ভালোবাসার ভেজা সন্ধ্যে পর্ব ৪

#ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে
#রোকসানা_রাহমান

পর্ব (৪)

রিপ্তি আর তৃণা এদিকওদিক ঘুরেফিরে কোথাও জুতো পেলোনা। দুজনেই হতাশভঙ্গিকে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। ঠিক তখনি অনুভব পাশ থেকে গান ধরলো,,

বিয়েবাড়ীর ভীরে,,
সুন্দরীর জুতো গেল হারিয়ে
সই দেখনা খুজে দেখনা
জুতোর গজালো কি পাখনা

অনুভবের গানের সুরের সাথে নিজের বা’চোখটা টিপে দিলো। চোখে,ঠোঁটে দুষ্টুর ছায়া নিয়ে রিপ্তির দিকে এগিয়ে আসছে। রিপ্তি এককদম পিছিয়ে যেতেই মাটিতে কিছু পড়ার শব্দ। রিপ্তি আর তৃণা অনুভবের জুতো পড়ার দিকে চেয়ে আছে। তারমাঝেই তৃণার মিহির চিৎকার,,

“” এগুলো তো রাসেল ভাইয়ার জুতো!””

অনুভব গান থামিয়ে শব্দ করে হেসে উঠলো। দুজনের মুখের অবস্থা দেখার মতো হয়ে আছে। তাই অনুভবও হাসির ফাঁকে ফাঁকে ওদের দেখছে।

~~~

“” বেশ হয়েছে,ছোটবেলা পড়িসনি? অন্যের জন্য গর্ত খুড়লে নিজেরই পড়তে হয়??””

তৃণার কথায় রিপ্তি তেলে-বেগুনে জ্বলসে যাচ্ছে। কড়া চোখে তৃণার দিকে তাকালো। তৃণা রিপ্তির চাহনিকে অগ্রাহ্য করেই বললো,,

“” কি প্রয়োজন ছিলো অমন সুন্দরমতন মানুষতার জুতো চুরি করার? এখন হলো তো? নে,এবার খালি পায়ে হাঁট!””

রিপ্তি বসা থেকে উঠে দাড়ালো,মুখে কাঠিন্যভাব এনে বললো,,

“” ঐ লাল ব্যাঙটাকে তোর সুন্দর লাগলো?””
“” ব্যাঙ? কোথায় ব্যাঙ?””
“” যার প্রশংসায় তুই পঞ্চমুখী সেই ব্যাঙ! শুধু ব্যাঙ নয়,লাল ব্যাঙ,ভাঙা গলার লাল ব্যাঙ!!””
“” ভাঙা গলা? কোথায় ভাঙা গলা? ইশ! কি সুন্দর করে গান গাইলো।””

তৃণার মুখের অভিব্যক্তিভাবে রিপ্তির শরীর পুড়ছে। ইচ্ছে করছে ওর লজ্জিত গালদুটোতে ঠাটিয়ে দুটো চড় মেরে বসতে। অমন বান্দরমুখো ছেলে নাকি সুন্দর,আহা চেহারার কি ছিরি,ছেড়া কন্ঠ,ছেড়া রুচি,ছেড়া ভাব। এই ছেলের নাম অনুভব নয়,ছেড়াভব হওয়া উচিত ছিলো। এতো অনুভূতিপ্রবণ নামটা যে কে রাখলো তার মুখদর্শন করা দরকার। রিপ্তি তপ্ত নিশ্বাস ছেড়ে বললো,,

“” তোর মতো রুচিহীন মেয়ে আমার বেস্টফ্রেন্ড কি করে হলো? সর আমার সামনে থেকে! তোর গা থেকে ব্যাঙ ব্যাঙ গন্ধ আসছে!””

রিপ্তি নাক চেপে ধরে গালদুটোতে বাতাস ভরে নিলো। মুখের ভাব এমন যেন এই বুঝি বমি করে দিবে!

