কতগুলো কালো পোশাক পড়া লোক শোভাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এসে থ্রেট দিলো,”আমাদের বস এখন আপনাকে প্রপোজ করবে।চুপচাপ একসেপ্ট করে নেবেন।কোনো টালবাহানা করে বসের মাথা খারাপ করলে একেবারে পরোপারে পাঠিয়ে দেবো।”
এভাবে তুলে নিয়া আসায় শোভা কিছুটা ভয় পেয়েছে।এখনো দুরুদুরু করে বুক কাঁপছে।লোকগুলো মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।শোভার মুখে কথা নেই,থাকবে কি করে?ওর মুখেতো কস্টেপ লাগানো তাই মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না।চারপাশ অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।শোভাকে মাঝখানে একটা চেয়ারে বেধে রাখা হয়েছে।শোভা মুখ দিয়ে “উমম”শব্দ করছে।একজন লোক শোভার মাথার সাথে পিস্তল ঠেকিয়ে বলল,এরকম শব্দ করলে এখনই উপরে উঠিয়ে দেবো।শোভা দমে গিয়ে মুখ বন্ধ রাখলো।লোকগুলো নিজেদের মধ্যেই কি নিয়ে ফিসফিস করছে।
শোভার মনে হাজারো চিন্তারা এসে ভর করেছে।লোকগুলো কেনো ওকে তুলে আনলো আর কেই বা তাদের বস?কিছু জিজ্ঞেস ও করা যাচ্ছেনা।তাই আপাতত চুপচাপ মাথাটা চেয়ারে এলিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলো।দুশ্চিন্তা হচ্ছে ঠিকই সাথে মাথাটাও ঘুরছে।কাল রাত থেকে পেটে কিছু পড়েনি।রাগ করেই বাসা থেকে বেরিয়েছে।ভেবেছে ভার্সিটিতে গিয়ে ক্যান্টিনে কিছু খেয়ে নেবে কিন্তু মাঝরাস্তা থেকেই ওকে লোকগুলো তুলে নিয়ে এসেছে।
কিছুক্ষণ পর দরজার দিক থেকে কয়েকজনের পায়ের শব্দ কর্ণকুহরে তরঙ্গিত হতেই শোভা চোখ খুলে তাকায়।কালো পোশাক পড়া লোকগুলো সব একপাশে সরে দাঁড়ায়।তিনজন লোক বেশ ভাব নিয়েই শোভাকে আটকে রাখা রুমে পদার্পণ করে।সবার সামনের জনের চোখেমুখে বেশ ভাব।পরনে ব্লেজারটার দুই প্রান্ত ধরে ঝাঁকিয়ে টিশার্টে ঝুলিয়ে রাখা চশমা পড়ে নেয়।সাজগোছ বেশ পরিপাটি।পেছনের দুজন ও বেশ পরিপাটি ভাবে এসেছে।একেবারে সামনের লোকটা কালো পোশাক পড়া একজনকে বলল,মুখের কস্টেপ খুলে দাও মেয়েটার।একজন লোক কস্টেপ খুলে দিতেই শোভা জোরে কয়েকটা শ্বাস ফেলে নিজেকে স্থির করলো।তারপর বেশ জোর গলায় বলল,আমাকে এভাবে তুলে আনার মানে কি?সামনের লোকটা কানে হাত চেপে ধরে গার্ডগুলোর দিকে চোখ গরম করে তাকাতেই তারা বলল,সরি বস!আমরা দেখছি আপনি বসুন।শোভা লোকগুলোর কথা শুনে বুঝলো সামনের এই ব্যক্তিটাই ওদের বস।তাই চেঁচিয়ে বলল,আমাকে এখানে তুলে এনেছেন কোন দুঃখে?আমাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করবেন আমার বাবার কাছ থেকে?
