#ডার্ক ডায়মন্ড
#আফরিন ইভা
#পর্ব-২৯( শেষ পর্ব)
_____________________
-মায়ের বলা কথাগুলো মীরার কানে এখনো যেনো বাজছে।
মীরা চোখ বন্ধ করে ভেবে যাচ্ছে কি বলবে সে এখন তাঁর মা’কে। মেথিস কে ছেড়ে সে কি পারবে রুদ্র ভাই কে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে।
অনুভূতি রাও আজ যেনো মীরার সাথে খেলছে।
মীরার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মায়ের বলা কথা টাও আজ বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হচ্ছে না। মীরা বিধাতা কে স্মরণ করে মনে মনে বললো তুমি আমায় এ কোন পরীক্ষায় ফেললে যখন আমি তাঁকে চেয়েছি তখন আমি তাকে পাইনি কিন্তু যখন তাঁকে চাইনা তখন তাকে দেওয়ার জন্য কি খেলায় মেতেছো।
মীরা মনে মনে নিজেকে বিশেষ করে মায়ের সামনে নিজেকে শান্ত রাখলো।
কারণ এখন মা’কে কিছু বললেই মায়ের যদি উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায় তখন তো মীরা নিজেকেও ক্ষমা করতে পারবে না। নিজের কাজের জন্য সারাজীবন তাঁকে পরিতাপ করতে হবে।
।
মীরা চোখ খোলে জোরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে মায়ের হাত নিজের হাতে নিয়ে মিথ্যা হাসি ফুটিয়ে বললো, যেটা করলে তুমি খুশি হবে সেটাই আমি করবো।
।
কথাটা বলার সময় মীরার দম যেনো আঁটকে আসছে। কথাটা বলতে যদিও মন চায়নি তবুও নিজের ভালো বাসাকে বলিদান দিয়ে বলতে হলো আজ মীরা কে।শুধুমাত্র মায়ের ভালো থাকবার কথা চিন্তা করে।
।
– মীরার কথা শুনে জাহানারা বেগম যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন।
জাহানারা বেগম মীরা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন, মা আমি জানি তুই আমার কথায় রাজি হয়ে যাবি।
তাছাড়া রুদ্র ছেলেটা বড্ড ভালো কিন্তু ইরা তো কিছুই বুঝলোনা।
আমি চাই তোদের বিয়ে আগামীকাল ই দিতে। তোর বাবা রুদ্রের মায়ের সাথে আগেই সব কথা বলে রেখেছেন তুই আসলেই তোদের বিয়ে দেওয়া হবে।আমি আর দেরি করতে চাই না মা।
জাহানারা বেগম মীরার কপালে চুমু খেয়ে মীরার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করলেন তুই সুখী হ মা সুখী হ।
।
– মীরা মনে মনে বিদ্রূপ হাসলো এটা ভেবে রুদ্র ভাই কে বিয়ে করে সুখী হবে!
সে তো কখনো মীরা কে ভালোই বাসে না তাহলে সুখী হবে কি করে।
মীরা মনে মনে মেথিস কে স্মরণ করছে আর বলছে আমি ভালোবাসি আমার প্রিন্স কে, যে আমার অনুভূতি কে ছুঁতে পারে, আমার না বলা কথাগুলো চোখের পলকে বুঝতে পারে।
মীরা মায়ের কপালে চুমু খেলো।
।
– হঠাৎ মীরার বাবা মীরা কে ডাকলেন।
তিনি মীরার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
তোর মা তোর উপর কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না তো ?
