#বিষাক্ত_বাঁধন
#অনামিকা_ জাহান_ জাফরিন।
#পর্ব _২৬
আরিয়ান কে মন মরা দেখে রাজ তাকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছে। মূলত রাজ এর এক ফ্রেন্ড এর বৌন এর বিয়ে।সেখানেই তাকে দাওয়াত দিয়েছে তার ফ্রেন্ড। তবে আরিয়ান এর মনের অবস্থা কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে রাজ।তুসির অনুপস্থিতিতে আরিয়ান এর যে কষ্ট হচ্ছে তা মুখে না বললেও রাজ বুঝতে পারে ।
আজ অনেক রিকোয়েস্ট করে ওকে এখানে নিয়ে এসেছে তবে এমন হবে ।কে জানতো এখানে যে তুসি আর তার বাবা মা আসবে ।
এতদিনের চোখের পিপাসা মিটিয়ে নিচ্ছিল আরিয়ান হঠাৎ এর মধ্যে এক অসভ্য এসে তুসিকে যে ডান্স করতে নিয়ে গেছে সেটা দেখে আরিয়ান রেগে মেগে আগুন।ও সহ্যই করতে পারছেনা ।ইচ্ছে করছে ওই ছেলেটার নাক ফাটিয়ে দিতে।
আর তুসি ও যে ওর সাথে আনকর্ম্পটেবল সেটা আরিয়ান তুসির চোখে মুখে স্পষ্ট দেখতে পারছে।
আরিয়ান আর এসব সহ্য করতে না পেরে ওর কাছে যেতে নিলে রাজ থামিয়ে দিয়ে ভলে ওঠে,স্যার কি করছেন?রাগের মাথায় কোনো ক্জ করবেন না স্যার।
আরিয়ান জোরে শ্বাস নিয়ে বলে এই ইডিয়েটটাকে সরাও জলদি।
রাজ মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
রাজ কি করবে ভেবে পায় না শেষে একটা কথা মাথায় আসে ওর। ও একটু আড়ালে গিয়ে ওর বন্ধু সিপাত( যে তুসির সাথে ডান্স করছে তার নামই সিপাত) এর নাম্বারে কল করে ।
এইদিকে সিপাত যেন স্বপ্ন দেখছে এমন একটা মেয়ের সাথে ও ডান্স করছে ভাবতেই পারছেনা।সবুজ রঙটাতে ওকে এত সুন্দর লাগছে।গলুমোলু মুখ বেশি মোটাও না আবার বেশি চিকন
ও না ,লম্বাতে পাঁচ ফুট তিন হবে এর বেশি নয়। দুনিয়ার সব সৌন্দর্য যেন তুসির মাঝেই বিদ্যমান। এই প্রথম কাওকে প্রথম দেখায় এতোটা ভালোলাগছে ওর কাছে।
তুসি যে বিরক্তবোধ করছে সেটা সিপাত বুঝতে পারছে এতেও যেন ওকে অন্যরকম ভালোলাগছে।তাইতো এমন করছে ও।
হঠাৎ ওর ভাবনার মাঝে মোবাইল এ রিং বেজে ওঠল,ও বিরক্ত হলো বটে এমন একটি সময়ে কে কল করছে কে জানে! পরপর দুবার বাজার পর তৃতীয় বার বাধ্য হয়ে রিসিভ করলো।এরপর,
রাজ:হ্যালো দোস্ত!আমি ।আমি কল করেছি।
সিপাত:আমি টা কে?এই নামে আমি কাওকে চিনি না।
রাজ:আরে,,আব,,আমি মানে আমি রাজ একটু আয় তো দোস্ত। খুববব্ আর্জেন্ট।
সিপাত:হ্যাঁ,রাজ তুই।কী কাজ?আসছি আমি।
রাজ:প্লিজ,,,দ্রুত আয়।
সিপাত বাধ্য হয়ে তুসি কে ছেড়ে রাজ এর কাছে গেল।
তুসি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো ।ওর বিরক্ত লাগছিল এতক্ষণ।আর এইখান থেকে গেলেই যেন বাঁচবে ।তুসি আস্তে ধীরে সেই প্লোর থেকে চলে গেল।
ওইদিকে সিপাত রাজ কে পেয়েছে তবে এর জন্য ওকে অবশ্য অনেক ঘুরতে হয়েছে রাজ ওকে একবার এখানে বলেতো একবার এইখানে বলে ঘুরিয়েছে।ফাইনালি পেয়েছে রাজ কে দেখতে পেয়েছে।
ওর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,কিরে কোথায় ছিলি তোকে পাচ্ছি না কেন?কি আর্জেন্ট?