নিহাদের রাগ বেড়ে যাচ্ছে তিরতির করে।মেয়েটা এত চেঁচাচ্ছে কেনো?গার্ড গুলোর দিকে তাকিয়ে রাগি গলায় বলল,কাকে তুলে এনেছো?এই মেয়ে এমন চেঁচায় কেনো?আর ওকে এখানে কেনো নিয়ে আসা হয়েছে বলোনি।লোকগুলো মাথা নিচু করে বলল,বলেছি বস!তবুও মেয়েটা চেঁচাচ্ছে।অতঃপর নিহাদ গার্ডগুলোকে বাইরে যেতে বলে।নিহাদ আর ওর বন্ধুরা থেকে যায়।শোভার সামনে গিয়ে বলো শোনো,আমি এখন তোমাকে প্রপোজ করবো আর তুমি একসেপ্ট করবে।তারপর তোমার ছুটি,তোমাকে যেখান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে সেখানে পৌঁছে দেওয়া হবে।শোভা চোখমুখ কুঁচকে বলল,কিহ?
পেছনে নিহাদের বন্ধুরা মুখ টিপে হাসছে।
নিহাদ বিরক্তিতে “চ” শব্দ করে বলল,আস্তে কথা বলতে পারোনা?
তারপর বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বলল,সব রেডিতো?ওরা হ্যাঁ সূচক সম্মতি জানাতেই নিহাদ হাঁটুগেড়ে শোভার সামনে বসলো।আসার সময় কত কিছু মনে মনে আওড়িয়ে নিয়েছে কিন্তু এখন কিছু মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না।কি কি বলতে হবে নিহাদ সব ভুলে গেছে।হালকা মাথা চুলকে মনে করার চেষ্টা করছে।কেমন উসখুস করছে নিহাদ।পেছনে ওর বন্ধুরা মুখ টিপে হেসে চলেছে।এদিকে শোভার মনে হচ্ছে সে কোনো পাগলের পাল্লায় এসে পড়লো।মাথা এমনিতেই ঘুরছিলো এখন মনে হচ্ছে চোখ খুঁলে রাখাও দায়।পেটের ভেতর ইদুর দৌঁড়ানো শুরু হয়ে গেছে।শোভা নিভুনিভু দৃষ্টিতে ঢুলছে।নিহাদ কিছুই মনে করতে না পেরে বলে দিলো,”আই লাভ ইউ”
শোভা এবার পুরোপুরি চেয়ারে ঢলে পড়লো।নিহাদ চমকে উঠে বলল,এটা কি হলো?নিহাদের বন্ধুরা আর না পেরে হু হা করে হেসে উঠলো।নিহাদ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,চুপ একদম চুপ!তোদের কারণে হয়েছে সব।রাহুল হাসতে হাসতে বলল,তোর প্রপোজ করার স্টাইল দেখে মেয়েটা জ্ঞান হারিয়েছে।কথাটা নিহাদের গায়ে বেশ প্রভাব ফেলেছে।নিহাদ শোভা যে চেয়ারটাতে আছে সেখানে সজোরে একটা লাথি মেরে গার্ডদের ডাকলো।পায়ে নিজেতো ব্যথা পেয়েছেই সাথে শোভার মাথাটাও চেয়ারের সাথে বাড়ি লেগেছে।অল্পের জন্য চেয়ার উল্টে পড়েনি।গার্ডগুলো আসতেই নিহাদ ওদেরকে ধমক দিয়ে বলল,কি মেয়ে নিয়ে আসলে?যে প্রপোজ করতে না করতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে?গার্ডগুলো মাথা নিচু করে বলল,স্যার আপনিইতো বলেছেন যেকোনো মেয়ে হলেই হবে তাই আমরাও রাস্তায় উনাকে দেখে তুলে নিয়ে আসলাম।নিহাদ ধমকে বলে উঠলো আমি তোমাদের বস নাকি তোমরা আমার বস?আমার মুখে মুখে তর্ক করছো?তারপর ওদের দিকে টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,পানি এনে মেয়েটার জ্ঞান ফেরাও তারপর যেখান থেকে নিয়ে এসেছো সেখানে দিয়ে আসো।
