#ফেমাস_বর🙈
#পার্ট_১০
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা
জানালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে আদনান দেখল তমা বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে আছে।আর হাত দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ছে।এতোই রক্ত পড়ছে যে ফ্লোর একেবারে রক্তে থইথই করছে।
আদনান”তমু”বলে একবার চিৎকার দিল।
আদনান-তমু?এই তমু?এটা তুই কী করলি তমু?সামান্য কতগুলা কথার জন্য তুই নিজেকে শেষ করে দিতে চাইলি?এই তমু?তমু??
আদনান বুঝল যে তমার কোনো সেন্স নেই।তাই সে আর দেরি না করে তমার রুমের দরজা খুলে সেখান থেকে ওকে নিয়ে বের হয়ে সোজা হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিল।
বাকিরা-কী হয়েছে,আদনান?হয়েছেটা কী?(আদনানকে বের হতে দেখে বলল)
আদনান-এখন এতো কথা বলার সময় নেই।তোমরা তারাতারি অন্য একটা গাড়ি নিয়ে হসপিটালে চলে আসো!(হসপিটালের নাম বলল)
বাকিরা আদনানের কথা মতো অন্য একটা গাড়ি করে বের হয়ে পড়ল।আর আদনান তমাকে নিয়ে তাদের গাড়িতে করে চলে গেলো।গাড়িতে বারবার আদনান তমাকে নানান কথা বলছে।কিন্তু সেগুলো কী তমা শুনছে?
আদনান-তমু,আমি থাকতে তোর কিচ্ছু হতে দিবোনা।কিচ্ছুনা।
গাড়ি হঠাৎ হসপিটালের সামনে এসে থামল।আদনান তমাকে কোলে করে গাড়ি থেকে নামিয়ে সোজা হসপিটালে ঢুকে পরল।এরকম কাউকে কোলে করে নিয়ে আসতে দেখে কিছু নার্সরা এসে তারাতারি তমাকে দেখল এবং প্রায় সাথে সাথে তমাকে ইমার্জেন্সিতে ঢুকিয়ে দিল।
এর মধ্যে বাকি সবাইও হসপিটালে চলে এসেছে।
আয়েশা-আদনান,তমার কী হয়েছে?বলো তমার কী হয়েছে?
তুরিন-আদনান?বল তমার কী হয়েছে?আমরা যা ভেবেছিলাম সেটা নয়তো?সেটা তো না তাইনা?বলতেসিস না কেন তুই?(লাস্টের কথাটা জোরে বলল)
আদনান-আমরা যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে।তমু ছুঁড়ি দিয়ে নিজের হাত কেঁটে ফেলেছে।(কথাটা খুব শক্ত কন্ঠে বলল)
বাকিরা-কী?(খানিকটা চিল্লিয়ে)
তুরিন নিচে বসে পরল।তুরিনের এভাবে বসে পরা দেখে সবাই ওকে টেনে উঠালো।
আদনান-তুরু,তুই চেয়ারটায় বস।এই সময় এভাবে ধুপধাপ বসে পরাটা তোর জন্য সেফ না।
(ওহ,সরি!আপনাদের তো বলাই হইনি!তুরিন ১ মাসের অন্ত:সত্ত্বা,আই মিন প্রেগনেন্ট।এ বাড়িতে আসার পরই সে তা জানতে পেরেছে)
কিছুক্ষণ পর ইমার্জেন্সি থেকে ডক্টর বের হয়ে এলো।
আদনান-ডক্টর,ইজ এভ্রিথিং ফাইন?রাইট?
ডক্টর-দেখুন,উনি ছুঁড়ি দিয়ে হাত কেটে ফেলার ফলে হাতের ভেইন কেটে গেছে।এখন হাতের ভেইন কেটে যাওয়ার ফলে আমরা সিউরলি আপনাদেরকে কিছু বলতে পারছিনা।
আদনান কথাটা শুনে ধপ করে মাটিতে বলে পরল।
তুরিন-ভেইন কেটে গেসে?(কাঁদো কাঁদো গলায় বলল)
এটা কী হইলো!!তমা তুই এমন কেন করলি রে তমা?কেন এমন করলি?কেন?
