#বিষাক্ত_বাঁধন
#পর্ব_১৪
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন ।
চৌধুরি পরিবারের সবাই মিলে এসেছে পিকনিক এ । বাগানের ভেতর একটা বাড়ি খুবই শান্ত আর নিরিবিলি পরিবেশ বসার জন্য ব্যাঞ্চ আছে কয়েকটা ।যা কাঠের তৈরি খুবই ইউনিক সাথে টেবিল আছে।মোটামুটি বড় বাগানটা।একদম ভেতরে থাকার জন্য ঘরটা ।ঘরটা বেশি বড় না মোটামুটি এক ফ্যামিলি থাকতে পারবে এই রকম। সবচেয়ে নজরকাড়া যেই জিনিস টা সেটা হচ্ছে ফুল গাছ।অনেক জানা অজানা নানা রকমের ফুল গাছ আছে এইখানে যা এইখানকার পরিবেশকে আরো মনোরম অতুলনীয় সুন্দর করে তুলেছে। সবটা হেঁটে হেঁটে পর্যবেক্ষণ করছে তুসি।ওর খুশি কে দেখে।একেতো পিকনিক এ এসেছে তার ওপর এত এত ফুলের গাছ আর মনোরম পরিবেশ সত্যি তুসি ভিষন আনন্দিত ।তাই তো খুশিতে গদগদ হয়ে সবটা হেঁটে দেখছে ।বিশেষ করে ওর পছন্দের জিনিস “ফুল গাছ”।
এত ফুল জীবনে কখনো দেখেনি তুসি।সত্যি এই পরিবেশে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে ।খুশিতে আত্মহারা হয়ে ফুল গাছের মাঝের জায়গায় ঘুরছে তুসি।আর দূর থেকে তার এই প্রানবন্ত হাসির ছবি তুলছে আরিয়ান ।
মূলত ওরা যেখানেই বেড়াতে যাক ক্যামেরা নিয়ে আসে ও ।আর রিসাদ এর জন্য তো অবশ্যই ।ও এই ছবিগুলো ক্লাসের বান্ধবীকে দেখাবে।তাই আরিয়ান কে এইখানে আসার আগেই মনে করিয়ে দিয়েছিলো ক্যামেরার কথা ।ওর কথা রাখতেই সাথে নিয়ে আসা ক্যামেরা ।তবে এই রকম একটা মোমেন্ট ও যে আরিয়ান এর ক্যামেরায় সোভা পাবে তা ওর জানা ছিল না।
চারদিকে শুধু ফুলের সমারোহে মাঝখানে শাড়ি পরিহিত এক অবিশ্বাস্য সুন্দরী রমনি আর সাথে যদি তার প্রানখুলে হাসি হয় তাহলেতো আর কথাই নেই।তাই কিছু ভেবে সময় নষ্ট না করে এই মুহূর্তগুলোর ছবি তুলে রাখছে আরিয়ান ।কেন ওর জানা নেই তবে এমন করতে ইচ্ছে করছিলো তাই করছে।তাসিন কে দিয়ে লাগেজগুলো পাঠিয়ে দিয়েছিলো।ভাগ্যিস ক্যামেরাটা সাথে ছিল তা না হলেতো এমন একটা জিনিস কখনোই স্মৃতি করে রাখতে পারতোনা।
সত্যি আজ তুসিকে অনেক সুন্দর লাগছে ।পিঙ্ক কালার এর একটা শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলো রিমা।তুসি অবশ্যই না করেছিল কিন্তু রা জোর খরে পরিয়ে দিয়েছিলো তাই আর না করতে পারেনি তুসি।কেমন যেন আপন মনে হয় রিমা কে। ওর কথা ফেলতে পারেনি তুসি তাইতো শাড়িটা পরেই এসেছে।
আরিয়ান এর চোখে দুনিয়ার সব চেয়ে সুন্দর আর মায়াবী লাগছে এখন তুসিকে।এত সুন্দর আর মায়াবী মেয়েটা তার বৌ ভাবতেই মন জুড়ে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেলো।ওর আর তুসির এক হওয়া কখনোই সম্ভব না মস্তিষ্ক বারবার এই কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও মন তি মানতে চায় না।ও যদি আশরাফ খান এর মেয়ে না হতো তাহলে ওকে কখনো নিজের থেকে দূরে রাখতো না।