বিষাক্ত প্রেম পর্ব ১৪+১৫

পর্ব ১৪+১৫
#বিষাক্ত প্রেম ২

Urme prema (sajiana monir)

পার্ট: ১৪

আজ ইয়াশ ও তার পরিবার কানাডা থেকে আসছে ।ইচ্ছা না থাকার শর্তেও তাদের স্বাগতম করতে হচ্ছে সবার ।
যা হচ্ছে সব সেহেরের জ্বিদের বসে হচ্ছে ।আরহাম ও সবাইকে বলে দিয়েছে সেহের যেমনটা চাইছে সব যেন তার মন মত হয় ।
সেহেরের বাবা ও বেশ রেগে আছে সেহেরের উপর তিনি বেশ কয়েকবার সেহের কে বুঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু সেহের নিজের জ্বেদ ধরে আছে ।সে ইয়াশ কেই বিয়ে করবে আর যদি তা না হয় তাহলে নিজের কোন ক্ষতি করে বসবে সে ।তাই সেহেরের বাবা রেগে মেয়ের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে ।

কিছুসময় পরই বাড়ির সামনে বড় কালো গাড়ি থামে ।গাড়ির শব্দ পেয়েই সেহেরের বাবা দরজার দিকে এগিয়ে যায় ।বাড়িতে নতুন লোকজন আসছে শত হলেও তাকে অপমান তো করতে পারেনা কিন্তু সব কিছু মেনে ও নিতে পারছেনা !
আজ শুধু আরহাম বলেছে বলেই সেহেরের সব কথা মেনে নিচ্ছে ।আরহামের মাথায় কি চলছে শুধু আরহামই জানে !
দরজার সামনে যেতেই দেখে এক যুবক দাড়িয়ে আছে পিছনেই এক ভদ্র লোক আর ভদ্র মহিলা দাড়িয়ে আছে ।ভদ্র মহিলাকে দেখে মনে হচ্ছে কানাডিয়ান বেশ ফর্সা গায়ের রং ।যুবকটির গায়েঁর রং শ্যামবর্ন উচ্চতায় বেশ উচাঁলম্বা ।গায়েঁর রং শ্যামবর্নের হলেও দেখতে বেশ হেন্ডসাম মুখের মধ্যে এক ‌অদ্ভুদ মায়া রয়েছে ।

ছেলেটি আশিস আহমেদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে

-“হ্যালো আংকেল আমি ইয়াশ চৌধুরী ।”

আশিস আহমেদ হাত মিলিয়ে মৃদ্যু হেসে উত্তর দেয়

-“আমি আশিস আহমেদ ,সেহেরের বাবা !
প্লিজ কাম ইন ।”

ইয়াশ আর তার বাবা মা ভিতরে প্রবেশ করে ।হল রুমে সোফায় বসে ইয়াশ আশেপাশে চোখ ঘুরিয়ে সেহেরকে খুজঁছে কিন্তু সেহেরের দেখা মিলে না ।
কিছুসময় পর সেহের নাস্তার ট্রে হাতে নিয়ে হল রুমে প্রবেশ করে ।সেহের হল রুমে প্রবেশ করতেই ইয়াশ তার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে । এত বছর সেহেরকে শুধু ওয়েস্টান ড্রেসে দেখেছে আজ প্রথম বার সেলোয়ার স্যুটে দেখছে চোখ সরাতে পারছে না তার থেকে। ইয়াশ ঠোঁট নাড়িয়ে বলে
-“ইউ লুকিং সো প্রিট্রি !”
উত্তরে সেহের ইয়াশের দিকে তাকিয়ে শুধু মুচকি হাসি দেয় ।
ইয়াশের মা সেহেরকে ইয়াশের পাশে বসায় ।দুই পরিবারের মধ্যে আলাপ চলতে থাকে ।এক পর্যায় ইয়াশের বাবা জানায় আজই তারা সেহের আর ইয়াশের আকদ করাতে চায় ।আশিস আহমেদ বিভিন্ন বাহানা দেখায় যাতে আকদ না হয় কিন্তু ইয়াশের পরিবার নাছোড় বান্ধা তারা কোন ভাবেই মানছেনা ।তারা আজই যে কোন ভাবেই হোক না কেন আকদ করিয়ে রাখবে ।সেহেরও তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মতি দেয়। আশিস আহমেদ সেহেরকে বেশ কয়েকবার চোখ রাঙ্গিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করে কিন্তু সেহের সেই নিজের জ্বিদ নিয়ে বসে আছে ।
সেহের খুব ভালো করে জানে আরহাম চুপ থাকবেনা সে কিছুনা কিছু অবশ্যই করবে ।সে চায়না আরহামের জীবনের সাথে জড়াতে ।তাই সেহের জানায় আজই সে ইয়াশের সাথে আকদ করবে ।
আসিশ আহমেদের সেহেরের উপর বেশ রাগ হচ্ছে ইচ্ছে করছে গালে ঠাটিয়ে দুটো দিতে কিন্তু পরিস্থীর কথা বিবেচনা করে চুপ করে থাকে ।
কাজী কে ডাকা হয় ।কাজী আসতে আসতে সেহের ও রেডী হয়ে নেয় ।তেমন আহামরী কোন সাজগোজ করে নি সেলপড়নে জামদানী গেলাপী রং এর শাড়ি আর চোখে হালকা কাজল আর ঠোটেঁ হালকা লিপস্টিক চুল গুলো খোপা করা এই সামান্য সাজসজ্জায় কোন অপ্সরী থেকে কম লাগছেনা ।
ইয়াশেক মা সেহেরকে যেই ইয়াশের পাশে বসাবে তার আগেই কেউ সেহেরকে টান দিয়ে পাশের সোফায় বসায় হঠাৎ এমন কিছু হওয়ায় সেহের বেশ চমকিয়ে যায় ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখে আরহাম বসে আছে ঠোঁটের কোনায় সব সময়ের মত পাগল করা বাকাঁ হাসি ।
সেহের রেগে আরহামের কাছ থেকে যেই উঠতে নিবে আরহাম সবার সামনে সেহেরের কমোড় চেপে ধরে নিজের আরো কাছে টেনে নিয়ে আসে ।সেহের আশে পাশে তাকিয়ে দেখে সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে ইয়াশ আর তার পরিবার ও অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ।
সেহের আরহামের দিকে তাকিয়ে দাতেঁ দাতঁ চেপে ফিসফিস করে বলে