~~~

খাওয়ার টেবিলে বসে রিপ্তির খাওয়া হলোনা। তার মুখোমুখি বসেছিলো অনুভব। সামনে এমন ব্যাঙমুখো ছেলে বসে থাকলে কি খাওয়া যায়?? যদিও অনুভব তাকে একটুও বিরক্ত করেনি। সে তার আপনমনে আয়েশীভাবে খাচ্ছিলো। কিন্তু এটা রিপ্তির একদম সহ্য হলোনা৷ অনুভবের খাবারের প্রত্যেকটা দানাতেই রিপ্তি বিরক্ত খুজে নিয়েছে। হঠাৎ করেই তার সব অসহ্য লাগতে শুরু করে দিয়েছিলো। তাই সকলকে এড়িয়ে খাবার ছেড়ে উঠে এলো। কিছু ভালো লাগছেনা তার। হৈ হট্টগোল,নানা রকম শোরগোলে তার ভেতরটাতে একঘেয়েমীর আকাশ নেমে এলো।

রিপ্তি বিয়েবাড়ী ছেড়ে কিছুটা দুরে চলে এসেছে। খালি পায়ে হাঁটছে। নির্জন পরিবেশের খোলা হাওয়া বেশ লাগছে। খালি পায়ে মাটির ছোয়া,ভেতরের একঘেয়েমিটা দুর করে দিয়েছে। ভালো লাগছে তার! সবকিছু ভালো লাগছে। বিকেলের ক্লান্ত হাওয়া,ক্লান্ত আকাশ,গায়ের মেঠো পথ,ধুলো মাখা দূর্বাঘাস! উফ পৃথিবী অনেক সুন্দর! রিপ্তি এক ঝলক ভালো লাগায় ডুব দিতে চোখের পাতা বন্ধ করলো। পেট টেনে,শব্দ করে নিশ্বাস নিতেই অনুভবের মুখটা ভেসে উঠেছে। চট করে চোখ মেলে ফেললো রিপ্তি। এই লোকটার মুখ সে কিছুতেই দেখতে চায়না। কিছুতেই না!

রিপ্তি এলোমেলো পা ফেলে পেছনপথ ধরলো। আকাশের লালআভায় ক্লান্ত সূর্যের রশ্মি পড়ছে রিপ্তির মুখে। বিকেলের তেজহীন তাপটাও রিপ্তির সহ্য করতে ইচ্ছে হলোনা। তাই দ্রুত পা ফেলেছে। কিছুদুর এগুতেই তার পা থমকে গেলো। অদুরে একটি ছেলে আর মেয়ে পাশাপাশি দাড়িয়ে। না,পাশাপাশি নয়,মেয়েটিকে ছেলেটি আড়াল করে দাড়িয়ে আছে। কারো মুখই রিপ্তি দেখতে পাচ্ছে না। অস্পষ্ট চওড়াপিঠে ঝাপসা দৃষ্টি ফেলেই রিপ্তি কন্ঠ ছাড়লো,,

“” ওটা অনুভব না? এই অজ পাড়াগায়ে মেয়েসঙ্গি কোথা থেকে পেলো?””

রিপ্তি দ্রুত কদম ফেলে মানুষদুটোর দিকে এগুতে গিয়েও থমকে গেলো। আমি ওখানে গিয়ে কি করবো? ছেড়াভব যার সাথে ইচ্ছে তার সাথে কথা বলুক আমার কি? যার কন্ঠ ফুটলেই নোংরা গান বের হয় তার চরিত্রে দোষ তো থাকবেই! এমন দোষওয়ালা চরিত্রের থেকে দুরে থাকায় শ্রেয়! রিপ্তি আরেকবার তীক্ষ্ণদৃষ্টি ছুড়লো,দুরের মানব-মানবীর দিকে। অনুভব একাধারে কথা বলে যাচ্ছে। অস্পষ্ট কথাগুলো রিপ্তির কানে দুর্বল হয়ে বাজছে। দু-হাত খুব ঘনঘন নাড়ছে। রিপ্তি আর একদন্ডও ওখানে দাড়ালোনা। ঘন পা ফেলে বিয়েবাড়ীর দিকে এগুলো। গোটা কয়েক কদম ফেলতেই তৃণা দৌড়ে এলো,,,

“” কোথায় ছিলি তুই? পুরোবাড়ী হালচষেছি,কিন্তু তোর তো কোনো দেখা নেই!””

