#ফেমাস_বর🙈
#পার্ট_৮
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা
নিরু-এই তমা,তমা।এই তমা,কীরে ঘুম থেকে উঠ!আর কত ঘুমাবি তুই?
(নিরু হচ্ছে তমার চাচাতো বোন)
তমা-আহহা্,আম্মু!প্লিজ ঘুমাতে দাও।(ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল)
নিরু-আরে,ফাজিল!আমি মেজ মা নই,আমি নিরু।তোর নিরু আপু!
তমা ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসল।
তমা-তোমরা কখন এলে?(ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল)
নিরু-সে অনেকক্ষন হয়েছে।তুই উঠ তো,উঠ।আমরা সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছি।তোর সাথে ব্রেকফাস্ট করব বলে।
তমা-ওহ আচ্ছা!তাহলে একটু ওয়েট করো!আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
নিরু-ওকে!ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে আয়!
তমা আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেল।ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে তমা সোজা খাবার টেবিলে চলে গেল!
নিশান-আয় তমা!বোস আমাদের সাথে!
(নিশান হচ্ছে তমার বড় চাচার একমাত্র ছেলে।বংশের বড় ছেলে।নিশানও দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর।তবে নিশানের চরিত্রে সমস্যা রয়েছে)
তমা চেয়ার টেনে বসতে নিলে হঠাৎ নিশান বলল,
নিশান-আহা,ওখানে কেন বসছিশ?আমার পাশের চেয়ারটাতে বোস।
তমার নিশানের বেশিরভাগ কথাবার্তাই ভালো লাগেনা।এই কথাটাও লাগল না।তমা নিশানের কথা কানে না নিয়ে নিজের জায়গায় বসে পরল।
নিশানের ব্যাপারটা খুবই অপমানজনক লাগল।তাই সে উঠে গিয়ে তমার পাশে বসতে নিলে আবরার এসে তমার পাশে বসে পরল। আর দিনা এসে নিশানের পাশের চেয়ারে বসে পরল।
(দিনার একটা স্বভাব হচ্ছে,ও ভাবে যেকোনো ছেলে ওকে দেখলেই মনে হয় ক্রাশ খাবে/পছন্দ করবে।তাই সে যে কোনো ছেলে দেখলেই তার গায়ের উপর পরতে চায়)
আবরারের হঠাৎ তমার পাশে এসে বসে পরাতে নিশানের খুব রাগ লাগল।কোনোমতে খেয়ে সে টেবিল থেকে উঠে পরল।
খাওয়া-দেওয়া শেষ হলে সবাই গিয়ে গার্ডেনে জড়ো হলো।তমা খুব ভালোভাবে জানে যে এখানেও নিশান তমার পাশে বসার জন্য সুযোগ খুঁজবে।তাই তমা নিজে একটা সিঙ্গেল চেয়ারে বসে পড়ল আর অন্যটাতে ইশারা করে আবরারকে বসিয়ে দিল।
(আবরার আর তমা পিঠাপিঠি।তবে সম্পর্কে তমা আবরারের চেয়ে ৩ মাসের বড়।তাই ওদের সম্পর্কটা অনেকটাই বন্ধুর মতো)
এদিকে নিশান ফোনে কথা বলে আসতে আসতে প্রায় সব চেয়ারই ফিলাপ হয়ে গেল।শুধু দোলনা বাদে।তাই নিশানকে দোলনাতেই বসতে হলো,দিনার পাশে।
দিনা তো সবজায়গায় নিশানের পাশে বসতে পেরে নিজেকে বিউটিকুইন ভাবা শুরু করে দিয়েছে।
সবাই বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।কিন্তু নিশান বারবার তমার দিকে তাকাচ্ছে দেখে তমার খুবই আনইজি লাগছে।
কারণ,নিশানের চাহনি তমার কাছে মোটেও সুবিধার লাগছেনা।
হঠাৎ তমার ফোনে টু করে দুবার শব্দ হলো।তমা দেখলো তার ফোনে একটা ম্যাসেজ এসেছে।
“ডোন্ট ওয়ারি,এত ভয়ের কিছু নেই।আমি থাকতে কেউ তোর ক্ষতি করতে পারবেনা”
ম্যাসেজটা পরে তমার মুখে অজান্তেই হাসি ফুটে গেলো।কেননা,ম্যাসেজটা টা আর কেউ না আদনানই পাঠিয়েছে।কিন্তু তমা কিঞ্চিৎ অবাক হলো যে আদনান কীভাবে বুঝল তমার আনইজি+ভয় হচ্ছে!
আবার টুং করে ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো।
“আমি তোকে খুব ভালো করে চিনি তমু!তোর কীসে ভালো লাগে,কীসে খারাপ লাগে তা আমি খুব ভালো করেই জানি”
আদনানের কথাগুলো শুনে তমার ভয় কিছুটা কাটল।সে-ও অন্যদের মতো নরমালি কথা বলতে লাগল।
নিরু-আচ্ছা,চল না আজকে বিকালে আমরা কোথাও ঘুরতে যাই!
বাকিরা-হ্যাঁ,যাওয়া যায়!
তমা-সরি,আমি পারবনা যেতে।আমার বিকালে কোচিং আছে।
নিশান-একটাদিন কোচিং মিস দিলে কোনো সমস্যা হবেনা।আমরা সবাই বিকালে তিনশ ফিট যাবে,আর আমাদের সাথে তুইও যাবি!
“নাহ,তমু যাবেনা।আর একদিন কোচিং মিস দিলে অবশ্যই সমস্যা আছে।দুদিন পর তমু আর আবরারের টেস্ট এক্সাম।সো,ওদের কেউই যাবেনা”
হঠাৎ হঠাৎ বাগানে ঢুকতে ঢুকতে কথাটা কথাটা বলল আদনান।আদনানের কথা শোনার পর নিশান আরো কিছু বলতে নিলে আদনান বলে উঠল,
আদনান-তমু তোকে আম্মু ডাকছে।শুনে আয় তো একটু।আর আমার জন্য এক কাপ কফিও বানিয়ে আন,প্লিজ!
তমা উঠার আগেই দিনা উঠে পরল আর বলল,
দিনা-জান্টুস কফিটা আমি বানিয়ে দেই?
আদনান-আগ বাড়িয়ে কথা বলাটা আমি কী পরিমাণ হেইট করি তা তুমি খুব ভালো মতনই জানো।যাকে বলসি সে আনবে!তুমি যেমন চিপকায় আসো,তেমন চিপকায় থাকো।
দিনা রাগে গজগজ করতে করতে বসে পড়ল। আদনানের কথা শুনে সবারই খুব হাসি পেল।কিন্তু কেউই তা প্রকাশ করল না।
আর তমা মিটিমিট হাসতে থেকে কফি বানাতে চলে গেল।
চলবে,,,,,,,,,