-“আমাকে ছাড়ুন !
সবাই দেখছে ।”

-“তো দেখতে দেও !
আই ডোন্ট কেয়ার ।”

-“কি তামাশা শুরু করেছেন ?
ছাড়ুন আমাকে !”

-“তামাশা আমি করছি না তুমি করছো ?”

সেহের অগ্নিদৃষ্টিতে আরহামের দিকে তাকিয়ে থাকে ।আরহাম বাকাঁ হেসে বলে সেহেরের ঠোঁটে আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে বলে

-“জান এখনো তো তামাশার কিছুই করলাম না আসল তামাশা তো এখন শুরু হবে ।
আর এখন এখানে যা যা হবে সব কিছুর জন্য তুমি আর তোমার জ্বেদ দায়ী থাকবে ।”

আরহাম সেহেরকে নিজের আরো কাছে চেপে ধরে হ্যলান দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে জোর গলায় বলে

-“কাম ইন গাইসস“

সাথে সাথে কালো পোশাক পড়া ২৫-৩০ জন লোক ভিতরে প্রবেশ করে ।বাড়ির সবাই বেশ অবাক হয় ।
সেহের আরহামের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচঁকিয়ে জিগাসা করে

-“এসব কি ?
এরা কারা ? আর এখানে কি করছে ?”

-“উফফ জান এত প্রশ্ন এক সাথে করলে কি করে জবাব দিবো বলতো ?”

-“কথা না পেঁচিয়ে সরাসরি বলেন উনারা কারা আর এখানে কেন এসেছে ?”

-“নিজের চোখেই সবটা দেখে নেও ।”

আরহাম সেহেরের দিকে তাকিয়ে বাকাঁ হেসে ।লোকগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলে

-“গাইস টেক ইউর পজিশন ।”

সাথে সাথে লোকগুলো পুরোবাড়ি ঘিরে ফেলে ।সেহের ছাড়া সবার মাথায় পিস্তল ধরে ।

আরহাম সবার উদ্দেশ্য বলে

-“কেউ যদি টু শব্দ করে তাহলে সাথে সাথে গুলি মাথার খুলি ভেদ করবে ।”

সেহের এসব দেখে আর আরহামের কথা শুনে ভয়ে কাপঁছে আরহাম থেকে এক পা এক পা করে দূরে যেতে লাগে আরহাম খপ করে সেহেরকে ধরে ফেলে ।সেহেরকে নিজের কাছে টেনে আনে ।সেহের নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে ।আরহাম দাতেঁ দাতঁ চেপে বলে

-“শুধু শুধু এনার্জি নস্ট করছো ।এই জন্মে তো আমি তোমাকে ছাড়ছিনা ।
এবার বলো বিয়েতে রাজি কি না ?”

-“আপনার মত বাজে লোক আমি দেখিনি ।
মরে যাবো তারপর আপনাকে বিয়ে করবোনা !