তৃণার কথায় রিপ্তি ক্লান্ত চাহনি আঁকলো। ঠোঁটে শুকনো হাসি এনে ভেতরে ঢুকবে তখনি তৃণা ওর হাত চেপে ধরলো।

“” খালি পায়ে আর কতক্ষণ ঘুরবি? নে,জুতো পড়ে নে।””

তৃণা রিপ্তির সামনে জুতো রাখতেই রিপ্তির দ্রুত প্রশ্ন,,,

“” কোথায় পেলি? কোথায় লুকিয়েছিলো?””
“” আমি কিভাবে বলবো? অনুভব ভাইয়া জানেন!””
“” তাহলে তুই পেলি কি করে?””
“” অনুভব ভাইয়া আমাকে ডেকে নিয়ে দিলো। উনার তোকে দেখে অনেক মায়া লাগছে তাই..””
“”এই কথা তোকে,উনি নিজে বলেছেন?””
“” হুম!””

রিপ্তি জুতো জোড়ার দিকে তাকালো। পায়ে পড়তে গিয়েও থমকে গেলো। উবু হয়ে হাতে নিচ্ছে।

“” তুই জুতো পায়ে না পড়ে হাতে পড়ছিস কেন?””

রিপ্তি তৃণার প্রশ্ন এড়িয়ে গেলো। ওর চোখ পড়েছে বা’পাশে। কিছুটা দুরেই অনুভব দাড়িয়ে। এক মাঝবয়সী লোকের সাথে আলাপে মশগুল। রিপ্তি কয়েক সেকেন্ডের জন্য নিশ্চুপী। সেকেন্ড পেরিয়ে মিনিটে পৌছুতেই ধপধপ পা ফেলে অনুভবের কাছে এগিয়ে এসেছে। অনুভব নিজের গল্পসঙ্গীকে কিছু একটা বুঝানোর জন্য হাত নাড়াতেই রিপ্তি ওর হাত চেপে ধরলো। চোখে আগুনের ফুলকি নিয়ে জুতো জোড়া ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,,

“”আপনার মায়া আপনার কাছেই রাখুন। আমি খালি পায়েই হাঁটবো। শুধু আজকে কেন দরকার পড়লে সারাজীবন খালি পায়ে হাঁটবো। তবুও আপনার মায়া আমি নেবোনা।””