দুনিয়ার সব সুখ আর ভালোবাসা ওর পায়ের কাখে ঢেলে দিতো কিন্তু ওই যে তুসি আশরাফ খান এর মেয়ে ।ওর দিকে তাকালে নিজের ছোটবেলার সেই করুন কাহিনী মনে পড়ে যায় ।তাই আরিয়ান সিদ্ধান্ত নিয়েছে কখনো সে তুসিকে নিজের ভালোবাসার কথা বলবেনা আর বুঝতে তে ও দেবেনা।ভালোবাসে ,হ্যাঁ সে ভালোবাসে তুসিকে।প্রথম দিন থেকেই ।তবে এতদিন নিজের অনুভূতি থেকে পালিয়ে বেড়ালেও দিনশেষে এটাই সত্যি যে আরিয়ান তুসিকে ভালোবাসে । যাকে সে ভালোবাসে সেই তার অর্ধাঙ্গী ,ওর মতো ভাগ্যবান কয়জন আছে পৃথাবীতে কিন্তু ,,,,,,,চাচ্চু,চাচ্চু মা ড্কছে তোমায় আর কাকিকে নাস্তা করার জন্য ।
রিসাদ এর কথায় বাস্তবে ফিরে এলো এলো আরিয়ান ।রিসাদ কে জবাব দিলো, হ্যাঁ যাচ্ছি আমি।
আচ্ছা যাও হ্যাঁ আমি কাকিকে ডাকতে যাই।রিসাদ এর কথার জবাবে আরিয়ান কে প্রশ্ন করল তোমার কাকি কে তোমার পছন্দ হয়েছে আব্বু ?
জবাবে রিসাদ দুহাত প্রসারিত করে দেখালো অনেক অনেক বেশি।
আরিয়ান হেসে ফেলল ওর কান্ডে আর বলল আচ্ছা যাও তোভার কাকিকে ডাকো গিয়ে সবাই একসাথে করব নাস্তা।
🌸🌸🌸
তাসিন রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বসল হঠাৎ ওর একটা জিনিস মনে পড়ল তাই নিজের মানি ব্যাগ থেকে ওই জিনিস টা বের করল ।কলেজের আইডি কার্ড তাহিয়ার ।কাল রাতে যখন পার্স নিয়ে আসল তখন ওইটার চেন খোলা ছিল হয়ত তখন পড়ে গিয়েছে ওরা খেয়াল করেনি।আজ সকালে গাড়িতে পেয়েছিল এইটা।পড়ে বুঝল এটা তাহিয়ার ।এখন ফেরত দিয়ে আসবে নাকি যে নাম্বার দেওয়া আছে এতে সেখানে কল করে জানাবে তা ভাবতে ভাবতে কিছু আর করা হয়ে ওঠেনি।এখন শেষে সিদ্ধান্ত নিল যে কল করবে এইভাবে কারো বাড়ি যাওয়া ভালো দেখায় না তার উপর ওর মায়ের কথাবার্তা সুবিধাজনক মনে হয় নি।
কল দিলো নাম্বারে।তিন চার বার রিং হয়ে গেল কেও ধরছে না দেখে আবার দিল,
তাহিয়াদের বাড়িতে ,,,,
তাহিয়াকে আটকে রেখেছে সেই রাত থেকে এখন পর্যন্ত ।কিছু খেতে ও দেয়নি ওর সৎ মা।এইটা নাকি ওর শাস্তি ।আজ রাতে ওর বিয়ে দেওয়া হবে।কালকে রাতে ওর বাবা আসলে তাকে আরো লবন মরিচ মিশিয়ে তাসিন এর এইখানে আসা রাতে বের হওয়া নিয়ে অনেক কথা বলেছে।এরই ফলশ্রুতিতে রাতে রাতেই ওর বিয়ে ঠিক করেছে ওর বাবা ।ওর বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে।লোকটা গাঁজাখোর আর মদ্যপান করে।তারপর তার ভাবনা মেয়েকে তিনি খারাপ রাস্তা থেকে বাঁচানোর এই এক মাধ্যম ।তা ছাড়া ছেলের বাবা মানে ওর বন্ধু আশ্বাস দিয়েছে বিয়ে করলে ছেলে এসব ছেড়ে দেবে ।তাহিয়ার বাবা ও তা বিশ্বাস করে এই সিদ্ধান্ত নিল ।এতে অবশ্য আইরিন এর কোনো বিরোধিতা নেই। ও তো তাহিয়াকে বাড়ি থেকে বের করতে পারলে বাঁচে ।তারপর সব নিজের ছেলের হবে ।