-“সেহের আবারো জ্বেদ করছো !
তোমার এই জ্বিদের জন্য আজ এতগুলো মানুষ মৃত্যুর মুখে ।”

-“আপনি একটা নিচু অসভ্য লোক
আমি নিজেকে শেষ করে দিবো কিন্তু আপনাকে বিয়ে করবোনা !”

-“বিয়ে তো তুমি আমাকেই করবে !
তুমি কি ভেবেছো এই স্টুপিডের সাথে বিয়ে পড়াতে কাজী এসেছে ?
নো নো বেবী কাজীকে আমি পাঠিয়েছি আমাদের বিয়ের জন্য ।”

আরহামের কথা শেষ হতেই ইয়াশ রেগে চেচিঁয়ে বলে

-“নিজের সিদ্ধান্ত সেহেরের উপর চাপিয়ে দেওয়ার তুমি কে ?সেহের যেহেতু বলছে ও তোমাকে পছন্দ করে না তাহলে কেন বারবার বিরক্ত করছো ।
সেহের আমার হবু স্ত্রী ওকে বিরক্ত করলে এর ফল ভালো হবে না ।
তুমি জানো না আমি কে !
আমি তোমাক…..”

আরহাম ইয়াশকে আর কিছু বলার সুযোগ দেয়না সাথে সাথে ইয়াশের কলার চেপে ধরে রেগে চেচিঁয়ে বলে

-“আওয়াজ নিচু করে কথা বল !
তুই চিনিস না আমি কে !
আর একবার আমার সেহেরের নাম মুখ দিয়ে উচ্চারন করলে তোর জ্বিব্হা টেনে বের করে ফেলবো ।
চুপ চাপ হাটু ভেঙ্গে মাথা নিচু করে বসে থাক ।না হয় আজই তোর জীবনের শেষ দিন হবে ।”

সেহের আরহামের কাছে যেয়ে বিচলিত হয়ে বললো

-“দে..দেখুন আ..আরহাম জোর করে ভালোবাসা পাওয়া যায় না ।”

-“আমি তোমাকে জোর করেই আদায় করবো !
তুমি ভালোবাসো আর না বাসো তুমি আমার থাকবে ।”

সেহের এবার বিরক্ত হয়ে চেচিঁয়ে বলে

-“আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না ।”

-“এটাই কি তোমার শেষ কথা ?”

-“হ্যা “

-“অকে ঠি ক আছে এখন যা হবে সব কিছুর জন্য তুমি দায়ী থাকবে ।”

আরহাম ইয়াশের দিকে আঙ্গুল ইশারা করে লোকগুলোকে বলে

-“ও কে ততক্ষন পর্যন্ত মারো যতক্ষন পর্যন্ত না ও মরে না যায় ।ওর শরীরের প্রতিটা হাড় গুড়ো গুড়ো করে দেও ।”

আরহামের কথা ‌অনুযায়ী লোকগুলো ইয়াশকে মারতে শুরু করে ।সেহের দৌড় দিয়ে থামানোর চেষ্টা করলে আরহাম তার হাত টেনে ধরে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে সেহেরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে

-“জান শুধু শুধু বৃথা চেষ্টা করতে চাইছো কেন বলো তো ?
ওরা আমি না বলা পর্যন্ত থামবে না ।আমি ততক্ষন পর্যন্ত থামতে বলবোনা যতক্ষন না তুমি বিয়েতে রাজি হবে ।তুমি তো বিয়েতে রাজি হবেনা তো এখন এই সিন ইনজয় করো ।”

লোকগুলো ইয়াশকে মেরে রক্তাক্ত করে ফেলেছে ।বাড়ির সবাই তাকিয়ে দেখছে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা কারন আরহাম আগেই বলেছে কেউ টু শব্দ করলে গুলি করবে ।সেহের ইয়াশের মারগুলো সয্য করতে পারছেনা সে কান্না করছে আর বার বার আরহামের কাছে আকুতি মিনুতি করছে ইয়াশকে ছেড়ে দিতে কিন্তু আরহাম নিজের সিদ্ধান্তে অটল ।যতক্ষন পর্যন্ত না সেহের বিয়েতে রাজি হবে ততক্ষন এমনই চলবে ।
পাশ থেকে রুশা জ্বিদে নিজের হাত কচলাচ্ছে কিছু বলতে পারছেনা ।
সেহের কান্না করতে করতে বলে

-“প্লিজ আরহাম ইয়াশকে ছেড়ে দিন আমি আপনার পায়ে পড়ছি ।
প্লিজ আরহাম ।”

-“উহু জান যতক্ষন না তুমি বিয়ের জন্য রাজি হবে এমন চলবেই ।”

একটা লোক লোহার মোটা রড নিয়ে ইয়াশের দিকে এগিয়ে আসছে যেই ইয়াশের মাথায় বারি মারতে নিবে হঠাৎ সেই সময় সেহের চিৎকার করে বলে