আদনান-আচ্ছা,ডক্টর ওর সাথে একবার দেখা করতে পারি?অনলি একজন করব।প্লিজ ডক্টর?
ডক্টর-ওকে,।বাট,প্লিজ ডু নট ডিস্টার্ব হার।
আদনান আর কিছু না বলে ইমার্জেন্সিতে তমার বেডে গেল।
আদনান তমাকে দেখে একদম কেঁদে দিলো।
আদনান-কেন,কেন এমন করলি তমু?কেন করলি?তোর কিছু হয়ে গেলে আমি কীভাবে বাঁচবো তমু? কীভাবে বাঁচবো?এতদিন তোকে নিয়ে কত স্বপ্ন বুনেছি,তোকে নিজের ভালোবাসার জালে বন্দি করেছি?আর তুই?তুই কিনা আমাকে একা ফেলে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করলি?(কাঁদতে কাঁদতে বলল)
আদদনা…ন ভাই..ইয়য়া..(তমা আধো আধো গলায় বলে উঠল)
আদনান হঠাৎ কারোর গলার স্বর শুনে উঠে বসল।
তমা-ভা..ইই..য়া..!শুনুন,আপনাকে বলি!আমি যদি মারাও যাই তবুও আপনি মনে রাখবেন যে অন্তত আপনার তমু আপনাকে সত্যি কী হয়েছিল তা বলে গিয়েছে।শুনুন,কফি বানানোর সময় নিশান ভাইয়া আমার শরীরে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে,আমি সরাতে গেলে আমাকে জাপটে জড়িয়ে ধরে।আমি কিছুতেই ছাড়তে পারছিলাম না দেখে ছুঁড়ি মেরে দিয়েছে।(আধো আধো গলায় বলল)
সবকিছু শুনে আদনানের মাথায় রক্ত উঠে গেল।আদনান যেই তমাকে কিছু বলতে যাবে দেখলো তমা আবার আগের মতন অচেতন হয়ে পরে আছে।
আদনান-তমু?এই তমু?কী হলো তোর আবার?
আদনান তারাতারি করে ডক্টরকে ডাক দিলো।ডক্টর এসে তারাতারি তমাকে চেক করলো।
ডক্টর-ইমিডিয়েটলি ওকে ও.টি.তে ঢোকাতে হবে।আপনারা সবাই বাহিরে ওয়েট করুন।
সবাই-কেন,ডক্টর?কি হয়েছে ওর?
ডক্টর-পেশেন্টের অবস্থা খুবই ক্রিটিকাল!উনার একটা নার্ভ কেটে যাওয়ার ফলে বাকিগুলাও ঠিকভাবে কাজ করছেনা।বাকিটা আপনাদের নার্স বলে দিবে।
ডক্টর আর কিছু না বলে সোজা ও.টি তে ঢুকে পরল।
এদিকে আদনানের মাথায় শুধু তমার বলা কথাগুলোই ঘুরছে।
তুরিন তো এদিকে কাঁদতে কাঁদতে একবার সেন্সলেসও হয়ে গিয়েছে।
আদনান-আমাদের সবার অনেক বড় একটা ভুল হয়ে গিয়েছে।সবার অনেক বড় ভুল!(রেগে রেগে বলল)
সবাই আদনানের কথায় ওর দিকে তাকালো।সকলের চোখে এক অজানা বিস্ময়!
আয়েশা-কী ভুল হয়েছে,আদনান?(অবাক হয়ে বলল)
আদনান সবকিছু খুলে বলল।আদনানের কথা শুনে সবাই মাথায় হাত দিয়ে বসে পরল।
আদনান-আমি একটু আসছি!
(এই বলে আদনান বের হয়ে পরল হসপিটালে থেকে)
চলবে,,,,,,,,