রাজ আমতা আমতা করে বলল, হ্যাঁ আর্জেন্ট তো।
সিপাত:কী বল ?
রাজ:আমার প্রাকৃতিক ডাক এসেছিল সাড়া দিতে হবে ।
সিপাত:মানে কি সব বলছিস কিসের প্রাকৃতিক ডাক ?
রাজ:আরে বেটা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ফেলেছিস এখনো এইটা বুঝছ না?আরে প্রাকৃতিক ডাক মানে আমার দুই নম্বর পেয়েছে আর দুই নম্বর মানে আমার টয়লেট পেয়েছে যেতে হবে আর্জেন্ট।
সিপাত:ওহহহ ।তো যা ।এখনো দাড়িয়ে আছস কেন?
রাজ:আরে বেটা আমি যেতে পারলে কি তোকে বলতাম?কোন দিকে দেখিয়ে দে।এতক্ষণ খুঁজেছি পায়নি।
রাজ :চল তো জলদি চল।
🌸🌸🌸
সেদিন তুসির সাথে পরিচয় হয়েছিল সিপাতের।ঘটনা সেখানে থেমে থাকেনি ।প্রবাদ আছে, “কোথাকার জল কোথায় গড়ায় সেটা বলা মুশকিল “।
সত্যিই বলা মুশকিল!
সেই ঘটনার কয়েক দিন পর আশরাফ এর সে বন্ধু এসে হাজির।তাদের প্রস্তাব আশরাফ এর মেয়ে কে ছেলের জন্য নিতে চাইছেন।বিয়ের প্রস্তাব যেটাকে বলে আরকি।
সেই বন্ধু নানা ভাবে আশরাফ কে রাজি করানোর চেষ্টা করছে কেননা তাদের ছেলের তুসি কে অসম্ভব ভালো লেগেছে আর তাদের ও পছন্দ হয়েছে। তার উপর বন্ধুর মেয়ে রাজি না হওয়ার উপায় নেই।আর তাদের ছেলে কখনো কোনো কিছুর আবদার করেনি। পড়ালেখা, আচার-আচরণ এবং দেখতে কোনো দিক থেকে ফেলে দেওয়ার মতো না সিপাত।ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বের হয়েছে যে একবছর। তবে তার ছেলে তার ব্যাবসাতে যোগ দেয়নি নিজের যোগ্যতায় সরকারি চাকরি পেয়েছে ভালো।
আশরাফ হ্যাঁ না কোনো কিছু বলতে পারছেনা।কাছের বন্ধু মুখের ওপর না বলা যায় না।আবার মেয়ে ছোট এত তাড়াতাড়ি তাদের বিয়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই।এমনেতেইতো মেয়ে কে তারা চোখে হারান এখন বিয়ে ভাবতেই পারছেনা আশরাফ। তবে বন্ধু কে বলেছে ভেবে দেখবে,আর জানাবে।।
এসব কিছু রাজকে ওর বন্ধু সয়ং সিপাত বলেছে আর রাজ বলেছে আরিয়ান কে।
আরিয়ান দাতে দাত চেপে বলল, এই বিয়ে কীভাবে হয় আমি ও দেখবো।খুব শখ না বিয়ে করার।ওর শখ আমি চিরতরে মিটিয়ে দেব ।আমার বৌকে বিয়ে করতে চায়। আরে ভাই দুনিয়াতে কি মেয়ের অভাব হয়েছে নাকি বেছে বেছে আমার বৌকেই কেন বিয়ে করতে হবে!!
রাজ এসব শুনতে শুনতে নিরবে হাসছে ।
তবে একটা কথা আরিয়ান কে বলল, স্যার ও যে বিবাহিত সেটা আমরা ছাড়া তো আর কেও জানেনা। আশপাশের সবাই জানে যে ম্যাডাম এই কয়দিন ওর নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল।আপনার বৌ সেটা ম্যাডাম এর বাবা মাও জানে না।
এই একটা কথা এই কথাটাতেই আটকে গেল আরিয়ান। আসলেইতো কেও তো জানেনা ।জানেনা যে সে তার স্ত্রী । ধর্মীয় এবং আইনি দুইভাবেই তো বিয়ে হয়েছিল।তবে সে তো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কখনো স্বামী হিসেবে হিসেবে যেতে পারবে না।
উফফফ্ বুকে ব্যথা হচ্ছে আরিয়ান এর। যদি তুসিকে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় ওর বাবা মা তখন!!না না আরিয়ান আর ভাবতে পারছেনা। ভাবতে চায় না সে এসব ।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে রাতের আকাশ দেখতে দেখতে তুসি ওর জীবনের ইদানিং ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছে।
ওর যে বিয়ের কথাবার্তা চলছে তাও জানে।শুনেছে ও সেদিন ওর আব্বুকে কথা বলতে।
তুসি কি করবে কিছু বুঝতে পারছেনা।
ও কাকে বলবে যে ওর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর কাকে বোঝাবে ডিভোর্স ও হয়নি ওর ।ও তো কারো সংসার করছিল ।কারো বৌ ছিল।কাকে বোঝাবে তার এ কষ্ট ।কাকে?????