রিপ্তি চলে আসার জন্য ঘুরে দাড়াতেই অনুভবের অস্পষ্ট কন্ঠবুলি,,

“” অগ্নিহংসী!””

~~~

মাথায় স্নেহের স্পর্শ পেতেই রিপ্তির গভীরঘুম আলসেমীতে পরিণত হলো। পিটপিট করে চোখের পাতা মেলছে। ইচ্ছে করছেনা মেলতে তবুও তাকে মেলতে হলো। চোখের সামনে এমন নীলচে মায়াময়ীকে দেখে তার চোখ জুরিয়ে যাচ্ছে। হালকা নীল রঙের সুতি শাড়ী পরিহিতা তার মাথার কাছে বসে আছে। আদরী চোখ,মিস্টি হাসি,মায়ার বাধনে রিপ্তি আটকে আছে। মিন্মি,রিপ্তির ভাবী। বয়সে তার থেকে খুব একটা বড় নয়। তবে অপরিচিত। কাল বিয়ের আসরেই কয়েক পলক দেখেছিলো। তেমন কথা হয়নি,আলাপটা জমেওনি। তারপর?

“” তুই কি চোখ মেলেও ঘুমাস রিপু?””

ভাবীর শীতল কন্ঠে রিপ্তির চোখ বন্ধ হতে বাধ্য। ভালো লাগার ঝড় বয়ছে তার বুকে। নাক টেনে গভীর নিশ্বাস নিতেই কেমন মা মা গন্ধ পাচ্ছে। এতো ভালো লাগা সে অন্ধকারে নয় আলোতে নিতে চায়। রিপ্তি কিছু সময় পেরিয়েই চোখ মেললো। মিন্মি মিস্টি হাসিটাকে নিমিষেই মিশিয়ে নিলো। মুখভার করে বললো,,

“” তোর কি আমাকে পছন্দ হয়নি,রিপু? যদি পছন্দ নাহয় তাহলে বল। আমি এখনি ফেরত যাবো। তোর ইচ্ছেতেই আমি থাকবো অনিচ্ছাতে চলে যাবো।””

মিন্মির কথার কোনো আদি-অন্ত কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা রিপ্তি। মেয়েটি তার অপরিচিত। আর একজন অপরিচিতের মুখে তুই ডাকটা রাগের কারণ হতে পারে,কিন্তু তার রাগ হচ্ছেনা। ভালো লাগছে,বড্ড বেশি ভালো লাগছে। তবে অবাকও হচ্ছে। এতো অল্পতে এতো আপন??

রিপ্তি নিরব। মিন্মি ওর মাথা থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে নিলো। মুখ বাকিয়ে অভিমানিসুর,,,

“” কাল এক ঝলক তোকে দেখেছিলাম। তারপর আর কোনো দেখা নেই। তোদের বাড়ীতে আসার পরও তোর খোঁজ নেই। ননদ হোস তুই আমার। কোথায় মজা-আহ্লাদে ভরিয়ে রাখবি আমায় তা না চোখের দেখাটাও দেখতে এলিনা? এটা কিন্তু ভারী অন্যায় হয়েছে রিপু!””

রিপ্তি আর শুয়ে থাকতে পারলোনা। শোয়া থেকে উঠে সোজা নতুনভাবীকে জরিয়ে ধরে বললো,,

“” সরি,ভাবী। অতিরিক্ত আমেজে মাথা ধরেছিলো তাই!””

মিন্মি ননদের বাধন ছাড়িয়ে মুখোমুখি হলো। রিপ্তির মুখে সচেতন দৃষ্টি ছুড়ে বললো,,

“” এইটুকুই তো নাকি অন্যকিছু?””

রিপ্তি মাথা নিচু করে বললো,,

“” হুম!””
“” কোনটাতে হুম?””

রিপ্তি ভাবীর প্রশ্ন এড়িয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলো,,

“” বাবা,কোথায়?””
“” রান্নার ওখানে গেছে।””
“” রান্না! কিসের রান্না?””
“” বৌ-ভাতের।””
“” বৌ-ভাত? ওখানে বাবার কি কাজ? বাবুর্চি আসেনি? বাবার গরমে এলার্জি আছে,ভাবী। আগুনের তাপ কি করে সহ্য করবে?””

মিন্মি বিছানার চাদর গুছাচ্ছিলো। রিপ্তির প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেলোনা৷ তার আগেই রিপ্তি বেরিয়ে পড়েছে।

~~~
লাল লুঙ্গির সাথে সাদা পাতলা গেঞ্জি পড়েছে অনুভব। গলায় লাল গামছা, হাতে নাড়ুনী। সে রান্না করছে নাকি গামছা ভিজিয়ে ঘাম জমাচ্ছে তাই বুঝতে পারছেনা রিপ্তি। প্রায় দশ মিনিটের মতো হবে সে এখানে দাড়িয়ে আছে। স্বপ্ন দেখছে নাকি বাস্তব এই দোটানায় সে স্থির। চোখের সামনে মানুষটাকে তার পুরুষ নয়,মহাপুরুষ মনে হচ্ছে। ফটোগ্রাফার থেকে সোজা বাবুর্চিতে কি করে নামলো?? দুনিয়ার সকল কাজই কি তার আয়ত্বে চলে গিয়েছে? রিপ্তির স্থিরদৃষ্টি অনুভবের উপর। চাইলেও পারছেনা নিজের দৃষ্টি সরিয়ে আনতে। এ কেমন মোহনীয় উন্মত্ততায় ভুগছে সে?

রিপ্তি নিজের বিহ্বলতাকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগুলো। তার চক্ষুদ্বয় অতৃপ্তে ভুগছে। আজ সচেতন নয়,বিরক্ত নয়,অসহ্য নয়,উদাসীনতাকে প্রশ্রয় দিয়ে সামনে এগুলো। অন্যমনস্কতায় পা ফেলতেই রিপ্তির পা ভারী কিছুর সাথে আটকে গিয়েছে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অনুভবের উপর গিয়ে পড়লো। অনুভবের কর্মঠ হাতের চাপ রিপ্তির উত্তেলিত বাহে পড়েছে।

“” আপনি আমাকে ছুলেন কেন? আপনার সাহস কি করে হলো আমাকে ছোয়ার? ছাড়ুন বলছি,নাহলে কিন্তু আমি…””