তুহিন মায়ের পিছে ঘুর ঘুর করছিল সকাল থেকে যখন থেকে শুনেছে তাহিয়াকে বন্ধ করে রেখেছে আইরিন।মাকে বারে বারে বলছে আপুকে কিছু খেতে দিতে কিন্তু ওর মা ওর কথার পাত্তাই দিচ্ছেনা হয়ত ও ছোট বলে।
ওর খুব খারাপ লাগে যখন ওর মা আপুকে বীএ মারে।যদি ও অনেক বড় হতো তাহলে মাকে কখনো এসব করতে দিতনা কিন্তু আফসোস ও তো ছোট ওর কথা আর কে মানে।
মন খারাপ করে মায়ের পিছে পিছে আইরিন এর রুমে আসল ও ওকে বলছে,মা,মা আপুকে এখন খেতে দাও এতক্ষণ কীভাবে থাকবে আপু,প্লিজ ,,,
ওর মা ওকে ঝাড়ি মেরে বলে উঠল , এ আমি কোন ছেলে পেটে ধরেছি আমার থেকে বেশি ওই মেয়ের জন্য ভালোবাসা।তোকে কতবার বলেছি ও তোর আপন বোন না ।তাও কেন ওর কথা সারাক্ষণ বলিস,,এসব বলতে বলতে রুমের বাইরে চলে গেলো আইরিন ।
তুহিন মন খারাপ করে মায়ের রুমে বসে আছে ভাবছে যদি তার কাছে কোনো ম্যাজিক থাকতো তাহলে ও ওর আপুকে এত কষ্ট সহ্য করতে দিত না।
হঠাৎ ও খেয়াল করলো ওর মায়ের রুমে একটা ফোন এর আলো জ্বলছে কাছে গিয়ে দেখলো এটা ওর আপুর মোবাইল এইখানে কেও কল করেছে সাইলেন্ট থাক্র কারনে আওয়াজ হচ্ছে না ।কল ধরার আগেই কেটে গেল ।আবার রিং হতেই ধরে ফেলল, ওই পাশ থেকে কোনো একজন লোক(তাসিন) বলছে আসসালামআলাইকুম ,আমি তাহিয়ার কাছে কল দিয়েছি ।আপনি কি তাহিয়া?
আরে না আমি তাহিয়া না ওর ভাই।
ও আচ্ছা তোমার আপু আছে ওকে দাও।
আপুকে দেওয়া যাবে না মাতো আপুকে কাল রাত থেকে রুমের ভেতর আটকে রেখেছে।
এই কথা শুনে তাসিন বলল,কি,,কেন,,আমাকে বল ।
আমি জানিনা ভাইয়া তবে আপু খুব কষ্ট পাচ্ছে খেতেও দেয়নি আপনি যদি আপুর বন্ধু হন তাহলে প্লিজ আপুকে বাঁচান ।আপুকে একটা খারাপ লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে বাবা।
এই কথা শুনে তাসিন উত্তেজিত হয়ে বলল কি বলছো এইসব,,,,,,
চলবে,,,#বিষাক্ত_বাঁধন
#পর্ব ১৫
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন।
তাহিয়াকে ওর মা আটকে রেখেছে তার ওপর আবার একটা খারাপ লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে এই কথা শুনে তাসিন এর খুব খারাপ লাগছে ।ও ভাবছে হয়তো কাল রাত আমাকে ওর সাথে দেখে ভুল বুঝে মেয়েকে তারাতারি বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছেন ।কিন্তু আমাদের মধ্যে তো কিছু নেই। নাহ,আমাকে ওর মায়ের ভুল ভাঙ্গাতেই হবে। এইভাবে একজন মেয়ের জীবন নষ্ট হতে দিতে পারিনা আমি। কিছু করতে হবে আমায়।এই বলে তাসিন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল তাহিয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে।
অন্যদিকে আরিয়ান সবার সাথে নাস্তা করে রুমে গিয়েছিল কিছুক্ষন রেস্ট করার জন্য ।হঠাৎ ওর মোবাইল এ একটা কল এলো নাম্বার টা দেখেই ওর ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল।
রিসিভ করে বলল,আসসালামআলাইকুম আব্বু।কেমন আছো?