চলবে,,,
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।#বিষাক্ত _বাঁধন
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন
#পর্ব_২৭
সকালের সূর্যের আলো আলোকিত হয়েছে পুরো পৃথিবী। কেও চাক বা না চাক সূর্য ঠিকি তার আলোর দীপ্তি ছড়িয়ে দিয়েছে ধরণীতে। আর এই সময়টা চমৎকার যখন আকাশে আস্তে আস্তে অন্ধকার কাটিয়ে আলোর শিখা ঊদিত হয়।
তুসি নামাজ পরে বাগানে এসে প্রকৃতির এই সুন্দর মনোরম দৃশ্য টা উপভোগ করছে ।
এমন সময় দেখলো ওর বাবা গেট দিয়ে আসছে ।মাথায় টুপি বুঝাই যাচ্ছে মসজিদ থেকে নামাজ আদায় করে আসছে।
তুসিকে দেখে আশরাফ এগিয়ে গিয়ে বললেন,আরে আমার প্রিন্সেস দেখি আজ নিজ থেকেই উঠে গেছে।
তুসি কৌতুহলী হয়ে জানতে চাইল ,আব্বু তুমি কি করে জানো?
আশরাফ জবাবে বললেন,কারণ তোমার মা আজকে এখনো উঠেনি ওই যে দেখো আম্দের রুম এর জানালাটা বন্ধ। রুকসা ওঠলে সর্বপ্রথম ওই জানালা মেলে দেয়।
তুসি হাসল ওর বাবার কথায়। ওর বাবা মাকে কতটা ভালোবাসে যে তার সব কার্যক্রম মুখস্থ জানে।
আশরাফ এগিয়ে এসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,মা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে চলো চা খেতে খেতে গল্প করি।
তুসি মাথা নাড়াল বাবার কথায়।
আশরাফ নিজের হাতে চা করে তুসি কে দিল আর নিজের জন্য ও নিলো।সাথে বিস্কুট ও নিলো।
মেয়ের উদ্দেশ্যে বলল,মা জানোতো সব মেয়েরই একদিন বিয়ে হয় বাবার ঘর ছেড়ে স্বামীর ঘরে যেতে হয় এটাই নিয়ম,সমাজের বিধান ।আমি চাইলেও আমার মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে পারবোনা।
তুসি প্রতিবাদ করে বলল, কেন? কেন পারবেনা?
আমি তো আমার বাবা খাচ্ছি কে কি বলবে?আর বললেইবা কি?
আশরাফ মুচকি হাসলেন মেয়ের কথা শুনে অতঃপর তিনি বললেন, মামুনি আমরা একটা সমাজে বাস করি।সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়।সমাজ কি বলল না বলল সেটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।যদি আমি বলি যে সমাজ লাগবেনা আমার আমি “একাই একশ” এ কথা ভুল ।কথায় আছে,” হতে দশজন মরতে দশজন”।এসব আমাদের মাথায় রাখতে হবে মামুনি।আমাদের ধর্মীয় নিয়ম-নীতি ,সৃষ্টিকর্তার আদেশ নিষেধ পালন করতে হবে।
বাবার কথা শুনতে শুনতে চা শেষ করে ফেলেছে।
আশরাফ ও নিজের চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলল,আমার বন্ধুর ছেলে তোমাকে দেখে ভীষণ পছন্দ করেছে। ওখান থেকে আসার পর থেকে বাবা মায়ের কাছে বায়না ধরেছে ।আর আমার বন্ধু ও তার বৌর ও তোমাকে পছন্দ ছিল আগে থেকেই। তারা আর দ্বিমত করেননি।
তুসি কিছু বলতে নিলে আশরাফ ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল, আমার কথা শেষ হয়নি মা।আগে আমার কথা শুনো পরে তোমার টা বলবে।
তুসি মাথা নাড়ল ।
আশরাফ আবার বলতে শুরু করল, ছেলেটা ভালো ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে।সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো একটা চাকরি পেয়েছে।বাবার ব্যাবসায় হাত লাগানোর আগে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চায়।আর চলাফেরা ও দেখতে শুনতে ও ভালো আমি খবর নিয়েছি তা ছাড়া ছোট থেকে আমাদের হাতের উপর মানুষ হয়েছে জানি কেমন ছেলেটা।