আশিক ব্যঙ্গ করে বলল,কেনো আর প্রপোজ করবিনা?নিহাদ চোখ রাঙাতেই আশিক চুপ হয়ে গেলো।তবে চাপা হাসি থামলোনা।একজন গার্ড পানি এনে নিহাদের হাতে দিতেই নিহাদ হাতে পানি নিয়ে শোভার চোখেমুখে পানির ঝাপটা মারলো কিন্তু শোভা চোখ খুললোনা।অনেকবার পানি দেওয়ার পর শোভা চোখ খুলে তাকালো।শরীরটা তীব্র গতিতে কাঁপছে।কাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত না খেয়ে এই অবস্থা হয়েছে।বেলা কম হয়নি প্রায় বারোটার কাছাকাছি সময়।নিহাদ ভাবছে মেয়েটা ভয়ে এরকম কাঁপছে তাই গার্ডদের বলল,তাড়াতাড়ি মেয়েটাকে দিয়ে আসো।
নিহাদের কথায় সম্মতি জানিয়ে গার্ডরা শোভাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো।শোভাকে বাসায় দিয়ে আসা হচ্ছে তাই সে কোনো শব্দ করেনি।বাসায় গিয়েই আগে খাবার নিয়ে বসবে ভেবে রেখেছে।শোভাকে গাড়িতে তুলে একজন গার্ড ওর ব্যাগটা এগিয়ে দেয়।শোভা ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখে সব ঠিকঠাক আছে কিনা।সব ঠিকঠাক দেখে সিটে মাথা এলিয়ে দিলো।আপাতত কিছুই ভাবতে পারছেনা।শরীরটা বড্ড ক্লান্ত হয়ে আছে।
শোভাকে নিয়ে যাওয়ার পরই নিহাদ বেরিয়ে পড়ে।পেছন পেছন রাহুল আর আশিক ও বেরিয়ে আসে।রাহুল বলল,শুধু শুধু একজনের কথায় এসব করছিস।তুই যেমন ঠিক তেমন ভাবেই কেউ তোকে ভালোবাসবে।যে ছেড়ে যাওয়ার সে যতসব ফালতু এক্সকিউজ দেখিয়ে ছেড়ে যাবে।আশিক বলল,যা করেছিস করেছিস এবার অফ যা মেরা ভাই।নিহাদ রাগে অস্থির হয়ে আছে।কিছুতেই তার রাগ কমছেনা।ওর এক্স গার্লফ্রেন্ড ওকে ছেড়ে দিয়েছে।কারণ হিসেবে দেখিয়েছে নিহাদ ঠিক করে প্রপোজ করতে জানেনা।ওর নিউ বয়ফ্রেন্ড অনেক ইউনিক স্টাইলে ওকে প্রপোজ করেছে।
এটা ছেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ হতে পারেনা।
রিনি নিহাদকে ছেড়ে দিয়েছে এতে তার আফসোস নেই।রিনি যাস্ট ওর গার্লফ্রেন্ড ছিলো সো অফ করার মতো আরকি।সবাই জানতো ওদের সম্পর্ক আছে তবে ওদের মধ্যে কোনো অনুভূতি ছিলোনা।ডিজিটাল যুগে এসেও কেউ সিঙ্গেল থাকবে এটা নিহাদের কাছে বেমানান লাগতো।তাই নিজের সুন্দরী বান্ধবীকে নিজের গার্লফ্রেন্ড বানিয়ে নেয়।সবাই সৌন্দর্যের পূজারী।নিহাদ ও তার ব্যতীক্রম নয়।রিনি ছিলো সুন্দরী,স্মার্ট।ওর সৌন্দর্য দেখেই নিহাদ মোহিত হয়েছিলো।কিন্তু অনুভূতির ছিটেফোঁটা ও ছিলোনা।
রিনিকে দেখিয়ে দিবে সেও প্রপোজ করতে জানে।ছেড়ে যাবে ঠিক আছে তাই বলে এসব লেইম এক্সকিউজ কেনো দিবে?এমনতো নয় যে ওদের মধুর প্রেম ছিলো।নিহাদ রিনিকে ছাড়া মরে যাবে।
এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে সব নিহাদ টাকা দিয়ে করিয়েছে।ওর আলাদা কোনো গ্যাং বা পাওয়ার নেই।কালো পোশাক পড়া লোকগুলো ভাড়া করা ছিলো।
নিহাদ সোজা বাসায় গিয়ে শাওয়ারে ঢুকে।