-“স্টপপপপ
প্লিজ স্টপ আ…আমি রাজি ।
আ..আরহাম আমি বিয়েতে রাজি !
প্লিজ ইয়াশকে মারবেন না ।”

আরহাম শব্দে করে হেসে বলে

-“দ্যটস মাই গার্ল ।
জান তুমি আগে যদি রাজী হতে তাহলে এতকিছু হতোনা ।”

আরহাম লোকগুলোকে থামতে বলে লোকগুলো ইয়াশকে ছেড়ে দেয় ।
আরহাম কাজীকে বলে

-“কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন ।”
কাজী নিজের কাজ শুরু করে দেয় ।কাজী সেহেরে কবুল বলতে বললে সেহের চুপ করে থাকে ।তার চোখ থেকে টুপটপ করে পানি ঝোড়ছে ।আরহাম সেহেরকে হলে

-“জান কবুল বলো নয়তো ইয়াশশশ”

আরহাম আর কিছু বলতে পারে না তার আগেই সেহের আরহামের দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে দাতেঁ দাতঁ চেপে রেগে বলে

-“কবুল …কবুল …কবুল !”

-“উফফ জান এত তাড়া আমার হওয়ার জন্য ! “

সেহের কাবিননামায় সাইন করার সময় রুশার দিকে অশ্রুভরা চোখে তাকিয়ে মনে মনে বলে

-“সরি ।
সরি দি আমি পারলাম না আমার কথা রাখতে ।
তোমার ভালোবাসা তোমাকে ফিরিয়ে দিতে পারলাম না ।
আমি কখনো চাইনি তোমার ভালোবাসা ছিনিয়ে নিতে আমি না চাইতেও তোমাদের মাঝে চলে আসলাম তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে ।”

পার্ট: ১৫

আরহাম গাড়ি চালাচ্ছে পাশের সিটেই সেহের বসে আছে তার হাত পা মুখ বাঁধা ।সেহেরের অগ্নিচোখে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে চোখ থেকে জলের সাথে যেন অগ্নিয়গিরীর লাভা বের হচ্ছে ।চোখ দিয়ে যদি কাউকে ভস্ম করা যেত তাহলে আরহামকে এই মুহূর্তে সে ভস্ম করে দিত ।
দুনিয়াতে সেহেরই হয়তো একমাত্র মেয়ে যে কিনা এই ভাবে নিজের শ্বশুড়বাড়িতে যাচ্ছে ।জোর করে আরহাম সেহেরকে নিয়ে এসেছে এক প্রকার টেনে ছিচড়ে নিয়ে এসেছে ।
নিজের কাপড় আনার সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি ।
মনে মনে হাজারটা গালাগাল করছে আরহামকে ।
কিছুসময় পর হঠাৎ গাড়ি থেমে যায় আরহাম গাড়ি থেকে নেমে সেহেরের সিটের কাছে এসে তাকে কোলে তুলে হাটা শুরু করে দেয় ।সেহের আরহামের দিকে রাগিদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।আরহাম ঠি ক বুঝতে পারছে সেহের কি বলতে চাইছে আরহাম সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে

-“ডোন্ট ওয়ারী, তোমাকে নদীতে ফেলবোনা ।
বাড়িতে এসে গেছি ।”

সেহের সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি তারা আরহামের বাড়িতে পৌছিয়ে গেছে । কর্নিং বেল বাজানোর আগেই কেউ দরজা খুলে দেয় সেহের তাকিয়ে দেখে আরহামের মা একগাল হেসে দাড়িয়ে আছে ।হাতে মিষ্টির পিরিজ ,বুঝাই যাচ্ছে নতুন বউ বরণ করার জন্য দাড়িয়ে আছে ।
সেহেরের এমন অবস্থা দেখে সাথে সাথে হাসি উদাও হয়ে যায় ।অবাক চোখে আরহামের দিকে তাকিয়ে বলে

-“এ কি হাল করেছিস আমার বউমার ?
এই ভাবে কেউ নতুন বউ বাড়িতে আনে ।”

আরহাম সেহেরের দিকে তাকিয়ে তাকে ঠেস মেরে বলে

-“রাতের ভূত কি কথায় মানে ?
যে যেমন তার সাথে ঠিক তেমনই করতে হয় ।”

সেহের এবার রাগে ফেটে যাচ্ছে এই অসভ্য লোক তাকে ইনডায়রেক্টলি ভূত বললো ?
সে কি ভূত নাকি তারে ভূত বললো !
বজ্জাত অসভ্য লোক ।
একবার শুধু হাত পা খুলে দিক সে আরহামের সব চুল টেনে ছিড়ে ফেলবে ।
আরহামের মা পাশ থেকে বলে

-“বাবা এবার তো হাত পা মুখ খুলে দে মেয়েটার কষ্ট হচ্ছে ।দেখ হাতের কব্জি লাল হয়ে গেছে ।
তা ছাড়া মিষ্টি মুখ ও তো করতে হবে অন্ততো মুখটা খুলে দে !”