এরপর আশরাফ বলল,আমি বলছিনা ওকেই বিয়ে করতে হবে তোমার। ওর বাবা মা বলল ও নাকি তোমার সাথে আলাদা কথা বলতে চায়। তুমি আজকে যাও ওর সাথে দেখো, কথা বলো,জানো ওর সম্পর্কে এরপর যদি ভালো না তোমার পছন্দ না হয় তবে আমি রিজেক্ট করে দেবো।
দেখো মা রিজেক্ট করতে হলে আমাদের অবশ্যই রিজেন থাকতে হবে। আমি চাই আজ তুমি যাও ওর সাথে তারপর ভালো লাগলেতো ভালো না আর ভালো না লাগলে আমি কারণ দেখাতে পারব বন্ধু কে যে তোমার ভালো লাগে নি।বুঝতেই পারছ আমার বন্ধু ও ওকে তো আমরা এইভাবে মানা করতে পারিনা ।অপমান বোধ করবে ও।
তুসি ওর আব্বুর সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনল।আশরাফ এর কথা যৌক্তিক সম্পূর্ণ। ও আর কিছু বলতে পারলো না।
🌸🌸🌸
কথা অনুযায়ী যথারীতি তুসি বিকালে বের হলো সিপাত এর সাথে যাওয়ার জন্য। সিপাত গাড়ি নিয়ে এসেছে ওকে পিক করতে।
তুসি কে অসতে দেখে সিপাপ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল
তুসি বেগুনি কালারের একটা গাউন পরেছে সিম্পল কাজের, মুখে প্রসাধনীর কোনো ছোঁয়া নেই ।হিজাব করা একটুখানি মুখটা শুধু দেখা যাচ্ছে তা ছাড়া আর কিছু না।ফুল হাতার জামা।
সিপাত কে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অস্বস্তি বোধ করল তুসি
আসসালামুআলাইকুম ।তুসির দেওয়া সালামে সিপাত এর ধ্যান ভাঙলো।হালকা কেশে এদিক ওদিক তাকিয়ে আবার পুনরায় তুসির দিকে তাকিয়ে সালাম এর জবাব দিল।গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে ওকে বসতে বলল।তুসি কথা না বাড়িয়ে সেটাই করলো।
সারা রাস্তায় গাড়ির মধ্যে আর কথা হয় নি।সিপাত কিছু জিজ্ঞাস করলে তুসি হ্যাঁ অথবা না তে জবাব দিল।তুসির কাছে জানতে চাইল কোথায় যাবে সে সামনে থাকা একটা পার্কের ঠিকানা দিল ওর কথা মতো সিপাত সেখানে নিয়ে গেলো ।
তুসির আসলে কিছু বলতে ইচ্ছে করছেনা ।ওর বাবার কথা ফেলতে পারেনি দেখে আসলো।সীপাত ওকে অনেক কিছু জিজ্ঞাস করল তুসি সব উত্তর দিলো ভদ্রভাবে। তবে নিজ থেকে ওর সম্পর্কে কিছু জানতে চাইছেনা দেখে সিপাত বলল, সব তো আমি বলছি তুমি কিছু জিজ্ঞাস করছোনা কেন?আব্ না মানে তোমার কিছু জানার নেই?
তুসি কি বলে দেবে সে বিবাহিত? সেই স্বামীকে তুসির অবচেতন মন কোথাও না কোথাও স্বামী বলে মানে স্বীকার করে।বিশেষ করে ওই দিনের পর থেকে যেদিন আরিয়ান প্রথম বার ওর এতো কাছাকাছি এসেছিল। সেই মহূর্তগুলো আজও হঠাৎ হঠাৎ ওর স্বপ্নে আসে। এমনকি সে এটাও দেখে সযে সে আরিয়ান এর সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় আছে।এই রকম স্বপ্ন দেখলে নাকি বুঝতে হবে সে তাকে মিস করছে।সত্যি কি আরিয়ান ওকে মিস করছে!
এইদিকে তুসিকে ভাবনায় বিভোর হয়ে থাকতে দেখে সিপাত ওকে ডাকলে তুসি শুনতে পাই না আর জবাব দেয় না দেখে সিপাত ওর হাত ধরে ঝাকাতে তুসি ধ্যান ফিরে আসে।সিপাত এর হাত সরিয়ে অপ্রস্তুতভাবে হাসলো ।
সিপাত বলল,কিছু বলার নেই তোমার?