।
-মীরা শফিক সাহেবের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলতে লাগলো, মায়ের জন্য এখন মায়ের খুশি টাই আমার কাছে বড় বাবা।
আগে আমার মা তারপর পৃথিবীর অন্যকিছু। কথাগুলো বলতে যদিও মীরার অন্তরাত্মা কাঁপছে তবুও বলতে হচ্ছে।
প্রায় সময় নিজেদের ইচ্ছা কে বলিদান দিতে শিখতে হয় কিছু প্রিয়জনের মুখের হাসির কথা চিন্তা করে।
ঠিক তেমনি মীরাও তাই করেছে।
নিজের হাসিকে বলিদান দিয়ে মায়ের হাসিকে ভালোবেসেছে।
।
-শফিক সাহেব মীরার দিকে বেশ কিছুক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, তুই খুব বড়ো হয়ে গেছিস মা খুব বড়ো। যা রুমে গিয়ে রেষ্ট নে আমি আছি তোর মায়ের সাথে।
।
।
মীরা নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো।
দক্ষিণা বাতাসের মতো আজ মীরার সব ভালোলাগা গুলো যেনো এলোমেলো হয়ে আছে ।
প্রিয় কাউকে এভাবে মীরা হারিয়ে ফেলবে কখনো চিন্তা করে নি।
মীরার কাছে সব যেনো অবাস্তব মনে হচ্ছে।
মীরা চোখ বন্ধ করে মেথিসের চোখ গুলো কে মনে করছে।
নীল সেই দুটি চোখ মীরা কে ভালোবাসতে বলছে, সেই দু’টি রক্তিম ঠোঁট মীরা কে ছুঁয়ে দিতে ইশারা করছে। মীরার ইচ্ছে করছে মেথিসের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে। মীরার ইচ্ছে করছে মেথিসের বুকে কেঁদে কেঁদে বলতে ভালোবাসি প্রিন্স ভালোবাসি। আপনাকে ছাড়া সত্যি আমি মরে যাবো।
আপনি ছাড়া আমার এই পৃথিবী শূন্য মরুভূমি।
হঠাৎ মীরা চোখ খুলে তাকালো, কারোর উপস্থিতি টের পেলো।
কিন্তু না তো কোথাও তো কেউ নেই। হয়তো সব আজ মীরার মনের ভুল।
মীরা রুমে এসে শুয়ে পরলো।
আজ দু’টি চোখে কোনো ঘুম নেই মীরার।
মীরার খুব করে জানতে ইচ্ছে করছে মেথিস যখন জানতে পারবে তাঁর প্রিন্সেস তাঁকে রেখে অন্য একজন কে বিয়ে করছে তখন সে কি করবে? কি জবাব দিবে তখন মেথিস কে।
মীরা যে তাদের হাজার বছরের ভালোবাসা কে খুন করতে চলছে তা কি মেথিস মেনে নিবে।
রাতটা মীরা কেঁদে কেঁদে নির্ঘুমে কাটিয়ে দিলো।
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করলো।
আলো যতো ফুটছে মীরার বুকের ভয় ততো বেশি বাড়ছে। রুদ্র ভাই কে কি করে স্বামী হিসেবে মেনে নিবে মীরা তাই ভাবাচ্ছে মীরা কে । মেথিস কে মীরা তাঁর সম্পূর্ণ ভালোবাসা মন প্রাণ উজার করে দিয়ে দিয়েছে।
।
।
-জাহানারা বেগম নিজ হাতে মেয়ের বিয়ে দিবেন বলে শফিক সাহেবের হেল্প নিয়ে বিয়ের সব ব্যবস্থা করে ফেলেছেন।
বিয়ের অনুষ্ঠান একদম ছোটখাটো করে আয়োজন করা হয়েছে।
– মীরার একটা জিনিস অবাক লাগছে মীরা আসার পর থেকে রুদ্র ভাই একবারও মীরার সাথে দেখা করতে আসেন নি।
আসা থাক দূরের কথা ভুল করেও সামনে পড়েননি।
মীরা এসব ভাবতে ভাবতে চোখ পরলো সামনে থাকা মানুষ টির উপর।
মীরা দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো রুদ্রের মা’কে।
আন্টি তুমি কেমন আছো, আমি গতকাল এসেছি কিন্তু তুমি আমাকে কেনো দেখতে আসোনি ?