রিপ্তির কথার মাঝপথে অনুভব হাতের চাপ সহজ করে দিলো। রিপ্তির মাথাটা, অনুভবের বুক ছোয়া থেকে পেট অব্দি চলে আসতেই ও ভয়ে অস্পষ্ট শব্দ করলো। বা’হাত দিয়ে অনুভবের গামছা সহিত গেন্জি খামচে ধরে আছে। চোখের পাতা এতো কঠিনভাবেই বন্ধ করেছে যে,চারপাশে শীর্ণ কুচকানোর ভাজ! অনুভব রিপ্তিকে সম্পুর্নভাবে ছেড়ে দিয়ে নিচুসুর টানলো,,,

বুক চিনচিন করছে হায়,,
মন তোমায় কাছে চায়,,
আমরা দুজন,দুজন আজ
প্রেমের দুনিয়ায়,,,
তুমি ছুয়ে দিলে তাই
আমার কি যে হয়ে যায়…(গান)

অনুভবের গানের শব্দে রিপ্তির ভয় কুপোকাত। বন্ধ চোখের দরজা হা’তে রুপান্তর। মনের ঘরে অন্তর অন্তর ছোট্ট শব্দ বাজনা তুলছে, ছি!ছি!!ছি!!!

~~~

গোসল সেরে রিপ্তি আয়নার সামনে দাড়িয়েছে। মেহমান আসতে চলেছে অথচ এখনো সে রেডি হতে পারলোনা। নিজের বাড়ীর আনুষ্ঠানিকের কাজ তো নিজেদেরই সামলাতে হয়,সেখানে সাজগোজের সময় কই?? এদিকে ভাবী নাছোড়বান্দা! তার বিছানায় সবুজ রঙের হালকা কাজের লেহেঙ্গা রেখে গিয়েছে। সাথে গরম আর আদেশীসুর তো বটেই। আধাঘন্টার মধ্যে রেডি হতে হবে। নাহলে কি করবে সেটা বলেনি! না বললে কি তার এতো ব্যস্ততার মধ্যেও ভাবীর কথা শুনতে ভালো লাগছে।

আধাঘন্টার মধ্যে ২০ মিনিট লাগিয়ে দিলো লেহেঙ্গা পড়তে। তাও সম্পুর্ণ হয়নি। উপরের পার্টের হুক সে কিছুতেই লাগাতে পারছেনা। শরীরের সাথে এডজাস্ট হয়নি নাকি হাত লম্বা হয়নি তাও বুঝতে পারছেনা। তবে এতোগুলো মিনিট পার করে এটা বুঝে গিয়েছে তার দ্বারা এটা আর সম্ভব হবেনা।

রিপ্তি দরজা মেলে বাইরে উকি দিলো। আশেপাশে তেমন কেউ নেই। দৌড়ে কি ভাবীর রুমে যাবে নাকি পরিচিত কারো আসার অপেক্ষায় থাকবে?? মনের প্রশ্নের সাথে পরিস্থিতি সামলিয়ে উঠার আগেই তৃণার কন্ঠ পেলো। তার খোঁজই করছে সে। তৃণার কন্ঠ মিলে গেলো। তবে এইদিকের পথ ধরেই এগুচ্ছে। পায়ের শব্দে রিপ্তি সেটা আন্দাজ করতে পেরেছে। সচেতন মনোযোগী পায়ের শব্দে। শব্দটা নিজের দরজার সামনে আসতেই রিপ্তি আর অপেক্ষা করতে পারলোনা। দরজার সরু ফাঁকা দিয়ে বাইরের মানুষটিকে টেনে ভেতরে নিয়ে আসলো। নিজের খোলা পিঠ তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে চটপটে বললো,,

“” জলদি হুকগুলো লাগিয়ে দে। ভাবী আমার অপেক্ষায় আছে।””

রিপ্তির তাড়া পেছনের মানুষটিকে ছুতে পারলোনা। শান্তকন্ঠে মিহিসুর,,,

শান্ত বুকে অশান্তের ঢেউ
ভাঙলো দু-কূল,সামলা কেউ!!(রোকসানা)

চলবে

[আমার পৃথিবীর আলো আমার মা,খুব অসুস্থ! তাই গল্প দিতে দেরি হচ্ছে।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here