এদিকে শোভা বাসায় এসেই ব্যাগ সোফায় ছুঁড়ে মেরে খাবার টেবিলে বসে।হাতমুখ না ধুয়ে গপাগপ খাবার গিলতে থাকে।এতক্ষণ মনে হয়েছে প্রচুর খেতে পারবে এখন একটু খেয়েই পেট ভরে গেছে।
শোভার মা এসে বলল,রাগ কমেছে তাহলে।আর হ্যাঁ!এখন একটু ঘুমিয়ে নে।বিকালেই পাত্রপক্ষ আসবে।বিরক্ত হয়ে শোভা বলল,আর কতবার এককথা বলবে?এই নিয়ে কালরাত থেকে না খেয়ে আছি তবুও শান্তি হয়নি তোমাদের।আমাকে বাড়ি থেকে বিদায় করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছো দেখছি।
মিসেস অনামিকা নরম কন্ঠে বললেন,একটা সময় সবাইকেই বাপের বাড়ি ছাড়তে হয়।মেয়ে যখন হয়েছো পরের বাড়িতো যেতেই হবে।
শোভা দপদপ পা ফেলে নিজের ঘরে চলে গেলো।গোসল করে লম্বা একটা ঘুম দেওয়া দরকার।মাথা ভার হয়ে আছে।
বিকালে ঘুম থেকে উঠতেই মিসেস অনামিকা এসে শোভাকে তাড়া দিলেন তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিতে।একটা শাড়ি খাটের উপর রেখে গেলেন বললেন,শাড়িটা পড়ে তৈরি হয়ে নে।পাত্রপক্ষ চলে এসেছে।শোভা একরাশ বিরক্তি নিয়ে শাড়ি পড়ে বসে রইলো।ওর ছোটবোন প্রভা বলল,আপু তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।শোভা মিষ্টি করে হাসলো।শোভার বাবা জহিরুল ইসলাম মিসেস অনামিকাকে ডেকে বললেন মেয়েকে নিয়ে আসতে।অনামিকা শোভার মাথায় কাপড় ঠিক করে দিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে আসে।ছেলের মা আর ভাবি শোভাকে টেনে উনাদের মাঝখানে বসিয়ে দেন।শোভা সবাইকে সালাম দিয়ে উনাদের মাঝখানে বসে।ছেলের বড়ভাই আহাদ বলল,মাশাআল্লাহ ভারী মিষ্টি মেয়ে।কিরে নিহাদ তোর পছন্দ হয়েছেতো?নিহাদ চোখ তুলে আড়চোখে একবার মেয়েটার দিকে তাকালো মুখের একপাশ দেখা যাচ্ছে।আরেকটু ভালো করে মাথা কত করে দেখে চমকে উঠলো।এই মেয়ে এখানে কি করছে?শোভা মাথা নিচু করে বসে রইলো।একবারও ছেলেটার দিকে তাকালোনা।ওর বারবার মনে হচ্ছে ছেলে হয়তো কোনো ভুড়িওয়ালা হবে তাই তার দিকে তাকিয়ে নিজের মনকে আর কষ্ট দিতে চায়না।
এদিকে নিহাদ শোভাকে দেখে বেশ অবাক হয়েছে সাথে তার মোচড়ামুচড়ি শুরু হয়ে গেছে।নিহাদের ভাবি মিলি নিহাদকে এরকম মোচড়ামুচড়ি করতে দেখে বলল,এরকম মোচড়ামুচড়ি করছো কেনো?মেয়ে পছন্দ হয়েছে?নিহাদ হাসার চেষ্টা করে বলল,ভাবি মেয়ের সাথে একটু কথা বলার ব্যবস্থা করে দাওনা।মিলি হেসে বলল,সে ঠিক আছে তবে তুমি এমন জোর করে হাসছো কেনো।নিহাদ ঠিক হয়ে বসে বলল,কই নাতো এই দেখো আমি একদম ঠিক আছি।
নিহাদের বাবা আজ আসেননি।কাজে ব্যস্ত আছেন।তাই ছোট ছেলের জন্য পাত্রী দেখতে বড় ছেলে,ছেলের বউ,ছেলের মা আর ছোট ছেলেকেই পাঠালেন।মেয়েকে একবার উনি দেখেছেন।তাইতো ছোট ছেলের জন্য প্রস্তাব পাঠালেন।