– রুদ্রের মা মীরার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, সে কি, আমি তো তোকে একেবারেই নিয়ে যাচ্ছি।
– কথাটা শুনামাত্র মীরার মনটা ভীষন্নতায় ছেয়ে গেলো।মীরা মনে মনে বললো আন্টি আমি যে তোমার ছেলেকে নয় আরেকজন কে ভালোবাসি ভীষণ ভালোবাসি।
সেও যে আমার প্রতীক্ষায় আছে।
আমি যে নিজেও ঠকছি তোমার ছেলে কেও ঠকাচ্ছি।
আমি যে আমার মা’কে কষ্ট দিতে চাইনা।
আমি যে পারবোনা গত জন্মের মতো মমের মতো করে আমার এই মা কেও হারাতে।
আমি যে চাই আমার মা হাজার বছর বেঁচে থাকুক এভাবে হাসিখুশি হয়ে।
তাই তো তোমার ছেলে কে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি।
।
।
রুদ্রের মা মীরার ফ্যাকাসে মুখ দেখে বললো, বিয়ের আগে একটু আধটু মন খারাপ হবেই মা চিন্তা করিস না, আমাদের বাসা তো তোদের পাশের ফ্ল্যাট ই।
তোর যখন ইচ্ছে তখন মায়ের কাছে আসতে পারবি।
রুদ্রের মা ফিরে গিয়ে আবার ফিরে এসে বললো, মীরা বিয়ে টা হয়তো একটু তারাহুরো করে হয়ে যাচ্ছে কিন্তু মা শুন বিবাহ এমন এক বন্ধন তা থেকে সহজে আলাদা হওয়া যায় না।
– কথাটা মীরার ভেতর টা নাড়িয়ে দিলো।
খুব তারাহুরো করে বিয়ে হলেও সকল নিয়মনীতি মেনে মীরার বিবাহ আজ সম্পন্ন হলো।
।
।
।
– মীরা লাল বেনারশী পড়ে মাথায় লম্বা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে ফুল দিয়ে সাজানো বিছানায়। মীরা চারদিকে তাকিয়ে দেখলো বেশ সুগন্ধি ফুল দিয়ে পুরো রুম সাজানো হয়েছে। মীরা বিছানায় হাত দিয়ে ফুলগুলো তে স্পর্শ করে দেখলো লাল, সাদা, রঙিন ফুল দিয়ে বিছানা সাজানো কিন্তু মীরার মনের কোথাও ছিটেফোঁটা রঙ নেই। সব যেনো ধূসর বিষন্নতায় ছেয়ে আছে। কাঠ পুতুল সেজে মূর্তির ন্যায় অপেক্ষা করছে কারো জন্য।
মীরার বুক ডিপ ডিপ করছে।
মেথিস জানতে পারলে কি হবে কিছুই জানা নেই মীরার।
মীরার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে।
মীরা হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে মুছে যাচ্ছে বার-বার।
।
হঠাৎ কেউ এসে রুমে প্রবেশ করলো।
মীরা ঘোমটার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখলো রুদ্র ভাই শুভ্র পায়জামা পাঞ্জাবি পড়ে সামনের সিল্কি চুলগুলো পেছনের দিকে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে দরজা টা আটকিয়ে দিলো।
-এতোদিন পর রুদ্র ভাই কে দেখেও মীরা খুশি হতে পারলো না।
দেশে আসবার পর এই প্রথম মীরা রুদ্র ভাই কে দেখতে পেলো।
রুদ্র ভাই কে দেখার পর মেথিসের কথা খুব মনে পড়ে গেলো।
দু’জন মানুষ হুবহু এক। মীরার একসময় রুদ্র মানে কাউকে ভালো লাগলেও এখন আর অনুভূতি রা রুদ্র ভাই কে কাছে টানে না কিন্তু ঐ মানুষ টাই এখন আবার মীরার স্বামী।
মীরা কিছুতেই মন থেকে মানতে পারছে না রুদ্র ভাই কে ।
-রুদ্র ভাই হাতের উপর হাত রেখে মীরার পাশে এসে বসলো। মীরার দিকে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হঠাৎ বলে উঠলো, কিরে তুই এমনভাবে কাঁপছিস কেনো? একটু পর দেখা যাবে তোর কাঁপা-কাঁপিতে পুরো পৃথিবী কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে ।
-মীরা অবাক হচ্ছে রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে।
এই মানুষ টা আজকের বাসর ঘরে এসেও মীরা কে এভাবে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে। মীরার ভয় করছে দেখেই তো কাঁপছে।
– আচ্ছা মীরা তুই এতো বড়ো ঘোমটা দিয়ে বসে আছিস যে, তুই কি ভেবেছিস আমি অন্যদের মতো তোর ঘোমটা সরাবো মোটেও তা ভাবিস না, আমি পারবো না করবোও না কখনো কারণ আমি তো তোকে অনেকবারই দেখেছি নতুন করে দেখবার কি আছে!
– রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে মীরা অবাকের উপর অবাক হচ্ছে, এবার মীরা বুঝতে পেরেছে ইরা কেনো রুদ্র ভাই কে ছেড়ে গেছে। মীরা মনে মনে ইরা কে বললো আপু তুই তো বেঁচে গেছিস আমাকে মরণ ফাঁদে পেলে আমি কি করে রেহাই পাবো এই রুদ্র ভাই থেকে।
– মীরা এসব নাটক না করে ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। দেখা যাবে কেঁদে কেঁদে তুই পেত্নী হয়ে আছিস। আর এই পেত্নীময়ী চেহারা দেখে বেহুঁশ পর্যন্ত হতে পারি।
– মীরার কিছুই করবার নেই, মীরা মনে মনে চিন্তা করলো রুদ্র ঠিকই বলেছে কেঁদে কেঁদে হয়তো ঠিকই নিজেকে পেত্নী বানিয়ে ফেলেছি।মীরা ঘোমটা ফেলে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমে আসলো। মীরা রুমে এসে দেখলো রুদ্র ভাই রুমে নেই। মীরা মনে মনে ভাবলো ভালোই হয়েছে উনি নেই।
হঠাৎ ঘাড়ে এক অদ্ভুত ব্যাথা অনুভব হলো মীরার। মীরা চোখ বন্ধ করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো রুদ্র ভাই মীরার ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দিয়েছে।
মীরা কিছু বলতে যাবে রুদ্র শসসসসস বলে থামিয়ে দিলো।
রুদ্র ভাই মীরার ঘাড়ের রক্ত গুলো চুষতে লাগলো।
কেউ মীরার কানে ফিসফিসিয়ে বললো,
প্রিন্সেস ডু ইউ নো ইউ আর মা’ই ডার্ক ডায়মন্ড।”
– কথাটা শুনে মীরা চমকে গেলো।
বুকের ভেতর উথাল পাথাল এক ঢেউ এসে মীরা কে নাড়িয়ে দিলো।
মীরা কিছুতেই বুঝতে পারছেনা রুদ্র ভাই এই কথাটা কেনো বললো।
এটা তো শুধু আমার প্রিন্স আমাকেই বলে।
– মীরা ছলছল চোখে দু’টি নীল চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। দুটি চোখ যেনো মীরা কে খুব করে কাছে টানছে।
দুটি চোখ একে অপরকে অনেক কিছু ইশারা করে অনেক কথা বলে যাচ্ছে।
– জিজ্ঞেস করবিনা কে আমি তোকে কেনো আঘাত করলাম।
– মীরা কি বলবে কিছুই যেনো বুঝতে পারছেনা। তাঁর মানে এতো বছর এতো কাল মীরা তাঁর প্রিন্সের কাছাকাছি থেকেও তাঁকে সে চিনতে পারেনি। তাঁর মানে রুদ্র ভাই মেথিস?