-“মা তোমার যা রিতী-নিতী পালন করার তা কাল করো ,এখন কিছু করতে হবেনা ।
আমি খুব টায়ার্ড এখন রেস্ট নিবো !”

আরহাম মাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সেহেরকে নিয়ে সোজা উপরে নিজের রুমে চলে যায় । আরহামের বাবা মা বাড়ির কাজের লোকেরা সবাই আরহামের কাজে হা করে আছে।এ কেমন ছেলে বড় ছোট কারো পরোয়া করেনা ।আরহামের মা ভীর ভীর করে বলে

-”একদম বাপের মত হয়েছে নিলজ্জ বেপরোয়া ।
না জানি মেয়েটার উপর কি ঝড় যাবে ।
আল্লাহ্ মেয়েটাকে রক্ষা করো !”

আরহামের বাবা গলা ঝেরে বলে

-“তুমি কিছু বললে আশা ?”

-“আমি আর কি বলবো ।
আপনারা বাপ ছেলে কোন একদিন আমাকে পাগল করে ছাড়বেন !”

আরহাম রুমে এসে সেহেরকে বিছানার উপর ছুড়েঁ মারে ।সেহের ব্যথায় কুকড়িয়ে যায় ।আরহাম রুমের দরজা লক করে এক এক করে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে সেহেরের দিকে এগিয়ে আসছে ।সেহের ভ্রু কুচঁকিয়ে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে ,আরহামের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে তা ভাবছে ।একসময় আরহাম শার্ট খুলে দূরে ছুড়ে মারে ।
সেহের এবার বেশ ভয় পাচ্ছে পিছনের দিকে যেতে চেষ্টা করছে কিন্তু হাত পা বাধাঁ তাই যেতে পারছেনা । মুখ আটকানো তাই কথাও বলতে পারছেনা ।কথা বলার চেষ্টা করছে তাই মুখ থেকে “উমউম “শব্দ বের হচ্ছে ।
আরহাম বাকাঁ হেসে মুখের টেপ খুলে দেয় ।
সেহের বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে এক দমে বলতে শুরু করে

-“দে…দেখুন আপনি আমার কাছে আসবেন না ।
আপনি বিয়ে করতে চেয়েছেন বিয়ে হয়েছে এখন জামাইগত অধিকার খাটাতে আসবেন না কারন এই বিয়ে আমি মানি না আর কোন দিন মানবোনা ।আপনি আমার সাথে জোর জোরজবরদস্তি করতে চাইলে আপনাকে কাটাঁ চামচ দিয়ে খুন করবো !”

-“সার্ট আপ !

আরহাম সেহেরকে ধমক দেয় সেহের ভয়ে চুপ হয়ে যায় ।আরহাম রেগে চেঁচিয়ে বলে

-“আর ইউ লস্ট ইউর মাইন্ড !
তোমার মনে হচ্ছে আমি তোমার সাথে জোরজবরদস্তি করতে তোমার কাছে আসছি ?
তোমার আমাকে কি নিয়ে কখনো ভালো খেয়াল আসেনা ?
কখনো আমাকে কিডন্যপার ভাবো ,আবার কখনো প্লে বয় ভাবো ।তোমার মাথায় কি কোন সমস্যা আছে ? এক্সসিডেন্টের পর কি মাথার সব তার ছিড়ে গেছে ।
স্টুপিড আমি হাপিয়ে গেছি তাই শার্টের বোতাম খুলেছি আর তোমার হাত পা খুলতেই তোমার কাছে আসছিলাম !
হোয়ার্ট ইজ জামাইগত অধিকার ?”

