#বিবর্ণ_বসন্ত
নুসরাত জাহান লিজা
চব্বিশ পর্ব
ছত্রিশ.
ঋতু চক্রের পালাবদলে ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে পাল্টে অতিবাহিত হয়েছে প্রায় সাত মাস। মান অভিমানের পাঠ চুকিয়ে কবেই সন্ধি হয়ে গেছে দুটো প্রাণের! এই সাতটা মাস কেবলই দূরত্ব কমিয়ে কাছে থেকে আরও কাছে আসার গল্প। বন্ধুত্ব হয়েছে আরও পাকাপোক্ত, বোঝাপড়া অসাধারণ। কিন্তু একটা জায়গায়ই এখনও রয়ে গেছে বিশাল ব্যবধান। বন্ধুত্বের বাইরেও মনে গজিয়ে উঠা অনুভূতি গোপন রয়ে গেছে পরস্পরের কাছে। কেউই ধরা দিতে নারাজ। অন্বেষা তো আগে থেকেই নিজের ভেতরকার প্রলয় সামলে চলছে, হৃদয়ের ওঠাপড়া হৃদয়েই লুকিয়ে রাখতে রাখতে ক্লান্ত প্রায়। আবিদের অনুভূতি সম্পর্কে সন্দিগ্ধ ওর মন, তাই সেই উথলানো আবেগ প্রাণপণে চেপে রেখেছে, পৃথিবীর সবচেয়ে ওজনদার পাথর দিয়ে! তবুও বুঝি চাপা থাকে, মন যেন বড্ড বেশিই বেহায়া! মনের উপর এখন আর নিজের কর্তৃত্ব চলে না, কবেই চলে গেছে আয়ত্তের বাইরে!
ওদিকে আবিদ নিজের হৃদয়ের তোলপাড় সম্পর্কে তীব্র মাত্রায় উদাসীন! কোনভাবেই স্বীকার করতে চায় না। বড্ড প্রাণখোলা হাসি হাসতে পারে আজকাল। যেই রমনী বহুদিন পরে ওর জীবনের ভয়ংকর একাকীত্ব সরিয়ে দিয়েছে সুদূরে, ওর মৃত, ঘুমন্ত সত্তাকে জাগ্রত করেছে, ভুলে যাওয়া হাসি এনে দিয়েছে ওর ঠোঁটের কোণে, সেই রমনী ওর হৃদয়ের বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে কবেই! হেমন্তেও তাই ওর হৃদয়ে অবিরত ফুটছে বসন্ত ফুল। ধূসর সরে গিয়ে বড্ড রঙচঙে এখন ভেতরটা!
ভালোবাসা মানুষের জীবনে ফিরে ফিরে আসে বারংবার, নতুন রূপে, নতুন রঙে, নতুন গন্ধে কিংবা নতুন ঢঙে! ওর জীবনেও অতসী চলে গিয়ে সর্বগ্রাসী ভালোবাসা নতুন রূপে এসেছে অন্বেষার মধ্য দিয়ে আরও একবার। এবারে আর কোন ভুল করে আফসোসে পুড়তে চায় না, দহনে দহনে দগ্ধ হতে চায় না আবিদ। আর তাই তো ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেয় এবার মনের আগল খুলবে, নিজের একান্ত গহীনে লুকায়িত তড়পাতে থাকা অনুভূতির প্রকাশ ঘটাবে, কী যে প্রগাঢ় সে অনুভূতি!
সেই যে কালবৈশাখীর প্রলয় তাণ্ডবের পরে যেটুকু দূরত্ব তৈরি হবার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল, যেটুকু মেঘ জমেছিল হৃদয়ের আনাচে কানাচে, তা এক লহমায় সরে গিয়েছিল আবিদের সেই টেক্সটে। অফিসেও সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে। মাঝে দু একজন সহকর্মী যে টিপ্পনী কাটে না তা নয়, তবে সেসব থোড়াই কেয়ার করে ও। সেই ছোট্ট দূরত্বই না দু’জনকে অনুভব করাল, ওরা কেবল আর কেবল দুজনেরই! কিন্তু উভয়েই যেন ধনু ভাঙা পণ নিয়ে বসে আছে মনের কপাট খুলবে না, কিছুতেই না!
