর বিশ্বাস আছে কিন্তু তার পর ও সায়রার এসব এভোয়েট করা নিজের থেকে আস্তে আস্তে আরসালকে দূরে সরিয়ে দেওয়া সবকিছু আরসালকে বরাবরেরই মত বড়সড় ধাক্কা দেয় সে খুব কষ্ট অনুভব করে নিজেকে নিস্ব মনে হয় যেন সব কিছু তার হয়েও কিছুই তার আর নেই ।
আরসালের খুব কষ্ট হয় সায়রা কে এইভাবে নিজের থেকে দূরে যেতে দেখে ।মাঝে মাঝে তার দম বন্ধ হয়ে আসে না পারে সয্য করতে না পারে সায়রাকে নিজের কাছে আটকিয়ে রাখতে ।
একটা ঘটনা সবটা পাল্টিয়ে দিয়েছে তার সায়রার উপর ও নিজের জোর খাটাতে পারছেনা বড্ড বেশি অসহায় হয়ে গেছে সে কিন্তু আর যাই হোক নিজের ভালেবাসাকে সে হারাবেনা যেই করেই হোক নিজের কাছে আটকে রাখবে দরকার হলে তাকে যতটা হিংস্র হতে হয় সে হবে !

সকালে সায়রা নিহার রুমে যেতেই দেখে নিহা কারো সাথে কথা বলছে বেশ চিন্তিত সায়রা যেতেই তারাতারি করে সে ফোন রেখে দেয় ।তারপর নিজের মুখে মিথ্যা হাসির রেখা টেনে বলে
-”আরে সায়রা তুমি এখানে এত সকাল সকাল এখানে কিছু দরকার ?”
সায়রা মাথা নিচু করে বলে
-“আসলে আমি তোমার থেকে ক্ষমা চাইতে এসেছি আমার করা খারাপ ব্যবহারের জন্য ।
আমাকে ক্ষমা করে দেও প্লিজ ।
আমি তোমাদের মধ্যে এসেছি আমি চলে যাবো তোমাদের জীবন থেকে ।
তোমরা দুজন দুজনের জন্য !”
নিহার মন মুহূর্তেই খুশিতে ভরে যায় সে খুশির উল্লাসে হাসতে হাসতে বলে
-“একদম ঠি ক সিদ্ধান্ত নিয়েছো তুমি ।
আরসাল আমার বাচ্চার বাবা তার সাথে তুমি কি করে থাকবে তা ছাড়া তুমি এই স্টান্ডার ডিজার্ভ করনা ।
তুমি আরসালের মৌহ সময় শেষে কেটে যাবে ।
তুমি ওর জীবন থেকে চলে যাওয়াই ভালো !”
সায়রা নিহার কথায় হ্যা বোধক মাথা নাড়ায় ।তার পর শান্ত স্বরে বলে
-“আজ সন্ধ্যায় সবাই আসবে আমি সবার সামনেই আমার সিদ্ধান্ত জানাবো আমি চাই তুমি আর তোমার পরিবার থাকো সেখানে ।”
নিহা বেশ খুশি হয়ে উত্তর দেয়
-“আমি আর আমার পরিবার অবশ্যই থাকবো !
তুমি চিন্তা করোনা ।”
সায়রা বাকাঁ হেসে সেখান থেকে চলে যায় মনে মনে বলে
-“আজ তোমার জন্য সত্যি খুব বড় দিন তুমি জানোও না আজ ঠি ক কি কি হবে !”

আজ সন্ধ্যায় সায়রা সবাইকে ইনভাইট করেছে কারন জানিয়েছে সে নিজের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত জানাবে সবাইকে যার জন্য সবাইর থাকা খুব জরুরী যা নিহার মনে ‌ খুশি উথাল পাথাল করছে তার ধারনা সায়রা আরসালকে ছেড়ে চলে যাবে ।নিহা মনের সুখে সন্ধ্যার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে !

চলবে …..❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here