বিবাহিত চুক্তি এক্সট্রা পর্ব

#বৈবাহিক_চুক্তি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্বঃ extra

সায়ান আর ইনান কাধে কাধ মিলিয়ে হেটে আসছে, আর সামু এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, সামনের মানুষটি যে অবাক হয়নি তা কিন্তু নয়। তারতো চোখের পলকই সরছে না, কালো আর লালের মিশ্রণে শাড়ি, হাত ভর্তি লাল চুড়ি আর চোখে মোটা করে দেয়া কাজল। সবমিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে, আচ্ছা পরি আর ওর মধ্যে কাকে বেশি সুন্দর লাগতো! নাকি কোন অপ্সরী ভুল করে পৃথিবীতে নেমে এসেছে!

রুশি একবার সামুর দিকে তাকাচ্ছে তো একবার ওই লোকটির দিকে তাকাচ্ছে, দুজনের মধ্যে যেন চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার কম্পিটিশন চলছে, কেউ একজন পলক ফেললেই হেরে যাবে। রুশির চোখ হঠাৎ সায়ানের দিকে গেলো, এই হাদারাম সেই যে তখন থেকে কথা বলেই যাচ্ছে আর কোন হুশ নেই, এদিকে নিজের বোন যে প্রেমের পুকুরে হাবুডুবু খাচ্ছে, কই তাকে বাচাবে তা না নিজের মতো কথা বলেই যাচ্ছে। আচ্ছা এই এতো হেসে কথা বলছে, কত সুন্দর লাগছে। আর আমার সামনে আসলেই মুখ দিয়ে করলা ঝরে। আবার চুক্তির বিয়ে করে। তোর চুক্তির গুষ্টির ষষ্টি করি আমি।

রুশি গলা ঝেড়ে সামুর কাধে হাত রেখে বললো
“ননদিনী তাকিয়েই থাকবে নাকি গেস্টকে ভেতরেও আসতে দিবে! ”

“হুম তাকিয়ে ছিলাম না তো, জাস্ট ভাবছিলাম কে আর কি!” সামু ঝটপট সরে গিয়ে আমতা আমতা করে বললো।আর দুই বন্ধু সেই কথা বলতে বলতেই ভেতরে চলে গেলো, সামু রান্নাঘর দিকে হেটে আসছে আর রুশি

“নাহ, তাকিয়ে ছিলাম তো আমি, তবে কেউ একজন বলেছিলো যে সে এমনি সাজছে কিন্তু বেল বাজার সাথে সাথে সেই কিন্তু দৌড়ে এসেছে ”

“কি যে বলোনা, আমিতো এমনি আসলাম কে এসেছে এই সময়ে ”

“আজকেই হঠাৎ মনে হলো কে এসেছে তা দেখার কথা! বুঝি ননদিনী সব বুঝি, তা বলেন যার জন্য এত সাজুগুজু তার নামটি কি আর কোথায় এমন সুপুত্রের দেখা মিললো আপনার? ”

সামু নত মস্তকে বলে উঠলো
“উনার নাম ইনান চৌধুরী, উনি একজন প্রফেসর এবং বিজনেসম্যান।”

“উনিইই… এখন থেকেই উনি? বাহ!”

“ভাবিইই, বলবো না কিন্তু ”

“নাহ থাক আর মজা করবো না তুমি বলো ওই ওনার সাথে দেখা কোথায় হয়েছে তোমার?”

“তিনবছর আগে আমি দাদাজির সাথে বিজনেস টুর এ গিয়েছিলাম ডেনমার্কে। পরে গার্ডদের নিয়ে সেখানে মার্কেট করতে গিয়েছিলাম। লেডিস কর্নারের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম হঠাৎ আমার হ্যান্ডবেগ নিয়ে একজন চলে যায় আর আমি তার পিছনে দৌড়াতে থাকি। গার্ডরা পার্কিং সাইডে ছিলো তাই আমাকে দেখেনি। দৌড়াতে দৌড়াতে কখন যে মার্কেট থেকে অনেক দূরে চলে এসেছি বুঝতে পারিনি।

সেখানকার কিছু চিনিনা এদিকে চোর তো ব্যাগ নিয়ে চলে গেছে, ফোন করারও সুযোগ নেই। রাস্তায় বসে ছিলাম অসহায় এর মতো। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয় আর বৃষ্টিতে ভিজা ছাড়া আর কোন উপায়ও নেই, খুব কান্না পাচ্ছিলো আমার। তখন দেখি মাথার উপর বৃষ্টি পড়ছে না কিন্তু পাশে ঠিকই পড়ছে। উপরে তাকিয়ে দেখি একটা ছেলে বিরক্তি ভংগি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে পড়ি, আর ভয়ের চোটে ইংলিশ ভুলে গেছি তাই বাংলায় বলে ফেলি

“আমার হ্যান্ডবেগ চুরি হয়ে গেছে আর আমার কাছে ফোন নেই, কি করবো বুঝতে পারছিনা ”

“বাঙালি!! ”

“জী “মাথা নিচু করে

“তো এখানে বসে আছেন কেন? আশেপাশে পুলিশ স্টেশনে তো যেতে পারতেন ”

“আসলে এমনটাতো মাথায় আসেনি তার উপর বৃষ্টি হচ্ছে ”

“আশেপাশের ছেলেগুলো আপনাকেই টার্গেট করেছিলো, এখানে নিরাপদ নন আপনি। আসুন বাড়ি পৌছে দেই”

এরপর লোকটি আমাকে ফোন দেয় যাতে কল করে এড্রেস জানতে পারি, এভাবেই তার নাম্বার পাই। তারপর থ্যাংকস বলার জন্য তাকে কফিশপে ডাকি আর তারপর থেকেই কথা শুরু হয় আর এখন পর্যন্ত চলছে।

“বাব্বাহ এতো সিনেমার কাহিনী। তা শুধু কথাই চলছে নাকি অন্যকিছুও চলছে ”

“যাও তো এখান থেকে, আমি চা বানিয়ে নিয়ে আসছি ”

“হ্যা হ্যা অবশ্যই, স্পেশাল মেহমান এসেছে না!”

বলেই রুশি বেরিয়ে পড়লো। ভালোবাসাটা হয়তো এমনি হুট করে হয়ে যায় যে নিজেও টের পায়না। আচ্ছা ও কি সায়ানকে ভালোবেসে ফেলেছে! নাকি প্রেমে পড়েছে? ইদানীং তাকে দেখতে, তার কথা শুনতে আর পর্যবেক্ষণ করতে এত ভালো লাগে কেন তাহলে!!

#চলবে

(আজকের পার্টটা অনেকেই বলেছেন ছোট হয়েছে তাই এক্সট্রা পার্ট দিলাম)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here