এসব বলা না বলা দোটানা আর দোলাচালে জেরবার জীবন, তখনই আনন্দ অন্বেষার বাসায় এলো।
“কী রে! তোর তো দেখাই নাই, লেখক সাহেবের জন্যই এখন তোর যত সময়। আর আমরা তো কেউ নই।” কপট অভিমান নিয়ে বলল আনন্দ।
আনন্দের সামনে বসতে বসতে অন্বেষার উল্টো খোঁচা, “যা ব্যাটা, তোরেই তো কোথাও পাওয়া যায় না। না ফেসবুক, না হোয়াটসঅ্যাপে। তা অমাবস্যার চাঁদের আজ কী মনে করে কৃপা হলো? এদিকে কী মনে করে এলেন, পথ ভুলে?”
আনন্দ হেসেই উত্তর দিল, “আমি আসলে আসলাম তোরে দাওয়াত দিতে। এখন আন্দাজ কর তো ঝটপট কীসের দাওয়াত?”
বন্ধু মহলে বরাবরই কিপ্টেমির বাদশা বলে পরিচিত আনন্দ, হাজার বলে কয়ে, মেরে কেটেও ওর কাছ থেকে কোন ট্রিট আদায় করা যায় নি! নিজের বাসায় নিয়ে গেছে মাঝেসাঝে। সেই আনন্দ যখন বাড়ি বয়ে দাওয়াত দিতে আসে তখন বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠা খুবই স্বাভাবিক। শুধু কপালে না, কপাল ছেড়ে মাথায় উঠতে উঠতে সীমা ছাড়িয়ে ঝপাৎ করে ভূপাতিত হলেও খুব একটা অবাক হবার কিছু থাকবে না! তবে অন্বেষার চোখ কপালে উঠতে উঠতে নেমে গেল, কারণ ও আন্দাজ করতে পেরেছে উপলক্ষটা। বিস্ময় বদলে গিয়ে জায়গা করে নিল প্রসন্ন অনাবিল হাসি।
“দোস্ত, তুই বিয়ে করতেছিস? সিরিয়াসলি? মেয়ে কে?” উচ্ছ্বসিত গলায় বলল অন্বেষা।
“তুই ফাইজলামি করিস? মেয়ে আর কে হবে?”
“তোর গার্লফ্রেন্ড? তুলি? তুই না ব্রেকআপ করতে চাইলি?” এবার গলায় বিস্ময় ফুটল।
“একটা সম্পর্ক কি কাঁচের টুকরা, যে রাগ উঠল, আর আছাড় দিয়ে ভাইঙ্গা ফেললাম? এত বছর এত প্যারা সহ্য করছি কি ছাইড়া দিতে?”
“যাক বাবা! মাথামোটা আনন্দের তবে বুদ্ধিটাও খুলল! তা এই সুমতি কবে হইল?”
“মাঝে খুব ঝগড়া হতো, ঠুকাঠুকি লাগত অল্পতেই। এরপর সেদিন দেখলিই তো থ্রেট ট্রেট দিয়ে চলে গেল। এরপর কিছুদিন কথা বন্ধ, মুখদর্শনও বন্ধ। সেই সময়ই বুঝতে পারলাম আসলে এসব প্যারাই আমার ভালো লাগছে। আমি সারাজীবন ভর ওর ভালোবাসা মাখা প্যারা সহ্য করতে চাই।” বলতে বলতে কেমন আচ্ছন্ন হয়ে গেল আনন্দ।
সত্যিকারের ভালোবাসা বোধহয় এরকমই হয়। আচ্ছা, ওর মায়ের কি কখনো অনুশোচনা হয়, ফেলে যাওয়া সময় আর হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তের জন্য কষ্ট হয়? দীর্ঘশ্বাস কি বয় না বুক চিঁড়ে?
সেই রাতে বাবার সাথে বসে কথা বলছিল অন্বেষা, সহসা প্রশ্নটা মাথায় আসতেই করে ফেলল, “বাবা, তুমি কি এখনো মাকে ভালোবাস?”
আচমকা এরকম প্রশ্নে কিছুটা থমকে গেলেন বাবা, এরপর স্বভাব সুলভ হেসে দ্বিধান্বিত গলায় বললেন,
“হয়তো, হয়তো নয়!”
কিছুটা থেমে আবারও মুখ খুললেন,
“তবে ওর কাছে আমি সবসময়ই কৃতজ্ঞ থাকব তোর মত চমৎকার একটা উপহার আমায় দিয়েছে বলে।” এবার আর কোন হাসি নেই, কেমন অদ্ভুত এক আচ্ছন্নতা চোখে-মুখে!
“ভালোই যদি বাসো, তবে তোমরা আলাদা হয়ে গেলে কেন?”