মিলি হেসে উঠে ওর শাশুড়ীকে বলল,মা ওদের একটু আলাদা কথা বলার সুযোগ দিলে ভালো হয়।মিসেস সেলিনা গলা ঝেড়ে জহিরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বললেন,আলহামদুলিল্লাহ মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে।এবার ছেলেমেয়েদের পছন্দ হলেই হলো।তাই বলছিলাম ওদেরকে একটু আলাদা স্পেস দিলে ভালো হতো।জহিরুল ইসলাম চওড়া হেসে বললেন,অবশ্যই কথা বলবে।শোভা যাও নিহাদকে তোমার ঘরে নিয়ে যাও।বাবার কথামতো শোভা হাটা ধরলো।নিহাদ কিছুক্ষণ বসে থেকে ধীর পায়ে শোভার পিছু পিছু ওর ঘরে গেলো।শোভা মনে মনে পরিকল্পনা এঁটে রেখেছে ঘোমটা খুলে সরাসরি ছেলের চোখের দিকে তাকাবে নিজের চোখ ট্যারা করে।যাতে মেয়ে ট্যারা ভেবে বিয়ে ভেঙে যায়।যেই ভাবা সেই কাজ শোভা মাথার ঘোমটা সরিয়ে ঠোঁটে হাসি রেখে চোখ ট্যারা করে নিহাদের চোখের দিকে তাকাতে গিয়ে আটকে গেলো।নিহাদ শোভার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙচিয়ে বলল,তুমি?তোমাকে আমি বিয়ে করবো?সকালে তুমি আমাকে অপমান করেছো প্রপোজ একসেপ্ট না করে।এবার আমি তোমায় অপমান করবো রিজেক্ট করে।
নিহাদ ভেবেছে শোভা ভীতু মেয়ে।ওর কথায় ভয় পাবে কিন্তু না শোভা দরজার চিপা থেকে হাতড়িয়ে কিছু বের করে সামনে আনে।শোভার হাতের জিনিসটা দেখেই নিহাদ আঁতকে উঠে।শোভা ঝাড়ু হাতে নিয়ে নেড়ে নেড়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,আমাকে কিডন্যাপ করা হু?এখন আবার বিয়ে করতে এসেছেন?
ঝাড়ুর বাড়ি খেতে না চাইলে এখান থেকে বের হন।নিহাদ রেগে গেলো।মেয়েটার কত বড় সাহস নিহাদকে ঝাড়ুর ভয় দেখায়।নিহাদ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,একদম ঠাটিয়ে গাল ফাটিয়ে দেবো বেয়াদব মেয়ে।
শোভা কাল থেকে রেগে আছে।সকালে নিহাদ কিডন্যাপ করেছে তাই সব রাগ একসাথ করে নিহাদকে ঝাড়ু দিয়ে দিলো একবাড়ি লাগিয়ে।ভাগ্যিস নিহাদ ঝাড়ু ধরে ফেলে।রক্তিম চোখে হিংস্র ভাগের মতো গর্জন করে বলল,তোমাকে আমি বিয়ে করে নিয়ে যাবো আর প্রতিদিন বাসায় এসে আর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় দুইটা করে ঝাুড়ুর বাড়ি দেবো।বেয়াদব,অসভ্য মেয়,শিক্ষার কি শ্রী!
নিহাদ ঝাড়ু ছুঁড়ে মেরে বেরিয়ে গেলো।
শোভা রাগে দরজায় লাথি মেরে পা ধরে নিচে বসে গেলো।মনে হচ্ছে পা ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে গেছে।
শোভা পায়ে মলম লাগাচ্ছে ব্যথা কমার জন্য।প্রভা মিষ্টি হাতে নিয়ে এসে শোভার গালে পুরে দিলো।শোভা কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকাতেই প্রভা বলল,সবার তোমাকে পছন্দ হয়েছে।উনারা আমাদেরকে যেতে বলেছেন।
শোভা মিষ্টি চিবানো বন্ধ করে দিলো।একেতো পায়ের ব্যথা এখন আবার এই দুঃসংবাদ।সব কিছুর ব্যথায় একেবারে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে শোভার মন।
#চলবে………
#গল্পঃভালোবাসার_রংধনু
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#সূচনা_পর্ব
(