জবাবে ওপাশ থেকে বলল, ভালো বাপজান ।তুমি কেমন আছো?
আমিও ভালো আছি আব্বু।কত করে বললাম তোময় আমাদের সাথে আসো তুমি তো আসলে না। সবাই আছে তুমি নেই।
ওপাশ থেকে জবাবে বলল, আরে তোমরা কর আনন্দ আমার আর এসবের বয়স আছে নাকি?তা বৌমা কেমন আছে?
এই পর্যায়ে এসে আরিয়ান এর গলার স্বর গম্ভীর শোনা গেল। ও উত্তরে বলল, ভালো।
তাহলেতো ভালোই।কিন্তু বাবা ওর থেকে দূরে থেকো জানোতো কার রক্ত বইছে ওর শরীরে?
জানি ।অপনি চিন্তা করবেন না আব্বু আমি জানি আমার লক্ষ্য ।আপনি শুধু দোয়া করবেন।
হ্যাঁ। তাতো আমি জানি ।আর আমার ছেলের জন্য দোয়া করবনা তো কার জন্য করব।আচ্ছা বাপজান রাখি তাহলে আমার একটা মিটিং আছে।
আচ্ছা। আল্লাহ্ হাফেজ, নিজের খেয়াল রেখো।
আচ্ছা। তুমিও নিজের খেয়াল রেখো।
ফোন রেখে পেছন ফিরে দেখতে পায় তুসি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে হাত মোচড়ামুচড়ি করছে মনে হচ্ছে কিছু বলতে চায় কিন্তু ভয়ে অথবা,সংকোচে বলতে পারছেনা।
আরিয়ান বুঝতে পেরে জিজ্ঞাস করল কিছু বলবে?
তুসি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জবাব দিল।
আরিয়ান বলল কি দ্রুত বলবা ।আর প্রতিবন্ধীদের মতো ইশারায় কথা বলা বন্ধ করো ।যা বলবা মুখে বলো।
আমি কোথায় থাকবো এইখানেতো কোনো সোফা নেই আর ভাবি আমাকে ওনার কাছে থাকতে দেয়নি ।আমি বলেছিলাম আজ আমি ওনার সাথে থাকতে চাই কিন্তু জোর করে পাঠিয়ে দিলেন।
হ্যাঁ তো তুমি বলতে গেলে কেনো ?
তাহলেকি আমি এই বিছানায় শুবো।
হ্যাঁ ।
আরিয়ান এর জবাবে প্রেক্ষিতে তুসি বলল তাহলে আপনি কোথায় থাকবেন?
সেটা নিয়ে তোময় ভাবতে হবে না ।তুমি শুয়ে পড়।
কিন্তু আপনি কোথায় থাকবেন? নিচে থাকবেন? দেখুন ,আমি এত নির্দয় না।তার কোনো দরকার নেই ।আপনি এই বিছানায় থাকতে পারেন বিছানাটা বড়ো আছে আপনি ওইপাশে আর আমি এই পাশে মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে দেবো।
আরিয়ান হ্যাঁ, না কিছু বলল না।হয়তো তুসির কথাটা ওর পছন্দ হয়েছে।
তুসি ওর উত্তর হ্যাঁ ধরে নিয়ে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করে নিলো আর নিজে এক পাশে শুয়ে পড়লো গায়ে কম্বল দিয়ে।
আরিয়ান মনে মনে অনেক খুশি হলেও বাইরে তা দেখাতে চাইছেনা।তুসি শোয়ার পরপরই লাইট নিভিয়ে আরিয়ান ও শুয়ে পড়ল ।কিন্তু সমস্যা হলো কম্বল একটা তাই দুজনকে তা শেয়ার করতে হলো।এতে তুসির অস্বস্তি লাগলেও আরিয়ান এর ভালো লাগছে।
🌸🌸🌸
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে তাসিন আর আইরিন। তাসিন একজন কে পাঠিয়ে ডেকে এনেছে এখানে আইরিন কে।আইরিন ওকে দেখেই রেগে বকতে শুরু করল,তাসিন তাও ঠান্ডা মাথায় বুঝানোর উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো,দেখুন আন্টি আপনি যা ভাবছেন সেরকম কিছুই না।আমরা দুজন দুজনকে ভালোমতো চিনিই না।সামান্য কয়েকদিনের পরিচয় মাত্র অনেক রাত হয়েছে দেখে আমি ওকে বাড়িতে ছাড়তে বসেছিলাম আর,,,
থাক থাক আর কিছু বলতে হবে না আমি কি তোমার কাছে কিছু জানতে চাইছি?