“নিজেদের মধ্যে মতের মিল হচ্ছিল না, তিক্ততা বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, যেটুকু সম্মান অবশিষ্ট আছে তাই নিয়ে দূরে যাওয়াই শ্রেয় মনে হয়েছিল, দুজনেরই।”
মুহূর্তের জন্য থেমে বললেন,
“আমার একটা কথা রাখবি, মা?” স্বরে দ্বিধার ছাপ স্পষ্ট।
অন্বেষা মাথা নেড়ে আস্বস্ত করায় বললেন,
“তোর মা তোকে বাস্তবিকই ভালোবাসে। তুই ওর প্রথম সন্তান। তোর কথায় ও কষ্ট পায় ভীষণ। একবার অন্তত ওকে সময় দে? দেখবি হালকা লাগবে। মান অভিমানে শুধু শুধু কষ্ট বাড়িয়ে কী লাভ বল? আর তাছাড়া দোষ তো আমাদের দুজনেরই, ও একাই সাফার করবে কেন?”
“তুমি তবে জীবনে আগে বাড়লে না কেন? উনি তো ঠিকই নিজের জীবন গুছিয়ে সংসার পেতেছেন।” ভেজা ভেজা গলায় আক্ষেপ ঝরল ওর গলায়।
“আমার পাশে তো আমার ছোট্ট রাজকন্যা ছিল রে, মা। ওর পাশে কেউ ছিল না। তাছাড়া সব মানুষেরই জীবনে এগিয়ে যাবার অধিকার আছে। আর সামনে এগিয়ে গেছে বলেই সব ভুলে গেছে তা তো নয়। সামনের জীবন যতই সুন্দর হোক পেছনে ফেলে আসা এক টুকরো সুখই ভীষণ অমূল্য।”
আর কথা বাড়ায় না অন্বেষা, সম্মতি দিতেই বাবা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। অন্বেষা মনে মনে বলল, “তোমরা আলাদা না হয়ে গেলে খুব সুন্দর একটা পরিবার হতাম আমরা। পরিপূর্ণ এক সুখী পরিবার। আলাদা হবার আগে আমার কথাটা কেন ভাবনি তোমরা?”
একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো বুক বেয়ে।
সাইত্রিশ.
এসবের মাঝে একদিন আবিদের বাসায় গেল অন্বেষা, সেই ছাদে বসে কথা বলছিল দুজন। ছায়া ছায়া লালচে বিকেল, ডুবন্ত সূর্য তার লালচে আভা ছড়িয়ে দিয়েছে পুরো আকাশ জুড়ে।
“এখন কেমন চলছে দিনকাল?”
“ভালোই তো চলছে, আপনার কেমন চলছে?”
“আগের চেয়ে ঢের ভালো।” কথাটা অন্বেষার কানে যেন মধু বর্ষণ করল, কী যে ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে পড়ল সমস্ত হৃদয় পুরীতে !
আনমনে বলেই ফেলল,
“বিষাদপুত্রের বিষাদ তবে ঘুচল!”
বলেই নিজের ভুলটা বুঝতে পারল। ইশ! মনের মতো নিজের মুখেও আর লাগাম টানা যাচ্ছে না, যখন তখন যা খুশি ইচ্ছেমতো বেরিয়ে আসছে, ওকে নাজেহাল করেই যেন মনের শান্তি! অন্বেষার নিজের মনকে নিজেরই ঘোরতর শত্রু বলে মনে হলো! কী লজ্জা! কী লজ্জা!
“বিষাদপুত্র? কে সে?” অনিশ্চিত গলা আবিদের।
অন্বেষা মুহূর্তকালের জন্য থমকে গেলেও সামলে নিল দ্রুত,
“আছে একজন, সারাক্ষণ আকুণ্ঠ ডুবে থাকে বিষাদে। ”
“তুমি আমার কথা বলছ? বিষাদপুত্র! আমার ভালো লেগেছে নামটা। আমাকে না জানিয়ে আমার নাম রেখেছ, এটা কিন্তু একদমই ঠিক করনি!”
গোমড়ামুখো লেখক আবিদ শাহরিয়ার তবে ঠাট্টা মশকারাও করতে জানে! মুখে সেই ট্রেডমার্ক হাসি, যে হাসিতে বুঁদ হয়ে কাটিয়ে দেয়া যায় সহস্র বছর!
“যার নাম রেখেছি, সে যদি রেগে যায়! তাই বলিনি।”
“নাম তো বদলে দিয়েছ, আর কী কী করেছ আমার অজান্তে।” ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল আবিদ।
“সে এখন বলা যাবে না। আগে সময় হোক, তখন নাহয় বলব!”
মুখে এই কথা বললেও মনে মনে বলল, “আপনি নিজেও জানেন না, আপনি কী করেছেন। আমি তো আপনাতে ডুবে গেছি কবেই! নিঃশেষ হয়ে গেছি! আপনি কবে বুঝবেন?”