মীরার মাথা টা ঝিমঝিম করছে, অস্থিরতা যেনো বেড়েই চলেছে।
– তুই তোর ভালোবাসা প্রিন্স কে রেখে কেনো তোর মায়ের কথায় রাজি হয়ে গেলি। একটি বারও কি তুই আন্টি কে কথাটা বলতে পারতিস না।
তোর ভালোবাসা কি এতোটাই ঠুনকো যে কাউকে বললে সে মেনে নিতো না।
– মীরা যেনো নিঃশ্বাস নিতেও ভুলে গেছে।
– তোকে আমি সেই ছোট থেকে কেনো আঘাত করে আসছি জানিস কেনো?
– মীরারও অনেক ইচ্ছে খুব ইচ্ছে রুদ্র ভাই কেনো মীরা কে সহ্য করতে পারতেন না তা জানবার।
– কারণ আমি জানতাম ছোটবেলা থেকেই তুই আমাকে ভালোবাসিস আমাকে পছন্দ করিস। আমার অনুভূতি তোকে খুব করে কাছে টানতো। আমি যেখানে যেতাম হাজার বারণ সত্বেও তুই ঠিকই যেতিস।
আমার মা তোর কাছ থেকে আমাকে সবসময় দূরে রাখতো।
– আন্টির কথা শুনে মীরা চমকে গেলো।
– কারণ মাও তোকে খুব ভালোবাসতো। তিনি তোকে আমার বউ হিসেবেই দেখতে চেয়েছিলেন পঁচিশ বছর পর তাঁর আগে নয়। উনি চাইতেন তোর পঁচিশ বছর পূর্ণ হওয়া ছাড়া আমরা যেনো এক না হই, নয়তো তুই মুনস্টোন পেতিস না, আর আমাদের ভ্যাম্পায়ার কিংডমও রক্ষা পেতো না, নেকড়ে রা আমাদের সব অস্তিত্ব মুছে ফেলতো।
।
– কথাগুলো শুনে মীরার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে এটা ভেবে ছোট থেকে মীরার ছোট মনটায় কতোইনা কষ্ট পেয়েছে রুদ্র ভাইয়ের অবজ্ঞা পেয়ে পেয়ে। ভাবতেই মীরার খারাপ লাগছে, কষ্ট হচ্ছে কলিজায়।বুকের ভেতর কেমন কষ্ট হচ্ছে যা পুরো শরীর কে নিথর বানিয়ে দিচ্ছে।
তবুও মীরার ভালো লাগছে এটা ভেবে ভ্যাম্পায়ারদের জন্য মীরার এতো কষ্ট সার্থক করতে পেরেছে মীরা।
– রুদ্র আবার বলতে লাগলো, ইরা আরেকটা ছেলেকে ভালোবাসতো তা আমিও জানতাম ও আমাকে জানিয়েই পালিয়েছে। ইরা আর আমার এনগেজমেন্ট টা ছিলো পুরোটাই সাজানো। কারণ আন্টি ঐ ছেলের কাছে ইরা কে বিয়ে দিতে চান না।
আর আন্টি এমনিতেও কখনো বিশ্বাস করতে চান না তুই একজন ভ্যাম্পায়ার কিন্তু আংকেল সবটা জানেন।
– মীরা রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে অবাকের উপর অবাক হচ্ছে আজ।
মীরার আজ ইচ্ছে করছে রুদ্র ভাই কে নতুন করে ভালোবাসতে।
মীরা রুদ্র ভাইয়ের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে নতুন করে প্রেমে পড়ে গেছে।
নিজেকে আর দমিয়ে রাখতে না পেরে মীরা রুদ্রের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো পাঞ্জাবি তে এক হাত মুঠো করে কিল বসিয়ে বললো আপনি খুব বাজে রুদ্র ভাই আপনি খুব বাজে আপনি সবসময় আমার অনুভূতি নিয়ে মজা করেছেন।
– রুদ্র ভাই মীরা কে খুব গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে কপালে শীতল ঠোঁট দিয়ে চুমু খেয়ে বলতে লাগলো তোকে দূরে না রাখলে তুই কবেই ডুবে যেতিস আমার গভীরে।
– মীরা রুদ্র ভাইয়ের ঘাড়ে দু-হাত রেখে ফিসফিসিয়ে বললো, প্রিন্স ভালোবাসি সত্যি ভালোবাসি।
আপনাকে না পেলে সত্যি আমি মরে যেতাম। আমার যে নিঃশ্বাস আঁটকে আসছিলো, ইচ্ছে করছিলো ডানা ঝাপটিয়ে আপনার কাছে চলে যাই।
-রুদ্র মীরার কানে ফিসফিসিয়ে বললো এখন বল তুই কাকে বেশি ভালবাসিস, রুদ্র কে না-কি মেথিস কে!