সেহের আরহামের ঝাড়ি শুনে একদম চুপ হয়ে আছে আরহাম সেহেরের কাছে এসে তার হাত পায়ের বাধঁন খুলে দেয় ।খুলে দেওয়ার সময় একবার ও তার দিকে তাকায় না সেহের আরহামের দিকে তাকিয়ে হাজারো গালি দেয় ।
আরহাম সেহেরের হাত পা খুলে ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে চলে যায় ।প্রায় ১ ঘন্টা পর চুল ঝাড়ঁতে ঝাড়ঁতে ওয়াশরুম থেকে বের হয় পড়নে শুধু তোয়াল ফরসা শরীরে পানির ফোটা গুলো মুক্তার মত ঝলঝল করছে ।
সেহের না চাইতেও আরহামের দিক থেকে চোখ ফিরাতে পারছে না এতটা কেন সুন্দর এই লোক ?
এমন পুরুষ কোন মেয়ের জীবনে পাওয়া সৌভাগ্যর ব্যপার কোন দিক থেকে কোন খুতঁ নেই উপরওয়ালা খুব নিখুঁত ভাবে এই লোককে তৈরী করেছে ।
প্রত্যেকটা কাজই স্টাইলের সাথে করে প্রত্যেকটা কাজই মনকাড়া যে কোন মেয়ে এই লোকের মৌহতে পড়তে বাদ্ধ ।
চোখ দুটোতে অদ্ভুদ মায়া রয়েছে যা এড়িয়ে যাওয়া কোন মেয়ের পক্ষে সম্ভব না। যতবার আরহামের চোখের দিকে তাকায় কোথাও হারিয়ে যায় সে ।আরহামের সেই অদ্ভুদ মায়া ভরা চোখের মায়ায় পরে যায় সে ।
ইচ্ছে করে তার মায়ায় সারাজীবন এইভাবেই জরিয়ে থাকতে ।খুব ইচ্ছে করে আরহামের বুকের গভীরতায় মিশে থাকতে কিন্তু তা যে সম্ভব না !
নিজের সুখের স্বর্গ অন্যকারো দুঃখ আর অভিশাপে সাজাতে চায় না সে আর রুশা তো তার নিজের বোন কি করে সে তার বোন থেকে তার ভালোবাসা দূর করবে ছিনিয়ে নিবে ?
জীবনে অনেক কষ্ট সয্য করেছে তার বোনটা অনেক কিছু হারিয়েছে নতুন করে আর কিছু হারাতে সে দিবেনা তার বোনের আমানত তার বোনকে ফিরিয়ে দিবে ।
আরহাম কে এতটা যন্ত্রনা এতটা কষ্ট দিবে যে আরহাম নিজেই তাকে ঘৃনা করবে দূরে ঠেলে দিবে তার মৌহ থেকে বেরিয়ে রুশার কাছে আবার ফিরে যাবে ।

এতটা সময় সেহের চুপ করে চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আরহামের প্রত্যেকটা কাজ দেখছিলো আর এসব কথা ভেবে যাচ্ছিলো ।
হঠাৎ আরহাম সেহেরের সামনে তুরি বাজাতেই সেহেরের ধ্যান ভাঙ্গে ।
সেহের সামনে তাকিয়ে দেখে আরহাম খাবার প্লেট নিয়ে বসে আছে । আরহাম শান্ত গলায় বলে

-“খাবারটা খেয়ে নেও !”

সেহের কোন উত্তর দেয় না ।আরহাম আবার বললো

-“জ্বিদ ছাড়ো খাবারটা শেষ করো !”

সেহেরের সামনে খাবারের প্লেটটা রাখতেই সেহের খাবার গুলো নিচে ছুড়ে ফেলে দেয় ।
এবার আরহাম খুব বেশি রেগে যায় সে চিৎকার করে বলে

-“আমার ধর্য্যের পরিক্ষা নিওনা সেহের এর ফল ভালো হবেনা বলে দিলাম ।”

-“কি করবেন আপনি ?”

-“আমি কি কি করতে পারি তা তোমার ভালো করে জানা আছে ।
আমাকে রাগিয়ে দিওনা ।
আমার কথার অমান্য করলে ভালো হবেনা ।তোমার কাজের ফল অন্যকেউ পাবে ”

বলেই সেখান থেকে উঠে নিচে থেকে খাবার নিয়ে আসে ।এবার সেহের আরহামের ভয়ে আর কিছু বলতে পারেনা চুপ করে তার কথা মত সবটা খাবার শেষ করে ।

সেহের বিছানার পাশে দাড়িয়ে ছোট ছোট চোখ করে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে ।আরহাম বিছানায় হ্যালান দিয়ে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে হঠাৎ সেহেরের দিকে চোখ যেতেই আশ্চর্য হয়ে বলে

-“হোয়ার্ট
এভাবে তাকিয়ে আছ কেন ?”

-“আমি কোথায় ঘুমাবো ?”

-“কেন এত বড় বেড তোমার চোখে পড়ছেনা ?”

-“তো আপনি কোথায় ঘুমাবেন ?”

-“কেন ? এখানেই !”

-“আপনি কি আমার সাথে জোক্স মারছেন ?”

-“আমাকে দেখে জোকার মনে হয়ে যে জোক্সস মারবো ।”

-“আমি মরে যাবো তার পর ও আপনার সাথে বেড শেয়ার করবো না ।
না মানে না !”

-“বলেছো মরে গেলেও আমার কাছে আসবেনা তার পরও আমার কাছে এসেছো ।
মরে গেলেও আমাকে বিয়ে করবেনা বিয়ে করেছো ।
তো এরপর ও কি তোমার মনে হয় তুমি এই কথা রাখতে পারবে ?”