তুসি মাথা নাড়িয়ে না করল।এর পর সিপাত ওকে কি খাবে জিজ্ঞাস করতে তুসি খাবে না বলল।
সিপাত বলল,আরে সেটা হয় নাকি?ওর চোখের সামনে বাদাম ওয়ালাকে দেখে বলল বাদাম খাবে?তুসি বলল , না, আব্ আমি ছিলতে পারিনা।সিপাত অবাক হয়ে বলল,কি বলছো? বাদাম কে না ছিলতে পারে?তুসি জবাবে বলল, আমি কখনো নিজে নিজে খায় নি বললে আম্মু ছিলে দেয়।
সিপাত অবাক হয়ে বলল আচ্ছা আজকে না হয় আন্টির কাজ টা আমি করি। প্লিজ না করবে না।
না হয় পরে বলবে অমি কিপটে কিছু খাওয়াই নি।তুসি আর না করতে পারলনা।
সিপাত বাদাম নিয়ে এসে ছিলে ওকে দিচ্ছে আর তুসি খাচ্ছে। তার পরপরই সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে যাবে বলল তুসি সিপাত ওকে নামিয়ে দিলো।
আশরাফ খান এর সাথে আজকে বিশেষ একজনের সাথে মিটিং করবে সে আর কেও না আরিয়ান। আরিয়ান ওর কোম্পানির সাথে খান কোম্পানির মিটিং এ আরিয়ান এর মিটিং ভালোভাবে হলো এর খান কোম্পানির সাথে কখনো চৌধুরি কোম্পানির মানে আরিয়ান এর কোম্পানির কাজ করা হয় নি।
মিটিং শেষে আরিয়ান বলল, অনেক ভালো লাগলো আপনাদের সাথে ডিল করে।
জবাবে আশরাফ বলল আমার ও আর বিশেষ করে চৌধুরি শব্দ টার সাথে আমার পুরনো স্মৃতি জড়িত।তোমার সাথে কাজ করতে বার বার সেটা মনে পড়ছে।
আরিয়ান হাসলো জবাবে কিছুই বলল না।
রাতে,,,,,
তুসির নামে পারসেল এসেছে রুকসানা বেগম নিলেন সেটা উনি ভাবলেন হয়তো তুসির বান্ধবীরা কিছু দিয়েছে তাই তুসি কে দিয়ে আসলো সেটা।
এখন,, তুসি পারসেলটা হাতে নিয়ে ভাবছে কে দিতে পারে?তারপর উপরের কাগজ টা খুলল ভেতরে শুধু একগুচ্ছ কাঠগোলাপ আর একটা খাম তার ভেতরে চিঠি হবে হয়তো।
ফুল দেখেতো খুশিতে গদগদ হয়ে গেলো তুসি।সেগুলোর নিয়ে ঘ্রাণ নিলো।এরপর ফুলগুলো টেবিলেয উপর রেখে খামটা খুলল ভেতরে একটা চিঠি। তাতে লেখা,,,,,,
💘 হৃদয় হরণকারী 💘
তোমাকে আপাদত কিছু বলে সম্বোধন করবোনা। সেটা সরাসরি দেখলে তখন।তুমি কি জানো কেও একজন তোমার বিরহে প্রতিনিয়ত জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তোমাকে দেখার জন্য তৃষ্ণার্ত চোখ দুটো বার বার পলক ঝাপটায়।বেহায়া মন তোমার সান্নিধ্য চায়। এসব কিছু তাও মানা যায় নিজের মন কে শিকড় দিয়ে বেঁধে সংযত করা যায় কিন্তু যখন কেও তোমার হাত ধরে তুমি হেসে কথা বল তখন সহ্য করা যায় না বিশ্বাস কর মনের ভেতর আগুন জ্বলে। কেও তোমার হাত ধরবে সে অধিকার আমি কাওকে দিইনি,কেও তোমাকে বাদাম ছিলে দেবে সে অধিকার ও আমি কাওকে দিইনি ।
তোমার ওপর সব অধিকার শুধু মাত্র আমার আর কারো না। সেটা খুব তাড়াতাড়ি তুমিও বুঝতে পারবে।আর হ্যাঁ ,শাস্তি কিন্তু তোলা রইল অন্য কারো সাথে পার্কে বসে আলাপ করার জন্য, তার হাতে খাওয়ার জন্য ,হাত ধরার জন্য।
ইতে তোমার,,,,(সেটা না হয় নাইবা বললাম।তাতে কি খুব শীঘ্রই দেখা হবে)❤
চলবে,,,,,
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
(