– মীরা রুদ্রের বুকে আলতো করে কিল বসিসে বললো আমি ভালোবাসি খুব ভালোবাসি আমার প্রিন্স কে, যে আমায় ভালোবাসতে মুগ্ধ করেছে, যে আমার অনুভূতির মূল্য বুঝে, যে আমার মন খারাপের কারণ, ভালোবাসার রঙিন পরশ।
– আর আমি আমার প্রিন্সেস কে।
– প্রিন্সেস আমরা কিন্তু আগামী সপ্তাহে ইংল্যান্ড যাচ্ছি।
– মীরা শুনে অবাক হলো।
– প্রিন্স মীরার দিকে তাকিয়ে মুখে রহস্যময় হাসি ফুটিয়ে বললো, চিন্তা করোনা একেবারে নয়, হানিমুনে যাচ্ছি আমাদের ডার্ক ডায়মন্ড প্যালেসে একটু একাকী নির্জনে নিজেদের মতো ভালোবাসবো বলে।
– মীরা লজ্জা পেয়ে তাঁর প্রিন্সের বুকে মুখ লুকালো।
– প্রিন্স মীরাকে কোলে নিয়ে ফুলসজ্জার খাটে নিয়ে বসালো।
প্রিন্স তাঁর প্রিন্সেসের হাত তাঁর বুকের বাঁ পাশে রেখে সারাজীবন একে অপরকে ভালোবাসবার প্রতিজ্ঞা করলো।
দু’জন ধীরে ধীরে একে অপরের ভালোবাসার পরশে ডুবে গেলো।
দু’জন ভ্যাম্পায়ারের ভালোবাসা আজ পূর্ণতা পেলো বহু হাজার বছর প্রতীক্ষার পর। তাদের ভালোবাসা দেখে আজ চাঁদের বুড়ি লজ্জা পেয়ে মুখ লুকালো।
#সমাপ্ত
বিদ্রঃ রুদ্র ভাই ই মেথিস ছিলো, রুদ্র ভাই চরিত্র টা যেমন ফাজিল ছিলো তেমনি মজারও। আজ থেকে এই গল্পের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না, ইতি টেনে দিলাম। আজ শেষ পর্ব গল্পটা কার কেমন লাগলো বড়ো করে মন্তব্য করবেন দয়া করে।ভালোবাসা রইলো সবার প্রতি।
আবার হাজির হবো নতুন কোনো রহস্যময় গল্প নিয়ে, নতুন গল্প #রহস্যময় স্বপ্ন এক সপ্তাহ পর ফিরবো এক সপ্তাহ সময় নিচ্ছি এ কারণে এই ফাঁকে আমি বইয়ের লিখা শেষ করবো।
আমার গল্পের সকল আপডেট আমার গ্রুপে জানতে পারবেন। সবাই গ্রুপে জয়েন হয়ে নিবেন গ্রুপে আমি খুব বেশি একটিভ। ফাস্ট কমেন্টে গ্রুপ লিংক দেওয়া হলো —
সবাই রিভিউ দিতে রেডি হয়ে যাও আগামীকাল ডার্ক ডায়মন্ড গল্পের সব লিংক একসাথে করে দেওয়া হবে।
সবাই গ্রুপে জয়েন হবেন