#ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব)
#পার্ট_২২
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা
কোথায় গেল আমার মেয়েটা!এখনো তো আসছেনা।রাত ৮ টা বাজতে লাগল।কোথায় গেল আমার বাচ্চা মেয়েটা?
আবরার মুখ টিপে টিপে হাসতে লাগলো।
আবারকে হাসতে দেখে তুরিন বলে উঠল,
তুরিন-কী রে আবরার?তুই হাসছিস কেন?
আবরার-ইয়ে,নাহ মানিন তো বলছে তার বাচ্চা মেয়েটা কোথায় হারিয়ে গেল!কিন্তু যার কিনা দুদিন পর বিয়ে সে বাচ্চা হয় কেমন করে সেটাই বুঝতে পারছিনা!(ইয়ার্কি করে বলল)
আফসানা হাসিব-আহ,আবির!এতো সিরিয়াস মোমেন্টেও কেউ এভাবে ইয়ার্কি করে?দেখছোনা তোমার মানিন কতোটা টেনশনে পরে গেছে!এখন তো আমারও টেনশন লাগছে।মেয়েটা আবার কেনো বিপদে পরল না তো?
এবার তুরিনেরও খুব চিন্তা হতে লাগল।আসলেও তো রাত ৮ টা বেজে গেছে কিন্তু এখনো তমা আসছেনা কেন?তমা তো এমন মেয়ে না!কোথাও যদি আটকে পরে তাহলে তো অন্তত ফোন করে জানিয়ে দেয় যে দেরি হবে।কিন্তু!
আবরার-আচ্ছা,এমন হয়নি তো যে তমা রাস্তা ভুলে গেছে বা হারিয়ে গেছে?
তুরিন-গাধা,তমা কী বাচ্চা যে রাস্তা হারিয়ে ফেলবে কিংবা ভুলে যাবে?আর তাছাড়া সেটা হলেও তো ও একবার ফোন করে জানাতো তাইনা?গাধা একটা!
আবরার-হুম তাও ঠিক!কিন্তু ঐ যে মানিন বলল,তমা তো তার বাচ্চা মেয়ে তাই বললাম আরকি!(আবার মজা নিয়ে বলল)
আফসানা হাসিব-আবার?আবার ফাজলামি করছ আবির?
আবরার-আচ্ছা,আমি আর কিছু বলবনা।সো সরি!
অন্যদিকে
দিনা-সো,হিয়ার ইজ ইউর….
সামওয়ান-ইয়াহ!থ্যাংকস আ লট!
এই বলে সেই সামওয়ান তমার সামনে আসলো।তমা মুখ উঁচু করে দেখলো যে কে এই সামওয়ান!কে এই সামওয়ান সেটা দেখার সাথে সাথে তমা ৪৪০ ভোল্টেজের ঝটকা খেলো।
তমা অস্পষ্ট ভাষায় বলল,
তমা-নননিশশশশশাানননন ভাই?
নিশান তমার সামনে গিয়ে তমার দুপাশে দুহাতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
নিশান-ইয়েস,মাই জানপাখি!
তমার খুব রাগ লাগলো নিশানের কথা শুনে।
তমা-জাস্ট শ্যাট আপ।ডন্ট কম মি বাই দিস ওয়ার্ডস!গট ইট?(চিৎকার করে বলল)
নিশান এবং দিনা দুজনেই তমার কথা শুনে হাসতে লাগল।
নিশান-চড়ুই পাখি,তোমার গলা এখান থেকে একটা কাকও শুনতে পারবেনা!রাস্তার মানুষ তো দুরের কথা!
নিশান আরো বলল,
নিশান-ওয়েল মিস দিনা হক!থ্যাংকস আ লট!আমার এতো বড় একটা হ্যাল্প করার জন্য।নাউ,ইউ কেন গো ফ্রম হিয়ার!
দিনা-মোস্ট ওয়েলকাম মিস্টার নিশান কাবির!