না ।তারপরও যেটা সত্যি আমি সেটাই বলছি।আর আপনি শুধু শুধু এমন জেদ করে নিজের মেয়েটার জীবন কেন নষ্ট করতে চাইছেন?
জবাবে হুংকার দিয়ে আইরিন বলল,ও আমার মেয়ে না।কিছু না আমার ।আমার মেয়ে কখনো এরকম হতো না ।
তাসিন অবাক করা কন্ঠে বলল,তার মানে আপনি ওর সৎ মা?
আইরিন বলল, হ্যাঁ আমি সৎ মা ওর।ওর মতো মেয়ে আমার গর্ভে কখনো জন্মই নিতে পারে না।
এই পর্যায়ে তাসিন কিছুটা রেখে গিয়ে বলল,কি এমন করেছে ও যে আপনি ওকে এত ঘৃনা করেন।
আইরিন বলে ওঠে সেটা আমি তোমাকে বলতে বাধ্য নই।
ওকে ফাইন। আপনার যা ইচ্ছা করুন কিন্তু প্লিজ এই বিয়েটা থামান।
আমার কি লাভ বিয়েটা থামিয়ে?
তাসিন অবাক করা কন্ঠে বলল, মানে বিয়ে টা হলে আপনার কি লাভ?
লাভ মানে ,অনেক লাভ।আপদ বিদায় হবে ।উফফফ্ ।বিরক্তিকর কন্ঠে বলল আইরিন।
আপনি কোন ধরনের মহিলা নিজের লাভের জন্যে একটা নিরপরাধ মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাইছেন?
আমার ইচ্ছে। এটা আমার পরিবার।আমার সিদ্ধান্তই শেষ। আর ওই মেয়ে কোনো নিরপরাধ না।নিজের মায়ের মতোই ধান্দাবাজ।কোনদিন কি করে বসে তার আগেই ওকে বিদায় দিলে শান্তি।
আচ্ছা বুঝেছি। আমি আপনার সাথে একটা ডিল করতে চাই তাতে আপনারই লাভ।
কি ডিল?ভ্রুকুচকে জিজ্ঞাস করল আইরিন?
আছে।কিন্তু তার বদল আমার কথা মানতে হবে আপনার।আমি বিয়ে করতে চাই তাহিয়াকে।আর তার ব্যবস্থা করবেন আপনি।
আর বদলে কি পাবো আমি?
পাবেন।এই বলে রহস্যময় হাসি দিল তাসিন।
তুসি কে খুব কাছ থেকে অনুভব করছে আরিয়ান। তুসির ঘুম খুব গাঢ় ।তা এইকয়দিনে খুব ভালো করে বুঝে গেছে আরিয়ান। তাইতো নিজের ইচ্ছে কে দমিয়ে না রেখে তুসি গাঢ় শ্বাস পরতে মাঝের কোলবালিশ সরিয়ে একদম কাছে চলে গেলো। তুসি এইদিকে ফিরে ছিল ফলে ড্রিম লাইটৈর আলোয় ওকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে আরিয়ান। নিজেকে নিজেই চিনতে পারছেনা ।ও এতো পাগলামি করছে ভাবতেই পারছেনা।তবে ভালোবাসা মানুষের সব অভ্যেস বদলানোর এক অবিশ্বাস্য ক্ষমতা রাখে।তাইতো এসব হচ্ছে। মৃদু হেসে হাত বাড়িয়ে তুসির মুখের ওপর পড়ে থাক চুল সরিয়ে দিলো। তুসি কিছু টা নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলো মনে মনে অনেক ইচ্ছে জাগছে আরিয়ান এর তবে আরিয়ান আজকে নিজেকে আটকাবে না ।
চলবে,,,,,,