সেহের আরহামের দিকে রেগে কটকট করতে করতে বলে

-“আমি আপনার সাথে থাকবো না মানে থাকবো না ।”

“-তুমি থাকবে তোমার ঘাড়ঁ ও থাকবে !
তুমি আমার কথার অমান্য করলে ইয়াশ এর ফল ভোগ করবে
এবার বলো তুমি কি করবে ? ”

-“আপনি কথায় কথায় কেন ইয়াশ কে টানছেন ?”

-“ইয়াশ কে আমি কখন টানলাম তুমিই তো তোমার ফেক বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে আমাদের মাঝে নিয়ে এসেছো আজ ঐ বেচারার সাথে যা হচ্ছে তোমার জন্যই হচ্ছে ।তুমি দায়ী সব কিছুর জন্য ।
না তুমি ওকে কানাডা থেকে কল করে বিডি তে আনতে না ওর সাথে এসব হতো ।
তুমি কি ভেবেছো আরহাম খানেরঁ সাথে চালাকি করে পাড় পেয়ে যাবে ?
আমি জানতাম ইয়াশ তোমাকে পছন্দ করে তুমি ইয়াশকে পছন্দ করো না এসব কিছু নাটক ছিলো ।”

সেহের আরহামের কথায় অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো

-“সত্যিটা জানার পর ও আপনি ইয়াশকে এভাবে মারলেন ?
তাকে এভাবে মারার আগে আপনার একবার বিবেগে বাধঁলো না !”

-“না , কারন আমি ভুল কিছু করিনি ।
তোমাকে ভালোবাসার শাস্তি ও পেয়েছে ও আমার সেহেরের দিকে নজর দিয়েছে শাস্তি তো ও পাবেই ।
ওর সাথে আজ যা হয়েছে ও তার প্রাপ্য ছিলো ।”

-“আপনি একটা ‌অমানুষ ,জানোয়ার, চরিত্রহীন !
আপনার চরিত্র বাজে আজ একজন কে মনে ধরে তো কাল অন্যকাউকে মনে ধরে ।
আপনাকে জাস্ট ঘৃনা করি ।
এত কিছুর পর ও মনের কোথাও আপনার জন্য ভালোবাসা ছিলো কিন্তু এখন শুধু ঘৃনা করি ।
আই জাস্ট হেইট ইউ আরহাম খান ,আপনি একটা কেরেক্টারলেস লোক !”

কেরেক্টারলেস শুনে আরহামের মাথায় রক্ত উঠে যায় ।সে সেহেরকে টান দিয়ে বিছানায় ফেলে তার মুখ শক্ত করে চেপে ধরে রেগে কটকট করতে করতে বলে

-”তোমার সব কথা হজম করছি বলে এ না যে তুমি যা ইচ্ছে তা বলবে ।
আমি কি করেছি যার জন্য তুমি আমাকে চরিত্রহীন বলছো ?”

-“নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করে দেখেন আপনি কার সাথে কি করেছেন !
কাউকে ইউজ করে তাকে অস্বিকার করেন আবার বলছেন আমি কেন চরিত্রহীন বলছি ?”

-“আমি কাকে ইউজ করেছি ?”

সেহের চুপ করে আছে ।আরহাম রেগে ধমক দিয়ে বলে

-“বলো আমি কাকে ইউজ করেছি ?”

সেহের চেচিঁয়ে উত্তর দেয়

-“রুশাদি কে এত সহজে ভুলে গেলেন ?
এতদিন যে আপনার প্রিয়তমা আপনার ভালোবাসা ছিলো !”

আরহাম অবাক হয়ে বলে

-“হোয়ার্ট !
এখানে রুশা আসলো কোথা থেকে ?”

-“আপনার হয়তো মনে করতে খুব কষ্ট হচ্ছে যাক আমিই আপনাকে মনে করিয়ে দেই !”

বলেই সেহের আরহামের ফোন নিয়ে নিজের আইডিতে লগইন করে চার্ট নিস্ট থেকে কিছু ছবি আর ভিডিও আরহামের সামনে ধরে ।প্রত্যেকটা ছবিতে আরহাম আর রুশা অনেক ক্লোজ ভাবে আছে ।কিছু ছবি আরহামের রুমে তোলা ।আরহাম আর রুশা লং ড্রাইভের ,বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরির ভিডিও ।
আরহাম সব দেখে স্থব্দ হয়ে যায় ।সেহের কান্না করতে করতে বলে

-“আমি ভার্সিটিতে অনেক বার আপনাকে আর রুশাদি কে কেনটিনে মাঠে এক সাথে দেখেছি তখন কিছু বুঝিনি কিন্তু এখন সবটা পানির মত সোজা ।
কেন এমন করলেন আরহাম ?
কেন আমার আর রুশাদির জীবন নষ্ট করলেন । “

আরহাম কাপাঁকাঁপা হাতে সেহেরের গাল স্পর্শ করে বলে

-“জান কেউ চাইছে আমার আর তোমার মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে ।এসব কারো স্বরযন্ত্র !”