আবিদও মনে মনে আওড়ে চলেছে, “তোমার সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি আমি। তোমার ডাকে সাড়া দিতে ব্যাকুল হয়ে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছি অহর্নিশ!”
আনন্দের বিয়ে যেতে না যেতেই আবিদ জানাল সোহানের বিয়ে। এই মাসেই, আর দু’সপ্তাহ পরেই। এটা কী বিয়ের মরশুম চলছে নাকি? এই বিয়ের মরশুমেই নিজের বিয়েটাও যদি সেরে ফেলা যেত! নিজের মনেই হেসে ফেলল ও৷ আগে তো আবিদকে বলতে হবে, আসল জিনিসেরই খবর নেই, আর ও কিনা বিয়ে পর্যন্ত ভেবে ফেলেছে! ঢাল তলোয়ার ছাড়াই যুদ্ধে নেমে পড়া বুঝি একেই বলে! নাহ্! এবার বলেই ফেলতে হবে, যা হয় হোক!
কিন্তু চাইলেই কী আর সব পাওয়া যায়, সমুদ্রের তীরে বালি দিয়ে ঘর বানালে পলকা ঢেউয়ের দোলায় ঠিকই তা হারিয়ে যায়, গুড়িয়ে যায়। সেরকমই এক দমকা হাওয়া এলো হঠাৎ করেই, সব ধুয়ে মুছে ভাসিয়ে নিতে!
সময় গড়িয়ে যাচ্ছে নিজের নিয়মেই, সূর্য ডুবে চাঁদ উঁকি দিচ্ছে, দিন গড়িয়ে রাত, রাত পেরিয়ে আবার দিন। কিন্তু কোথাও যেন একটা তার কেটে গেছে, সুরগুলো বাজছে বড্ড বেসুরোভাবে। আবিদ যেন কিছুটা বদলে গেছে হঠাৎ করেই, খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসা আবিদ আবারও যেন নিজের চারপাশটা আবৃত করে নিয়েছে খোলসে!
অন্বেষার মনে এক অদ্ভুত ভয় আর শঙ্কা খেলা করতে থাকে! ভয় থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় এবার তবে খুলে দেবে আগল, ভেতরের চাপা অনুভূতি যত সবটা উগড়ে দেবে আবিদের কাছে। বাবাও সম্মতি দিয়ে দিয়েছেন, বিষাদ পুত্রকে তাঁর মনে ধরেছে খুব। যদিও মেয়ের পছন্দে বড্ড ভরসা করেন!
আটত্রিশ.
দেখতে দেখতে আবারও বসন্ত চলে এসেছে। অন্বেষা দুরুদুরু বুকে নিজেকে সাজিয়ে টকটকে লাল গোলাপ নিয়ে চলে এলো আবিদের বাসায়। পাঁচদিন ধরে কোনরকম যোগাযোগই হচ্ছে না। আবিদের মতিগতি কিছুই বুঝতে পারছে না। সোহানকে ফোন করেও ফায়দা হলো না, নতুন বিয়ে করে বেচারা ছুটি কাটাচ্ছে। আজ অবশ্য থাকবে সোহান, দু’দিন আগে কথা হয়েছে ওর সাথে।
কিন্তু বাসায় ঢুকার পর থেকেই কী এক আশঙ্কায় বারবার কেঁপে উঠছে ভেতরটা, ওর আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে সোহান এসে জানাল,
“স্যার নেই। উনি দেশের বাইরে গেছেন।”
অন্বেষার মনে হচ্ছিল কিছু একটা ঠিক নেই, “কবে আসবে? আর হঠাৎই?”
“বলে গেছেন আর ফিরবেন না, আপনার জন্য একটা চিঠি রেখে গেছেন।”
সোহানের বাড়িয়ে দেয়া চিঠিটা কাঁপা কাঁপা হাতে নিল ও, পৃথিবীটা মনে হয় থমকে গেছে, অসাড় হয়ে আসা হাতেই চিঠিটা খুলল, এর তো একটা না একটা কারণ অবশ্যই থাকবে। সেটা জানাটা খুব জরুরী।
চিঠি শেষ করতেই ধপ করে বসে পড়ল নিচেই, এটা নিশ্চয়ই খুব বাজে একটা স্বপ্ন, এসব কখনোই সত্যি হতে পারে না।
কিন্তু তাই বা কী করে হবে! ওই তো সোহান দাঁড়িয়ে, চোখে পানি নিয়ে। দম বন্ধ হয়ে আসছে কেন ওর? চারপাশটা ঝাপসা হতে হতে মিলিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ!
……….
(