এই বলে দিনা ঐ রুম টা থেকে বের হয়ে চলে গেল।
এখন ঐ ঘরটাতে শুধু নিশান আর তমা!
তমার খুব ভয় লাগছে!কেননা,নিশানকে তমা খুব ভালোভাবে না চিনলেও একটু হলেও চিনে।নিশান চাইলে আজ,এই মূহুর্তে তমার সম্মান নষ্ট করে দিতে পারবে!
নিশান নিজের সু্ট টা খুলে একটা চেয়ারের উপর রাখলো।তারপর তমার কাছে গিয়ে বলল,
নিশান-আহারে!খুব কষ্ট হচ্ছে না রে?দাঁড়া,সবকিছু খুলে দিচ্ছি এখনি!
এই বলে নিশান খুব অশ্লালীভাবে তমার শরীর থেকে দড়ি খুলতে লাগলো!নিশানের প্রতিটা ছোঁয়ায় তমার খুব অস্বস্তি লাগতে লাগছে।কিন্তু কিছু যে চাক করার নেই।এখন চাইলেও তলে পালাতে পারবেনা।
তমা কাঁদতে কাঁদতে নিশানকে বলল,
তমা-নিশান ভাই,আপনি কেন এমন করছেন?আমি আপনার কী ক্ষতি করেছি?কী ক্ষতি করেছি?
নিশান হাসতে হাসতে একটা সময় তমার শরীর থেকে সম্পূর্ণ দড়ি খুলে ফেলল।তমার দুহাত চেয়ারের সাথে জাপটে ধরে হিংস্র মুখে বলতে লাগল,
নিশান-তুই আমার কী ক্ষতি করেছিস জানতে চাস না?জানতে চাস?তাহলে শোন,তুই আমাকে শেষ করে দিয়েছিস!তোর আদনান ভাই না কে যেন সে আমাকে আমার বাসায় গিয়ে মেরে এসেছে।আমার মম-ডেড এন্ড আমার ফুল ফ্যামিলির সামনে আমাকে ছোট করেছে।আর সে এসবকিছু করেছে শুধু তোর জন্য!তাই তোকে আমি কীভাবে ছেড়ে দেই বল?বল কী করে ছেড়ে দেই?(চিৎকার করে বলল)
আদনান নিশানকে মেরেছে শুনে তমার মাথার উপর যেন বাজ পরলো।এতো কিছু হয়ে গেছে কিন্তু এসবের কিছুই তমা জানেনা!
তমা বুঝতে পারলনা কী বলবে!একটা মানুষ এতো নোংরা কীভাবে হতে পারে সেটা তমা নিশান আর দিনা কে না দেখলে বুঝতেই পারতোনা!
তমা বুঝল যে আর দেরি করলে তমার সাথে খুব বড় কিছু ঘটে যাবে!তাই তমা আশপাশটা খুঁজতে লাগলো।খুঁজতে খুঁজতে তমা একটা বোতল নিচে পেল!তমা বুঝলো যে হয়তো এটাই সেই স্প্রে যেটা দিয়ে তমাকে অজ্ঞান করা হয়েছিল!
তমা দেখলো যে নিশান রুম থেকে বের হয়ে গেল।এই সুযোগে তমা জানালার একদম কিনারায় চলে গেল।নিশান ও দিনা কেউই খেয়াল করেনি যে জানালাটা তারা আটকায়ইনি!
তমা-এই সুযোগ!জানালা দিয়ে আমাকে পালাতে হবে।নাহলে আজ আমার সম্মান ধুলোয় মিশে যাবে!(মনে মনে)
এই বলে তমা জানালা একদম কাছে এসে নাকে ওড়না চেপে ঐ স্প্রে টা পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিলো,যাতে করে নিশান এসে এই স্প্রে এর স্মেলে অজ্ঞান হয়ে যায়।আর “বিসমিল্লাহ”বলে জানালা দিয়ে লাফ দেয়!
চলবে,,,,,,,,