-“এসব কিছু কি মিথ্যা ?”

আরহাম সেহেরের হাত জোর করে বলে

-“এসব মিথ্যা না কিন্তু তুমি যা ভাবছো তেমনও কিছুনা ।”

সেহের রেগে চিৎকার করে বলে

-“তাহলে সত্যিটা কি আরহাম ?”

আরহাম সেহেরের দু গালে নিজের হাত রেখে সেহেরের চোখে চোখ রেখে বলে

-“সত্যিটা হলো আমি আর রুশা জাস্ট ভালো ফ্রেন্ড ।
দু বছর আগে আমি যখন কোন কারনে ডিপ্রেশনে ছিলাম মেন্টালি অসুস্থ ছিলাম নিজেকে ঘর বন্ধি রাখতাম তখন রুশা ভালো বন্ধু মত আমার পাশে ছিলো আমার ভালো বন্ধু হয়ে আমাকে আবার স্বাভাবীক জীবনে নিয়ে আসে ।আমার সাথে ভালো বন্ধুর মত সময় কাটায় ।
এই ছবিগুলো দু বছর আগের ।
প্লিজ আমাকে বিশ্বাস করো !”

-“আমি আপনাকে বিশ্বাস করতে পারছিনা আরহাম !”

-“আচ্ছা ঠিক আছে তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা , রুশা কে তো করো ?
তুমি রুশা কে জিগাসা কর সত্যিটা রুশা তোমাকে বলবে ।”

সেহের প্রানহীন ভাবে দাড়িয়ে আছে আরহামের দিকে তাকিয়ে শীতল কন্ঠে বলে

-“রুশা দিই আমাকে এই সত্যিটা বলেছে এই ছবি ভিডিও দিয়েছে ।”

আরহাম সেহেরের কথায় যেন আসমান থেকে পরে সে বিশ্বাস করতে পারছেনা রুশা এসব করতে পারে ।আরহামের এবার খুব বেশি রাগ হচ্ছে নিজের উপর সে কি করে এমন একটা জঘন্য মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে যে তার জীবনে সব চেয়ে মূল্যবান জিনিসকে তার থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে ।
সেহের মাটিতে বসে হাউমাউ করে কান্না করছে আরহাম সেহেরকে সামলানোর জন্য তার কাছে যেতেই সেহের তার হাত ঝাড়ি দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় ।আরহাম জোর করে তাকে নিজের সাথে জরিয়ে বলে

-“বিশ্বাস করো সেহের এসব কিছু মিথ্যা আমি জানিনা রুশা কেন এমন করছে সে কি চায় ।
এসব মিথ্যা ।
আমার জীবনের তুমিই প্রথম আর শেষ প্রেম আমার জীবনে তোমাকে ছাড়া অন্যকোন মেয়ের কোন অস্তিত্ব নেই ।আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি !
আই লাভ ইউ সেহের ।”

সেহের আরহামকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলে

-“আমি আপনাকে বিশ্বাস করিনা ।
আমি আমার বোন কে বিশ্বাস করি ।আমি দেখেছি তার কষ্ট তাকে হাউ করে কান্না করতে দেখেছি আপনার কথার চেয়ে আমার কাছে আমার বোনের অশ্রুর দাম বেশি ।
আমি শুধু আপনাকে ঘৃনা করি বুঝেছেন !”

আরহাম সেহেরের চোখে আজ নিজের জন্য ঘৃনা দেখছে যে চোখে এতদিন ভালোবাসা দেখতো আজ সেই চোখে সে নিজের জন্য ঘৃনা দেখে সয্য করতে পারছেনা তার মাথাটা ধরে আসছে অস্বাভাবীক আচরন করছে সে ।
আরহাম সেহেরের কাছে এসে তার চোখের জল মুছে কঠোর গলায় বলে

-“আমাদের মাঝে যে আসবে সমস্যা সৃষ্টি করবে আমার থেকে যে তোমাকে সরানোর চেষ্টা করবে তাকে শেষ হতে হবে ।
সে যেই হোক না কেন !”

বলেই আরহাম সেহেরের সামনে থেকে উঠে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ।সেহের আরহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আরহাম কথার অর্থ কি ছিলো ?
সে কি করতে চাইছে ?
এমন হাজার প্রশ্ন মনে জাগছে ।

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here